লাস্ট ক্যাকটাস

কবিতাগুলি সার্টেন একটা রিয়ালিটি’রে বা ফ্যাক্টগুলিরে পাশ কাটাইতে গিয়া লেখা হইছিলো মনেহয়। মানে, ফ্যাক্টগুলি যে এগজিস্ট করে না  – তা তো না। ইন ফ্যাক্ট, ফ্যাক্ট বইলা যা কিছু আছে তারে আর মানতে ইচ্ছা করে না তো সবসময়। এইরকম কিছু ছিলো মনেহয়। যার ফলে, ‘মিথ্যা’ একটা ব্যাপার খুবই ইমবেডেড হইয়া আছে, এইখানে। মিথ্যাগুলি তো আছেই। একটা ফোঁটা মিথ্যারে অনেক অনেক সত্যি দিয়াও কাভার করা যাইতেছে না – এইরকম হইতে পারে মনেহয়।

———————————————————

সাংগ্রি-লা ।। ওয়েটিং ।।  if if if ।।  ইনসমনিয়া ।। কনফিউশন ।।  দুপুরের পরে ।।  অনেক অনেক দিন ।। টাইম মেশিন ।। এরিয়েল ।। তোমার অন্য নাম ।। বসন্ত ।। ভঙ্গিমাগুলিই তো গান ।। ভোরের বাতাস ।। পানি আর জল ।। ‘চুপ থাকো’ ।। দুইটা পাথর ।। রিকশাওলা ।। ইন রিয়ালিটি ।। শাহেরজাদী ।। মেমোরি ।। কৃষ্ণচূড়া ।। তালগাছ ।। ফ্রি বার্ড ।। লাস্ট ক্যাকটাস ।। যে কোন কিছুই ।।

——————————————————
লেখার সময়: সেপ্টেম্বর, ২০১৬ – জুন, ২০১৭।
——————————————————-

সাংগ্রিলা

কতগুলি কাক
চড়ুই
সন্ধ্যার আকাশে

গাছে গাছে

একটা গাড়ির পিছনে আরেকটা গাড়িই আছে

হর্ণ দিতে দিতে পাগল হয়া যাবে সবাই
পাগল তবু হর্ণ-ই দিতেছে

সন্ধ্যার গ্রে আকাশে

কতগুলি কাক
আর
চড়ুই

উড়ে যাইতেছে

গাছে গাছে

একটা ব্রীজের গোড়ায়

মাঝখানে

কালো পানিগুলি ঝাপসা হয়া আসতেছে

জায়গাটা ধানমন্ডি বলে সুন্দরও লাগতেছে

নতুন মসজিদের মিনার

নতুন নতুন আলো

জাদুঘরের রোডে

হাঁটতে হাঁটতে
হাঁটতে হাঁটতে

একটা নিরবতার ভিতর দিয়া আরো একটা নিরবতার কাছেই তো যাইতে চাইতেছে…

 

ওয়েটিং

আমরা কি বসে থেকে থেকে বইসাই থাকবো না?

 

if if if

মনের বাঘ দেখাই আমি তোমারে।
বলি, মনে যে আছে সে বনে-ই আছে।

তুমি বললা, ভালোই তো ইমাজিনেশন আপনের।

 

ইনসমনিয়া

আলোর আওয়াজগুলি নিইভা যাওয়ার পরে
তোমারে দেখি আমি

কি যে একটা শূন্যতা ভাসে বাতাসে!
হাত নাড়ায়া নাড়ায়া বলো আমারে,
‘তুমি এখন যাও গা…’

একটা ঘুমের পাশে আরেকটা ঘুমের মতোন বইসা থাকি,

হোস-পাইপ দিয়া পানি ছিটানোর মতোন বৃষ্টির আওয়াজ শুনি

একটা সিগ্রেট ধরাইতে না ধরাইতেই শেষ হয়া যায়

হঠাৎ আলোর অন্ধকার আসে, নিভে আবার

‘যা কিছু দেখতে পাই আমরা, লাইফে এর অতিরিক্ত কিছু তো আর নাই’
আমি দেখি অন্ধকারে –

অন্ধ একটা হাতির শূঁড়
অনেক দূর থিকা আইসা
তুইলা নিয়া যায় আমারে

শোঁ শোঁ অন্ধকার বাতাসে
আমি ভাবি,
‘এইখানে সরোজিনী শুয়ে আছে…’

