সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২
ঢাকা শহরে অনেকগুলা সুপার-স্টোরের চালু হওয়া এবং ক্লোজ হওয়া দেখছি আমি। এর মধ্যে সবচে রিমার্কেবল লাগছিল – “সাদ-মুসা সিটি” নামে একটা। হিউজ পার্কিং স্পেইস ছিল। নিচতলায় মাছ-মাংস, শাক-সব্জি থিকা শুরু কইরা বেডশিট, জামা-কাপড়, মোটামুটি সবকিছু, একটা শপিং-মলে যা যা কিছু থাকতে পারে। দোতলায় গেমিং-জোন। তিনতলায় রেস্টুরেন্ট, বাচ্চাদের খেলার জায়গা। পুরা একটা আমেরিকান-ড্রিম। কিন্তু অই দোকানও কয়েক বছরের মধ্যে ক্লোজ হয়া গেছিল, বা কেউ যাইতো না আর তেমন।
যখন পতনের দিন শুরু হইলো, মালিক-পক্ষ মেবি শুরুতেই ম্যানেজারদের, স্টাফদের চাকরি খাইয়া দিছিলো; নতুন একটা সেট আসলো, যাদের কোয়ালিটি আসলে আগের লোকজনের চাইতে বাজে, মানে অরা জিনিসপত্র কিছু জানতো না, কিছু কইলে দেখায়া দিতে পারতো না, আর ফ্লোর ম্যানেজার যে ছিল স্টাফদেরকে কাস্টমারদের সামনেই বকাবকি করতো। মানে, ড্রিমটা একটা নাইটমেয়ারে পরিণত হইছিল। দোকানটা এখন আছে কিনা জানি না, কিন্তু অনেক বছর আগে শেষবার যখন গেছিলাম পুরা ভূতুড়ে একটা অবস্থা ছিল জায়গাটা। (এখন নিশ্চয় অন্য কোন কিছু হইছে।)
তো, জায়গাটা এই কারণে ফ্লপ করে নাই যে, লোকজন ঠিকমতো কাজ করতো না, বা সাপ্লাই-চেইন কাজ করে নাই; জিনিসপত্রের দাম তো একটু বেশি ছিলই কিন্তু অইটুক প্রিমিয়াম দিতে রাজি ছিলেন অনেক কাস্টমার। মেইন ঝামেলাটা হইছিল ফ্লাইওভারটা (বসুন্ধরা গেইট থিকা ৩০০ ফিট যাওয়ার পথে) হওয়ার সময়ে। নিচ দিয়া যাওয়ার রোড’টা ভালোই ছিল, গাড়ি নিয়া যাওয়া যাইতো, কিন্তু ফ্লাইওভারের কাজ চলার সময়ে নিচের রোডটাই বন্ধ হয়া গেছিল, প্রাইভেট কার নিয়া যাওয়া যাইতো না। যার ফলে কাস্টমারদের যাওয়ার রাস্তাই বন্ধ হয়া গেছিল। এখন মানুশ যদি দোকানে না-ই যাইতে পারে, কিনবে কেমনে!
যেমন ধরেন, বাংলাদেশের মানুশ-জন যে বাংলাদেশের টিভি-চ্যানেলগুলা দেখে না, এই কারণে যদি নিউজ-প্রেজেন্টারদের দোষ দেন, যে অদের চেহারা সুন্দর না, বা জার্নালিস্টরা ভালো নিউজ লেখতে পারে না – তাইলে অই সাদ-মুসা সিটি’র মতোই ঘটনা হবে।
মেইন সমস্যা হইতেছে, মিছা-কথা, আজাইরা-কথা মানুশ আর কতোদিন দেখবে!
মানে, এইটা তো রাইটারদের সমস্যা না! যে, গর্ভমেন্টের পক্ষে ইন্টার-ন্যাশনাল পত্র-পত্রিকায় লেখার মতো ভালো-রাইটার নাই! বরং চোর-ডাকাতদের পক্ষে সাফাই গাইয়া কেউ তার রাইটিং ক্যারিয়ারের তো বারোটা বাজাবে না! (ডেইলি-স্টার হয়তো কিছু দেশি-মাল সাপ্লাই দিতে পারে।)
একটা বাংলা-একাডেমি প্রাইজ বা একুশে পদকের তো দরকার নাই ইংরেজি-জানা বিদেশি রাইটারদের! এমনকি বুড়া-বুদ্ধিজীবীদের যতটা দরকার, ইয়াং লোকদের তো সেইটাও নাই!
আর টাকা দিয়া লেখা হয় না। লেখার একটা দাম বা মনিটারি ভ্যালু আছেই বাজারে; মানে, লেইখা কম-বেশি কিছু টাকা কামাই করতেই পারেন আপনে, কিন্তু টাকা-কামাই করার জন্য লেখা হয় না আসলে। যে কোন রাইটারই এই জিনিসটা বুঝতে পারার কথা।
আমি বলতে চাইতেছি, বাকশালের পক্ষে টাকা দিয়াও কথা-বলার লোক যে পাওয়া যায় না, এইটা রাইটার না থাকার সমস্যা না।
আইডিওলজিক্যালি, বাকশাল যে বাংলাদেশি ফ্যাসিবাদ – এই ন্যারেটিভটা স্পষ্ট হওয়ার ঘটনা। যার মিনিমাম একটা বিবেক-বোধ আছে, তারা এই জুলুমের পক্ষে সাফাই গাওয়ার মতো মুর্খ হইতে পারে না। সমস্যাটা এই জায়গাটায়।
সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২২
আগে, ধরেন সেভেনটিইজ-এইটিইজেও এই অবস্থা ছিল বাংলাদেশে, যে কোন মেয়ে রেইপড হইলে সেই খবর চাইপা রাখা হইতো, কথা-বলা হইতো না, কারণ জিনিসটা নিয়া কথা না-বলার ভিতর দিয়া রেইপড হওয়া মেয়েটারে “সম্মান” দেখানো হইতো! এমনকি এইরকম থ্রেটও দেয়া হইতো যে, রেইপ কইরা পত্রিকায় নিউজ ছাপায়া দেয়া হবে! মেয়েটার জীবন বরবাদ হয়া যাবে, কোনদিন আর বিয়া হবে না!
এইটা মনে হইলো, বাংলাদেশের কবি-সাহিত্যিক এবং সো-কল্ড শিক্ষিত লোকজনের “বিএনপি”-ভীতি দেইখা। উনারা খুব ‘সাবধান’ থাকেন, কোন কথা যদি বিএনপি’র ফেভার চইলা যায় বা কেউ যদি তাদেরকে বিএনপি বইলা ট্যাগ দেয়, তাইলে যেন উনাদের “সতীত্ব” চইলা যাবে! ‘রুচিশীল’ ‘কালচারাল’ হয়া থাকতে পারবেন না আর! বিএনপি হইতেছে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের সতীত্বের পাতলা পর্দা’টা! একবার ফাইট্টা গেলে “মান-সম্মান” সব শেষ!
