নোটস: মার্চ, ২০২২ [পার্ট ১]

মার্চ ১, ২০২২

(একটা জিনিস আমি ভাবছি, ভুলও হইতে পারে) ঢাকা শহরের মুদির দোকানগুলাতে কিছুদিন পরে পলিথিনের প্যাকেটে, ১০০ মিলি/২৫০ মিলি/৫০০ মিলির সয়াবিন তেল বেচা শুরু হবে। মানে, এখনো কিছু কিছু হয়। কিন্তু অইরকমভাবে চোখে পড়ে না। মেবি অইটা একটা ইন্ডিকেটর হবে (দুর্ভিক্ষ অফিসিয়ালি শুরু হইছে, বা), আমাদের পারচেজিং পাওয়ার যে বাড়তেছে! 🙂

#########

অফিসের ওয়েটিং রুমে সবসময় টিভি চলে। টিভি মানেই তো নিউজ। কাঁচের দেয়ালের কারণে বাইরে থিকা কি কইতেছে কাবজাব, কিছুই শোনা যায় না। দেখা যায় খালি। তো, লিফটের সামনে দাঁড়ায়া থাকতে থাকতে অনেক সময় টিভিতে নিউজ-প্রেজেন্টারদের মুখের হাব-ভাব দেখি। কি বলতে চান উনারা? উনাদের ভাব-ভঙ্গি দিয়া?

অন্য অনেক কিছুর বাইরে, ভাব’টা হইতেছে, অনেক সিরিয়াস কথা বলতেছি আমরা! 🙂 যদিও দেইখা দেইখা আজাইরা কথাই কইতেছে, যেইটা আসলে অদের নিজেদের কথাও না। অলমোস্ট তোতাপাখিই তো অরা! কিন্তু ভাব দেখলে সেইটা বুঝা যাবে না। সিরিয়াস-ভাব নিতে নিতে অরা মেবি নিজেরাও সিরিয়াস হয়া যাইতে থাকে। জ্বরের ভাব করতে করতে যেইরকম কিছুটা টেম্পারেচার বাড়ায়া ফেলা যায় অনেক সময় শরীরের, অইরকমের।…

মানে, মাঝে-মধ্যে মিউট কইরা দেইখেন, বাংলাদেশের চ্যানেলগুলাতে নিউজ-প্রেজেন্টারদের ভাব-ভঙ্গিমাগুলা। এতো সিরিয়াস যে দেখলে মজার চাইতে খারাপ-ই লাগে, কিছুটা। সুন্দর সুন্দর চেহারা নিয়া একই ধরণের কি বাজে অভিনয় করতেছে অরা! 🙁

########

ফটোকপি রাইটার

আমাদের দিকে একটা কথা আছে (অন্য অঞ্চলেও থাকার কথা) যে, নিজের পুটকিত নয় মণ গু, অন্যরে কয় পুটকি ধু! [একটু ‘অশ্লীল’ হইলো, কিন্তু কি আর করা…]

তো, কিছু “লেখক” আছেন, কলোনিয়াল-বাংলার বাইরে একটা লাইন লেখতে পারেন না। [‘আঞ্চলিক’ লেখেন, নাইলে ‘পরমিত’।] কিন্তু অন্যরা যারা-ই এর বাইরে লেখার ট্রাই করতে যায়, দৌড়ায়া আইসা ট্যাগ লাগায়া দিতে থাকে, “ও, আপনি এর মতো লেখতেছেন, ওর মতো লেখতেছেন!” যেন বিরাট একটা “সমালোচনা” কইরা ফেলছে। নিজেরা যে হইতেছে কলোনিয়াল কলকাতা-বাংলার ফটোকপি, অই খেয়াল নাই।

এই ফটোকপি রাইটার’রা জীবনে কোনদিন নিজের লেখা লেইখা দেখে নাই, লেখার সাহস করতে পারে নাই। এই কারণে এর বাইরে কিছু দেখলেই ডরায়। নিজেরা কপি-করা বাংলা থিকা বাইর হইতে পারে না, আর অন্যরে কয়, আপনি আরেকজনের কপি করতেছেন, না!

