অক্টোবর ০১, ২০২২
ফেস্টিভল হিসাবে দুর্গাপূজা কবে থিকা শুরু হইছে বাংলাদেশে? ১৬১০ সালে কলকাতার একটা রেফারেন্স পাইলাম, তারপরে ১৭৫৭ সালে, কলকাতায় রাজা নবকৃষ্ণ দেব লর্ড ক্লাইভের সম্মানে “বিজয়-উৎসব”-এর আয়োজন করছিলেন। মানে, এইটা ব্রিটিশ-বাংলার সময়ের ঘটনা, এই দুর্গাপূজার ফেস্টিভল’টা। [“পহেলা বৈশাখ উদযাপন” যেইরকম কম-বেশি ১৯৮০’র দশকের ঘটনা, ঢাকা শহরের। এর আগে ছিল চৈত্র-সংক্রান্তির মেলা।…]
বাংলাদেশে যতদূর জানি, কালী পূজা বেশি হইতো, পুরান কালী মন্দিরও দেখছি অনেক… দুর্গাপূজা ফার্স্ট কবে হইছে, সেইটার কোন কথা কোথাও পাইতেছি না।
তাই বইলা দুর্গাপূজা করা যাবে না – এই কনক্লোশন কেউ ড্র কইরেন না প্লিজ। আমি বলতে চাইতেছি, দুর্গাপূজা “হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতির” কোন ঘটনা না মেবি; মানে, এর পক্ষে কোন তথ্য-প্রমাণ আমি পাইতেছি না। মিথ তো পুরানাই, কিন্তু ফেস্টিভল হিসাবে চালু হওয়ার ব্যাপারটা ব্রিটিশ আমলেরই ঘটনা। আর এইটা যে আমরা কম-বেশি জানি না – তা না, বরং এই জিনিসটা আমাদের বলাবলির মধ্যে নাই।
২০১২ সালের হিন্দি-সিনেমা “কাহানি” সিনেমা নিয়া লেখছিলাম একবার (এখন খুঁজে পাইতেছি না লেখাটা), যে সিনেমার ১৬ মিনিটের সময় আছে ডায়ালগ’টা, যখন বিদ্যা বালনরে হোটেলে পৌঁছায়া দিতে যাইতেছে পুলিশ-অফিসার তখন জিগাইতেছে, ও আপনি, দুর্গাপূজার কথা জানেন? বিদ্যা বালন কয়, জামাই বাঙালি, দুর্গাপূজার কথা জানবো না!
মানে, দেখেন, বাঙালি নেসেসারিলি হইতেছে হিন্দু, আলাদা কইরা বলা লাগে না কিন্তু! বাঙালি কইলেই হয়। ব্যাপারটা এতোটাই অটোমেটিক। যদি বাঙালি-হিন্দু বলেন, তাইলে বরং বাড়তি লাগতে পারে। বা যদি হিন্দু বলেন, ইন্ডিয়ার অন্য হিন্দুরা দুর্গাপূজা এতোটা করে না তো!
আমি বলতে চাইতেছি, বলা এবং না-বলার কিছু সিগনিফিকেন্স এইখানে আছে।
***
প্যারেন্টিং নিয়া অনেক লেখা-পত্র চোখে পড়ছে আমার। অনেক বই-পত্র থাকার কথা, যে বাচ্চাদের লগে কি কি করা যাবে, কি কি করা যাবে না, এইরকম। ত্রিভুজ আলম একটা লেখতেছেন, অইটাও পড়ছি কিছু। ইন্টারেস্টিং লেখা।
কিন্তু আমি ভাবতেছিলাম, বই বা সাজেশন আসলে দরকার সেই মা-বাপদের জন্য, যাদের বাচ্চা-কাচ্চারা টিনএজার, ইয়াং-এডাল্ট। মানে, এই বয়সটাতে আইসা ডিটাচমেন্ট’টার শুরু হয় মা-বাপদের সাথে ছেলে-মেয়েদের। ধরেন, ১৩-১৪ টু ২৪-২৫, এইরকম এইজটা। আমার মনে হইছে, মা-বাপ’রা সবচে বেশি পাজলড থাকেন তাদের বাচ্চাদের এই বয়সটাতে।
হাউ টু লেট গো! কেমনে ছাইড়া দিতে হবে! এইটা মেবি সবচে ক্রুশিয়াল পার্ট প্যারেন্টিংয়ের! (মেবি যে কোন রিলেশনেরই।)
সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২২
দুনিয়াতে বাঁইচা থাকতে হইলে নানান ধরণের চিটিং ফেইস করা লাগবে আপনারে।
এই কথা মনে হইলো আজকে সকালে নাশতা করতে গিয়া। এই প্রাকটিস’টা বাসস্ট্যান্ড/লঞ্চঘাট/ফেরিঘাটের রেস্টুরেন্টগুলাতে বেশি আছে, বা অপরিচিত কাস্টমারদের লগে বেশি করে।*… টেকনিকটা হইতেছে দুইটা পরোটা দিলে, উপরেরটা গরম পরোটা দিবে, আর নিচেরটা আগে-ভাজা ঠান্ডা পরোটা; বা অনেক সময় আগের পরোটা সেকেন্ড-টাইম গরম কইরা দিবে। যারা জিনিসটা এক্সপেরিয়েন্স করছেন, তারা ধরতে পারবেন ব্যাপারটা।
(*নেটফ্লিক্সে একটা হিন্দি-সিনেমা Sir-এ দেখতেছিলাম, হাউজ-সার্ভেন্ট দর্জি’র দোকানে কাজ শিখতে গেছে, তো দর্জি কয়, না, না, এই জামা’র কাজ তোমারে দেয়া যাবে না, রেগুলার কাস্টমার এইটা! মানে, অপরিচিত কোন কাস্টমার হইলে এই রিস্ক নেয়া যাবে 🙂 বা ছোটখাট গাফিলতি এলাউড! কারণ অই কাস্টমার তো পরে আর কমপ্লেইন করতে আসবে না!)