তো, রেইপ করা যে রেপিস্টের সমস্যা – এইটা এখন আমরা যেইরকম বুঝতে পারি; একইরকম ভাবে, বিএনপি নিয়া কথা কইলে বা আপনার কোন কথা বিএনপি’র ফেভারে গেলে ‘বাংলা-সাহিত্য’ বা ‘রুচিশীল’ শিক্ষিত-সমাজ’ থিকা আপনার নাম যে খারিজ হয়া যাওয়ার থ্রেট থাকে – এইটা যে বাকশালি-গোলামির ঘটনা, এইটাও একটা সময়ে গিয়া কম-বেশি বুঝতে পারার কথা আমাদের। কিন্তু, অই তো, বেশি দেরি কইরেন না! গোলামির মুখোশটাই আমাদের অনেকের আসল চেহারা হয়া যাবে তখন।
***
এইরকম একটা কথা তো খুবই চালু আছে যে, ইতিহাস থিকা কেউ শিখে না! তো, ব্যাপারটা এইরকম না যে, কেউ শিখে না, বরং আমার ধারণা মনে করে যে, “আমার ব্যাপারে এইরকম হবে না! আমি উতরায়া যাইতে পারবো।” ইতিহাসের সকল জালিম, সব মীরজাফরেরা একইরকম ভাবে।
আরো ট্রাজিক (বা কমেডি) ব্যাপার হইতেছে যে, আমাদের কাছে মনেহয় মীরজাফর’রা অনেক পাওয়ারফুল। কিন্তু আদতে তাদের কোন পাওয়ার-ই নাই (ক্ষমতা যা আছে, তা হইতেছে জুলুম করার); বাকশালের সকল ক্ষমতা হইতেছে ইন্ডিয়ার, আম্রিকার, নাইলে চায়নার… যেইরকম মীরজাফরের পাওয়ার ছিল না, ছিল ইংরেজদের। এবং যেইরকম লাত্থি মাইরা ফালায়া ফালায়া দেয়া হইছিল মীরজাফর’রে, একইরকমভাবে বাকশালরেও সরায়া দিবে তাদের অই বিদেশি-মালিকরা। নতুন কোন গোলাম খুঁইজা নিবে, বানায়া নিবে। ইন্ডিয়ারে ট্রানজিট দেয়া হইছে, নতুন নতুন রোড দেয়া হবে। আম্রিকারে মিলিটারি-বেইজ বানাইতে দিবে। চাইনিজ ইয়ানে এলসি খুলতে হবে। মানে, যারে যা পারে, সবই দিবে!
কিন্তু তারপরও ক্ষমতা থাকবে না আসলে। কারণ মীরজাফরের তো নিজের কোন ক্ষমতা নাই। একমাত্র বেঈমানি করতে পারা হইতেছে তাদের ক্ষমতা! যে কোন পাতি-শয়তানও এই কাজ করতে পারে। বেঈমানির পুরষ্কার হিসাবে ইতিহাসে মীরজাফর’রা বেঈমানিই পাইয়া আসছে। বাকশালের ব্যাপারে কোন ব্যতিক্রম হবে না। এইটা এক বছর পরেই হোক, আর একশ বছর পরে। হিস্ট্রির এই জিনিস রিপিট হইতেই থাকবে।…
সেপ্টেম্বর ১৮, ২০২২
এনা বাসের পেইজের একটা অ্যাডের ছবি মোটামুটি ভাইরাল হইছে। ছবিটাতে বলা হইতেছে যে, এনা বাসের স্পিড উনারা কাউন্টার থিকা মনিটরিং করেন!
তো, যারা এনা বাসে ট্রাভেল করছেন, উনারা কমেন্ট করতেছেন, কি রকমের টেরিবল অবস্থা বাসের স্পিডের। আমিও এর “সুনাম” শুনছি অনেক! মানে, বাসে না চইড়াও অনেকে জানেন। তো, ভাবতেছিলাম, যেইটা নিয়া অদের সবচে বেশি দুর্নাম, সেইটা নিয়া কেন অ্যাড দিলো এনা বাস কোম্পানি?
(নেগেটিভ জিনিসরে হাইলাইট কইরা) হিট হওয়ার জন্য দিছে – এইটা আমার মনেহয় নাই।
বরং আমার ধারণা, যেই অ্যাড-এজেন্সি বা কপি-রাইটার এই আইডিয়া জেনারেট করছে, সে একজন “বিশিষ্ট উন্নয়ন-খোর”! (এনা বাসের মালিকও কি কোন মন্ত্রি-এমপি নাকি?) মানে, সরকারি-প্রপাগান্ডার লগে এর মিল আছে।
এই অবৈধ সরকার তো যেইটা নিয়া বাটপারি করে, দুই নাম্বারি করে, লুটপাট করে, সেইটারেই এচিভমেন্ট হিসাবে হাইলাইট করে। এনা বাসেরও সবচে বাজে দিক হইতেছে হাই স্পিডে চালানো, আর এইটারেই অ্যাড গিমিক হিসাবে ইউজ করতেছে।
মানে, “বিজ্ঞাপণ মানেই মিছা কথা” – এইটারে লিটারারি মিনিংয়ে তো নিছেই, বাটপারি কইরা বড় গলায় সেইটা নিয়া কথা-বলার যেই পলিটিক্যাল কালচার, সেইটারেও এডাপ্ট করছে বইলা মনে হইছে 🙂
এইরকমের জিনিস ফিউচারে আমাদেরকে আরো দেখতে হবে বইলাই আমার মনেহয় 🙁 কারণ খুব কনফিডেন্টলি মিছা-কথা বলাটারেই স্মার্টনেস হিসাবে এস্টাবলিশ করছে আমাদের নিউজ-মিডিয়া, পলিটিক্যাল-নেতা এবং কালচারাল-গুন্ডারা…
***
এইভাবে ভাবেন, ধরেন, আপনি অনেক বড় একটা ফ্যামিলিতে বা বিশাল মেসবাড়িতে আছেন, একসাথে থাকা-খাওয়া, চলা-ফেরা নিজেরা নিজেরা ম্যানেজ করা যায় না। তখন একজনরে “কাজের লোক” হিসাবে এপয়েন্টমেন্ট দিলেন। উনার কাজ হইতেছে আপনাদের কাছ থিকা টাকা-পয়সা নিয়া এইগুলা ম্যানেজ করা এবং মাস শেষে, বছর শেষে, বা ৫ বছর পরে হইলেও হিসাব বুঝায়া দেয়া।
এখন অই কাজের বেটি যদি বলেন যে, তোদেরকে তিনবেলা খাওয়াইতেছি, পরাইতেছি আমি! এই করতেছি, সেই করতেছি! আর আপনারা না চাইলেও সে জোর কইরা থাকতেছে। আপনাদের বেশিরভাগ টাকা নিয়া মাইরা দেয়, অন্য জায়গায় পাচার কইরা দেয়, তার বইন, পুত, চৌদ্দগুষ্টির লোকজনরে দিয়া, তারে কি চাকরিতে রাখবেন? রাখা কি উচিত?
এখন এইটা নিয়া কথা কইতে গেলে যদি বাসার অন্য চাকরদেরকে দিয়া আপনারে পিটায়, বদনামি করে, মামলা দেয়, গুম কইরা দিতে পারে, তখন কথা কইতে তো একটু ডরাইবেনই। কিন্তু একইসাথে সবাই মিইলা কি একটা ডিসিশান নিবেন না যে, এই কাজের বেটি’রে রাখা যাবে না? তারে বদলানো উচিত?
তা নাইলে একদিন ফ্যামিলিটা বা মেসবাড়িটাই তো একদিন থাকবে না – এইটা কি মনে হবে না?
