অক্টোবর ১, ২০২১
এইরকম কিছু ক্রিটিক আছে, যার উদ্দেশ্য হইতেছে ক্রিটিক করার নাম দিয়া অসম্মান করা, অপমান করা, ‘ভদ্রভাবে’ গালি-গালাজ করা; তো, অই ক্রিটিক নামের গু নিজের গায়ে না মাখানোটা, অসম্মান নিতে রাজি না হওয়াটাও রাইটারের একটা কাজ।
ইশিগুরো রাইটার হিসাবে উনার এক্সপেরিয়েন্সটা বলতেছিলেন এইভাবে যে, যখন রাইটার হিসাবে উনি পপুলার/পরিচিত হইতে শুরু করলেন তখন উনার সবচে ক্রুশিয়াল লার্নিং ছিল হইতেছে যে, না বলতে পারতে হবে, সব কথার জবাব দেয়ার কিছু নাই। রিডারের সব কনসার্ন, আর্গুমেন্ট রাইটারের জন্য সবসময় জরুরি না। এইরকম।
মানে, এমন না যে, রাইটার হইলে আপনার একটা ইগো থাকতে হবে; বরং বেশিরভাগ সময় রিডারের বা ক্রিটিকের ইগোর সাথে রাইটার হিসাবে আপনার যে এনগেইজ হওয়ার কিছু করার নাই – এই বুঝ’টা থাকতে হবে।
আপনার লেখা ভালো হইছে বা খারাপ হইছে, ইম্পর্টেন্ট হইছে বা ট্রাশ হইছে… এইগুলা অবশ্যই সাহিত্যিক-বিচারের ঘটনা; কিন্তু নিন্দা (এবং একইভাবে প্রশংসা) নিয়া রাইটারের তেমন কিছু করার নাই আসলে।
নিজের লেখালেখির জায়গাতে এই ডিস-কানেকশনটা খুবই জরুরি একটা জিনিস। অবশ্য যারা ‘কবিযশোঃপ্রার্থী’ তাদের হিসাব তো সবসময় আলাদাই।
অক্টোবর ২, ২০২১
এইরকম কথা দেখবেন আছে, যার মন ভালো তার ব্যবহার খারাপ বা মুখ-খারাপ হয়, কারণ শে সরাসরি কথা বলে, মনে কিছু রাখে না, এই-সেই। আর একইভাবে এইরকম কথাও চালু আছে যে, ভদ্রলোকেরা হইতেছে নিমচা-শয়তান, যেই লোকের মুখে মধু তার অন্তরে বিষ, এইরকম কথা-বাগধারা চালু আছে অনেক।
আমার কথা হইতেছে, এইগুলা সত্যি-মিথ্যার ঘটনা না এতোটা; মানুশের আচার-ব্যবহার নিয়া কিছু টেনডেন্সি তো খেয়াল করা-ই যায়, কিন্তু কোন ‘সত্যি’ বলা আসলে যায় না। বরং এইটা কইরা যা হয়, টেনডেন্সিগুলারে ফোকাসের জায়গাটাতে নিয়া আসা হয়। যা করা হইতেছে তারে স্পেসিফিক ঘটনা হিসাবে না দেইখা কিছু টেনডেন্সির ভিতরে আটকানো হয়। আর এইরকম বাগধারাগুলা, কোটেশনগুলা সিউডো-সায়েন্সগুলার মতো পলিটিক্যাল জুলুমের হাতিয়ার হিসাবেই মোস্টলি কাজ করে। (পটেনশিয়াল টেররিস্ট আইডেন্টিফাই করার মতো।…) আর বাজে-কথা বলার জায়গাটারে তো জাস্টিফাই করা-ই হয়।
মানে, এইরকম সিচুয়েশন তো আসলে আছেই যেইখানে গালি-গালাজ না কইরা পারা যায় না। বা সবার ইমোশনের লিমিট তো একইরকম না, এইরকমের জিনিসগুলা আছে। কিন্তু আমি যেইটা বলতে চাইতেছি, পাবলিকলি গালি-গালাজ করাটারে, বাজে-বিহেভটারে গ্লোরিফাই করার কিছু নাই। কিন্তু পাবলিকলি এরোগেন্স শো করতে পারাটা, ক্রুয়েলিটি দেখাইতে পারাটা খালি পাওয়ারের নিশানাই না, একটা হিরোইজমেরও জায়গা। যে, কি তেজ’রে বাবা! এইরকম।
এখন, আমার যে এই দোষ নাই – তা না, কিন্তু এইরকমের ঘটনা আমার দিক থিকা যখন ঘটে সেইটারে আমার একটা দোষ হিসাবেই আমি দেখতে পাই।
বাংলাদেশে এখন এমন একটা সময়ে, যখন ইনসেনিটি শো করা, প্যারানয়েড থাকা এবং সুইসাইড করাটা ‘বিপ্লবী’ কাজ হিসাবে মার্ক করা হয়, তখন পাবলিকলি মুখ-খারাপ না করাটা অনেক সাহসের কাজ না হইলেও অনেক পেশেন্সের একটা কাজ; প্যাশন না-থাকার ঘটনাও না, সবসময়।
গালি-গালাজ কইরা ‘ক্ষোভ-প্রকাশ’ করা যাবে না বা ‘প্রতিবাদ’ করা যাবে না – এইটা আমার কথা না, বরং গালি-গালাজ করাটারেই ‘প্রতিবাদ’ বানায়া না ফেলাটা বেটার!
