শব্দগুলি এক একটা অন্ধকার
তার
পরে
তারো
পরে
তারও
পরে
রক্ত
হয়া
ঝইরা যাবে
আমাদের
ঘাম
আমরা ভাববো,
আমরা
মহান!
কতগুলি
অহেতুক
শব্দ
দিয়া
এইটা
এইটা
এইটা
আমরা
রিপ্লেইস
করে
দিতেছিলাম
সাইকেল
একটা
তাউরাইতেছিলো
মোটরসাইকেল
হর্ণ
দিতে দিতে
তারে
দেখাইলো
আমারে
বাঁইচা
আছে
সে
ঠিকঠাকমতোন
আমি
হাঁটতে
হাঁটতে
একটু
দূরে
যাই
আবার
আসি
একটু
হাসির
মতোন
কান্দা
তার
ছড়াইতেছে
একটা
জানালা
চুপচাপ
একটা
গাছ’রে
দেখতেছে
সন্ধ্যার
অন্ধকারে
মুইছা
যাওয়ার
আগে
অরা
কইলো,
গেলাম!
প্রাণি জগৎ
‘তুমি আসলে কেমন বাঘ?’
– জিগাইলো একটা বিলাই আমারে।
ভাগ্য ভালো, আমি যে ইন্দুর – এইটা সে জানে না।
সোনার তরী ২
সকল গ্রেটদের পাশে বসি।
প্লাটফর্মে, রেলস্টেশনের।
নিজেরে ছিঁড়া কাগজ, পলিথিন, সিগ্রেটের প্যাকেটের মতোন কুড়াইয়া
নিজের পকেটে রাখি,
ভাবি, অরা পইড়া যাইতে থাকে আবার;
অনেকে তো বস্তা নিয়াও বইসা আছেন,
অনেকের আছে টিনের সুটকেস,
অনেকের হ্যাভারসেক…
উনারা স্মার্ট, হ্যান্ডসাম;
গ্রাম্যও আছেন কয়েকজন,
কিন্তু প্রকৃত ইনোসেন্ট টাইপ
সবাই চুপচাপ
আমি ভাবতেছি, ট্রেন আসলে উঠবো কেমনে?
ট্রেন কি আসবে আসলে?
ট্রেন আসলেও আমি কি উঠবো, নাকি মনে হবে ওই ছিঁড়া কাগজটাও তো আমি, ওইটাও নেই, ওইটা, ওইটা আর ওইটা
যদি ট্রেন আসে একবার,
বারবার আসতেই তো থাকবে…
আমি কুড়াইতে থাকি নিজেরে একটু পরে পরে উইঠা গিয়া
আমারেই আবার
আমি দেখি
আমি তোমারে দেখি,
দেখি একটা কুয়াশা ধীরে ধীরে উঠে আসতেছে
একটা লাল টুকটুক সূর্য ডুবে যাইতেছে কাঁচের জানালার ওইপারে
একটা অন্ধকারের ভিতর জ্বলে উঠতেছে কয়েকটা লাইট
শাদা, লাল, সবুজ, গোলাপি…
আমি দেখি, আমার দেখার মতো অনেকগুলি তারা ধীরে ধীরে
ফুটে উঠতেছে
অনেক দূরে, আকাশে
সব্জি খিচুরি
একটা ডেকচি’র ভিতর বইসা আছি,
আমি চাইল;
ডাইল দিলা তুমি, আরো সব্জি’রা আসলো
লগে পানি
ফুটতে থাকলো, তারপরে
সব্জি খিচুরি হইলাম আমি,
যদিও চাইল;
হইতে পারতাম হয়তো ভাত,
কিন্তু
একই তো কথা
ফুইটা উঠার পরে
আমি তো আর আমি নাই
আমি যে,
সে তো হয়া উঠতেছি সবসময়
তোমার কাছে (তোমাদের কাছে আর আমার কাছেও),
অন্য কেউ।
তিনটা গ্লাস
তিনটা গ্লাস।
মানুষ হয়া উঠতে চাইতেছে,
একটা স্বপ্নের ভিতরে।
নড়াচড়া করতে করতে
কথা বইলা উঠতেছে
পানি লাইগা আছে একটু
অদের গায়ে,
একটা কাঠের টেবিলের উপ্রে
অরা গল্প করতেছে
মানুষদেরকে নিয়া
মানুষদের ঠোঁটদেরকে নিয়া
মানুষের দূরবর্তী নাক আর চোখদের উপরের সুদূর ভ্রুগুলি’রে নিয়া
অরা
কথা কইতে কইতে
মানুষ-ই হয়া উঠতে চাইতেছে
প্রাণি জগৎ
আমরা, ডাইনোসারে’রা
মইরা যাওয়ার আগে ভাবলাম,
দুনিয়াটা তো খুবএকটা দেখা-ই হইলো না!