 

মার্চ ২, ২০২২

– ভারসিটি ভার্সেস সমাজ (১) –

২০০১/০২ সালের দিকে যখন সিলেটে থাকতাম তখন এই জিনিসটা ফার্স্ট খেয়াল করছিলাম, যে ভারসিটির স্টুডেন্টদেরকে সিঅলটি লোকাল পাওয়ারফুল লোকজন খুব-একটা পছন্দ করেন না; মানে, হেইট করেন – এইরকম না, কিন্তু “পছন্দ” করেন না। ভারসিটির স্টুডেন্টরাও লোকাল লোকজনের লগে একটু ডিসট্যান্স রাইখাই চলতো। মানে, একসেপশন যে নাই – তা না, কিন্তু ওভারঅল এইরকম একটা সিচুয়েশন বা ধারণা ছিল। কয়দিন আগেও দেখবেন, সাস্টের ঘটনায় লোকাল লোকজন আগায়া আসে নাই, ভারসিটির স্টুডেন্টরাও ‘মুখ ফসকায়া’ তালেবান বইলা ফেলছিল অন্যদেরকে, উনাদের ফ্রিডম ক্লেইম করতে গিয়া।…

তো, এইটা খালি সিলেটের সাস্টের ঘটনাই না, ঢাকা ভারসিটির শুরু থিকাই এই ঘটনা থাকার কথা। ঢাকার নবাব বাড়ির লোকজন কাজী আবদুল ওদুদরে নাকে খত দেয়াইছিলেন বইলা শোনা যায়, ইকনোমিকসের টিচার হিসাব উনি যখন কইছিলেন, মহাজনের সুদের চাইতে ব্যাংকের ইন্টারেস্ট জায়েজ হওয়া দরকার, এইরকম একটা কথা।… জাহাঙ্গীরনগরেও আবছাভাবে মনে পড়ে যে, একটা সময় আশে-পাশের গেরামের লোকজনের লগে মারামারি হইতো। মানে, বাংলাদেশের ভারসিটিগুলা খালি “ইয়াং পিপলদের ফ্রি-স্পেইস”-ই না, এইখানে আরো কিছু ঘটনা আছে, যেইটা একটু খেয়াল করা দরকার আমাদের।

বাংলাদেশের এডুকেশন সিস্টেম, পলিটিক্স এবং সমাজের বাইরের ঘটনা না এইগুলা। এটলিস্ট তিনটা জিনিস আমি এইখানে দেখতে পাই।

এক, ভারসিটির স্টুডেন্ট এর বিপরীতে “সমাজ” বা “এলাকাবাসী” বইলা এমন একটা জিনিসরে আইডেন্টিফাই করা যেইটা হইতেছে আদতে ভিলেন! যেহেতু ফরমাল এডুকেশন, পড়াশোনা বা জ্ঞান মানেই হইতেছে ‘মর্ডানিটি’র একটা ঘটনা, সেইখানে আপনি ‘শিক্ষিত’ মানেই হইতেছে আপনি ডিফরেন্ট একটা কিছু, সমাজের অন্য মানুশের মতো না, যারা ‘জানে-না’। অই ‘না-জানা’ ‘অশিক্ষিত মানুশগুলা’ হইতেছে সমাজ! ‘শিক্ষিত’ হিসাবে আপনি অই সমাজের বাইরের ঘটনা। কলেজ, ভারসিটিগুলাতে এই ট্যাবু খুব স্ট্রংগলিই আছে না, এই ট্যাবু মেইন আইডেন্টিটির একটা পার্ট।

অথচ ঘটনা হইতেছে, এইরকম ‘অশিক্ষিত’ লোকদের নিজেদেরও তেমন কিছু করার নাই আসলে ‘সমাজ’ নিয়া, বরং উনারাই হইতেছে পাওয়ারলেস অংশটা! ‘অশিক্ষিত’ এবং ‘গরিব’ লোকজন ‘সমাজ’ এর ডিসিশান-মেকার না, বরং এগজিস্টিং পাওয়ার-স্ট্রাকচারেরই ফলোয়ার। মর্ডানিটি উনাদেরকে ‘মুক্তি’ দিবে না, বা উনাদেরকে আইডিওলজিক্যালি নিতে পারে না – এইটাও মেবি উনারা টের পাওয়ার কথা। যার ফলে, ‘শিক্ষিত’ মানুশদের লগে সমাজের ‘অশিক্ষিত’ মানুশদের কোন ডিসট্যান্স নাই – এই জিনিসটা সত্যি কথা না। কিন্তু উনারা এটলিস্ট পলিটিক্যালি একটা দল আরেকটা দলের দুশমন না।