মানে, এর একটা সেক্সিনেস আছে, এসথেটিক প্রটেস্টগুলার মতই, যেইটা তাদের সেক্সিনেসের ভিতরেই হারায়া যায়! মানে, পলিটিক্যালি আর এফেক্টিভ থাকতে পারে না, শেষমেশ একটা পলিটিক্যাল ফ্যাশন হিসাবেই থাইকা যায়।
এই ‘সহজভাবে’ (এবং ভুলভাবে) বলার ভিতর ডুইবা যাওয়া যাবে না। ডাইরেক্টলি কথা বলা মানে মিনিং’রে রিডিউস করা না – এই দুইটা জিনিস যে আলাদা, এইটা বুঝতে পারার ভিতর দিয়া আমাদেরকে যাইতে হবে।…
এখন যখন আমাদের পক্ষে ভদ্রতা দেখানো সম্ভব না, আমাদেরকে সবচে বেশি ট্রাই করতে হবে ভদ্রতা দেখানোর না, বরং ভদ্রতা-না-দেখানোটাই যেন কালচার না হয়া উঠে, প্রতিবাদ না হয়া উঠে, সেই জায়গাটারে মার্ক করা বরং।
অক্টোবর ৩, ২০২১
নাশতার হোটেল দেয়ার একটা ইচ্ছা আছে আমার। [এই জীবনে দিতে পারবো – এই আশা কমই, কিন্তু ইচ্ছার কথা বলতে তো দোষ নাই! এইজন্য বলতেছি।] চেইন-স্টোরের মতন হবে ব্যাপারটা। একটা বা দুইটা প্যাকেজ থাকবে; বইসা খাইতে পারবেন বা নিয়া যাইতে পারবেন। ৫০ টাকা দাম হবে। এইরকম। মেনু ঠিক করতে পারি নাই এখনো। 🙂
কিন্তু ইজি টু প্রিপেয়ার হইতে হবে, যাতে র-ম্যাটেরিয়াল ফ্রিজে কয়েকদিন রাখা যায়। চিতই পিঠা আমার প্রেফারেন্স লিস্টে আছে, কিন্তু একটা মেশিন বানাইতে হবে যেইটা চালের গুড়া লিকুইড কইরা দিলে পিঠা বানায়া দিতে পারবে। এই মেশিনটা ছাড়া হবে না। তারপরও কোয়ালিটি-টেস্টার তো লাগবেই।
[বাংলাদেশে মানুশ-টানা রিকশার জায়গা থিকা কে সাইকেল-রিকশা বানাইছে – কেউ কি জানেন? বা এখন যে ব্যাটারি রিকশা বানানো হইছে, এইটাও একটা ছোটখাট রেভিউলেশন। যদিও আমরা আবিষ্কারকের নাম জানি না। এইরকম চিতই-পিঠা বানানির মেশিন কেউ বানাইলেও আমরা নাম জানবো না হয়তো, কখনোই।…]
মেনুটা হইতে পারে – দুইটা চিতই-পিঠা, সাথে কিছু – হালুয়া, সব্জি (?) [বেশি লিকুইড হইলে ক্যারি করা যাবে না…], ডিম-সিদ্ধ আর এককাপ-চা। একটা ভেন্ডিং-মেশিন বানাইতে হবে দুধ-চা আর রঙ-চা’র। [আজব, এখনো কেউ বানায় নাই! ফ্লাক্সের চা’র কথা বলতেছি না আমি।…] কিন্তু মেনু ফাইনাল করার আগে কয়েকজন নিউস্ট্রেশনিস্টের সাথে বসতে হবে আসলে।… মানে, প্ল্যান’টা ওয়ার্কেবল বইলা আমি মনে করি। [আপনারা হাসলেও; মানে, অনেকে তো হাসছে, আর অনেকে তো হাসবেনই।]
তবে একটা মুশকিল আছে। সেইটা আজকে মনে হইলো।
ঢাকা শহরে কিন্তু অলরেডি সেট একটা নাশতার মেনু আছে – পরোটা, সব্জি-ডাল, ডিমভাজি। এভারেজে ৪০/৫০ টাকার মতোই পড়ে। অফিসে যাওয়ার পথে লোকজন খাইতেছে, কিইনা নিয়া যাইতেছে, বা অফিসের পিয়ন দিয়া কিনায়া নিয়া যাইতেছে। (ফুডপান্ডা, হাংরিনাকি’রা অই লেভেলে যাইতে পারে নাই এখনো।)
কিন্তু এক্সপেরিয়েন্স থিকা দেখছি, কাস্টোমাইজ জিনিস বেশি পছন্দের, আমাদের। ধরেন, পরোটা – তেলে-ভাজা, তেল-ছাড়া, কড়া-ভাজা, কম-ভাজা; ডাল-ভাজি, শুধু ডাল, শুধু সব্জি, ডিমভাজিতে একটু ডাল; বেশি কইরা তেল-মরিচের ভাজি, ডিমপোচ, এমনকি ডিমপোচে একটু পেঁয়াজ-মরিচ… নানান ধরণের কাস্টোমাইজশনের রিকোয়েস্ট থাকে। সবসময় প্রেফারেন্সের জায়গা থিকা যে আসে – তা না, যেহেতু আমি কাস্টোমাইজ করতে পারতেছি, কেন করবো না! – এইটার জায়গাটাই মনেহয় বেশি। ‘দামি হোটেলে’ দেখবেন এই কারণে কাস্টোমাইজেশনের কথা বলে অর্ডার নেয়ার সময়, এতো কাস্টোমাইজেশনের কথা বলেন যে, বিরক্তই লাগে!
তো, যারা সেট-মেনু খাইতে চাইবেন না, উনাদের জন্য তো সবসময় অন্য ব্যবস্থা আছেই। কিন্তু কিছু কনভিনিয়েন্স বা সহজ-ব্যবস্থাও মনে হইছে বানাইতে পারলে ভালো।
আমি বলতে চাইতেছি, বানানো সহজ হওয়া, ডিস্ট্রিবিউশন থাকা, বা চোখের সামনে থাকা এইগুলাও ঘটনা! মানুশ যে এখন নুডুলস, বার্গার, পিজা খায় এর একটা বড় কারণ হইতেছে রাস্তার মোড়ে মোড়ে এইগুলা পাওয়া যায়; আর দোকানও যে বেশি তারও কারণ হইতেছে এইগুলা বানানো সহজ। টেস্ট, রুচি, ক্লাস… এইগুলা তো আছেই, অইগুলা বাদ দিয়া বা অইগুলাসহই নাশতার চেইন-স্টোর বানাইতে হবে আসলে 🙂
#########
ঢাকা ভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষার দিনটার কথা মনে আছে আমার। পরীক্ষার কথা মনে নাই, পরীক্ষার পরের একটা ঘটনার কথা মনে আছে।
আমি যেহেতু ঢাকা কলেজে পড়তাম আর স্টুডেন্ট পলিটিক্স করতাম [অইটা মোটামুটি আমার জীবনের কলংকজনক (মানে, খুবই সাকসেসফুল) একটা অধ্যায় 😛 লেখবো এক সময়], কলেজ লাইফে কলাভবন, মধুরক্যান্টিন আর টিএসসি’তে যত সময় কাটাইছি ভার্সিটি লাইফেও এতো সময় অইসব জায়গায় যাই নাই।…
কলাভবনেই সিট পড়ছিল মনেহয়। পরীক্ষা শেষ কইরা কি করবো, বুঝতে ছিলাম না। তখন এজিবি কলোনি’তে থাকি রিজিয়া আন্টির বাসায়। বাসায় গিয়া তো কোন কাজ নাই। তো একটা সিগ্রেট ধরায়া মলচত্তর পার হয়া, ভিসি’র বাসার অপজিটের রাস্তা দিয়া আস্তে-ধীরে হাঁইটা যাইতেছিলাম। তখন ভার্সিটিতে পড়া দুইজন স্টুডেন্ট ফুটপাতে বইসা চেহারা-সুরুত দেইখা রায় দিতেছিল কে চান্স পাইতে পারে, আর কে পাইবো না; তো, আমারে দেইখা কইলো, এ তো চান্স পাইবোই! ভাব’টা দেখছোস, কেমনে সিগ্রেট টানতেছে! যেন অলরেডি স্টুডেন্ট!
তখন না বুঝলেও, পরে টের পাইছি যে, বাংলাদেশে ভার্সিটিতে পড়া আসলে (অন্য সব কিছুর বাইরেও) মোস্টলি একটা এটিটুডের ঘটনা!