দুপুর
আবার
আ বা র
আ বা র
এগেইন
এ গে ই ন
এ গে ই ন
পানিগুলি স্থির
যেন একটা কিছু বলার ভিতর দিয়া আরেকটা কিছু বলতেছি আমরা
যেন একটা লাইফে বাঁইচা থাকার ভিতর দিয়া আরেকটা কোন ড্রিম ফুলফিল করতেছি আমরা
যেন
যে ন
যে ন
দূর থিকা আসতে থাকা একটা কিছু আরো দূরের দিকেই ভাইসা যাইতেছে
অথবা কিছুই নাই
একটা কিছু ভাবতে পারা’র
মতোন
নিরবতা (আসলে তখন তো
নিরবতা না আর. . . )
চুপচাপ
আমি আর আমার বাছুর
আমি ঘুইরা বেড়াই
একটা প্রাকটিক্যাল মিনিং থিকা
ইমাজিনেশনে যাই
ইমাজিনেশন কয়,
গলায় দড়ি ছাড়া
কোন বাছুর তো নাই!
বাছুরটা তখন বাস্তবে আসে
আর আমারেই জিগায়,
কই যে যাই!
আমি আর আমার বাছুর
গাভীর বাটে জইমা থাকা দুধের দুঃখের মতোন
ঘুইরা বেড়াই
প্রাণি জগৎ
দাড়িপাল্লা নিয়া বসছে কাঠবেড়ালি,
মাপতেছে বন-গরু আর গন্ডারদের
বলতেছে, আপনারা মহান!
প্রাণি জগৎ
কোথাও একটা বাঘ আছে
ঘুরতে থাকা হরিণটার মনে
কয়েকটা বান্দর গাছের ডালে বইসা সেইটা দেইখাও না-দেখার ভান করতেছে
আমাদেরকে নিয়া ভাবতেছি আমরা
“সবাই কি আমরা নাকি?
যে, আমাদের মতোন হয়া থাকবে?”
“সবাই তাইলে কি রকম?”
আমি জিগাই তারে।
“সবাই তো যে যার মতোন!”
শে একটু রাগ কইরাই কয়;
তাঁর রাগ দেইখা, আমি চুপ থাকি
মনে মনে কই, “আমরাও তো আমাদেরই মতোন,
‘নিশ্চুপ’ ‘নিষ্করুণ’ – এইরকম আজাইরা উপমা আর উদাহারণ. . .”
প্রাণি জগৎ
জালে ধরা পড়ার আগেই
একটা সরপুটি’রে তুইলা নিলো মাছরাঙা পাখি’টা
জালে বান্ধা সরপুটি’টা মরা’র আগে কইলো,
“আল্লা বাঁচাইছে ওরে।”
প্রাণি জগৎ
মরা’র পরেও ভাবতেছে
একটা শিয়াল,
“হায়, কেনো যে আমিও বাঁইচা ছিলাম না!
কোনো এক মুর্গি-পাখি’র মনে,
কোনো এক সাডেন মোমেন্টে!” 🙁
পোশাকের কান্না
শেখ সাদী তার ড্রেস খুইলা রাখলেন,
নিজের শরীরটারে খুলতে না পাইরা কইলেন,
“মানুষ যা করার সেইটাই করবে. . .”
আমি একটা গান
My monsters, they come to me and plea, “Write about me!”