এর লগে রিলিভেন্ট আরেকটা ঘটনা হইতেছে, আপনার ইনকাম যদি হয় ১০০ টাকা, আপনি কতো টাকা চাকর-বাকরদের বেতনের পিছনে খরচ করবেন? ১০ টাকা? বা ধরেন ২০ টাকাই? কিন্তু যদি ৪৪ টাকা খরচ করেন চাকরদের বেতনের পিছনে, সংসার কি চালাইতে পারবেন?
এখন কাজের বেটি’র জায়গায় গর্ভমেন্ট, চাকর-বাকরদের জায়গায় সরকারি-কর্মচারি আর ফ্যামিলি বা মেস-বাড়ি’টারে বাংলাদেশ দিয়া রিপ্লেইস করেন।
[একটু গ্রসলিই বলছি, কিন্তু কবিতা পড়ার মতো না পড়ার রিকোয়েস্টই করবো আমি!]
সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২২
আবারো বলি, যে কোন পলিটিক্যাল এবং কালচারাল ইস্যুতে টাকা-পয়সার জায়গাটারে খেয়াল করবেন। ইভিএম কেন দরকার? এইখানেও এই “সাইন্স” আছে।
অনেকেই নিউজটা দেইখা থাকবেন যে, ইভিএম কিনতে ৮,৭১১ কোটি টাকা লাগবে। এই টাকা মারাটা হইতেছে ক্রুশিয়াল ঘটনা। বাকশালিরা তো মিছিল-মিটিংই করতে দেয় না, ভোট দিতেও দিবে না! কিন্তু টাকা মারার ধান্ধাটা বাদ দিতে পারবে না। এই টাকা দিয়া ইলেকশন কমিশনের লোকজনরে “খুশি” রাখা হবে আসলে। (যে, টাকার ভাগ তো তোমাদেরকেও দিতেছি!)
তো এমনিতে, ইলেকশন করতে কতো লাগে লাগে? মানে, ২০১৪ সালে কতো টাকা লাগছিল? ২০১৮ সালে? এনি গেইস? 🙂
একটা নিউজে দেখলাম, ২০১৪ সালে ২৮৩ কোটি টাকা খরচ হইছিল পার্লামেন্ট ইলেকশন করতে। এর পরেরবার এর মোটামুটি আড়াই গুণ বাজেট করা হইছিল। আর ইভিএম কিনতে গেলেই (২০১৪ সালের তুলনায়) বেশি খরচ হবে ৩০ গুণ বেশি টাকা!
এই টাকা বলদের পুটকি দিয়া বাইর হবে না, জাফর ইকবালরাও দিবে না (উনারা বরং ভাগ পাইতে পারেন কিছু), আপনার-আমার পকেট থিকাই যাবে। কিন্তু একবার যেহেতু “উন্নয়ন” খাইয়া অভ্যাস হইছে, এইটাও গায়ে লাগবে না, আই হোপ 😎
সেপ্টেম্বর ২০, ২০২২
জুলুমের শাসনের সবচে বড় ক্ষতি এইটা না যে, মানুশ পলিটিক্যাল সত্যি কথা কইতে ডরায়; বরং যে কোন সত্যি-কথা কওয়াটাই একটা রিস্কি ঘটনা বইলা মনে হইতে থাকে।
কাব্য করা, ফান করা, গ্রে ইন্টেলেকচুয়াল আলাপ করাটা মোর সেইফ, স্মার্ট জিনিস হিসাবে এস্টাবলিশড হইতে থাকে। সত্যি-কথা, উচিত-কথা বলা খালি ‘গ্রাম্য’ আর আন-স্মার্ট জিনিস না, আন-নেসেসারি হিসাবে পারসিভড হইতে থাকে। যে, এইগুলা তো আমরা জানি-ই! এইগুলা বইলা কি লাভ! এইরকম।
এই জিনিসটা হইতেছে সবচে বড় ড্যামেজ, সমাজে; জুলুমের শাসনের। এই জায়গাটা থিকা বাইর হইতে হবে।
***
এইটা খুব ভুল-কথা যে, কয়েকশ লোক আছে, যারা নয়া বাকশালের এগেনেস্টে কথা বলতেছে, বরং এইখানে একটা ভয়-ডরের এনভায়রনমেন্ট ক্রিয়েট কইরা লাখ লাখ লোকরে চুপ করায়া রাখা হইছে। হামলা কইরা, মামলা দিয়া মানুশ-জনরে চুপ করায়া রাখা হইছে। তার চাইতে বড় ঘটনা হইতেছে, মানুশের কথা বলার জায়গা নাই, তাদের আওয়াজগুলারে মিউট কইরা রাখা হইছে নিউজ-পেপারে, টিভি-চ্যানেলের রিয়ালিটিতে…
আজকে বাংলাদেশে ১% লোকও এই অবৈধ সরকার’রে সার্পোট করে না। রাস্তা-ঘাটে, হাটে-বাজারে মানুশের সাথে কথা বইলা দেখেন, সবাই এই জুলুমের শাসনে, উন্নয়ন-মারানি বাকোয়াজিতে, লুটপাটের বাজারে জিনিসপত্রের বাড়তি দামে অতিষ্ঠ!
ঘটনা বরং উল্টা। খুব বেশি হইলে কয়েকশ লোক আছে, যারা শয়তানের কাছে তাদের আত্মা বেইচা দিছে। বাকি সবাই হ্যামিলনের বাঁশির সুরে, ট্রেন্ড দেইখা নাচতে নাচতে পাহাড় থিকা লাফ দিয়া মরতে যাইতেছে। দে আর হাফ-ডেড। অরা নিজেরাও টের পাইতেছে। হাফ-ড্রিম আর হাফ-ট্রুথের রিয়ালিটি থিকা জাইগা উঠতে রাজি হইতে পারতেছে না, ডরাইতেছে। এইরকম লোকই বেশি। কিন্তু তাদের বাকশালি-ন্যারেটিভে ক্র্যাক হইছে, উন্নয়ন-ড্রিম চোখের সামনে নাইটমেয়ারে পরিণত হইতেছে।
যারা বাকশালি-ন্যারেটিভের বেনিফিশিয়ারি, তারা এখনো “আশাবাদী” এই নয়া-বাকশালের জুলুম জারি থাকলে নিজেরাও লুটপাট করার চান্স পাবে একদিন। এই ধরণের লোক নাই না, অই “কয়েকশ”-ই আছে, যারা তাদের বিবেক-বুদ্ধি শয়তানের কাছে বন্ধক দিছে।
এরশাদ ক্ষমতা ছাড়ার পরে ৩৫ টা সিট পাইছিল, এখন ফ্রি-ফেয়ার ইলেকশন হইলে আওয়ামী-বাকশালিরা অই কয়টা সিটও পাবে না।
আজকে যারা তাদের পা চাটতেছে, ক্ষমতা থিকা নামার পরে কালকেই অই দালালগুলারে খুঁইজা পাওয়া যাবে না। দালালদের কাজই হইতেছে নতুন মালিক খুঁইজা বাইর করা, তার পারপাস সার্ভ করা। এই দালালের দল’রে সার্পোটার ভাবলে ভুল হবে। এরা সবসময় এটাচড টু পাওয়ার। পরগাছা।
বাকশালি ন্যারেটিভ’টারে বাতিল করতে পারাটাই এনাফ না, এরা যে বিশাল কোন ফোর্স না বরং সংখ্যায় গুটি কয়েকজন লোক, এই জায়গাটারেও ফোকাস করাটা জরুরি।
সেপ্টেম্বর ২২, ২০২২
কয়দিন আগেই ভাবতেছিলাম, আমাদের রিটেন-হিস্ট্রির যুগে যত ফিলোসফার আছে, তাদের সবাই-ই মোটামুটি বেটা-মানুশ, ফিমেইল ফিলোসফার যে নাই – তা না, কিন্তু নাম্বারটা তো কমই; ধরেন, ১০ জনে ২ জন, এর বেশি নাম মনে করতে পারবেন না, তাও গত ১০০ বছরে আইসা এই নামগুলা ফ্রিকোয়েন্ট হওয়া শুরু হইছে কিছুটা।
এখন এই কথা যে চালু আছে যে, “মেয়েমানুশের বুদ্ধি নাই”, এর ব্যাকগ্রাউন্ডে তো এই চিন্তাটাই আছে যে, খুব বেশি সায়েন্টিস্ট, ইনভেন্টর, মোরাল-লিডার, বা যেই যেই ক্যাটাগরিগুলা আছে “গ্রেটনেসের”, সেইখানে মেয়েদের নাম নাই! তো, চিন্তা হিসাবে এইটা খালি ভুল-ই না, চালাকির একটা ঘটনাও।
কারণ নেসেসারিলি এইগুলা হইতেছে পাবলিক ক্যাটাগরি, এবং মেয়েদের এই ধরণের পাবলিক-এফেয়ারসে পার্টিসিপেশন কখনোই ছিল না, এমনকি এখনো অনেক জায়গাটা “হারাম” হয়া আছে। তো, যেই ক্যাটাগরিগুলাতে আপনার একসেসই নাই, সেইখানে আপনি গ্রেট কেমনে হইবেন!