অক্টোবর ৪, ২০২১
একটা বড় মুশকিল মেবি হইতেছে, সেগমেন্টেট কইরা ভাবা এবং এর বিপরীতে একটা টোটাল সলিউশন দিতে চাওয়া।
এইটা মনে হইলো গার্মেন্টেসের চাকরি-করা লোকজনদেরকে নিয়া ভাবতে গিয়া। অনেক এনজিও’রা হয়তো উনাদের, শরীর-স্বাস্থ্য, থাকা-খাওয়া নিয়া কনসার্ন। উনাদের ‘উন্নতি’ চান। আবার অনেকে আছেন উনাদেরকে দিয়া শ্রেণী-সংগ্রাম করায়া ক্ষমতার জায়গাটারে চেইঞ্জ কইরা তারপরে এই জায়গাগুলা ঠিকঠাক করতে চান। মানে, উনাদের চাওয়া’টা ভুয়া – এইটা আমার কথা না, কিন্তু বেশিরভাগ সময়েই দেখবেন, কথার কথা-ই। এইখানেই আমি মনে করি এই ধরণের চিন্তাগুলার ঝামেলা’টা, আলাদা আলাদা কইরা দেখা বা একবারে টোটাল সলিউশন করতে চাওয়া।
তো, এইখানে আমার সাজেশন’টা কি? আমার সাজেশন হইতেছে, আগে একটা জায়গা ঠিক করেন, যে এইটা এইটা দরকার, তারপরে এই দরকারের জায়গাগুলারে ইন্ট্রিগ্রেট করেন, একসাথে মিলানোর ট্রাই করেন, তারপরে দেখবেন অই ইন্ট্রিগ্রেশনের জায়গা থিকা নতুন আরো জায়গা তৈরি হইতে পারতেছে।
উদাহারণ দিয়া বলি, বেতন বাড়ানোর আন্দোলন করা যাবে না – তা না; বা মেয়েদেরকে প্রতি মাসে ফ্রি প্যাড সাপ্লাই করা যাবে না – তা-ও না; বরং এই জায়গাটাতে জোর দেন যে, সব কারখানায় লাঞ্চের ব্যবস্থা করতে হবে! মানে, যারাই গার্মেন্টস কোম্পানি করেন – এইটা করার কথা যেন মাথায় রাখেন। আগে ইকোনমিক প্ল্যানের মধ্যে রাখেন, সামাজিক-অভ্যাস করেন, তারপরে সরকারি আইন করেন। বেতন মাসের ১-৩ তারিখের মধ্যে দেয়ার ব্যবস্থা করেন।… মানে, এইটা অবশ্যই এনজিও-মূলকভাবে বা দাবি-দাওয়ার বাইরে গিয়া করতে হবে – তা না, বরং উদ্দেশ্য হিসাবে ‘উন্নয়ন’ বা ‘বিপ্লব’ সামনে থাকলে মুশকিল; তখন এইরকম সোশ্যাল প্রাকটিসের জায়গাগুলারে সেকেন্ডারি মনে হইতে পারে, যেইটা ঠিক না।
মানে, সোশ্যাল চেইঞ্জগুলারে নন-পলিটিক্যাল ভাবার এবং পলিটিক্যাল-উইপেন হিসাবে ইউজ করার বাইরে এর জায়গাটারে রিকগনাইজ করা দরকার। এইরকম।
#########
খালেদা জিয়ারে কেন বাংলাদেশের ফেমিনিজমের ফিগার হিসাবে ভাবতে পারি না আমরা?
মানে, আইকন ভাবা বাদ দেন, ‘শিক্ষিত’ ‘কালচারাল’ সমাজে উনার ভ্রু নিয়া, মেকাপ নিয়া, এইট-পাশ নিয়া হাসি-ঠাট্টা করাটা একটু ‘নারীবাদী’ হওয়ার ঘটনাই বরং! উনার যেই সাজগোজ করা, গ্ল্যামার নিয়া থাকা, ‘মা, মেয়ে বা বোন’ হওয়ার বাইরে একটা পারসোনালিটি শো করা, সেইটারে ‘নারী-অধিকার’ ভাবার কথা আমি বলতেছি না, কিন্তু উনার এই এপ্রোচ’টা কি খুবই আউটস্ট্যান্ডিং একটা জিনিস না?
আমাদের এই সাব-কন্টিনেন্টে যেইসব ফিমেইল পলিটিক্যাল লিডার আমরা পাইছি – ইন্দিরা গান্ধী, বেনজির ভুট্টো, শেখ হাসিনা, অং সান সুচি… উনারা সবাই হইতেছেন বাপের মেয়ে (ফাতেমা জিন্নাহ ছিলেন বইন), প্যাটিয়ার্কির একটা এর্ন্ডোসমেন্ট এইখানে আছে। [যেই কারণে আমরা ধারণা, ইসলামেও ফাতেমা (রা.) যতোটা একসেপ্টেবল আয়েশা (রা.) এতোটা না, বা পলিটিক্যালি উনারে ইন-এফেক্টিভ কইরা তোলা হইছিল…] খালেদা জিয়া এই জায়গাটাতে একসেপশন। যদিও দাবি করা হয় সমান-সম্পর্কের একটা ঘটনা, তারপরেও বউ’রে তো কখনোই জামাইয়ের সমান ভাবতে রাজি না আমরা; মানে, এই জায়গাটা উনারে এচিভ করতে হইছে পলিটিক্যালি। একদম সিম্পল জায়গা থিকাও দেখেন, জামাই মারা-যাওয়ার পরে কয়টা বউ জামাইয়ের সেই পজিশন, সম্পত্তি বা সোশ্যাল জায়গাটা ধইরা রাখতে পারে, আমাদের সমাজে? এইটা সহজ কাজ তো না-ই, বরং এইরকম এক্সাম্পলও কম এবং ‘লোভী-মহিলা’ হিসাবেই পোর্টেট করা হয়। খালেদা জিয়াও এই বাজে-ভাবনা’টার কম-বেশি ভিক্টিম, আর এইটাতে ‘প্রগতিশীলদের’ কন্ট্রিবিউশনটাই বেশি।…
আমি বলতেছি না যে, উনার জায়গাগুলারে সেলিব্রেট-ই করা লাগবে, কিন্তু ইভেন আলাপের ইস্যুও হয়া উঠতে পারে না কেন?
