মিডিয়ার স্টোরিই হইতেছে ঘটনা

মিডিয়ায় শিশুহত্যা নিয়া যাঁরা চিন্তিত আছেন, তাঁরা এই মুভি’টা দেখতে পারেন। নিউজ ইন্ডাস্ট্রি কেমনে ফাংশন করে সেইটার একটা স্টোরি আছে: প্রফিট > টিআরপি > নিউজ প্রডিউসারের চাকরি > রিপোর্টারের শিকার কাহিনি > ঘটনা। উল্টাভাবে ঘটনা খুব কমই ঘটে। মানে, ঘটনা তো মিডিয়াতেই ঘটে।

বেশ আগে একবার মনে হইতেছিল, ধরেন বাংলাদেশ পুরুষ  ক্রিকেট টিম ইন্ডিয়া পুরুষ ক্রিকেট টিমের সাথে জিতলো। তারপরে আপনার জাতীয়তাবাদী মাইন্ড থাকলেই হয় না, সেইটা যে আছে তারে বলা লাগে, বাংলাদেশ জিতছে! আটার করা লাগে। ইভেন মোর একসাইটেটমেন্ট ক্রিয়েট হয়, পরের দিন নিউজপেপারে বা নিউজপোর্টালগুলিতে নিউজটা পড়তে থাকলে। এইরকম বারবার বলার ভিতর দিয়া ঘটনাটা ক্রিয়েট হয় আসলে। যা ঘটতেছে সেইটা যতোটা না সত্যি, যা বলতেছি সেইটা তার চাইতে বেশি সত্যি! এমনকি না কইলে মনে হইতে পারে যেন ঘটনাটা ঘটেই নাই। বিশ্বজিৎ মার্ডারের ঘটনা নিয়াও কইছিলাম, কিভাবে ইনটেন্স হইতে পারে ব্যাপারটা। 

খুন যে হয় না – তা তো না। হয়। বা ঘটনাগুলি যে ঘটে না –  তাও তো না। কিন্তু ঘটার পরেও অনেক সময় কোন ঘটনা ঘটনা হইতে পারে না। আবার ঘটতে থাকা না-ঘটনাগুলিই একটা সময়ে গিয়া ঘটনা হইয়া উঠে। একটা ঘটনা কেমনে ঘটনা হইয়া উঠে বা উঠে না – সেইটার লাইনটা বুঝতে পারা’টা দরকারি আসলে।

সিনেমার এই কাহিনিটা ফ্যাক্ট তো না, স্টোরি-ই; কিন্তু স্টোরিগুলির রিয়ালিটির ভিতরেই থাকতে থাকি আমরা। এমনকি আমরা নিজেরা নিজেদেরকে যা বলি সেইটাও ‘স্টোরি’-ই। তো, এই জায়গাটা আরো ব্যাপক। গল্প-কাহিনি’র জায়গাগুলি।

এর বাইরেও, এখনকার নিউজগুলিরেও তো ‘স্টোরি’-ই কয়, নিউজরুমে। মানে, টার্ম হইলেও, যা আমরা কইতে থাকি সেইটা একভাবে ইম্পোজ হইতে থাকে। ইন ফ্যাক্ট, ওইটাতেই কনভার্ট হইতে থাকে। নিউজগুলাও একটা স্টোরি বলারই ট্রাই করে, যদিও সাহিত্যের বাতিল ভাষাই ইউজ করে। এইজন্য ইনফিরিয়র স্টোরি হয় ওইগুলা।

এমনিতে স্টোরি’র জায়গাটাতে ফোকাস দিলে মেবি অন্য রকমও হইতে পারতো। কিন্তু আল্টিমেট অবজেক্টিভটা ঠিক স্টোরি’টা বলা না, বরং স্টোরিগুলারে খুঁইজা বাইর করা। তো, মুশকিল হইলো যে, এইরকম খুঁইজা খুঁইজা বাইর করতে থাকলে একটা টাইমে গিয়া খোঁজাখুঁজি বন্ধ কইরা দিলে মনে হইতে পারে যেন ঘটনাগুলি ঘটতেছে না আর।

 

 

 

Leave a Reply