তো, এইটা মোটামুটি ‘ইউনিভার্সাল’ নিয়ম। 🙂 মানে, মেসিয়ার বা ওয়েটার’রা এইটা জানে, এবং অটোমেটিক্যালি এইটা করে। এমনকি, একটু গরিব-কাস্টমার পাইলে উল্টা-ঝাড়ি দেয়, গরম-পরোটা খাইতে চাইলে ১০ মিনিট ওয়েট করেন! ** এইরকম জাস্টিফিকেশনও দেয়া পসিবল যে, পুরান পরোটাগুলা অরা বেচবো না তাইলে? মানে, কাউরে না কাউরে যেন ধরা খাওয়া-ই লাগবে! 🙂 ব্যাপারটা এই লেভেলের আন-এভেয়ডেবল! (অথচ তা তো না!)
(**গোলাপী এখন ট্রেনে সিনেমা’তে আছে, ববিতা আনোয়ারা আর রওশন জামিল যখন ভাতের হোটেলে খাইতে যায় তখন হোটেলের মালিক অদেরকে ঝাড়ি দেয়। মানে, কাস্টমারেরও গরিব-ধনী আছে।)
তো, এইরকমের অনেক চিটিং আছে দুনিয়ায়। যেইগুলা আসলে চিটিং-ও না, অনেকটা গ্রে এরিয়া! 😛 ধরা পড়লে বা ঝাড়ি খাইলে যেমন বলবে যে, খেয়াল করি নাই! বদলায়াও দিবে। বাট যখনই এইরকম চান্স পাবে ট্রাই করবে! এইটা তাদের “অধিকার”!
আমি শিওর যে, এইরকমের অনেক ট্রেইটস আমরা আমাদের প্রাকটিসের মধ্যে ক্যারি করি।…
এখন ব্যাপারটা এইরকম না যে, আপনারে সাবধান হইতে হবে! এলার্ট থাকতে হবে সবসময়। অইটা আরেকটা ব্ল্যাক-স্পটই ক্রিয়েট করতে পারে অনেক সময়, আমাদের আত্মার ভিতরে। বরং মাঝে-মধ্যে এইরকম ধরা-খাওয়া ঠিকাছে! ম্যান ইজ মরটাল!
দেখেন, সকালবেলার একটা ঠান্ডা-পরোটা কতকিছু ভাবাইতে পারতেছে, আমাদেরকে…
/সকালবেলার ঠান্ডা পরোটা
***
ট্রেডিশনাল-মিডিয়ার সত্য-বলার কোন দায় নাই। (সেইটা ডেইলি স্টার-ই হোক বা ইন্ডিয়া টুডে।) আগে যেই ঘটনা ছিল সেইটাও ছিল একটা ন্যাশনালিস্টিক-ভিউ তৈরি করার দায়। হিস্ট্রিক্যাল পারসপেক্টিভে যেইগুলারে মেবি সত্যি বইলা মনে হইতো।…
নিউজ-পেপার, টিভি-চ্যানেল যে সত্যি-কথা বলার এজেন্সি হিসাবে ফাংশন করে না – এই রিয়ালিটি’টা আমরা যত তাড়াতাড়ি মানতে পারবো, যত তাড়াতাড়ি ইউজড-টু হইতে পারবো তত বেটার আসলে।
মানে, কোন কথা মিডিয়া’তে আসছে মানে সেইটা সত্যি-কথা না, বরং কোন না কোন উদ্দেশ্য থিকা, ধান্দাবাজি থিকা এই কথা বলা হইতেছে। এইটা এখন আর কোন সন্দেহের ঘটনা না, প্রুভেন রিয়ালিটি একটা।
এখন মোটামুটি দুনিয়ার সব জায়গাতেই নিউজ-মিডিয়া হইতেছে পালা-কুত্তা – রাষ্ট্রের, কোন এজেন্সির, বা কোন কর্পোরেট হাউজের। আজাইরা জিনিস নিয়া হাউকাউ করা হইতেছে এদের কাজ। কারো না কারো পারপাস সার্ভ করা।…
সৎ-সাংবাদিকতা বইলা কিছু নাই না, এই ফর্মগুলা পিপলের কথা বলবে – এইটা যেমন কোন “সত্য” জিনিস না, একইসাথে এই ধারণা নিউজ-মিডিয়ার বিজনেস পলিসির লগেও আর ফিট-ইন করতে পারতেছে না।
একটা রিয়ালিটি-ক্রিয়েট করার এজেন্সি হিসাবে নিজেদেরকে এস্টাবলিশ করার পরে এই সো-কল্ড সাংবাদিকতার কাজ হইতেছে, একটা পাওয়ার-টুল হিসাবে অন্য এজেন্সিগুলার ফেভারে ইউজড হওয়া, কাউরে না কাউরে সার্ভ করা।
যেই দেশে টোটালিটেরিয়ান রিজম যত স্ট্রং, সেই দেশে নিউজ-এজেন্সিগুলা তত বেশি আজাইরা, ঘেউ ঘেউ করা কুত্তার বাচ্চা কয়েকটা। এদের এখন কাজ হয়া দাঁড়াইছে নিউজের নামে এন্টারটেইনমেন্ট ম্যাটেরিয়াল সাপ্লাই করা, বিরক্তিকর হয়া উঠা। আলাদা একটা এজেন্সি হিসাবে দিনে দিনে আরো হাস্যকরই হয়া উঠার কথা।
মানে, ব্যাপারটা এইরকম না যে, “জার্নালিজম” বইলা কিছু থাকবে না, বরং এইরকম পা-চাটা লোকজনরে আমরা সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী বা এক্টিভিস্ট হিসাবে আর নিতে পারবো না।
সত্য-বলার জন্য আমাদের নতুন কোন ফরম্যাটের দরকার পড়বে, আর একভাবে এই জায়গাগুলারে তৈরি করার কথা অনেকেই আমরা ভাবতে পারতেছি মনেহয়, যেইটা এপিরায়ড হইতে আরো কিছুদিন সময় নিবে…
অক্টোবর ০৪, ২০২২
এখন যে কন্সপিরেসি-থিওরিতে আমরা এতো বেশি কনভিন্সড, এর ব্যাক-এন্ডে ঘটনা হইতেছে, কোন পলিটিক্স নাই দেশে!
