কবিতা নিয়া কিছু ধারণা আমার আছে; যেমন, কারো কবিতা সোসাইটিতে একসেপ্টেড হইবো কি হইবো না এইটা ঠিক হইতে মোটামুটি পঞ্চাশ বছরের মতো লাগে, কবিতাটা লিখার পরে। অনেক সময় একশ-দেড়শ বছরও লাগে, পাঁচশ বছরও লাগতে পারে। ইট ডিপেন্ডস। অনেকে অবশ্য পড়ার পরেই বুইঝা ফেলতে পারেন, সেইসব আপনিদের কথা আলাদা। অনেকে তো আমার নাম শুইনাই (বা শুনেন নাই বইলাও হয়তো) বইলা দিতে পারেন, এর কিছু হয় না। তো, পঞ্চাশ বছর ওয়েট করারও তেমন কিছু নাই। একটা অ্যাভারেজ টাইমলাইনের কথা ভাবলাম আর কি। অনেককিছু স্পষ্ট হইতে তো টাইম লাগে, অনেককিছু বাতিল হইতেও। তারপরও অনেকসময় যেইটা থাইকা যায়, সেইটা কবিতা না সবসময়। থাকতে থাকার মতো অনেককিছুই আছে দুনিয়ায়, সেইসবকিছু কবিতা কিনা এখনো শিওর না। তারপরও বাঁইচা থাকলে মরার লাইগা পঞ্চাশ বছর ওয়েট তো করাই যায়।
এই কবিতার বইয়ের কবিতাগুলির পাঁচ/ছয় বছর হইছে। আমার সবচে বেশি মার্কেট পাওয়া বই; মানে, আমার পরিচিত অনেকেই এই বইটার কথা বলছিলেন, সেই কথা-বার্তা থিকা ধারণা করলাম। বইটার অ্যান্ড্রয়েড ভার্সন বানানো হইছিল গত ফেব্রুয়ারিতে, সেইটা দেখলাম একশবারের বেশি ইন্সটল করা হইছে; একশ কপি বই যে সেল হয় নাই এইটা আমি মোটামুটি শিওর। তো, অ্যাপ তো খারাপ না। সেলিব্রেট করলাম ব্যাপারটা এই পোস্ট দিয়া। স্যাম্পল হিসাবে কবিতাও রাখলাম লগে, কয়েকটা।
অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপের লিংক: http://bit.ly/1Ra9Nzi
—————————————
স্বপ্নের ভিতর
অনেকদিন পর স্বপ্নে তোমারে দেখলাম। স্বপ্নে তুমি আরো সহজ আরো সাধারণ। প্রাত্যহিক জীবনে আমরা কথা-বার্তা বলতেছি আর তখনো আলাদা থাকি আমরা। তুমি আসছো আমাদের বাড়ি। স্বপ্নের ভিতর তোমার নাকে নাই কোন নাকফুল।
কী করবো এই নিয়া চিন্তিত তুমি আমি ক্রমাগত অপশন বলছি তুমি পলিটিকস এর কথা ভাবতে পারো কিংবা গ্রামে নারী-শিক্ষা প্রসারে প্রতিটা ইউনিয়নে একটা গার্লস-স্কুল করার সামাজিক আন্দোলন করো। কতকিছু করার মতো আছে আর তুমি ভাবতেছ শুধু। অথচ আমি বুঝি নাই এইটাই ত ভালো! কী কী করা যায় এই বিষয়ে যদি সারাদিন ধইরা কথা বলতে পারতাম আমরা!
বাস্তবে যখন তোমারে দেখছিলাম তখন তুমি স্বপ্নের ভিতর কোঁকড়ানো। স্বপ্নে তুমি যে কোন একটা বাস্তবতার মতো।
নাকফুল
দ্যুতি জ্বলে তোমার শ্বাসের
দিনে-দুপুরে এইটা কোন তারা
বেঁচে থাকার ভিতর অস্বীকারের ভিতর
তিরতির কাঁপতেছে
যাইবো না ধরা
ওগো তুমি সুদূরতমা এত্তো কাছে!
