০১.০১.২০২৪
পটকা ফুটানো কি ভালো না খারাপ?
পটকা ফুটানো কি ভালো না খারাপ? – এই নিয়া একটা আলাপ কয়দিন ধইরাই চলতেছে। কিনতু এইটা কোশচেন হিসাবে ন্যারো এবং মেইন জায়গাটারে আলাপের বাইরে রাখে বইলাই আমার কাছে মনেহয়। বরং কোশচেন’টা হইতেছে যে, বাংলাদেশে কোন ঘটনা সেলিব্রেট করতে চাইলে, কেমনে সেলিব্রেট করবো আমরা?
রাসতায় কি বাইর হইতে দিবে? মাঠে, পার্কে কি ফেমিলি, ফ্রেনডস নিয়া বইসা থাকতে পারবেন? মানে, আপনি যে সেলিব্রেট করতে চান, সেই খুশিটা আপনি দেখাইবেন কেমনে? কেমনে শো করবেন? [নিউ ইয়ার সেলিব্রেট করা যাবে কি যাবে না? – এইটা হইতেছে আরেকটা মাদারবোর্ড কোশচেন…]
আসল কথা হইতেছে, বাংলাদেশে যে কোন পাবলিক গেদারিং’রে, যে কোন সেলিব্রেশনরেই একটা খারাপ কাজ হিসাবে পোর্টেট করে এনটি-পিপল মিডিয়া এবং মিডিয়া-জম্বি পিপলরা। এইটা হইতেছে পয়লা কথা।
দুসরা কথা হইতেছে, তার মানে অবশ্যই এইটা না যে, পটকা ফুটানো দরকার বা এইটা খুব ভালো কাজ, বরং বাংলাদেশে সেলিব্রেশনের কোন উপায় নাই – এই জায়গাটারে হাইড করাটা কোন ভালো-কথা যে না, সেই কথাটাই বলা।
এইটা শুরু হইছে গত ১০-১৫ বছর ধইরা, যখন রাসতায় না নামতে পাইরা, বাসার ছাদে ছাদে সেলিব্রেশন শুরু হইছে। এখন ইদে-চানদেও পটকা ফুটানো হয়, আগেও হইতো, এখন এইটা বাড়ছে। কারন পাবলিক সেলিব্রেশনের উপায়গুলা বনধ কইরা দেয়া হইছে। রাসতায় নামলে খালি পুলিশ পিটাইবো না, ছাত্রলিগের কুততাগুলার হাত থিকা রেহাই পাওয়া যাবে না। একটা ডরের সমাজে আমরা আছি। চুপচুপ থাকাটা হইতেছে নিয়ম। এখন যদি বলাও হয়, কোন সমস্যা নাই রাসতায় নাইমা হাউকাউ করেন, বাজি ফুটাইয়েন না, তাইলেও ছাত্রলিগের ডরে কেউ টিএসসি’তে যাবে না, পাড়ার রাসতায় নামবে না; এবং এইটা বনধও হইছিল ছাত্রলিগের কু-কির্তির কারনেই (যারা জানেন, তারা মনে করতে পারবেন স্পেসিফিক ঘটনাটা)।
মানে, যে কোন সেলিব্রেশনই কিছুটা এনোনিয়ং, রেগুলার লাইফের চাইতে লাউড এবং ডিফরেনট। কিনতু এইটা ততটাই ‘নরমাল’ মনে হইতে পারে যতটা ‘নরমাল’ লাইফ আমাদের সেলিব্রেশনরে এলাউ করে। আনফরচুনেটলি, জুলুমের সমাজে যে কোন সেলিব্রেশনই পারভাশন ও উইয়ার্ড মনে হইতে থাকার কথা, বা একটা থোবড়ানো ঘটনাই হয়া উঠার কথা দিনে দিনে।
সেলিব্রেশন আমরা করতে পারবো-না না, সেলিব্রেশন করাটা যেন পাপ – এই খুঁতখুঁতানি আমাদের মনের মধ্যে সবসময় থাইকা যাওয়ার কথা। বাংলাদেশের এখনকার কনটেকসটে ব্যাপারটা কখনোই একটা ভালো-উপায়ে সেলিব্রেট করার ঘটনা না, বরং সেলিব্রেশন করাটা নিয়া ডরানোর ঘটনাই মেইন। যেইটা নিয়া আমার ধারনা, আমরা কথা বলতে নিজেদেরকে রাজি করাইতে পারতেছি না।
থার্ড এবং ক্রুশিয়াল জায়গা হইতেছে, এইরকমের সেলিব্রেশন খালি একটা ‘রেজিসটেনস’ না, একইসাথে একটা ‘রিপ্রেজেনটেশন’ও যে, মানুশ-জন তো ভালো আছে! কিছু এসথেটিক ছবি দরকার আমাদের। এবং সবচে ভালো হয় যদি আওয়াজ ছাড়া পটকা বানানো যায়। 🙂 পুলিশ-মিলিটারি যদি সরকারিভাবে এইগুলা সাপলাই দিতে পারে, বাজারে। যেইরকম ধরেন, গাজাতে মানুশ খুন করতে পারবে ইজরাইল, কিনতু কোন নিউজ হবে না, বা ছবি কেউ তুলতে পারবে না! ক্রসফায়ার যেই কারনে ‘সাকসেসফুল’ ছিল, যে এর কোন ছবি ছিল না; এখন ‘পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়ার’ও কোন ছবি পাইবেন না। এই ছবি না-থাকাটা ক্রুশিয়াল। একইভাবে, নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনের ছবিটা হইতেছে কোর-ঘটনা। খালি আওয়াজটা আমরা চাই না।
প্রিজনড-সেলিব্রেশন নিয়া কোন প্রবলেম নাই আমাদের। আমরা জাসট কোন হাউকাউ চাই না। পাখি মরে, বুড়া-মানুশ ও বাচ্চাদের সমস্যা হয়-না না, এইগুলা সাইডলাইনেরই আলাপ।
…
ধরেন, একজন মানুশ হাঁইটা যাইতেছে, তার গায়ে আপনি গু মাখায়া দিলেন। এতে কইরা লোকটার যত না অপমান হইলো, আপনি বরং বুঝতে পারলেন যে, জিনিসটা হইতেছে একটা গু।
তো, ছয়মাসের জেল দেয়ার মানে হইতেছে গায়ে গু মাখায়া দেয়া। বাংলাদেশের আইন-আদালত হইতেছে একটা টাট্টিখানা। এই টাট্টিখানার গু’য়ের গনধে সারা দুনিয়া মউ মউ করতেছে এখন।
০৪.০১.২০২৪
বাংলা-ভাষা কি নতুন চিনতার জন্য অসুবিধার?
এই আলাপে আমার পয়েনট দুইটা। এক হইতেছে, কোন ভাষায় কোন চিনতা নাই না, বরং কোন জায়গা থিকা আমরা দেখতেছি, সেইটা হইতেছে জরুরি ঘটনা, কোন ঘটনাগুলারে ‘চিনতা’ বইলা মার্ক করতেছি আমরা। এইটা হইতেছে অনেকটা মাওলানা রুমির এনেকডোটসের মতন যে, দুইটা গরু সারাদিন বাগদাদ শহরে ঘুরলো, কিছু খড়-বিচুলি ছাড়া আর কিছু দেখতে পাইলো না!
