০১.০৩.২০২৪
নানান জিনিস নিয়াই তো রিভিউ দেখি – বই, সিনেমা… এই রকমের আর্ট-মেটেরিয়াল নিয়া; তো, আমার ধারনা, আমার মতো অনেকেই একসপেরিয়েনস কইরা থাকার কথা যে, এইগুলা বেশিরভাগ-ই মোটামুটি ভুয়া; মানে, পেইড-রিভিউ তো আছেই, কিনতু মিনিমাম রকমের ট্রুথফুলনেসও নাই, বা থাকে না… তো, ধরা খাইতে খাইতে মোটামুটি কয়েকটা ধরন বা প্যাটার্ন আমি মার্ক করছি, এবং এইগুলা মোসটলি এড়ায়া চলি; তো, আমার মনে হইছে, অনেকে ট্রাই করতে পারেন, এই জিনিসগুলা –
১. যারা সুপারলেটিভ টার্ম ইউজ করেন, যেমন ধরেন, ‘আমার জীবনের পড়া সেরা বই!’ পুরা টাশকি খায়া গেছি’, ‘এই বছরের সেরা সিনেমা’, ‘জীবনে এইরকম দেখি নাই, পড়ি নাই’… – তো, সোজা-বাংলায় এই (বেশিরভাগ কেইসেই মেকি) ‘উচ্ছ্বাস’গুলার মানে হইতেছে জিনিসটারে উনারা ডিল করতে পারেন নাই; এইগুলা এভয়েড করা-ই বেটার
২. প্রশংসা করা, নিন্দা করা বা সামারি করাটা কখনো রিভিউ বা ক্রিটিকের কাজ হইতে পারে না
৩. রায় দেয়া যাবে না – তা না; রায় দিতে পারাটা বেশিরভাগ সময়েই বিচার করা/ক্রিটিক করা/রিভিউ করার চাইতে আলাদা ঘটনা
৪. রাইটারের পরিচিত লোকের (দোস্ত হোক আর দুশমন) রিভিউ কম বিশ্বাস করাটাই বেটার
৫. যিনি একটা জিনিসের প্রশংসা করতেছেন, এবং কোন ভিউ-পয়েনট থিকা করতেছেন সেইটা বলতে পারতেছেন না, সেইটা মোটামুটি গালি-গালাজ বা নিন্দা করার মতো খারাপ ঘটনা-ই…
৬. একটা ভালো-রিভিউ কখনো-ই ইমপার্শিয়াল বা ‘নিরপেক্ষ’ না, বরং এমন একটা যেই জায়গাটা থিকা দেখার ট্রাই করা যেইটা দিয়া আর্টরে নতুন কোন মিনিংয়ের দিকে নিয়া যাওয়াটা পসিবল হয়
৭. বস্তুর ডেফিনেশন যেমন বস্তু না, আর্টের ক্রিটিকই আর্ট না
৮. গ্রেট-আর্ট রেয়ার, গ্রেট-ক্রিটিক ইমপসিবল
৯. তবে খারাপ-রিভিউ সবসময় নো-রিভিউ’র চাইতে বেটার
…
যেই ইস্যু নিয়া বাকশালি-মিডিয়া বেশি গরম থাকে বা থাকবে, মোটামুটি ধরে নিতে পারেন অইটা ডামি-ইস্যু আসলে, অনেকটাই…
০২.০৩.২০২৪
যেইরকম sitcomগুলাতে ব্যাকগ্রাউনডে হাসির আওয়াজ দিয়া বইলা দেয়া হয় কোথায় কোথায় হাসা লাগবে, এইরকম গর্ভমেনট-কনট্রোলড নিউজ-মিডিয়া এবং ফেইসবুক-ট্রেনডও সেট কইরা দেয় আসলে কোথায় কোথায় হিউমার করা লাগবে আমাদেরকে, কোথায় কোথায় চুপ থাকা লাগবে, আর কোন সময় ‘প্রতিবাদি’ হয়া উঠা যাবে…
সার্কাসের মাসটারের চাবুকের ভাব বুইঝা নাচতে পারাটাই হইতেছে গুড-পারফরমেনস, একটা বানদরের
আর ভালো-অডিয়েনস হিসাবে আমাদের কাজ হইতেছে এইটারে ক্রুয়েলিটি হিসাবে না দেইখা করুণ বা ফানি হিসাবে দেখতে পারা
/বি আ গুড-অডিয়েনস
…
একটু বাড়ায়া বলা মনে হইতে পারে, কিনতু কলোনিয়াল-বাংলা এখন বাঁচায়া রাখছে আসলে মাদরাসা’র তালেবে এলেম বা ইসটুডেনটরাই… মানে, ‘শুদ্ধ-ভাবে’ বাংলা লেখতে পারা’টা উনাদের কাছে এখনো জরুরি বা দরকারি একটা কাজ; মাদরসার ইসটুডেনট হিসাবে উনারা যদি ‘শুদ্দ-বাংলা’ না লেখেন তার মানে হইতেছে উনারা তো বাংলা-ভাষা শিখেন নাই বা জানেন না! তো, উনারা যে জানেন এবং ভালো-ভাবে জানেন – সেইটার প্রমান দিতে পারতে হয় বা না দিতে পারাটা একটা ডিজ-কোয়ালিফিকেশন হিসাবেই দেখা হয়, যার ফলে (কেটাগরিকালি কিছুটা আলাদা হইলেও) ‘কলোনিয়াল/প্রমিত/শুদ্ধ’ বাংলা উনাদেরকে লেখতে পারতে হয়, এবং কনটিনিউ করতে থাকতে হয়…
‘শুদ্দ-ভাষায়’ বা বইয়ের-ভাষায় কথা-বলাটা আগেরদিনের ‘ভদ্র, শিক্ষিত, রুচিশিল’ মানুশের, এমনকি সোসাইটিতে একটা এলিটিসট পজিশন ক্লেইম করার ঘটনা ছিল; যেইটা ভাষা’র কারনে না বরং ‘নেশনাল-বুর্জোয়া’ কেলাসের জায়গায় ‘গ্লোবাল-বুর্জোয়া’ কেলাসের এমার্জেনসের কারনে একইভাবে পারফর্ম করতে পারে না আর, মানে পুজি বা কেপিটালের গ্লোবালাইজেশনের কারনে একটা নেশনাল-প্রাইডের জায়গা থিকা গ্লোবাল-এসথেটিকসের জায়গাতে শিফট করছে সেইটা; যার ফলে ভাষার ‘শুদ্দতা’ কিছুটা অ-দরকারি হয়া উঠছে ‘রুচিশিল’ বা এলিট-পজিশন ক্লেইম করার জন্য; এবং ইংলিশ-মিডিয়ামের লোকজনের বাংলা বলা লাগে-না না, বরং কিছুটা ‘ভুল-ভাল’ বাংলা বলতেছেন – এইটা বরং উনাদের প্রাইডের ঘটনাই, এক রকমের…
