নোটস: সেপ্টেম্বর, ২০২১ [পার্ট ১]

সেপ্টেম্বর ১, ২০২১

আপনি কোন পক্ষ নিবেন, কার বিপক্ষে থাকবেন – এইগুলা ডিসাইড করা খুব কঠিন কোন জিনিস না; সবাই কম-বেশি ঠিক ডিসিশানই নিতে পারেন বইলা আমি মনে করি। কিন্তু মুশকিল হইতেছে, ‘ঠিক পক্ষ’ নিলেও দেখবেন তেমন কিছু যায়-আসে না। কারণ কাজ হইতেছে, অ্যাপ্রোপিয়েট ক্যাটাগরি ঠিক করা বা আসল প্রশ্নের জায়গাটাতে আসতে পারাটা। এইটাই বেশিরভাগ মানুশ মিস করেন বা ভাবতে চান না আসলে।…

একটা ভুল বা ইনসাফিশিয়েন্ট প্রশ্ন বা ক্যাটাগরির পক্ষে থাকেন আর বিপক্ষে থাকেন, দুইটাই সমান বাজে ঘটনা। কারণ সেইটা কোর ইস্যুটারেই এড্রেস করতে পারে না এবং এইভাবে প্রশ্ন না করার ভিতর দিয়া, এড়ায়া যাওয়ার ভিতর দিয়া জুলুমের জায়গাটারে সাসটেইন করতে একভাবে হেল্পই করে।

এই জায়গাগুলাও ধীরে ধীরে একটা সময়ে স্পষ্ট হইতে শুরু করে। যেমন ধরেন, যখন জামাত-শিবির মারা হইতেছিল, তখন অনেকেই ‘থ্যাংকিউ পিএম’ বলছিল; ২% লোক টিকা দিয়াও ‘থ্যাংকিউ পিএম’ বলছিল; পুলিশ কাস্টডিতে মুশতাক আহমেদের খুনের পরে সাংবাদিক রোজিনা আক্তারের জামিনের পরেও অনেকে কষ্ট কইরা হইলেও ‘থ্যাংকিউ পিএম’ বলতে পারছিল; কিন্তু এখন পরীমনির জামিনের পরে ‘থ্যাংকিউ পিএম’ বললে নিজেদের কাছেই উইয়ার্ড লাগার কথা!

কারণ এইটা কোনদিনই ‘থ্যাংকিউ পিএম’র কাজ ছিল না। বরং এইখানে কোন সিস্টেম যে ফাংশন করে না, এবং মিনিমাম কোন বিচার-ব্যবস্থা যে নাই – এই জায়গাটারে আন-কোশ্চেনড রাখা হইছে, হইতেছে দিনের পরে দিন, বছরের পর বছর। আর এই জিনিসটারে এড্রেস না করতে পারা, লুকায়া রাখাটা কোনদিনই সমস্যাটার সমাধান করতে পারে নাই, কোনদিন করতে পারবেও না!

তো, পক্ষ-বিপক্ষ নিয়া ‘তর্ক’ কইরেন না! এইটা মোটামুটি অদরকারি জিনিস। আসল প্রশ্নটা করেন! ঠিক ক্যাটাগরি’টারে ভিজিবল করেন! উত্তর আপনা-আপনি চইলা আসবে আপনার সামনে। প্রশ্ন ঠিক না হইলে, কোন উত্তরই সঠিক হবে না।

#########

ড্রাগস হইতেছে আসলে পুলিশের বিজনেস।

বাংলাদেশে যদি বলা হয়, ইচ্ছমতো কেউ ড্রাগস ইউজ করতে পারবেন, এইটা কোন ক্রাইম না; তাইলে লাখ লাখ লোক ড্রাগস নিতে শুরু করবে না; বরং ‘মাদক’ মামলায় হাজার হাজার লোকরে গ্রেফতার কইরা পুলিশের টাকা-খাওয়া বন্ধ হয়া যাবে। (ড্রাগস বিজনেসের কমিশনের কথা বাদ-ই দেন! মেইন কস্টিং তো আসলে অইটাই।)

ড্রাগ-এডিক্ট লোকের সংখ্যা সিগনিফিকেন্টলি বাড়বেও না, কমবেও না। যেহেতু ‘ভাব’ দেখানো যাবে না এবং কম-দামি জিনিস হয়া উঠবে, বিপ্লবী-ক্রেইজ হিসাবে এর সেক্স-অ্যাপিল বরং কমারই কথা কিছুটা, তখন।…

মাইকেল মুর উনার ডকুমেন্টারিতে (হোয়ার টু ইনভেড নেকস্ট) দেখাইতেছিলেন, আম্রিকাতে ড্রাগস হইতেছে ব্ল্যাক-অপ্রেশনের একটা মেজর উইপেন। পর্তুগালে ড্রাগস নিলে কোন পুলিশ আপনারে গ্রেফতার করবে না; ড্রাগস নেয়ার জন্য চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই করলে সেইটা ভিন্ন ঘটনা।…

মানে, এই জিনিসটা খেয়াল করাটা দরকার যে, কোনকিছুরে ‘বেআইনি’ ঘোষণা করার ভিতর দিয়া, সেইটারে বন্ধ করা বা কন্ট্রোল করা হইতেছে না, বরং একটা অপ্রেশনের টুল বা জুলুমের একটা হাতিয়ার হিসাবেই ইউজ করা হইতেছে বেশিরভাগ সময়।
ড্রাগস বা মাদক, এইরকমের একটা ঘটনা, বাংলাদেশে এখন।