অথচ কিনা গ্রহ-নক্ষত্রের ফের
রাশিচক্রের ভিতর ডুবে থাকার মতোন
সম্বন্ধহীন
দেখা-ই যায় না প্রায়
বাদাম রংয়ের চূড়ায়
স্বচ্ছ একটা ফোঁটা পানির
মুছে দিও না!
জাউরা বাতাস
আমার কবরের উপর দিয়া বাতাস উইড়া যায়
ও বাতাসএই সন্ধ্যাবেলায়পড়িমড়ি কইরা
তুমি যাইতেছ কোথায়?’
‘মনা-মরার খাল পার হইয়া, মেথরপট্টিতে যাই।’
এট্টুক পর্যন্ত-ই হায়, বাতাসের আয়ু!
কবরে শুইয়া শুইয়া আমি ভাবি;
ভাবনার দিন নাই, রাত নাই
এই একটা বাতাস শুধু একটু কাঁপাইলো…
ক্যাসিওপিয়া
এইটা গ্রহেরই ফের, বুঝলা
একতলা দালানের ছাদে সন্ধ্যাবেলা
চিৎ হয়া শুইয়া দেখি
কোন সে তারা নিয়া আসলো তোমারে
আর আমারে, এই গ্রামে
বললো লিখতে, সিদ্ধ-ধানের গন্ধ
কুয়ারপাড়ে যুবতী বউয়ের কালোচুলে
জ্বীনের পায়ের চিহ্ন
অথবা একটা নৌকা, মসজিদের ঘাটে বাঁধা
মিনারে উঠলে দেখা যায়
ডিগচরে জমি নাই, খালি পানি আর পানি
উত্তরে বাদাঘাট
পশ্চিমে বিস্ময়কর দিনের শেষে
আবছা পথের ছায়া
জিজ্ঞাসিছে; তুমি কেন আইলা, এতদিন পরে?
কী আর বলবো আমি তারে!
এইসবকিছু আসলে গ্রহেরই ফের, বুঝলা
কুয়াকাটা
ওইপারে, আরো একা
অ্যান্টার্কটিকা;
দাঁড়াইয়া আছে…
গরিব-কবিতা
গরিবরা যখন আরো গরিব হইতেছিল
নিজেদের কোমলতার ভিতর যখন পুইড়া যাইতেছিল তাদের শরীর
তখন তুমি কী করছিলা?
তোমার হাঁটু কি কাঁপছিল?
মনে হইতেছিল কি, রিকশার চাকার নিচে
কেমনে সম্ভব ধুলা-বালির মতো
আটকাইয়া যাওয়া?
একটা স্ক্রু-এর প্যাঁচের ভিতর
ঘুুরতে ঘুরতে
না-সামনে, না-পিছনে
একটাই গতির ভিত্রে
কয়েকটা ভঙ্গিমার এইদিক ওইদিক হয়া
তুমি কি করছিলা তখন, বন্ধু?
টায়ার জ্বালাইছিলা শহরে, ডিজেলের দাম বাড়লো বইলা?
অর্ধদিবস হরতালে পিকেটিং কইরা আটকাইছিলা অফিস-রওনা হওয়া মানুষদের?
সারারাত সজাগ থাইক্কা সকালবেলার ঘুমে স্বপ্ন দেখতেছিলা
একটা গরিব-কবিতা লিখার?
তোমার গরিব বুয়া আইসা ঘর ঝাড়ু দেওয়ার সময়ও
লিখতেইছিলা, লিখতেইছিলা…
তোমার বন্ধুদের আরেকটা কবিতা!
গরু ও ঘোড়া
আমার গরু-মন
গো-ধূলির পিছন পিছন
ঘূর্ণি হয়া ছুটতেছে
ঘোড়ার মতোন
সকালবেলায়
কে আসে
কে যে আসে
আমারে ধরে রাখে
বলে, ‘পইড়া যাইও না তুমি
শক্ত কইরা ধইরা রাখো
দুইহাতে নৌকার গলুই,
বইসা থাকো’
কোন ঝড়-ঝাপটা নাই
আমি বসে বসে কাঁপি
কার সাথে কথা বলি?
যে আমারে নিয়া যাইতে চায়
তার জন্যই কি বইসা থাকি?
