নোটস: মে, ২০২২ [পার্ট ৩]

মে ২১, ২০২২

তর্ক: ১০১

১. যাদের লগে মিনিমাম পারসোনাল পরিচয় নাই, তাদের লগে তর্ক করবেন না। তর্ক-করা খালি কোন ইন্টেলেকচুয়াল, আইডিওলজিক্যাল পজিশনের ঘটনা না, কম-বেশি পারসোনাল ঘটনাই।

২. চুজ ইউর দুশমন কেয়ারফুললি! রিয়েল-ফ্রেন্ডশিপ রেয়ার, কিন্তু রিয়েল-এনিমি খুঁইজা পাওয়া সৌলমেটের চাইতেও ডিফিকাল্ট। মেবি, আপনার সৌলমেইটই হইতেছে আপনার রিয়েল-এনিমি, ইন রিভার্স!

৩. তর্ক-করা সত্যি-আবিষ্কার করার কোন তরিকা না। কিন্তু সত্যি-জিনিসটারে ফিল করার জন্য কোন না কোন ইন্টার-একশনের দরকার আছে। (এম্পটি-স্পেইসে সত্যি’র কোন দরকার নাই।) তর্ক হইতেছে এর মধ্যে সবচে ওরস্ট-পসিবল অপশন।

৪. আন-নেসেসারি তর্কগুলারে এড়াইতে না পারলে রিয়েল-তর্কগুলারে আপনি কোনদিন খুঁইজাই পাইবেন না। নিটশে যেইরকম বলছেন, গ্রেট ইন্টেলকচুয়ালস আর এসকেপটিক্যাল।

৫. উপমা দিয়া কথা-বলা, রেটরিক করা, হিউমার করা সাহিত্যের অলংকার, তর্কের জায়গাতে জঞ্জাল। পাবলিক-তর্কে এইগুলা অডিয়েন্সরে প্লেজার দিবে, আপনার ভোট বাড়াবে, কিন্তু তর্কের বিষয় থিকা দূরেই নিয়া যাইতে থাকবে।

৬. নিজের সাথে সবসময় তর্ক করবেন।

৭. এইটাও ডিসাইড করবেন, কার কার সাথে, কোন কোন জিনিস নিয়া তর্ক করবেন না, বা তর্ক করা যায় না আসলে…

৮. অনেকগুলা পারসপেক্টিভ আছে বইলাই কোন একটা পারসপেক্টিভ সত্যি না – এইটা ঠিক না। এই কথা মনে রাখবেন।

৯. তর্কে জিততে পারা’র চাইতে হারতে পারলেই বরং কিছু শিখতে পারবেন। কিন্তু হারতে-পারা কঠিন। যারা পারেন, তাদেরই তর্কে ইনভলব হওয়া দরকার।

[অনেক দিন তর্ক করছি আমি, পরিচিত-অপরিচিত অনেকের সাথেই, জরুরি-আজাইরা অনেক জিনিস নিয়াই। এখন রিটায়ার করছি। উপদেশ লিখতেছি। ২০১৯ সালে কয়েকটা পয়েন্ট লেখছিলাম। অইগুলারে এখন বাতিল ঘোষণা করতেছি। মানে, কম-বেশি কিছু মিল আছে, অইগুলার লগে…]

মে ২২, ২০২২

– দেশে আইনের শাসন নাই, মব-জাস্টিস জাস্ট এরই একটা কন্সিকোয়েন্স –

দেশে যখন আইনের বিচার নাই, তখন চুপ কইরা তারে সার্পোট দিয়া; রেব দিয়া, পুলিশ দিয়া গুম-খুন করায়া, মামলা দিয়া জেলে ঢুকায়া, ম্যাজিস্ট্রেট দিয়া জামিন না দিয়া, নিজেদের ইচ্ছা-মতো আদালতের রায় দেয়া বাকশালি-রিজিমের লোকজন যখন মব-জাস্টিস নিয়া ওরিড হওয়া শুরু করে, তখন সেইটা “আইনের শাসন” ফিরায়া নিয়া আসার ঘটনা না, বরং নিজেদের আকাম-কুকাম (পড়েন, এলিট-কালচারের ‘ব্যক্তি-স্বাধীনতা’) নিয়াই ডরের জায়গা থিকাই করে এইটা।

(এইটা ‘ব্যক্তি-স্বাধীনতা’ না, বাকশালি-ফেমিনিজমের লোকজন যেইরকম আমাদেরকে বুঝাইতে চায়। এইটা ক্ষমতার দালালি কইরা সোশ্যাল-এরোগেন্স শো করার ঘটনাই…)

মব-জাস্টিস কে চায়? ইভেন মব-এর পাল্লায় পইড়া যেই লোকটা কিল-ঘুষি দিতে যায়, সেই লোকটাও কনশাস-মাইন্ডে এইটা চায় না।
আদালতের বিচারের বদলে মিডিয়ার-ট্রায়াল চালানো হইতেছে, ফেইসবুকের বট’দেরকে লেলায়া দেয়া হইতেছে, মব-জাস্টিস জাস্ট এরই একটা কনসিকোয়েন্স।

যেই দেশে বিচার নাই, যেই দেশে অবৈধ-সরকারের জুলুম নিয়া ‘মেইন-স্ট্রিম’ মিডিয়ায় টু-শব্দটা নাই, সেই দেশে সোশ্যাল-আনরেস্ট, মব-জাস্টিস যে এখনো শুরু হয় নাই, এইটা আল্লাহর রহমত!