তবে সত্যিকারের বেকায়দায় আছেন আসলে বাংলা-মিডিয়ামের লোকজন; উনারা বুঝতে পারতেছন যে, শুদ্দ-বাংলার অইরকম দাম আর নাই চাকরির বাজারে তো অবশ্যই, এমনকি সাহিত্য-বাজারেও; অই লয়ালিটি দিয়া যেই যেই পজিশন উনারা পাইতে পারতেন, যা কিছু এচিভ করতে পারতেন সেইটাতে মাদরাসার তালেবে এলেম’রাই তাদেরকে টেক্কা দিয়া আগায়া যাইতেছে, এবং আরেক দিকে ইংলিশ-মিডিয়ামের ভুল-ভাল বাংলাও ইসমার্ট-নেসের ঘটনা হয়া উঠতেছে… দে আর পাজলড, এই কারনে ‘নতুন ব্যাকরন’-ও 🙂 বানাইতে চাইতেছেন মেবি… তবে আই হোপ, উনারা নিজেদের জন্য এক ধরনের ওয়ে-আউট বাইর কইরা নিতে পারবেন; এই ‘ভাষার লড়াই’-এ নিজেদের কেলাসের ‘মর্যাদা’ ‘পুনরুদ্ধার’ করতে পারবেন…
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, ভাষার মধ্যে এই ক্লাস-কনফ্লিকটের ঘটনাগুলা সবসময় ছিল, আছে… আর আমার কথাগুলা একটু জেনারালাইজড-ই হইছে এইখানে, কিনতু যেই টেনডেনসির জায়গাগুলা আমি মার্ক করতে চাইছি সেইগুলা খুব বেশি ভুল বা দূরের ঘটনা না মেবি…
…
দুইদিন আগে সাব্বিরের সাথে কথা বলার সময় বেপারটা বলতেছিলাম; উনি বলতেছিলেন যে আমাদের সমাজের কবি-সাহিত্যিক-ইনটেলেকচুয়াল’রা বুড়া বয়সে আইসা এমন সব ‘আপোষ’ কইরা বসেন যে, উনাদেরকে আর নেয়া যায় না তখন! তখন দা গার্ডিয়ানের ভিডিও-নিউজ’টার কথা কইলাম, যেইখানে বলা হইতেছিল যে, আমাদের এইদিকে যে ডায়াবেটিস হয় বেশি মানুশের; এর একটা কারন হইতেছে ব্রিটিশ আমলের দুর্ভিক্ষগুলা… অই দুর্ভিক্ষগুলার একসপেরিয়েনস আমাদের শরীরে এমনভাবে জমা হয়া আছে যে, আমরা আমাদের শরীরের অনেক কিছু জমায়া রাখি বিপদের দিনের জন্য, এইরকম কিছু বোঝা-পড়া আছে…
তো, আমাদের সমাজের যারা সত্যিকারের ক্রিয়েটিভ এবং ইনটেলেকচুয়াল মানুশ-জন উনাদের সোশাল-সাকসেস তো দূরের কথা, সোশাল-রিকগনিশনও এতোটাই কম যে একটা পর্যায়ে গিয়া এর ক্রেভিং’টা খালি বাইড়াই যায় না, বরং ‘একটা কিছু কইরা দেখানোর’ বা ‘একটা কিছু হইয়া উঠার’ বাসনাটারে বাদ দেয়াটা মুশকিলই হয়া উঠার কথা… এখন এই রিকগনিশন তো পাওনা-ই উনাদের সমাজের কাছ থিকা; কিনতু সেইটা তাদেরকে না দিয়া এক ধরনের স্যাডিসটটিক প্লেজার আমরা পাই, এবং তাদেরকেও অই গেইমটার ভিতর ঠেইলা দেয়া হয় আসলে… মানে, বেপারটা এইরকম না যে, উনাদের কোন ‘দোষ’ নাই, বরং এই গেইমটারে খেয়াল করতে পারলে তখন ট্রাপ বা ফান্দে পড়া থিকা নিজেরে বাঁচানো যায় আর কি… কিনতু বেপারটা সবসময় বুঝতে-পারা বা না-পারা’র ঘটনা না, বরং ডিজায়ারটার সাথেই অনেক বেশি জড়িত ঘটনা আর কি…
আমি এই দোয়া করি, এইরকম ডিজায়ারের আগুন থিকা আল্লা যেন আমারে বাঁচায়া রাখেন
০৪.০৩.২০২৪
পেলেসটাইন জেনোসাইডের ভিতর দিয়াই তৈরি হইতেছে লিবারালিজমের কবরস্থান…
…
কিছু দিন আগে নারায়নগঞ্জ শহরে যাওয়া হইছিল, কয়েকবার-ই গেছি; বাসা থিকা সকাল সকাল রওনা না দিলে তো ঢাকা শহরেই ট্রাফিক জ্যামে বইসা থাকে লাগে, এই কারনে সকালের নাশতা নারায়নগঞ্জে (চাষাড়াতে) পৌঁছাইয়া-ই করছি; একদিন ‘নিউ বোস কেবিনে’ নাশতা করলেও পরের দুইদিন ‘সুগন্ধা রেসটুরেনটে’-ই করলাম; এবং সুগন্ধা’র নাশতা তো বোস কেবিনের চাইতে ‘রাজকীয়’ এবং ‘দামি’ না খালি, বরং ভালোও, ভীড়ও বেশি…
কিনতু ফেইসবুকে নিউ বোস কেবিনের ছবি দিছিলাম; মানে, বোস কেবিনে নাশতা করতেছি – এর একটা হিসট্রিকাল ভ্যালু, পাবলিক ইমেজ এবং টু সাম একসটেনড এসথেটিকাল ঘটনাও তো আছে; কিনতু ‘সুগন্ধা’র নাশতা ভালো হইলেও অই ‘এসথেটিকাল ইমেজ’ এখনো তৈরি হইতে পারে নাই; তো, এর কারন’টা কি হইতে পারে?