আমি চাই না যাইতে
আর এই যে বইসা থাকা – এরও নাই কোন মানে
কে যে আমার কাছে
হাত বাড়াইয়া রাখে
বলে, কথা
আমি সইরা আসতে চাই
আর সে বইসা থাকে, আমারই পাশে
আমরা দুইজন প্রায়ই
এইরকম হতভম্ব সকালবেলায়
বইসা থাকি, মুখামুখি
কি যে করি, কি যে করি…
ক্রসফায়ার
ভুল করে কেউ গুলি করে দিলো আমারে।
আমার শাদা শার্ট তো রক্তে ভিজে লাল
একটা গর্ত থেকে একটু একটু বের হয়ে যাচ্ছে
লাল আর লাল
একটা ধাক্কার পর সবকিছু আবার নরমাল
কে যে গুলি করলো আমারে?
হয়তো ভুল করেই
আর আমি ফেলে আসছি আমার লাশ
মেডিকেলের মর্গে;
শরীরের অপমান সহ্য করতে করতে হয়রান
ডাক্তার-বন্ধুরা;
ওই একই গর্তে ডুবে পড়বে আবার।
আমার আর কে আছে?
স্ত্রী-কন্যা-পরিবার
ওরা তো জানতেই পারবে না যে,
কেন এই ভুলটাই ঘটলো?
কেন-ই বা আমি-ই একমাত্র?
এই ঘটনা কেন বেছে নিলো আমারেই?
চিন্তা করতে করতে
কল্পনা করতে করতে
প্রভাবিলিটি খুঁজতে খুঁজতে
একটা সময় ওরা হারায়ে ফেলবে, আমারে!
কেন যে একটা গুলি
একটাই ভুল খুঁজে নিলো আর আমি
আমার হাত, আঙ্গুলগুলি অসার…
লাল রং জমে গিয়ে আরো জমাট, আরো গাঢ়…
একটাই তো গুলি ছিলো সেইটা
আর কতোটাই না আকস্মাৎ
যেন একটা রাস্তা পার হওয়ার মতো
হঠাৎ-ই পিছনে তাকিয়ে দেখা
দৃশ্যগুলি মুছে যাচ্ছে
দুপুরবেলা সূর্যাস্তের মতো…
একটা ভুল করলো কেউ
একটা গুলি বের হয়ে বন্দুকের নল থেকে
খুঁজে নিলো আমারে
আমার দাঁড়িয়ে-থাকা, আমার সমস্ত ভুলগুলি
মুছে গেলো, হঠাৎ
নৌকাডুবি
লঞ্চঘাটের কাছে এসেই ডুবে গেলো নৌকা আমাদের
একটা ষ্টীমার যাচ্ছিলো
আর তার বড় বড় ঢেউ উপড়ে ফেললো আমাদের
উল্টানো নৌকার ভিতর থেকে
আর কারো কোন চিন্তা-না-করে
প্রাণপন সাঁতারে
ভেসে ওঠি পানির ওপর;
তারপর কাঠের পাটাতনের ফাঁক দিয়া
ওঠে আসছি এই লঞ্চঘাটে
বাঁশের পুলটা পার হয়া
চায়ের দোকানের পাশে দাঁড়াইয়া মনে হইলো
আর কে কে আমার মতো, ওঠে আসছে?
নৌকাতে তো ছিল নীল,
যার দিকে আমি তাকাইতেই পারি নাই
একটু পরে ভেজা-কাপড়ে জড়োসড়ো
চলে যাচ্ছে শে, মাথা-নিচু করে;
ইচ্ছা করলো গিয়া বলি,
’দেখো, আমি আর তুমি; দুইজনেই বেঁচে আসছি!’
আর বেঁচে-থাকা এতোটাই অদ্ভুত যে আমি কোন কথা বলতে পারি না
ভেজা-কাপড়ে আরো আরো মানুষ আসছে
হঠাৎ-ই মনে হইলো, পলা কই গেলো?