#########

– সুলতানা’স ড্রিম ২ –

অফিসের পাশে কোজি একটা কনফেকশনারি আছে, মাঝে-মধ্যে স্ন্যাকস খাইতে যাই; ছোট্ট একটা দোকান, দুইজন মোটামুটি বসা যায়, এইরকম অ্যারেঞ্জমেন্ট আছে। আজকে বিকালে কিছু জিনিস কিনতে গেছিলাম। আগে থিকা দুইজন ফিমেইল অফিস-কলিগ বইসা স্যান্ডউইচ খাইতেছিলেন। উনাদের কথা একটু ওভার-হিয়ার করা লাগলো। উনারা ইকনোমিক ড্রিম ফুলফিলের জায়গা নিয়া মোটামুটি একসাইটেড; একজন বলতেছিলেন, কোন গাড়ি কিনবেন, জামাই তো জিপ কিনতে চায়, উনি বলছেন সেডান-ই ভালো, পার্টস এভেইলেবল সবসময়। এইরকম। কিন্তু আমি আসাতে মনেহয় আলাপ একটু সংক্ষিপ্ত করা লাগলো। (মানে, নাও হইতে পারে, আমার জাস্ট মনে হইলো আর কি!) খাওয়াও শেষ যেহেতু, বিল-টিল দিয়া চইলা গেলেন।

সপ্তাহখানেক আগেও কাছাকাছি রকমের একটা ঘটনার কথা মনে হইলো। অফিস শেষে আমরা ১০/১২জন একটা রেস্টুরেন্টে বসছিলাম, সবাই বেটা-মানুশ। তখন অইখানে দুইজন নারী আসলেন, একজনরে চিনি আমি, আমার পরিচিত একজনের ওয়াইফ, আমার চে বড় পোস্টে চাকরি করেন। রেস্টুরেন্টে ঢুকতে ঢুকতেই মোবাইল ফোনে কথা বলতেছিলেন, তোমার একঘন্টার মধ্যে শেষ হবে তো? আমি …’রে নিয়া বসতেছি তাইলে…। কিন্তু ৪/৫ মিনিট পরে উইঠা চইলা গেলেন উনারা। হয়তো মেনু পছন্দ হয় নাই। কিন্তু আমরা এমনকিছু করি নাই যে, উনারা ডিস্টার্বড ফিল করবেন; কিন্তু অস্বস্তি লাগার কথা মেবি।

তখন আমার পুরান আইডিয়াটার কথা মনে হইলো। 🙂 কয়েকজনরে বলছি আমি এইটা।

যে, একটা ক্যাফে চালু করতে পারেন কেউ “সুলতানা’স ড্রিম” নামে। খালি ফিমেইলস আর এলাউড। দোকানের সবাইও নারী থাকবেন – বার্বুচি, ওয়েটার, ক্যাশিয়ার। চাইলে কেউ বেটামানুশ নিয়া আসতে পারেন, কিন্তু সাথে কোন ফিমেইল না থাকলে ঢুকতে পারবেন না। এইরকম। এখন লিগ্যালি তো ‘না’ করা যাবে না। এনভায়রনমেন্ট’টা ক্রিয়েট করতে হবে আর কি যেইখানে গেলে মনে হবে, আরে এইটা তো ‘নারীস্থান’! আমার ধারণা, বিজনেস হিসাবেও প্রফিটেবল হওয়ার কথা। যেই দুইটা ঘটনার কথা বললাম, উনারা মোর কমর্ফোটেবলি বসতে পারতেন এইরকম জায়গা থাকলে, আড্ডা দিতে পারতেন।

কিন্তু আমার ধারণা, এর একটা সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট তৈরি হইতে পারার কথা, এর ভিতর দিয়া। এমন না যে, ৮/১০টা সুলতানা’স ড্রিম চালু হইলে সব নারী’রা অইখানে চইলা আসবেন, আর অন্য কোথাও যাবেন না, বা কমন-স্পেইসটারে ছাইড়া দিবেন বেটা-মানুশদের দখলে। বরং উল্টাটা হবে বইলা আমার মনেহয়। এইরকম দুয়েক্টা স্পেইসে মেয়েরা ফ্রিলি বসতে শুরু করলে, উনাদের এই ফ্রিডমটারে উনারা কমন-স্পেসগুলাতেও এক্সারসাইজ করতে পারবেন।

তার চে বড় ইমপ্যাক্ট হইতে পারে যে, অইটার এফেক্ট হিসাবে কমন-স্পেইসগুলাতে ফিমেইল প্রেজেন্সটারে ‘নরমাল’ হিসাবে দেখতে পারবে সবাই। যে, কমন-স্পেইসগুলাতে যদি অই এনভায়রনমেন্টটা না থাকলে ফিমেইল কাস্টমাররা আসতে রাজি থাকবে না তখন! আর এইটা নরমাল রেস্টুরেন্টে ‘কেবিন’ বসায়া কাউন্টার দেয়া যাবে না আসলে। অই ‘প্রাইভেসি’র বেইল নাই আর! অইটা যে কমন-স্পেইস থিকা বরং সরায়া দেয়া সেইটা টের পাওয়া যায় বইলাই অইটা আর নাই।… কিন্তু এইখানে ঘটনাটা বরং একটা কাউন্টার কমন-স্পেইস তৈরি হওয়ার কথা, সুলতানা’স ড্রিমে।

এর বাইরে, স্মোকারদের জন্য তো অইটা হ্যাভেন হবে বইলা আমার ধারণা। ডেটিং-প্লেইস হয়া উঠলে, বুজিং-প্লেইস উঠলে একটু বিপদ হইতে পারে। কিন্তু সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং বা বিজনেস প্লেইস হিসাবে অ্যামেজিং একটা ব্যাপার হইতে পারে। মানে, যদি সোশ্যাল কনসার্নগুলারে মাথায় রাইখা ব্যাপারটা চালু করা যায়। এমনকি আমার ধারণা, অন্য শহরগুলাতেও ‘সুলতানা’স ড্রিম’ বইলা জায়গা তৈরি হইতে পারে! যেইটা কমন-স্পেইসগুলা, যেইখানে এনাফ ‘ফিমেইল-ফ্রেন্ডলি’ এনভায়রনমেন্ট নাই, সেইগুলারে কনভার্ট করতে একরকমের অল্টারনেটিভ হিসাবে কাজ করতে পারবে।…

জাস্ট আইডিয়া হিসাবেই বইলা রাখা। আইডিয়া টু ইমপ্লিমেন্টশন তো বড় একটা জার্নিই। তারপরও ব্যাপারটা আমার মনে হইছে, ট্রাই করতে পারেন কেউ। কিন্তু কোর অবজেক্টিভ হিসাবে বিজনেস হইতে হবে, প্রফিট থাকতে হবে; ‘এনজিও’ বা ‘সোশ্যাল-ওয়ার্ক’ হইলেই জিনিসটা আর হবে না!