সময় তো অবশ্যই একটা ঘটনা; যে, আমাদের আগের এটলিসট ২-৩টা জেনারেশন বোস কেবিনের নাম জানেন, হিসট্রি তৈরি হইতে টাইম লাগে, ইমেজ হিসট্রি’র লগে জড়িত ঘটনা; খালি কোয়ালিটি-ই না, একটা লং-টাইম ধইরা কোয়ালিটি ডেলিভার করতে পারাটাও ঘটনা; এবং এমনকি সেইটার মরতেও টাইম লাগে, বাইরে থিকা টেরও পাওয়া যায় না সবসময়… আমার ধারনা, নারায়নগঞ্জের মানুশ-জন জানেন যে, সুগন্ধা’র নাশতা ভালো, তাই বইলা বোস কেবিনের’টা খারাপ – তা না, বোস কেবিন একটা সময়রেও রিপ্রেজেনট করে, যেইটা পুরানো; সুগন্ধা-ও যে খুব ‘আধুনিক’ – তা না, এই রেসটুরেনটেরও কিছু সময় পার হইছে বইলা আমি ধারনা করি, কিনতু এখনো ‘জাত’-এ উঠার বা এসথেটিকালি মেনশনড হইতে পারার জায়গাটাতে যাইতে পারে নাই, পারবে কিনা – এইটা নিয়াও কিছুটা সনদেহ আছে আমার…
সনদেহ’টা জাসট কোন গাট-ফিলিংস বা মনে-হওয়ার ঘটনা না; বাংলাদেশে যে কোন কালচারাল এলিমেনটের এসথেটিকালি কনসট্রাকট হওয়ার কিছু তরিকা আছে; মোসটলি দুইটা – এক, কলকাতা-বাহিত কলোনিয়াল হেরিটেজ, অথবা দিল্লী-পারসিয়ান হেরিটেজ – এই দুইটার বাইরে গিয়া কোন কালচারাল ‘অথেনটিসি’ বা ‘এসথেটিকস’ তেমন পাইবেন না বাংলাদেশে (বা রেয়ার); মানে, বাংলাদেশ – পিরিয়ড হিসাবে নতুন, এইটা তো আছেই, এবং খালি ‘নতুন’ বইলাই ‘কম-দামি’ না বরং যতটুক এর রেলিভেনস আছে বা রাখতে পারে অই ‘ট্রেডিশন’-এর লগে ততটুকই এইটা ‘ভালো’ বা ‘রেকমনডেড’
‘সুগন্ধা’র নাশতা তো ভালো, কিনতু কোনদিক দিয়া এইটা ভালো? – ‘মোগলাই’-টাইপের খাওয়া ভালো বানাইতে পারে – এইজন্য মেবি; মানে, বোস কেবিনের ‘হিনদুয়ানি’র এগেনেইসটেট এইটা যেন একটা ‘মুসলমানি’-হেরিটেইজ হইতে পারে – এই কারনে ভালো 🙂 কিনতু মুশকিল হইলো, ‘মুসলমানি’ হওয়াটা এর ক্লেইম না আর কি এতোটা; এমনকি ‘বাঙালি’ না, বরং ‘বাংলাদেশি’ ধরনের খাবার – রুটি, পরোটা, তন্দুর; ভাজি-ডাল-সুজি-ডিম-সুপ-নেহারির… এইরকমের জিনিস যেইগুলা মোটামুটি বাংলাদেশের সব শহরেরই ‘কমন’ আইটেম; এর যে কোন লেজ বা সুতা নাই, তা না; কিনতু এই ‘হেরিটেজ’ ১৯৪৭’র পরেই গ্রো করার কথা বাংলাদেশে; এবং যেহেতু মোর এনড লেস ‘বাংলাদেশি’ একটা জিনিস, তেমন এসথেটিকাল ঘটনা হওয়াটা টাফ
মানে, অবশ্যই এইটা পুরা ঘটনা না, কিনতু এই বেপার’টা এইখানে নাই – এইটাও মেবি ‘সত্যি’ না
তো, এইটারে জাসট একটা উদাহারন হিসাবে বলতেছি, কিনতু এই যে ‘বাংলাদেশি’ হওয়াটা কেটাগরিকালি নন-এগজিসটেনট বাংলাদেশে সেইটা নিয়া আরো কথা বলার বিশাল একটা ইসপেইস তো আছেইই..
/নারায়নগঞ্জ শহরের নাশতা: নিউ বোস কেবিন ও সুগন্ধা রেসটুরেনট
০৫.০৩.২০২৪
[শিট পোসট: হাগার নাই পুটকির বাঘার ডাক!]
ফেইসবুকে এখন এই জিনিসটা ভালো, অনেক বইয়ের ছবি দেখি – এইটা এইটা কিনছি, এইটা এইটা পড়তেছি, এইটা এইটা পড়বো… মানে, পচচুর ‘মেঘের ঘনঘটা’, বাংলায় কইতে গেলে বলা যায়, “আজকে মনেহয় একটা ফাডাফাডি হইবো!”-টাইপ অবসথা।
কিনতু দিন যায়, মাস যায়, বছরও চইলা যাবে মেবি, অই বই পড়ার আর কোন খবর পাবলিকলি পাওয়া যায় না; মানে, প্রেম হইতেছে হইতেছে… – এই একসাইটেটমেনট’টা দেখা যায়, কিনতু প্রেম হওয়ার পরে কিছু দেখা যায় না, মেবি খালি ‘প্যাঁক আর কাদা’; পড়ার পরে নিরব হয়া যান রিডার!