বাংলাদেশের মানুশ চোখ বন্ধ কইরা, কিছু না দেইখা, কান বন্ধ কইরা, বয়রা হয়া বাঁইচা রইছে, খালি দমবন্ধ হওয়াটা বাকি আছে।

মব-জাস্টিস বন্ধ করার কথা না বইলা, বে-আইনি বাকশালি-শাসন বন্ধ করার কথা বলেন! গোড়া কাইটা আগায় পানি ঢাললে তো হবে না, বস!

***

– ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টম্যান্ট –

আজকে কথায় কথায় মনে হইতেছিল, আমরা যখন ভার্সিটিতে ইকনোমিকস পড়ি (১৯৯৫-৯৬ সালের দিকে), তখন বাংলাদেশের অর্থনীতি নিয়া কথা উঠলে, এই প্যারামিটার নিয়া আলাপ হইতো, যে দেশের অবস্থা ভালো, কারণ ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট বাড়তেছে! 🙂

তখন তো টেলিকম কোম্পানিগুলা ইনভেস্ট করতেছিল। বাংলাদেশ এখন পলিটিক্যালি স্ট্যাবল (১৯৯১’র ইলেকশনের কারণে) – এইরকম ইমেজও ছিল। লাগাতার হরতাল এবং লগি-বৈঠার তান্ডবে এই ইমেজ শেষ হইতে অবশ্য বেশিদিন লাগে নাই।… তারপরে আফ্রিকা তো গ্রীন-জোন হইতে থাকলো এবং এশিয়ার অন্য দেশগুলাতে মন্ত্রি-এমপিদেরকে কম কমিশন দেয়া লাগতো মনেহয়।… এইসব ভাইবা মনে হইলো, ফরেন ডাইরেক্ট ইনভেস্টমেন্ট কমতে থাকার কথাই তো মনেহয়, বা অইভাবে আর বাড়ে নাই, নাকি?

কিছু ইন্ডিয়ান-কোম্পানি মেবি ইনভেস্টমেন্ট করছে বাংলাদেশে, গত কয়েক বছরে। মোদীর এক স্পন্সর-ফ্রেন্ড তো রিয়েল এসেস্ট বিজনেসের অ্যাডও দিছিল পত্রিকায়।… মানে, ফরেন ইনভেস্টমেন্টও বাদ দেন, গর্ভমেন্ট-স্পেন্ডিং (মানে, উন্নয়নের মানে টাকা খাওয়া-খাওয়ি) বাদ দিলে দেশে প্রডাক্টিভ ইনভেস্টমেন্টের অবস্থা কি রকম? (অবশ্য গর্ভমেন্ট যেই ডেটা দেয়, সেইটার অবস্থাও তো মাশল্লাহ!)

মে ২৪, ২০২২

ঢাকা ভার্সিটি’তে ছাত্রদল কোন মিছিল-মিটিং করতে পারে না, হামলা-মামলা করা হয়, নিয়মিতই।

‘ইসলামী ছাত্র-সংগঠনগুলা’ও মিছিল-মিটিং করতে পারে না মেবি। মানে, উনাদেরকেও ‘ঠেকানো’ হয়!

কিন্তু ‘বামপন্থী ছাত্র-সংগঠনগুলা’ কম-বেশি মিছিল-মিটিং এবং ‘বিপ্লব’ করতে পারে। মাঝে-মধ্যে ডাইকা নিয়া চড়-থাপ্পড় দিলেই ‘কন্ট্রোল’ করা যায় মনেহয়।

তো, এই ডিসস্ক্রিমিনেশন কেন হয়? মিছিল-মিটিং তো সবাই-ই করতে পারার কথা। কেউ করতে পারে, কেউ কেন করতে পারে না? এর কারণ কি?

বাম ছাত্র-সংগঠনগুলার কিছু করার ক্ষমতা নাই বইলা চান্স পায়? তা তো সত্যিই কিছুটা। এদের তো কোন পিপল-বেইজ নাই, পেপার-পত্রিকার সংগঠনই এরা। যতোটা না পলিটিক্যাল অর্গানাইজেশন তার চাইতে বেশি কালচারাল-সংগঠন, পাঠচক্র টাইপের ঘটনা।…

কিন্তু তার চাইতে বড় ঘটনা হইতেছে, আইডিওলজিক্যালি এরা বাকশালেরই পার্ট, ছাত্রলীগের কাজিন, গরিব-আত্মীয় এরা। যতোই ছাত্রলীগের পোলাপাইনের মাইর খাক এরা, ছাত্রদলের পক্ষে যদি একটা লাইনও লেখে এদের ‘বামত্ব’ [ব্রাহ্মণত্ব] থাকবে না।

এই কারণে ছাত্রলীগ, ডামি-বিরোধীদল হিসাবে ‘বাম ছাত্র সংগঠনগুলারে’ ক্যাম্পাসে থাকতে দিবে, এমনকি ছাত্রদলের লোকজনরে মাইর-ধর করার প্রতিবাদে ‘বাম ছাত্র-সংগঠনগুলারে’ মিছিল-মিটিং করতে দিবে, কিন্তু ছাত্রদলরে দিবে না।