শেখ মুজিবুর রহমানের খুনের ব্যাপারেও কন্সপিরেসি থিওরির জায়গাগুলারে হাইলাইট করা হয় বেশি; যে সিইআইএ এই কাজ করাইছে, র-এর হাত ছিল, এই সেই। এখন এইগুলা ছিল কি ছিল না – সেইটা তো পয়েন্ট না; বরং বাকশাল কায়েম করার পরে পলিটিক্স যখন নাই কইরা দেয়া হইছিল তখনই এই কন্সপিরেসিগুলারে মেইন ঘটনা কইরা তোলা হইছিল।
যখনই কোন দেশে পলিটিক্স থাকে না, একটা ডিক্টেটরের শাসনে থাকে, তখন নরমাল পলিটিক্যাল ঘটনা ঘটার রাস্তাগুলারে সিলগালা কইরা দিয়া কন্সপিরেসিরে ফুয়েল দেয়া হয়। যেন দেশের পলিটিক্যাল ক্ষমতা হইতেছে গুটি কয়েক মানুশের হাতে!
বরং ঘটনা হইতেছে দেশের মানুশের পলিটিক্যাল রাইটস রদ করা হইছে, বাতিল করা হইছে বইলা কিছু মানুশের হাতে সব ক্ষমতা আছে বইলা মনে হইতেছে।
আমার ধারণা, আমাদের অনেকেরই এই আন্ডারস্ট্যান্ডিংটা আছে, বা তৈরি হইতেছে। যার ফলে এই নয়া বাকশালের পতনের জন্য কোন মিলিটারি-ক্যু আমরা চাইতেছি না। ইভেন বাম-বাটপারদের এবং ইসলামি-প্রপাগান্ডার সো-কল্ড বিপ্লবও আমরা চাইতেছি না।
আমরা টের পাইতেছি যে, পিপলের পলিটিক্যাল রাইটস দরকার – কথা-বলার, মিছিল-মিটিং করার, নিজেদেরকে নানানভাবে অর্গানাইজ করার। যদি এই রাইটসগুলা থাকে তাইলে কন্সপিরেসি’র জায়গাটা ইন-ভ্যালিড হয়া পড়ে।
ইভেন পিপলের স্বার্থে করা কন্সপিরেসিও খারাপ জিনিস। (মানে, এইভাবে টার্ম করা যাইতে পারে না।) কারণ কন্সপিরেসি’র মেইন ঘটনাই হইতেছে ম্যাস লেভেলে মানুশের পার্টিসিপেশনরে বাতিল করা। যার ফলে এইটা কখনোই মানুশের রাইটসরে বাতিল না কইরা ফাংশন করতে পারে না।
আমি বলতে চাইতেছি, একটা খারাপ-কন্সপিরেসির এগেনেস্টে ভালো-কন্সপিরেসি দরকারি জিনিস না এখন। বরং দরকার হইতেছে মানুশের পলিটিক্যাল রাইটস ক্লেইম করা, অই জায়গাগুলারে এনেবল করা। কন্সপিরেসিগুলা আছে, থাকবেও। কিন্তু এইটা কখনোই পলিটিক্সের জায়গা হয়া উঠতে পারে না।
যারা এইটা কইরা তুলতে চান, তাদের পলিটিক্যাল পজিশনটাতে আমাদেরকে আন-সাবস্ক্রাইব করতে হবে। যে কোন আইডিওলজিক্যাল বায়াসরে সাইডে রাইখাই এই কাজ করতে হবে।
***
কয়দিন আগে, মাস খানেক আগেই হবে, একটা স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশনের কমিটি বানানোর পরে সিনিয়র কোন ছাত্রনেতা নতুন কমিটির লোকজনরে এডভাইস দিতেছিলেন, নিজেদের মতো কাজ করবা, মূল দলের কথা কম শুনবা! এইরকম…
মোটামুটি সব স্টুডেন্ট-অরগানাইজেশনেই এই জিনিসটা আছে। মানে, উনারা একটা পলিটিক্যাল দলেরই ব্রাঞ্চ, এফিলিয়েটেড অর্গানাইজেশন; কিন্তু তা-ও যেন আলাদা-কিছু করতে পারেন উনারা, এইরকম একটা ভাব নিয়া থাকেন। ভাব বলতেছি কারণ এইরকম কোন উদাহারণ খুব কমই আছে যে, মেইন পলিটিক্যাল দল একটা স্ট্যান্ড নিছে, কিন্তু সেই দলের স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন সেইটা মানে নাই, বা সেইটার বিরোধিতা করছে।