এইখানে আসে সেকেন্ড পয়েন্ট’টা। যে, ‘শিক্ষিত লোকজন’ ‘সমাজ-ঘৃণার’ নামে গরিব ও ছোটলোকদের দিকে ঘৃণা কেন জারি রাখেন তাইলে? ধরেন, বাস-মালিকদেরকে দোষ না দিয়া কেন শরমিকদের দোষ দেন? বা ‘গরিব’ ও ‘ছোটলোকরা’ কেন ভারসিটির স্টুডেন্টদের নিজেদের লোক মনে করে না?

ভিজিবিলিটির একটা ইস্যু তো আছেই, যে মালিকের চাইতে ম্যানেজার বেশি খারাপ। এর বাইরে, এইটা পাওয়ারের জায়গাটা মোস্টলি ইনভিজিবল এবং আন-কোশ্চেনড থাকার জায়গা আছে। ভারসিটির স্টুডেন্ট হিসাবে আপনি যদি না বলেন যে, সমাজে কেউ পাওয়ারফুল না হইলে রেইপ করতে পারে না! তাইলে তো সরাসরি পাওয়ারের লগে কনফ্লিক্টে চইলা গেলেন। কিন্তু আপনি যদি বলেন, “সমাজের অশিক্ষিত পুরুষেরা” রেইপ করে, তাইলে তো সাপও মরলো, লাঠিও ভাঙ্গলো না। পুরুষ তো আছে, প্যার্টিয়ার্কিও আছে, কিন্তু পাওয়ারও যে আছে, সেইটা না-বলাটা পলিটিক্যালি সেইফ রাখতে হেল্প করার কথা।

মানে, এইটা খুব কনশাস জায়গা থিকা ঘটতেছে – তা না, একটা সাব-কনশাস 🙂 এওয়ারনেস কাজ করার কথা। কিন্তু এতে কইরা যা হয়, পাওয়ারের জায়গাটারে এভেয়ড করার ভিতর দিয়া সমাজের একটা ইস্যু খুব কম সময়েই ভারসিটির স্টুডেন্টদের ইস্যু হয়া উঠতে পারে এখন। একইসাথে ভারসিটির স্টুডেন্টদের ইস্যুরে একটা ক্লাসের সমস্যা হিসাবেই ভাবতে পারার কথা (“সমাজ” বা “এলাকাবাসী”র না, বরং সমাজের) গরিব ও ছোটলোকদের।

এইখানে একটা ডিস-কানেকশন তৈরি হইছে। এইটা হইতেছে আমার থার্ড পয়েন্ট’টা। এইটা যেইভাবে বটবৃক্ষ হয়া উঠছে, সেইটা মেবি “আমরা রাজনীতি বুঝি না” এবং “আমরা রাজনীতি করি না” বা “খারাপ লোকরাই রাজনীতি করে”, গত ৩০/৪০ বছরের রেজাল্ট একটা। মেবি। মানে, এইখানে আরো ইনকোয়ারির দরকার আছে আসলে।…

#########

– বাংলাদেশে ‘সাহিত্যের বিচার’ না-থাকাটা কেমনে (হইতে পারে) রেবের ‘বিচার বর্হিভূত’ খুনগুলারে বৈধতা দেয়ার লগে রিলেটেড একটা ঘটনা –

একদম উত্তর মেরু আর দক্ষিণ মেরু না হইলেও, অনেক দূরের ঘটনা-ই তো দুইটা। অনেকটা টাইটেল দেইখা হাইসাও দিতে পারেন। আবার কেউ কেউ হয়তো চাইনিজ একটা সেয়িংয়ের কথাও মনে করতে পারেন এইখানে (ঠিকঠাক মনে নাই আমার, অনেকটা এইরকম) যে, কোন একটা জায়গার একটা বরফের কণা (স্নো-ফ্লেক্স) একটা বাঁশগাছের পাতার উপরে পড়ার কারণে অন্য কোথাও, কোন সাগরে একটা ঝড়রে ইনিশিয়েট করতেছে। মানে, দুনিয়ার ঘটনাগুলা তো কানেক্টেড একটার লগে আরেকটা। এখন কেমনে কানেক্ট করে? এইটা তো আমরা জানি না।