যেমন ধরেন, এক ধরনের আলাপ আছে, পাকিসতান পিরিয়ডে (১৯৪৭ – ১৯৭১) বাংলাদেশে তেমন কোন ইনটেলেকচুয়াল কাজ-কাম হয় নাই, অথচ অই সময়টারে কেমনে দেখতে হবে – অই দেখার নজরটাই আমরা তৈরি করতে পারি নাই এখনো। তার মানে, এইটা না যে, অনেক বড় বড় কাজ হয়া গেছে, যেইগুলা আমরা দেখতে পাইতেছি না, বরং কেমনে দেখবো – অই জায়গাটা তৈরি না হইলে, জিনিসগুলারে লোকেটই করতে পারার কথা না আমাদের।
দুসরা ঘটনা হইতেছে, সেনস অফ অরিজিনালিটির চিনতা’টা থিকা সরতে পারাটা ভালো; একেকটা ভাষায় চিনতার একটা হিসট্রি আছে, যেইটা একইরকম না; এই ডিফরেনসগুলারে মাইনা নিতে পারাটা বেটার, এক কইরা ফেলার চাইতে। অনেক ভাষায় অনেক কিছু নাই, অনেক ভাষায় অনেক কিছু থাকবেও না।
যেমন ধরেন, আলস্কায় এসকিমোদের ভাষায় বরফের ১০টা নাম আছে, এখন বাংলাদেশে তো এইটা থাকবে না! বা বাংলাদেশে যা ছিল ধানের/ভাতের ১০টা ভেরিয়েশন আছে (সেদ্ধ, আতপ, জাউ, পান্তা, খুদ, পোলাও…)।
মানে, সব ভাষারই আলাদা গঠন আছে, এবং ঘটনা হইতেছে ভাষাটা এনাফ ফেক্সিবল কিনা, নতুন চিনতা বা আইডিয়া আপনি সেইখানে নিয়া আসতে পারেন কিনা। এইখনে বাংলা-ভাষাতে ঘটনা হইতেছে, ভাষারে রিজিড কইরা রাখাটারে যে ‘শুদ্ধতা’ বইলা চালানো হয় – এইটা অথরিটির সমস্যা, ভাষার না।
বাংলাদেশে যেই ভাষায় আমরা কথা কই, সেই ভাষাতে লেখতেই আমরা ডরাই। আর অই ভাষাতে চিনতা করতে পারবো – এই সাহসটাই করতে পারি না। তো, এইটা যতটা না ভাষার সমস্যা, তার চাইতে নিজের ভাষারে ক্লেইম না করতে পারার ঘটনাটাই বেশি ঘটে আসলে।
বিদেশি ভাষায় যেইরকম বেশিদূর পর্যনত চিনতা করতে পারবেন না আপনি, কলোনিয়াল বাংলা-ভাষাতেও ফ্রিলি চিনতা করতে পারার কথা না আমাদের। ভাষা এইখানে অবসটেকল হিসাবে কাজ করে, মিডিয়াম হিসাবে না। সমস্যাটা এই জায়গাটাতে।
তারপরও নিজের ভাষাতে চিনতা করতে পারলেই নতুন নতুন চিনতা তৈরি হবে অটোমেটিকালি – তা না, বরং দুনিয়ার অন্য চিনতাগুলার লগে এনকাউনটার যত বেশি হবে, সেইটা ঘটতে পারার চানস তত বাড়বে আসলে। ভাষা খালি চিনতার জায়গাটারে আগায়া দেয় না, বরং নতুন নতুন চিনতা ভাষার জায়গাটারে এক্সপানড করে। যখন আপনার কনসার্ন হবে ‘শুদ্ধ-ভাষায়’ লেখা, সেইটা কখনোই ‘নতুন-চিনতা’র জায়গাগুলাতে রিচ করতে পারার কথা না; কারন যেই ইসটেনডারড অলরেডি তৈরি হয়া আছে, যেই নিয়ম অলরেডি আছে তারে এজ ইট ইজ রাইখা নতুন ইসটেনডারড, নতুন নিয়ম তো তৈরি হইতে পারে না!
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, বাংলা-ভাষার সমস্যাটা মেইনলি ‘শিকখিত-গিরির’ সমস্যা, যেইটা একটা সমস্যা অবশ্যই, কিনতু সেইটারে বাংলা-ভাষার সমস্যা হিসাবে মার্ক করাটা চিনতা করতে পারার সাহস না-থাকারই ঘটনা অনেকটা।
০৭.০১.২০২৪
বাংলাদেশের রাজনীতির ছবি: আ মিসিং জনরা?
আগে তো ছিলই, কিনতু শহীদুল আলম নাইনটিইজের দিকে কোমপানি খোলার পরে ঢাকা শহরে ফটোগ্রাফার অনেক বাড়ছিল, এখনো জিনিসটা ফেশনেবল-পেশা হিসাবে চালু আছে; যদিও মোবাইল ফোনের কারনে এখন কম-বেশি অনেকেই ছবি তুলতে পারেন, টেকনিকগুলা খেয়াল করতে পারেন। ইসট্রিট-ফটোগ্রাফি, মোবাইল-ফটোগ্রাফি, ফুড বা প্রডাকট ফটোগ্রাফি… নানান কেটাগরিতে এভারেজ কোয়ালিটি বাড়ছে, ছবি তোলার; দেখতে দেখতেও তো অনেকে বুঝতে পারেন কিছু জিনিস।
মানে, বাংলাদেশের বা আমাদের আশে-পাশের অনেক এসথেটিক ফটো আমরা পাইছি, পাইতেছি। ইসপেশালি, “উন্নয়ন”-এর অনেক সুনদর সুনদর ছবি দেখতে পাইবেন। কিনতু পলিটিকাল ছবি খালি কম না, বরং বলা যায় মিসিং-ই এক রকমের। মানে, এইরকম কোন ফটোগ্রাফারের নাম কি কইতে পারবেন যিনি কেটাগরি হিসাবে “পলিটিকাল ছবি” তুলেন বা তুলতে চান… (থাকলেও থাকতে পারে, কিনতু অই তো, পাবলিকলি তেমন একটা দেখি না বা চিনি না উনাদেরকে আমরা)
তো, এইটা কেমনে হইলো? পলিটিকালি-ভোঁতা (ইয়েট এসথেটিক) – এই গ্রুপ অফ প্রফেশনালস কেমনে পাইলাম আমরা? বেপারটা তো এইরকম না যে, আজকে রাসতা-ঘাটে বাইর হইলে নাটকগুলার ডকুমেনটেশন করা যাবে না, ক্যামেরা দিয়া; বরং এইটা তো সাবজেকট হিসাবে রিতিমতো “ইদ” হওয়ার কথা!
২০১৪-তে আমরা পাই নাই, ২০১৮-তে আমরা পাই নাই, আজকে ২০২৪-এও পাওয়ার কোন চানস আসলে নাই। ঘটনা এইটা না যে, এই ছবিগুলা তোলা রিসকি, অইটা তো আছেই; কিনতু তারপরও এই ধরনের ছবি যে তোলা যায়, বা তুলতে হবে অই কনসাশনেসটা দেখবেন কম-ই। মানে, বেপারটা তো খুব একটা এসথেটিক হবে না তাইলে!
আমি বলতে চাইতেছি, বাংলাদেশে ‘এসথেটিক’ বইলা যেই জিনিসটা দাঁড়াইছে, সেইটাই হইতেছে ‘নন-পলিটিকাল’। কোন একটা পলিটিকাল মিনিং থাকার মানেই হইতেছে সেইটা আর খুব একটা ‘এসথেটিক’ না, মানে, সুনদর না!
তো, এই জিনিসটা আলাদা ভাবে, এবং একদিনে তৈরি হয় নাই; আমাদের আর্ট-কালচারের ধারনার ভিতরেই এইটা খুব ভালো-ভাবে আছে। আপনি “জীবিকার” কারনে পাওয়ারের পা চাটতে পারবেন – এইটা জায়েজ আছে, কিনতু মইরা গেলেও কোন পলিটিকাল পজিশন নিতে পারবেন না! কারন তাইলে আর্ট-কালচারের খাতা থিকাই আপনার নাম উইঠা যাবে। (তবে সুইসাইড করতে পারেন, মরার পরে নাম ফাটার একটা চানস থাকে ভালো!)
তো, বাংলাদেশের এখনকার সময়ের পলিটিকাল ইমেজগুলারে ‘মিসিং’ এবং ‘আন-ইসপোকেন’ রাখার ভিতর দিয়া একটা ‘এসথেটিকাল’ পজিশনই এচিভ করা হয় না, বরং এই ‘এসথেটিকস’-এর ভিতর দিয়া একটা এনটি-পিপল পলিটিকাল রিজিমরেই সার্পোট করা হয় বইলা আমার ধারনা।
০৯.০১.২০২৪
Hatred বা ঘৃনার চাইতে indifference বা ‘আমার কিছু যায় আসে না’ আরো বাজে একটা ইমোশন; পাবলিক ইসুতে এইটাই হইতেছে আসল ইভিল। মানে, বেপারটা বেশিরভাগ সময় না-দেখার বা না-জানার না, বরং খেয়াল না-করার, জরুরি মনে না-করার।
আমার একটা ফেভারিট এগজামপল হইতেছে, আশির দশকে জেলা-শহর বা থানা-সদরগুলাতে রিকশা একটা মিডল-ক্লাস ভেইকেল ছিল; রিকশার সিটে মালিক বসলেও ‘কাজের লোক’ বা ‘হেলপিং হেনড’রে রিকশার পাদানিতে, সিটের নিচের জায়গাটাতে বসানো হইতো; মানে, এইটা কোয়াইট নরমাল একটা ঘটনা ছিল। রিকশার সিটে ‘মালিক’ বইসা রইছে, তার পায়ের কাছে কুইচচা মুরগির মতন তার ‘কাজের লোক’ বইসা আছে, রিকশাঅলার সিটের নিচের রড’টা ধইরা। এইটা কেউ দেখতো না – তা না, কিনতু ‘কাজের লোক’ তার ‘মালিক’-এর সাথে রিকশার সিটে বসবে – এইটা তো পসিবল না! ঘটনা হইতেছে অই জায়গাটাতে, যেইটা ঘটনাটারে ‘নরমাল’ কইরা রাখতো আমাদের চোখের সামনে। কিনতু যখন আমরা বুঝতে পারছি যে, ‘কাজের লোক’ হইলেও তারে হাঁস-মুরগির মতন সিটের নিচে বসায়া রাখাটা যে তার সাব-হিউম্যান বানায়া রাখে, তখন এইটা আর কনটিনিউ করতে রাজি করতে পারি নাই আমাদেরকে। এইটা নাই হয়া গেছে এখন।
কেউ ঘৃনা থিকা এই কাজ করতো না, বরং এক ধরনের ইন-ডিফরেনট থাকার ভিতর দিয়া এইটা পসিবল হইতো আসলে। একইভাবে দুনিয়ার যত জুলুম, অবিচার – মোটামুটি এই জায়গাটা থিকাই অপারেট করে আসলে যে, ‘আমার তো কিছু যায় আসে না!’ বা ‘আমি তো খেয়াল করি নাই’ বা ‘আমি তো বুঝতে পারি নাই’!