খালেদা জিয়ারে নিয়া খুব কঠিন এবং কমপ্লেক্স কিছু এথিক্যাল এবং এসথেটিক্যাল এলার্জি আছে বাংলাদেশের ইন্টেলেকচুয়ালদের। এই জায়গাটা এক্সপ্লোর করাটা খুবই দরকারি একটা জিনিস, পলিটিক্যাল এবং ইন্টেলেকচুয়ালিও।
অক্টোবর ৫, ২০২১
– দুই হাজার কোটি টাকার গল্প দিয়া মিডিয়া-কন্ট্রোলের ঘটনা’টা নিয়া –
যে কোন আলাপে ডেটা বা ইনফরমেশন এবং রেফারেন্স একটা ইম্পর্টেন্ট জিনিস। এইগুলা দিয়া যতোটা না একুরেসি প্রমাণ করা যায়, তার চাইতে আলাপের টেনডেন্সিগুলারে বেশি খেয়াল করা যায়।
যেমন ধরেন, বিদেশি টিভি-চ্যানেলগুলা বন্ধ করার ব্যাপারে যেই ডেটা’টা হাইলাইট করা হইতেছে যে, দুই হাজার কোটি টাকার ইনকাম মিস করতেছে গর্ভমেন্ট। এখন মিস করতেছিল না – এইটা আমার পয়েন্ট না।
কথা হইতেছে, ডিভাইস হিসাবে টিভি খালি ব্যাকডেটেড না, বাতিলও হয়া উঠতেছে তো, দিন দিন। যার ফলে নিউজ-বিজনেস বন্ধ হয়া যাবে না, বরং টিভি-চ্যানেলগুলা আগের ফরম্যাটে আর টিইকা থাকতে পারার কথা না। কোম্পানিগুলাও টিভি-পত্রিকাতে অ্যাড দেয়ার পরিমাণ কমায়া দেয়ার কথা। মানে, বছরে দুই হাজার কোটি’র হিসাব যে ফিক্সড নাম্বার না – এইটা কমনসেন্স দিয়াই বুঝা যায়; ট্রেন্ডটা যে decreasing, এইটাও টের পাওয়ার কথা।
এখন টিভি-স্টেশন হিসাবে আপনি কি করবেন – এই অ্যাড দেখানোর টাকা তো আপনি নিজের পকেট থিকা দিবেন না, কোম্পানিরে চার্জ করবেন; রেইট ১০টাকা থাকলে এখন এর লগে ১টাকা বেশি দিতে কইবেন। তখন কোম্পানিগুলা দেখবে, এই প্রডাক্ট বাংলাদেশে বেচে কিনা, যদি বেচে, মার্কেট থাকে একস্ট্রা ১ টাকা দিবে; যদি না থাকে তাইলে দিবে না। ৫০টা কোম্পানির মধ্যে যদি ৪০টারই এই অবস্থা থাকে, টিভি-স্টেশনগুলা কি করবে? বলবে, থাক, দরকার নাই বাংলাদেশে দেখানোর। (ভিউয়ার যেহেতু নাই, বাংলাদেশের ইস্যুগুলারেও প্রায়োরিটি দিতে পারবে না।) এর চে ইউটিউবে বা নিজের ওয়েবসাইটে ফিড বেচবে বরং, বা অল্টারনেটিভ রাস্তা বাইর করবে।…
এখন গর্ভমেন্ট কি এইটা জানে না? 🙂 অবশ্যই জানে। কিন্তু এই দুই হাজার কোটি টাকার গল্পটারে সামনে রাখে কারণ টাকা-কামানো, রেভিনিউ বাড়ানো এইখানে মেইন ইস্যু না। মেইন ইস্যু হইতেছে পাবলিকরে ভিজ্যুয়ালি আরো বন্দী কইরা রাখা।
গ্রামের মোড়ের চায়ের দোকানগুলাতে টিভি চলতো আগে, এইটা কইমা আসতেছে এখন, কিন্তু একটা অভ্যাস থিকা বাইর হইতে টাইম লাগে তো মানুশের। পত্রিকাতে কিছু নাই জানে মানুশ, তারপরও পত্রিকা কিনে; এইরকম দুপুরবেলা, সন্ধ্যাবেলা টিভি’র সামনে বইসা থাকার অভ্যাস থিকা সরতেও সময় লাগবে।
সরতেছে একটু একটু; এই কারণে সোশ্যাল-মিডিয়ার এলগারিদম টিউন করাটা ইম্পর্টেন্ট। এইরকম কন্ট্রোল পয়েন্টগুলা আরো বাড়তে থাকবে।…
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, এইটা টাকা-পয়সা, নিয়মের ঘটনা না; একটা কন্ট্রোল পয়েন্টরে এস্টাবলিশ করা বরং। এই জায়গা থিকা আরো আরো জিনিস পাইবেন, ফিউচারে।
স্টার-জলসা নিয়া হাসাহাসি করা বলদগণ, নর্থ-কোরিয়া’র মতন প্লেইন অ্যান্ড সিম্পল লাইফ-স্টাইলে থাকার জন্য রেডি হন!
#########
মহাত্মা গান্ধীরে নিয়া বলতে গিয়া জর্জ অরওয়েল বলতেছিলেন, একজন সেইন্ট বা পীর-ফকির ইনোসেন্ট প্রমাণিত হওয়ার আগ পর্যন্ত তারে বাটপার বইলাই ধইরা নিতে হবে আমাদেরকে।
এইরকমভাবে, আমি মনে করি যে কোন ক্রাইমে বিচারের রায় না হওয়া পর্যন্ত পলিটিক্যালি পাওয়ারফুল পক্ষটারেই দোষী বইলাই ভাবতে হবে আমাদেরকে। এইটা সবসময় ঠিক হবে না, কিন্তু একটা জেনারেল রুল হিসাবে সবসময়ই হেল্পফুল হওয়ার কথা।
অক্টোবর ৬, ২০২১
বাংলা-বানান
বানানের ব্যাপারে এই জিনিসটা খেয়াল কইরেন যে, ‘ইংলিশ শব্দ’ বা ‘আঞ্চলিক শব্দ’ হইলে সেইখানে আন-নেসেসারি য-ফলা (্য), রেইফ (র্) বা দুইটা শব্দ একলগে মিলায়া (যুক্তাক্ষর) লেখা হয়।
এর পারপাস আসলে ‘সঠিক উচ্চারণ’ না এতোটা, বরং দেখানো যে, দেখেন (দ্যাখেন) এইগুলা নরমাল (নর্মাল) না; ‘অপ্রচলিত’ শব্দ! মানে, এইগুলা করা যাবে না, বা এইভাবে লেখা ভুল – এই জায়গা থিকা দেইখেন না; এইভাবে লেখাটা কি পারপাস সার্ভ করে, সেই টেনডেন্সি (টেন্ডেন্সি) নিয়া বলতে চাওয়া। যে, দেখেন, ‘ইংলিশ শব্দ!’ কি কঠিন বানান!
আবার কঠিন বইলাই দেখবেন ‘ইংলিশ’ ও ‘আঞ্চলিক’ শব্দগুলার একটা কদর তৈরি হইছে, তৎসম শব্দের মতন! কিন্তু ইংলিশ ওয়ার্ড যেইগুলা বাংলাতে হরদম বলি-লেখি আমরা অই ইংলিশ উচ্চারণের মতো তো থাকতে পারার কথা না, কোনভাবেই। love কখনোই লভ্ হবে না, লাভ-ই হবে, এমনকি লাব-ই হইতে পারে।…
মানে, আমি বলতে চাইতেছি ‘সঠিক উচ্চারণ’ ও ‘সঠিক বানান’ যে হয় না – তা না; কিন্তু ব্যাপারগুলারে সিঙ্গুলার হিসাবে না নিতে পারাটা বেটার; ইভেন এই ‘সঠিক’র জায়গাটা নিয়া ক্রিটিকাল হইতে পারাটা দরকার।
#########
প্যাশন ও প্রফেশন
অনেকে এই সাজেশন দেন যে, যেই জিনিসে আপনার প্যাশন নাই, সেইটারে প্রফেশন হিসাবে নিবেন না! তো, আমি বরং একটু অন্য কথাই বলবো, আপনার প্যাশনরে আপনার টাকা-কামানোর টুল বানায়া নিয়েন না!