তার পিঠে রাতের আকাশের মতোন আলোগুলি তারার মতোন জ্বলে উঠতে পারে

‘দ্বিতীয় প্রকৃতি’ মনে করে যারা যারা এইটা ভাবতে পারে,
তাদের কথাও আমি ভাবি…

এক একটা অন্ধকার’রেও তো আলাদা আলাদা নামে ডাকা যায়,
একটা না-ঘুমের ভিতর থিকা একটা ঘুম’রে ডাকি,
‘ঘুম-পাখি, আমি ডাকিতাছি, তুমি ঘুমাইছো নাকি?’

 

কনফিউশন

মাথার ভিতরে একটা তুমি নিয়া
মইরা যাই যদি
তোমার ঘরের ভিতর

তখন পাশে শুইয়া থাকা তুমি
মাথার ভিতরের তুমি’রে
দেখবা না তো
আর!

 

দুপুরের পরে

আমাদের মিলগুলি কি আমাদেরকে বাঁচায়া রাখবে?
আর অ-মিলগুলি কি মাইরা ফেলবে?

আমাদের না-জানাগুলিরে কি জানি না বইলা ভুইলা থাকা যাবে?
আর মনে হবে শেষে, জানা তো যাইতোই…
কি আর এমন জানা অথবা
জানলাম বইলা কষ্ট কি কম হইলো আমাদের?

কোন এক দৃশ্যের ভিতর জড়োসড়ো বইসা থাকা
কোন এক না-জানা’রে কইলাম,
তোমারে আবিষ্কার করার পরে তোমারে কি ভাল্লাগবে আর?
জানি না…

শীতের বাতাসের মতোন একটা সময় থাইমা আসবে আমাদের এইসব বাইনারি

কোকিল ডাকবে, চা’এর দোকানের পাশের গাছের চিপায়

জানা আর অ-জানারে পাসপোর্ট অফিসে বসায়া রাইখা
আমরা হাঁইটা যাবো ইউজিসি’র ক্যান্টিনের খোঁজে…

অপরিচিত কুত্তাদের মতো তারা রাস্তায়
অন্য অনেক ইলিমেন্টের মতো
যাইতে যাইতে একটা সময় হারায়া যাবে

আমাদের মিল ও অমিলের জীবন নিয়া
আমরা ভাববো না আর
ভাববো, যেই দিন আছে সামনে, তারাও তো পার হয়াই যাবে…

 

অনেক অনেক দিন

অনেক অনেক দিন পরে মনে হবে অনেক অনেক দিন তোমারে দেখি না

অনেক অনেক অ-চেনা গলিতে গলিতে
সন্ধ্যাবেলায়
রিকশায় ঘুরতে ঘুরতে
হঠাৎ
চইলা আসবো মেইনরোডে

মনে হবে, আরে, একই তো সিন, একই তো ঘটনা

অনেক অনেক দিন পরে
রিকশা থিকা নাইমা মেইনরোডে আইসা আবার কোন গলিতেই ঢুইকা যাবো আমরা

অনেক অনেক দিনের পরে অনেক অনেক দিন’রে আউলাইয়া ফেলবো আমরা, বলবো
‘টাইম, আপনার টাইম তো ফুরাইছে, এখন আপনি যান গা!
আমাদের ইনফিনিটি আমরা পায়া গেছি,
এর চে বড় কোন ইনফিনিটি আমরা’র আর লাগবো না!’