আমার কথা হইতেছে, এইটা এতোটা না-বুঝতে পারার ঘটনা না, বরং এগজিসটিং যেই বেইজটা আছে চিনতার, তারে কোশচেন করতে রাজি না-হওয়ার ঘটনাই অনেকটা।
মানে, এইরকমের পারভার্ট তো অবশ্যই আছেন, যারা জুলুম করাটারে, অবিচার করাটারে, ডাকাতি করাটারে তার ‘অধিকার’ মনে করেন; কিনতু অইটাও পসিবল হয়, অন্য মানুশের চিনতা, ফিলিংস এবং অধিকারের জায়গাগুলার বেপারে ইন-ডিফরেনট থাকার ভিতর দিয়াই আসলে।
১০.০১.২০২৪
মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’র বানান বিষয়ে সাজেশনগুলা কেন একসেপটেড হয় নাই?
বাংলা-ভাষার হরফ, শব্দ ও বানান নিয়া নানান সময়ে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ কিছু সাজেশন রাখছেন। উনার সবচে পপুলার লেখাটা হইতেছে বাংলা ১৩৩১ সালের, ইংরেজি ১৯২৪ সালের – “বাংলা বানান সমস্যা”। যেইটার কিছু সাজেশন খুবই লজিকাল। এমনকি “শোজা বাংলা” নামে একটা তরিকাও উনি সাজেস্ট করছিলেন বাংলা ১৩৫৬ (ইংরেজি ১৯৪৮) সালে। 🙂 কিন্তু তেমন কেউ ফলো করে নাই।
না করার অনেকগুলা কারণ এজিউম করা যায়। এর মধ্যে পলিটিকাল ঘটনাটাই মেইন মনেহয় আমার কাছে। মানে, এই যে সাজেশনগুলা এইগুলা আসার কারণগুলাও অনেকটা পলিটিকাল। ১৯২০-৩০’র দিকে যখন ব্রিটিশ-শাসনরে না-মানার একটা কালচারাল ঘটনাগুলা শুরু হইতেছিল তখন কলোনিয়াল রিটেন-ফরমের কিছু জিনিস রিভিউ করা হইতেছিল, যেইটা পজিটিভলি নিতে পারছেন অনেকেই। এরপরে, পুব-পাকিস্তান হওয়ার পরেও কিছু ঘটনা ঘটতেছিল, যেইটারে পুরাপুরি নেগেটিভ একটা ঘটনা হিসাবে আমরা মনে রাখি। যে, বাংলা-ভাষারে উর্দু-করন, আরবি-করন করার পলিটিকাল ষড়যন্ত্র হইতেছিল তখন। (মানে, অই ঘটনাগুলা যে ছিল না – তা না, কিনতু অইগুলা আসলে হালে পানি পায় নাই, বাংলাদেশের তেমন কোন রাইটার, সাহিত্যিক, ইনটেলকচুয়াল এই পলিটিকাল প্রজেকটে পারটিসিপেট করেন নাই।) সারপাইজিংলি, বাংলাদেশ হওয়ার পরে এই ধরণের ঘটনা খুব বেশি দেখা যায় নাই, আর তার কারণ এইটা না যে, ভাষা নিয়া সব জিনিসের ফয়সালা হয়া গেছে, বরং এক ধরণের “শিকখিতপণা”র কচুরি বাংলা-ভাষার নদিরে আটকায়া ফেলছে। যেই কারণে লিখিত-বাংলা দিন কে দিন (ডে বাই ডে) আরো ডেড একটা জিনিসে পরিণত হইতেছে। বাংলা বানান লেখা ও শেখার চাইতে ইংলিশ বানান লেখা ও শেখা এখন বেশি ইজি।
এখন বানান ঠিক করলেই বাংলা-ভাষা লাইভ হয়া উঠবে না। কিন্তু এইটা উচচারণ-বেইজড হইলে লেখতে কম ঝামেলা হবে। (হুমায়ূন আজাদের বুৎপততি-গুনডামি এবং বৈজ্ঞানিক-কুসংসকাররে আমলে নেয়ার কোন দরকার নাই আসলে আমাদের।)
পলিটিকাল ঘটনার বাইরেও আরেকটু ক্রুশিয়াল ঘটনা হইতেছে সাহিত্যিক ও ইনটেলেকচুয়াল অথরিটি। এইটা বেশিরভাগ সময় কোন না কোন ইনসটিটিউটের ভিতর দিয়া তৈরি হয়; যেমন, বিবিসি’র ইংলিশ, বাংলা একাডেমি’র বাংলা, এইরকম। উনারা অথরিটি। এর বাইরে একজন সাহিত্যিক বা ইনটেলেকচুয়ালও অনেকসময় এইরকম অথরিটি হয়া উঠতে পারেন। এখন মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ্ টুকটাক সাহিত্য করার কোশিশ করছেন, কিন্তু আসলে তো হয় নাই তেমন; সাহিত্যিক-অথরিটি না থাকলে তার ভাষা নিয়া সাজেশন ফলো করার উদাহারন তেমন একটা নাই বাংলা-ভাষায়। আর উনার ইনটেলেকচুয়াল অথরিটিও তো কলকাতা ভারসিটি থিকা কম-ই ছিল। তারপরে ধরেন, উনি যে “ইসলামি সাহিত্য” করছেন সেইটা একটা পজিটিভ-পয়েনট না, বরং ঝামেলার জিনিস-ই হইছে। তার চাইতে আরো বড় গোড়ামির ঘটনা হইতেছে বাংলা বানান কি হবে সেইটা তো ঠিক করবেন কলকাতা ভারসিটির লোকজন, পাকিসতানের লোকজন তো এইটা করতে পারে না! অরা তো বাংলা-ই না! পাকিসতান মানে তো উরদু, কিনতু ইনডিয়া মানে হিনদি না – এই যে ভুল রাজনিতি, এর ভিতর থিকা আন-ফরচুনেটলি আমরা এখনো বাইর হইতে পারি নাই, এখনো।
লাসট এবং ক্রুশিয়াল ঘটনা হইতেছে, ভাষা কোন থিওরি বা সাজেশন মাইনা যতটা না বদলায় তার চাইতে বেশি বদলায় অভ্যাসের ভিতর দিয়া, প্রাকটিসের ভিতর দিয়া। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ যেই সাজেশন-ই রাখছেন উনি নিজে সেইগুলা প্রাকটিস করতে পারেন নাই; বা পারার মতো অবসতাও মেবি ছিল না আসলে। মানে, লেইখা আপনি কই ছাপাইবেন? – কোন পত্রিকায়, বা বইয়েই তো, এখন এডিটর বা পাবলিশার যদি সেইটা না মানেন, আপনার পক্ষে তো পসিবল না সেইভাবে লেখাটা। এখন অনলাইনে লেখার কারনে শিকখিত-বলদেরকে ইগনোর কইরা তা-ও কিছু লেখতে পারতেছেন আপনি, কিনতু যখন লেখা-প্রকাশ মানেই ছিল কোন না কোন পত্রিকাতে লেখা ছাপানো বা কোন পাবলিশার দিয়া বই ছাপানো; উনারা ‘প্রুফ’ না দেইখা তো বই ছাপানোর কথা না; এমনকি কোন রাইটারের তো সেই সাহস করার কথা না। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ সেই সাহস করতে পারতেন কিনা – এইটা অবশ্যই একটা ঘটনা, কিনতু সিচুয়েশনটারেও কনসিডারেশনের বাইরে রাখাটা ঠিক হবে না আর কি।
তবে বানান এবং হরফের ব্যাপারে যেই জিনিসটা সবচে বেশি ইগনোর করা হয়, আমার ধারনা, সেইটা হইতেছে – এর ভিজিবিলিটির এসেনেস’টা। যে, বানানের পয়লা ঘটনাই তো হইতেছে, চোখে দেখা, তারপরে সেই হরফ/ভিজুয়ালটারে মুখে বলা। যেমন ধরেন, আমরা যখন ইসকুলে পড়তাম, তখনকার সময়ে “বাড়ী” “পাখী” ছিল “শুদ্ধ”, পরিক্ষার খাতায় “বাড়ি” “পাখি” লেখলে নামবার কাটা যাইতো; এখন ‘ভুল’ লেখতে লেখতে জিনিসগুলা আর ‘ভুল’ নাই। কিনতু ভিজিবিলিটি’টারে কনসট্রাকট করার, করতে পারার একটা ঘটনা এইখানে সবসময় আছে, থাকবেও আর কি!