এখন আরেক যন্ত্রণা শুরু হইছে। এই ক্যাটাগরিগুলাতে মেয়েদের একসেস দেয়ার পরে বলা হইতেছে “পুরুষের সমকক্ষ” হইতে হবে! কিন্তু ব্যাপারটা তো এইরকম না, কোনভাবেই। ঘটনা হইতেছে লিটারেচার, ফিকশন, কবিতা, ফুটবল, ক্রিকেট, পেইন্টিং… এইসব আর্ট-কালচার-খেলার একটা হিস্ট্রি আছে, পারফর্মেন্সের ঘটনা আছে। এইগুলাতে ইউজ-টু হওয়ারও ব্যাপার আছে।
যেমন ধরেন, অলিম্পিকে সব মেডেল ইউরোপ-আম্রিকানরা কেন জিতে? কারণ, খেলাগুলা কম-বেশি তো অইসব দেশেরই। কাবাডিতে আম্রিকানরা চ্যাম্পিয়ন হইতে পারবে না – তা না, কিন্তু মিনিংলেসই তো মোটামুটি, অদের জন্য। বা কম্পিটিশনের জায়গাটাতে এমন একটা সিস্টেম অরা ডেভোলাপ করতে পারছে, যেইখানে যে কোন ফিল্ডেই ‘গ্রেট’ হওয়াটা ইজি। মানে, সাকসেস যে একটা সিস্টেমের লগে এসোসিয়েট ঘটনা, এবং ফ্লুক না – এইটা বুঝতে ‘সাইন্টিস্ট’ না হইলেও তো চলে…
আবার ধরেন, ফ্রিদা কাহলো যে ছবি আঁকলো, শে মেয়ে বইলা ভালো আঁকলো বা খারাপ আঁকলো – এইরকম না, পেইন্টিংয়ে জায়গাটাতে শে একটা কিছু ইনভেন্ট করলো বা রিভিল করলো বরং। মার্গারেট এটউড যে ডিস্টোপিয়ান নভেলের একটা ফর্মরে প্রমিনেন্ট কইরা তোললেন, বা অন্য কারো ব্যাপারেই ঘটনাটা এইরকম যে, উনারা অই জায়গাটাতে কন্ট্রিবিউট করছেন। মেয়ে বইলা করতেছেন – তা তো না!
মানে, এই পারসপেক্টিভটা যে প্রবলেমেটিক, এই আন্দাজটা না থাকলে, যে কোন আলাপই একটা অহেতুক ঝামেলা তৈরি করার বাইরে আর তেমন কিছুই হইতে পারার কথা না আসলে।…
সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২২
কয়দিন আগে যখন পুলিশের গুলিতে নারায়ণগঞ্জে একজনরে খুন করা হইলো, তখনো বলছিলাম, খুনি’র নামও নেন! মুন্সিগঞ্জের ঘটনাতেও একই কথা বলতে চাই, খুনির নাম বলেন! কে খুন করাইতেছে, আমরা জানি, কিন্তু কে গুলি করতেছে, তার নামও বলার দরকার আছে।
কোন জালিম-ই একলা টিইকা থাকতে পারে না, তার সঙ্গ-পাঙ্গরা না থাকলে। এই ক্রিমিনালদেরকেও চিনতে পারতে হবে আমাদেরকে। এরা অল্প কয়েকজন লোক। যারা গুলি কইরা মানুশ মারে আর তারে সার্পোট করে – তারা অল্প কয়েকজন লোকই। কিন্তু আমরা, বেশিরভাগ মানুশ, চুপ কইরা থাকি। এক ধরণের ‘অস্পষ্টতার’ ভিতর দিয়া নিজেদের নিরবতারে জাস্টিফাই করার ট্রাই করি। কিন্তু এই চুপ কইরা থাকাটা, গ্রে-এনালাইসিসগুলা আমাদেরকে বাঁচায়া রাখবে না, জুলুমরে ঠেকায়া রাখবে না, বরং আরো খারাপ-অবস্থার দিকেই নিয়া যাবে।
বদলা নেয়ার জন্য এই কাজ করার দরকার না, বরং ঘটনাগুলা যে কোন ‘অদৃশ্য শক্তি’ বা জ্বীন-ভূতে আইসা ঘটাইতেছে না, কোন না কোন মানুশ, আমাদের আশে-পাশের কেউ না কেউ করতেছে – সেইটা স্পষ্টভাবে দেখানোর দরকার আছে। পরের বার যে গুলি করবে, সে জানবে যে, তারে এক্সপোজড হইতে হবে। এই খুনের জবাব তারে দিতে হবে, মানুশের কাছে, নিজের বিবেকের কাছে, যে পুলিশ বইলাই সে কাউরে খুন করতে পারে কিনা!