অনেক অনেক দিন তখন কোন একদিন, যেন অবাক হয়া যাওয়া সবুজ সিএনজি অটোরিকশা,
আমাদের যাওয়া, না-যাওয়ার রাস্তার পাশে দাঁড়ায়া থাকবে, বেহুদা…

 

টাইম মেশিন

টাইমের বাইরে আইসা শুইয়া আছি আমরা, আরেকটা টাইম

টাইম তো ট্রাভেল করতেছে আমাদের শরীরে
আমি বলতেছি, দেখো, কোন টাইম তো নাই, আমরা আছি খালি আর আমরাই…

তুমি জিগাইলা হঠাৎ, বাজে কয়টা?
আমিও ভাবতেছিলাম তখন, টাইম তো আছেই
একটা টাইম না থাকুক, আরো একটা টাইম…
একটা ইনফিনিটি না থাকুক, অন্য কোন ইনফিনিটি

একটা বাঁইচা থাকারে মুছে দিতে চলে আসতেছে আরো আরো মেমোরি’র সাইন

সময়, পাল-তোলা পাটের নৌকা
ফেড হইতেছে দৃশ্যের বাইরের কোন ইঞ্জিনবোটের সাউন্ডে…

একটা আতাফল গাছের ছায়া ম্লান হইতেছে কামিনী’র ধারে

শীতের দিনের রইদ এতো অল্প
লাল দুইটা লেপের কাছে পৌঁছাইতে না পৌঁছাইতেই শেষ হয়া গেলো…

টাইমের বাইরে আইসা বইসা আছি আমরা দুইজন টাইম
দেখতেছি, আমাদেরই পাশ দিয়া ভেসে যাইতেছে, জড়ো হইতেছে আরো আরো টাইম…

 

এরিয়েল

যেন একটা পাগলা বাতাস শে, উল্টাইলো-পাল্টাইলো
ঘুইরা বেড়াইলো শরীরে আমার; কইলো,
‘থাকো! থাকো!’

 

তোমার অন্য নাম

কতো অপরিচিত ভাষায় আমি ডাকলাম তোমার নাম।
কতো শব্দের মিউজিকের ভিতর আমি আবার তোমারে হারায়া ফেললাম…

‘…কিন্তু এর কোন মিনিং তো নাই!’

– রাস্তায় অনেকগুলি গাড়ির হর্ণ একসাথে বাইজা উঠার মতোন
বইলা উঠলা তুমি তখন।

সন্ধ্যার বড় চাঁদ উঠলো আকাশে।
রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম…

আমাদের জানা আর বোঝার ভিতর আমরা
আমাদেরকে হারায়া ফেললাম।

 

বসন্ত

‘কুহু কুহু…’ বইলা একটা কোকিল ডাইকা উঠলো দুপুরবেলায়, বনানী’র রাস্তায়।
কুহু কইলো  তখন, ‘দেখো, কোকিল ডাকতেছে!’

গাছের পাতার ধুলাগুলি তখন হাসতে হাসতে পড়ে যাইতেছিল, বাতাসে…

 

ভঙ্গিমাগুলিই তো গান

ভঙ্গিমাগুলিই তো গান!

কি কি জানি কইয়া তোমারে আমি কি কি জানি বুঝাইতে চাইলাম
কি কি জানি কইতে কইতে আমারে আমি কি কি জানি না কইতে চাইলাম

একটা ফর্মের বাইরে আইসা আরেকটা ফর্মের ভিতরই দাঁড়াইলাম

জাইনা ফেলার মতো একট অন্ধকার অন্য মানুষদের মতোন আমরারে পইড়া ফেলতেছে

আমরা তো যাইতে চাইতেছি না কোথাও!

ফুটপাতে দাঁড়ায়া রইছি, শীতের বাতাসের তো এতো জোর নাই যে
উপড়াইয়া ফেলবে আমরা’রে ছোট দুইটা গাছের মতোন…

ঝড়-বাদলের দিন আসলে তখন দেখবো নে!

অথবা তার আগেই, আমরা যে দাঁড়ায়া ছিলাম
নিজেদের থাকাটারে নিতে পারতেছিলাম না আর আমরাই,
অনেক অনেক ব্যাঁকা-ত্যারা অনেককিছুই ভাবতেছিলাম,

ভাবতেছিলাম (যেন ভাবতে পারাটাই বাঁচায়া ফেলতে পারে আমরা’রে, এইরকম কইরা) যে,
ভঙ্গিমাগুলিই তো গান!

