জুতা কাহিনি
ঘুরতে বাইর হইয়া দেখলাম
তোমার অন্য জুতা
যেই জুতা চুরি হইছিল
যেই জুতা ছিলো আগে, নাই তারা
অন্য কোন জুতা বইলা
পা’গুলিরেই মনে হইতেছে
চিনি না
ইল্যুশন
সব ইল্যুশন আসে
কামরাঙ্গার গাছের পাশে
শব্দ আর টাইমের পাল্লায়
ওজন দেয়া লাইফ
এখনো কই মাছের মতোন
লাফাইতেছে
একলা একটা চিল আকাশে
অনেকগুলি বকপাখি নদীর উপরে, ওড়তেছে
কয়েকটা কাক কাছাকাছি আইসা বসে
সন্ধ্যা আসতেছে ওদের করুণ চোখে
ইল্যুশনগুলি কামরাঙ্গা গাছের পাশে
নিভে আসে
বৃষ্টির অন্ধকারে
অ্যা টেল অফ তালা এন্ড চাবি
: আমি এমনই এক তালা, যার কোন চাবি নাই।
: আমি এমনই এক চাবি, যে কোন তালা’র কামে লাগে নাই।
একট পুরান কাঠের দরজা বাতাসে নিজেরে নাড়ায়া হাসতেছিল একটু, ওদের কথা শুইনাই।
শেষ ইচ্ছা
পেয়ারা গাছের ডালে বিকালের রোদ
উঠানে কাঁঠাল পাতা
দড়িতে ঝুলতেছে লুঙ্গি, গামছা, শার্ট, ফ্রক, সালোয়ার, পাজামা…
নুডুলসের বাটিতে চামচ, ফ্যাকাশে মরিচ,
ছোট্ট ডিমের টুকরা…
একটু একটু বাতাস
কে যেন আসতেছে, কে যেন আসতেছে না…
বারান্দার চেয়ারে বইসা দেখতে দেখতে
মইরা যাওয়া যাবে না?
আমার গরু রচনা
বান্ধা গরু যে আমার, বান্ধা রইলো না
এর লাইগা তারে আমি
বারে বারে বান্ধি
গরুর আমার, চোখে মায়া
না বান্ধলেও তো সে যাইবো না
তবু তারে বাইন্ধা রাখি
পাতলা দড়ি দিয়া
যদি সে হারায়া যায়
আমি বলবো বউ’রে তখন,
গরু হারাইলে মা গো, এইরকমই হয়
সেই গভীর বেদনা
আমার গরু কি খালি আমারে দিবে,
অন্য কাউরে না?
স্লিপ ওয়াকিং
দ্যাট ঘুম ওয়াজ নট ঘুম ইভেন।
চোখ বন্ধ কইরা ভাবতে থাকা – ড্রিম।
চোখ না খুইলাও দেখতেছি কোন ক্যামেরা ছবি তুলতেছে আমার
দ্যাট ড্রিম ওয়াজ নট ড্রিম ইভেন।
বাস্তবের হাত-পাওলা মানুষেরাই তো আছে;
আর একটা হাতি, রোডের মাঝখানে দাঁড়ায়া
চাঁদাবাজি করতেছে, তা নাইলে কলা কিনার টাকা
সে কই পাবে? ডুয়াল মিনিং ছাড়া বাস্তব কোন হয় নাকি?