যাদের কাজ হইতেছে দেশের মানুশরে হেফাজত করা, তারা যখন দেশের মানুশরে খুন করতে থাকে, তখন সমাজের মানুশ-জনের কাছেই আমাদেরকে বিচার দিতে হবে! সমাজের মানুশ-জনরে নিয়া আগাইতে হবে।
পুলিশ কি দেশের মানুশরে খুন করতে পারে? আপনার ফ্যামিলির কাউরে খুন করলে আপনি কি করতেন? খুনির নামটাও কি বলতেন না? আমাদের এইরকমের ‘না-বলার’ ভিতর দিয়া বাকশালি জুলুম ও ক্রাইমগুলা জারি আছে, আরো পোক্ত হইতেছে, দিনে দিনে।
সেপ্টেম্বর ২৫, ২০২২
বাংলাদেশের সেক্যুলার’রা মিডিয়া-ম্যানুফেকচারড ইস্যুগুলার দিকে এতো হুমড়ি খায়া পড়ে, আর বারবার ধরা খাওয়ার পরেও একই ধরণের ভুল কেন করতে থাকে? উনারা বোকা এবং বুঝেন না বইলা? 🙂
মানে, এইভাবে দেখতে গেলে, জায়গাটারে ঠিকমতো এড্রেস করা হবে না আসলে। এমনকি অনেকে যে ধরা খান, এবং পরে আফসোস করেন, তাদের জন্য আমার সাজেশন তিনটা।
এক, বাংলাদেশি নিউজ-মিডিয়ারে বিলিভ কইরেন না। (এমনকি উনারা যদি সত্যি-কথা বলে, তাইলেও না। অইখানেও ঘাপলা থাকবে, কোন না কোন।) আর যারা এই মিডিয়া-রিয়ালিটিতে বিশ্বাস করে, তাদের রিয়ালিটিতে সাবস্ক্রাইব কইরেন না। মানে, যারা মিডিয়ার কাছে বিচার দেয়, তারা ‘বোকা’ না, তারা এই বাতিল-মিডিয়ারে, বাকশালি-ন্যারেটিভটারে রিলিভেন্ট কইরা তোলার পার্টনার। এই পলিটিক্যাল স্পেইসটারে খেয়াল করতে আমাদেরকে রাজি হইতে হবে।
দুই, যেই ইনফরমেশন বা খবর মিডিয়া আপনারে জানাইতে চায়, কিন্তু আপনারে জানার দরকার নাই, সেই খবরে কান দিয়েন না, চোখ দিয়েন না। কেউ যদি মিডিয়া-ফুটেজ খাইতে চায়, এইটা তার ডিজায়ার; এইরকম ১৫ মিনিটের ফেইম অনেকেই চাইবে, মিডিয়া-জম্বি লোকজন পাবো আমরা। কিন্তু এই সার্কাস-শোগুলাতে আমাদেরকে এডিক্টেড হওয়া যাবে না।
তিন, এই যে এডিক্টেড হওয়া এইটা হইতেছে আপনার সারাউন্ডিংসের একটা ঘটনা। বাকশালিদের হেইট করার চাইতে জরুরি জিনিস হইতেছে আপনার বাকশালি-বন্ধুদের ন্যারেটিভে পার্টিসিপেট না করা। উনাদের রিয়ালিটিরে আপনার-আমার রিয়ালিটি হিসাবে নেয়া যাবে না। এই ডিটাচমেন্টেটা জরুরি, এবং কঠিন কাজ একটা।
সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২২
– ২৫ শে সেপ্টেম্বর যেইভাবে আমার বার্থডে হইলো… –
আমার বার্থডের তারিখ কনফার্ম আমার জানা নাই। আমাদের সময়ে বার্থডে তো আসলে লাগতো স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময়, এরপরে কনফার্ম বা ফাইনাল করা লাগতো এস.এস.সি. পরীক্ষা দেয়ার সময়। এখন অবশ্য জন্মের পরপরই লাগে, এনআইডি, পাসপোর্ট করার সময়। আর জন্মাইছি যেহেতু একটা বার্থডে তো ছিল, মানুশ-জনরে বলা লাগে।
তো, স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময় কোন তারিখ দেয়া হইছিল আমার মনে নাই। এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশনের সময় বার্থডে লেখা হইলো ২৫.০৬.১৯৭৬. সব সরকারি কাগজপত্রে এই তারিখই দেয়া। কিন্তু এইটা তো আমার অরিজিনাল বার্থডে না, সরকারি বার্থডে! 🙂
একবার যেহেতু লেখা হয়া গেছে, আর বদলানো যাইতেছে না।
তো, এই সরকারি-বার্থডে লেখার সময় আব্বা-আম্মারে জিগাইছিলাম অরিজিনাল বার্থডে’র কথা, তখন উনারা বলছিলেন, ২৫শে সেপ্টেম্বর, ১৯৭৫ সালের কথা। সরকারি হিসাব-কিতাব যেহেতু জুন-জুলাই ধইরা হয়, এই কারণে হিসাবের সুবিধার কারণে পরের বছর জুন মাসে শিফট করে দিছিলেন। আমার বই-টই, প্রোফাইল-পরিচিতিতে এইটাই ইউজ করি, দরকার পড়লে।
আর তখন বয়স কমানোর ট্রাডিশনও ছিল, কিন্তু আমার বয়স ৯ মাসের বেশি কমানো যায় নাই, কারণ তাইলে আবার এসএসসি পরীক্ষা দিতে পারতাম না, ১৫ বছর হওয়া লাগতো, এইরকম কোন ইস্যুও ছিল মনেহয়…
এমনিতে, বার্থডে নিয়া তেমন কোন ইমোশন আসলে আমার মধ্যে কাজ করে না। ফেসবুকে এই নোটিফিকেশন আমি অফ করে রাখছি। কিন্তু আমিনুল বারী শুভ্র ম্যানুয়ালি মনে রাইখা উইশ করার কারণে কিছুটা জানাজানি হয়া গেছে মনেহয় ঘটনাটা। এখন বৈভব ট্যাগ করার কারণে কিছুটা পাবলিক ঘটনা হয়া গেছে।
তো, দোয়া, শুভকামনা, ভালোবাসা, মনে-রাখা… এইসবকিছু তো সবসময়ই ভালো জিনিস। যারা উইশ করছেন, করতেছেন থ্যাংকস টু অল!
…
[আমার বড় আন্টি, আমরা অনেক ছোট থাকার সময় ক্যান্সারে মারা গেছিলেন। উনি মারা যাওয়ার পরে উনার হাতের কাজ করা একটা রুমাল বাঁধাই করা ছিল নানুবাড়ির ড্রইং-রুমে। এইটা মেবি আমার মুখস্ত করা ফার্স্ট কবিতা।]
“ভালোবাসার স্মৃতিটুকু রাখিও যতনে
ভুলে গেলে ফেলে দিও গভীর কাননে”
***
বাকশালিরা নিজেরাই কামড়া-কামড়ি কইরা মরবে। অন্য কারো তাদেরকে ক্ষমতা থিকা সরানোর দরকার নাই না, অরা নিজেরাই লুটপাটের ভাগ-জোক নিয়া মারামারি করতে করতে শেষ হবে। সব ডাকাতির শেষে যা হয়। অরা পলিটিক্যালি ইন-ক্যাপাবল হয়া উঠবে আরো, দিনে দিনে। মানে, পলিটিক্স করার কি দরকার! খালি “উন্নয়ন” (মানে, ডাকাতি) করলেই তো হয়!
