অগ্রন্থিত কমলকুমার। কমলকুমার মজুমদার। অবভাস। কলকাতা। নভেম্বর, ২০০৮।
একটা বইয়ের সব লেখা সব পাঠকের জন্য না। এই কথাটা আমি বুঝতে পারলাম হঠাৎ (এক এক দেশে হঠাৎ আছে বইলা কমলকুমারও বলছেন, তিনি ঠিক ব্যক্তির পর্যায়ে না বললেও, এইভাবে ট্রান্সলেশন করা যাইতে পারে) ছোট্ট বইটা পড়তে গিয়া, যেইখানে তাঁর কবিতাও আছে; কবিতা, মানে এক ধরণের হয় নাই ঘটনা, যদিও গোলাপ হইছে; হয় নাই মানে খুবই ট্রাডিশ্যানাল আর কি… হিন্দু জীবনের ভার, নিশ্চিতির মতো তার ভাবনার ভিতর আটকাইয়া আছে, এতোটা নিশ্চয়তা কবিতা ত ঠিক অ্যাকোমোডেড করতে পারে না, আবার ঠিক চাপানো যে কাব্যিকতা সেইটারও বাইরের ব্যাপার, হয়তো তা-ই গদ্যই একটা উপায়… এইটাতে আসলে ‘হয় নাই’ নাই, বরং ‘হওয়া’টাই আছে, যারে নিতে পারা যাইতেছে না, অ্যাজ এ হোল যে টোটালিটিটা দাঁড়াইতেছে, তারে অস্বীকার না করতে পারলে লেখার আর কোন অর্থ-ই ত আর নাই।
যা-ই হোক, অনেকদিন পর পড়তে গিয়া কমলকুমার’রে দেখা গেলো বরং, কি তীক্ষ্ণ! তীরের মতো বাইর হয়া আসতেছে, খুবই উদ্দেশ্য-নির্ভর, মানে একুরেট – এইরকম খুব কমই দেখছি। উনি নিজেও বলছেন (এতোটাই সরল যে দুর্বোধ্য মনে হয়), মানে উনি খুবই বিশ্বাসী টাইপের লোক, বঙ্কিমের পরে। যেহেতু ওইটুকুই কিছুটা পড়া আছে আমার। গদ্যের যেইরকম একটা একঘেয়েমি আছে, সেইটা লাগে নাই, কারণ ঐ চিত্র-বৈচিত্র্য। কি কি যে আছে আর কি কি যে নাই!
অন্যদিকে, কারো লেখা পড়ার জন্য বা বোঝার জন্য মাইনর টেক্সটগুলা বেটার, কারণ ওইখানে প্রচলিত কাহিনির ধাঁধাঁটা কম বা নাই। সাহিত্যের কাহিনি মানে ত এক ধরণের প্রাপাগান্ডা, যেমন উনার গদ্য সর্ম্পকে যে ‘কাহিনি’টা চালু আছে যে উনি ফরাসী সিনট্যাক্সে লিখেন, যেইটা বিষ্ণু দে কইছিলেন আর কমলকুমার কইলেন কয় কি, আজাইরা এইসব। কিন্তু এইভাবে কি ‘প্রপাগান্ডা’ হ্যান্ডেল করা সম্ভব বইলা ভাবছিলেন তিনি? এক ধরণের প্রচলিত বুদ্ধিজীবীতার বাইরে উনি দাঁড়াইতে চান নাই বইলাই সন্দেহ হইতে পারে এখন, যখন মীর মোশারফ হোসেন’রে মোসারফ লিখেন তিনি, মানে ইন্ডিয়া যে একটা রাষ্ট্র এই বাস্তবতারে অস্বীকার করেন না কোনভাবেই এবং ভাবেন যে, বাঙলা কি কইরা হিন্দি, মারাঠী বা তেলেগু’র পাশাপাশি দাঁড়াইবো, কলকাতার বাঙলা ভাষার মূল টেনশনটা ত আসলে ওইখানেই।
এইটা ছাড়াও অনান্য অনেক কারণেই কমলকুমার নিয়া কথা বলা যায়, যাইতেই পারে। আরো হয়তো বলাও হইবো। আপাতত, এই দুইটা কথাই রাখলাম তাঁর বইয়ের নিচে।
———————–
ফেসবুক নোটের লিংক: http://bit.ly/1XXjeSZ
Leave a Reply