 

ভোরের বাতাস

পাইতে পাইতে হারায়া ফেলি তোমারে

হারাইতে হারাইতে ভাবি

তুমি যে ছিলা, সত্যিই তো মনেহয়;

পিউ কাঁহা ডাকতেছিলো ২/৩টা,
নাকি একটাই?…

আরেকটা সকালের আগে অনেকগুলি মসজিদের মাইক থিকা একটু পরে পরে আসতেছিলো আযান
আসসালাতো খায়রুম মিনান নাওম…

একটু ঘুম আর অনেকটুক না-ঘুমানোর ভিতর

আমরা ভাবতেছিলাম, ঘুমাবো…

নাপা আর ল্যাকজোটনিল

অনিদ্রা আর ব্যাকপেইন

মেহগনি গাছগুলি অনেক পাতা ঝরাইয়া দাঁড়ায়া ছিলো
তার উপরে কুয়াশা মেঘ

ভোরের

ঠান্ডা বাতাস, বসন্তের

‘ঘুমাবো, আমরা ঘুমাবো…’
জাইগা থাকতে থাকতেই বলতেছিলাম

আরেকটা সিগ্রেট, আরেকটা গাঞ্জার স্টিক…

আরেকবার আমাদের হাত, আমাদের ঠোঁট

আমাদের দাঁত, আমাদের জিব

আমাদের কোমর আর আমাদের ঠ্যাং

আমাদের পিঠ আর আমাদের পেট

আমাদের চোখ, আমাদের কথা

আমাদের ঘুমের কাছে নিয়া যাইতেছিলো…

ঘুমাইলেই তোমারে হারায়া ফেলি যদি

এই যে এখন দেখা যায়

যদি আর না দেখি!

-এইরকম ভাবনারা গিজগিজ করতে থাকে
মাথার ভিতরে

সকালের রোদ আসে জানালা দিয়া

বারান্দায় আইসা বসে দুপুর

পুরান পথ-ঘাটে ছড়াইতে থাকে বিকাল

সন্ধ্যার আলোগুলি ফুটতে থাকে বেড়িবাঁধের উপরে

একটা ভোরের বাতাসের কথা মনেহয় তখন

মনেহয় –
‘তোমার নরোম দিন, বসন্তের
আমি তো ছিলাম
সেইখানে…’

পাইতে পাইতে একটা না-পাওয়ারে
হারাইতে পারছিলাম তো
দুইজনে…

 

পানি আর জল

যেই লোকটা গাঞ্জার পুটলা’টা দিলো, চাপদাড়ি ছিলো তার
ডিলিংসটা এতো তাড়াতাড়ি শেষ হইলো যে
তার চোখ-মুখে কেমন একটা অবিশ্বাস চইলা আসছিলো
এই এতো দূর আসলো সে
আর এক মিনিটও লাগলো না পুরা ব্যাপারটা শেষ হইতে…

আল্লা ছাড়া পাপ-পূণ্য থাকার সেক্যুলার ভাবনাটা মনেহয় সে মানতেই পারতেছিলো না

মানা আর না-মানা’য়
কি যায় আসে!

রাস্তায় রিকশা, বাস, টেম্পু, কার চলতেছিলো তো…

সো রাস্তা পার হইলাম আমরা

সোজা গিয়া একটু
প্রথমে বামে, তারপর ডাইনে
তারপর বামে, তারপর ডাইনে
একটু দূরে গিয়া আবার বামে
তারপর ডাইনে গেলাম না আর
রিকশায়…

একটা পাতলা শিকের গেইট
পার হওয়ার পরে গ্যারেজ
তারপর কলাপসিবল গেইটের তালা খুললো
তারপর সিঁড়ি
তারপর দরজা…

