সাবজেক্ট
“কোন সাবজেক্ট তো নাই,
আসো তোমারে সাবজেক্ট বানাই,” আমি বলি।
“এই নাও তোমার সাবজেক্ট,” তুমি হাসো, ক্যামেরার সামনে একটা অপরাজিতা গাছের বাড়তে থাকা ডালের মতো;
তোমার হাসির ভিতর
পানির ফিল্টারের একটা ট্যাপ
তাকায়া তাকায়া দেখে আমাদেরকে
দুইটা মানুষ গড়ায়া গড়ায়া পড়ে যাইতেছে
একটা সাবজেক্টের চিন্তার ভিতর
কোন কারণ ছাড়াই…
আয়না
যে আছে লগে
মনে চায় তারেও দেখি
আরেকটা আয়নার ভিতরে
নাথিং
আকাশে উড়তেছে নাথিং
নাথিং নাথিং বইলা
দেখা যাইতেছে না তারে
যেই নাথিং ছিলো না,
সেই নাথিং’রে দেখার পরে
কইলো সে, ‘হ, আমিও দেখছি তো একটু…’
তখন নাথিং
নাথিং নাথিং বইলা
উইড়া গেলো, আবারো
আমার ভুল
আমি সারাজীবন ধইরা চাইছি সারাজীবনটা থাক
আমি হাজারবছর ধইরা চাইছি হাজারবছরটাও থাক
কিন্তু দেখো, এই যে গ্রামার, বানান-ভূল আর চিন্তার ফাঁকিবাজি আমার
এইসবকিছুই থাকতেছে আর
তুমি বলতেছো আমারে, এইটা এইটা তো ভুল!
সারাজীবন আর হাজারবছর
মাথা নিচু কইরা বইসা থাকতেছে তখন
কিন্তু তারপরও, থাকতেছে…
প্যাস্টেরাল লাইফ
সারাদিন অনেককিছু ভাববো, চিন্তা করবো
লিখবোও কিছু কিছু, মাঝে-মধ্যে পড়ার ইচ্ছাও হবে
তারপর দিন শেষে,
ঘুমায়ে পড়বো ফুলের মধু খেয়ে…
কারণ
আমি মারা গেছি,
আমি মারা যাওয়ার পরেও
থাইকা যাবে কিছু ‘কারণ’
লভ্ ইজ অ্যা ডগ ফ্রম হেল
আমাদের একটা প্রেম আছে,
মন-খারাপ হইলে আমরা
প্রেমের ধারে গিয়া বইসা থাকি
চা-চু খাই, সিগ্রেট ধরাই
মানুষ-জন আসে, চইলা যায়, দেখি
কয়েকটা কুত্তা আইসা
সাইডে ঘুরাফিরা করে
রাত হয়, দোকানগুলির শাটার
নামতে থাকে; আর কুত্তাগুলি
রাস্তায় রাস্তায় প্রেমের মতোন
ঘুরে, পুলিশের ভ্যানের লগে…
আমরা বুকোউস্কি পড়ছি বইলা
আমাদের মন খারাপ হয়
দুপুরের ঘুম
দুপুরের একটা ঘরে
কতো আওয়াজ যে আসে!
কয়েকটা চড়ুই ডাইকাই যাইতেছে বারান্দায়,
পাশের রাস্তায় রিকশার বেল
প্রাইভেট কার আর মাইক্রোবাসের হর্ন
হেলিকপ্টারও একটা গেলো মনেহয়,
মাইকে বাজতেছে কিসের জানি গান…
সবকিছু থাইমা যাওয়ার পরে
শোনা যায় তোমার শ্বাসের আওয়াজ
বাজতেছে আমার বুকের উপর
যেন আমি
যেন আমি ভুলে গেছি তোমারে
যেন আমি অন্য কোন লোক
একটা কফি’র কাপ, সন্ধ্যার রেস্টুরেন্ট
বাচ্চা-কাচ্চাদের হাউকাউ
ধরাইতে গিয়া নিইভা যাওয়া
একটা সিগ্রেট
‘আমারে টান দেও, ধরাও…’
পুকুরের পানি
পুকুরের পানিতে সাঁতরাইতেছিলো কয়েকটা হাঁস
পুকুরের পানিতে নেমে আসতেছিলো একটা সাপ
পুকুরের পানিতে একটা ঢিল পড়ার পরে হইতেছিলো কিছু ঢেউ
তারপর চুপচাপ;
পুকুরের পানি তির তির কাঁপতেছিলো বাতাসে, একটু পরে পরেই, অনেকটা সময়…
জীবন
জীবন
কোন এক ডালে গিয়া যে বইসা রইছে
হলুদ একটা পাতার মতোন
শীত আসার আগে
হেমন্তের বাতাসে
ঝইরা যাবে যে সে
কখোন!
ট্রাভেলগ
অনেকগুলি ইল্যুশন পার হয়া একটা রিয়ালিটি’তে যাই,
গিয়া দেখি খামাখাই
রিয়ালিটিও হাঁসফাঁস করতেছে নিজেরে নিয়া
বলতেছে, কই যে যাই!
মর্নিং জ্যাজ
ইউটিউবে একটা রেডিও’র লাইভ স্ট্রিমিং শুনতেছিলাম, মর্নিং জ্যাজ। সাইডে চ্যাট বক্সে অনেকে কমেন্ট করতেছিলো, মোস্টলি কে কোন জায়গায় আছে, সেইটা বলতেছিলো। কেউ কইতেছিলো, হাই, আই অ্যাম ফ্রম ইন্দোনেশিয়া, আই অ্যাম ইন কানাডা, সিওল… এইরকম। একজন লিখলো, আই অ্যাম ফ্রম মার্স। তো, মানুষ আসলে খুব বেশি দূরে যাইতে পারে না, পৃথিবী ছাইড়া ওই মঙ্গলগ্রহ পর্যন্তই যাইতে চায়। আমি নিজেও এন্ড্রোমিডা’র বেশি ভাবতে পারলাম না। একই তো ইউনিভার্স!
অন্য দেশে
অন্য দেশেও তো ফুটতেছে ফুল
ফুল-টুল রাস্তার পাশে
ছড়ায়া ছড়ায়া আছে,
সকালবেলায়
আমি না থাকলেও, আমার কোন ফুল
ফুটতেছে অন্য কোন দেশে, অন্য কোন ভাবে
মনেহয়. . .
Leave a Reply