মেবি এইরকম উদাহারণ ছাত্রদলের আছে। বিএনপি’র সাথে যখন জামায়াতে ইসলামী’র পলিটিক্যাল মোর্চা হইছে, তখনো ছাত্রদল ছাত্র-শিবিরের সাথে মিলে নাই। এখন সেইটা ভালো হইছে কি খারাপ হইছে – সেইটা অন্য আলাপ। কিন্তু এইরকম আলাদা একটা পজিশন ছাত্রদলের ছিল। বড় বড় পাবলিক ভার্সিটিগুলার বেশিরভাগগুলাতেই ছাত্রদল বিএনপি’র চাইতে আলাদা একটা স্ট্যান্ড নিয়া ছিল, এবং বিএনপি থিকাও এই নিয়া তেমন চাপ মেবি ছিল না।
এখন এইটারে ছাত্রদলের ম্যাচুরিটি বা ডিফরেন্ট আইডিওলজিক্যাল পজিশন হিসাবে না দেইখা বরং সিম্পলি এই জায়গা থিকাই দেখা যায় যে, একটা স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন হিসাবে উনারা স্টুডেন্টদের কমন সেন্টিমেন্টের লগে ছিলেন। মানে, এইটা তেমন কঠিন বা আন-ন্যাচারাল কোন ঘটনা ছিল না। ছাত্রদলের জন্য যেমন না, বিএনপি’র জন্যও না।
কিন্তু ছাত্রলীগ বা ছাত্র ইউনিয়নের কথা ভাইবা দেখেন, এইরকম কোন সিগনিফিকেন্ট ঘটনা কি ঘটছে কখনো?
এইখানে ছাত্র অধিকার পরিষদের কথাও বলা যাইতে পারে। যে, উনারা স্টুডেন্টদের কমন সেন্টিমেন্টের লগে আছেন, বা থাকতেছেন। উনাদের শুরু তো স্টুডেন্ট অর্গানাইজেশন হওয়ার ভিতর দিয়া, যেই কারণে এই পজিশন নেয়াটা রিলেটিভলি সহজ উনাদের জন্য। মূল দল বরং এখন ফর্ম করতেছে। যার ফলে এই ক্রাইসিসটা এখনো সামনে আসে নাই এতোটা। যে, উনারা মূল পলিটিক্যাল দলের বাইরে গিয়া আলাদা কোন পজিশন নিতে পারবে কিনা।
মানে, স্টুডেন্ট-অর্গানাইজেশনগুলা পলিটিক্যাল দলগুলারই লাঠিয়াল-বাহিনি, একটা ফিক্সড কমিউনিটির মধ্যে কাজ করে বইলা অই স্পেইসের কোন সামাজিক-সংগঠন না। যেই কারণে দেখবেন, প্রাইভেট ভার্সিটিগুলাতে এর দরকার পড়ে না। বরং আমি মনে করি, ছাত্র-সংগঠনগুলারে যদি সোশ্যাল-অর্গানাইজেশন হিসাবে আমরা দেখতে চাই, প্রাইভেট ভার্সিটিগুলাতেই সেইটা বেশি পসিবল আসলে। যদিও অবস্টেকল অইখানে কম না, কারণ বাংলাদেশে পলিটিক্যাল এক্টিভিটিই “নিষিদ্ধ” করা হয় নাই, যে কোন সামাজিক-সাংস্কৃতিক জায়গাগুলারেও কন্ট্রোলড ও করাপ্টেড কইরা রাখা হইছে।
***
বিজনেসে ফেইল মারলে নিজের ফ্যাক্টরিতে আগুন লাগায়া ইন্স্যুরেন্সে টাকা নেয়ার কথা শুনছেন কখনো? বা নিজের ঘরে আগুন দিয়া শত্রুর নামে মামলা দিয়া জেল খাটানোর কথা? কয়দিন আগেও তো কাছাকাছি রকমের একটা কেইস হইলো।
আমি বলতে চাইতেছি, আনলেস প্রুভেন আদারওয়াইজ, দেশে যে কোন নাশকতা, ন্যাশনাল-লেভেলের আকাম-কুকাম বাকশালিরা ছাড়া আর কেউ করতে পারে না।
“আমরা জানি না কে করছে” – এইরকমের কোন গ্রে এরিয়া যখনই ক্রিয়েট করার ট্রাই করা হবে, আমাদেরকে ধইরা নিতে হবে, নয়া বাকশাল পানি ঘোলা কইরা বিরোধীদের শায়েস্তা করার ধান্দা করতেছে। যে কোন ক্রাইম পাওয়ার-স্ট্রাকচারের লগে এসোসিয়েটেড একটা ঘটনা।
অক্টোবর ০৫, ২০২২
আমি খেয়াল কইরা দেখছি, কলকাতার প্যানপ্যানানি-সঙ্গীত থিকা আমরা (মোস্টলি এইটিইজ ও নাইনটিইজের জেনারেশন) যে মুক্তি পাইছিলাম, এর বড় একটা কারণ হইতেছে বাংলাদেশের ব্যান্ড-মিউজিক।
