কবিতা: সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৮

এই অগাস্টও পার হয়া যাবো আমরা
শরতের মেঘ কইলো,
আটকায়া যাইতে যাইতে।

এই শরতের মেঘও মেমোরি হয়া যাবে
অগাস্টের শেষদিন কইলো,
মিউট হয়া যাওয়ার আগে।

 

নাথিং

না-পাওয়া, তোমারেও পাইয়া যাবো একদিন…

মনে হবে তখন, পাওয়া কি আর থাকবো ওইরকম?

যেইরকম আছে এখন, তোমারে না-পাওয়া!

 

তুমি আমারে বুঝাইতেছো

কেমনে যে বুঝাও তুমি,
আর আমি বুঝি, ‘হ, ঠিকই তো, এইরকমই…’

তারপর বুঝতে পারি,
আমি তো বুঝতেই চাইছি, 
কি কি বুঝাইতেছো সেইটা আর
ইর্ম্পটেন্ট না তো!

তুমি বুঝাইতে থাকো, তারপরও
‘এইটা হইলো ওইটা আর
ওইটা ছিলো সেইটা…’

তুমি যে আমারেই বুঝাইতে চাইতেছো,
এইটাই তো ভালো!

এইটার সত্যি-মিথ্যা দিয়া আমি কী করবো…

 

দেজা ভ্যু

তোমার শরীর জড়ায়া ধরলো
শরীর’রে আমার, কইলো
“আই লাভ ইউ!”

ভালোবাসা, কালা একটা বিলাই
কালা একটা অন্ধকার ঘরে, নিরবে
হাঁইটা গেলো।

 

ডাউনফল

শাট শাট শাট শাট
সাই সাই সাই সাই

যেই একটা জিনিস
নাইমা যাইতেছে
কতো যে নিচে

নামতেছেই
আর
যাইতে পারতেছে না কোথাও

নিচে

না
মা
টা

শেষ হইতেছে না

শাট শাট শাট

শাট-অফ,

প্লি

.
.
.

প্যারানইয়া

আদর কইরা ধইরা রাখি
রাখি তোশকের নিচে
খুচরা টাকার মতোন

আর
তুমি
কখোন যে ভাইসা ওঠো

তেলাপোকার মতোন
একটা গ্রেগর সামসা
কাফকার কোন রেফারেন্স ছাড়াই…

 

ইচ্ছা হয়

ইচ্ছা হয়,
জন্মের মতোন একটা অন্ধকার হয়া বইসা থাকি পৃথিবীর পেটের ভিতর,

কোন এক সন্ধ্যায়
কালা কালা লেকের পানিতে
দেখি,
অন্ধকার

আমাদের ছায়ার মতোন
টলটল

জন্মের মতোন একটা জোড়া অন্ধকার আমরা
পৃথিবীর পেটের ভিতর…

 

“অ্যান্ড শি ইজ ব্রেথিং লো…” 

একটা সুন্দর দৃশ্যের কথা আমি ভাবলাম। আমি শুইয়া আছি তোমার বুকের কাছে। তোমার শ্বাসের শব্দের ভিতরে ঘুমাইতেছি। আর একটা সময় পরে, আমার নাক ডাকার টানে ঘুম ভাইঙ্গা গেলো আমার, ভোরবেলায়। চোখ খুইলা দেখি, তুমি চোখ বন্ধ কইরাই মিটিমিটি হাসতেছো। তুমি কি আমার নাক ডাকার শব্দ শুইনা হাসতেছো? আমার রাগই হইলো একটু। যেইরকম আমার আম্মার উপর রাগ হইছিলো আমার।

(তোমারে কি কইছিলাম, এই গল্পটা? তখন মনেহয় আমার বয়স দশ কি বারো। আমাদের বাসাটা ছোট। পড়ার টেবিলটা দিনের বেলা খাটের উপরে রাইখা দেয়া হইতো, হাঁটা-চলার সুবিধার লাইগা। সন্ধ্যাবেলা খাট থিকা নামায়া পড়তে বসতাম। একদিন, গরমের দিন, সন্ধ্যাবেলা, কারেন্ট নাই। দোতলায় বাসা আমাদের। আম্মা বইসা রইছে, বারান্দায়, বেতের মোড়ার উপরে। শো-কেসের উপরে জ্বলতেছে হ্যারিকেন। আমি ঘরে ঢুইকা টেবিলটা নামাইতে চাইলাম। খুব যে ওজন, তা না; কিন্তু বেড় পাইতেছিলাম না, কেমনে নামামু! তো, একবার খাটের উপরে উঠি তো, একবার নামি। আম্মা বারান্দায় বইসা বইসা দেখতেছে। কিছু কয় না। পরে যখন খাট থিকা টেবিলটা ধইরা নামাইতে গেলাম, পিছন দিকে ডিসট্যান্সটা আন্দাজ করতে না পাইরা, টেবিলসহ চিৎ হয়া পইড়া গেলাম ফ্লোরে। আর সাথে সাথে আম্মার যে কি হাসি! শে তো আর আমার আম্মা না খালি, একজন মানুষ, ইয়াং মহিলাও! আর আমি মনের দুক্ষে মইরা যাইতে চাইতেছিলাম, আমার আম্মা আমারে নিয়া হাসে!…