…
আজকে অফিসে এক কলিগ বলতেছিলেন (ফানি টোনে-ই) যে, আমার ছেলে’রে নিয়া কোন চিনতা নাই, মাশাললা খাড়ার উপরে মিছা-কথা কইতে পারে কনফিডেনটলি, তার মা ছাড়া আর কেউ ধরতে পারে না, কোয়ালিটি মোটামুটি আমাদের পিএম’র মতো… সে সারভাইব করতে পারবে, বাংলাদেশে; কোন প্রবলেমে পড়বে না।
কিনতু চিনতায় আছি মেয়েটারে নিয়া, অইরকম মিছা-কথা কইতে পারে না, কি যে হবে! তাঁরে নিয়া চিনতা’তেই আছি! বাংলাদেশে তো পুরা আন-ফিট।
তখন অনেকে হাসলেও, তার কনসার্ন যে আসলেই সত্যি, সেইটা টের পাইতেছিলাম। আপনারে খালি চালাক হইলেই হবে না, অনেকবেশি ‘ধুরন্ধর’ এবং ‘বদমাইশ’-ও হওয়া লাগবে; চুরি-ডাকাতি করলেই হবে না, সেইটা নিয়া বুক ফুলায়া কথাও বলা লাগবে! এই ‘কোয়ালিটি’ সবার থাকে-না না, এই ‘কোয়ালিটি’ কি আপনি চাইবেন কিনা আপনার ছেলে-মেয়ে’র জন্য – কোশচেন আসলে সেইটা। বা আপনার ছেলে-মেয়ে’র সেই সাকসেস নিয়া প্রাউড ফিল করার মতো বদমাইশ হইতে পারবেন কিনা!
অবশ্য কিছু মানুষরে দেখি যে পারতেছেন তারা ইয়ার-দোস্তদের এইরকম বদমাইশি-সাকসেস শেয়ার করতে। আমি মনে মনে ডরাই, এইরকম বন্ধু-ভাগ্য আমার যেন কখনো না ঘটে।
১২.০১.২০২৪
আওমি-লিগ “গনতান্ত্রিক দল” না, বরং সবসময় পিপল কনসেনটরে এড়ায়া ক্ষমতায় থাকার এবং যাওয়ার ট্রাই করছে।
১৯৭৫-এ একদলীয় শাসন বাকশাল তৈরি করা, ১৯৮৬-তে এরশাদরে বৈধতা দেয়া জাসট “বিচ্ছিন্ন” কিছু ঘটনা না, এইরকম ঘটনা আরো অনেক আছে, যার একটার কথা বলতেছিলেন আবুল মনসুর আহমদ। ১৯৫৫ সালের ঘটনা; পার্টি হিসাবে আওমি-লিগ ফর্মড হয় ১৯৪৯ সালে, তার ৬ বছরের মাথাতেই, পাওয়ারের pet বা পালা-কুত্তা হওয়ার পটেনশিয়ালিটি শো করছিল তারা।
এখন আবুল মনসুর আহমদ যেহেতু আওমি-লিগের লিডার ছিলেন উনি ‘গনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান’ হিসাবেই দেখছেন, কিনতু ইতিহাসে আওমি-লিগের ‘গনতান্ত্রিক’ হওয়ার নমুনা কম-ই আছে, ইসপেশালি বাংলাদেশ হওয়ার পরে সেই নজির নাই-ই আসলে, এক রকমের।
…
“এই সময় (১৯৫৫ সালে) গর্বনর-জেনারেল একটি গণ-পরিষদের বদলে একটি শাসনতন্ত্র কনভেনশন গঠনের জন্য এক অর্ডিন্যান্স জারি করিলেন। এটা স্পষ্টঃতই অগণতান্ত্রিক হইল।… আমরা (আওয়ামী লীগ) নমিনেশন পেপার দাখিল করিলাম (কনভেনশনের নির্বাচনের)। আর কোন পার্টি নমিনেশন ফাইল করিল না।… ১০ই এপ্রিল ফেডারেল কোর্ট কনভেনশন গঠনে বড়লাটের ক্ষমতা নাই, সাধারণ গণ-পরিষদ গঠন করিতে হইবে, বলিয়া রায় দিলেন।… গণতন্ত্রের নিশ্চিত জয় হইল। কিন্তু এ জয়ে আওয়ামী লীগ শরিক হইতে পারিল না। গণতন্ত্রের জয়ও যে কোনও দিন গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের পরাজয় ও লজ্জার কারণ হইতে পারে, ঐ দিনই প্রথম আমার সে কথা মনে পড়িল।”
/আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর, আবুল মনসুর আহমদ (প. ২৭৫- ২৭৬)
১৪.০১.২০২৪
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের ভুল-ভাল হিসাব তো মোটামুটি মিনিটে মিনিটে পাই আমরা; কিনতু তেল, গ্যাসের (সিএনজি, এলএনজি) রিজার্ভের কি অবস্থা?* আজকে সকালে গাড়িতে তেল নিতে গিয়া একটা হাউকাউয়ের সামনে পড়লাম। তখন মনে হইলো জিনিসটা।
পেট্রোল পামপে সিএনজি’র লাইন অফ, গ্যাস নাই; একজন আইসা শুরুতে চোটপাট, পরে অনুনয়-বিনয় শুরু করলো যে, ফিরা যাওয়ার মতো অবসতাও নাই; কইলো, ভাই, সিএনজি’তে আর থাকবো না, এলএনজি করায়া ফেলবো গাড়ি। তখন পামপের লোকটা চেইতা গেল, সিএনজি-এলএনজি যা-ই করেন, কোন লাভ নাই; আরে ভাই, সরকারের কাছে ডলার নাই, কোনটাই কিনতে পারে না, এখন আমাদের লগে চোটপাট দেখাইলে হবে! সরকাররে কিছু কইতে পারেন না, অইখানে তো চুপ! কোনদিনই ৮টার পরে গ্যাস থাকে না। এখন না পাইলে আমরা বেচবো কই থিকা!…
তো, কয়দিন আগে খবরে দেখছিলাম, কই কই নাকি পচচুর গ্যাস পাওয়া গেছে, ১০০ বছর চলা যাবে; তো, কি খবর অইগুলার? নাকি পেটের গ্যাসের মতো ঢেকুর তুইলা শেষ কইরা ফেলছে আবার? 🙂
…
*এমনকি ধরেন চাইল, ডাইল, আলু, পেঁয়াজের…? যদি এনাফ মজুত থাকে এবং সাপলাই লাইন ঠিক থাকে, তাইলে কেউ-ই দাম বাড়াইতে সাহস পারতো না, বা দাম বাড়ায়া বাজারে টিকতে পারতো না; যখনই সাপলাই/আমদানি কমতে শুরু করছে, তখনই বাজারে দাম বাড়তে শুরু করছে; কারন একজন ব্যবসায়ি যখন জানে যে, নেকসট চালান ২/৩ মাস আগে আসবে না, তখন দাম নিয়া সে গেইমটা খেলতে পারে ইজিলি…
১৬.০১.২০২৪
বাংলাদেশের এখনকার দুর্ভিক্ষ-অবসথা গভমেনটের মেগা-প্রজেকটগুলার একটা আউটকাম
অমর্ত্য সেনের লেখাতে আবার চোখ বুলাইতে গিয়া জিনিসটা চোখে পড়লো। পয়লা কথা হইতেছে, যে কোন চিনতা কয়েন করার পরেও কমন-সেনসে আসতে অনেক সময় নেয়, অমর্ত্য সেন উনার বইটা ছাপাইছিলেন ১৯৮১ সালে, উনি খুব ভালোভাবেই প্রমান করতে পারছেন যে, খাদ্যদ্রব্য না থাকার কারনে দুর্ভিক্ষ হয় না, বরং লোকজন যখন কিনতে পারে না তখন দুর্ভিক্ষ হয়। ট্রাডিশনালি FAD (Food Availability Decline)’রে দুর্ভিক্ষের কারন বইলা দেখানো হইতো, কিনতু উনি দেখাইছেন লোকজন যা কামাই করে, সেইটা দিয়া খাবার-দাবার সে কিনতে হিমশিম খায়, একটা সময় গিয়া দাম তার আউট অফ রিচ হয়া যায়, উনি এইটারে নাম দিছেন Exchange Entitlements, যেইটা দুর্ভিক্ষের কারন।
তো, এখনো দেখবেন, সরকারি লোকজন বলে, বাজারে তো জিনিসপত্রের অভাব নাই! আসলেই নাই, কিনতু মানুশের কেনার মতো অবসথা নাই। এইটাই দুর্ভিক্ষ-অবসথা!