খেয়াল কইরা দেখবেন বাকশাল যে নন-ডেমোক্রেটিক, মিনিমাম ডেমোক্রেটিক রাইটসও দিতে চায় না, এইটা নিয়া ‘বামদের’ কোন আপত্তি নাই। ছাত্রদলের মাইর খাওয়াটা যেন ছাত্রদলের এনাফ পাওয়ার না থাকা! নিউজ-মিডিয়াগুলাও এইভাবেই দেখায়।

এইভাবে এরা এই নন-ডেমোক্রেটিক রিজিমের, জুলুমের শাসনের সহযোগী শক্তি হিসাবেই এফেক্টিভ থাকে। যেই জায়গাটারে আমাদের ক্লিয়ারলি মার্ক করা দরকার। ছাত্রদলের লোকজনের উপর হামলা খালি ছাত্রদলের উপর হামলা না, নন-ডেমোক্রেটিক একটা ঘটনা। যতদিন এই জায়গাটারে রিকগনাইজ না করা হবে, ডেমোক্রেটিক শাসনের দিকে আমরা আগাইতে পারবো না।

মে ২৫, ২০২২

– আমাদের সময়ের বিটিভিগুলারে চিইনা রাখেন –

এরশাদের টাইমে কি বিটিভি’র নিউজরে বিশ্বাস করতো বাংলাদেশের মানুশেরা, দৈনিক-বাংলার খবর? বা মুক্তিযুদ্ধের সময় রেডিও পাকিস্তানের কথা?

তাইলে এখনকার বাকশালি-রিজিমে বিটিভিগুলা (৭১টিভি, সময় টিভি…) আর দৈনিক-বাংলাগুলারে (পরথম আলো, ডেইলি-স্টার…) কেন বিলিভ করবেন? এরা তো বাকশালি ক্ষমতা-কাঠামোরই অংশ।

তারপরেও যে সন্দেহ করা যায় না সবসময়, এর মেবি তিনটা কারণ আছে।

এক হইতেছে, রেডিও পাকিস্তান তো সরাসরি মিছা-কথা কইতো, অইগুলারে মাইনা নেয়া যাইতো না। আর বিটিভি, দৈনিক-বাংলা তো কিছুই কইতো না, বাতাবি-লেবু’র খবর কইতো, এখনো এইগুলাই করে, যার ফলে হাসাহাসি করা যাইতো অদেরকে নিয়া। কিন্তু এখন সিচুয়েশনটা হইতেছে, এরা হাফ-লাই প্রডিউস করে। একটা কনফিউশন ক্রিয়েট করে। কিন্তু আধা-সত্য পুরা-মিথ্যার চাইতেও বাজে জিনিস।

তো, কনফিউশনের কারণে, রিজেকশনের জায়গাটাতে যাইতে টাইম লাগে। কিন্তু বিটিভি যেমন নিজেরে বদলাইতে পারে নাই, এরা পারবে না আসলে। যতদিন এই পত্রিকা-টিভিচ্যানেলগুলা বাঁইচা থাকবে খালি পলিটিক্যাল না, যে কোন বিষয়েই হাফ-লাই প্রডিউস করতে থাকবে। বিটিভি’র বাতাবিলেবুর মতো।

সেকেন্ড হইতেছে, একটা-দুইটা পত্রিকা, টিভি-চ্যানেল হইলে ইগনোর করা সহজ, অন্য পত্রিকা, চ্যানেলে শিফট করতে পারবেন, কিন্তু সব যদি একই হয়, তাইলে কই যাইবেন? এইরকম একটা কোশ্চেন আমাদের ‘শিক্ষিত’ সমাজে আছে, কিন্তু খেয়াল কইরা দেখেন পিপল ইউটিউব, টিকটকে শিফট কইরা গেছে।

টিভি-পত্রিকাগুলার ‘সিরিয়াসনেসের’ কারণে না, বরং হাফ-লাইয়ের কারণে। রেফারেন্স হিসাবে আমাদেরকেও সরতে পারতে হবে আসলে।
থার্ড গেইমটা হইতেছে, “আমাদের উপর চাপ আছে” 🙂 এইটা সবসময়ই ছিল। পাকিস্তান আমলে, বাকশাল-আমলে, এরশাদ আমলে এবং নয়া-বাকশাল-আমলে এইটা খালি সরকারি-চাপ না সোশ্যালমিডিয়া-বটদের দিয়াও ইনিশিয়েট করা হইতেছে। কার ব্যাপারে সত্যি, আর কতটুক সত্যি – এই বুঝ কম-বেশি আমাদের সবারই থাকার কথা, আছে।

এইগুলা যতোটা না কোন ‘চাপ’, তার চাইতে বেশি নন-ডেমোক্রেটিক আইডিওলজিক্যাল এলায়েন্সেরই ঘটনা।

