ক্যান ইসলামিস্ট থিংক?

২০০৯ সালে তালাল আসাদ, সাবা মাহমুদ আর জুডিথ বাটলারের বাহাস নিয়া একটা বই পাবলিশড হইছিল – “ইজ ক্রিটিক সেক্যুলার?” নামে, যেইটা একাডেমিক এরিনার বাইরেও কিছুটা পাবলিক ইন্টারেস্টের বিষয় হয়া উঠছিল। (বাংলাদেশে দুয়েকজন এইটা নিয়া টুকটাক কথা বলছেনও মনেহয়।) অইটা শুরু হইছিল তালাল আসাদের একটা সেমিনার পেপার “ফ্রি স্পিচ, ব্লাসফেমি অ্যান্ড সেক্যুলার ক্রিটিসিজম” থিকা।

তালাল আসাদ বলতেছিলেন, ক্রিটিক করা জিনিস’টা ইউরোপিয়ান ট্রাডিশনে একটা সেক্যুলার ব্যাপার হয়া আছে। কিন্তু যে কোন সমাজেই এই ক্রিটিক করা জিনিস একটা কন্ডিশনাল ঘটনা, খালি “মুসলিম সমাজের” সমস্যা না। উনার একটা আর্গুমেন্ট হইলো, সেক্যুলার ভোকাবুলারি আর ইসলামি ভোকাবুলারি এক জিনিস না; কালচারাল অরিয়েন্টেশনের কারণেই ব্যাপারগুলা আলাদা। তালাল আসাদের কথা হইতেছে, দুইটা দুইরকম; ইসলাম ধর্মেও ক্রিটিক করার স্পেইস আছে, যতক্ষণ না এইটা পাবলিক লাইফরে এফেক্ট না করতেছে; একইভাবে ক্রিটিকেও ব্লাসফেমির জায়গা ছিল, এখনো কিছু জায়গা আছে, যেইটা পাবলিকলি বলতে বা করতে পারেন না আপনি; সেই জায়গাগুলা বরং অথরিটির অপারেট করার জায়গা। (মানে, এইরকম কিছুর কথা আমার মনে আছে।)

ইসলামিস্ট-ফেমিনিস্ট (?) সাবা মাহমুদ এর সাথে আরো কিছু পারসপেক্টিভ অ্যাড কইরা বলতেছিলেন যে, ইসলাম’রে লিনিয়ার কইরা দেখলে হবে না; বরং এই যে “সেক্যুলার হইতে হবে” – এইটা মুসলিম সমাজে আরেকটা প্রব্লেম হিসাবেই কাজ করে, লিবারেটিং কোন টুল না। মানে, আলাপের বেইজ তো ছিল ড্যানিশ পত্রিকার কার্টুন’টা যেইখানে নবী মুহাম্মদ (দঃ)’রে একটা ইমেজে রিডিউস করার ঘটনা ঘটছিল।

তো, উনাদের কথার রেসপন্সে জুডিথ বাটলার পজিটিভলিই তালাল আসাদ আর সাবা মাহমুদের আলাপে এনগেইজ হইতে চাইছেন। উনার কথা হইতেছে, ‘ক্রিটিক’ জিনিসটা নিয়া অবশ্যই ক্রিটিক্যাল হওয়ার দরকার আছে, কিন্তু তালাল আসাদ যেমনে চাইতেছেন, সেইটাই রাস্তাটা কিনা? কালচারাল ডিফরেন্সের জায়গাটা তো এন্ডলেস, কে কারে, কট্টুক বুঝবে? আর বুঝলেই কি ‘ক্রিটিক’ করার ডিফরেন্সগুলা বাতিল হয়া যাবে? তা তো না। উনি বলতেছিলেন যে, ইউরোপিয়ান লিবার্টির ধারণাগুলারেই আমাদের আগায়া নিয়া যাইতে হবে। রাষ্ট্রের হাতে বা কোন অথরিটি’র হাতে আমরা আমাদের ফ্রিডমরে বন্ধক রাখতে পারি না। এইরকম।…