এই কারণে আমাদের সবারই ফোকাস করা উচিত, ঠিক করা দরকার, নয়া-বাকশালের অবৈধ-সরকারের পতনের পরে কি কি জিনিস আমরা চাই না আর! মানে, মিনিমাম’টারে বেইজ করা দরকার! প্লেইন অ্যান্ড সিম্পল ৫-৭টা পয়েন্টে সবার এগ্রি করা দরকার। একটা কমন গ্রাউন্ড তৈরি করা দরকার যেইখানে প্রো-পিপল সব পলিটিক্যাল এবং সোশ্যাল সংগঠনগুলা একসাথে দাঁড়াইতে পারবে।
মানে, এই জায়গাটা তৈরি করতে পারলে সেইটা খালি সামনের দিকে আগায়া যাওয়ার ঘটনাই হবে না, একইসাথে নয়া বাকশালের পলিটিক্যাল এম্পটিনেসটারেও আরো স্পষ্ট করতে পারবে।
***
– হিস্ট্রি-রিডিং নিয়া কিছু প্রাইমারি কথা (১) –
হিস্ট্রি তো কখনোই কোন লিনিয়ার এবং সিঙ্গুলার ঘটনা না; মানে, এইটার পরে এইটা ঘটছে, বা এইটার কারণে এইটা ঘটছে – এইভাবে দেখার যে তরিকা, সেইটা দিয়া হিস্ট্রিরে দেখতে গেলে যে অনেককিছু মিস কইরা যাবো, এইটা মোটামুটি বুঝতে পারি এখন আমরা। এইটাও টের পাওয়ার কথা যে, হিস্ট্রিতে অনেক জিনিসই আন-ফিনিশড থাকে, অনেক জিনিস ফিরা ফিরা আসে, আবার একই ঘটনা পুরা উল্টা জায়গা থিকা ঘটতে থাকে।
কিন্তু তাই বইলা সবকিছু উল্টা-পাল্টা এবং হিস্ট্রিক্যাল ট্রুথ বইলা কিছু নাই – এই কথা ঠিক না। বরং হিস্ট্রি’তে কিছু জিনিস সবসময়ই ট্রুথ বইলা এপিয়ারড হয়।
তিনটা জিনিসের কথা আমি বলতে চাইতেছি:
১.
এক হইতেছে, হিস্ট্রির আলাপে বেইজগুলা যে চেইঞ্জ হয় – সেই জায়গাগুলারে খেয়াল করার দরকার। জিওগ্রাফিক্যালিই ধরেন, সিলেট, পাকিস্তান আমলের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশের পার্ট ছিল না, ঘটনাটা ছিল – বাংলা ও আসাম; এই আসাম থিকা সিলেট গণভোটে বাইর হয়া আসছে ১৯৪৭ সালে। তারপরে ধরেন, চিটাগাং-এ কিছুদিন আগে বা এখনো মেবি বাইরের (মানে, অন্য জেলার) লোকজনরে ‘বুইঙ্গা’ বলা হইতো; এখন ‘বাংলা’ শব্দের হিস্ট্রি ঘাঁটলে দেখবেন যে এইরকম কথা আছে যে, ‘বাংলা’ আসছে ‘বোঙ্গা’ শব্দ থিকা। মোঘলরা দখল করার আগ পর্যন্ত চিটাগাং অইভাবে ‘বাংলা’র পার্ট ছিল না। আবার, ১৯৪৭-এ জিন্নাহ এবং সরোয়ার্দি মোটামুটি একমত ছিলেন যে, কলকাতা ছাড়া ‘বাংলা’ কেমনে হয়! এখনো এই ভুল-ধারণা চালু আছে, অথচ যেইখানে ১৭৫০-এর আগে হিস্ট্রিতে কলকাতা বইলা কিছু খুঁইজাই পাইবেন না! অঙ্গ, বঙ্গ, কলিঙ্গ নামে যে কয়েকটা আলাদা আলাদা এনটিটি ছিল সেইটার ইন্ট্রিগ্রেটেড কোন বেইজ থাকার কথা না…
মানে, যেই জিওগ্রাফিক্যাল বেইজটারে আমরা কন্সটেন্ট ধরতেছি, সেইটা অনেকদিন পর্যন্ত একটা শেইপে থাকলেও, একটা সার্টেন টাইম পরে পরে চেইঞ্জ হয়। বা ধরেন দুনিয়ার হিস্ট্রিতে গ্রীসের কথা একটা সময় আইসা শেষ হয়া যায়, রোমে গিয়া শুরু লাগে, এরপরে পারস্যে। ইরান থাকলেও তুরান বইলা কিছু থাকে না আর।… আর খালি জিওগ্রাফিক্যাল সীমানাও না, ইন্সটিটিউশনাল ফর্মগুলাও চেইঞ্জ হয়। যেমন ধরেন, মোগল আমলে কি কোন পলিটিক্যাল পার্টি ছিল? 🙂 বা ইভেন, জমিদারিও পাকাপোক্ত হইছে আসলে ব্রিটিশ আমলে আইসাই, তা নাইলে বাংলার জমিদারি দিল্লী থিকা রিনিউ কইরা আনতে হইতো (এখন বাকশালি সরকার যেইটা করে)।…
আমি বলতে চাইতেছি, হিস্ট্রি মানে যেহেতু চেইঞ্জের ঘটনাগুলা, কোন একটা ফিক্সড বেইজের উপর ফোকাস করতে গেলে, সেইটা ইনহেরিয়েন্টলি কিছু জিনিসরে ওভারলুক কইরা যাওয়ার রাস্তা তৈয়ার করে। এবং যা কিছু টিইকা ছিল বা টিইকা আছে, তারে মহান বানানোর কাজে লাইগা পড়ে। এইটারে হিস্ট্রি-রিডিংয়ের গোলামি হিসাবেই আমাদের দেখতে পারা দরকার আসলে।…
২.
হিউম্যান হিস্ট্রি’তে দেখা গেছে যত বড় পাওয়ারফুল শাসন থাকুক, কোনটাই বেশিদিন টিইকা থাকতে পারে না, একটা সময়ে গিয়া কল্পাস করেই। কিন্তু তারপরও দেখবেন, একটা “সাম্রাজ্য” গইড়া তোলারই ঘটনাগুলা ঘটতে থাকে। পাওয়ারফুল হওয়াটারে সবসময় গ্লোরিফাই করা হয়।
এখন ফেইলওরের কারণও কম-বেশি আন্দাজ করতে পারি আমরা। যে, একটা বড় ‘সাম্রাজ্য’ গইড়া তুলতে হইলে সবসময় বড় একটা মিলিটারি-ফোর্স লাগে, এবং এরা আন-প্রডাক্টিভই না খালি, এদেরকে খাওয়াইতে পরাইতে হয় অন্য মানুশদের। কারণ এরা ‘সিকিওরিটি’ 🙂 দিতেছে, এবং দখল করতে পারতেছে নতুন নতুন জায়গা-জমি। তো, এই পাওয়ার যত বাড়তে থাকে, মিলিটারির নাম্বারটা যত বড় হইতে থাকে, সমাজে অন্য মানুশদের উপর ট্যাক্স/জুলুম/শোষণ না বাড়ায়া এইটারে টিকায়া রাখাটা সম্ভব হইতে পারে না। আর একটা সময়ে এইটার কল্পাস করা ছাড়া আর কোন রাস্তা থাকে না। এই কারণে ‘সাম্রাজ্য’ যত বড় হইতে থাকে, এইটা ‘পতন’-এর তত কাছাকাছি যাইতে থাকে।
এইরকমের ‘সাম্রাজ্য-চিন্তা’ যে বাজে-জিনিস (ইভেন সেইটা বাঙালির সাম্রাজ্য হইলেও), সেইটা আমরা জানি তারপরও একটা ‘সাম্রাজ্যের’ পতনের পরে আরেকটা সাম্র্যাজের দিকেই কেন আমরা যাইতে থাকি?
৩.