 

সেপ্টেম্বর ২, ২০২১

Coded Bias ডকুমেন্টারিতে এইরকম একটা ঘটনা আছে, আম্রিকাতে কোন একটা স্টেইটের স্কুলে টিচারদের রেটিংয়ের জন্য একটা সফটওয়ার ইমপ্লিমেন্ট করা হইলো যেইখানে সিস্টেমটা অটো ডেটা নিয়া নিজের মতো কইরা অ্যানালাইসিস কইরা টিচারদের রেটিং করবে। অনেক কাজ বাঁইচা যাবে, অফিসের! সবাই খুশি। কিন্তু দেখা গেলো একজন টিচার, যার রেটিং আগে ভালো ছিল, এই অটোমেটিক সিস্টেম চালু হওয়ার পরে পুওর রেটিংয়ের কারণে তার চাকরি চইলা গেল! সে তো খুবই পাজলড; কি কারণে তার রেটিং খারাপ হইছে, কেউ তো বলতে পারে না। পরে সে মামলা কইরা দিল। আমার কি অপরাধ? এইটা তো অন্তঃত আমারে জানাইতে হবে!

কিন্তু ঘটনা হইলো সিস্টেমটা অপারেটই করে, এইরকম গোপনীয়তার জায়গাটাতে। আপনি যদি বইলা দেন, এই এই প্যারামিটারগুলা হইতেছে মেইন, তাইলে তো লোকজন অই কাজগুলাই করবে, আর রেটিং বাড়ায়া ফেলতে পারবে। এই কারণে রেটিং এজেন্সি অইটা জানাবে না। এখন অই স্টেটের স্কুলগুলা অই সফটওয়ার-ই ইউজ করতেছে, মামলাও চলতেছে, এইরকম একটা অবস্থা, দেখাইছিল ডকু’টাতে।

দেখেন, আপনি দোষী হইলেন বা আপনি রিওয়ার্ড পাইলেন, কিন্তু আপনি জানেন না, কেন? এইভাবে একটা ‘গড’স রোল প্লে করা হয় না, বরং এইটা হইতেছে সিক্রেট-পুলিশের কাজ।

সার্টেন কিছু টেনডেন্সির বেসিসে পটেনশিয়াল টেররিস্ট, পটেনশিয়াল রেপিস্ট, পটেনশিয়াল ক্রিমিনাল বানায়া দেয়া! ধরেন, ৮০% কেইসেই মিললো, বাকি ২০% ভুল কি আমরা মাইনা নিবো? এইগুলা তো খালি নাম্বার না, মানুশের পারসোনাল লাইফে এর ইমপ্যাক্ট আছে তো!

কিন্তু এইরকম গোপন surveillanceগুলা আসলে বন্ধ হবে না, কারণ এইটা ক্ষমতার পারপাসরেই সার্ভ করে না, একইসাথে গোপনীয়তার ভিতর দিয়া এমন একটা প্লেজারের ডিজায়াররে ফুলফিল করে, যেইটার কোন অল্টারনেটিভ নাই। যে কোন সার্ভেলেন্সের কোর জায়গা হইতেছে এই প্লেজারটা। এইটারে মার্ক না করলে পুরা গেইমটারেই মিস করা হবে আসলে।

মানে, সিস্টেমগুলা আরো একুরেট হবে, আরো পারোসনালাইজ হইতে পারবে; কিন্তু এর ‘গোপনীয়তার’ জায়গাটা কখনোই রিভিল করা হবে না। তাইলে এর যে পারপাস, সেইটাই বাতিল হয়া যাবে। আর এইটা প্রাইভেসি লংঘনের ঘটনা না, বরং এইটা ফিলোসফিক্যালি ভুল একটা এপ্রোচ, যার হিউজ একটা সাইকোলজিক্যাল এবং পলিটিক্যাল ইমপ্যাক্ট আছে।

এই ফিলোসফিক্যাল এপ্রোচ’টাতে মানুশ বেইজ না, বেইজ হইতেছে সিস্টেমটা। তো, যতোক্ষণ না এই এপ্রোচ’টারে চেইঞ্জ করা যাবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এর টেকনিক্যাল এফিশিয়েন্সি বাড়ায়া এর কোন সমাধান করা যাবে বইলা মনেহয় না।

#########

একটা কন্ট্রোলড সোসাইটিতে টিচার, সাংবাদিক, ডাক্তার, সরকারি কর্মচারি, ব্যাংকার, এনজিও-কর্মীসহ প্রায় সব প্রফেশনের কাজ হইতেছে পুলিশ-গিরি করা। সমাজের সব জায়গায় কন্ট্রোলটারে এস্টাবলিশ করা।

টিচাররা স্টুডেন্টদের লগে, সাংবাদিকরা অডিয়েন্সের লগে, ডাক্তাররা রোগিদের লগে, সরকারি কর্মচারিরা পাবলিকের লগে, ব্যাংকাররা কাস্টমারদের লগে, এনজিও-কর্মীরা ‘অশিক্ষিত পাবলিকের’ লগে দেখবেন এক ধরণের ‘পুলিশি’ এটিটুডের জায়গা থিকাই ডিল করেন। কারণ শুধুমাত্র পুলিশ দিয়া ‘অপরাধ-দমন’ হয়তো করতে পারেন, কিন্তু সব প্রফেশনের মধ্যে একটা ‘পুলিশি-এটিটুড’ এনশিওর না কইরা একটা ‘কন্ট্রোলড সোসাইটি’ আপনি বানাইতে পারবেন না!