মুক্তিযুদ্ধের পর পরই আজম খান’রে দিয়া এই ব্যান্ড-মিউজিক শুরু হইলেও ১৯৮০-তে চিটাগাংয়ের ব্যান্ড সোলসের “সুপার সোলস” অ্যালবামের ভিতর দিয়া এর “জোয়ার”টা শুরু হয়। এর পরে চাইম (১৯৮৫), অবসকিওর (১৯৮৬), ফিডব্যাক (১৯৮৬) এর ক্যাসেটগুলা অই হাইটে নিয়া যায় যে, কলকাতার প্যানপ্যানানি-সঙ্গীত বাংলাদেশে বাতিল না হইলেও এক ধরণের আউট-ডেটেড হয়া উঠে।
ইন্টারেস্টিং জিনিস হইতেছে, এই গানগুলা যারা লেখতছিল, গাইতেছিল এদের সবাই-ই মোটামুটি টিন-এজার ছিল – স্কুল, কলেজে পড়া পোলাপাইন। (মেয়েদের ব্যান্ডও ছিল দুই-তিনটা।) এবং খালি ঢাকাতেই ছিল না, চিটাগাং, খুলনা, বরিশালের ব্যান্ডও ছিল। নিজেদের একটা ব্যান্ড বানানো ছিল ক্রেইজের ঘটনা।…
তো, আমরা হেমন্ত-মান্নাদে, বাপ্পি লাহিড়ী এবং পরে সুমন, নচিকেতা অঞ্জন শুনি নাই না, কিন্তু উনারা আমাদের মিউজিকের টেস্ট পুরাপুরি দখল করতে পারেন নাই। বরং ব্যান্ড-মিউজিকের ডিক্লাইনের সময়ে (মেবি অ্যারাউন্ড ২০০০) কলকাতার “জীবন-ঘনিষ্ঠ” সিঙ্গার’রা রিলিভেন্ট হয়া উঠতে শুরু করেন, বাংলাদেশের ইয়াং-এডাল্টদের মিউজিক-টেস্টে।
এইটা খুব অটোমেটিক্যালি হইছে বইলা আমার মনেহয় না। বরং ব্যান্ড-মিউজিকরে “বিজাতীয় সংস্কৃতি” “অপসংস্কৃতি” টাইপের ট্যাগ লাগায়া রবীন্দ্র-গুন্ডারা গালি-গালাজ করতে করতে এইটারে সোশ্যালি বাজে একটা জিনিস হিসাবে “প্রতিষ্ঠা” করছিলেন। আজম খান বলতেছিলেন, এক খান আতাউর রহমান আর ফেরদৌসি রহমান ছাড়া উনারে কেউ সার্পোট করেন নাই, যখন টিভিতে, রেডিও-তে উনার গান আন-অফিসিয়ালি নিষিদ্ধ করা হইছিল।
মানে, বাংলাদেশেই বাংলাদেশের গান বাজাইতে দেয়া হইতো না!
আরেকটা জায়গা থিকা স্লো-পয়জনিং হইছিল বইলা আমি মনে করি। যেমন ধরেন, আপনার ট্রাডিশন্যাল এবং এভারেজ কোন কবিতারে যখন কোন সিনিয়র-কবি, এডিটর কইবেন যে, “সুন্দর কবিতা হয়েছে!” তখন আনন্দে পাছা-দুলায়া যখন অই ধরণের কবিতাগুলাই লেখতে থাকবেন, আপনি তো আপনার জায়গা থিকা সইরা আসতে থাকবেন আসলে। তো, পরে গুরুজনদের নামে অথরিটি’র কাছে একসেপ্টেড ও এপ্রিয়িশিটেড হওয়ার লোভে (বা প্রেশারে) দুই-একটা একসেপশন বাদে বাংলাদেশের ব্যান্ড-মিউজিক ভেড়া হয়া উঠছিল। (যারা এই রিয়ালিটি মানতে পারেন নাই তাদের কেউ কেউ মেবি “আন্ডার-গ্রাউন্ড” হয়া গেছিলেন।…)
“আর বাংলাদেশের আসল গান তো হইতেছে “লোক-সঙ্গীত”! তুমরা ফোক-মিউজিক করবা!” – কলকাতার এই সাজেশন মাইনা নিয়া এই জায়গাতেও কনসানট্রেট করছে। এইটা যতোটা না ভালো-খারাপের মামলা, তার চাইতে অনেক বেশি ডিসট্রাকশনের বা সইরা যাওয়ার ঘটনাই হইছে আসলে।
এখন বাংলাদেশে কোন ব্যান্ড-মিউজিক নাই-না, বরং সেইটা মোস্টলি একটা অতীত-গৌরবের ঘটনাই হয়া আছে। কিন্তু কেমনে হইছে এইটা – এই জিনিসটা এনকোয়ারি করা দরকার না আমাদের?
