শাহবাগ ২

 

শাহবাগ আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়া গেছে।

এইটা ছিল সর্বপ্রথম একটা স্পার্কিং। একটা রিয়েল স্পেসরে ভার্চুয়াল কইরা তোলা। সেইটা সম্ভব করা গেছে। এখন সবাই এই ভার্চুয়ালের অংশ হয়া উঠতে চাইতেছে। আমরাই শাহবাগ। আমরা গড়ে তুলতেছি আমাদের নিজস্ব শাহবাগ। আমাদের আংশকা আর আশাবাদ দিয়া। এক একটা শাহবাগ জন্ম নিতেছে এখন আমাদের মনে। আমাদের ঘরে, আমাদের শহরে, আমাদের কম্পিউটারে, আমাদের শব্দের ভিতরে। আধা সংশয়ে, আধা ইন্টেলেকচুয়ালিজমে সে সইরা সইরা যাইতে চাইতেছে! ছিপ দিয়া ধরার চেষ্টা অবশ্য করতেছে, অনেকে।  [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

এই প্রথম বাংলাদেশের ডমিনেন্ট প্রিণ্ট মিডিয়া এবং টিভি-সাংবাদিকতারে ডিঙাইয়া ইন্টারনেট সামনে চইলা আসছে। যদিও ব্লগ আর ফেইসবুকের কথাই বলা হইতেছে। কিন্তু ফর্ম হিসাবে এইটা ব্লগ অ্যাক্টিভিটি আর ফেসবুকিং এর ভিতরে নাই। এইটা একটা কমপ্লিট ভার্চুয়ালিটি যা মিডিয়ার রিয়ালিটিরে হারাইয়া দিছে। ২৪ ঘণ্টা শাহবাগ মোড় কাভার কইরাও কোন ট্রেস পাওয়া যাইতেছে না, কোথায় এইটা সংগঠিত করতেছে নিজেদেরকে? যারা যারা আছে, তারা কারা? উগ্র জাতীয়তাবাদী, উদার বামপন্থী, উদভ্রান্ত দর্শক যারা মিডিয়ার রিয়ালিটি দেখতে দেখতে এর ভিতর ঢুকে গেছে?

এইটা একটা পর্যায় ছিল, শুরুর। শুরুর ধাক্কা কাটার পর বিহ্বলতা কাটাইয়া বলা শুরু হইছিলো, শাহবাগ বইলা কিছু নাই। যা হয় আর কি রিয়ালিটি’র ধাক্কায়। আমি ত এইটা ভাবি নাই, এইটা কেন ঘটবে! তারপর ধরেন, শাহবাগ ত শাহবাগ না, এইটা তাহরির স্কয়ার এর মতোই প্রায়! এইটা ‘ফ্যাসিস্ট’ কারণ ফাঁসি চায়! এইটা ‘সেক্যুলার’ কারণ ইসলাম ধর্মরে শত্রু বানায়! তার উপরে শাহবাগ ত নাই!! মানুষ বইসা বইসা মুড়ি-চানাচুর খায়, পাশ দিয়া রিকশা-গাড়ি যায়। শাহবাগ কোথায়? মিডিয়া রিয়ালিটির ভিতর এর আসলেই কোন ব্যাখ্যা নাই।

এখন এই ব্যাখ্যাহীনতারে কাটাইতে হবে। তারে ডিফাইন করাটা দরকার অথবা কিভাবে সে নিজেরে ডিফাইন করবে? এইটারে ‘গণতান্ত্রিক’ হইতে হবে, ‘রাজনৈতিক’ হইতে হবে, ‘অ-রাজনৈতিক’ও হইতে হবে; ‘বিপ্লব’ করতে হবে, ‘প্রতিবিপ্লব’ ঠেকাইতে হবে; ‘আওয়ামী লীগ’ হইতে পারবে না, ‘ফ্যাসিস্ট’ হইতে পারবে না, ‘আপোষ’ করতে পারবে না; ‘মানবিক’ হইতে হবে, ‘প্রয়োজনে রাস্তা একটু ছাড়তে হবে’; ‘শপথ বাক্য পাঠ করানো যাবে কিন্তু এর আগে বইলা নিতে হবে’… এই সমস্ত ফর্দের ভিতর দিয়া একটু একটু স্কুইজ হইতে হইতে তোমারে ‘সম্ভাবনা’র ভিতর আসতে হবে অথবা চইলা যাইতে হবে তোমার নিজস্ব ভার্চুয়ালিটির ভিতর, যা কিছু একসময় ছিল মিডিয়ার অনুকম্পার অধীন!

শাহবাগ এগজিস্ট করে না, এই পর্যায় পার হয়া গেছে। শাহবাগের মেনিফেস্টো যারা লিখতে বসছেন, তারা এই ভয় নিয়াই লিখতেছেন যে, গর্ভমেন্ট এইটা বানাইয়া থাকতে পারে। যদি বানায়ই, এইটা সে বানাইয়া ফেলছে। এইটা আর হয়া-উঠা’র ভিতরে নাই। এইটা গর্ভমেন্ট হয় নাই, এইটা শাহবাগ হইছে। মে বি ক্রিয়েটেড বাই এনএসআই।

ঠিক আছে হইছে, কিন্তু এখন সে কোন ‘দাবি’ আদায় করবে? আন্দোলন কেমনে ফাঁসি দিবে রাষ্ট্র থাকতে, আইন থাকতে? এই ‘অসম্ভব’ দাবি সে কেমনে করে? আর যদি করে, কোন ‘বিপ্লব’ সফল করার ভিতর দিয়া সে করবে? কেমনে করবে? অথবা সে যে ‘অ-সফল’ হইবো, সেইটা কেমনে ঘটতে পারে? এইসবকিছু নিয়া যেই ‘আনসেটেলিং’ থাকাটা আছে, সেইটারেই বরং আরো ছড়াইয়া দেয়া যাইতে পারে। নতুন পথ যখন জাগে তখন প্রতিটা পায়ের ছাপই রাস্তাটারে তৈয়ার করে।

সবাই বলতে থাকুক। আসতে থাকুক নতুন নতুন শাহবাগ নিয়া। যারা শাহবাগ, যেইখানে শাহবাগ তারাই ডিসাইড করুক শাহবাগ কি এবং আবশ্যিকভাবেই এই ডিফাইনড হওয়ার প্রশ্নটারে বাতিল কইরা দিয়া। কারণ তা না হইলে, নতুন আইডেন্টি তৈরি হওয়ার সম্ভাবনাটাই তৈরি হয় না। জয়য়য়য়য়অঅয় বাংলা!

(সাউন্ডস গুড!)

 

ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৩।

 

Leave a Reply