যার ফলে, আলাদা কইরা পুলিশ-বাহিনি নিজেদের কাজ-কাম নিয়া চিন্তিত হইতে পারার কথা, অনেকসময়। সবাই তো দেখি পুলিশ! আমরা তাইলে সাংবাদিকগিরি করি একটু, বিজনেস করি, ব্যাংক বানাই, গান গাই; দেখাইতে তো পারি যে, দেখেন, আমরা কিন্তু পুলিশ না, এতোটা! 🙂

 

সেপ্টেম্বর ৩, ২০২১

কোনকিছু জানতে হইলে আমাদেরকে আগে জানতে হবে যে, আমরা কি জানি না। মানে, ‘আমি কি জানি না’ – সেই জায়গাটারে আগে ঠিক না কইরা কিছু জানা যাবে না আসলে। এখন বেশিরভাগ সময়ই হয়তো দেখা যাবে যে, একটাকিছু জানতে গিয়া আমরা আরেকটাকিছু জাইনা গেলাম। এইরকম প্রায়ই হয়, বা হইতে পারে। কিন্তু ‘আমি কি জানি না’ – অই জায়গাটা ক্রুশিয়াল, যে কোন ‘জানা’র ব্যাপারেই। জার্নি’র শুরুটাই খালি এই জায়গাতে না, এইটা জার্নিটারে ডিফাইনও করে; যে, ‘জানা’র রাস্তাতে কোন কোন জিনিস আমি খেয়াল করতেছি। মওলানা রুমি’র এইরকম একটা লাইন আছে, একটা গরু সারা বাগদাদ শহরের হাঁটলো, কিন্তু কিছু খড়-বিচুলি ছাড়া কিছুই দেখতে পাইলো না!

#########

১৯৬০ বা ৭০’র দশকে (‘৮০ দশক পর্যন্তও কন্সিডার করা যাইতে পারে) বাংলাদেশে যারা জন্ম নিছেন, বাংলা-মিডিয়ামে পড়াশোনা করার দেমাগ নিয়া কলকাতার ভাষারে যারা ‘বাংলা-ভাষা’ ভাবেন, তাদের বয়স তো ৫০-৬০ হইছে; আর ২০ বছর পরে অই জেনারেশনের অনেকেই মারা যাইবেন বা সোশ্যালি পাওয়ারফুল থাকতে পারবেন না আর। তো, অই জেনারেশনের মুখেই শুনবেন ‘শুদ্ধ বাংলা-ভাষা’ মারা যাওয়ার কথা।

আসলে অই জেনারেশনটা মারা যাইতেছে, মরার আগে কাঁই-কুঁই করতেছে। বাংলা-ভাষা যে অই ১০০ বছরের আগের বাংলা-ভাষা নাই, লেখালেখির দুনিয়াতে আমরা যে অই রীতি’র ভিতরে আটকায়া থাকি নাই (আসলে থাকা সম্ভবও না), এইটা দিনে দিনে একটা খুশির ঘটনা হয়া উঠতে পারবে বইলাই আমি মনে করি। যদিও ভাষার অই কারাগার থিকা মুক্তি পাইতে হইলে আরো অনেক সংগ্রাম আমাদের বাকি, তারপরও, আমার ধারণা ভিজিবল একটা প্রাকটিস হিসাবে এইটা শুরু করতে পারছি আমরা।

এইটা আরো বুঝতে পারি, যখন দেখি ‘উঠতি সাহিত্যিকরা’ অনেকে আমার ‘ভাষা’রে গালিগালাজ করেন। বুঝতে পারি যে, নতুন বাংলা-ভাষা অলরেডি তৈরি হইতেছে, হওয়ার রাস্তায় আছে। সেইখানে আমার ভাষা, লেখালেখি যদি কোন জায়গা কইরা নিতে পারে, তাইলে তো ভালোই; কিন্তু আমি নতুন কোন ভাষা শুরু করি নাই। আমার লেখালেখিতে, কবিতায়, ক্রিটিকে, ফিকশনে, ট্রান্সলেশনে অই উদাহারণই আমি তৈরি করতে চাইছি যে, যদি আপনি মানুশের মুখের ভাষার কাছাকাছি যাইতে পারেন, সেইটা আরো ‘ভালো লেখা’ হইতে পারে, যেইটাই লেখেন আপনি। ভাষার জায়গাতে যদি আমার কোন কন্ট্রিবিউশন থাকে, এইটুকই।

দুয়েক্টা ইমোশনাল ইস্যু ছাড়া কারো লগেই পারসোনাল কোন দুশমনি আমার নাই। কিন্তু মুশকিল হইলো যারা ‘লাঠিয়াল’ হিসাবে কাজ করেন সাহিত্য মার্কেটের, হয়তো ভাবেন যে, আমারে দুইটা গাইল দিতে পারলে কারো কাছে ‘আদরণীয়’ হইতে পারবেন। বা কেন যে করেন, আমি জানি না, ভাবতেও চাই না আসলে। এতো টাইম কই!

ইনবক্সে অনেকে আমারে নিয়া গালি-গালাজের ছবি-টবি পাঠান, যাদেরকে আমি চিনিও না বা যাদের আইডি আমার ফেসবুকে ব্লক করা, বিরক্তিকর লোক হিসাবে। তো, উনারা কেন যে আমারে নিয়া এতো চিন্তা করেন, আল্লা মালুম! আমারে ‘বিখ্যাত’ বানানোর দরকার নাই। আমার মতো অল্প-পরিচিত লোকের ‘সমালোচনা’ কইরা আপনারা ‘বিখ্যাত’ হইতে পারবেন না! এইটা অন্তঃত বুইঝেন!