/দ্যা রাইজ অ্যান্ড ফল অফ বাংলাদেশি ব্যান্ড-মিউজিক
…
[তো, এইটা হইতেছে আমার ইন্ট্রোডাকশন, আউট-লাইন। কিছু ফ্যাক্টস-ফিগার জোগাড় করতে পারলে, এইটা নিয়া ডিটেইলসে লেখবো, কোন সময়।]
অক্টোবর ০৭, ২০২২
রিসেন্ট হিস্ট্রিতে, বাংলাদেশে, আমরা সবসময় পলিটিক্যাল মোমেন্টগুলা ইন্টেলেকচুয়ালি লোকেট করতে ফেইল করছি। যেমন ধরেন, পাকিস্তান-হওয়ারে ইন্টেলেকচুয়ালি ডিফাইন করা হইছে – মুসলমান হইতে চাওয়া! হোয়ার অ্যাজ, এর মেইন সিগনিফেকন্স ছিল জমিদারি-প্রথা থিকা আজাদি পাওয়া। এইটা ছিল বাংলাদেশের পাকিস্তান হওয়ার কোর সিগনিফিকেন্স। ফজলুল হক ছাড়া এই ঘটনা ঘটতো না। মানে, ১৯৪৭-এ আইসা এই ঘটনা ঘটছে, কিন্তু এইটা যে ঘটবে সেই রাস্তা তৈরি হইছিল কৃষক প্রজা পার্টির ভিতর দিয়া।…
তারপরে ধরেন, বাংলাদেশ কায়েম হওয়াটারে বলা হয়, “বাঙালি জাতীয়তাবাদের” ঘটনা। যেইটা আরেকটা বুলশিট। বাংলাদেশের মানুশ “বাঙালি” হইতে চায় নাই, পলিটিক্যাল রাইটস চাইছিল। আমরা যদি পাকিস্তানের পার্ট হয়া থাকি তাইলে পাকিস্তানের গর্ভমেন্ট আমরা কেন চালাবো না! কিন্তু বাংলাদেশের মানুশের এই ডেমোক্রেটিক রাইটস মানা হয় নাই। ১৯৭০ সালেও বাংলাদেশের মানুশ ভোট দিছে। কিন্তু ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চের পরে বাংলাদেশ রাষ্ট্র তৈরি হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় ছিল না।
তারপরে ১৯৯১ সালে, কেয়ারটেকার গর্ভমেন্ট ফর্ম করার ভিতর দিয়া সরকারি-আমলাদের হাতে ক্ষমতা তুইলা দেয়া হয় নাই। কিন্তু এরও রিডিং দাঁড় করানো হইছে যে, পলিটিক্যাল লিডার’রা খারাপ! “শিক্ষিত” না, “ভালো-মানুশ” না! [যেন ঘুষ-খাওয়া, দুর্নীতি-করা, দালালি-করা সিভিল সোসাইটির লিবারাল-বদমাইশগুলা খুব ভালো!] অথচ ঘটনা ছিল পুরা উল্টা। রাষ্ট্রের সংগঠনগুলা এতোটাই করাপ্টেড ছিল যে, একটা ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশন করার মতোও ফাংশন করতেছিল না। সরকারি চাকর-বাকরদের কোন মেরুদন্ড নাই, কোন মোরালিটির সেন্স নাই, পলিটিক্যাল দলের পাপেট হয়া চলে সবসময়। অথচ এর ইন্টেলেকচুয়াল ব্যাখা বানানো হইছে, পলিটিক্যাল দলগুলা খারাপ!…
তো, এই “ভুলগুলা” কেন হয়?
মানে, ফার্স্ট কথা তো হইতেছে, এইগুলারে “ভুল” বইলা ভাবতে পারা যাবে না। এইগুলা ভুল না, এইগুলা ইনটেনশনাল ব্যাখা। সেকেন্ড হইতেছে, এই ইন্টেলেকচুয়ালিটির বেইজ হইতেছে সো-কল্ড শিক্ষিত-সমাজ, কলোনিয়াল-কালচার। মানে, একটা ব্যাখ্যা কার ফেভারে যাবে – সেইটারে খেয়াল কইরা ব্যাখ্যাটা করা হইতেছে না, বরং একটা ক্লাসের লোক হিসাবে সেই ব্যাখ্যাগুলারেই “রেশনাল” কইরা তোলার কাজটা করা হইতেছে সবসময়, যা অই গ্রুপটার ফেভারে যায়।
তো, এইখানে আমার কথা হইতেছে, ব্যাপারটা ঠিক ইন্টেলেকচুয়ালি ঠিকঠাক ভাবে দেখার ঘটনাও না, বরং যেহেতু আমরা “শিক্ষিত-সমাজ”রে, একটা প্রিভিলেজড-গ্রুপরে সেন্টার কইরা রাখতেছি আমাদের দেখাদেখিতে, আলাপ-আলোচনায়, সেইটা আমাদেরকে এইরকম “ভুলের” দিকেই নিয়া যাবে। এইটা তার ডেস্টিনেশন, এই ধরণের চিন্তার।