মে ২৬, ২০২২

আমার পোশাক

বাসায় (মানে, ঢাকায়) আমি হাফপ্যান্ট বা থ্রি-কোয়ার্টার পরি। আর বাড়িতে গেলে (ভৈরব, কিশোরগঞ্জে) সবসময় লুঙ্গি পিন্দি আমি। বাসার/বাড়ির বাইরে গেলে সবসময়ই প্যান্ট পিন্দি, মোটা-কাপড়ের প্যান্ট (গেবাডিন, জিন্স) আমার কাছে কমফোর্টেবল। লগে কলার-ছাড়া গেঞ্জি (টি-শার্ট)। একটু ঢিলাঢালা হইলে ভালো। কোন অফিসিয়াল কাজকামের বাইরে এইটাই আমার ড্রেস-কোড। মাঝে-মধ্যে ফুল-হাতা শার্ট। এক-কালার বেটার। সুন্দর চেক-শার্টও খারাপ না, কিন্তু মনমতো মিলে না।…পাঞ্জাবি পরা হয় না নরমালি। ঈদ উপলক্ষ্যে পাঞ্জাবি কিনতে কিনতে ৭-৮টা পাঞ্জাবি জমছে।… অফিসে তো আগে কোট-টাই পরা লাগতো, করোনার পরে এতোটা মেন্ডেটরি না। তবে কোট-পরা ভালোই, হালকা শীতের দিনে। অনেকগুলা পকেট, অনেক কিছু রাখা যায়। যে কোন পোশাকই ভালো, মনেহয় কেউ জড়ায়া ধরে রাখছে আমারে। 🙂

মে ২৭, ২০২২

আপনি যদি এই অবৈধ সরকারের বাকশালি জুলুমের বিপক্ষে দাঁড়াইতে চান, তাইলে আপনারে বিএনপি করা লাগবে না, কিন্তু অবশ্যই বিএনপি’র ডেমোক্রেটিক রাইটসের পক্ষে কথা বলা লাগবে।

যেই ছাত্রলীগ সরকারি মদদে পুলিশের পাহারায় ভায়োলেন্স করে আর যেই ছাত্রদল ভায়োলেন্সের শিকার, এই দুইটা পক্ষরে যারা সমানভাবে দায়ী করতে চায়, এরা কখনোই নিরেপক্ষ না, এরা বাকশালেরই বি-টিম।

সো-কল্ড বাম-বুদ্ধিজীবীরা দেখবেন বুঝাইতে চায় – বিএনপি আর বাল (BAL) একই, বুর্জোয়াদের দল! কিন্তু এইটা সত্যি কথা না। বাংলাদেশের সো-কল্ড বাম এবং বাল (BAL) – এই দুইটা একই ঘরানার বরং, এরা নন-ডেমোক্রটিক। বাকশাল।

এই কারণে খালি পলিটিক্যালি বাল (BAL) এর বিপক্ষে কথা কইলে পুরা জায়গাটারে ধরা যায় না, কালচারালি বাম-বাটপারদের ‘নিরপেক্ষ’ (পড়েন, নন-ডেমোক্রেটিক) বয়ানের বিপক্ষেও থাকতে হবে আমাদেরকে, তা নাইলে বাকশালের ন্যারেটিভের বাইরে যাইতে পারবো না আমরা।

আপনার-আমার বিএনপি’র রাজনীতি করার দরকার নাই, কিন্তু বাকশালের বাইরে গিয়া যদি আপনি বাংলাদেশে ডেমোক্রেসি চান, এটলিস্ট পিপলের ভোটে ইলেক্টেড গর্ভমেন্টের শাসন চান, বিএনপি হইতেছে আপনার ক্লোজেস্ট পলিটিক্যাল এলাই। এই জায়গাটা যত স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবো, যত তাড়াতাড়ি বাকশালি-ন্যারেটিভ ও তার জুলুমের হাত থিকা মুক্তি পাইতে পারবো।

বাংলাদেশে যতগুলা নন-ডেমোক্রেটিক গর্ভমেন্ট ফর্মড হইছে, এর মোটামুটি সবগুলাতেই বাম ও বাল (BAL) জড়িত ছিল। ১৯৭৩-এর ভুয়া ইলেকশন, ১৯৭৫-এর বাকশাল, এর পরের মিলিটারি ক্যু-পরবর্তী অনেকগুলা সরকার, এরশাদের ক্ষমতা-দখলে নিরব সমর্থন, ১৯৮৬-তে ইলেকশন কইরা তারে বৈধতা দেয়া, ২০০৭-এর এলিট-মিলিটারি ক্যু, ২০১৩-এর বিনাভোটের ইলেকশন, ২০১৮-এর নৈশভোট… প্রতিটা অকেশন বাল (BAL)-এর নন-ডেমোক্রেটিক কাজের বৈধতা দেয়ার ন্যারেটিভ তৈরি করছে সো-কল্ড বাম-দলগুলা।

এই কারণে, আমাদের ক্লিয়ারলি আইডেন্টিফাই করা দরকার এখন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে কারা ডেমোক্রেটিক-ফোর্স আর কারা নন-ডেমোক্রেটিক। এইটাই সবচে মিনিমাম এবং ক্রুশিয়াল বিচারের ক্রাইটেরিয়া হওয়া দরকার।

মে ২৮, ২০২২

– লিখিত-ভাষা, ব্যাকরণের ভাষা –

দান্তের ইনফারনো নিয়া বলতে গিয়া উমবের্তো একো বলতেছিলেন, গড-এর লগে দান্তে যে কথা কইলেন, সেইটা কোন ভাষা’তে কইলেন? তখন তো গড-এর ভাষা ছিল ল্যাটিন, আর দান্তে তো ল্যাটিন জানতেন না অইরকম 🙂 তো, এর একটা সমাধান করলেন উনি এইভাবে যে, গডের ল্যাঙ্গুয়েজ ল্যাটিন না, বরং অইটা হইতেছে ভাষার আরেকটা লেয়ার; গড-এর লগে কথা-কওয়ার ভাষা আর মানুশের লগে কথা-কওয়ার ভাষা এক না, কিন্তু যে কোন মানুশের লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজই হইতেছে গডের ল্যাঙ্গুয়েজ! এই কারণে উনি ল্যাটিন দিয়া শুরু করলেও পরে ইতালিয়ান ‘আঞ্চলিক’ ভাষা দিয়াই কথা কইছেন।