 

সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১

এইরকম একটা পপুলার ভিডিও ভাসতেছে আমার নিউজফিডে, যেইখানে একজন মেয়ে খুব পোলাইটলি ‘আমরা যে নিজেরাই খারাপ’ – এই কথা বলতেছেন। এই ভঙ্গিটা আমার কাছে অপরিচিত না, বহুদিন ধইরা ‘দেশ আমার, দোষ আমার’ বলদ’রা আছে এই দেশে। অই ভিডিওটা এইটার একটা এক্সটেনশন আসলে।

কথা তো অবশ্যই ভুল না; যে, আমরা ভালো’র চাইতে ক্ষমতা ও টাকারে প্রেফার করি; এবং একটা করাপশনের সোসাইটিতে কোন দুইনাম্বারি না কইরা এইটা এচিভ করা পসিবল না। কিন্তু এই সিচুয়েশনটা কেমনে তৈরি হইছে? দেশের মানুশ খারাপ বইলা? আপনি-আমি খারাপ বইলা? ‘জাত’ হিসাবে ‘খারাপ’ বইলা? নাকি দেশটা বহুদিন ধইরাই যেমনে চলার কথা, সেইভাবে চলতেছে না বইলা?

এখন ধরেন, যেই দেশের মানুশের ভোট দেয়ার কোন উপায় নাই, কথা বলার কোন রাস্তা নাই, সেই মানুশেরা খুব হেইট করা শুরু করলাম দুইনাম্বারিরে, ঘুষ-খাওয়ারে, জিনিসগুলা চেইঞ্জ হইতে শুরু করবে?

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, একজন ব্যক্তি-মানুশরে দোষ দেয়াটা খুবই সহজ এবং একটা বাকশালি এপ্রোচ এইটা। যে, দেশের মানুশই তো ভালো না! এতে কইরা সিস্টেমটারে আন-কোশ্চেনড রাখা যায়। আপনারে-আমারে ভালো হইতে বলা মানে হইতেছে, দেশে যে অন্যায়-অত্যাচার-অবিচার-অনিয়ম-বিশৃঙ্খলা চলতেছে, সেইটারে একভাবে মাইনা নিতে বলা।

একটা ভুল-কথা নিচুস্বরে, ভদ্রভাবে বললেও সেইটা ভুল কথাই।

#########

– মানি হেইস্ট দেখাটা কেন ‘জাতে-উঠার’ ঘটনা হইতে পারে না?
🙂 –
সিজন৫ ভলিউম ১’র দুইটা ঘটনার কথা এটলিস্ট বলা যাইতে পারে।

আগেই তো বলছিলাম, মানি হেইস্ট হইতেছে ‘দর্শক মনোরঞ্জনের’ জন্য বানানো সিরিজ; এইখানে ‘ইন্টেলেকচুয়াল’ জিনিসপাতি কমই আছে বা ‘গভীর গোপন বেদনা-টেদনা’ও কমই; পুরাটাই ‘কর্মাশিয়াল’! মানে, এক-কথায় যারে বলে, ‘বাংলা-সিনেমার’ মতো জিনিস! এই জিনিস দেখছেন বা দেখতেছেন বললে বরং ‘ইন্টেলেকচুয়াল হাইট কম’ বা ‘আর্ট বুঝেন না তেমন’ টাইপের ইমেজ তৈরি হয়া যাইতে পারে। তো, না-দেখাটা যে আসলে ভালো, সেইটা কনফার্ম করার জন্য দুইটা সিনের কথা বলি।

এক হইতেছে, গর্ভনরের চিফ বডিগার্ড, এক্স-মিলিটারিটারে (গান্ডিয়ারে) যখন একজন ‘ডাকাত-বিপ্লবী’ (হেলসিংকি) পিটাইতে থাকে তখন সে ডায়ালগ দিতে থাকে, তোরে আমি পিটাইতেছি তুই ফ্যাসিস্ট বইলা, তোরে আমি পিটাইতেছি তুই রেসিস্ট বইলা, তোরে আমি পিটাইতেছি তুই সেক্সিস্ট বইলা… বইলা দড়াম দড়াম কইরা ঘুষি-লাত্থি মারতে থাকে! ও, এর আগে কয়, মার আমারে, দুই-তিনটা মাইর খায়া নিয়া তারপরে মারতে শুরু করে! 😃

এইটা যে কি আনন্দের ঘটনা, সেইটা পুরানা-আমলের হিন্দি সিনেমা বা মিন্টু আমার নাম সিনেমার ‘বল, তোর নাম কি? বল, তোর নাম কি?’ সিন যারা দেখেন নাই, তারা বুঝতে পারবেন না! মানে, ফ্যাসিস্ট, রেসিস্ট, সেক্সিস্ট নিয়া সিরিয়াস লেভেলের cringe না বানায়া, পুরা ক্রিঞ্চটারেই আরেকটা লেভেলে নিয়া গিয়া সিরিয়াস বানায়া ফেলছে!

সেকেন্ড হইলো, লাস্ট সিনে টোকিও মরার সময়, অনেকগুলা গ্রেনেড নিয়া শুইয়া থাইকা, ব্রার্স্ট করার আগের মোমেন্টে যে চোখ টিপ মারে! কি যে জিনিস এইটা! দর্শকদের আনন্দের কথা না ভাইবা এইটা করা-ই সম্ভব না। এই স্পিরিট’টাও পছন্দ আমার। কিন্তু ‘সিরিয়াস দর্শক’ হিসাবে যদি ‘ভুয়া’ না লাগে আপনার কাছে, নিজের কাছেই নিজেরে ছোট লাগতে পারে। 🙁

তো, আমি বলবো, ‘সিরিয়াস দর্শক’ ইমেজ ধইরা রাখতে হইলে মানি হেইস্ট দেখা ঠিক হবে না। এমনিতে ‘ট্রেন্ডি জিনিসও আমি দেখি তো’ বইলা একটা ভাব-মাইরাও দেইখা ফেলতে পারেন, আমার মতো! 😛