আমি একবার কইছিলাম, সালমান খানের হিন্দি-সিনেমা ‘গরব’ রেবের ক্রসফায়ার’রে ইন্সপায়ার করতে পারার কথা। (অবভিয়াসলি রেব আম্রিকান ‘এন্টি-টেররিস্ট’ শেইপের একটা জিনিস। এইটা নিয়া কোন সন্দেহ রাখা ঠিক হবে না।) দুইটা কাছাকাছি সময়ের ঘটনা, ২০০৪ সালেরই। রেবের ফরমেশন হয় মার্চ মাসে, আর সিনেমাটা রিলিজ হয় জুলাই মাসে। অই সিনেমাতে সালমান খান হইতেছেন, স্পেশাল ফোর্সের লোক, ধুমধাম খুন করেন, ক্রস-ফায়ারে দিয়া দেন, ভিলেনদেরকে। বেটাগিরির এক শেষ আর কি! ল’এর মায়েরে বাপ! মামলা কইরা কি হবে, আদালতে তো বিচার হয় না! এইরকম।

[এইখানে আরেকটা রেফারেন্সের কথা বলা যায়, দ্য অ্যাক্ট অফ সাইলেন্স নামে একটা ডকুমেন্টারির, ইন্দোনেশিয়ায় কম্যুনিস্টদের খুন করার উপর বানানো। অইখানে সরকারের যেই প্যারা-মিলিশিয়া বাহিনী ছিল, তার এক মেম্বার বলতেছিলেন, উনারা সিনেমাহলে ব্ল্যাকে টিকিট বেচতেন, কমিউনিস্টরা আইসা হলিউডের সিনেমা দেখানো বন্ধ কইরা দিলো, উনারা তো বেকার হয়া গেলেন, তখন মিলিটারি সরকার আইসা তাদেরকে অস্ত্র দিলো, অইগুলা দিয়া কমিউনিস্টদের খুন করলো অরা। অরা তো আউট-ল, ওয়েস্টার্ন সিনেমার! আইন দিয়া বিচার করলেও তো হবে না! মানে, নিজেদেরকে জাস্টিফাই করার লাইগা একটা ফ্রেম-ওয়ার্ক লাগে। এইটা মাস্ট।

আরেকট ঘটনার কথা বলি। ইন্ডিয়াতে একজন রিলিজিয়াস গুরু’র এগেনেস্ট রেইপের মামলা হইছিল। অইখানে ভিক্টিম মহিলা আদালতে ঘটনা’টার বর্ণনা দিতেছিলেন এইভাবে যে, গুরু বলতেছিলেন, উনি তো কৃষ্ণ/কালা, উনার তো অনেক গোপিনী থাকবে। অই মহিলা তার ভক্ত ছিলেন, কিন্তু গোপিনী তো হইতে চান নাই। রেইপ ছিল অইটা। গুরু অই ফ্রেমওয়ার্ক’টা নিছেন, তার পাওয়ারের জায়গাটারে হাইড করার লাইগা। মানে, আমি বলতে চাইতেছি, একট ফ্রেম লাগে, যেইটা দিয়া জিনিসগুলারে জাস্টিফাই করি আমরা।…]

রেব যখন ফর্ম করা হয়, তখনো আদালতে বিচার হইতো কিছু বাংলাদেশে। কিন্তু সাহিত্যের তেমন কোন ‘বিচার’ ছিল না, এখনো নাই আসলে। একটা সাহিত্য-সমাজের পাওয়ারের কাছেই জিনিসটা বর্গা দেয়া। মানে, ‘বিচার নাই’ বলতে আমি বুঝাইতেছি, কোন সাহিত্য ভালো, কোন সাহিত্য খারাপ – এইটা কেউ বলে না, তা না; কিন্তু কেন ভাল্লাগছে, কেন খারাপ লাগছে, এইটার কোন বেইজ বা নিয়ম নাই। “আমার রুচি” এইটা! আমার ভাল্লাগে নাই! বা কেন ভাল্লাগছে, সেইটাও “আমার রুচি”। 🙂