সময় যায় আর আমি অস্থির হয়া উঠি
অপেক্ষা করতে করতে হয়রান
একসময় মনে হইলো, বাজারের ভিতর
রিকশা দিয়া যে দুইজন লোক যাইতেছে
তাদের একজন, পলা
এমনকি মনে হইলো যে, সে পিছন ফিরা হাসলোও
আমার দিকে তাকাইয়া
আমি ভাবি, এইটাই ভালো, সবাই যে বেঁচে আছে
যার-যার-মতো আসছে, চইলা যাচ্ছে
এইটাই বড় একটা নিশ্চিন্তি
নিজের বাঁচার পাশে আরো বড় একটা শান্তি!
একটা নৌকাডুরি’র পর এরচে’ ভালো আর কি হইতে পারে?
পোশাকের কান্না
যতক্ষণ আমি ছিলাম তোমার গায়ে, তুমি হাসছিলে
আর ছুড়ে ফেলে দেয়ার পর দেখি, আমি আর আমি নাই
কি যে আর্তনাদ জেগে ওঠে, সকালবেলায়!
সমস্তকিছুই অহেতুক, অর্থহীন মনে হতে থাকে
তোমার শরীর থেকে ঝরে পড়ে, বারান্দার দড়িতে ঝুলে থাকি,
দেখি একটা চড়ুই ডাকছে
পাশে ওঠছে নতুন দালান, অস্থি-মজ্জার মতো পেঁচানো কাঠগুলি তার গায়ে,
সেই ফাঁকগুলি থেকে তিনতলায় উঁকি দিচ্ছে একটা বানর…
ছোট্ট একটা মেয়ে-শিশু ঘুমাচ্ছে, বিছানায়
আরো আরো কতকিছু বলবার বাকি রয়ে গেলো…
এইভাবে শুরু হচ্ছে দিন, তোমারও…
কিভাবে আমিও মূর্ত হয়ে উঠতে পারি
তোমার চিন্তা ও সম্মতি ব্যতীত?
আমি ভাবছি, এই বিচ্ছিন্নতা হয়তো ভালো,
কিন্তু এই দমবন্ধ করা ভাবনায়, আমি আটকে যাচ্ছি
কোন এক দিন হয়তো
এইরকম একটা সকালবেলাতেই আমার মৃত্যু!
হঠাৎ করেই ঝোল-এর হলুদ দাগ দেখে মনে হবে
এরে তো আমার আর কোন দরকার নাই…
প্রতিবারই যখন তুমি খুলে ফেলে ছুড়ে দাও
আমি ভাবি, এইবারই হয়তো শেষ
আমার দমবন্ধ করা চিন্তার ভিতর আমি আটকে থাকি
সারাটাদিন
রোদ এসে পড়ে, একটু পরে
নির্মাণকাজ শুরু হবে, শ্রমিকেরা উঁকি দিবে
আমার শরীরে আটকে যাবে তাদের চোখ
ঘিঞ্জি দালানগুলি ঠেস দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে এ ওর গায়ে
একটা ভুমিকম্পের অপেক্ষায়
ঠেলে-ঠুলে, কোনরকম তাদেরও দিন পার হচ্ছে…
একটা কাকের পা কি শক্ত হয়ে চেপে বসছে আমার কাঁধে!
এই রোদ্রকরোজ্জ্বল দিনে, বারান্দার দড়িতে ঝুলে
এতসব কিছু দেখতে দেখতে
আমি ভেবে যাচ্ছি তোমার কথা:
প্রতিদিনের কান্নার মতো যা যা কিছু ঘটে যায়, তার নিরবতাগুলি
তোমার শরীরে ঘষে ঘষে আমি মুছে ফেলতে চাই
যেন কোনদিনই, কোনকিছুই ঘটে নাই!
তোমার কথাগুলি আমি অনুবাদ করে দিতে চাই
তোমার কথাগুলি আমি অনুবাদ করে দিতে চাই।
আমি লিখতে চাই আমার কবিতা তোমার কথাগুলি দিয়া
তোমার কথাগুলির ভিতর আমি বলতে চাই আমারই কথা
প্রতিধ্বনি যেন জেগে উঠে;
যেন মনে হয়; হায় হায়! এইখানে তো ২টা লোক
১টাই আত্মা!