মানে, ধরেন লেখালেখি; লেইখা টাকা কামানো যাবে না – তা না; যদিও টাকা-পয়সা পাওয়া যায় না তেমন, কিন্তু পাইলে তো ভালো, সবসময়। কিন্তু যখন এইটা আপনার টাকা কামানোর উপায় হয়া উঠে, এর ভিতরের আত্মা’টা মারা যাওয়ার কথা। খালি লেখালেখি না, ধরেন ডাক্তারিও, বা আর্কিটেকচারও যদি আপনার প্যাশন হয়, প্রফেশন হিসাবে নিবেন না – তা না; কিন্তু যখন টাকা-কামানোর রাস্তা হয়া উঠে তখন প্যাশনের জায়গাটা সাফার করার কথা। কোন রোগ নিয়া স্টাডি করা, কোন ডিজাইন নিয়া এক্সপেরিমেন্ট করার জায়গাটা অইভাবে এক্সপ্লোর করাটা কঠিন হওয়ার কথা।
বাঁইচা থাকতে হইলে টাকা-পয়সা কামাই করা তো দরকারি জিনিসই: কিন্তু এইটার লাইগা প্যাশনরে প্রফেশন বানাইয়েন না – এইটা আমার সাজেশন না, কোনভাবেই। বরং এইটা বুঝতে পারাটা ভালো যে, প্যাশনের জায়গাটা সবসময়ই টাকা-পয়সা কামানোর চাইতে আলাদা একটা ঘটনা।
অক্টোবর ৭, ২০২১
বাকশালের অর্থনীতি (১)
ভার্সিটিতে যারা ইকনোমিকস সাবজেক্ট নিয়া পড়াশোনা করছেন তাদের বাইরে আবু মাহমুদের নাম খুববেশি লোক মনেহয় জানেন না। আমরা যে পশ্চিম পাকিস্তানের অর্থনৈতিক শোষণের কথা শুনি, এইটা উনি লোকেট করছিলেন। উনার লেখাপত্রের ভিতর দিয়া এই পলিটিক্যাল কনশাসনেসটা তৈরি হইছিল। যেই কারণে উনারে ঢাকা ভার্সিটির ইকনোমিকস ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান হইতে দেয়া হয় নাই। এই নিয়া মামলা-হামলা-আন্দোলন হইছিল অনেক। ১৯৬৭ সালে উনারে দেশ ছাড়তে হইছিল। মার্কসিস্ট ইকোনমিতে ‘এশিয়াটিক মোড অফ প্রডাকশন’র জায়গাটাতে উনার থিওরেটিক্যাল কন্ট্রিবিউশনও আছে।
আবু মাহমুদের লেখালেখি ও চিন্তা-ভাবনার বেইজ থিকাই পূর্ব-পাকিস্তানে যে অর্থনৈতিক শোষণ হইতেছে, সেইটা একটা পলিটিক্যাল এজেন্ডা হয়া উঠে। আমি বলতেছি না উনারে পদক-টদক দেন! এইটা আমার কথা না। হিস্ট্রিক্যাল ফ্যাক্ট হিসাবে রিকগনাইজ করতে পারলে ভালো। কারণ তাইলে আমরা দেখতে পাবো, ইন্টেলেকচুয়াল থটগুলা কিভাবে আমাদের পলিটিক্যাল জায়গাগুলারে শেইপ-আপ করে।
উনারই একজন শিষ্য হইতেছেন আবুল বারাকাত। যিনি জামাতে ইসলামের অর্থনীতিরে লোকেট করার ভিতর দিয় নয়া বাকশালের অর্থনৈতিক শোষণ ও লুটপাটের পলিটিক্যাল লেজেটিমিসি প্রোভাইড করছেন। একই ধরণের কাজ; কিন্তু একটা পিপল’রে বেইজ কইরা করা, আরেকটার বেইজ হইতেছে পলিটিক্যাল পাওয়ার। আমার ধারণা, এর পুরষ্কার আবুল বারাকাত সাহেব পাইছেন।
কিন্তু এখন আমাদের “বাকশালের অর্থনীতি” নিয়া লেখাগুলা লেখতে পারা দরকার। শোষণ আর লুটপাট খালি বিদেশি, অচেনা-অজানা লোকজন করে না; দেশি টাউট-বাটপার’রা তার চাইতে বেশি করে, করতেছে। এইগুলা আমরা জানি না – তা না, কিন্তু যারা বলতে চাইতেছি না, এরা একটা ‘ডর’ থিকা করতেছেন – এইটাতে আমার বিশ্বাস নাই; বরং এই যে ‘অর্থনৈতিক বিশ্লেষক’ বইলা একটা ক্যাটাগরি আছে পত্র-পত্রিকার, এরা ডাইরেক্টলি বা ইন-ডাইরেক্টলি এই বাকশালি অর্থনীতির বেনিফিশিয়ারি। মানে, উনাদের সাহস নাই বা অই ইন্টেলেকচুয়াল এবিলিটি নাই – এইটা সত্যি-কথা হওয়ার চান্স খুবই কম।…
আমাদের শুরু করা উচিত এই জায়গা থিকা যে, বাকশালের ১২/১৩ বছরের আমলে কতো কোটি টাকা বিদেশে পাচার হইছে? সেইটা কি পাকিস্তান আমলের ৩৪ বছরের চাইতে কম নাকি বেশি? আসেন, আলাপ’টা তুলেন এইবার!
বাকশালের অর্থনীতি (২)
বাকশালি অর্থনীতির মেইন ফিচার হইতেছে দুইটা। এক হইতেছে, মেগা সরকারি প্রজেক্ট। একটা কম্পেয়ার কইরা দেখেন, ১৯৯১-২০০৮ এবং ২০০৯-২০২১’র হাজার-কোটির টাকার উপরে সরকারি প্রজেক্টের নাম্বার ও সাইজ কি রকম? আন্দাজ থিকা বলতেছি এটলিস্ট ৫/৭ গুণ বেশি হওয়ার কথা।
সেকেন্ড হইতেছে, সরকারি লাইসেন্স, ঠিকাদারি, সব কাজকাম নিজের দলের লোকজনরে দেয়া। এইটা মোটামুটি কমন প্রাকটিস হইলেও এর শুরু হইতেছে শেখ মুজিবুর রহমান যখন পূর্ব পাকিস্তানের শিল্পমন্ত্রী ছিলেন যুক্তফ্রন্ট সরকারের আমলে। অইটার কথা আমরা ভুইলা যাই বা ফ্যাক্ট হিসাবে বলাবলি করি না তেমন। তখন উনি সরকারি লাইসেন্সগুলা বিহারিদের হাত থিকা নিয়া বাঙালিদেরকে দেন; যেই কারণে দেখবেন বাংলাদেশের ‘বনেদি’ ব্যবসায়ীদের বেশিরভাগই হইতেছে আওয়ামী লীগের সার্পোটার; সেইটা এই লিগাসি’রই একটা ঘটনা হওয়ার কথা, কম-বেশি। এখনো দেখবেন, তাহাজ্জুদের নামাজের ভোটে পাশ হওয়া লোকজন যে এই ‘খাওয়া-পরা’র খোটা দেন, এইটা এইরকম একটা ঘটনাই। যেইটা জনগণরে দেয়া হয় না, আশে-পাশের লোকজনরে দেয়া হয়, হইতেছে। এমনকি বিএনপি’র পলিটিক্যাল বেইজটারও শুরু যখন প্রাইভেটাইজেশন শুরু হয়; তখন নতুন ব্যবসায়ীরা নিজেদের মতো বিজনেস কইরা টাকা কামাই করার সুযোগ পাইছিলেন। উনারাও অনেকদিন বিএনপি’র প্রতি গ্রেটফুল ছিলেন। এরপরে এরশাদ আমলে দেখবেন সরকারি কোম্পানি ব্যক্তি-মালিকানায় বেচা’টারে (আসলে পাচার করাটারে) একটা ইকনোমিক পলিসি বানানো হইছিল, যেইটা আর ব্যক্তি-অধিকারের জায়গাতে থাকে নাই, বরং লুটপাটের একটা ঘটনাই ছিল। তারপরও টাকা পাচার কমই হইছে মনেহয়, অইগুলা পলিটিক্যাল পাওয়ার ধইরা রাখার কাজেই ইউজ হইছে বেশি। এই জিনিসটা এখন টেরিবল জায়গাতে রিচ করছে। একটা পলিটিক্যাল ট্রাডিশন না খালি বরং একটা ‘রাজনৈতিক অধিকার’র জায়গাটাতে গিয়া পৌঁছাইছে। যে, আমার দল/আমার ক্যান্ডিডেট এখন এমপি/চেয়ারম্যান, সরকারি কাজ আমি কেন পাবো না?
