কনফিউশন
মাথার ভিতরে একটা তুমি নিয়া
মইরা যাই যদি
তোমার ঘরের ভিতর
তখন পাশে শুইয়া থাকা তুমি
মাথার ভিতরের তুমি’রে
দেখবা না তো
আর!
দুইটা পাথর
কেউ আসছিলো
আসতে চাইতেছিলো
কেউ ছিলো
থাকতেও চাইতেছিলো, মনেহয়
দুইটা পাথর
নিজেদের জায়গা থিকা
নড়তে পারতেছিলো না
আর।
পুরান প্রেমিক
আবার অপরিচিত হবো
ঝুইলা থাকবো
অনেক ফ্রেন্ডের ভীড়ে
আরো এক ফ্রেন্ড হয়ে
‘মাঝে-মধ্যে দেখা তো হইতেই পারে’
– এইরকম একটা সিচুয়েশনে
পইড়া থাকবো; যেন কই-
মাছ কাদার ভিতর
চ্যাটাং চ্যাটাং
নড়তেছে,
বলতেছে,
‘আমি তোমার প্রেমিক ছিলাম তো…’
মিথ্যাবাদী রাখাল
আমি বলতেছি সত্যি কথা।
বলতেছি, বাঘ আসছে!
বাঘের করুণ মুখের দিকে তাকায়া আছে সবাই:
সত্যি সত্যি বাঘ এইটা? নাকি আঁকা ছবি?
বাঘ নড়তেছে, হাঁসফাঁস করতেছে
মানুষের সন্দেহের ভিতর…
আমি ভাবতেছি, বাঘের আঁচড় লাগায়া গলায়
মইরা যাবো কিনা?
ভ্যালিতে, সবুজ ঘাসে, ভেড়াদের হাঁটাহাঁটি দেখতে দেখতে বলবো আবার,
ওই যে বাঘ, বাঘ আসছে!
পয়লা বৈশাখ
রাডার ঘুরায়ে আসো
আসো সিএনজি’র গর্ত না মানা স্পিডে
আসো বৈশাখ, ব্রোকেন ফ্যামিলির গেট-টুগেদারে
ক্যাকটাস
যা কিছু আছে এখন, তা সবসময় থাকবে না বইলা, তার মানে এই না যে এইটা ছিলো না কোনদিন।
তোমার কথাগুলিরে মিথ্যা ভাবার পরে, আমার কথাগুলিরে ভাবতে পারি আবার, ঠিকই তো, এমন-ই তো – এইরকম।
নিরবতার সুতা একটা খেলনার হাতি বান্ধতে গিয়া বানতেছে আমাদেরকে, দেখতেছে একটু দূর থিকা তাকায়া তাকায়া
দুপুরের রোদ, গলির ফাঁকা রাস্তা, মসজিদের আজান, ভুল শব্দ আর ভুল বানান
‘মানে, জানি তো আমি এইসবকিছু… চিনি তো…’ হাসতে হাসতেই তোমার হাসি তার ব্যাগ গুছাইলো,
‘চইলা যাইতে পারবো তো আমরা?’ আমি জিগাইলাম প্রশ্ন, আমরা বইলা কেউ আর ছিলো না তখন।
যা কিছু ছিল এখন, তার ভিতর আরো অন্যকিছুই থাইকা যাইতেছে:
দুইটা গাছের ডাল, একটা কাক, জানালার সামনে দিয়া দুপুর, বিকাল, রাত আর সকাল বদলাইতছে নিজেদের কালার
ছায়ার ভিতর অন্ধকারে পানি ছাড়া বাঁইচা থাকতেছে একটা গোলাপি ফুলের ক্যাকটাস।
ফিউচার নাই কোন
আরো অনেক প্রেমের ভিতর কোনএকটা প্রেম হইয়া ঝুইলা থাকবো আমি, মেমোরি’তে তোমার
একটা কান্দার ভিতর আরো অনেক কান্দার স্মৃতি হইয়া আটকাইয়া যাবো
একটা ঘুমের ভিতর আরো অনেক ছোট ছোট না-ঘুমানোর মতোন, মনে-ই থাকবো না
কোন এক মোমেন্ট আইসা নিয়া যাবে তোমারে, তোমার কাছ থিকা
সামনের বারান্দার রেলিংয়ে বইসা থাকা কাকের মতোন দেখতেছি আমি তোমার ভাবনাগুলিরে তখনো
তুমি চলে যাচ্ছো, আর তোমার যাওয়াটা ফুরাইতেছে না…
একটা রিকশা মোড় ঘুরলো, তার-
পর ঢুইকা গেলো গলিতে
কোন একটা
একটা ল্যাম্পপোস্ট, তার নিজের ছায়া’রে দেখাইতেছিলো,
‘দেখো, এইটা আলো – আমার রেডিয়াসের আর তার বাইরে অন্য আলো আর ছায়া’
এইটুক শরীরের মালিকানা নিয়া,
সেও ভাবতেছিল মনেহয়
নিইভা যাবে কিনা…
ইনসমনিয়া
আলোর আওয়াজগুলি নিইভা যাওয়ার পরে
তোমারে দেখি আমি
কি যে একটা শূন্যতা ভাসে বাতাসে!