বিচার করা বা ব্যাখা করা জরুরি-না না, বরং খারাপ একটা জিনিস। রায় দিয়া দিতে হবে। আর এইটা দিবেন হইতেছে সাহিত্য-সমাজের মাস্তানরা। সাহিত্যরে বিচার করতে চাওয়া হইতেছে খুবই বাজে একটা ঘটনা। এইরকম একটা অবস্থা একটা সময় খুব স্ট্রংগলি ছিল, এখনো ডমিনেন্টই থাকার কথা।

তো, সাহিত্যের বিচার নাই বইলা রেব মানুশ খুন করতে পারছে – জিনিসটা এইরকম না। বরং সমাজের একটা জায়গারে যখন আপনি আন-কোশ্চেনড রাখেন, সেইটা অন্য জায়গাগুলাতে মাইনা নেয়ার ব্যাপারেও একটা বেইজ তৈরি করতে পারার কথা। আমাদের সো-কল্ড কমিউনিস্ট-শাসিত সাহিত্য এই ফ্রেমটা প্রেজেন্ট ছিল। এই কারণে যখনই ক্রসফায়ার হইছে, যারে খুন করা হইছে, তারে ‘ভিলেন’ বানাইতে পারাটাই এনাফ ছিল। একটা ‘জন-সমর্থন’ ছিল। যে, এইটাই তো ভালো! খারাপ-লোকের (বাজে-সাহিত্যের) আবার কি বিচার! খারাপ-লোকগুলারে (খারাপ-সাহিত্যগুলারে) তো খুন কইরা ফেলাটাই দরকার! তো, এইটাই হইছে – তা না, কিন্তু এইটা হয়া থাকতে পারে।

এখন সাহিত্যের বিচার করতে শুরু করলেই, নন-জুডিশিয়াল কিলিং শেষ হয়া যাবে না। আম্রিকার দিক থিকা এর দরকার ফুরাইছে। বিচার-ব্যবস্থাই যেহেতু বাকশালের দখলে, ‘বিচার’ দিয়াই তো খুন করা যায়, ‘বিচার-বহিভূর্ত’র দরকার খুববেশি পড়ার কথা না। এখন উইপেন হইতেছে, ডি-ফেইম করা, ‘খারাপ’ ও ‘ভিলেন’ বানানো, তাইলেই এনাফ। তাতে না হইলেও, গুম এবং নানান ধরণের একসিডেন্ট তো আছেই।

যার ফলে, রেবের লোকজনই টাকা-পয়সা দিয়া রেবের কিছু ‘ক্রিটিক’ বাজারে ছাড়ার কথা এখন। মুহাম্মদ জাফর ইকবালরেও বলতে পারা যায়, “অদেরকে একটু বকে দেন তো, আংকেল!” 🙂

#########

সংগ্রাম শব্দটা কেমনে নাম-পদ হইলো

পুরান আমলের লোকজন দেখবেন ‘মুক্তিযুদ্ধ’ কইতো না, বরং নানী-দাদীদের মুখে সবসময় শুনছি ‘সংগ্রামের সময়ের’ কথা। তো, ভাবতেছিলাম ‘সংগ্রাম’ তো অইরকম চালু শব্দ না, কই থিকা আসছিলো জিনিসটা?

গতকালকে ৭ই মার্চের ওয়াজের আওয়াজে কান ঝালা-পালা হওয়া থিকা মনে হইতেছিল, অইখানে কি-ওয়ার্ড (key-word) তো হইতেছে ‘সংগ্রাম’! (এখন টর্চারের আইটেম হয়া উঠলেও) অই সময়ে তো এইটা সেলিব্রেটেড একটা জিনিস ছিল। সংগ্রাম করতে হবে, সংগ্রাম শুরু হইছে, এইরকমের ঘটনা… তো, ‘মুক্তিযুদ্ধ’ আসলে ‘সংগ্রামের’ ঘটনা।

আমরা জানতাম না ‘সংগ্রাম’ কি জিনিস। কিন্তু এই যে মানুশ মারা হইতেছে, মিলিটারি আসতেছে, বাড়ি-ঘর থিকা পালাইতে হইতেছে। নিজের ঘরে, নিজের এলাকায় ডরে ডরে থাকতে হইতেছে সবসময় এইটা ছিল ‘সংগ্রাম’র একটা জিনিস। মানে, লড়াই অর্থে না, একটা টাইম বা সিচুয়েশন আসলে।