একটা ঘর

আলো তো ছিলো

বাথরুমের ট্যাপ থিকা পানি পড়তেছিল
(শে হয়তো লিখতো, জল…
আরেকটা ভার্সন লেখা হইতে তো পারেই…)

চুপ থাকলে আওয়াজটা আরো স্পষ্ট শোনা যাইতো

আজাইরা কথাগুলিরও কোন দরকার আছে বোধহয়

মানে, কথা ছাড়া ব্যাপারটা কেমনে শেষ হয়…
মানে, একটা শেষ, অ্যাজিউম কইরা কথা বলা যাইতেছিল
কতো কতো ব্যাখা’রা বইসা ছিল অন্ধকারেও

বিলাইয়ের মতো খামচি দিতে চাইতেছিলো
বাঘের মতো গর্‌গর্‌
থাইমা থাইমা আসতেছিলো

‘ইউ ক্যান্ট গেট মি, ইভেন ইফ ইউ ট্রাই…’

আমি কি ট্রাই করতে চাইতেছিলাম আসলে?

আমার চোখগুলি মিশে যাইতেছিলো ধূলায়

কি কি দেখতে পারি আমি
শেষবারের মতোন…

খুঁজতেছিলাম

দেখি, এক জোড়া চোখ তাকায়া আছে

থুতনিটা উঁচা কইরা দেখতেছে

আমার না-দেখার ভিতর কতকিছুই তো আছে

আমার আত্মা তাঁর চোখের সামনে মেইলা ধরতে চাই আমি

দেখে শে, কয়, ‘এইটা তো নাই!’

‘এইটা এইরকম।’

আমি তারপরও গাই-গুই করতে চাই

থম মাইরা বইসা থাকতে চাই
মইরা যাওয়া একটা গাছের গুঁড়ির মতোন

সময় দৌড়াইতে থাকে

হঠাৎ ইঁদুরের মতোন
গাছগাছালির ফাঁকে কই যে যায়

যাইতেই থাকে…

একটা ঘুমের ভিতর একটা স্বপ্নের মতোন

হারাইয়া ফেইলা আমি খুঁজতে থাকি

কই যে গেলো শে, কই যে…

রাস্তার প্যাঁক-কাদাগুলিও কয়,
“এই দুনিয়ায় আল্লার বান্দা সবাই
আমরা তাঁর বাচ্চা, জন্মের আগে থিকাই”

কেউ কানতেছে মনেহয়, বলতেছে
‘আর আমারে মারিস নে মা!’

ননীর শরীর নিয়া আমি কই যে যাই!

একটা ধারণার ভিতরে আরো ছোট্ট কোন ধারণার মতোন
বন্দী হইয়া থাকবো তো আমি
নিজের কাছেই…

 

চুপ থাকো

আমি নিরব হবো;

নিরবতার কাছে গিয়া তার কানে কানে বলবো,
‘নিরবতা, তুমি এতো কথা বলতেছো কেনো!’

 

দুইটা পাথর

কেউ আসছিলো
আসতে চাইতেছিলো

কেউ ছিলো
থাকতেও চাইতেছিলো, মনেহয়

দুইটা পাথর
নিজেদের জায়গা থিকা
নড়তে পারতেছিলো না
আর।

 

রিকশাওলা

সম্ভাবনার রিকশা হয়া দাঁড়ায়া আছি তোমার যাওয়ার রাস্তায়।
রিয়ালিটি কইরা চুজ কইরা নিলা আমারে তুমি।

তাই বইলা অন্য আরো রিকশাগুলির সম্ভাবনা
বাতিল তো হয় নাই,

অন্যদিন অন্য কোন রিকশা
রিয়ালিটি হবে তোমার
তখন সম্ভাবনার ভিতর জাইগা থাকবো আমিও

আমি ভাববো, আমি তো তোমার রিকশা
তুমি আমারে নেও বা না-নেও

আমি রিয়ালিটি, আমি সম্ভাবনাও

অনেকগুলি রিকশার ভীড়ে
আরেকটা রিকশা তোমার!