আমি মনে করি, যখনই বাংলাদেশে পলিটিক্যালি কোন ক্রুশিয়াল মোমেন্ট তৈরি হইতে পারছে, সেইটা এইরকম ইনটেনশনাল ‘ভুল-ব্যাখার’ ভিতর দিয়া বারবার পথ হারাইছে। এখনো যখন আরেকটা পলিটিক্যাল-মোমেন্ট তৈরি হওয়ার দিকে আমরা যাইতেছি ১৯৪৬-৪৭ এর মতো, ১৯৭০-৭১ এর মতো, ১৯৯০-৯১ এর মতো, তখন এই সময়ের পলিটিক্যাল-মোমেন্ট’টারে খেয়াল করতে পারা, এর স্পিরিট’টারে ধরতে পারাটা পলিটিক্যাল-মোমেন্টটারে ক্রিয়েট করতে পারার মতোই ইম্পর্টেন্ট ঘটনা। এইরকমের পলিটিক্যাল-মোমেন্টে কোন আইডিওলজি’রে আবিষ্কার করা বা রিলিভেন্ট কইরা তোলার চাইতে পিপলের ফ্রিডমরে সেন্টার কইরা না তুলতে পারলে, এই বাজে-ট্রাডিশন থিকা আমরা বাইর হইতে পারবো না। এইটা খেয়াল করতে পারাটা দরকার।
অক্টোবর ০৯, ২০২২
পাকিস্তান আমলে মুসলিম লীগরে কি কেউ ব্যান করছিল? মানে, পাকিস্তানে মুসলিম লীগের রাজনীতি আপসে আপ ইনভ্যালিড হয়া গেছিল। বা ধরেন, পলিটিক্যাল পার্টি হিসাবে বাকশাল’রে কি কখনো নিষিদ্ধ করা হইছে, বাংলাদেশে? কিন্তু এইটাও মোটামুটি অটোমেটিক্যালি নাই হয়া গেছে।
পলিটিক্যাল পার্টি হিসাবে BAL (Bangladesh Awami League)-ও বাতিল হওয়ার পথে আছে। পুলিশের আর সরকারি-কর্মচারীদের দল এখন এইটা। যতদিন এইদিন অবৈধ সরকার আছে, ততদিন এর আয়ু। সুবিধাবাদীরা এর লগে আছে। জাতীয় পার্টি’র সময় যেমন ছিল। এখন কাগজে-কলমে একটা কিছু আছে। BAL এইরকম একটা দলেই পরিণত হবে।
কারণ পলিটিক্যাল পার্টি টিইকা থাকে একটা দেশের মানুশের স্বার্থে। অথচ BAL’র সব কাজকামই হইতেছে বাংলাদেশেরে মানুশের এগেনেস্টে। বাংলাদেশের মানুশের পক্ষে দাঁড়ানোর মোরাল কোন বেইজ এর নাই। খালি সরকারি-ক্ষমতা দিয়া ভিজিবল হয়া আছে। ক্ষমতা হারানোর এক যুগের মধ্যেই এইটা দল পলিটিক্যালি ইন-ভ্যালিড হয়া উঠবে।
এখন এইটা যে হবেই – তা না, কিন্তু যদি না হয়, তাইলে বুঝতে হবে সামনে আরো অনেক খারাপি আছে!
মানে, যেইভাবে মুসলিম লীগের রাজনীতিরে বাতিল করার ভিতর দিয়া বাংলাদেশের দিকে হিস্ট্রিক্যালি আগানো গেছে; বাকশাল ও জাতীয় পার্টিরে বাতিল করার ভিতর দিয়া নন-ডেমোক্রেটিক ও ডামি-দলগুলার জায়গাটারে ইরিলিভেন্ট কইরা তোলা গেছে; একইভাবে BAL-রে বাতিল না করতে পারলে বাংলাদেশের মানুশের মুক্তি পসিবল হবে না আসলে। পলিটিক্যালি BAL’রে বাতিল করার ভিতরেই বাংলাদেশের রাজনীতির ভবিষ্যত ডিপেন্ড করতেছে।
অক্টোবর ১০, ২০২২
এইটা খুব ভুল-ভাবনা যে, মুসলিম লীগের লোকজন সবসময় খারাপ ছিল; বরং ১৯৪০-এর সময়ে মুসলিম লীগ করাটা তো খুবই প্রগেসিভ ঘটনা ছিল। কিন্তু পাকিস্তান কায়েম হওয়ার পরে দিনের পর দিন মুসলিম লীগ যখন মিলিটারিদের দালালি করা ছাড়া আর কোন পলিটিক্যাল রোল প্লে করতে পারে নাই, তখন মুসলিম লীগ করাটা কোন “প্রগেসিভ” ঘটনা তো থাকেই না, বরং একটা “খারাপ” জিনিস হয়া উঠছিল।
একইভাবে, যারা কালাচারালি “আগায়া থাকা” লোকজন ছিলেন ১৯৬০-১৯৭০-এ, তারা সবাই “বাঙালি জাতীয়তাবাদের” লোক ছিলেন। কিন্তু বাংলাদেশ রাষ্ট্র হওয়ার পর থিকাই এইটা জুলুমের সহযোগী একটা আইডিওলজি হিসাবে এমার্জ করছে। (যদিও ইন্টেলেকচুয়ালি লোকেট করতে আমাদের অনেক টাইম লাগছে…)
এই কারণে মুসলিম লীগের লোকজন যেইরকম “খারাপ” হয়া উঠছিল, আওয়ামী লীগ এবং বাঙালি-জাতীয়তাবাদের লোকজনও “খারাপ” হয়া উঠছে। কারণ উনারা এমন একটা ন্যারেটিভরে সার্পোট করতেছেন, যা দেশের মানুশরে জুলুম করার কাজেই ইউজ হইতেছে।