মানুশ ‘সংগ্রাম’ করে-নাই না, তার চাইতে অনেক বেশি একটা সংগ্রামের মধ্যে পড়ে গেছিল আসলে।

সংগ্রাম একটা (এক্টিভিটি বা কাজকাম) verb বা কিরাপদ না; একটা (ঘটনা বা অবস্থা) noun বা নাম-পদ।

 

মার্চ ৩, ২০২২

ঠিক কোন ড্রিম-ফিউচার না, বরং এক্সপেক্টেড একটা ফিউচার তো থাকেই অনেকের মাথাতে। তো, এইরকম একটা জায়গাতে আমি ভাবি যে, “একটা পাওয়ারফুল রাষ্ট্রের সিটিজেন” হওয়ার চাইতে “অনেকগুলা এলাকার মানুশের মধ্যে কমন যোগাযোগের একটা জায়গা আছে” – এইটা বেটার পজিশন একটা।

বড় রাষ্ট্র বা মিলিটারি-পাওয়ার কোনদিনই একটা বড় সময় ধইরা সাসটেইন করতে পারার কথা না। রমিলা থাপার একটা হিন্টস দিছিলেন অশোকের পরে কেন অই মিলিটারি-পাওয়ার কন্টিনিউ করতে পারলো না। একটা মেজর ঘটনা হইতেছে, মিলিটারি’রে তো বসায়া খাওয়াইতে হয়, এখন যত বড় বেশি মানুশরে আপনি বসায়া বসায়া খাওয়াইবেন, অন্য মানুশদের উপর তার চাপ বাড়তে থাকবে তো। মানে, যে কোন মিলিটারি-পাওয়ারই অন্য (মানে, নিজের দেশের) মানুশদেরকেই জুলুম না কইরা টিইকা থাকতে পারে না। একটা সময়ে গিয়া এর এন্ডিং’টা মাস্ট।

আমি আশা করি, যখন এই মিলিটারি-পাওয়ারের জায়গাগুলার শেষ হবে তখন যেই সমাজ-ব্যবস্থার দিকে যাইতে থাকবো, সেইটা আবার ছোট ছোট রাষ্ট্র না হয়া, পুরানা কোন জাত-ব্যবস্থা, এমনকি এলিটিস্ট ‘গণ’র ফর্মে ফেরত না গিয়া একটা নতুন ফর্মেশনের দিকে যেন যাইতে পারে। ব্যাপারটা আল্টিমেট ফ্রিডমের কোন ঘটনা না। লোকাল, এলিনেটেড এবং স্পেশাল হয়া উঠাও না। বরং আলাদা আলাদা সমাজ এবং ক্লাসের রিলেশনে কমন জায়গাগুলার একটা পাটাতনগুলারে বানাইতে পারা, যেইটা স্থির কোন আইডেন্টিটি হওয়ার চাইতে নিজেদের ফ্লেক্সিবিলিটির, মিল-মিশের জায়গাগুলারে সেন্টার করতে পারবে, আরো বেশি।

মানে, বেশ কমপ্লেক্স ঘটনাই একটা 🙂 তবে ফ্রয়েডের ড্রিম-ফ্যাক্টরির মতো এতোটা ঝামেলার মনেহয় না।

#########

ওয়ার অ্যান্ড মাইগ্রেশন

হিউম্যান হিস্ট্রিতে যুদ্ধ সবচে বড় ঘটনা না, সবচে বড় ঘটনা হইতেছে মাইগ্রেশন, এক জায়গা থিকা আরেক জায়গায় যাইতে থাকাটা। তবে এইটা তো সত্যি যে, কৃষিকাজ শুরু হওয়ার পরে বড়সড় মাইগ্রেশন কমে গেছিল, আর যুদ্ধের ঘটনা ছাড়া ম্যাসিভ মাইগ্রেশন হইতো না। কিন্তু যুদ্ধ এই কারণেই ঘটনা, কারণ এইটা মাইগ্রেট করতে ফোর্স করে মানুশদেরকে। বাংলাদেশ, পাকিস্তান এবং ইন্ডিয়াতে ১৯৪৭ এর যেই বেদনা, সেইটা হইতেছে মাইগ্রেশনের বেদনা। হিস্ট্রিতে মেজর মাইগ্রেশনের ঘটনাগুলারে খেয়াল করলে আরো ক্লিয়ারলি কিছু জিনিস দেখতে পাবো আমরা।