আর কাজ পাওয়া না খালি, বরং ‘দলের লোকজনদেরকে কাজ দিতে হবে’ – এই কারণে সরকারি কাজের টেন্ডার বানানো হয়। অনেক সময় দেখা যায়, আসলে কাজই নাই কোন! (মানে, এইটার খবর যে পাই না এর কারণ এইটা না যে, দেশে সাহসী সাংবাদিকদের অভাব, বরং মফস্বলের সাংবাদিকরাও এইসব কাজের বা টাকার ভাগ নিয়মিতই পান।)
সরকারের মেগা-প্রজেক্ট এবং প্রজেক্টের ঠিকাদারি, কমিশন, লেন-দেন এবং এর টাকা-পাচার এইভাবে একটা এন্টি-পিপল বাকশালি অর্থনীতির কোর জায়গা। এইখানে নয়া বাকশাল হইতেছে, থার্ড একটা জায়গাতে ইন্টারভেইন করছে, যেইটা লুটপাটের কোরাম’টারে কমপ্লিট করছে। সেইটা হইতেছে – প্রসেসটাতে সরকারি লোকজনরে ইনক্লুড করা। আগে যে এইটা ছিল না – তা না, কিন্তু ব্যাপারটার এখন ‘প্রাতিষ্ঠানিকীকরণ’ হইছে।
তার মানে এইটা না যে, মন্ত্রী-এমপি-সরকারি দলের লোকজন ইনোসোন্ট; বরং উনারা এই সরকারি কমর্চারি-পুলিশ-মিলিটারি-এলিট সাংবাদিকদের উপ্রে ডিপেন্ডেড এবং টাকার শেয়ার উনাদেরকে যেইটা দিতে হইতো সেইটা খালি বাইড়াই যাইতেছে না, প্রজেক্ট বানানো এবং বিল পাশ করানোর অথরিটির জায়গাটা চেইঞ্জ হইছে এখন। যেহেতু গত ইলেকশনে পাবলিকের ভোট উনারাই দিছেন, জনগণ তো উনারাই! এই তিনটা জিনিস – সরকারি দলের লোকজন এবং সরকারের কর্মচারিরা আর কনফ্লিক্টিং কোন সিচুয়েশনে নাই, বরং একটা আরেকটা পরিপূরক। ভায়রা ভাই। এরা সবাই বাকশালি রাজনীতির লোক এবং বাকশালি অর্থনীতির মেইন ড্রাইভার।
এইটা শুরু হইছিল ১৯৯৬ সালে ‘জনতার মঞ্চ’র ভিতর দিয়া। তারও আগে ১৯৭৫ সালে বাকশাল ডিক্লারেশনের ভাষণে বলা হইছিল, সরকারি কর্মচারিরাও বাকশালের মেম্বার হইতে পারবেন। আর এখন বাকশালের মেম্বার না হইলে সরকারি চাকরি পাওয়াটাই টাফ। যেই কারণে ‘কোটা মুভমেন্ট’টা ইম্পর্টেন্ট ছিল, অইটা ছিল একটা লাস্ট রিসোর্ট।
এই যে থার্ড পার্ট’টার সিগনিফিকেন্স আসলে আরো বেশি, এই সরকারি কমর্চারি-পুলিশ-মিলিটারি-এলিট সাংবাদিকরা – এরাই আসলে নয়া বাকশালের মেইন অথরিটি। মন্ত্রী-এমপি’রা হইতেছে ফেস’টা খালি; যারা আসল প্লেয়ার উনারা মোস্টলি ‘ডার্ক সাইটে’ আছেন।
যার ফলে ট্রেডিশনাল ইকনোমিক ডেটা দিয়া বা এগজিস্টিং প্রসেস, এনালাইসিসগুলারে লোকেট করা যাবে না। যতক্ষণ না পর্যন্ত বাকশালি রাজনীতি’টারে এর লগে রিলেটেড কইরা আমরা দেখতে পারবো। এখনো পর্যন্ত আমরা মনে করি, দেশের মানুশ কোনদিন দেশের মানুশের ক্ষতি করতে পারে না, টাকা চুরি কইরা বিদেশে পাচার করতে পারে না, পালায়া যাইতে পারে না, চোখের সামনে হাজার হাজার এক্সম্পাল থাকার পরেও; এর কারণ হইতেছে ন্যাশনালিস্ট বা জাতীয়তাবাদী চিন্তা।
এই কলোনিয়াল চিন্তার ঘোরটোপ থিকা না বাইর হইতে পারলে, চুরি’রে চুরি বইলা না ভাইবা ‘উন্নয়ন’ বইলাই ভাবতে থাকবো আমরা। মানে, এইখানে চিন্তার বেইজটা থিকাই শিফট করতে পারাটা জরুরি, সবচে আগে। ইকনোমিক আলাপের বেইজটা দেশ না, বেইজ হইতেছে পিপল; ফ্যাসিবাদি মেগা-প্রজেক্ট ও ন্যাশনাল-প্রাইড উৎপাদন না, বরং সমাজ এবং তার মধ্যে ইন্ডিভিজ্যুয়াল মানুশের ফ্রিডম।
##########
– ভালোবাসা কি জিনিস? –
সিগ্রেট আমি কখনোই খুববেশি খাইতাম না। করোনার টাইমে তো আরো কইমা গেছে। তো, অফিসের সামনে একজন বয়স্ক লোক সিগ্রেট বেচেন। উনার কাছ থিকাই বেশিরভাগ সময় সিগ্রেট কিনি আমি, উনি মেবি খেয়াল করছেন যে আমি ছোট প্যাকেট’টা কিনি (১২টার’টা) সবসময়। ছোট প্যাকেট না থাকলে জিগাই, ছোট’টা নাই? উনি দুয়েকবার উনার ব্যাগ খুঁইজা বাইর কইরা দিছেন। এরপরে যখনই সিগ্রেট কিনতে গেছি, ৭দিনে/১০দিনে একবার, ছোট প্যাকেট’টা পাইছি। আমি কোনদিন উনারে বলি নাই যে, ছোট প্যাকেট’টা রাইখেন বা উনিও বলেন নাই যে, আপনার জন্য রাখছি। মাঝে উনারে কিছুদিন দেখি নাই। আমি কখনো জিগাই নাই, এতোদিন কোথায় ছিলেন? আমিও যে আজকে এক/দেড়মাস পরে সিগ্রেট কিনতে গেছি, উনিও জিগান নাই, এতোদিন কোথায় ছিলেন? কিন্তু আমারে দেইখা মনে হইলো খুশি হইছেন। দেখি, পাশে একটা বোলে সিঙ্গারা-সমুচা বেচতেছেন; জিগাইলাম, এখন এইগুলাও বেচেন নাকি? উনি বললেন, আরে, একজন বানায়া এইখানে দিয়া যায়…এইরকম টুকটাক কথাও আমরা কই। উনার নাম আমি জানি না। আমার নামও উনার জানার কোন কারণ নাই।
তো, ভালোবাসা ব্যাপারটা এইরকম, বেশিরভাগ সময়; স্ট্রেইঞ্জ এবং আন-নোন।
অক্টোবর ৯, ২০২১
ব্যাপারটা এইরকম না যে, যিনি অনেক জানেন, তাঁর কথা বলার দরকার পড়ে না; বা যিনি অনেক কথা বলেন, তাঁর জানার জায়গাগুলা কম; বরং প্রসেস হিসাবে দুইটা আলাদা ঘটনা। আপনি যখন পড়তে থাকবেন, দেখতে থাকবেন, অবজার্ভ করতে থাকবেন, টের পাইবেন, আরে জানার তো কোন শেষ নাই! (আসলেই নাই, এইরকম জানা-বোঝার চেষ্টার ভিতর দিয়াই জীবন পার কইরা দেয়া যায়। এবং স্টিল এনাফ না।) একইরকমভাবে, আপনি যখন কথা বলতে থাকবেন, দেখবেন আপনার বলার ভিতর দিয়াই অনেক জিনিস বলতে পারার জায়গা তৈরি হইতেছে; একটা কথা আরেকটা কথারে টাইনা আনতেছে, একটা বিষয় আরেকটা বিষয়ের সাথে রিলিভেন্ট হয়া উঠতেছে, আর চলতেই থাকতে পারে, আপনি ফর্ম বা প্যাটার্নের গোলাম না হয়া উঠলে নতুন কথাও সম্ভব হয়া উঠতে পারে।
মানে, এক্সপ্লোর করার একেকটা ধরণ আছে। যে কোন দিকেই গেলেই হারায়া যাওয়া যায়। 🙂
#########
বিকল্প
এই কথা কয়েকবারই মনে হইছে, কিন্তু বলা হয় নাই। বাংলাদেশে এক ধরণের ‘বিকল্প-অলা’ আছেন, যাদের বুলি হইতেছে – ‘বিকল্প তো নাই!’