এইখানে অন্য অনেক কিছুর লগে আমাদের হিস্ট্রি-রিডিংয়েরও একটা কন্ট্রিবিউশন আছে বইলা আমি মনে করি।
এক নাম্বারে পয়েন্টে তো হাইলাইট করতে চাইলাম যে, আমরা ‘ফিক্সড’ একটা অবস্থা চাই, যেইটা মোটামুটি ইম্পসিবলই, সেকেন্ড হইতেছে ‘সংঘবদ্ধতা’রে সবচে বড় শক্তি মনে করি, যেইটা একটা পর্যায়ের পরে নিজেই একটা প্রবলেম হয়া উঠে। থার্ড হইতেছে, হিস্ট্রির কোন কিছুই ফিরায়া নিয়া আসা যায় না। বরং ফিউচারে আমরা কোন একটা অতীতের মতো যে হইতে চাই – এইটা মুশকিলের জিনিস একটা। এইটা পসিবল তো না-ই, এবং প্রবলেমেটিক একটা ঘটনাও। একটা অতীতের বেসিসের ফিউচার’রে প্রজেক্ট করার চাইতে ফিউচার’টারে কেমন বানাইতে চাই আমরা, সেই জায়গা থিকা অতীতরে দেখতে পারলে, এনকোয়ারি করতে পারলে, হিস্ট্রি-রিডিংটা করতে পারলে বেটার জিনিস হইতে পারার কথা।
সেপ্টেম্বর ২৭, ২০২২
ইন্টেলেকচুয়াল চিন্তার যে পলিটিক্যাল পাওয়ার আছে, এইটা আমি ফার্স্ট এক্সপেরিয়েন্স করি ২০১৩ সালে শাহবাগের ঘটনাতে। তখন বাংলাদেশের লেখক ও বুদ্ধিজীবী সমাজের লগে এক ধরণের ভার্চুয়াল যোগাযোগ আমার ছিল। (এখন সেই এনগেইজমেন্ট থিকা কিছুটা বাইর হইতে পারছি বইলা আমি মনে করি।) উনাদের লগে ‘তর্ক’ করার বা করতে চাওয়ার একটা ঘটনা ছিল; যেইটা এখন বুঝতে পারি যে, এতোটা জরুরি কোন ঘটনা না।
তো, শাহবাগে যখন জাহানারা ইমামের মূর্তি/ভাস্কর্য বানানোর কথা উঠলো, তখন কইছিলাম যে, এইটা বাজে-জিনিস হবে; একটা ভাস্কর্য বানানো, কাউরে হিরো বানানোটা কোন কাজের জিনিস হইতে পারে না। বাংলাদেশে যে কোন পলিটিক্যাল ঘটনায় এইটা ঘটে যে, একজন হিরো আবিষ্কার করার ভিতর দিয়া এইটা শেষ হয়, এবং যেই ইস্যু নিয়া আলাপ উঠছিল, এর কোন ফয়সালা হইতে পারে না, বা তার কোন বদল হয় না।…
আমার ধারণা, আমার এই কথাটারে খেয়াল করছিলেন কেউ কেউ, একটা “বির্তক” শুরু হয়া যাওয়ার ফলে এই ভাস্কর্য বানানোর আলাপ আর বেশি দূর আগাইতে পারে নাই। অবভিয়াসলি, আরো অনেক ঘটনাই এইখানে থাকতে পারে। আমি জাস্ট ইন্টেলেকচুয়াল ইন্টারভেনশনের জায়গাটারে হাইলাইট করতে চাইতেছি। যে, এর দরকার আছে।
সেকেন্ড জিনিস হইতেছে, শাহবাগের ঘটনার সময়, ২০১৩ সালের ৫ই মে থিকা ২২-২৩ মে পর্যন্ত, আমি ছোট ছোট তিনটা নোটস লেখছিলাম, ফেসবুকে। (যেইটা আমার মিডিয়া ও পলিটিক্স বইয়েও রাখছি। অইগুলারে হিস্ট্রিক্যাল ট্রুথ হিসাবে না দেইখা, অই সময়টাতে কেমনে এনগেইজ হইতে চাইছি আমি, সেইটার ডকুমেন্টশেন হিসাবে দেখাটাই বেটার।… ৫-৭ দিন পরেই মনেহয়) বলছিলাম, শাহবাগে দুইটা ফেইজ এখন পর্যন্ত আমরা দেখছি। এক, লোকজন ইমোশনালি এনগেইজ হইছেন; সেকেন্ড হইতেছে, এখন অনেকে ইন্টেলেকচুয়ালি এনগেইজ হইতে চাইতেছেন, বা হওয়াটা দরকার।
খুব ছোট এবং তীব্র – এই জায়গাটা ছিল। তা নাইলে জিনিসটা স্প্রেড করতে পারতো না। শুরুতে মিডিয়ার বয়ানে কম-বেশি সবাই এনগেইজ হইছেন বা পাজলড হইছেন। মেবি পিয়াস করিম-ই এই জায়গাটারে পিক করছিলেন যে, ঘটনাগুলাতে ইমোশনালি এনগেইজ না হয়া ইন্টেলেকচুয়ালি বিচার করতে পারতে হবে আমাদেরকে।
জার্মানিতে নাৎসি পার্টি পিপলের ভোটেই ইলেক্টেড হইছিল, অনেক সাপোর্টারও ছিল; পরে এই নাম্বারটা ছোট হয়া আসছে। যে কোন টোটালেটেরিযান রিজিমে এইরকম হয়, একটা ইমোশনাল বেইজ থিকা সার্পোট’টা আসে। মানুশ হিসাবে এইরকম ভুলগুলা করাটা দোষের কিছু না, বরং যখন আপনি বুঝতে পারেন যে ভুল হইছিল, তখন বাইর হয়া আসতে পারাটা হইতেছে জরুরি জিনিস।
এখন, আপনি নিজে ইমোশনাল জায়গাটা থিকা বাইর হয়া আসতে প্রবলেম ফিল করবেন – খালি তা না, একটা আইডেন্টি-পলিটিক্সের জায়গা থিকা ছিল-ছাপ্পড় মাইরা দেয়ার টেনডেন্সিটাও একটা বড় অবস্টেকল।
ইমোশনালি এনগেইজ হওয়া যাবে না – এই কনক্লোশন টানতে গেলেও ভুল করবো আমরা। কিন্তু একটা কনশাসনেসের জায়গা তৈরি করতে পারতে হবে আমাদেরকে, বা অই চেষ্টা’টা করতে থাকতে হবে। তাইলে ইমোশনাল ভুলগুলা কম হবে আমাদের।
আর একটা ইন্টেলেকচুয়াল চিন্তার কাজ একটা গ্রুপ অফ অডিয়েন্সরে ইমোশনালি সেটিসফাই করা না, বা একটা পপুলার-থটের এগেনেস্টে একটা ‘তর্ক’ বা ক্যাওস তৈরি কর না; বরং কন্টিনিউয়াসলি একটা কনশাসনেস তৈরি করার ট্রাই করতে থাকা, যেইখান থিকা ভিজিবিলিটির জায়গাগুলারে বেটার লোকেট করতে পারবো আমরা। আর এইটা সবসময়ের একটা কাজ। এবং অনেকের। এই জিনিসটা হিরো-হওয়ার বা হিরো-বানানোর কোন প্রজেক্ট হইতে পারে না আর কি!
সেপ্টেম্বর ২৮, ২০২২
গত দুইদিন আগে সকালে নাশতা করতে বসছি যেই রেস্টুরেন্টে সেইখানে টিভি’তে খবর দেখাইতেছিল – খাওয়ার পরে ১০ মিনিট হাঁটলে হার্ট-এটাকের পসিবিলিটি কমে!