হাত নাড়ায়া নাড়ায়া বলো আমারে,
‘তুমি এখন যাও গা…’
একটা ঘুমের পাশে আরেকটা ঘুমের মতোন বইসা থাকি,
হোস-পাইপ দিয়া পানি ছিটানোর মতোন বৃষ্টির আওয়াজ শুনি
একটা সিগ্রেট ধরাইতে না ধরাইতেই শেষ হয়া যায়
হঠাৎ আলোর অন্ধকার আসে, নিভে আবার
‘যা কিছু দেখতে পাই আমরা, লাইফে এর অতিরিক্ত কিছু তো আর নাই’
আমি দেখি অন্ধকারে –
অন্ধ একটা হাতির শূঁড়
অনেক দূর থিকা আইসা
তুইলা নিয়া যায় আমারে
শোঁ শোঁ অন্ধকার বাতাসে
আমি ভাবি,
‘এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে…’
তার পিঠে রাতের আকাশের মতোন আলোগুলি তারার মতোন জ্বলে উঠতে পারে
‘দ্বিতীয় প্রকৃতি’ মনে করে যারা যারা এইটা ভাবতে পারে,
তাদের কথাও আমি ভাবি…
এক একটা অন্ধকার’রেও তো আলাদা আলাদা নামে ডাকা যায়,
একটা না-ঘুমের ভিতর থিকা একটা ঘুম’রে ডাকি,
‘ঘুম-পাখি, আমি ডাকিতাছি, তুমি ঘুমাইছো নাকি?’
হাইওয়ে
কোথায় যে হারাইলো শব্দ’রা
কোথায় কলাগাছ টিনের বাড়ির পাশে, ঝুঁকলো আরেকটু…
‘এইগুলি আজাইরা বাতাস’
দাওয়ায় বইসা বলতেছিলো দাদী
গরমের দিনে
নাতিন বউয়ের উশখুস
বুঝতেছিলো শে
আর সিএনজিওলা হর্ন মাইরাই যাইতেছে
কোকিলের ডাকও থামাইতে পারতেছে না তারে,
এতোটাই গ্রাম্য সে!
চা’য়ের দোকানের বেঞ্চিতে জড়ো হইতেছে
অনেকগুলি উদাস পাছা
সন্ধ্যা নামতেছে, অন্ধ মেঘের কান্দাও
ভেসে যাইতেছে
বলতেছে তারে ধানের খেত, একলা দাঁড়ানো গাছ, পুকুরের পানি
আর পানিতে ভিজার পর গা ঝাড়া দেয়া কয়েকটা হাঁস,
‘থাকো! থাকো না!’
অথচ রাত ভেসে উঠতেছে তখন
তখন বৃষ্টিতে, হাইওয়ে’তে
দৌড়ায়া দৌড়ায়া পার হইতেছে টাইম,
হঠাৎ কোন ইল্যুশনের মতো হরিণ আইসা
দাঁড়াইতেছে না আর রাস্তার মাঝখানে
বাতিল হইয়া যাইতেছে ধীরে ধীরে
আমাদের একসাথে অ্যাকসিডেন্ট করার পসিবিলিটি
আমাদের ব্যাখ্যাগুলির মতো আমরাও ফেড-আউট হইতেছি…
রাস্তার পিচে ঘঁষা খাইতে খাইতে মুছে যাইতেছে কাদা-লাগা টায়ারের দাগ
Leave a Reply