আমার ধারণা, উৎপলকুমার বসু ডিডাক্টিভ পদ্ধতিতে কবিতা লিখতেন; মানে, অনেককিছু বাদ দিয়াই তো আমরা লিখি; কিন্তু পদ্ধতি হিসাবে উনি এইটা বেশ স্মুথলি ইউজ করতেন; এই জায়গাটা* – “বাতাস শান্ত, নীল।” – দেইখা জিনিসটা আরেকবার মনে হইলো; যিনি পড়বেন তিনি কিন্তু বুঝবেন যে, না-থাকা শব্দটা হইতেছে ‘আকাশ’ যেইটা নীল। এই যে বাদ দেয়াগুলি বাদ-ই দেয়া যাইতেছে এবং তারপরে ফিল করা যাইতেছে, এই আনন্দ উনার কবিতা পড়লে পাওয়া যায়।
আরেকটা লাইনের কথা অ্যাড করা যায় এইখানে, ওই যে ‘বাদাম পাহাড়’… “তোমার ব্যক্তিগত বসন্তদিনের চটি হারিয়েছ বাদাম পাহাড়ে”। মানে, পাহাড় তো বাদাম রংয়ের হইতেই পারে, খাগড়াছড়িতে দেখছি এইরকম, ঘাস এবং গাছ-গাছালির ছাল উইঠা যাওয়া পাহাড়। কিন্তু যদি লিখা হইতো, “ব্যক্তিগত বসন্তদিনের চটি আমি হারিয়েছি বাদাম রঙের পাহাড়ে”… কবিতা তো কমতোই, উৎপলকুমার বসু’রেও কি আর তেমন একটা কিছু মনে হইতে পারতো? মানে, আমি ডাউটফুল আর কি।
—————-
*
হে রাত্রি, আঁধারমথ, এসো কিছুক্ষন নক্ষত্রের দেখাশোনা করি।
সমস্ত আকাশ ভেঙ্গে একে একে উঠে আসে ওরা।
বাতাস শান্ত, নীল। সমস্ত পাহাড় ভেঙ্গে একে একে উঠে আসে ওরা।
নিদ্রিত শিশুর মাথা স্বপ্নে, চুলে, মাছের কাঁটায়
ভরে আছে। আঁস্তাকুড় থেকে তুমি উড়ে এসো, ছাইগাদা থেকে,
হে রাত্রি, আঁধারমথ, হে দূরবীক্ষণ,
কেবল পচেছে হাড়, ভাত, হাঁড়ি, এঁটো কলাপাতা,
সভাপতি আমাকেও বলে গেছেঃ ‘ লিখে যাও, লিখে যাও শুধু,
অমুক কাগজে আমি কবিতার সম্পাদক।’
এর বেশি আর কি-বা চাই!
কেবল উন্মাদ ডানা, ভুল, ভয়, অতিঅলৌকিক
গম্ভীর আকাশীঘণ্টা, তুমি কেন ডাকো ?
(হে রাত্রি, আঁধারমথঃ উৎপলকুমার বসু)
Leave a Reply