পোশাক আর তার মিনিংগুলা নিয়া: কনভারসেশন উইথ ইব্রাকর ঝিল্লী

জুলাই মাসের ২৭ তারিখের পোশাক নিয়া একটা পোস্ট লেখছিলাম আমি ফেসবুকে, অইখানে ইব্রাকর ঝিল্লী কমেন্টে কিছু কথা বলতেছিলেন; তখন আমি প্রস্তাব করলাম যে, চলেন, না লেইখা, কথা বলি। এরপরে অগাস্টের ৭ তারিখে মনেহয় আমরা ফোনে কথা বললাম। এইটা পরে পাবলিক করবো আমরা – এইরকম একটা প্রিপারেশন নিয়া, কল রেকর্ড করছিলাম।

ইচ্ছা ছিল এর কিছু অংশ ট্রান্সক্রিপ্ট করার বা অডিওটারে একটু এডিট-টেডিট করার, কিন্তু টেকনিক্যাল কারণে কিছুই করা হইলো না।
এমনিতে ৩০ মিনিটের কথাতে তো তেমন কিছু বলা হয় না, বড়জোর ২/৩ পাতার একটা টেক্সট হইতে পারে, ঠিকমতো এক্সট্রাক্ট করলে। পুরা আলাপের অডিও আপলোড করার চাইতে অইটা করতে পারলে বেশি ভালো হইতো আসলে। এইটার একটা টেকনিক বাইর করতে হবে। আপাতত, ফার্স্ট এটেম্পট হিসাবে র জিনিসটাই থাকলো।

২.
খুব বেশি আলাপ তো আসলে আমরা করতে পারি নাই, আরো দুয়েকজন থাকলে হয়তো আরো কিছু ডাইমেশন পাওয়া যাইতো। আর আলাপটা খালি পোশাকের ব্যাপারেই আটকায়া থাকে নাই, আরো কয়েকটা জায়গাতেও ছড়াইতে পারছে।
তো, এইরকম আলাপ করতে চাই আমরা। দেখা যাক, কদ্দূর কি হয়!

৩.
আলাপ’টা শোনার জন্য হেডফোন ইউজ করেন প্লিজ।

…………

পোস্ট (২৭.০৭.২১):

– পোশাকের মিনিং –

অফিসে স্যুট-টাই পরাটা তো লিখিত নিয়মই ছিল, করোনা আসার আগে। পরে এই বিধি-নিষেধ অনেক আলগা করা হইলো। অনেকে তো প্যান্টের বেল্ট, হাতঘড়ি পরাও বাদ দিছেন।… তো, অফিসে একটা জ্যাকেট (কোট) পইড়া ছিল; কিছুদিন আগে অইটা গায়ে দিয়া নামার সময় খেয়াল করলাম ব্যাপারটা।

অফিসের নিচের সিকিউরিটি গার্ডরা একটু অস্বস্তি নিয়া সালাম/স্যালুট দিতেছিল। আমারও অস্বস্তি হইলো। কারণ আমি তো অইরকম বড় স্যার না। কোট পরছি দেইখাই সালাম দেয়া লাগবে!

পরে টের পাইলাম, এইটা আসলে উনাদের পারসোনাল চয়েসের ঘটনা না, অফিসিয়াল নিয়ম। অফিসে তো হাজার হাজার এমপ্লয়ি। এর মধ্যে দাড়িওলা, বয়স্ক যারা উনাদেরকে সালাম দেন। আর যারা কোট পিইন্দা ঢুকেন, বাইর হন, তাদেরকে সালাম দেন। এইটা অফিসিয়াল কোন ডিরেকশনই হওয়ার কথা।

ব্যাপারটা এইরকম না যে, “পোশাকের মূল্য” উনারা দেন, বরং পোশাকের একটা মিনিং আছে সোসাইটিতে; আপনি থ্রি-কোয়ার্টার পিইন্দা
সুপারস্টোরে গেছেন মানে তো আপনি ড্যামকেয়ার ব্যাপারটা শো করতে চান, সমাজ-বিপ্লবী না হইলেও; প্লাস্টিকের স্যান্ডেল পিইন্দাও ভার্সিটির ক্লাসে লেকচার দিতে যাওয়াটা খালি একটা “পারসোনাল চয়েস”-ই না, একটা “সোশ্যাল মিনিং” প্রডিউস করতে চাওয়ার ঘটনাও।

মানে, ব্যাপারটা এইরকম না যে, “পোশাকের মূল্য” আছে বা নাই, বরং পোশাকের মিনিং সবসময়ই ছিল, থাকবেও।

কমেন্টস:

ইব্রাকর: মিনিংগুলি চেইঞ্জও হয়। যদি মিনিংগুলি চাইপা বসতে চায় চেইঞ্জ করতে হয়। আজকে বিবিসিতে দেখলাম ইন্ডিয়ায় মাইয়া জিন্সের প্যান্ট পরছে দেইখা ফ্যামিলি খুন করছে মাইয়ারে। গতকালকে নরওয়ের মাইয়াদের হ্যান্ডবল টিমরে ফাইন করছে জার্সিতে বিকিনি বটম রাখেনাই দেইখা। টিমও নাছোড় তারা বিকিনি বটম পরবে না।
পোশাকের মিনিং তো আছেই। মানুষের পক্ষে এবসোল্যুটলি মিনিংলেস কিছু করা তো মুশকিল।

ইমরুল: হ্যাঁ, না, মিনিং তো চেইঞ্জ হয়, করাটা কঠিন হইলেও, এই চেষ্টাটা পোশাকের ভিতর দিয়া থাকেই। বাংলাদেশে যে শাড়ির অ্যাড’টা ছিল আড়ংয়ের, যে, শাড়ি ট্রাডিশনাল পোশাক না, কনটেমপরারিও হইতে পারে!
আগের দিনে (১৯৬০/৭০-এও) যেমন ফতুয়া-পাঞ্জাবি ছিল ফরমাল পোশাক, এখন হইতেছে ক্যাজুয়াল। আবার অনেক কর্পোরেট অফিসে স্যুট-টাই মানে স্লেভারির পোশাক, স্মার্ট-ক্যাজুয়াল হইতেছে নিয়ম। এইরকম কন্সটেন্ট কোন মিনিংও আসলে নাই, বরং সবকিছু মিলায়া একটা স্ট্রং আইডেন্টিটির ঘটনাও হয়া উঠে অনেকসময়।…

ইব্রাকর: আপনের পয়েন্টটা আমি ধরতে পারছি। তবু আমি আলাদা কইরা মেনশন করলাম কারণ, পোশাক টোশাক নিয়া কথা কইলে লোকজন মিনিং এর একটা ডর দেখায় খেয়াল কইরেন। 🙂

ইমরুল: হুমম, একটু একটু কইরা আলাপ করাটা তো আসলে রিস্কিও। এইখানে আমার কনসার্নটা হইতেছে, একটা ফিক্সড মিনিং বা সোশ্যাল মিনিংয়ের যেই জায়গাটা আছে সেইটারে ফ্লেক্সিবল রাখতে পারলে বেটার, একটা “মিনিংলেস” জায়গা এচিভ করার চাইতে। মানে, আরো অনেক আলাপ তো আসলে আছেই।

ইব্রাকর: আর ঘটনা হইলো এই সকল রিজিডিটির ফলে যে জবরদস্তি সেইটা মূলত মাইয়াদের উপরই পড়ে। পোলাদের ওপরও পড়ে। কিন্তু পোলারাই মূলত কোডটা সেটও করে।

ইমরুল: হুমম… এইটা নিয়া এতো আলাপ আছে আসলে, চলেন, একদিন কথা বলি 🙂

ইব্রাকর: মিনিংলেস তো করা পসিবল না আসলে। সোসাইটিতে কোন কিছু শো কেস করার সাথে সাথে সেইটা মিনিং জেনারেট করতে থাকবে। আছি বস! কথা কওয়ার জন্য। 🙂

২০১৭

পাওয়ার আর পোশাক নিয়া লিখতে চাইছিলাম একবার। হয় নাই… বলাগুলি সবসময় ইনকমপ্লিটই থাকে। ড্রেস-কোড বইলা একটা ব্যাপার সবসময়ই আছে, ইভেন না থাকলেও। ধরেন, বিচ-পার্টিতে আপনে স্যুট-কোট পইরা যাইতে পারেন না। বা অফিসে টি-শার্ট পইরা আসতে দিলে বেতন ৫/৭ হাজার টাকা কম দিলেও তো চলে।… এইরকম ঘটনাগুলি আছে।
ব্যাপারটা যখন এইরকম যে, ড্রেস-কোড দিয়া আপনি পাওয়ার শো করতেছেন, তখন একইসাথে ড্রেস-কোড না মাইনা আপনি রিভোল্টও করতে পারতেছেন। এইরকম একটা জায়গাতে আইসা পোশাক জিনিসটা পাওয়ার’রে রিপ্রেজেন্টই করতেছে না, ইট বিকামস দ্য পাওয়ার। অথচ ঘটনা এইরকমের না কখনোই। এইটা অ্যাপিয়েরেন্স; মাস্ক, রিপ্রেজেন্টেশনের। পাওয়ারের একটা প্লে গ্রাউন্ড অবশ্যই, কিন্তু পোশাকের কাজটা ‘লজ্জা-শরম’ আটকায়া রাখা না যে, কেউ তার শরীর ঠিকমতো ঢাকতেছে না! টাই-পরা’র মিনিংটা টাই-পরা না খালি, আপনি সিরিয়াস চাকরি করেন – সেইটাও না সবসময়, আপনি যে একটা কর্পোরেট পিগ, এইটাও। নেলসন ম্যান্ডেলা সারাজীবন কোট-টাই পরছেন, কিন্তু যেইদিন সারেন্ডার করতে যাবেন গর্ভমেন্টের কাছে সেইদিন উনার ট্রাইবের ট্রাডিশন্যাল ড্রেস পইরা গেছিলেন।
পোশাকের ঘটনা বরং সাইন ভ্যালু’তে। আপনি এনাফ ‘সুন্দর’ (বা মিনিংফুল) হইতে পারতেছেন কিনা, এসথেটিক্যালি।… কয়দিন আগে ফানি একটা ছবি দেখছি, রেফারি’রে গাইল দিছে গ্রিজমান ‘পুসি’ কইয়া আর বাংলায় সেইটারে ট্রান্সলেট করছে ‘বিড়াল’ বইলা! পুসি’রে পুসি বইলা বুঝতে পারে নাই – এইটা তো হইতেই পারে; কিন্তু পুসি’রে যে (মাগী না হোক, এটলিস্ট) ‘বেইট্টা’ বইলা ভাবতে পারে নাই, এই কারণেও সেইটা ঘটার কথা।