দুসরা কথা হইতেছে, উনি একটা টার্ম কয়েন করছেন – Boom Famine নামে। এইটা আগে খেয়াল করি নাই, উনি বলতেছিলেন, ১৯৪৩ সালে বাংলার দুর্ভিক্ষের মেইন কারন ছিল সরকারি খরচ; ব্রিটিশ সরকার টাকা ছাপায় খরচ করতেছিল, এর ফলে ইনফ্লেশন বাড়ছে, আর টাকার দাম কইমা গেছিল; প্রডাকশন কম হইছে বইলা দুর্ভিক্ষ হয় নাই, বরং সরকার খরচ বাড়াইছে, বেশি কইরা টাকা ছাপাইছে বইলা টাকার দাম কমছে; এইটা সবচে বড় একটা কারন, বা ট্রিগারিং পয়েনট’টা।
সরকারের খরচ বাড়ানো > বেশি কইরা টাকা ছাপায়া সেই খরচ মিটানো > টাকার দাম কইমা যাওয়া > জিনিসপত্রের দাম বাইড়া যাওয়া > মজুতদারি ও নানান কারসাজি শুরু হওয়া > ডিসট্রিবিউশনে ঝামেলা, ভুল-ডেটা, সরকারি ভুল-পলিসি > কম আয়ের লোকজনের জিনিস কিনতে না-পারা > দুর্ভিক্ষ
আমরা অনেকদিন ধইরাই প্রি-দুর্ভিক্ষ অবসথাটাতে আছি; দুর্ভিক্ষের ‘বাঘ’ না আসলে মনে হবে ‘মিথ্যাবাদী রাখাল’ হয়া কথা বলতেছি, কিনতু অইদিন যাতে না আসে, সেইটার জন্যই কথা বলতেছি আসলে। মানে, আমার কথা হইতেছে, অমর্ত্য সেনের কথা’রে যদি ঠিক মানেন, এখনকার বাংলাদেশের অবসথা’টা টের পাইতে হইলে ইকনোমিসট হইতে হবে না আপনারে, কানেকশনগুলারে খেয়াল করতে পারলেই হবে।
এখন ইকনোমিক নিয়ম তো ফিজিকসের ল’র মতো কাজ করে না, নানান ফ্যাক্টর এইখানে নানান রোল প্লে করে। যেমন, বাংলাদেশে এখনো দুর্ভিক্ষ হয় নাই দুইটা কারনে – এক রেমিটেনস, দুই গার্মেনটস। দুইটাই মর্ডান স্লেভারি আসলে। রেমিটেনসে গেরামের গরিব-লোক আর গার্মেনটসে শহরের আরবান-পুওর সারভাইব করতেছে। এই স্লেভ-বেইজড ইকনোমি’তে এখনো মাসে মাসে কিছু টাকা পাইতেছে মার্জিনাল লোকজন, যেইটা ১৯৪৩ সালে এবং ১৯৭৪ সালে ছিল না।
কিনতু এই মিনিমাম মাসিক-বেতন আর খাবার-দাবার কেনার জন্য এনাফ না, মোটামুটি অনেকদিন ধইরাই। আর এই অবসথা আরো খারাপের দিকেই যাইতেছে, কারন সরকার খরচ কমাইতেছে না, আরো ভালো কইরা বললে, কমাইতে পারবে না; কারন লুটপাট কইরাই অবৈধ সরকার চালাইতে হবে; লুটপাট না করতে পারলে এই অবৈধ সরকার টিকবে না। যার ফলে দুর্ভিক্ষের ফাঁসির দড়িটা আমাদের সামনে সবসময় ঝুলতেছে। যতদিন পর্যনত এই অবৈধ সরকার আছে, বাংলাদেশে…
আমি ইকনোমিক ফ্লো’টার আগে পলিটিকাল ফ্লো’টারে বসাইতে বলবো এইখানে: অবৈধ সরকার > লুটপাট > মেগা প্রজেকট > খরচ বাড়ানো > টাকা ছাপানো… কম আয়ের লোকজনের জিনিস কিনতে না-পারা > দুর্ভিক্ষ
এই লাইনটা অবশ্যই লিনিয়ার না, কিনতু এর ইমপ্যাকট’টারে না-দেখার মতো কানা হওয়াটা খালি কঠিন-ই না, বদমাইশ না হইলে এইটা না দেইখা থাকতে পারাটা পসিবল না আসলে।
১৮.০১.২০২৪
বেপারটা এইরকম না যে, থিওরি অনুযায়ি ঘটনা ঘটে, কিনতু যখন ঘটনা ঘটে, তারপরে আমরা দেখি যে, নানান রকমের থিওরেটিকাল ফ্রেম-ওয়ার্ক দিয়া ঘটনাগুলারে বুঝতে পারি আমরা, বা কিছুদূর তক একসপ্লেইন করতে পারি। যেইরকম ধরেন, হামাসের ইজরাইলে হামলা এবং এরপরে ইজরাইলের গাজা’তে হামলা চালায় হাজার হাজার মানুশরে খুন করার ঘটনা’টা (যেইটা এখনো চলতেছে) নিয়া কথা-বলার মতো জায়গা যে নাই – তা না, এমনকি এইরকম আলাপ খুব কম হইলেও উঠছে যে, হামাস কি আসলে ইজরাইল’রে হেল্পই করতেছে কিনা, ভায়োলেনস কনটিনিউ করতে?
তো, গতকালকে জনি হারিস একটা ক্লাসিফাইড ডকুমেনট দেখাইতেছিলেন, যেইখানে ইজরাইল বলতেছে গাজা’তে সেকুলার পিএলও’র জায়গাতে হামাস পাওয়ারে আসাতে তারা খুশি; কারনটা তো অনুমান করা যায় এইভাবে যে, তখন পিস-টকের জায়গায় ভায়োলেনস’রে সেনটার করাটা সহজ হবে। মানে, হামাস তো ফেইল করবে, কিনতু ইজরাইলের ভায়োলেনস’রে জাসটিফাই করার একটা বেইজ তখন পাওয়া যাবে।
এখন ফিলিসতিনিরা কি করতে পারে আসলে? পলিটিকালি তাদেরকে অবশ্যই ইজরাইলের এগেনেইসটে ফাইট করা লাগবে, কিনতু ওয়ে’টা কি হবে – সেইটা হইতেছে কোশেচনটা। যেমন ধরেন, বাংলাদেশে আমরা কি ইনডিয়ার পুতুল-সরকারের এগেনেসটে একটা ওয়ার শুরু করবো? এইটা কি ইনডিয়ার আর্মিরে আরো ডাইকা আনবে না, টেররিজমের সেই নেরেটিভ বানাইতেছে, সেইটারেই ‘সত্যি’ বানায়া তুলবে না? কিনতু তাই বইলা চুপচাপ সবকিছু মাইনা নিতে হবে – এইটাও তো কোন ওয়ে হইতে পারে না। মানে, পলিটিকালি এক্ট করার জায়গাগুলা খালি কম না, নাই-ই একরকমের।
এই কারনে, একটা মিনিমাম লেভেলে হইলেও পলিটিকাল এক্ট কনটিনিউ করতে পারাটা খুবই জরুরি একটা ঘটনা। ইমপেকটফুল হইতে পারলে তো অবশ্যই ভালো, কিনতু ভুল-বেইজ থিকা অপারেট করতে থাকাটা জাসট ব্যাক-ফায়ার করার কথা। মানে, কনফ্লিকট’টারে সেনটার কইরা একশন নেয়ার চাইতে সলিউশনটারে সেনটার কইরা একশন নিতে পারাটা বেটার হওয়ার কথা সবসময়।
১৯.০১.২০২৪
বেপারটা হইতেছে অনেকটা গুগুল ম্যাপের মতোই, যেই রাসতাটা গুগুল-ম্যাপ চিনে না, সেই রাসতটা তো সে দেখাইতে পারবে না!
এবং খালি তা-ই না, যেই রাসতটা সে চিনে বারবার খালি অইটাই দেখাইতে থাকবে, এবং বলতে থাকবে যে, আপনি ভুল-রাসতায় যাইতেছেন!
এমনকি তার হিসাব অনুযায়ি সময় যে বাইড়া যাইতেছে, সেই ডর-ভয় দেখায়া সাবধানও করতে থাকবে। আপনার নিজের জানার বেপারেও তখন সনদেহ হওয়ার কথা যে, নাহ্, ভুল-ই করতেছি মনেহয়!