তো, এইটা মনে হইতে পারে ফাঁকিবাজি চিন্তা। কিন্তু তা না আসলে। দুনিয়ার সব ধর্মগ্রন্থের দিকে তাকান দেখবেন, সব অই নবীদের লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজেই নাজিল হইছে। কিন্তু লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজই খোদার ভাষা না, বরং মানুশ যখন তার নিজের ভাষাতে কথা কয়, সেইটা খোদার লগে কানেক্ট করতে পারে, অন্য একটা লেভেলে। ভাষার স্ট্রাকচারটা, শব্দের মিনিংগুলা মেবি একই রকমের থাকে না।…

তো, উমবের্তো একো’র দুইটা লেয়ারের লগে আমি আরেকটা লেয়ার অ্যাড করতে চাই, যেইটা হইতেছে – ‘লিখিত ভাষা’। এইটা খোদার লগে কথা-কওয়া ও মানুশের লগে কথা-কওয়ার বাইরেই আরেকটা লেয়ার, একটা প্রজেক্টেড অডিয়েন্সের লগে কথা-কওয়া। কিছু নর্মসের ভিতর দিয়া চলা, তর-তরিকা মাইনা কথা-বলা। যেমন ধরেন, চিঠি-লেখার-নিয়ম, আদালতের-ভাষা, সরকারিঅফিসের-ভাষা, পাঠ্য-পুস্তক বা একাডেমির-ভাষা, ইমেইলের-ভাষা, গল্পের-ভাষা, কবিতার-ভাষা… এইরকম। মোটাদাগে বলা যায়, ব্যাকরণের ভাষা!

আপনি খোদার লগে কথা কইতে গেলে ‘ব্যাকরণ’ লাগে না, একজন আরেকজনের কথা কইতে গেলেও ‘ব্যাকরণ’ মাইনা কথা কইতে হয় না, কিন্তু লেখতে গেলে দেখবেন অই ফিল’টা হয় – ‘ব্যাকরণ’ মানা হইছে কিনা!

এইটা ভাষার একটা রিসেন্ট ফেনোমেনা-ই, মানে যখন থিকা ভাষা ‘লিখিত’ হইতে শুরু হইছে, তখন থিকা এই লেয়ার’টা ক্রিয়েট হইছে, পাকাপোক্ত হইছে, প্রেস আবিষ্কার হওয়ার পরে। কিন্তু ততদিনে ‘দেব-ভাষা’ [ল্যাটিন, সংস্কৃত… এইরকমের ‘লিখিত’-ভাষাগুলা] ডেড হয়া গেছে। ‘জ্ঞান’ সবসময় ছিল রাজসভার, মন্দির-মঠ-গীর্জা’র, আপার-ক্লাসের ঘটনা। কিন্তু যেই ‘জ্ঞান’-এর প্রাকটিস মানুশের সমাজে নাই, সেইটা ‘জ্ঞান’ হিসাবে, চিন্তা হিসাবে এক্টিভ থাকতে পারে না। দিনে দিনে এই ‘দেব-ভাষা’ মারা গেছে মানুশের লগে এটাচমেন্টের ভিতরে ছিল না বইলা। (আরো অনেক কারণ তো থাকতেই পারে।)

কিন্তু ‘জ্ঞান’ তো সাধারণ মানুশের বিষয় হইতে পারে না! 🙂

যার ফলে আমার একটা হাইপোথিসিস হইতেছে, এই যে ‘লিখিত-ভাষা’, ‘ব্যাকরণের-ভাষা’ এইটা হইতেছে ভাষার আরেকটা লেয়ার, ‘দেব-ভাষা’রই [ওরফে ‘জুলুমের ভাষা’র, আপার-ক্লাসের ডমিনেন্ট ভাষারই] একটা রিপ্লেসপেন্ট।

***

১৯৯২ সালে শাহাদুজ্জামান আর মাসুদ জামান আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের একটা ইন্টারভিউ নিছিলেন, অইখানে ইন্টারেস্টিং অনেক ফ্যাক্টের কথা বলছেন আখতারুজ্জামান ইলিয়াস।

উনি ‘চিলেকোঠার সেপাই’ উপন্যাসটা ‘৬৯-এ লেখতে শুরু করছিলেন, পরে ১৯৭৫-এ আবার লেখতে শুরু করেন। ‘দৈনিক সংবাদ’-এর সাহিত্য সাময়িকী’তে ধারাবাহিকভাবে ছাপা হইতেছিল, কিন্তু ৭৬-এ যখন গর্ভমেন্ট চেইঞ্জ হইলো, তখন সংবাদ এই উপন্যাস ছাপা বন্ধ কইরা দিল। (মানে, পাকিস্তান, জিন্নাহ, বেসিক ডেমোক্রেট শব্দগুলা বাদ দিয়া ছাপাইলো। ইলিয়াস এইগুলা ছাড়া ছাপাইতে চান নাই বইলা ছাপানো বন্ধ কইরা দেয়।)