এই জুলুমের জায়গাটা যারা বুঝতে পারছেন, তারা একটা সময় মুসলিম-লীগ থিকা সইরা আসতে পারছেন। কিন্তু এখনো যেইসব “সৎ” “ভালো-মানুশেরা” বাঙালি-জাতীয়তাবাদের জায়গা থিকা সরতে পারতেছেন না, উনারা জুলুমের সার্পোটার হিসাবেই নিজেদেরকে “খারাপ-লোকদের” কাতারে ফেলতেছেন।
মানে, এইটা এতোটাই স্পষ্ট যে, যারা অই বাতিল আইডিওলজি থিকা ফিরতে পারতেছেন না, তারা নিজেরাও ফিল করার কথা এখন, প্রেশারটা। যে, আপনি আওয়ামী-লীগ/ছাত্রলীগ/সিপিবি/জাতীয়-পার্টি করেন এবং আপনি ভালো-মানুশ – এই দুইটা পজিশন বাংলাদেশের এখনকার কনটেক্সটে মোটামুটি কন্ট্রাডিক্টরি ঘটনা।…
আমি বলতে চাইতেছি, মানুশ যতোটা না খারাপ, তার চাইতে ভুল পলিটিক্যাল পজিশনও তারে “খারাপ” কইরা তোলে আসলে। আর এর বাইরে, ভালো-খারাপ মানুশ তো আছেই। কিন্তু ‘খারাপ কাজ না করতে পাইরা’ ভালো-মানুশ যেইরকম আছে, একইরকম ভাবে বেনিফিট না পায়াও ‘খারাপ কাজের সার্পোটার’ আছে, বা থাকতে পারে। আর এই জায়গা থিকা সইরা আসতেও টাইম লাগে।
কিন্তু যেইটা জরুরি, পুরান-চিন্তার অভ্যাস ছাড়তে না পারা মানুশদের ভুল-পজিশন নিয়াও সাবধান হইতে হবে আমাদেরকে।
***
পাবলিক-স্পেইসের একটা ক্রুশিয়াল রাজনীতি আছে। ঢাকার সরোয়ার্দি আর চিটাগাংয়ের সিআরবি’র জায়গা সরকারিভাবে দখল কইরা প্রাইভেট স্পেইস বানানোর সময়টাতে বলতেছিলাম, এইটা হইতেছে দেশ থিকা পাবলিক-স্পেইসগুলারে নাই কইরা দেয়ার ঘটনা।
এইটা আবার মনে হইতেছিল প্রাইমারি স্কুল বিল্ডিংগুলার দিকে তাকায়া। অনেক জায়গায় দেখি বড় বড় গেইটও বানাইছে। দেয়ালও তুইলা দিছে। (অথচ এইসব স্কুলের মাঠেই খেলতাম আমরা, এক সময়।) শুক্র-শনিবার তো বন্ধ থাকে এইগুলা। বা বিকালে ৪টা-৫টার পরে। চাইলে তো এইখানে কেউ টেকনিক্যাল স্কুল বসাইতে পারে, মেডিকেল চেক-আপ, আরো কতকিছুই হইতে পারে, সোশ্যাল-এক্টিভিটি। আবার মসজিদেই তো বিয়া পড়ানো যাইতে পারে। বিয়ার পরে মিলাদ হইতে পারে। আলাদা কইরা কনভেনশন সেন্টারের তো দরকার নাই। এইরকম অনেক কিছুই আছে।…
মানে, এইগুলা যে কেউ চিন্তা করেন নাই – সেইটা মনেহয় না আমার। কিন্তু পাবলিক-স্পেইস জিনিসটাই নাই হয়া যাইতেছে ধীরে ধীরে। তার কারণ মোটেই এইটা না যে, মানুশ অ-সামাজিক হয়া উঠতেছে 🙂 বরং এমন একটা পাবলিক-বিরোধী চক্র ক্ষমতাতে আছে যারা কোন পাবলিক গেদারিং’রেই ডরায়, এবং তারে সরায়া দিতে চায়।
টিএসসি’তে যে একবার কাওয়ালির প্রোগ্রাম হইতে পারলো না, এইটা রবীন্দ্র-কালচারের লগে যায় না বইলা না, বরং যারা কাওয়ালির ভক্ত, টুকটাক রবিগান না শুনলে উনাদের পেটেও গ্যাস জমে, যখন-তখন পাদের মতন বাইর হয়া যায় দুয়েকটা লাইন… ঘটনাটা হইতেছে পাবলিক-জমায়েতের, যেইটা বাকশালের কাছে সারেন্ডার করে নাই।
আজকে কোন সোশ্যাল-গেদারিং করাও রিস্কি বাংলাদেশে। কি জানি ষড়যন্ত্র হইতেছে! কোন জঙ্গি-হামলার জানি প্ল্যান করতেছে! এইভাবে মিডিয়া দিয়া ভিলিফাই করা হইছে। আর পাবলিক-স্পেইসগুলারে নাই কইরা দেয়া হইতেছে।…
আমি বলতে চাইতেছি, পাবলিক-স্পেইস না-থাকার কারণে আমরা সোশ্যালিও সাফার করতেছি। এনগেইজড হইতে পারতেছি না। যে কোন পাবলিক-গেদারিংয়ে আমরা ডরাইতেছি। বাজে কিছু হইতেছে নাকি আবার!
তো, মানুশ যদি মানুশরেই ডরায় একটা সমাজে, এর চাইতে বাজে আর কি হইতে পারে! বাকশালের পলিটিক্যাল জুলুম এইরকম একটা বাজে-অবস্থায় নিয়া আসছে আমাদেরকে।
Leave a Reply