তবে বেপার’টা এইরকম না যে, রিডার বইগুলা পড়েন নাই, বা পড়ার পরে তার বলার কিছু নাই; টাইম নিয়া তো সবার-ই টানাটানি আছে, থাকে; গুছায়া কথা কইতেও তো সময় লাগে; বা ‘ভাল্লাগছে ভাই, ভাল্লাগছে…’ তো আগেই বলা হয়ে গেছে, এরপরে আরো কিছু বলতে গেলে যেই এফোর্ড’টা দিতে হয়, সেই জায়গাতে আমাদের রিডিং আসলে পৌঁছাইতেই পারে না, এইরকম একটা ঘটনাও বেশ ইসট্রংলি-ই আছে; মানে, বলার তেমন কিছু থাকে না আসলে…
তাই বইলা বই নিয়া ‘ফ্যাশান’ করাটা অবশ্যই খারাপ কিছু না, যে পড়তেছি বললে পড়ার পরে সেইটা নিয়া কথা কওয়া লাগবে, বরং বেশিরভাগ বই-ই তেমন কোন ইমপেকট তো ফেলতে পারে না আসলে আমাদের মনে, যেইটারে এনকাউনটার করা লাগবে… মানে, ইটস ওকে!
পাদ দিলেই তো পায়খানা করা লাগবে না! তবে আমার মতো দুর্জন’রা কিছু টিটকারি মারবেই, ‘প্রাচীন প্রবাদ’ বা ঝগড়াইট্টা বচনের মতো বলবে – “হাগার নাই পুটকির বাঘার ডাক!”এইটা গায়ে না মাখাটা বা না-শুইনা মিউট কইরা দেয়াটাই বেটার।
০৬.০৩.২০২৪
কোন না কোনভাবে ইন-ডিসাইসিভ থাকতে পারাটা যেমন চিনতা করার ঘটনা না, একইভাবে কোনকিছুরে ডিফাইন কইরা ফেলতে পারাটা-ই চিনতার ঘটনা হইতে পারে না আর কি…
০৮.০৩.২০২৪
দুই-তিন বছর আগের কথা, একটা সেমি-অফিসিয়াল মিটিংয়েই বসছি, আমি বাইরের লোক, জাসট হেপেনস টু বি দেয়ার; তখন যিনি বস, তিনি অফিসের ফিমেইল কলিগদেরকে মোটিভেট করার জন্য উইমেন-এমপাওয়ারমেনট নিয়া বলতেছিলেন যে, দেখেন আজকে দেশের সবচে বড় ক্ষমতায় আছেন একজন নারী, দেশের স্পিকার, ভারিসিটির ভিসি অনেকেই নারী, এইরকম উদাহারনগুলা দিতেছিলেন; তো, আমারেও কইলেন কিছু মোটিভেশনাল কথা কইতে…
কিনতু মুশকিল হইলো, কথা কইতে গেলে আমি তো নিজেরে এতোটা আটকায়া রাখতে পারি না 🙁 ‘মুখ ফসকায়া’ অনেক কিছু বাইর হয়া যায়… তো, বললাম দেখেন, টপ-লেভেলে কয়েকজন নারী আছেন – এইটা হয়তো মাঝে-মধ্যে জেনডার-ফেভার পাইতে হেল্প করতে পারে, কিনতু মোটামুটি বাজে ঘটনা হয়া-ই থাকে বেশিরভাগ সময়; কারন উনাদেরকে ক্ষমতা ধইরা রাখার জন্য, টপ-এ থাকার জন্য এমন একটা সিসটেমের লোক হয়া থাকতে হয় যেইটা প্যার্টিয়ার্কাল, বা বেটা-মানুশের সমাজের পারপাস সার্ভ করতে হয়; আর যাদেরকে টপ-লেভেলে দেখেন উনাদের বেশিরভাগ-ই দেখবেন ফ্যামিলি’র (বাপ-ভাই-জামাই-ছেলে) কারনে অই জায়গাগুলাতে রিচ করতে পারতেছেন; এর বাইরে রেয়ার কেইস যে নাই বা প্রতিভার কোন দাম নাই – বেপার’টা এইরকম না, বরং আমাদের সমাজ খালি রেসিয়াল-ই না, জেনডারের জায়গা থিকাও এক ধরনের বেলেনসড-পজিশনের চাইতে অনেক দূরেই আছে এখনো
এবং এইটা টের পাইবেন এভারেজ জায়গাটার দিকে তাকাইলে; চাকরির কথা যদি ধরেন (এইটাই জেনডার একুয়ালিটির একমাত্র জায়গা না, যদিও এইভাবে দেখানো হয়, এবং এইটা আরেকটা ঝামেলার ঘটনাই…) দেখেন, মিড-লেভেলে ফিমেইল এমপ্লয়ি কয়জন? আগে তো মেয়েরা পড়াশোনা করতে পারতো না, এখন পড়াশোনা করতে পারে, কিনতু পড়াশোনার পরে চাকরি জয়েন করে কয়জন? বা চাকরি জয়েন করার পরে অফিস-বাসা-বাচ্চা সামলায়া কয়জন মিড-লেভেলে আসতে পারে? এইখানেই ঘটনা’টা, আপনি পড়াশোনা করতে পারবেন, চাকরিতেও ঢুকতে পারবেন, কিনতু একটা লেভেলে রিচ করাটা এখনো খালি কঠিন-ই না, বরং মেয়েদের জন্য মোটামুটি ইম্পসিবল-ই একরকমের…