এখন আমি আমারে নিয়া হাসি, আমার আম্মার হাসিটার সাথে। আর আমার অহেতুক রাগটার কথা মনে হয়। )

আমি আবার ঘুমাইলাম। আবার নাকডাকা শুরু হইলো আমার। আবারও ঘুম ভাঙ্গলো, চোখ খুললাম। দেখি, তুমি তখনো চোখ বন্ধ কইরা হাসতেছো। মনে হইলো, হয়তো তুমি ঘুমাইতেছোই; আমার নাকডাকার আওয়াজ শোনো নাই। হয়তো সুন্দর কোন স্বপ্ন দেখতেছো, যেইখানে তোমার প্রেমিক তোমারে জড়ায়া ধইরা শুইয়া রইছে, ভোরবেলায়।

 

 

প্যাগান

কোন এক প্যাগান ধর্মের
হারাইয়া যাওয়া রিচুয়াল হইয়া
ছিলাম, বাজারের কোণায়

ক্রিশ্চিয়ানিটি আবিষ্কার করলো আমারে,
কইলো, তুমি তো রে ভাই ভুয়া জিনিস
তুমি ডিসটরসন একটা হিস্ট্রির, নাই!

আমি যে প্যাগান ছিলাম আর আমি যে নাই
কইলো আমারে ক্রিশ্চিয়ানিটি আইসাই,
এর আগে, আমি পইড়া ছিলাম, বাজারের কোণায়

 

পেট’টা পুড়ে

আগে শুনতাম এই কথা কথা, এখন আর শুনি না। কেউ কাউরে মিস করতেছে, তো কইতো; তার লাইগা আমার পেট’টা পুড়ে!

পেট তো খাওয়ার সাথে রিলেটেড, তারপরও বলা যাইতো, তুলনা করা যাইতো খিদা-লাগা’র মতোন কষ্টের লগে, হয়তো। প্রাণী হিসাবে এর চে বড় কষ্ট তো নাই কোন! এইজন্য মন-খারাপ হইলে অনেক খাওয়া-দাওয়া করার ট্রাই করি, পেট ভরে, ভইরা উপচাইতে থাকে; খিদার কষ্ট থাকে না, কিন্তু মন-খারাপ’টা তো যায় না তারপরও, পুরাপুরি।

তোমার লাইগা আমার সবসময় পেট’টা পুড়ে। বুঝছো!

 

অডিয়েন্স

সিসি ক্যামেরার
দিকে তাকায়া
দেখতে চাইতেছি
তোমার
দুইটা চোখ…

তুমি দেখতেছো তো
আমারে?

বা
রেকর্ড কইরা রাখলা…

দেখবা তো?
দেইখো,
আমি তাকায়া আছি
দেখার লাইগা

তোমার
দুইটা চোখ

 

দিস ইজ নট অ্যা পাইপ

লাউ,
তুমি কি পারবা
কোনদিন কদু হইতে?

 

অনেক অনেক কিছু লেখলাম

বৃষ্টি পড়তেছে – এইটা একটা স্ট্যাটাস

পলিটিকাল অবস্থা তো আসলেই খারাপ, দেশের – এইটা নিয়া কয়েকটা স্ট্যাটাস

ক্রিকেট – এশিয়া কাপ, সৈয়দ শামসুল হক, পরকীয়া… এইসব নিয়াও কোন মেমোরি শেয়ার দেয়া যায়; ভাবছি তো আমি, বলছিও

কোন ট্রল শেয়ার দিলাম, কোন নিউজ, কারো স্ট্যাটাস

কোন সুন্দর ছবি, রাগ, ঠেস-মারা কথা, মন-খারাপ, ফান…

একটা শব্দ ঢুকছে মাথার ভিতর, ধরো, বিকাল – সিরিজ স্ট্যাটাস লিখতেই থাকবো এখন:
বোবা বিকাল,
বৃষ্টি বিকাল,
ব্লো-জব বিকাল,
বিকালের রং,
বিকাল একটা ঢং, রিকশায়, হালকা বাতাসের মতোন চইলা যায়,
বিকালের বালতি
ঘন ও পাতলা বিকাল…
শ’খানেক তো লেখাই যায় এইরকম
মানে, একটা শব্দের ভিতর অনেক সময় একটা দুনিয়া তো আটায়া ফেলা যায়!

এইরকম অনেকগুলি স্ট্যাটাস লেখার কথা ভাবলাম বা ধরো লিখলামই…

অনেক কিছু লেখার পরে
কারো দিকে না তাকায়া, মাথা নিচু কইরা হাঁটবো রাস্তায়

মনে হবে তখন, অনেক অনেক কিছুই তো লেখলাম…

Leave a Reply