আর খালি মানুশ-ই মাইগ্রেট করে না, মানুশের চিন্তা তার চাইতে ছড়ায় বেশি। মিডিয়া, প্রপাগান্ডা, পলিটিক্যালি পার্টি, সামাজিক সংগঠন এই কারণে ইম্পর্টেন্ট কারণ এরা চিন্তারে ছড়ায়া দিতে পারে। খারাপ হোক, আর ভালো। কিন্তু কোন চিন্তা বেশি ছড়াইতে পারে বইলাই সেইটা ভালো-চিন্তা না। ভালো-চিন্তা, গভীর ও নতুন-চিন্তা হইতেছে বীজের মতো। কথার মধ্যে চিন্তার বীজ না থাকলে সেই চিন্তা ছড়াইতে ছড়াইতে বাতাসে মিলায়া যায়, একটা সময়। কিন্তু চিন্তার মধ্যে ভাবনার বীজ থাকলে সেইটা ছড়াইতে থাকে। আরেকটা জমিনে গিয়া আরেকভাবে তৈরি হইতে থাকে।

যুদ্ধ না, মাইগ্রেশন হইতেছে হিউম্যান হিস্ট্রির কোর ঘটনা।

 

মার্চ ৪, ২০২২

[এইগুলা হার্ড-কোর ফ্যাক্ট না, ইভেন হিস্ট্রিক্যাল কোন স্টেইটমেন্টও না। কিছু অনুমান, যেই জিনিসগুলারে ভেরিফাই করা দরকার।]

বাংলাদেশের মানুশের পয়লা ধর্ম হইতেছে ইসলাম। মানে, ইসলামের আগে কোন ধর্ম ছিল না – তা না, কিন্তু রাজার ধর্মের বাইরে প্রজাদের আলাদা কোন ধর্ম ছিল কিনা – এই জিনিসটা নিয়া খোঁজ-খবর করার দরকার। রাজাদের ধর্ম ছিল বা থাকা লাগতো। কেউ রাজা হইলে তারে প্রমাণ করা লাগতো যে, উনারা ক্ষত্রিয়-বংশ, ব্রাহ্মণদের সার্টিফিকেট নিতে হইতো, (দেবতাদেরকে খুশি রাখার নামে) উনাদেরকে খুশি রাখতে হইতো। মানে, নানান জাত ছিল, জাত’টাই ছিল ধর্ম। হিন্দু বইলা আলাদা কোন স্পেসিফিক ধর্ম থাকার কথা না। রাজা ক্ষত্রিয় এবং অন্যরা অন্য জাতের লোক। এইরকম। মানে, “হিন্দু-রাজার” দেশে আর অন্য কোন ধর্মের লোক ছিল, বা থাকতে কি পারতো?

অনেকে দাবি করতে চান যে, বৌদ্ধধর্ম রেভেউলেশনারি একটা ধর্ম ছিল। কিন্তু বুদ্ধ নিজে কোন ধর্ম বানান নাই, উনার বরং পলিটিক্যাল একটা পজিশন ছিল। উনি জাতের জায়গাগুলারে বাতিল কইরা দিছিলেন। এই কারণে বৌদ্ধদেরকে বি-ধর্মী বা ধর্মহীন (দেশি নাস্তিক 🙂 ) হিসাবে দেখানোর একটা ঘটনা ছিল। মানে, যেইটারে হিন্দু-ধর্ম এবং বৌদ্ধ-ধর্মের বিরোধ হিসাবে দেখানো হয়, সেইটা মোস্টলি ছিল রাজার ধর্ম কি হবে? – এইরকম একটা টেনশনের ঘটনা। বৌদ্ধ-ভিক্ষুরা ছিলেন শিক্ষিত-ব্রাহ্মণ। [এখনো দেখবেন, ‘শিক্ষিত’ লোকজন, ভারসিটি পাশ-করা, পিএইচডি লোকজন ‘ব্রাহ্মণ’ মর্যাদা দাবি করেন।] মন্দিরের, রাজা-বানানোর অথরিটি কার হাতে থাকবে – সেইটা ছিল মেইন ফ্যাক্টর।