মানে, সমাজের এভারেজ-অবসথাটা যদি ভালো না হয়, সেইখানে দুই-একজন টপ-লেভেলে থাকাটা তেমন কিছু মিন করে না, এমনকি সেইটা সাসটেইনেবল কোন জায়গাতে যাইতে পারে না, এমনকি প্রবলেমেটিকও হয়া উঠার কথা, যে অন্যদেরকে ল্যাং না মারতে পারলে তো অই টপ-লেভেলে পৌঁছাইতে পারবেন না! এখন এইটা খালি মেয়েদের বেলাতেই ঘটে না, আমাদের সমাজে গ্রেট লোকও কম, তার কারন হইতেছে আমাদের সমাজে এভারেজ ভালো-মানুশের সংখ্যা কম, কেউ একজন ভালো-মানুশ – সেইটা মেনশন করার মতো, একটা এচিভমেনট হিসাবে মনে করা হয়; যে, উনি ভালো-মানুশ ছিলেন; একজন ভালো-মানুশ হইতে পারাটাই অনেক কিছু আসলে… কারন এইরকম সমাজে ভালো-মানুশ হয়া বাঁইচা থাকাটাই অনেক কঠিন কাজ; এভারেজ-ইসটেনডার্ড’টারে যদি ঠিক না করা যায়, সেইখানে মোটাদাগে মানুশের অবসথা ভালো হবে না আসলে; বরং সেইটা ইন টার্ন বেটি-মানুশের উপরে জুলুমটারেও বাড়াইতে থাকে
একজন-দুইজনের সাকসেস-ইসটোরি অন্যদের মোটিভেট করে বা চাপে-ফেলে, এইরকম দেখাদেখির চাইতেও এভারেজ-জায়গাটারে বা মিডল-গ্রাউন্ডটারে খেয়াল করতে পারাটা বেশি দরকারি আসলে; আর এর বাইরে, অন্য সব আলাপ তো আছেই…
১০.০৩.২০২৪
এমন অনেক এভারেজ-আরটিসট পাইবেন যারা টেকনিকালি অনেক সাউন্ড, আর খুব কম গ্রেট-আরটিসটই পাইবেন যাদের কোন খুঁত নাই
যেমন বব ডিলান, পুরা ফাটা-বাঁশের গলা তো, কিনতু এইটারেই উনি ইসটাইল বানায়া ফেলছেন, লিরিকসরে কবিতা কইরা তুলছেন; যেমন আজম খান, সুর-তাল-লয় কিছুই তো জানতেন না, কিনতু পুরা শরীর দিয়া গান গাইছেন; কাফকা, দস্তয়েভস্কি, একইরকমের ঘোর-লাগা জিনিস… মানে, উনারা খারাপ বা ভালো – তা না, উনারা ইউনিক একটা কিছু, এমনকি বলা যাইতে পারে যে, উনাদের খুঁতগুলারে উনারা একভাবে নিখুঁত কইরা তুলছিলেন… এন্ডি ওয়ারহল যেমন বলছিলেন, একজন এভারেজ আরটিসট তার উইকনেসরে লুকায়া রাখে, আর একজন গ্রেট-আরটিসট সেইটারে সেলিব্রেট করে; তো, এইরকমই আর কি বেপারগুলা…
১২.০৩.২০২৪
দা ডিকটেটর সিনেমা’টা যারা দেখছেন তারা মনে করতে পারবেন, ডিকটেটর খালি দেশের সর্বেসর্বা-ই না, সে দেশের সেরা এথলেট/দৌড়বিদও… মানে, দেশের যা কিছু আছে, সবগুলাতে সে চ্যাম্পিয়ান, তার চে ভালো কেউ নাই…
তো, সিনেমা’তে এইটা তো একটা রেটরিক-ই, ফান; কিনতু রিয়েল দুনিয়াতেও ঘটনা কাছাকাছি রকমেরই, আপনার এলাকায় যে সবচে বড় বাল*-এর নেতা সে-ই দেখবেন সবচে বড় রোজাদার, নামাজি… মানে, আমারে ভুল বুইঝেন না যে, আমি বলতেছি উনারা বা ইসপেসিফেকালি কেউ খারাপ-মানুশ, বরং অইটাও একটা কেটাগরি – ‘গুড মুসলিম’ হওয়াটা, যেইটা তাদেরকে হইতে হবে…
একইভাবে যারা সমাজে ‘পরহেজগার’ বা খুব ‘আড়ম্বরের’ সাথে ধর্ম-কর্ম করেন, উনাদের অনেকরেই দেখবেন পলিটিকালি বাল-ঘরানার, ডাইরেকট কোন পজিশনে না থাকলেও, এক-রকমের মিল-মিশের ভিতর দিয়াই চলেন, এবং এইভাবে একটা পজিশন আরেকটা পজিশনরে সাপলিমেনট করতে থাকে আসলে, কিছুটা…
কবি-লেখক-সাহিত্যিক-একটিভিসট-সাংবাদিক মোটামুটি সব লেভেলেই একই রকমের অবসথা থাকার কথা, যে, বালের লোকজনই সবচে ভালো, নাইলে এখনকার সমাজের ‘ভালো’ বা উঁচা-পদের লোকজনই বাল… এর কোন ব্যতিক্রম/একসেপশন যে নাই – তা না, অইগুলা কম-বেশি রেয়ার কেইসই
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, সমাজের টপ-লেভেলে কোন ভালো-মানুশ নাই না, বরং আমি বালের-মানুশ না হইতে পারলে ভালো-মানুশ হিসাবে নিজেরে ভিজিবল করতে পারাটা টাফ; কারন অই পজিশনগুলাও বালের দখল করা দরকার, তা নাইলে তারা আর কিসের বাল!