২০১৫

থ্রি-কোয়াটারের চাইতে লুঙ্গি পড়া কেন ‘খ্যাত’ (খেত? ক্ষেত? – দেখেন, জমি-জমা, চাষবাস, বাজে জিনিসই, ইরোটিক বইলাই? 😛 ) একটা জিনিস David Graeber-এর এই লেখার কথাগুলি মাইনা নিলে একটু বুঝা যাইতে পারে। ক্ষমতা হইলো স্টিফ একটা জিনিস, আটকানো পোশাক দিয়া রিজপ্রেজেন্টেট হয়, আর তাই পোলাদের পোশাকের ধরণ এইরকমের; আর মাইয়াদের ড্রেস হইলো চাইলেই রিভিল করা যায়, এইরকমের [একটা বাজে ঘটনার কথা মনে হইলো, শোনা ঘটনা, কলেজের এক মাস্তান এক মাইয়ার কামিজ উঠাইয়া কইলো, পায়জামা’র ছোট ন্যাড় কোনটা; মানে একটা ফিতা ধইরা একটা টান দিলেই তার ড্রেসটা নাই হইয়া যাইবো, এইরকমের হালকা একটা জিনিস; এই কারণে পোলারা পায়জামা পড়লেও হাসতে পারি আমার একটু] … তো, এই রুচি’তে যদি আপনি সাবস্ক্রাইব করেন, পোলা হইয়া লুঙ্গি আপনি কেমনে পড়বেন?

তারপরও পড়া যায় যদি আপনি পুরান রুচি’র কনজ্যুমার হন (এইখানে পোস্ট-কলোনিয়াল কিছু আসপেক্টও থাকতে পারে, যার ফলে রিনিউবেল হইতে পারে); সেইখানে ‘দেখাইয়া দিতে পারা’টা’ একটা বেটাগিরি’র কাম। ডিপজলের গানগুলিতে এইটা পাইবেন।… সিচুয়েশন যা-ই হোক, আমি আমার মতো অ্যাক্ট করতে পারি তো! তো, ব্যাপারটা খালি আটকাইয়া রাখা বা খুইলা ফেলা না, লজ্জা-শরমেরও কিছু ব্যাপার। যদি লজ্জা-শরম এনাফ থাকে তাইলে তো আপনি মরদ পোলা হইতে পারবেন না, বেইট্টা পোলা তখন।
বা ধরেন, লুঙ্গি পড়লেনই, মানে, পোস্ট কলোনিয়ালিস্ট এজেন্ডা থিকা; নিচে একটা হাফ-প্যান্ট বা শর্টস পইড়া নিলেন আর কি।
———————
What Foucault was really talking about were two different modes of exercising power that always exist, in any society… Indeed, the most powerful way to represent power has always been to refuse to represent it. That’s why God or spirits in so many traditions cannot be shown in images; it’s also why the way to show that something is truly powerful is to hide it, to render it invisible, ineffable, unknowable, utterly featureless and abstract.

If this formula is true, the generic quality of formal male clothing… These uniforms define powerful men as active, productive, and potent, and at the same time define them as glyphs of power—disembodied abstractions. Women’s formal attire, with its flounces and fripperies, sequins and whatnots, defines its wearer as something that you look at, as a passive object, but at the same time makes her bodily, specific, and even unique. …John Berger’s famous analysis of European oil painting, Ways of Seeing, noticed that the social presence of a man in such quintessentially bourgeois settings always turned on what he was assumed to be able to do (the “promise of power” he embodied), while that of a woman turned on her appearance, which was taken to indicate how she has treated herself—and therefore what it is acceptable to do to her. Robert Graves summed it up even more precisely; in the world those oil paintings represent, “Man Does; Woman Is.” (Only it’s not clear that Graves meant this as a criticism!)

[Dickheads (thebaffler.com) ]

Leave a Reply