 

ইন রিয়ালিটি

একটা ইমাজিনড তুমি ভাবতেছো একটা ইমাজিনড আমার কথা
একটা ইমাজিনড আমি আমার থিকা বাইর হয়া জড়ায়া ধরতে চাইতেছে তোমারে

আমাদের ইমাজিনেশন হারায়া ফেলবে আমাদেরকে একদিন
তখন খুঁজতে থাকবো, আরো আরো ইমাজিনেশনের ভিতর
বলবো, কতোদিন তোমারে দেখি না!

রিয়েল তুমি বলবা, তোমার ইল্যুশনের ভিতর আমি তো আর থাকবো না…

একটা এগজিসটেন্স তোমার
আমার ভাবনার বাইরে থাকতে থাকতে
আমারেই ছাইড়া যায়

আরো আরো রিয়েলের ভিতর আরো আরো রিয়েলই হইতে থাকে খালি…

 

শাহেরজাদী

শে আমারে বলছিলো,
‘অনেকের প্রেমে পড়ছি আমি
শুইছি আরো অনেকের সাথে ক্যাজুয়ালিই…’

ওর কথা শুইনা হাসছি আমি।
কথা বলতে বলতে লুকায়া ফেলতে চাইতেছিলো শে
তাঁর শরীর

‘ওর কাঁধ ছিলো কি যে চওড়া…
আর অনেক প্রেমে পড়ছিলো আমার’

খুবই আনমনা, তাঁর প্রেমের কথা
শে বলে আমারে।

‘ওর সাথে মদ খাইতে গিয়া হইছিল

ও নেশা কইরা লাগাইতে চাইতো, পারতো না

ও কবিতা লেখার লাইগা শুইতে চাইছিলো…বললেই হইতো’

বিষন্ন হয় শে;

তাঁর খারাপ-লাগায় আমারও খারাপ লাগে

আরো আনমনা হয় শে,
তাঁর সত্যি কথাগুলি বলতে থাকে, বলতে বলতে
সবাইরে দোষী করতে থাকে;
সবাই যেহেতু আর দোষী হইতে পারে না
শে বলে, ‘সব দোষ আমার!’

সামনের জানালা দিয়া কৃষ্ণচূড়া গাছটা দেখা যায়
লাল ফুলগুলি তখনো ফুটে নাই,
সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে বইসা থাকে
কালা কালা আন্ধার

আমি ভাবি, সব না হোক কিছুটা দোষ
আমারও তো নিতে পারা দরকার

তার আগেই ঘুমায়া পড়ে শে

ঘুম ভাঙ্গার পরে আরেকজন প্রেমিক আসবে তার মেমোরি নিয়া

আমি তার লাইগা ওয়েট করতে থাকি,

ঘুম ভাঙ্গলে বলবো তারে, তোমার স্বপ্ন আর রিয়ালিটির সত্যিগুলি তোমার কাছেই থাক,
দেখো, জানালা দিয়া গড়ায়া গড়ায়া আসতেছে,
মিথ্যার মতো শান্ত একটা দিন!

 

মেমোরি

কোনএক পারফিউমের গন্ধ আইসা নিয়া যাবে শরীরের সুগন্ধি তোমার

 

কৃষ্ণচূড়া

‘কৃষ্ণচূড়া গাছটারে দেইখো না
আমারে দেখো’, আমি বলি।

আর অবাক হয়া শে কৃষ্ণচূড়া গাছটার দিকে তাকায়া থাকে।

 

তালগাছ

একটা আলাপ শেষ হওয়ার পরেই শে ওই চাউনিটা দেয়; যে, ‘ঠিকাছে, আমি জিতছি তাইলে!’

আর তখনই ঘটনাটা শুরু হয়। আমি কই, ‘যদি আমি না থাকতাম, তুমি কেমনে জিততা? আমি আছি বইলাই তো তুমি জিতছো!…’ ব্লা ব্লা ব্লা। জিতার ফিলিংসটা আমি তারে দিতে চাই না। বলতেই থাকি, বলতেই থাকি। এইটা আর মানতে পারে না শে।

উইথড্র করে নিজেরে। ‘যা বাল, তোর জিতা দিয়া তুই মুড়ি গা গিয়া!’