এইরকম “সাধারণ” একটা নিউজ দেইখা টং কইরা মেজাজ’টা গেলো খারাপ হয়া! শুওরের বাচ্চারা, বিটিভি বাতাবি-লেবুগুলা, ডিমের হালি যে ৫০ টাকা, চাইলের কেজি যে ৭৫ টাকা – এই কথা কইতে “ডরায়”! মানুশের তিনবেলা খাইতে যে কষ্ট – এইটা নিয়া কথা কইতে পারে না! যে এই নিউজ লেখছে আর পড়তেছে, দুইটারেই ধইরা ১০ মিনিট থাপড়ানো দরকার!
এরা নিউজের একটা ফ্যাক্টরি বানাইছে, যেইখান থিকা খালি “ইন্টারেস্টিং” সব জিনিস জানাইতে চায়! এইভাবে অরা খালি অ-দরকারি আর বিরক্তিকরই হয়া উঠে না, এমন একটা প্রপাগান্ডা-মেশিনের কাজ করতে থাকে যারা অনেক কিছু জানায় না, বরং কিছু জিনিস জানতে দিতে চায় না, কিছু জিনিস নিয়া কথা বলতে দিতে চায় না।
সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২
বাকশালি-ফেমিনিজমই যে একমাত্র ফেমিনিজম না – এই জিনিসটা বাংলাদেশের ফেমিনিস্টরা উনাদের কাজকাম দিয়া এস্টাবলিশ করতে পারেন নাই। যেইরকম বাংলাদেশের লিবারালরা বাকশালি না হইয়া, ‘বাঙালি’ না হইয়া লিবারাল-আধুনিক-প্রগতিশীল-রুচিশীল-হাবিজাবি হইতে পারেন না, তারই একটা যমজ ঘটনা এইটা।
জাহাঙ্গীরনগরের এন্টি-রেইপ মুভমেন্টও যতোটা প্যার্টিয়ার্কির জায়গাটারে দুশমন বানাইতে পারছে (অবশ্যই ভালো হইছে জিনিসটা), ছাত্রলীগরে ততটাই ছাড় দিছে। এমনকি আমার ধারণা, ভাই বানায়া নিছিলো! যে, একলা মানিক-ই রেপিস্ট, ছাত্রলীগের লোক না হইলেও যেন সে এই কাজ করতে পারতো! আসলে কি পারতো? ইভেন ভাবতে কি পারতো, ছাত্রলীগের ব্যাক-আপের জায়গাটা ছাড়া?
আরেকটা টেনডেন্সি হইতেছে, ভিক্টিমরে হাইলাইট করা। আমরা সবাই ভিক্টিম! 🙂 তো, এইটা লং-টার্মে একটা ভিক্টিমহুড প্লে করার দিকেই নিয়া যায় না, ক্রিমিনালরেও ছাড় দেয়ার, খেয়াল না করার রাস্তাগুলারেও “মহান” বানায়া তোলার কাজটা করে।
ইডেনের ঘটনায় একজন “বড় ভাই” বা “বড় নেতার” নামও আমরা জানতে পারি নাই! আওয়াজও নাই কোন এই জায়গাটা নিয়া। জানাটা যে দরকার এই আলাপটাও কম-বেশি মিসিং।
উল্টা সুলতানা কামালদেরকে লেলায়া দেয়া হইতেছে, যারা বাকশালি-জুলুমরে “রাজনৈতিক সংস্কৃতি”র নাম দিয়া অস্পষ্ট কইরা তোলার কাজটা করবে। আমার ধারণা, বাকশালি-ফেমিনিসটরা, সো-কল্ড লিবারালরাও ভোকাল হইবেন, এইরকম অস্পষ্টতার একটা ন্যারেটিভের ভিতর দিয়া।
আমি বলতে চাইতেছি, ভিক্টিমরে “সমবেদনা” জানাইতে গিয়া যখন ফোকাস-পয়েন্ট কইরা তোলা হয়, তখন সেই কাজটা ক্রিমিনালদের পক্ষেই যায়। আর বাম-বাকশালিরা প্যাটিয়ার্কির কনটেক্সটে অইসব ক্রিমিনালদেরই ভায়রা-ভাই।
আর এই অবস্থা চেইঞ্জ করতে হইলে খালি ভোকাল হইলেই হবে না, আইডিওলজিক্যাল বেইজ এবং পলিটিক্যাল পজিশনটারে চেইঞ্জ না করতে পারলে, বিরক্তিকর ফাঁপা-বুলিই হয়া থাকবে কথাগুলা। আল্টিমেটলি হইতেছে তো অইটাই।…
***
এম্বার হার্ড আর জনি ডেপ ট্রায়ালের সময় এই জিনিসটা চোখে পড়ছিল; মেবি এম্বার হার্ডের পক্ষের লোকজনের দিক থিকা একটা পাবলিসিটিই ছিল যে, সাইন্টিফিকেলি দুনিয়ার সবচে পারফেক্ট চেহারা হইতেছে এম্বার হার্ডের।
তো, আমার পয়েন্ট’টা ছিল “দুনিয়ার সবচে” – এই দাবিটা নিয়া; যেন পুরা দুনিয়া দেইখা ফেলা হইছে! ইউরোপ-আম্রিকানরা এইটা খুব করে! দুনিয়ার সেরা সিনেমা, দুনিয়ার সেরা মিউজিক, দুনিয়ার সেরা আরটিস্টট! মানে, ইউরোপ-আম্রিকাই তো হইতেছে পুরা দুনিয়া, তাই না! 🙂
এখন দুনিয়ার সব মেয়ের চেহারা তো অরা দেখে নাই! সেইটা তো পসিবলও না! কইতে পারতো, আমাদের দেখা বা ২ মিলিয়ন চেহারা যাচাই কইরা দেখছি আমরা; কিন্তু না, যদি এইটা কইতে হয়, তাইলে তো সেনসেশনাল হবে না ব্যাপারটা!
মানে, এইটা মিছা-কথা কওয়ার ঘটনা না এতোটা, বরং যে কোন কথারে সেনসেশনাল কইরা তোলার একটা প্রাকটিস, যেইটা ইন ইটস কোর মিছা-কথা না হইয়া পারে-ই না!
মুশকিল হইতেছে, এক বোকচোদামিটা ছড়াইতেছে এখন। এইটা সেরা গান, এইটা সেরা সিনেমা, সেরা উপন্যাস, এইরকম কইরা বলার কনফিডেন্সটা একটা টেনডেন্সি হয়া উঠতেছে; যে, এর চে কম কইরা কইলে যেন প্রেইজ করা হইতেছে না!
উল্টা’টাও আছে, যে কিছুই হয় নাই এইটা! আউটরাইট বাতিল কইরা দিতে হবে! এখন আপনি-আমি রায় তো দিতেই পারি, টেস্টের কথা তো কইতেই পারি; কিন্তু এইখানে একটা কনফিডেন্স শো না কইরা যে কিছু কওয়া যাইতেছে না, অই অবস্টেকলের কথাটা আমি বলতে চাইতেছি।
মানে, কনফিডেন্স শো করা যাবে না – এইটা আমার কথা না, বরং কনফিডেন্সটাই যখন একমাত্র সেলিং পয়েন্ট তখন সেইটা ঝামেলার জিনিসই একটা। একটা ডিসট্রাকশনের ঘটনা। শয়তানির ইচ্ছাটা মেইন, এই জায়গাটায়।
Leave a Reply