তোমার আত্মার ভিতরে যে ফাঁকা
সেইখানে আমি বসে বসে
তোমার নিরবতা দেখতে চাই।
যখন কোন কথা নাই, নিরবতা নাই
শূণ্যতার মতো একটা কিছু ভার হয়া আছে
অস্তিত্বে তোমার;
যেইখানে কোন বস্তু নাই, অংশীদার নাই…
সেই ধূ ধূ প্রান্তরে অমীমাংসিত ধাঁধা হয়া আমি
আর্বিভূত হইতে চাই।
শারীরিক হইতে চাই আরো
সর্বগ্রাসী শ্যাওলার মতো তোমার বাকলে
লেপ্টে থাকতে চাই…
এই যে চাওয়া – তারই বিস্তার ঘটতে থাকে শুধু
একটা থেকে আরেকটাতে যাই
আটকে থাকি আবার, সারাদিনমান
ভাবি যে, আর কি কি আমি চাই
যেহেতু তুমি নিশ্চুপ, আমি ডানা মেলতে থাকি
সুদূরেরও পথে… যদি তোমার দেখা পাই!
আর যখন দেখা হয়েই যায়
আমি তাকিয়ে দেখি –
তোমার গালের ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া শিরা
লালচে হয়ে উঠছে আরো
বেড়ে যাচ্ছে রক্তপ্রবাহ আর
আমি প্রাণপণে ডুবে যাচ্ছি কল্পনার ভিতর
তোমার;
আমি ভাবি, এই যে কল্পনা
তারা তো সত্যিও হইতে পারে
তা না হইলে তারা কি কইরা আসে?
আমাদের মাঝখানে দূরত্বগুলি তৈরী করে?
হাসি হাসি সরে যাওয়া-মুর্হূতগুলি
ঝরে যাওয়ার আগেই, তুমি যেইভাবে
প্রমাণ করো যে, এইটা যন্ত্র না, কল্পনাও না
আকস্মাৎ বলো ওঠো, কথা!
আমি সেই কথাগুলি অনুবাদ করে দিতে চাই, আমার কবিতায়!
বিরহের গান
একটা নারিকেল পাতার মতোই দীর্ঘ ও করুণ – এই হাহাকার
বৃষ্টি শেষের বাতাসে দুলছে;
উড়ছে তোমার দরোজার পর্দাও, দূরে…
হিমশিম খাচ্ছে
কই যাবে? কই যাবে?
এই বিকাল গড়াচ্ছে সন্ধ্যার দিকে
ম্লান সূর্যের মলিন লাল আলো নিভে যাচ্ছে আরো
হঠাৎ একটা বিকট চিৎকারের মতো ফেটে গেলো রিকশার টায়ার
তারপর সবকিছু আবারো চুপচাপ
খেলা শেষে পড়ে আছে পিচ্ছিল কাদার মাঠ
কামরাঙ্গার গাছের নিচে পড়ে আছে ছোট ছোট পাতা
তারই পাশে, ভিজা মাটিতে গেঁথে যাচ্ছে পায়ের ছাপ,
চলাচলের চিহ্ন; কোনটা যে ছিল কার পা…
মনেই করা যাচ্ছে না
মনেই করা যাচ্ছে না, কখোন এই কাহিনির সূত্রপাত
কখোন এর মৃত্যু!
শুরুতেই দ্বিখন্ডিত এবং তারপর ক্রমশঃ সরু…
একটা নারিকেল পাতা দুলছে বাতাসে
আর কখনোই তা উপড়ে ফেলা যাবে না
স্মৃতি-মুখ, মুহূর্ত-কণার ভীড়ে
একটা মুখের ছায়া
জেগে উঠতে চাইলো আবার
আর কখনোই চাইবে না হয়তো আর
সূর্য ডুবে গেলো,
বললে, বিদায়!
সমস্ত দৃশ্য মুছে গেলো
দিনশেষের অন্ধকার
হেঁটে হেঁটে আসছে মৃদু রাত
গুটাইয়া নিচ্ছে সবাইরে শে
নিজের ভিতর
নারিকেল পাতাটা দুলেই চললো
শূন্য, চক্ষুষ্মান..
Leave a Reply