কি ঘটনা? সংবাদের ধারণা হইলো যে, এই গর্ভমেন্ট হইতেছে প্রো-পাকিস্তানি, পাকিস্তান নিয়া ঠাট্টা-মশকরা করা যাবে না! 🙂 তো, চিলেকোঠার সেপাই-এ ‘বেসিক ডেমোক্রেসি’ [খেয়াল কইরা দেখবেন, এখনকার নয়া বাকশালের লগে আইয়ুব খানের ‘বেসিক ডেমোক্রেসি’র মিল আছে, ইলেকশনের বদলে সিলেকশনই তো চলতেছে এখন…] নিয়া হাসি-ঠাট্টা ছিল।

‘দৈনিক সংবাদ’রে কেউ ছাপাইতে না করে নাই, সংবাদ নিজে থিকাই ছাপানো বন্ধ কইরা দিছিল। এর কয়দিন পরেই ‘রোববার’ পত্রিকায় উপন্যাসটা ছাপানো শুরু হইছিল।…

তার মানে, অইটা ছিল মেইনলি সংবাদ-এর সেলফ-সেন্সরশিপ।

এখনো, বাকশালের বিরুদ্ধে যে কিছু কওয়া যাইবো না – এইটাও যতোটা না টিভি-পত্রিকার প্রতি রাষ্ট্রীয় সেন্সরশিপ, তার চাইতে অনেক বেশি আইডিওলজিক্যাল এলায়েন্সেরই ঘটনা।

মানে, নিউজ-মিডিয়ার লোকজন ‘কথা বলতে পারেন না’ – এইটা কতোটা আছে, আমরা জানি না; কিন্তু উনারা যে, ‘কথা বলতে চান না’ – এইটার যে বড়সড় একটা জায়গা আছে, এইটা টের পাওয়ার কথা আমাদের। আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের এই ঘটনাটারে, এই ধরণের জায়গার একটা হিস্ট্রিক্যাল কনফার্মেশন হিসাবে পড়া যাইতে পারে এখন।

***

ইভিএম

গডফাদারে এইরকমের একটা ঘটনা আছে, ভিটো কর্লিয়নি তার পোলা’রে (মাইকেল’রে) মরার আগে বইলা যায়, যে তোর কাছে নেগোশিয়েশনের প্রস্তাবটা নিয়া আসবো, সে-ই হইতেছে আসল ট্রেইটর, দুশমনের লোক। বাইবেলেও এইরকমের ভবিষ্যতদ্বাণী আছে মনেহয়।…
তো, এখনকার বাংলাদেশের পলিটিক্যাল সিচুয়েশনেও যেই দল ইভিএম’রে সার্পোট করবো, ধইরা নিবেন অরা-ই হইতে যাইতেছে, বাকশালের নেকস্ট বি-টিম, ‘গৃহপালিত বিরোধীদল’।

মানে, এইটা একটা কোর ফ্যাক্টর, ডিসাইড করার।

মে ২৯, ২০২২

গতকালকে রিয়াল মাদ্রিদ আর লিভারপুলের খেলা দেইখা তিনটা জিনিস শিখলাম আমি 🙂

১. পাওয়ার শো (show) করার চাইতে পাওয়ার কনটেইন (contain) করতে পারা বেটার। মানে, গোল-দেয়ার চাইতে গোল-না-খাওয়া বেশি ইম্পর্টেন্ট।

২. কাউন্টার এটাকে স্পিডটা হইতেছে মেইন। এক সেকেন্ড আগায়া থাকতে হয়। একটা সেকেন্ড ক্রিয়েট করতে পারাটা হইতেছে ঘটনা।

৩. একশনের আগে রিফ্লেকশনটা জরুরি। আগে ঠিকমতো রিফ্লেক্ট করতে পারতে হয়, তারপরে একশনের জায়গাটাতে হাত-পা-ঠ্যাং-ঠুং শরীরের যা যা বডি-পার্টস আছে তারে আগায় দিতে হয়। অবভিয়াসলি আমি রিয়াল মাদ্রিদের গোল-কিপার Thibaut Courtois-এর কথা কইতেছি।

বোনাস: শেষমেশ, একজন মানুশই ডিফরেন্সের জায়গাটারে তৈরি কইরা দেয়, সবসময়। বি দ্য পারসন, হু ক্রিয়েটস দ্য ডিফরেন্স! আডেন্টিফাই দ্যাট স্পেইস ফর ইউরসেলফ! 👊

***

কয়দিন আগে ফেইসবুকে এইরকম একটা পোস্ট দেখতেছিলাম যে, গুলিস্তানে যে পুরান জুতা বেচা হয় সেইখানে মেয়েদের জুতা বেচা হয় না, খালি বেটামানুশের জুতাই থাকে। তো, কেন থাকে না? এর একটা ইমোশনাল উত্তর ছিল এইরকম যে, বেটা-মানুশেরা নিজেদের জন্য পুরান জুতা কিনে, কিন্তু মায়ের জন্য, বইনের জন্য, বউয়ের জন্য, মেয়ের জন্য পুরান জুতা কিনতে চায় না। এইরকম 🙂