…
*বাল – BAL Bangladesh Awami League
১৫.০৩.২০২৪
একুশে ফেব্রুয়ারি নিয়া তো আমি একটা বই লেখবো বইলা ঠিক করছি, এই কারনে একটা জিনিস খুঁজতেছিলাম যে, একুশে ফেব্রুয়ারি কবে থিকা সরকারি ছুটি হইছিল? কোথাও কোন ডকুমেনট পাই নাই, তবে একটা ইনফরমেশন পাইছি।
বদরুদ্দীন উমর এইরকম বলছেন যে, ১৯৫৪ সালে যুক্তফ্রন্ট গভরমেনট পুব পাকিস্তানে সরকারি ছুটি হিসাবে ঘোষনা করে, ২১শে ফেব্রুয়ারি তারিখটারে; কিনতু ১৯৫৮ সালে সামরিক আইন জারি করার পরে এই ছুটি বাতিল করা হয়; তারপরে ১৯৬৯ সালে আবার প্রাদেশিক ছুটি চালু করা হয়;
এবং ১৯৬৯ সালের আগে নানান পার্টি, সংগঠন নিজেদের মতো কইরা এইদিনে ‘কমসূচি’ দিত, ‘পালন’ করতো; মানে, রাষ্ট্রিয়-ভাবে রিকগনাইজড করা হয় নাই – এইটা তো আছে, নেশনাল বা প্রাদেশিক একটা সেনটার-পয়েনটও হইছে আসলে পরে আইসা, মুক্তিযুদ্ধের আগে-আগে; এবং এর ট্রু-সেলিব্রেশন শুরু হইছে বাংলাদেশ হওয়ার পর থিকাই (এইটা আমার অনুমান, এই যে সব ইসকুল-কলেজ-ভারসিটিতে শহীদ মিনার বানানো’টা…)
১৯৬৯ সালে যখন পুব পাকিস্তানের সব দল-সংগঠন একসাথে ২১শে ফেব্রুয়ারি ‘পালন’ করা শুরু করে, তখন এর সভাপতি ছিলেন বদরুদ্দীন উমর, কিনতু উনি যখন এর কোন ডকুমেনটারি এভিডেনস দিতে পারেন নাই, অন্য কেউ দিতে পারবে – এই আশা তো কম-ই, কিনতু যেহেতু সরকারি-ডকুমেনট কোথাও না কোথাও এর দলিল থাকার কথা…
তো, এর আগ পর্যনত বদরুদ্দীন উমরের কথাতেই বিশ্বাস রাখলাম
#একুশেফেব্রুয়ারি
১৮.০৩.২০২৪
পর পর দুইদিন ঘটলো এই ঘটনা; ১০ টাকা কম নিলো দোকানদার, কারন ভাংতি ১০ টাকা নাই। একদিন এক ইফতারির দোকানে, আরেকদিন এক ফার্মেসিতে।
আগে তো ১ টাকা/২ টাকা না থাকলে লজেন্স/চকলেট দিত, এখন ২ টাকা দামের লজেন্স/চকলেট সিগারেটের দোকানেও বেচতে দেখি না। ৫ টাকা তো মোটামুটি মার্কেট-আউট। নোটগুলা ছিঁড়া-ফাঁড়া, কয়েনও কইমা গেছে, রেয়ার।
তো, ১০ টাকারেই মিনিমাম একসচেইঞজ ইউনিট হিসাবে ভাবতাম আমি; এখনো হয়তো সেইটাই আছে। তারপরও ১০ টাকা ছাইড়া দেয়াটা একটা ঘটনা মনে হইছে, যে ১০ টাকার কি দাম আর, মাঝে-মধ্যে ‘অনার’ করা যাইতেই পারে! যদিও ১০ টাকায় একটা পুরি কিনতে পাওয়া যায় এখনো।
কিনতু মিনিমাম রিকশা ভাড়া-ই তো ২০ টাকায় উঠছে, ঢাকা শহরে; অইটাই মিনিমাম ইউনিট আসলে। ১০ টাকা দেয়া যাবে না – তা না, দিতে মেবি খারাপ লাগার কথা কিছুটা।
মানে, মিডল-ক্লাস হয়া থাকাটা আরো কস্টলি হয়া উঠতেছে আসলে, দিনে দিনে…
/১০ টাকা
…
অবিচুয়ারি: খালিদ (চাইম)
একজন গ্রেট আরটিসট সময়রে পার হয়া যান – এইরকম কথা তো আছে; মানে উনি বা উনার আর্ট ট্রানসেনড কইরা যায়; তার মানে, আর্টে একটা ‘সময়’ তৈরি হয়, একটা সুর থাকে, স্বর থাকে, ইসটাইল থাকে একেকটা সময়ের; একজন গ্রেট আরটিসট অই সময়টার ভিতরেও থাকেন, আর অই সময়টারে তৈরি করেন অনেক গুড-এভারেজ আর্টিস্টরা, এক সাথে মিইলা; আমাদের নাইনটিজের সময়টারে যারা তৈরি করছিলেন, চাইমের খালিদ আছিলেন তাদের একজন…
অই সময়ে চাইম, অন্য অনেকগুলা ব্যান্ডের মতোই একটা ব্যান্ড ছিল; মানে, ভালো-ব্যান্ড – সোলস, মাইলস, রেনেসা’র মতো পুরান ব্যান্ডগুলার পরে ছিল চাইম, অবসকিওর, ডিফরেন্ট টাচ…চাইমের ভোকাল হিসাবে উনার ‘গলা’ ছিল সুন্দর…
কিনতু খালিদ আসলে খালিদ হয়া উঠছেন চাইমের আরো অনেক বছর পরে, ব্যান্ড-ট্যান্ড যখন আর তেমন একটা নাই, বা অন্য নতুন ব্যান্ডগুলা আইসা নাইনটিজের ‘প্যানপ্যানানি রোমানটিক’ গানগুলারে ‘পুরান’ বানায়া ফেলছে; তখন খালিদ আবার নতুন কইরা ‘রোমানটিক’ গান নিয়া আসছেন – যদি হিমালয় হয়ে, সরলতার প্রতিমা, হয়নি যাবার বেলা… অইগুলা নাইনটিজের টোনগুলারেই ক্যারি করে, কিনতু আরেকটু সিরিয়াসলি, অকওয়ার্ডভাবেও… (যেন ‘ব্যর্থ-প্রেমিক’ হওয়া ছাড়া আমাদের আর কিছুই হওয়ার নাই, অইটাই হইতে চাইছি আমরা সারা-জীবনভর…)
তো, এইভাবে খালিদ খালি কাম-ব্যাক করেন নাই, খালিদ হয়া উঠছিলেন; যিনি চাইমের খালিদের চাইতেও একটু বেশি কিছু হয়া উঠছিলেন…
একটা সময়ের আর্ট, মিউজিক আসলে কালেকটিভ মেমোরি তৈরি করে, একেকটা গানের ভিতর দিয়া একেকটা ঘটনারে, ফিলিংসরে আমরা মনে রাখি; আর এইভাবে পারসোনাল মেমোরিগুলা জমা হইতে হইতে একটা কালেকটিভ মেমোরি তৈরি হয়, একটা সময়ের… খালিদের গানে এইরকম একটা ‘সময়’ তৈরি হইছিল আমাদের
যেই কারনে একটা স্যাডনেস তৈরি হইছে আমার মনে, আমার ধারনা, আমাদের সময়ের অনেকের মনে; আমাদের জেনারেশনের পরে যারা উনার গান শুনবেন, তাদের এইটা ভাল্লাগবে না – তা না, কিনতু খালিদের গানের ভিতর দিয়া নাইনটিজের একটা ট্রিবিউট-ই আমরা পাইতে পারবো মেবি…
তবে ট্রাজেডি’টা হইলো, যতদিন উনি বাঁইচা ছিলেন, গান গাইতেছিলেন, তখন উনার গান ভালো-লাগলেও উনার কনট্রিবিউশনের জায়গাটারে মেবি আমরা তেমন কেউ এপ্রিশিয়েট করতে পারি নাই পাবলিকলি, এখন যখন উনি মারা গেছেন, তখন বলতে পারতেছি, ইউ উইল বি মিসড, খালিদ!