 

সেপ্টেম্বর ৫, ২০২১

কোন আইডিওলজি ভালো, কোন আইডিওলজি খারাপ; কোন আইডিওলজি জিতলো, কোনটা হারলো – সেইটা এতোটা ইম্পর্টেন্ট জিনিস না; বরং কোন আইডিওলজি সমাজে মানুশের কতোটা ভালো করতে পারলো বা মানুশের ভালো-করার জায়গাটারে ওপেন করতে পারলো, সেই জায়গাটাতে নজর দিতে পারাটা বেটার সবসময়।

#########

Hannah Arendt’র একটা ইন্টারভিউ দেখতেছিলাম গতকালকে। অইখানে উনি মেইল ফিলোসফারদের* লগে উনার ডিফরেন্সের জায়গাটা নিয়া বলতে গিয়া বলতেছিলেন; উনারা তো ইনফ্লুয়েন্স করতে চান অন্যদেরকে (একটু হাইসাই বলতেছিলেন), কিন্তু অইটা উনার প্রায়োরিটির মধ্যে নাই। আরেন্ট চান জিনিসটারে বুঝতে (টু আন্ডারস্ট্যান্ড) আর লেখতে পারাটা উনারে হেল্প করে; আর লেখার ভিতর দিয়া যদি এইটা বুঝাইতে পারেন, সেইটা স্যাটিসফাইয়িং একটা জিনিস মনেহয় উনার কাছে।

আমিও উনার দলের লোক। আমি মনে করি, আমার কাজ হইতেছে, কোন জিনিস আমি বুঝতে পারতেছি কিনা – সেই ট্রাই’টা করা। এই আন্ডারস্ট্যান্ডিং’টা আমার ধারণা একটা transcendental জিনিস; যখন কেউ কোনকিছু বুঝে আর বলতে পারে, সেইটা অন্যদেরকেও কানেক্ট করতে পারে।

মুশকিল হইলো, খালি ট্রুথ যে ট্রান্সেডেন্টাল – তা না, ইল্যুশনও কানেক্ট করে মানুশ-জনরে, একটা এক্সটেন্ড পর্যন্ত; কিন্তু আমি বিশ্বাস করতে চাই যে, আপনি যদি কোন থটরে বেটার ওয়েতে এক্সপ্লেইন করতে পারেন, সেইটা কানেকশনটা তৈরি করতে পারে।
চিন্তা জিনিসটা এই জায়গা থিকা সুন্দর, দরকারি ঘটনাও।

………
* যদিও উনি কয়েকবারই কইছেন যে, উনি ফিলোসফার না, পলিটিক্যাল-থিওরিস্ট এবং সত্যি কথাই অইটা, তারপরও ইন্টারভিউয়ারের প্রশ্নের উত্তর দেয়ার খাতিরে বলতেছিলেন

 

সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১

এইরকম একটা চিন্তা তো আছে যে, খালি খালি কথার বা আর্ট-সাহিত্য এইসবকিছুর কোন মিনিং তো নাই, মিনিং তৈরি হয় লাইফের ভিতর দিয়া! মানে, একটা কনটেক্সট তো লাগে! আর্টিস্টের লাইফ (বা যিনি বলতেছেন তার লাইফ) হইতেছে তার আর্টের (যিনি কথা বলতেছেন, তার কথার) কনটেক্সট’টা!

(কথাটা যে মিথ্যা – তা না, কিন্তু) লাইফের ইটসেলফ একটা মিনিং তো আছে, যেইভাবে আমরা লাইফরে দেখি, সেইটা খুব ফিক্সড কোন ঘটনা তো না! যার ফলে লাইফের অ্যাক্টিভিটি দিয়া আর্টরে বুঝতে গেলে, সেইটা কোন ‘রিয়েল মিনিং’ তৈরি করে না, বরং আর্টের ট্রাডিশন্যাল মিনিংটারেই স্যাটিসফাই করতে পারে বেশিরভাগ সময়।

তাই বইলা এইরকম না যে, আর্টের কোন মিনিং নাই। কিন্তু এর কনটেক্সট লাইফ না, বরং অই সময়ের সোশ্যাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং, পলিটিক্যাল পাওয়ার আর আর্টের হিস্ট্রির ঘটনাগুলা অনেকটা বেইজ হিসাবে কাজ করে। তো, অইটারে ‘লাইফ’ বলাটা (সবসময় না হইলেও) বেশিরভাগ সময়ই হইতে পারে, চালাকির একটা তরিকা।…

#########

আমি কিছুটা ধারণা করতে পারি, লোকজন কেন আমার ট্রান্সলেশন নিয়া ওরিড; এই কারণে না যে, বাংলাদেশে অনুবাদের বই বেশি বেচা হয়; বরং আমি যদ্দিন কবিতা লেখছি, লোকজন ভাবছে, “ও, এইটা কাব্য-ভাষা”; গল্প-গদ্য লেখলেও ‘গদ্য-রীতি’ বানায়া দেয়া গেছে 🙂
কিন্তু আমি অনেক আগে থিকাই যে, এই জিনিসটারে ‘বাংলা-ভাষা’ দাবি কইরা আসতেছি, সেইটা ট্র্রান্সলেশনের ভিতর দিয়া যতোটা স্পষ্ট কইরা বলা গেছে, অন্য কোন ফর্মে সেই সুযোগ’টা ছিল না। যারা পড়ছেন, পড়তেছেন, তাদেরকে বাংলা-ভাষা হিসাবেই পড়া লাগতেছে, ‘কাব্য-ভাষা’ ‘গদ্য-ভাষা’ কইয়া আলাদা করা যাইতেছে না আর। (যদিও শুরুতে ‘ভাবানুবাদ’ টাইপ বালের আলাপ করছিলেন অনেকে। কিন্তু এখন নিজেদের কাছেই ফালতু লাগার কথা…)