তো, কথা তো কিছুটা সত্যিই, কিন্তু একমাত্র সত্যি না আর কি… আরো কিছু ফ্যাক্ট আছে এইখানে বা অন্যসব বিষয়ও এইখানে থাকার কথা।
ধরেন, শহরের মানুশ-জন যে হাফ-প্যান্ট বা থ্রি-কোয়ার্টার বেশি বেশি পিন্দে, এইখানে স্টাইলের ঘটনা তো আছেই, এভেইলেবিলিটি এবং দামের ব্যাপার-স্যাপারও আছে। মানে, রাস্তা-ঘাটে ভ্যানের উপরে লুঙ্গির দোকান পাইবেন না, কিন্তু টি-শার্ট, হাফ-প্যান্টের পাইবেন অনেক। দামে শস্তা, মানেও ভালো 🙂 মানে, অনেকদিন তো পরা যায়।

এখন অই ভ্যানগুলাতে মেয়েদের লেগিংস, টি-শার্টও পাওয়া যায় গার্মেন্টেসের, যেইগুলা পরতে আরাম-ই না খালি, দামে কম, মানেও ভালো। মানে, আমি বলতে চাইতেছি, ‘আধুনিক’ হওয়ার জন্য শহরের মেয়েরা টি-শার্ট, প্যান্ট পরে – এইটা সবসময় সত্যি কথা না। যে কোন বিচারেই ইকনোমিক ঘটনাটারে মিস কইরা গেলে ভুল করবো আমরা।

ডোন্ট গেট মি রং যে, যেইসব মেয়েরা টি-শার্ট, প্যান্ট পিন্দে, তারা ‘ফকিন্নি’; বরং এইরকম ভাবাটারে এক ধরণের ‘ক্ষ্যাত’ বইলা ধইরা নেয়া যাবে, ইন রিটার্ন। মানে, এইসব পেজগি এইখানে আছে।… পোশাকের ‘আধুনিকতা’ ‘ফ্যাশন’ ‘স্টাইল’ সবসময়ই ছিল, এবং থাকারই কথা। কিন্তু এইগুলা ইকনোমিক জায়গাগুলারে বাদ দিয়া ঘটে না আর কি! এই পয়েন্ট’টারেও কন্সিডারেশনে নিতে হবে আমাদেরকে, যে কোন আলাপেই।

***

দুর্ভিক্ষ একদিনে শুরু হয় না, একদিনে শেষও হয় না। এটলিস্ট চাইরটা স্টেইজের কথা ভাবতে পারি আমরা –

১. ডেইলি-নিডের জিনিসপত্রের দাম নরমালের চাইতে বেশি বাইড়া যাওয়া
২. দামের চাপে মানুশ-জনের কনজামশন কমায়া দেয়া, কম-খাওয়া
৩. কম বেচা-কেনার এফেক্ট হিসাবে বাজারে ডেইলি-নিডের জিনিসপত্রের দাম আরো বাড়তে থাকা, বাজারে সাপ্লাই কমতে থাকা, মজুতদারি বাড়তে থাকা
৪. কম-খাওয়াটা ধীরে ধীরে না-খাওয়ার দিকে যাওয়া (এইটা কনফার্মেশন বা অফিসিয়াল দুর্ভিক্ষ তখন)

তো, আমরা এখন সেকেন্ড ও থার্ড-স্টেইজের মাঝামাঝিতে আছি।

এখনই যদি জিনিসপত্রের দাম কমানোর কোন ব্যবস্থা না নেয়া হয়, বাজারে সরকারিভাবে সাপ্লাই বাড়ানো না হয়, রেশনিং কইরা দাম কমানো না হয়, মোটামুটি ‘হঠাৎ’ কইরাই আমাদের (মিডল-ক্লাস সমাজের) চারপাশে না-খাইতে পারা লোকের ভীড় দেখতে পাবো আমরা।
কিন্তু অবৈধ সরকারের দেশের মানুশের কোন চিন্তা নাই, ক্ষমতায় থাকা নিয়া সব চিন্তা। ক্ষমতায় থাকতে পারলেই হইলো!

এই কারণে এই অবৈধ-বাকশালি সরকারের এবং তার সাঙপাঙ্গদের এই নিয়া কোন আলাপ-ই দেখবেন নাই। গরিব যদি না খায়া মরে, বাকশালের কিছু যায় আসে না! এই জায়গাগুলারে বরং লুকায়া রাখা হবে, নানান ‘তর্কের’ ভিতর।

মে ৩০, ২০২২

– জিয়াউর রহমানের শাসন-আমল (১৯৭৯ – ১৯৮১) হইতেছে বাংলাদেশে ডেমোক্রেটিক শাসনের শুরুয়াত –

বাংলাদেশে ফার্স্ট ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশন হইছিল ১৯৭৯ সালে। অই ইলেকশনে দেশের মানুশের ভোটে বাংলাদেশের ফার্স্ট ইলেক্টেড রাষ্ট্রপ্রধান হইছিলেন জিয়াউর রহমান। [ সেকেন্ড হইতেছেন বেগম খালেদা জিয়া, ১৯৯১ সালে। ]