মানে, গুগুলের জানা যে ভুল – তা না, কিনতু গুগুল যতটুক জানে, সেইটা যে সবটুক জানা – এই ভুল করলে আপনার অনেক জানা জিনিসও ভুইলা যাওয়ার চানস আছে তখন।
আমি বলতেছি না যে, গুগুল, উইকিপিডিয়া, এআই… জানে না; বরং আমি বলতে চাইতেছি যে, উনারা জানার জায়গাগুলারে কনসট্রাকট করেন, সেইটাই সবকিছু বা পুরাটা – এইরকম ভাবাটা খুবই ঝামেলার একটা জিনিস, বেশিরভাগ সময়।
(খুব পার্টিকুলার জায়গা থিকাই জিনিসটা মনে আসছে। গুগুল ম্যাপ দেইখা যাইতেছিলাম এক জায়গায়, কিনতু আমারে আগে থিকা বইলা দেয়া হইছিল গুগুল-ম্যাপ একটা রোড কাটা দেখায়, কিনতু সেইটা ন্যারো, বনধ না; অই পথেই আসা যাইতে পারে। মানে, অই চেইঞজটা গুগুল-ম্যাপ এখনো আপডেট করতে পারে নাই। ও, গুগুল-ম্যাপ অবশ্য পরে নোটিফিকেশন পাঠাইছে, কোনকিছু ভুল হইছিল নাকি তাদের…)
২০.১১.২০২৪
বরং ঘটনা হইতেছে যে, ‘বাংলাদেশি’ বইলা তেমন কোন কেটাগরি এগজিসট করে না আর কি; এইটা কয়েক বছর আগে মনে হইছিল, ঢাকা’তে ইনটারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার’রা তাদের সার্ভারে যে সিনেমা রাখে, অই কেটাগরিগুলা দেখতে গিয়া। অইখানে হলিউড, বলিউড, তামিল, ইউরোপিয়ান, এমনকি ইনডিয়ান-বাংলা বইলা কেটাগরিও পাইবেন, কিনতু ‘বাংলাদেশি’ বইলা কোন কেটাগরি পাইবেন না!
নেটফ্লিকসেরও সাবসক্রাইবার কম থাকার কথা না, বাংলাদেশে, এটলিসট বছরে ২-৩টা সিরিজ/সিনেমা রিলিজ দেয়ার মতো বিজনেস রিসক নিতেই পারে, কিনতু অই মার্কেট মেবি কলকাতা থিকাই কনট্রোলড হয়, তার চাইতে বড় কথা হইতেছে, যারা বাংলাদেশে সিনেমা-সিরিজ বানান, উনারা যেইরকমের এসথেটিক হইতে চান, সেইখানে অডিয়েনস হিসাবে বাংলাদেশি পিপল’রে সেনটার-ই করতে পারেন না। এইটা ঠিক না-পারা না, বরং বুলিংয়ের ডরে এইটা করতে সাহস পান না। যখন ১৯৬৫ সালে বাংলাদেশের সিনেমার হিসট্রিতে সবচে রিমার্কবেল সিনেমা ‘রূপবান’ বানাইতেছিলেন সালাহউদ্দিন সাহেব তখন ‘যাত্রা-সিনেমা’ বইলা টিটকারি করতেন জহির রায়হানরা; আর এই বুলিংয়ের কারনে বাংলাদেশের সিনেমা’র হিসট্রি’তে কয়েক বছর আগেও ‘রূপবান’-এর নাম নেয়া যাইতো না।
খালি সিনেমা না, বইয়ের বেপারেও দেখবেন ‘বাংলাদেশি বই’ আলাদা কোন কেটাগরি নাই, গল্প-উপন্যাস-কবিতা সবই ‘বাংলা’!
আর যা কিছু ‘বাংলাদেশি’ তা যে ইনফিরিয়র – সেইটা তো আছেই, যেমন, বাংলা-মদ, বাংলা-মাল… মানে, যেইটা খারাপ-জিনিস, সেইটা হইতেছে ‘বাংলাদেশি’।
তো, এই কেটাগরি এসটাবলিশড না করতে পারাটা, ঠিক ডিম আগে না মুরগি আগের ঘটনা না, বরং এই ধরনের কোন কেটাগরি যে আছে, বা থাকতে পারে – সেইটা না-মানতে পারার জায়গা থিকা গোড়াতেই বাতিল কইরা দেয়ার, এবং বু্লিংয়ের ভিতর দিয়া ‘অব্যক্ত’ রাখার ভিতর দিয়াই ঘটতে থাকে বেশি।
২২.০১.২০২৪
যা কিছু বাকশাল’রে আন-কোশচনেড রাখে, সেই ‘তর্ক’-ই খালি ভাইরাল হইতে পারবে; এই জায়গাটাতে সেকুলার ও ইসলামিসট সবাই একমত আর কি 🙂 এবং আমি মনে করি, এইটাই হইতেছে “শাহবাগ”-এর ট্রু-স্পিরিট
মানে, এমন একটা কেচালে ইনভলবভ হওয়া এবং তারে সবসময় তাজা রাখা, যেইটা অবৈধ-বাকশালি শাসনের জায়গাটারে খালি আন-কোশচেনডই রাখবে না, বরং তারে একটা অথরিটি হিসাবে বৈধতা দিবে
বেপারটা মোটেই সেকুলার ভারসেস ইসলমাসিটদের ‘তর্ক’ না, বরং এইটা হইতেছে অই ভাওতাবাজিটা, অই ইলিউশনটা, অই চালাকিটা যেইটা দিয়া বাকশালি-শাসনের জুলুমের জায়গাগুলারে সেকেনডারি জিনিস বানায়া তোলার কাজটা করা হয়
…
বার্মায় রোহিঙ্গা ম্যাসাকারে ফেইসবুকের একটা বড় কনট্রিবিউশন ছিল; মানে অই সময়ে হেইট-স্পিচগুলা ফেইসবুকের মাধ্যমে ছড়াইছিল; এইটা নিয়া জনি হারিস একটা ভিডিও বানাইছিলেন, এবং বলছিলেন যে, ফেইসবুকের অইসময় বার্মিজ-ভাষা জানে এইরকম কোন একসপার্টও ছিল না; তারা কনটেনট মডারেট করা তো দূরের কথা, চেকও করতেছিল না ঠিকমতো; মানে, হেইট-স্পিচ যে ছড়াইতেছে – এইটা নিয়া তারা কনসার্ন দেখায় নাই, যার ফলে রোহিঙ্গা ম্যাসাকার পসিবল হয়া উঠতে পারছে
তো, এইটা নিয়া আমি বলছিলাম যে, এইটা জানলেও ঘটতোই; মানে, ফেইসবুকে বিজনেস কারনেই এইটা দরকার; যদি কোনকিছু ভাইরাল না হয়, সবাই মিইলা ‘প্রতিক্রিয়া’ না দেখায় কোনকিছু নিয়া, তাইলে ফেইসবুকের বা যে কোন সোশাল-মিডিয়া প্লাটফর্মের বিজনেস কেমনে হবে?
বেপারটা এইরকম না যে, ফেইসবুকে বা সোশাল-মিডিয়ায় সবকিছু নিয়া ‘বাড়াবাড়ি’ হয়, বরং যদি কোনকিছু নিয়া বাড়বাড়ি না হয় সেইটা তো প্লাটফর্ম হিসাবে তার বিজনেস কনটিনিউ করতে পারবে না! যেইরকম ধরেন, দেশে যদি কোন ‘ঘটনা’ না ঘটে, নিউজপেপারগুলা কি ছাপাবে? মানে, পরেরদিন সকালে উইঠা আপনারে তো কোনকিছু ‘জানতে’ হবে… এইটা ‘জানা’ জিনিসটা কোনকিছু ‘ঘটার’ উপরে ডিপেনডেড একটা বেপার তো, যার ফলে নিউজপেপারের কাজ খালি কোনকিছু তার রিডার’রে ‘জানানো’ না, ‘ঘটনা উৎপাদন’ করাও… আর এই জিনিসটা সোশাল-মিডিয়া প্লাটফর্মগুলাতে আরো লার্জ-স্কেলে দরকারি জিনিস…
আরো ভয়ের কথা হইতেছে, এইগুলা ‘ইডিট’ করা যায় তো! মানে, ইস্যুগুলারে খুব ভালোভাবেই যেমন ‘কনট্রোল’ করা যায়, একইসাথে উসকায়াও দেয়া যায়। বাংলাদেশের ফেইসবুকে বাকশালের এগেনেইসটে কিছু কইতে পারবেন না আপনি, বিএনপি, জিয়াউর রহমানের নামও নিতে পারবেন না, কিনতু এলজিবিটি নিয়া জেহাদ তো করতে পারবেনই, সেকুলার ধর্ম নিয়া বিজঞান-শিক্ষাও দিতে পারবেন, এই নিয়া দিনের পর দিন ‘তর্ক’ এবং ‘লড়াই’ করতে পারবেন!