এইটা যে আমি খুব প্ল্যান কইরা করছি – তা না, পাবলিকের ‘বেদনা’ দেইখা টের পাইছি। লোকজনের জ্বালা-যন্ত্রণা দেইখা এইটাও টের পাই যে, গালি-গালাজ করতে করতে উনারা নিজেরাই চেইঞ্জ হইতেছেন এখন, ধীরে ধীরে। আরো চেইঞ্জ হইবেন বাংলাদেশের রাইটার’রা, হইতে হবে। কিন্তু বাংলাদেশি বাংলায় লেখলে ইমরুল হাসান হয়া যাবেন – এই ডর থিকা বাইর হইতে পারলে আমার ধারণা আরো বেশি কইরা ভাষার ভিতরে নিজেদের সিগনেচার রাখতে পারবেন। যা-ই হোক…

আমি আমার ফার্স্ট অনুবাদের বই ছাপাইছি ২০১৮ সালে, ‘রুমির কাহিনি’ নামে, ২০১৬-১৭ সালের দিকে করছিলাম অই কাজগুলা। ‘ঝামেলা’টার শুরু অই জায়গা থিকা। বাংলা-ভাষারে যেমন আমি ‘শুদ্ধ-পবিত্র’ বইলা মানি নাই, রুমিরও কয়েকটা ‘অশ্লীল’ কাহিনি আমি ট্রান্সলেট করছিলাম। ফারসিতে কি ছিল আমার জানা নাই, কিন্তু ইংরেজির কোন মিনিং আমি চেইঞ্জ করি নাই। এখন করলে হয়তো একইরকমভাবে করতাম না, আরো কিছু এডিট করতাম। অই পবিত্রতার জায়গাতেও অনেকে কষ্ট পাইছিলেন। কিন্তু কোন মূর্তি-ভাঙ্গার উদ্দেশ্য আমার ছিল না, এখনো নাই।

 

সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১

আমার একটা ধারণা হইতেছে যে, বাংলাদেশে ইন জেনারেল, খুব কম আইন-ই ক্রাইম কমানোর জন্য বানানো হয়, বরং বেশিরভাগ সময়ই ‘নতুন আইন’ মানে হইতেছে পলিটিক্যাল উইপেন বা ঘুষ-খাওয়ার-টুল। কারণ এমন একটা ‘পারফেক্ট এনভায়রনমেন্টের’ কথা ভাইবা আইন বানানো হয় (বা পুরান আইন থাকে) যেইটা প্রাকটিক্যালি মানা সম্ভব না। আর যেহেতু মানা সম্ভব না, ডরে ডরে থাকা লাগে পাবলিকরে এবং এই ডর দেখায়া আরো বড় বড় অন্যায়রে তখন জায়েজ কইরা ফেলা যায়!

এই কথা মনে হইলো, আজকে একটা কাহিনি শুনতে গিয়া। (মানে, সত্যি ঘটনাই, পেপার-টেপার ঘাটলে পাইবেন, কয়েক বছর আগের।) কাহিনি’টা হইতেছে, একবার দুদকের (দুর্নীতি দমন কমিশনের) কিছু লোক গিয়া রাজউকের (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের) কয়েকজন লোকের দুর্নীতি ধরার পরে তাদেরকে সাসপেন্ড করা হইলো। তখন রাজউকের অই লোকজন করলো কি দুদকের লোকজনের বাড়ি ইন্সপেকশন করায়া ২৫% বিল্ডিং ভাঙ্গার নোটিশ দিয়া দিলো! মানে, ঢাকা শহরের কোন বাড়ির নকশা যদি রাজউকের লগে মিলে সেইটারে ‘নোবেল প্রাইজ’ দেয়া যাইতে পারে! তখন দুদুকের লোকজন রাজউকের লগে নেগোশিয়নে গেল; উনাদের বিল্ডিংও ভাঙ্গা লাগলো না, দুদুকের রিপোর্টও বাতিল করা হইলো।

তো, এইরকম ঘটনা খালি হাজার হাজার না, বরং দেশটা এইভাবেই চলতেছে। আইন যারা বানাবে দেশের (তারাই তো বে-আইনি, এই সত্যি কথার বাইরেও) তাদের ইনটেনশনের মধ্যেই এইটা নাই যে, এই আইন মানা হবে! আইন মানার চাইতে বরং ঘুষ দিয়া, পলিটিক্যাল পাওয়ারের লগে থাইকা এইসব ‘ঝুট-ঝামেলা’ এড়ানো যাবে, আরো ভালোভাবে! মানে, এই আসপেক্টটারে ইনগোর কইরা বাংলাদেশের আইনের আলাপ করতে যাওয়াটারে একই ধরণের ট্রাপের ঘটনা বইলাই মনেহয়, আমার কাছে।

 

সেপ্টেম্বর ৮, ২০২১

বাংলাদেশের টিভি-পত্রিকাগুলা যতদিন ২০১৮ সালের ৩০শে ডিসেম্বরের পার্লামেন্ট ইলেকশন নিয়া সত্যি কথা বলতে না পারবে, যতদিন দেশের মানুশের কাছে মিথ্যা কথা বলার জন্য মাফ না চাইতে পারবে, ততদিন পর্যন্ত বাংলাদেশের মিডিয়া হাউজগুলা ‘ফ্রিডম অফ স্পিচ’ বইলা কোনকিছুর নাগাল পাবে না!

