‘নিভৃতচারী’ ব্যাপার’টা নিয়া

এই জিনিসটা নিয়া ইনবক্সে একটু কথা হইতেছিল Milu Hasan‘র লগে। ভাবলাম, পাবলিকলিও বলা যাইতে পারে কিছু জিনিস।

টোনের একটা ব্যাপার তো আছেই, যে – লাউড না এতোটা; হয়তো আপনি অনেক কথা-ই বলতেছেন, কিন্তু কাউরে খুঁচাইতেছেন না, বা হেব্বি ইমোশন দিতেছেন না বইলা মনে হইতে পারে এতোটা ইমপ্যাক্ট তৈরি হইতেছে না; এইরকম কিছু থাকতে পারে। কিন্তু এই জায়গাটারে ঠিক আমলে নিতে চাইতেছি না, এই পারসোনাল অ্যাট্রিবিউট বা ঢং’টারে।

বরং একটা উদাহারণের কথা বলি, ঢাকা ইউনির্ভাসিটির বাংলা ডিপার্টমেন্টের টিচার আহমদ শরীফ ‘মধ্যযুগের বাংলা কবিতা’ নামে একটা বই লিখছিলেন (নাম’টা কিছুটা ভুল হইতে পারে), অই বইয়ে লালন ফকির, শাহ আবদুল করিমসহ অনেকের লেখা রাখছেন ‘মধ্যযুগ’র উদাহারণ হিসাবে। মানে, উনি ‘টাইম’রে সেন্টার ধরেন নাই, একটা ‘টোন’রে (এতোটা অ্যাবস্ট্রাক্ট জিনিস না এইটা) ধরছেন; যেইটা স্পেইস/স্থান হিসাবে কোন পেরিফিরি’র বা গ্রামের ঘটনা, আর ক্লাস হিসাবে লোয়ার ক্লাসের জিনিস।

তো, একইরকমের ঘটনা ‘নিভৃতচারী’র ব্যাপারেও কিছুটা ঘটে মনেহয়। যেমন ধরেন, এই যে লেখাটা আমি লিখতেছি – এইটা তো ‘নিভৃতচারী’ একটা জিনিস হইতেছে 🙂 , এখন এই লেখা যদি ফেসবুকে না ছাপায়া ‘দৈনিক আজাদী’তেও ছাপাই (অন্য সব অর্গানাইজড মিডিয়ার কথা বাদ-ই দিলাম) কিছুটা লাউড মনে হইতে পারবো তো তখন! স্পেইসের কারণেই। ধরেন, বাংলাবাজারের গলিতে চা খাইতে খাইতে কথা-বলাটা তো ‘নিভৃতচারী’ ঘটনা, বাংলা একাডেমির স্টেইজে গিয়া কথা বলার চাইতে। এইরকম।

ব্যাপারটা এইরকম না যে, অর্গানাইজড মিডিয়ার স্পেইসটা বাকি সবকিছুরে সাপ্রেস কইরা রাখতেছে, সেইটা তো একভাবে রাখতেছেই; তার বাইরে আমাদের পারসেপশনের প্যাটার্নটাও আছে এইখানে; কারণ যেইটা আপনার সামনে হাজির হইতেছে, সেইটাই ‘রিয়ালিটি’ হয়া উঠতে পারতেছে। আপনি চাইলেও সেইটারে বাদ দিতে পারবেন না, যখন আপনার চারপাশের মানুশ-জন এইটাতে সাবস্ক্রাইবড হয়া আছে।… মানে, আমরা যে অ্যাপিয়ারেন্সের ভিতর দিয়া রিয়ালিটি’রে কনজিউম করতেছি, সেইটা এই ‘নিভৃতচারী’ ধারণাটাতে কন্ট্রিবিউট করতেছে একভাবে।

২.
এই জিনিসটা যখন আপনি টের পাইবেন, তখন আপনি তো চাইবেন হাজির থাকার জায়গাগুলাতে আপনার অ্যাপিয়েরেন্সটারে নিয়া আসতে। মানে, সেইটাই ‘নরমাল’ বইলা মনে হবে। কিন্তু এইটাও বুঝতে পারবেন যে এর একটা কস্ট আছে, আপনারে অই স্পেইসগুলার ভিতর দিয়া মোল্ড হয়া যাইতে হবে। আপনি যে আপনি থাকতে পারবেন না – এইরকম না; কিন্তু অই কনটেক্সটগুলার ভিতর দিয়া আপনারে অ্যাপিয়ারড হইতে হবে। কন্ডিশনড হইতে হবে, আপনার হাজিরায়।

একজন রাইটার বা আর্টিস্ট’রে একটা কনটেক্সটে বাইন্ধা রাখা যায় না – এইরকম না; আমি মনে করি, একজন রাইটার বা আর্টিস্টের অ্যাক্টিভিজম হইতেছে এই কন্ডিশনের জায়গাগুলারে আলগা করতে পারা, নতুন কনটেক্সটগুলা যাতে এমার্জ করতে পারে, সেই রাস্তাগুলারে ওপেন করা। খালি আর্টের ভিতর দিয়া না, তার অ্যাক্টের মধ্যেও এই জিনিসগুলা থাকার কথা। এইগুলা আগের দিনে যে ছিল না – তা না; কিন্তু আমাদের টাইমে এই জিনিস’টা আরো জরুরি ব্যাপার মনেহয়।

এমন না যে, আপনারে অল্টারনেটিভ হইতে হবে, এন্টি হইতে হবে; ফ্যাশন হিসাবে এইগুলা অবশ্যই চালু ঘটনা, এইগুলা তো ট্রাই করেন-ই! 🙂 তবে টুইস্ট কইরা বলা যাইতে পারে যে, সবসময় আপনারে ‘নিভৃতচারী’ 🙂 থাকার কোন না কোন উপায়ও বাইর কইরা নিতে হবে!

 

 

Leave a Reply