মানে, একই প্লাটফর্ম, একটা জিনিস আপনারে করতে দিবে না, কিনতু আরেকটা জিনিস নিয়া খালি কনসার্ন না, বরং এনগেইজড হইলে আপনারে এপ্রিশিয়েট করবে; তো, কেন করবে এইটা? এইজন্য না যে, এইখানে কোন সোশাল-ইসটেনডারড আছে বা বিরাট কোন ‘ষড়যন্ত্র’ চলতেছে, মানে, এইসব জিনিস যে নাই – তা না, কিনতু এনগেইজমেনট’টা হইতেছে জরুরি ঘটনা এইখানে, আর এই এনগেইনজেমনটা বিজনেস জেনারেট করার জন্য যেমন করা লাগবে, সেইটা পলিটিকালিও বেনিফিশিয়ারি হইতে হবে ইনভলবড পার্টিগুলার জন্য।
বাকশালের ক্রিটিসিজম করতে দিয়া তো বাকশালের দেশে বিজনেস করতে পারবেন না আপনি, বরং যেই ইস্যুগুলা বাকশালি-শাসনটারে সেকেনডারি ঘটনা কইরা তুলে, সেই জায়গাগুলারে এনগেইজিং করার ভিতর দিয়া বিজনেস করাটা মোর জাসটিফাই করাটা পসিবল। যেই কারনে ইসলাম ও সেকুলারিজমের ‘তর্ক’, এবং মোসট ইমপরটেনটলি পলিটিকসের জায়গায় কনসপিরেসি সবসময় প্রেফারবেল হওয়ার কথা।
আর এর শুরু আমি মনে করি ‘শাহবাগ’ থিকা; যেইখানে আমাদের পলিটিকাল রিয়ালিটি মিডিয়ার হাতে বন্দি হইতে শুরু করে, এবং ডামি-তর্কগুলার ভিতর দিয়া আমরা আমাদের লাইফরে ‘উপভোগ’ করা শিখতে পারছি 🙂
২৫.০১.২০২৪
বাংলা-একাডেমি সাহিত্য পুরষকার (২০২৪)
যে কোন ফেমিলি-তে বা ফ্রেনড-সার্কেলেও দেখবেন সাকসেসফুল লোক খুববেশি থাকেন না; মানে থাকতে পারেন, দেখা গেলো একটা ফেমেলির বা ফ্রেনড-সার্কেলে সবাই কোন না কোন জায়গায় সাকসেসফুল, আমি বলতে চাইতেছি যে, আমাদের সমাজে সাকসেসফুল লোক কম, কারন সোসাইটি এজ আ হোল সাকসেসফুল না, অল্প-কিছু ‘লাকি-মানুশ’ সাকসেসফুল হইতে পারেন…
তো, আমাদের একসটেনডেড ফেমিলি ধইরা হিসাব করলেও আমার নানা ছিলেন একজন সাকসেসফুল মানুশ। ইকনোমিকালি এতোটাই সাকসেসফুল ছিলেন যে, উনার ছেলে-মেয়ের পরে নাতি-নাতনিরাও উনার এসেট বেইচা চলতে পারতেছে, এবং আশা করা যায় আরেকটা জেনারেশনও চলতে পারবে। খালি ইকনোমিকালি-ই না, সোশালি একজন ভালো-মানুশ পরিচিত ছিলেন; পলিটিকালিও উনি সাকসেসফুল ছিলেন, পাকিসতান আমলে উনি পৌরসভার চেয়ারম্যান ছিলেন, এবং এরপরে জিবনেও আর পলিটিকসের ধারে-কাছে যান নাই। তো, আমরা নাতি-নাতনিরা, উনার পলিটিকাল কেরিয়ার নিয়া জানতে চাইলাম একবার, উনি চেয়ারম্যান হয়া কি করছেন? দেশের প্রেসিডেনটের লগে কি আপনার দেখা হইছিল?
তখন উনি মিটিমিটি হাইসা একটা ছাতি দেখাইলেন, এই ছাতিটা আইয়ুব খান নিজের হাতে উনারে দিছিল। কিনতু এইটা শুইনা আমাদের কচি-মনে উলটা জিনিস মনে হইলো, কারন তখন তো আমরা খেলাঘর করি, মুকতিযুদধ-মুকতিযুদধ খেলি, উনি পাকিসতানি প্রেসিডেনটের হাত থিকা পুরষকার নিছেন! উনি কি রাজাকার ছিলেন! এইরকম ‘আজে-বাজে’ কথা আমাদের মনে হইতেছিল। আমরা তখন রবীন্দ্রনাথের কবিতা পড়ি, যিনি ব্রিটিশদের নাইট উপাধি নিছিলেন, সেইটাতে আমাদের সমস্যা হয় না, কিনতু আইয়ুব খানে হেইট্রেট তৈরি হয়… উনি নিজেও একটু শরম পান। বলেন, আরে, প্রেসিডেনট যখন ডাকছে, তখন তো যাইতে হবে, উনি পুরষকার দিলে, সেইটা তো নিতে হবে… এইভাবে একটা ‘জবাবদিহি’ও যেন করতে চাইলেন…
এখন ঘটনাটা মনে হইলে আমি নিজেই শরম পাই
২.
তো, এইটা মনে হইতেছিল, বাংলা একাডেমি’র সাহিত্য পুরষকার নিয়া; এইটা একটা সময়ে মেবি সাকসেসফুল হওয়ার একটা পেরামিটার ছিল, কিনতু এখন রাইটার হিসাবে এই প্রাইজ পাইলে খালি শরমের বেপার-ই না, বরং ক্রিমিনাল এক্ট কিনা – এই সনদেহও হইতে পারে আসলে। শয়তান আপনারে লাইক করতেছে মানে আপনি কোন না কোনভাবে শয়তানের পারপাস সার্ভ করতেছেন কিনা – এই নিয়া সাবধান হওয়ার দরকার আছে। মানে, সাহিত্যিক হিসাবে কোন কিছু করতে পারছেন কি পারেন নাই – এইটা তো বিবেচনার বিষয় না-ই, বরং পলিটিকালি জালিমের জুলুমরে জাসটিফাই করার কাজ আপনি না করলে এই প্রাইজ তো আপনার পাওয়ার কথা না! এইটাই হইতেছে ২০২৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য-পুরষ্কারের সিগনিফিকেনস আসলে।
৩.
এইরকম একটা জোকস আছে যে, এক জঙ্গলে সিংহী প্রেগনেনট হয়া পড়ছে, সিংহ খুবই খেইপা আছে, কারন সে তো সিংহী’র সাথে সেকস করে নাই, তাইলে কে করছে এই কাজ? বাঘ, ভাল্লুক, হাতি, ঘোড়া সবাই খুব টেনশনে আছে, তো, এক ইনদুর আইসা বলতেছে, ভাই, আমার তো খুব ডর লাগতেছে; সবাই অবাক হয়া জিগাইলো, ক্যান, তোর আবার কি হইছে? ইনদুর চেইতা গিয়া কইলো, আপনারা জানেন না! সিংহী প্রেগননেট হইছে, আর সিংহ সবাইরে সনদেহ করতেছে! সবাই চুপ কইরা ইনদুরের দিকে একটা কোশচেন-মার্ক নিয়া তাকায়া থাকলো, জিগাইলো, তো? ইনদুর কইলো, সিংহ যদি আবার আমারে সনদেহ করে! আমি তো সিংহী’র লগে কিছু করি নাই!
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, আমি ইনদুরও না আর কি! 🙂
২৮.০১.২০২৪
ডিশ-কানেকশন সার্ভিস ‘আকাশ’-এর সাবসক্রিপশন বাদ দিছি ৬ মাসের মতো হইছে, তারও ৬ মাস আগে থিকা বাসায় টিভি-চ্যানেল দেখতে না কেউ। (এইটা বাদ দিয়া ইউটিউবের প্রিমিয়াম-সার্ভিস কিনছি।) তো, বাদ দেয়ার কয়েকমাস পর থিকা মেসেজ আসা শুরু হইলো, এতোটাই যে, অই প্রমোশনাল নামবার’টা ব্লক করলাম। এরপরে শুরু হইছে কল আসা; এখন মানুশের মুখের উপরে তো খারাপ-বিহেভ করা যায় না, কইলাম, টিভি তো দেখি না, এই কারনে রিনিউ করি না সাবসক্রিপশন, কইলো (মরিয়া হয়া), কেন দেখেন না? (একটা সাকসেস করা লাগবে হয়তো তারে) কইলাম, টিভিতে তো দেখার কিছু নাই, কি দেখবো! (একটু আশা দেইখা, যেহেতু কথা বলতেছি) কইলো, বিপিএল চলতেছে এখন, বিপিএল দেখবেন… মেজাজ খারাপ হইলো, কিনতু আবার হাসিও চইলা আসলো, এই পাতানো জিনিস দেখার কি আছে! কইলাম, বাদ দেন, যদি কখনো দরকার পড়ে রিনিউ করবো না, দরকার পড়বে না আসলে…
মানে, ঘটনাটা দেখেন, আমি যে ‘আকাশ’-এর সাবসক্রিপশন আর নিতেছি না – তা না, টিভি জিনিসটা যদি দরকারি হইতো, তাইলে তো নেয়া লাগতো বা নিতাম; টিভি-রিয়ালিটি না নিয়া আমার খালি চলতেছেই না, বরং টিভি-রিয়ালিটি থিকা তো আমার দূরে থাকা দরকার, এইটা বাজে-জিনিস একটা, সরকারি-প্রপাগানডা কেন গিলবো আমি, তা-ও নিজের টাকা দিয়া!