এইটা হইতেছে উনাদের নিজেদের জেলখানা, নিজেরাই বানাইছেন। বাংলাদেশের মানুশের উচিত অই জেলখানার কয়েদি হিসাবে নিজেদেরকে মাইনা না নেয়া। অই মিডিয়ার প্রপাগান্ডার বাইরে, জেলখানার বাইরে যতোটা আমরা থাকতে পারি, ততটুকই এখন পর্যন্ত আমাদের ফ্রিডমের জায়গা।

 

সেপ্টেম্বর ১০, ২০২১

– ডাকনাম –

বাংলাদেশে ডাকনামগুলা অনেক কেইসেই ইউনি-রিলিজিন; মানে, ডাকনামটা শুইনা বুঝতে পারবেন না, লোকটা হিন্দু না মুসলমান; বেটাদের নামেই খেয়াল করছি ব্যাপারটা, মেয়েদের নামেও কম-বেশি আছে মনেহয়। (অনেক উপাধিও তো আছে ইউনি-রিলিজিন, যেমন চৌধুরী, বিশ্বাস, আরো কিছু থাকতে পারে।)

আমি ‘শিক্ষিত’ মিডল-ক্লাশের কথাই বলতেছি। যদিও ট্রাডিশনগুলা ফিক্সড না, কিন্তু ট্রেন্ড হিসাবে আগে ‘বাঙালি’ নাম রাখাটার যেমন চল ছিল, সেইখানে এখন একটু ‘আরবি’ রাখাটা মোর ট্রেন্ডি মনেহয়, মুসলিম ফ্যামিলিগুলাতে এখন। কিন্তু এখনো বহুত নাম আছে যেইগুলা শুনলে আপনি তার রিলিজিয়ন বুঝতে পারবেন না। (ডাকনাম যেমন ধরেন, রনি, রাজীব, রাসেল, তরুণ, বিজয়, রাণী, পরি, কাজল… এইরকম।) বাংলাদেশের অন্য ছোট ছোট জাতি-গোষ্ঠী, যেমন, চাকমা, মারমা, গারোদের ডাকনাম আবার ‘হিন্দু’-টাইপ অনেকটা।
আমার ধারণা, এই ডাকনামটার ভিতর দিয়া বাংলাদেশে হিন্দু-অপ্রেশনের জায়গাটাও টের পাওয়া যাইতে পারে কিছুটা; মানে, আইডেন্টিটি গোপন করার লাইগা হিন্দুরা এইরকম ইউনি-রিলিজিয়াস নাম রাখতেছে – তা না, কিন্তু যদি নামটা এইরকম থাকে, তাইলে কোন দোষ তো নাই!

(একটা স্যাম্পল নিয়া দেখা যাইতে পারে আমার কর্নসান কতোটা ঠিক।) মানে, নামের ব্যাপারটাতে আমার একটা অনুমান হইতেছে, বাংলাদেশি হিন্দুরা ডাকনামের ব্যাপারে ধর্ম-নিউট্রাল হইতে চান মেবি, যেইখানে মুসলমানরা মুসলমান পরিচয়টাতে মোর ভিজিবল হইতে চান।
অনেক বড় জেনারেনালাইজেশনই হইলো এই কথাটা। কিন্তু এই টেনডেন্সিগুলা চেক করা যাইতে পারে – এইরকম একটা দরকারের কথাই আমি বলতে চাইতেছি আসলে।

##########

মানুশের চিন্তার জায়গা যেমন চেইঞ্জ হইতে পারে না বেশিরভাগ সময়; একইরকমভাবে যা যা কিছু আমরা দেখি বা যেই যেই কাজ করি এবং যেইভাবে করি, সেইগুলা ঠিক হোক বা ভুল, ভালো হোক আর খারাপ সেইগুলার একটা কন্টিনিউয়াস এফেক্ট আছে; চাইলেই বাইর হয়া আসা’টা পসিবল না। ‘আমি জানি জিনিসটা খারাপ, তারপরেও আমি করতেছি’ – এইরকমের অনেক সিচুয়েশন পাইবেন; এইটা খালি সোশ্যাল, ইমোশনাল ট্রাপ না, একটা কাজ করতে করতে সেইটা দিয়া কনজিউমড হয়া যাওয়ার ঘটনাও অনেকটা।

নাটক-সিনেমা, গান-কবিতা দিয়া ইন্সফ্লুয়েন্স হওয়াটাও কাছাকাছি রকমের জিনিস যে, আমি দেখতেছি এইরকম হয় এবং এইটা সত্যি না যে সেইটাও ঠিকাছে, কিন্তু সত্যি বানাইতে পারি তো আমরা, এইরকমভাবে নেয়ার ঘটনাটা ঘটে।

মানে, জিনিসগুলারে ওয়েভ হিসাবে দেখেন। চিন্তা, কাজ এবং ফিলিংস – এইগুলা আমাদের বাঁইচা থাকার ভিতর দিয়া তৈরি হইতেছে; আমাদের থাকার বাইরে, আগে এবং পরেও থাকতেছে। যার ফলে, এই জিনিসটারে একটা ‘অনুকরণ-প্রিয়তা’ দিয়া বুঝতে পারা যাবে না আসলে; বা ট্রাপও না কোন; যে আমরা আটকায়া যাইতেছি; বরং যে কোন আন্ডারস্ট্যান্ডিং-ই জানার পরে, এমনকি মানতে পারার পরেও ‘ইন এফেক্টে’ আসতে টাইম লাগে। ইমিডিয়েটলি হয় না।

চিন্তার যেমন একটা ফ্লো আছে; আমি বলতে চাইতেছি, কাজের ব্যাপারেও একইরকম, আমরা যা দেখি বা যা করি, সেইগুলা ফর্ম হিসাবে আমাদেরকে আটকাইয়া ফেলে বা নতুন দিকে নিয়া যাইতে থাকে। খালি চিন্তা দিয়াই কাজের জায়গাগুলা চেইঞ্জ হয় না, কাজের ভিতর দিয়াও সেইটা হইতে থাকে।

আর এইটা তো খুবই আনফরচুনেটই, যখন দেখি যে, একটা সার্টেন চিন্তা ও কাজের ধরণের বাইরে আমরা যাইতে পারতেছি না, বা যাওয়ার জায়গাটাতে নিজেরাই নিজেদেরকে আটকায়া ফেলতেছি… এইটা এক্সপেরিয়েন্স হিসাবে যে কারোর জন্যই বাজে আসলে।

Leave a Reply