তালাল আসাদ এবং সাবা মাহমুদ জুডিথ বাটলারের কথার উপরে আলাদা আলাদা রি-জয়েন্ডার দিছিলেন।

অন্য যে কোন ভালো আলাপের মতোই এই আলাপেরও কোন ফয়সালা হয় নাই। (মানে, আলাপ’টারে এখনো যে কেউ, তার মতো কইরা ইন্টারপ্রেট করতে পারেন, এনগেইজ হইতে পারেন।)

২.
“ক্যান সাব-অল্টার্ন স্পিক?” বইলা গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক যে সাব-অল্টার্নের কথা-বলার ক্যাপাসিটি’রে কোশ্চেন করছিলেন – তা তো না, বরং যেই যেইভাবে আমরা কোন জিনিসরে “কথা”র মর্যাদা দেই, সেইখানে অইগুলা কেন কথা হইতে পারে না – দেখার প্রিমাইজগুলারেই মেবি কোশ্চেন করতেছিলেন, রেটরিক কইরা। যেমন ধরেন, এই ফেসবুক পোস্ট কি কোন জ্ঞান-তাত্ত্বিক ঘটনা? 🙂 এইরকম। বেইজ’টা কি আসলে, কোন জিনিসরে “জ্ঞান-তাত্ত্বিক” বইলা ধইরা নেয়ার?

মানে, বেইজ’টা ঠিক করা লাগবে আগে। রিজন যদি ক্রিটিকের বেইজ হয় ফেইথ’রে সেইখানে কেমনে নিবো আমরা? – প্রশ্নটা খালি এইটা না, বরং কোন কোন রেফারেন্সের বেসিসে রিজন আর ফেইথরে ডিফাইন করবো আমরা?

তালাল আসাদ আর জুডিথ বাটলারের একটা কমন রেফারেন্স হইতেছে, ফুকো। তালাল আসাদ যেইভাবে ফুকোর ক্রিটিক এর জায়গারে কান্টের এনলাইটমেন্টেরই একটা এক্সটেনশন হিসাবে দেখতেছেন, সেইখানে বাটলারের কথা হইতেছে, ফুকো তো সেইখানেই থাইমা থাকেন নাই! আসাদ পরে বলছেন, ফুকো থাইমা থাকেন নাই ঠিকই, কিন্তু উনি ‘ডিসিপ্লিন অ্যান্ড পানিশমেন্ট’ এর জায়গা যেই টুল ইউজ করছেন সেইখানে ক্রিটিকরে এনলাইটমেন্টের এক্সটেনশন হিসাবেই নিছেন।…

তো, একটা সেট অফ রেফারেন্স’রে আপডেট করার ডেফিনিট কোন দিশা জুডিথ বাটলার দিতে পারছেন বইলা আমার মনেহয় নাই। আবার এর এগেনেস্টে আমাদেরকে ডিফরেন্ট ধরণের রেফারেন্সগুলারে আমলে নিতে হবে, সেইটা খালি কালচারাল ডিফেরন্সের জায়গা দিয়া ভরাট করা যাবে বইলা মনেহয় না, যেইটা তালাল আসাদ একভাবে ক্লেইম করতেছেন। সেক্যুলার স্টেইটই হোক আর ইসলামি সমাজ, ব্যক্তির ফ্রিডমরেই সেন্টারে রাখতে হবে সবসময়। তালাল আসাদ, সাবা মাহমুদ এবং জুডিথ বাটলার – কেউ এর এগেনেস্টে না; উনারা দুইটা দিক থিকা আসতেছেন, আর মিলতে চাইতেছেন একটা জায়গাতে, যেইখানে আমরা এখনো পৌঁছাইতে পারতেছি না, প্রাকটিক্যালি এবং ইন্টেলেকচুয়ালিও।

Leave a Reply