“বলে শে খিন্ন হাত, ছেড়ে দিল ধীরে…”
সন্ধ্যার বৃষ্টি
সন্ধ্যায় নামে বৃষ্টি।
সন্ধ্যায় নামে তো বৃষ্টি…
সন্ধ্যায় নামতেই থাকে বৃষ্টি
সন্ধ্যায় কেন যে নামে বৃষ্টি
ঘর অন্ধকার, সিলিং ফ্যানের আওয়াজ
তিনটা চড়ুই অন্য পাশের বারান্দা দিয়া ঘরে ঢুকে
হাঁটতে হাঁটতে বসার ঘর পার হয়া
রান্নাঘরে যাইতেছে, দুইপাশ দেখতে দেখতে
গোয়েন্দাদের মতোন, ফাঁকা ঘরে
মনেহয় কোন ক্লু খুঁজতে আসছে
শুয়ে শুয়ে দেখি আরেক ঘর থেকে
পাশের বিল্ডিংগুলিতে জ্বলতেছে লাইট, ইলেকট্রিসির অহংকারে,
লোডশেডিং গেছে নিভে
এই যে একটু বৃষ্টি, সন্ধ্যার মলিন সুর
মুছে গেছে
টিভিতে শুরু হবে সন্ধ্যার খবর,
রাতের নাটক আর
কোন না কোন একটা গান আইসা নিয়া যাবে এই অনুচ্চারিত গানটারে…
সন্ধ্যায় বৃষ্টি তবু পাশের খালি প্লটটাতে
কতগুলি আগাছার সবুজ
দুলতে থাকা কোন টিলার স্মৃতি
বৃষ্টি শেষে ঝিঁ ঝিঁ পোকাদের গান,
সারারাত সা রা রা ত একটাই গান
এসি’র খোপগুলির ধারে
ওরা ওড়ে ওড়ে গাইতেছে
‘একটা রাত দেখো সন্ধ্যার কাছ থিকা এসে,
তোমারে দিয়া গেছে,
আমাদেরই কাছে’
যেন প্রচন্ড মাথা-ব্যথায় ওরা ঘুম পাড়ায়ে দিতেছে আমারে
আমি শুনতে শুনতে ঘুমের ভিতর রিপিট করতেছি ওদেরকে
একটা ঝিঁ ঝিঁ পোকা সন্ধ্যার বৃষ্টির শেষে
পিট পিট জ্বলতেছি,
নিজে নিজে…
এখন বর্ষাকাল
কে যে এসে তোমায় ধাক্কা দিয়া গেলো
কে যে দাঁড়া করাইলো রাস্তার পাশে
বাসের কাউন্টারে বইসা
আমার ফ্রেন্ড দেখে
তোমার স্যান্ডেলের নিচে কাদা, বৃষ্টির পানি
স্ট্রীটলাইটের আলো…
তারপর
একটা এসইউবি তাড়াতাড়ি যাইতে গিয়া
পানি ছিটাইলো আমাদের সবার শরীরে।
নাকি এইটাই চাইছিলো, তার ড্রাইভার?
এইটুক আনন্দ তার প্যাসেঞ্জাররে দিতে?
বলতে, ’দেখেন কত মানুষ আজকে রাস্তায়…’
বইলা হাসতো একটু, এমনিতেই
কে যে আসলো আর তারপর চইলা গেলো
মনে করতে করতে রাতে
আবার বৃষ্টি নামলো
হু ইজ দ্য বিস্ট?
ঘুম ভাঙলো দুঃস্বপ্নে
একটা মন্দিরের সামনে দাঁড়ায়া থাকতে থাকতেই
উধাও হয়া গেলাম আমি
অন্য তিনজনের সন্দেহের ভিতর থিকা
জাইগা দেখি, দরোজা খোলা
স্বপ্নের সন্দেহ ঢুকতেছে ঘরে আমার
কি করি আমি!
দরোজা বন্ধ করি, ধড়ফড় কইরা
বাইরে বৃষ্টির বাতাস
দুঃস্বপ্নে উধাও আমি’টা কাঁপতে থাকে
আমারই ভিতরে
ডিপ সি লেভেলে একটা স্রোতের লেয়ার থিকা আরেকটা স্রোতের ভিতরে
চলে আসছি আমি
আর সেই স্রোতের কাঁপুনি এখনো শরীরে আমার
কাঁপতে কাঁপতে ভাবতেছি, কেন যে ভাবতে গেছিলাম –
হু ইজ দ্য বিস্ট?
যেন একজনই আছে, একজনরেই হবে মুছে যাইতে
জেগে উঠতে, বৃষ্টির রাতে
একটা কাঁচের জানালার সাইলেন্সে আটকা পইড়া থাকতে…
চেকপোস্ট
একটা মেয়ে হেঁটে আসে ধীর পায়ে, বিকালের আলো’তে
শে হয়তো নারীবাদ বুঝে
প্রাকটিসিং মুসলমানও হইতে পারে,
হইতে পারে সামনের মাসেই কানাডা মাইগ্রেট করবে
এখন ধীরে ধীরে হাঁটতেছে রাস্তায়
কাঁধে ব্যাগ নাই কোন, থাকলে
ভাবা যাইতো বোমা নিয়া যাইতেছে কিনা কোন,
কতকিছুই তো কতকিছু
কতকিছু এমনি এমনি
এমনি এমনি বিকালের আলো
ধীরে ধীরে হাঁটতে থাকা একটা মেয়ে’রে জঙ্গী থিকা উদাসী বানায়া দিলো…
Leave a Reply