কথাটা যতোটা ইনোসেন্ট শোনায়, ততোটা তো না-ই, বরং এইটা আসলে একটা হুমকি দেয়ার ঘটনাই। যে, কোন ‘বিকল্প’ তৈরি হইতে দিতেছি না, বা খালি নাম’টা বলেন, একটা মিনিমাম লেভেলের পলিটিক্যাল ফিগার হইলেও তার জিনা হারাম কইরা ফেলবো আমরা! ‘বিকল্প’ নাই না, ‘বিকল্প’ বইলা নাম নিতে পারেন এইরকম কিছুই রাখা হবে না।…
হাউএভার, আমার বলার জায়গা এইটা না। বরং ‘বিকল্প’ কেন দরকার? – এইটা নিয়া কথা বলেন আগে। এই ধারণা’টা আসে যখন আপনি মনে করেন যে, গর্ভমেন্ট নামের কোন জন্তু দেশটারে চালায়। যেইটা খুবই ভুল ধারণা।
দেশের মানুশই দেশটা চালায়। আপনার চাকরি অন্য কেউ আইসা কইরা দেয় না। আপনার বিজনেস অন্য কেউ কইরা দেয় না। আপনার খাওয়ার ভাত আপনারেই যোগাড় হয় আর সেই ভাত আপনারেই রাইন্ধা খাইতে হয়। বরং অইটা সত্যি কথা যে, সেই গর্ভমেন্টই হইতেছে ভালো গর্ভমেন্ট যেই গর্ভমেন্ট কম গর্ভমেন্টগিরি করে।
যেই দেশে পুলিশ হইতেছে বড় চোর, সরকারি কর্মচারিরা, সরকারি দলের লোকেরা হইতেছে বড় ডাকাত, সেই দেশে তো এইটা আরো বেশি সত্যি কথা।
মানে, একটা চোর-ডাকাত-বাটপারের বিকল্প হিসাবে আরেকটা বড় চোর, বড় ডাকাত, বড় বাটপারের আমাদের দরকার নাই, কখনোই ছিল না। এইটা মানতে পারা দরকার, সবচে আগে।
এইটারে অই এনার্কি-বলদদের লগে মিলাইয়েন না, যারা বলে যে রাষ্ট্রের দরকার নাই, সমাজের দরকার নাই! ‘ব্যক্তি-অধিকার’ কখনোই সমাজের ‘বিকল্প’ কোন ঘটনা না। বরং যেইখানে দরদী-সমাজ নাই, সেইখানে মানুশের পারসোনাল ফ্রিডমও এচিভ করা যায় না। মিনিংফুল হইতে পারে না।…
আগে নেতা আসবে, তারপরে নীতি প্রতিষ্ঠা হবে – এই জায়গাটা যে ভুল, সেইটা ভাবতে পারতে হবে আমাদেরকে। ঘটনা সবসময় উল্টাটা। সমাজের যখন নীতির জায়গাগুলারে হাজির রাখতে পারবো আমরা তখন সমাজের মানুশের ভিতর থিকা লিডার আপনা-আপনি তৈরি হইতে থাকবে। সমাজের মানুশ হিসাবে আমাদের কাজ হইতেছে, অই জায়গাগুলারে নারিশ করা। এমন অবস্থাটা তৈরি করা যেইখানে কেউ ভালো-কথা কইলে, ভালো-কাজ করলে সেইগুলারে সহজে নোটিশ করতে পারি আমরা। অই মাটি হয়া উঠা যেইখানে কেউ বটগাছ হয়া উঠতে পারে।…
একটা ডরের সমাজে এইটা হয় না। ‘বিকল্প’ বাইর করতে হবে না কোন আমাদেরকে। ‘বিকল্প কই!’ – এই ডর যেন কেউ আমাদেরকে না দেখাইতে পারে, সেইটা থিকা বাইর হইতে হবে আসলে।
অক্টোবর ১০, ২০২১
আমার ভুল হইতে পারে, কিন্তু এইরকমের একটা জিনিস মনেহয় আছে যে, আমরা মনে করি, দুনিয়াতে ম্যাটেরিয়ার সাকসেস কোন না কোন আত্মিক দুর্বলতা ছাড়া এচিভ করা সম্ভব না। মানে, সোজা বাংলায় কইলে, চুরি না কইরা, দুই নাম্বারি না কইরা কেউ টাকা-পয়সা ইনকাম করতে পারে না! এইরকমের একটা চিন্তা আছে।
যেইটা মোটা দাগে, অই জায়গাটারেও সত্যি ভাবতে আমাদের বাধ্য করে যে, “উন্নয়নের জন্য গণতন্ত্রের জায়গাতে ছাড় দিতে হবে”! তো, এইটা খালি ভুল একটা চিন্তাই না, অন্যায়-অবিচার’রে মাইনা নেয়ার মেইন পাটাতন হইতেছে এই জায়গাটা। ব্রিটিশ আমল থিকা শুরু কইরা এরশাদের শাসন পর্যন্ত এই কথা শুনছি আমরা, যে “দেশের তো উন্নতি হইতেছে!”