সো-কল্ড বামপন্থীরা দেখবেন জিয়াউর রহমানরে “সামরিক-শাসক” কইতে কইতে মুখে ফেনা তুইলা ফেলে। অথচ বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরে কোন ইলেকশনের ব্যবস্থা করা হয় নাই, দেশের গর্ভমেন্ট ফর্ম করার জন্য দেশের মানুশের ম্যান্ডেট নেয়া হয় নাই। ১৫ মাস পরে, ১৯৭৩-এর মার্চ মাসের ইলেকশনে বাংলাদেশের মানুশরে ভোট দিতে দেয়া হয় নাই। ১৯৭৫-এ সব বিরোধীদল নাই কইরা দেয়া হইছিল। বাংলাদেশের মানুশের ভোট দেয়ার, রাজনীতি করার কোন অধিকার ছিল না।

এই নন-ডেমোক্রেটিক শাসন নিয়া কোন কথা শুনবেন না এই বাটপারদের মুখে। কারণ সো-কল্ড কমিউনিস্টরা ছিল অই জুলুমের শাসনের ইন্ট্রিগ্রাল পার্ট। এরা বিপ্লবী না, এরা নন-ডেমোক্রেটিক, এন্টি-পিপল ফোর্স, বাংলাদেশের রাজনীতিতে।

জিয়াউর রহমানের ইকনোমিক ইনিশিয়েটিভগুলা উনার পলিটিক্যাল আইডিওলজিরই কন্সিকোয়েন্স। উনি ডেমোক্রেটিক ছিলেন। এইটারে ‘পাকিস্তানি করণ’ বইলা প্রমাণ করতে চায় নন-ডেমোক্রেটিক বাম-বাকশালিরা।

এই কারণে, বাংলাদেশে যখনই ডেমোক্রেটিক শাসনের কথা বলা হবে, জিয়াউর রহমানের কথা দিয়াই আমাদেরকে শুরু করতে হবে সবসময়। এই কারণেই বাম-বাকশালিরা জিয়াউর রহমানরে ভিলেন বানাইতে চায়। কিন্তু এর ভিতর দিয়া অদের নন-ডেমোক্রেটিক পজিশনই আরো স্পষ্ট হইতে থাকে সবসময়।

মে ৩১, ২০২২

– পদ্মা-সেতু নিয়া একটা প্রেডিকশন –

পদ্মা-সেতু নিয়া একটা কু-ডাক ডাকতেছে আমার মনে। সন্দেহ হইতেছে, ব্রিজ চালু হওয়ার পরে ফেরি তো বন্ধ কইরা দেয়াই হবে, লঞ্চ আর স্পিডবোটও আইন কইরা বা লোকাল-মাস্তানদের দিয়া বন্ধ কইরা দিতে পারে বাকশালিরা। যে, সবাই’রে ব্রিজ দিয়া পার হইতে হবে!

[এইটা মনে হইলো যাত্রাবাড়ি ফ্লাইওভারের সাইডের/নিচের রাস্তাটা দেইখা, সারাবছর ভাঙ্গা থাকে, মেরামত করে না। ইচ্ছা কইরাই এই হালত কইরা রাখে যাতে বাধ্য হয়া ফ্লাইওভারে উঠতে হয়।]

মানে, লোকজনরে বাধ্য করা হবে ব্রিজে উঠতে, টোল দিতে! বাসের ভাড়া, ট্রাকের ভাড়া দুইগুণ না হইলেও সিগনিফিকেন্টলি বাড়ার কথা। সরকারি হিসাবে যদি ১০০/৫০০ টাকা বাড়ে, ভাড়া বাড়বে মিনিমাম ২০০/১০০০ টাকা। আর অই বাড়তি ভাড়ার টাকাও যাবে বাকশালিদের পেটে।

এমনকি আপনি যদি ব্রিজে না-ও উঠেন, “পদ্মা-সেতু সারচার্জ” নামে নতুন ভ্যাট-ও চালু হইতে পারে, যেইখানে বাজারে চাইল-ডাইল কিনার সময়ও টাকা দিতে হবে বাংলাদেশের মানুশ-জনকে।… [এইটা পাগলরে সাঁকো নাড়ানোর বুদ্ধি দেয়া না, বরং পাগলের এই বুদ্ধি আছে যে, তারে সাঁকো নাড়াইতে হবে, তা নাইলে সে নিজেরে ‘পাগল’ প্রমাণ করতে পারবে না।]

পদ্মা-সেতুর নামে, আপনারে-আমারে বন্ধক রাইখা যেই টাকা লোন নিয়া পাচার করা হইছে, অই লোনের টাকা শোধ দেয়ার নাম কইরা আবারো টাকা-পাচার করা হবে।

এইটাই হবে – তা না, কিন্তু এইরকমের কিছু না হইলেই বরং অবাক হওয়ার কথা আমাদের। কারণ বাকশাল টিইকাই আছে পিপলের পকেটের টাকা মাইরা।

পদ্মা-সেতু একটা সোনার হাঁস। প্রতিটা মেগা-প্রজেক্টেরই এই দশা।

ইলেকট্রিসিটি, মেট্রো-রেল, আরো আরো যা আছে, সেইসব জায়গাতেও কম-বেশি একইরকমের ঘটনা ঘটতে থাকার চান্সই বেশি আসলে।
মানে, এইটা কোন ভবিষ্যতদ্বাণী না, পলিটিক্যাল টেনডেন্সিগুলারে লোকেট করতে চাওয়ার জায়গা থিকাই বলতে চাওয়া। যে, একটা অবৈধ সরকারের জুলুম কখনো কমবে না, দিনে দিনে আরো বাড়তেই থাকার কথা, নানান ছল-চাতুরির ভিতর দিয়া…

Leave a Reply