২০.০৩.২০২৪
সাদী মহম্মদের কালচারাল ডেথ
সাদী মহম্মদ (মোহাম্মদ-ই তো জানতাম, এখন উইকিপিডিয়া’তে দেখি এই বানান) মারা গেছেন গত ১৩ তারিখে (মার্চ, ২০২৪)। তো, উনারে চিনতাম আমি। টিভি’তে উনার গান শুনছি, পত্রিকা’তেও উনার ছবি ও নাম ছাপা হইতে দেখছি, অনেকবার। উনি রবীন্দ্র-সঙ্গীত শিল্পী। বাংলাদেশে রবি-গান গাইয়াই কালচারাল আইকন হইতে পারছেন অনেকে (মিতা হক, রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, সানজিদা খাতুন…); মানে, উনাদের কালচারাল (এবং পলিটিকাল) সিগনিফিকেনস হইতেছে সারা-জীবন ধইরা রবিবাবুর গান গাইয়া যাওয়া! (যেই গান আবার ধরেন ১০% এর বেশি লোক শুনে নাই, বা শুনে না, বাংলাদেশে।)
তো, এইটা কোন খারাপ-কাজ না অবশ্যই। ফিরোজা বেগমও নজরুল ইসলামের গান-ই গাইছেন মোসটলি; উনি যে অন্য কোন গাইতে পারতেন না – তা না, অনেক ভালো উর্দু-হিন্দি গান উনি গাইছেন, কিনতু পরে ডিসিশান নিছেন যে, না, নজরুল ইসলামের গান-ই উনি গাইবেন, এবং উনি একভাবে আসলে নজরুল-গীতিরে একটা জনরা হিসাবে এসটাবলিশ করতে, তৈরি করাতে একটা মেজর কনট্রিবিউশন রাখছেন। ফরিদা পারভীনও লালনের গান-ই গাইছেন। উনারাও সেলিব্রেটেট হইছেন, বাংলাদেশে।
একটা ডিফরেনস হইতেছে নজরুল-সঙ্গীত এবং লালন-সঙ্গীতের অডিয়েনস বেইজ সার্টেনলি রবীন্দ্র-গীতি’র চাইতে বড়, কিনতু রবীন্দ্র-গীতি শুনলে যেইরকম নিজেরে ‘শিকখিত’ দাবি করা যায়, নজরুল-সঙ্গীত শোনাটা কালচারাল এলিমেনট হিসাবে অইরকম ক্লাস-পজিশন দেয় না কাউরে, সোশালি (গানের সমঝদার হওয়ার কিছু ঘটনা ছিল মনেহয় কিছুদিন); লালন-সঙ্গীতের অবসথা তো বরং উল্টা-ই ছিল, আনটিল রিসেনট পাস্ট, উনারে ‘এনটি-কলোনিয়াল’ ফিগার হিসাবে ডিসকাভার করার আগ পর্যনত। মানে, নজরুল-সঙ্গীত বা লালন-সঙ্গীত গাইয়াও কেউ কালচারাল-আইকন হইতে পারেন-না না, উনারা সার্টেন ক্লাস-আইডেনটিটি এবং পলিটিকাল-পজিশনরেও রিলিভেনট কইরা তোলেন আসলে। (এবং আমরাও আমাদের কনজামশনের ভিতর দিয়া।) এই রিলিভেনট কইরা রাখতে পারাটাই উনাদের এচিভমেনট।
মিউজিক একটা বড় এলিমেনট আমাদের সোসাইটি’র কালচারে। কবিতা একটা সময়ে ছিল গীতি-কবিতা/গান; গল্প/উপন্যাসও একটা সময়ে ছিল গীতি-কাব্য/গান; এমনকি যতটা সুরে কথা কওয়া যায়, ততটা ভালো-কবিতা এবং ভালো-সাহিত্য। আরেকটা জিনিস হইতেছে, এইখানে যিনি গান’টা গান, উনি আসলে গানটার মালিক/ওনার হয়া উঠেন; যেহেতু শুধুমাত্র কবি/কবিয়াল’রাই গান গাইতেন, যিনি নিজে দুই-চাইর’টা পদ লেখছেন, বা যার গান গাইতেছেন তারে গুরু মানার শর্তে সেই গান গাওয়ার অধিকার তিনি পাইতেছেন; এমনকি অনেক সময় নিজে দুই-চাইর লাইন এডও করতে পারতেন।… মানে, এইভাবে যিনি গাইতেছেন, উনিও গানের একজন মালিক হয়া উঠেন, তার পারফর্ম করার ভিতর দিয়া। পারফরমেনস’টা একটা ঘটনা এইখানে।
এর-ই একটা ধারা বা কনসিকোয়েনস হিসাবে, যারা নিজেরা কোন গান লেখেন নাই, সুর করেন নাই, তেমন কোন চিনতা-ভাবনাও করেন নাই, কিনতু খুব যত্ন কইরা একটা পার্টিকুলার ধরনের গান গাইয়া গেছেন একটা লম্বা সময় ধইরা, তারা কালচারাল আইকন হইতে পারছেন বাংলাদেশে; আর রবি-গীতি’রে যেহেতু ‘বাঙালি-পনা’র লগে মিলায়া দেয়া গেছে, যারা রবি-গান পারফর্ম করছেন তারা কালচারাল-ক্লাসের এবং পলিটিকাল পজিশনের বেনিফিটগুলা পাইছেন।