ম্যাটেরিয়াল সাকসেস এবং নীতি-নৈতিকতার মধ্যে কোন রিলেশন নাই – এইটা আমার ক্লেইম না, বরং দুইটার রাস্তা ও মঞ্জিল আলাদা। ডেমোক্রেসি এবং ডেভোলাপমেন্ট, একটা আরেকটার শত্রু যেমন না, জরুরি বা দরকারি জিনিসও না। ডেমোক্রেসি না থাকলেও নানান ধরণের ইকোনমিক ডেভোলাপমান্ট ঘটতে পারে সমাজে, রাষ্ট্রে। তবে যেইটা হয়, অইগুলা বেশিরভাগ সময়ই দেশের মানুশের কোন কাজে লাগে না। এর বিপরীতে, ডেমোক্রেসি মানে ‘উন্নয়ন’ না হওয়া না; যেইটা এই ধরণের চিন্তার বেইজটাতে থিকা বলা হয় না, কিন্তু মিন করে সবসময়।
ডেমোক্রিস-অলা’রাও দেখবেন ‘তর্ক’ করতে থাকে, ডেটা-ফেটা দিয়া যে, ডেমোক্রেসি থাকলে ‘উন্নয়ন’ তো আরো বেশি হইতো! 🙂 তো, অইটা ভুয়া না হইলেও যে মোটামুটি আজাইরা একটা আলাপ, অই জায়গাটারে মার্ক করা দরকার।
‘উন্নয়ন’ এর জন্য ডেমোক্রিসর দরকার নাই আমাদের। ডেমোক্রেসি যে কোন সমাজের একটা বেসিক রিকোয়ারমেন্ট। একটা ন্যায়বিচারের সমাজের জন্য, মানুশের সেলফ-রেসপেক্ট নিয়া বাঁইচা থাকার জন্য, একটা কমপ্যাশন বা দরদের জায়গা তৈরি করার জন্য এই ডেমোক্রেসি দরকার আমাদের।
তবে একটা দেশে, সমাজে যখন ডেমোক্রেসি থাকে তখন ‘উন্নয়ন’র ডেফিনেশনগুলাও রি-ডিফাইন হইতে থাকবে। তখন আমরা বুঝতে পারবো যে, পদ্মাসেতু বানানো অবশ্যই ‘অনুন্নয়ন’ না, কিন্তু যখন দেশের প্রতিটা প্রাইমারি ও হাইস্কুলে স্টুডেন্টদের জন্য একই মানের ভালো দুপুরবেলার খাওয়ার ব্যবস্থা করা যাইতেছে, যখন দেশের সব বয়স্ক মানুশদের জন্য পেনশনের ব্যবস্থা করা যাইতেছে, সেইটা অনেক দরকারি এবং জরুরি ‘উন্নয়ন’।
উন্নয়নের বদলে এই কারণে ডেমোক্রেসিরে আমাদের পলিটিক্যাল চিন্তার সেন্টার করা দরকার।
এইরকম একটা কথা আছে না যে, কোন কথা বলার আগে তিনটা জিনিস খেয়াল করবেন – কথাটা সত্যি কিনা, ভালো কথা কিনা, দরকারি কিনা; এইরকম যে কোন পলিটিক্যাল চিন্তা করার আগে আমাদের ভাবা দরকার, এইটার সেন্টার পিপল কিনা, নাকি লোক-দেখানো উন্নয়ন অথবা আইডিওলজিক্যাল দেমাগ?
মানে, উন্নয়ন ভার্সেস গণতন্ত্র নামের তর্কটা যে একটা ভুয়া-তর্ক সেইটারে বুঝতে পারাটা ডেমোক্রেসি’র দিকে একটু আগায়া যাওয়ার ঘটনাই মনেহয়।
#########
ধরেন, কেউ যদি বলে, পূজামন্ডপের শামিয়ানাটা পুরা ওয়াজ মাহফিলের মতো হইছে! বা ধরেন কেউ কইলো, দুর্গাপূজা তো শুরু হইছে কলোনিয়াল আমল থিকা কলকাতায়, অইখানে যে প্রসাদ দেয়া হয় অইটা তো মাজারের তবারক দেয়া থিকা আসছে আসলে!…
মানে, এইগুলারে মিছা-কথা কইলেও যেই সম্মান দেয়া হয়, সেইটাও তো দেয়া ঠিক না! মানে, সত্য-মিথ্যার লগে এর কোন রিলেশনই নাই! রিলিজিয়নের জায়গা থিকা, এই জাতীয় ‘তর্ক’র মেইন ইস্যু হইতেছে অপমান আর অসম্মান করা। এই গু ঘাটলে খালি দুর্গন্ধই বাইর হবে।…
অথচ এইরকমের হাজার হাজার ন্যারেটিভ পাইবেন বাংলা-ভাষায় কথা বলা মুসলমানদের নিয়া। যে, এরা হইতেছে আসলে ‘নিন্ম-বর্ণের হিন্দু’,* ‘কনভার্টেড মুসলিম, আসল মুসলমান না’,** ইনায়া-বিনায়া বলা যে, বাংলাদেশের মুসলমান’রাও আসলে হিন্দু, কালচারাল দিক দিয়া। এই ‘হিন্দু কালচার’ বইলা যেই জিনিসটারে হাইলাইট করা হয় সেইটা হইতেছে মেইনলি ইন্ডিয়ান রেসিজম – আর্য বা এরিয়ান দেমাগ!
এখন এর এগেনেস্টে, ‘আমাদের পূর্বপুরুষ বাগদাদ থিকা আসছে’ টাইপের আশরাফি মুসলমান’রা আছেন, (আসেন নাই – এইটা কথা না, কিন্তু) উনারাও আসলে এই আর্য-প্রাইডের লোক।
বাংলাদেশে আমাদের ফাইট’টা যতোটা না ইউরোপিয়ান ধরণের ফ্যাসিজমের এগেনেস্টে তার চাইতে অনেকবেশি এই ইন্ডিয়ান ধরণের রেসিজমের এগেনেস্টে; যেইটা মুসলমান ভার্সেস হিন্দুর ফাইট না, বরং এই আর্য ও অনার্যের রেসিয়াল ঘটনা, বেশিরভাগ সময়। এইখানে ডমিনেন্ট ইকোনমিক-ক্লাসটা তাদের সুপরিয়রিটি দাবি করে একটা কালচারাল ট্রাডিশনের ভিতর দিয়া।
১৯৮০’র দশকের পহেলা বৈশাখও হয়া উঠে ‘হাজার বছরের বাঙালি ঐতিহ্য’! এই যে কয়েশ বছরের জিনিস ‘হাজার বছর’ হয়া উঠে, বানায়া তোলে যারা, সেইসব ‘ঐতিহ্যবাজদের’ সবসময় সন্দেহ করা লাগবে আমাদের। কারণ এইগুলা সবসময় ক্ষমতার ন্যারেটিভটারেই সার্ভ করে। ব্যাপারটা এইরকম না যে, কালচার বইলা কিছু নাই; কিন্তু কোন জিনিসটারে কালচার বইলা রায় দেয়া হইতেছে, সেইটা নিয়া সবসময়ই সজাগ থাকা দরকার।…
বসুন্ধরা আবাসিকের আই ব্লকের সামনের পূজামন্ডপের গাছগুলাতে লাইটিং দেইখা ক্রিসমাস ট্রি বইলা ভুল করতে গিয়া এইসব জিনিস মনে হইলো আমার।…
… … ….
*বরং ১৫শ শতকের দিকে রাজা গনেশ আর তার ছেলে জালালউদ্দিন মুহম্মদ শাহ’র কাহিনিটা ইন্টারেস্টিং, এইরকম হাজারটা টুইস্ট আছে হিস্ট্রিতে…
**দুনিয়ার কোন দেশের মুসলমানরা কনভার্টেড না? বরং রিলিজিয়ন যে এইরকম লোকাল ও ডেইলি লাইফের রীতি-নীতির জায়গা থিকা একটা গ্লোবাল ফেনোমেনা হয়া উঠছে, এইটা তো এক-দেড় হাজার বছরেরই একটা ঘটনা…
Leave a Reply