শে জানে, আমাদের মাঝখান থিকা আমি বাইর হয়া গেলে যেমন তুমি জিততে পারে না। তুমি বাইর হয়া গেলেও আমি একটা লোনলি ঘোস্টই। একলা একলা জিতার কিছু নাই।

হাইরা গিয়া চুপ কইরা বইসা থাকি আমি। শে তো ফিরবে, তাই না? তারও তো জিতা লাগবে। শে জিতার পরে তার জিইতা যাওয়াটারে নিবো নে আমি।

আমি জানি, আমরা কেউও না। আমাদের জিইতা যাওয়াটাও আমাদের না। তুমি আর আমি-ই ঘটনা।

দূরে খাড়ায়া খাড়ায়া এই তামাশা দেখতেছে যেই তালগাছ, সেও তো তার না।

 

ফ্রি বার্ড

ফ্রি বার্ড, ফ্রি বার্ড
একটা খাঁচার স্বপ্নের ভিতর
তুমি ঘুমায়া পড়ো

ফ্রি বার্ড, ফ্রি বার্ড
একটা অনেক বড় আকাশে
তুমি ঘুইরা বেড়াও

ফ্রি বার্ড, ফ্রি বার্ড
তোমার খাঁচা আর তোমার আকাশ
তুমি ফ্রি, তুমি বার্ড

 

লাস্ট ক্যাকটাস

অহেতুক একটা
ইল্যুশনের মতোন
পইড়া আছি আমি
রিয়ালিটির দরজার পাশে
তোমার

বলবা তুমি,
মরা ক্যাকটাস
ফেলে যাবো এরে,
নিয়া গিয়া কি লাভ!
কই রাখবো এরে?
কেন নিবো? হোয়াই?

অহেতুক একটা
ক্যাকটাসের মতোন
হারায়া গেছি আমি
দেখার দুনিয়া থিকা
তোমার

 

যে কোন কিছুই

অ্যাভারেজ একটা দিনের শেষে অ্যাভারেজ একটা সন্ধ্যা

অ্যাভারেজ একটা বার, ঢাকা শহরের
অ্যাভারেজ কোন ড্রিঙ্কস
মানে যা যা হয় আর কি, যা যা হইতে পারে আর কি…

‘সবকিছুই অনুমান কইরা ফেলা যায়, বুঝছিস?’,
বিচার কইরা যাইতেছে পাশের টেবিলের কয়েকটা কিশোর মদখোর
আর বলতেছে অদের অ্যাভারেজ প্রেমিকাদের কথা…

অ্যাভারেজ টিভি’তে বাজতেছে অ্যাভারেজ হিন্দি গান

অ্যাভারেজ একটা শাদা কাপড়ে
লাল সুতা দিয়া করা অ্যাভারেজ একটা কাজ
অ্যাভারেজ একটা মেমোরি’র
অ্যাভারেজ একটা লাইন
অ্যাভারেজ একটা হলুদ দেয়ালে টানানো:
‘বন্ধু, ভুইলো না আমায়!’

অ্যাভারেজ কোন নাটকের অ্যাভারেজ কোন সিন

অ্যাভারেজ রাস্তায় অ্যাভারেজ বৃষ্টির পানি
অ্যাভারেজ কিছু প্রেমের কবিতার মতোন
শুকায়া যাবে যারা সকালের রইদে
অ্যাভারেজ আরেকটা দিনের ভিতর

অ্যাভারেজ কিছু টাইম, কথা-বার্তা, হল্লা-চিল্লা…

কে যে কার কথা শুনতেছে
কে যে কেউ কেউ হইয়া বইসা আছে

আমাদের অ্যাভারেজ মন, অ্যাভারেজ সেই কথা যেন জানতেই পারতেছে না

অ্যাভারেজ কোন প্রেমিকের অ্যাভারেজ কোন প্রেমিকার রেফারেন্স ছাড়া…

 

 

Leave a Reply