সাদি মহম্মদ’রে এই জায়গা থিকা-ই কালচারাল আইকন হিসাবে পিক করার ঘটনাটা ঘটছে বইলা আমি মনে করি। এর বাইরে, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে উনার লাইফের ট্রমাটিক একসপেরিয়েনসও একটা মিডিয়া-ঘটনা হয়া ছিল। তো, উনারে যে সুইসাইড করা লাগলো, সেইটাতে উনার পারসোনাল গ্রিফ তো থাকার-ই কথা, কিনতু আইডিওলজিকাল পজিশনেরও কনট্রিবিউশন ছিল কিনা – এইরকম খোঁজাখুঁজিও হইতেছিল মনেহয় কিছু; তবে আমার মনে হইছে, এই দেশে পুরষ্কার-টুরষ্কার পাওয়া, টিভি-ক্যামেরায় মুখ দেখানো, নিউজপেপারে ছাপা হওয়া যে তেমন কিছু আর মিন করে না, অই শ্যালো-নেসের ফিলিংস’টারেও আন-ইনক্লুড রাখাটা ঠিক হবে না।
আরেকটু খোলাসা কইরা যদি বলি, ফিরোজা বেগম যেমন নজরুল-সঙ্গীতে উনার কনট্রিবিউশন রাখছেন, জিনিসটারে ছড়ায়া দিতে পারছেন; ফরিদা পারভীনও যেমন মিডল-ক্লাসের আর্ট-মেটেরিয়াল হিসাবে লালন-সঙ্গীতরে আগায়া দিতে পারছেন, খালি পারফর্ম-ই করেন নাই, আর্টের জায়গাটাতে কনট্রিবিউট করছেন; সেইখানে বাংলাদেশের রবি-গীতির পারফর্মরা একটা প্রেজুডিসের জায়গারেই বরং ধইরা রাখছেন, যেইখানে মিডল-ক্লাসের গ্রাউন্ডেও জায়গা-জমি হারাইতেছিলেন, ইরিলিভেনট হয়া উঠতেছেন; যেইটা উনাদের নিজেদের জন্যও একটা সময়ে ‘ক্লান্তিকর’ হয়া উঠার কথা…
র.ঠা. উনাদের এই ক্লান্তি ক্ষমা করতে পারতেন কিনা আমরা জানি না, কিনতু সাদী মোহাম্মদ মেবি নিজেরে মাফ করতে পারেন নাই… (মানে, এইটাও একটা ঘটনা হইতে পারে)
তবে, আই হোপ যে, উনাদের(রবি-গীতি সিঙ্গারদের) না-পারাগুলারে আমাদের নিজেদের’পরাজয়’ হিসাবে দেখাইতে চাওয়ার জোরাজুরিটারে না নিতে পারার ডিসিশান’টা আমরা নিতে পারবো… সাদী মহম্মদের আন-ফরচুনেট ডেথের পরেও
২৩.০৩.২০২৪
বাজারে জিনিসের দাম যে বাড়ছে এর এটলিসট ৫০% বাড়ছে নানান রকমের সরকারি ভ্যাট টেকস এবং কারেনট গ্যাসের দাম বাড়ার কারনে; মানে, এর যে একটা এফেক্ট আছে, সেইটা মোটামুটি কোন আলাপেই নাই
আর বাকি ৫০%’র একটা বড় অংশও সরকারি লোকজনের পেটেই যায় নানান-ভাবে, আর নিডলেস তো সে, যারা এই বাজারে দাম বাড়ানোর প্রফিট নিতেছেন তারা সবাই পলিটিকালি সরকারের লগে কানেকটেড…
মানে, পুরা ব্যাপারটা যে একটা দুর্ভিক্ষ-অবস্থায় আইসা পৌঁছাইছে সেইটা এই উন্নয়ন-অর্থনীতি এবং পলিটিকাল-ফেসিজিমেরই বাই প্রডাকট, যেইটা আন-এভেয়ডেবলই এক রকমের…
২৬.০৩.২০২৪
দেশের গান
‘দেশাত্মবোধক’ গানের যে কি ভয়াবহ অবস্থা – আজকে রেডিও’তে গান শুনতে গিয়া টের পাইলাম; একটা কোন গান নাই! মোটামুটি ৫০-৬০ বছর (এমনকি ব্রিটিশ-আমলের) আগের যেই গানগুলা আছে, সেইগুলাই বাজানো হয়; গত ২০ বছরে তেমন রিমার্কেবল কোন ‘দেশের গান’-ই নাই! (জিতবে এবার নোওকা ছাড়া! 🙂 )
আসলে ফিলিংসের জায়গাটা শ্যালো বা চাপানো ঘটনা হইলে সেইখানে তো কোন ভালো-আর্ট তৈরি হওয়াটা পসিবল না!
তো, রেডিও’তে এই গান শুনতে শুনতে আমারে চেতানোর জন্য মেয়ে’রা কইলো তোমার বেস্টি’রে (ফেভারিট মানুশরে) নিয়া কোন গান লেখা হয় নাই এখনো! 😀 আমি কইলাম দাঁড়াও, আমি-ই উনার নাম বসায়া দিতেছি!
…
বাংলার হিন্দু (সেকুলার), বাংলার বৌদ্ধ (নাস্তিক),
বাংলার খ্রীষ্টান (কলোনিয়াল), বাংলার মুসলমান (ইসলামিস্ট),
আমরা সবাই **নার গোলাম-ই
Leave a Reply