তো, এইটা খালি টিভি-চ্যানেলগুলার ঘটনা না, বাংলাদেশের পুরা একো-সিসটেমটাই (eco-system) এইরকমের দাঁড়াইছে যে, উইদ-আউট বিইং ইভিল এইখানে খাপ-খাওয়ানোটা টাফ। এইখানে একটা ইকনোমিক ফেইলওরের ঘটনা ঘটতেছে না খালি (যে অল্প কিছু লোক অনেক লোকের টাকা মাইরা খাইতেছে) – এইটা তো আছেই, বরং এমন একটা ইভিল সোশিও-পলিটিকাল একো-সিসটেম তৈরি হইছে, যেইখানে অইটার পার্ট না হয়া ফাংশনই করতে পারবেন না আপনি। নিজেরে আন-সাকসেসফুল, লুজার-ই মনে হবে না, মনে হবে অ-দরকারি! (এমনকি সাব-হিউমান আসলে…)
একটা বীজ থিকা চারাগাছ, চারাগাছ থিকা ফুল-ফল এবং ‘মহীরূহ’ হয়া উঠতে যেইরকম একটা নেচারাল একো-সিসটেম দরকারি, সমাজের মানুশেরও ‘ভালো-মানুশ’ হয়া উঠতে একটা সোশাল একো-সিসটেম লাগে। মরুভুমিতে তো ধান-চাষ করতে পারবেন না আপনি! এনাফ পানি পাইবেন না, বাতাস পাইবেন না। এইরকম একটা বাজে-সমাজে ‘ভালো-মানুশ’ একসেপশনাল ঘটনা হয়া-ই থাকবে সবসময়।
যেই কারনে দেখবেন, সিঙ্গেল ‘ভালো-মানুশির’ ঘটনাগুলারে হাইলাইট করার ঘটনা বেশি ঘটে, ‘স্ট্রাগল’ কইরা সাকসেস-ফুল হওয়ার ঘটনাগুলা; কারন এইটা নেচারাল জিনিস না! খুব একটা দেখা যায় না, এবং ‘নরমাল’ না।
এখন কেন, কিভাবে এইটা ঘটতেছে, সেইটা তো আরো ডিটেইল আলাপেরই জিনিস, কিনতু এইটা ফিল না করতে পারাটা চোখ বনধ না কইরা ঘুমাইতে পারার মতোই ইমপসিবল ঘটনা অনেকটা।
মানে, এইগুলা যেইরকম কোন ‘কনসপিরেসি’র আউটকাম না, একইসাথে এতোটা ‘বিচ্ছিন্ন-ঘটনা’ না আর কি, বরং একটা একো-সিসটেমের ঘটনা…
২৯.০১.২০২৪
গত শতকের এই সময়ে যখন এলিয়টদের আবিষকার করতেছেন এজরা পাউন্ড, তখন বলতেছিলেন একটা সময়ের ‘সম্ভাবনাময়’ বা ‘প্রতিভাবান’ কবিদের’কে কেমনে চিনবেন? একটা উপায় উনি বাতলাইছিলেন যে, ইয়াং পোয়েটদের মধ্যে যার বা যাদের নাম সবাই নেয়, তাদেরকে ট্রাই কইরা দেখতে পারেন, ভালো-কবিদের পাইতে পারেন…
তো, আমার ধারনা, এরপর থিকা কবি-গোষ্ঠী বা কবি-গ্রুপ তৈরি হইতে শুরু করছে, এর পর থিকা; যে, ‘আমরা আর মামুরা’ 🙂
এইটা হইতে হইতে এমন এক অবসথা তৈরি হইছে আজকে ৫-৬টা জেনারেশন পরে যে, মেবি অইখানে খুঁজলে ‘প্রতিভাবান’ কবি পাইতে পারেন, যারা কবিতা লেখেন, কিনতু কোনভাবেই কোন কবি-গোষ্ঠী বা কবি-গ্রুপের লগে এটাচড-না না, বরং উনি কবিতা লেখেন বইলা সবাই জানেন, কিনতু তার নাম কেউ মুখে নেন না 🙂
[মানে, একটা তরিকার কথাই আমি বলতেছি, যেইটা কখনোই ফুল-প্রুফ কোন টেকনিক না…]
৩১.০১.২০২৪
In a true totalitarian regime public consciousness is a crime
মানে, সত্যি কোনটা, মিথ্যা কোনটা – এইটা যে আপনি বুঝেন না, টের পান না, তা না, কিনতু এইটা নিয়া পাবলিকলি কথা কওয়া থিকা ‘বিরত’ থাকতে হবে! এমন একটা ভাব ধইরা রাখতে হবে যে, আমি তো বুঝি নাই, আমি তো ঝানতাম না! এই না-বুঝা শুওরের পালগুলা দেখবেন, অনেক কিছু নিয়া ফালাফালি করবে, ‘আম খাই, জাম খাই’ কইরা বাজার-গরম কইরা ফেলবে, আর এতে কইরা পাবলিক-কনশাসনেসের জায়গাগুলা নিয়া কথা কইবো-না না, অই জায়গাগুলারে আরো ঝাপসা কইরা তুলবে।
আর প্রিসাইজি এইটাই হইতেছে BAL-বাকশালি এবং বিএনপি’র শাসন-আমলের ট্রু ডিফরেনসের জায়গাটা। গত ১৫ বছর ধইরা কথা বলতে আপনারে-আমারে ডরাইতে হয়, ভুলেও কোন ‘সত্যি-কথা’ (মানে, পলিটিকাল পাবলিক-ট্রুথ) যেন না বইলা ফেলি! বললে খালি নিজের-ই বিপদ না, চৌদ্দ গুষ্টিরও বিপদ, একটা ‘সামাজিক সমস্যা’ তখন! আর এইভাবে এ.আই.’র আবিষকার না, বরং পলিটিকাল খারাপ-শাসন আমাদের বাঁইচা-থাকাটারে সাব-হিউমান একটা স্টেটাসের দিকে নিয়া যাইতে থাকে…
…
এইরকম ধারনা তো অনেকেরই আছে যে, অনেক ‘ইসলামিসটদের’ মধ্যে লিবারাল ঘাপটি মাইরা আছে, তাদেরকে ‘ভুল-পথে চালিত করে’, উসকায়া দেয়… আবার ‘লিবারালদের’ মধ্যেও অনেকে ইনায়া-বিনায়া ‘ইসলামি টোন’ নিয়া আসার ট্রাই করেন – এইরকম সনদেহও আছে; এমনকি কারো কারো পারসোনাল কনফেশনও পাইবেন যে, এক সময় এইরকম ‘ফাইজলামি’ করতাম… মানে, একটা সত্যিকারের রোল-প্লে হিসাবে এই জিনিসগুলা যে ছিল না, এবং নাই – তা না; বরং আমার কথা হইতেছে, ঘটনা’টা আরো ডিপ-রুটেট একটা জিনিস।
এইখানে বরং দুইটা পজিশনের বাইরে যাওয়ার মতো কোন রিয়ালিটির কথা-ই আমরা ভাবতে রাজি না! এইটা হইতেছে আসল ট্রাপ’টা। যে, আপনারে সো-কল্ড লিবারাল-বলদ হইতে হবে, তা নাইলে ইসলমাসিট-ষাঁড়! (সাধারণ-মানুশ হিসাবে গরু তো আপনি আছেনই!) মানে, এইখানে যে আর কোন আইডেনটিটি’রে আমরা চিনতা করতে পারি-না খালি না, বরং নিতেও রাজি না, সেইটাই এই পজিশনগুলাতে যাইতে, রোল-প্লে করতে আমাদেরকে বাধ্য করে আসলে।
আমি বলতে চাইতেছি, এই রোল-গুলা, পজিশন-গুলার বাইরে আমরা যাইতে রাজি না বইলা, এই ইলিউশনগুলার ভিতর দিয়া রিয়ালিটিরে আমরা দেখতে থাকি; আর এইরকম কইরা দেখার, বুইঝা ফেলতে পারার একটা একসট্রিম-প্লেজার আছে, যেইটাতে একবার ঢুইকা পড়লে বাইর হয়া আসাটাও মুশকিলের।
আমি মনে করি, এই যে ইসলামিসট ভারসেস সেকুলার/লিবারাল – এই কনফ্লিক্ট’টা যে নাই, তা না; কিনতু এই বাইনারি’টা নয়া বাকশালের ইনহেরিয়েনট একটা পজিশন, যেইটার উপর দাঁড়ায়া এই জুলুমের শাসনটা নিজেদেরকে অপারেট করে। এই ‘তর্কের’ ফুয়েল দিয়া এইটা একভাবে টিইকা আছে।
ইসলামি ভারসেস লিবারাল/সেকুলার – এই ‘তর্ক’টা নয়া বাকশালের পলিটিকাল পারপাসটারেই সার্ভ করে আসলে, তলে তলে না খালি, আগা-গোড়া পুরাটাতেই।
Leave a Reply