দুই হাতের আঙুলগুলি শক্ত কইরা জোড়া দিয়া ধইরা দাঁড়ায়া আছে, আমার দৈত্য’রা। অরা কানতেছে। রাইগা যাওয়ার আগে। ভ্যানিশ হয়া যাওয়ার আগে। অরা আসছে। আমার কাছে। আমি চুপচাপ। অন্যদিকে তাকায়া আছি। শুনতেছি অদের কথা। রইদ নিবে যাবে বনানী লেকের পানিতে। আমি চইলা যাবো। আমার দৈত্যরা ঢুইকা যাবে অন্য কোন কুপি’র ভিতরে। সন্ধ্যাবেলায়। জাইগা উঠতে চাইবে অন্য কোন দুনিয়ায়। হাজার বছর পরে। হয়তো আফ্রিকায়। ইথিওপিয়ায়। মাই মনস্টারস। অরা তো মারা যায়।
সময়ের আগে থাকে সময়ের না-থাকা। আর তারা চেইঞ্জ হইতে থাকে সময়ের ভিতর। একটা গাছের ছায়ায় একটা গাছ নিজেরে লুকায়।
আমার দৈত্যরা চুপ থাকে। কথা কয়। বিড়বিড় করে। কি কি হবে। কি কি হয়। অরা জানে। আমি অদের জানা’র পাশে একটা অন্ধকার। জ্বলতেছি। অরা আমারে ডরায়। কেন। আমি জানি না। হয়তো আমার না-জানা অদেরই ডর। থাকে।
আমি থাকি না। আমার মনস্টার’রা থাকে। অরা আমারে রাইখা দিতে চায়। আমি তাকায়া থাকি। দেখি না। অরাও দেখে না মনেহয়। ভাবে, আমি আছি। অরা যেমন থাকতে চায় বইলাই ভাবে, আমরা থাকি বা না-থাকি, কেউ না কেউ তো আছে নিশ্চয়। সেইটা আমি। সেইটা অরা না। অরা জানে। অদের জানা’রে অরা বাদ দিতে পারে না। একটা ফুল, ফোটার পরে যেমন ফেরত যাইতে পারে না আর বীজের ভিতর।
বীজ। গুটায়া নিলো নিজেরে আবার।
আমি। যে আছি কিনা জানতেই পারলাম না। জানলাম আমার দৈত্যরা কানতেছে আমার কাছে। (যেন।) আমি একটা গান। অরা গাইতেছে। শব্দ কইরা। চুপ থাইকা। থাকা। আর না-থাকায়।
বীরপুরুষ ২
মায়ে তার পোলারে একটা শিকল দিছে,
নিজের হাত বাইন্ধা রাখছে শে আর
পোলায় শিকল টাইনা ধইরা ঘুরতেছে
ফুটপাতে, রাস্তায়. . .
ভিক্ষা চাইতেছে না অরা,
নিজেদের মতোন ঘুরতেছে,
আমি যে দেখলাম,
এইরকম কেউ দেখলো কি দেখলো না
সেইটা নিয়া কোন খেয়াল অরা করতেছে না
আমি ভাবতেছি, পাগলি তার পোলারে নিয়া ঘুরতেছে
অথবা পোলাটা বুঝতেছে না, তার মা, পাগল কিনা
অথবা শিকল’টাই ঘটনা. . .
অরা পাইছে কোথাও আর খেলতেছে
এইটা নিয়া।
শীতের শেষে
আমি তারে ধরে রাখি না,
আমি তারে ছাইড়া আসি আর
শে থাকতে থাকে
তাঁর থাকতে থাকা’র ভিতর আরো
অনেকেই থাকে,
(থাকে যেমন থাকে নাক সিঁটকানো চন্দ্রবিন্দুও)
শীত চইলা যাওয়ার আগে একটু বাতাস
থাকে, বিয়ারের বোতল বাইয়া নামতে থাকা
একটা পানির ফোঁটা, অনেক আগের মেমোরি,
খারাপ-লাগা, একটা সন্ধ্যার মতোন
টুপ কইরা নামে
‘একই তো, একই তো…’
একটা দিন আরো কতোগুলি দিনের মতোন
রিপিট হইতে হইতে
আর হবে না কোন একদিন
“আরে, আমি জানি তো!”
বইলা একটা অ-জানা’রে জানতে গিয়া
জানা’রে এভেয়ড কইরা চইলা যাবে
তারে আমি ধইরা রাখি না
তারে আমি ছাইড়া আসি
আর শে চলে যাইতে থাকে,
আমি তারে দেখি না আর
ভাবি, তাঁর না-দেখা
আমারে দেখতে পারে হয়তো
কোনদিন, আমার না-দেখার মতো
তখন জিগাবো না আর,
কিন্তু মনে মনে বলবো,
শীত শেষের বাতাস তুমি যাইতে পারতেছো,
ঠিকঠাকমতো?
Leave a Reply