মাস-লেভেলে ধর্ম ছিল না – তা না, কিন্তু ধর্ম জিনিসটা জাতের অধীন একটা ঘটনাই ছিল। যেইখানে বুদ্ধের স্ট্রাগলটা ছিল জাত-ধারণা থিকা বাইর হয়া যাওয়া। কিন্তু উনি মারা যাওয়ার পরে সারভাইবালের জন্য একটা ‘ধর্ম’ হয়া উঠছিল। হিন্দু থিকা অনেকে বৌদ্ধ হয়া যাইতেছিল, আবার বৌদ্ধ থিকা নিচু-জাত হয়া ফিরতেছিল। কিন্তু এইটা জাতের প্রশ্নের বাইরে যাইতে পারার কথা না। হিন্দুরাও বুদ্ধরে একজন দেবতা হিসাবে মাইনা নিছিলেন মেবি পরে, বুদ্ধরে উনারে বলেন, শাক্যসিংহ। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখায় কখনো বুদ্ধ পাইবেন না। মানে, হিন্দু ও বৌদ্ধ’র কনফ্লিক্টের জায়গাটা যতোটা না ধর্ম-পালন, তার চাইতে অনেক বেশি জাত-প্রথার ঘটনা।

তুর্কি-আফগানদের বাংলাদেশ দখলের আগেই, সাউথ-ইন্ডিয়ান সহজিয়া-ধারায় সমাজে রাজাদের বদলে মানুশরে সেন্টার করার কারণেই বৌদ্ধ-পরিচয় ছাইড়া অইটার ভক্ত হয়া উঠার কথা এই অঞ্চলের লোকজনের। যেইটারে ‘হিন্দু’ বইলা রিড করা হয়। মানে, অইটা কোন আলাদা ‘ধর্ম-পরিচয়’ হয়া উঠার জায়গাটাতে স্ট্রাগলই করার কথা।…

বাংলাদেশে বিদেশি শাসন মোটামুটি কম-বেশি সবসময়ই ছিল, কিন্তু যখন তুর্কি-আফগানদের রাজাদের শাসন শুরু হইলো, যারা মুসলমান ছিলেন, তখনকার সময়ে বাংলাদেশের মানুশের মুসলমান হওয়াটা মাস্ট ছিল না। এইটা হইতেছে মেজর একটা ঘটনা।

এই ফার্স্ট টাইম ধর্ম জিনিসটা কমন পিপলের আইডেন্টি হিসাবে এমার্জ করে। মানে, রাজা মুসলমান হইলেই প্রজাদের সবাইরে মুসলমান হইতে হবে না। অনেকেই মুসলমান হইছিলেন, অনেক ভাবেই। কিন্তু মুসলমান হইলেই জাত-প্রথার বাইরে যাওয়ার স্কোপ ছিল না, বরং সমাজে মুসলমান হওয়া মানে ছিল জাত-চ্যুত হওয়া, বিধর্মী হওয়া, এবং “নিচু জাতের হিন্দু”* হওয়া। পপুলার ন্যারেটিভ যেইটা আছে যে, নিচু-জাতের হিন্দু এবং বৌদ্ধরা মুসলমান হইছিল, এইটা আসলে একটা হিন্দু-ন্যারেটিভের ঘটনা, যারা জাত-ব্যবস্থাটারে এখনো সেন্টার হিসাবে ধইরা আলাপ করে।

মানে, আমার কথাটা হইতেছে, তুর্কি-আফগান’রা আসার আগে বাংলাদেশের লোকজন হিন্দু ছিল না, নানান জাত-এর লোক ছিল। পরে খালি নিচু-জাতের লোকজনই মুসলমান হয় নাই, অনেক রাজা, জমিদার এবং গেরস্তরাও হইছে। কিন্তু মুসলমান হওয়ার ভিতর দিয়া উনারা সবাই জাত-চ্যুত হইছেন, নিচু-জাতের লোক হইছেন। ঘটনা’টা ঘটছে এইখানে।

আগে সমাজ আপনার ধর্ম বা জাত ঠিক কইরা দিতো, মুসলমান হওয়ার ভিতর দিয়া আপনি যে আপনার ধর্ম বাছাই করতে পারেন, এই ঘটনাটা ঘটছে এইখানে। এই যে নিজের ধর্ম-পরিচয় বাইছা নেয়া – এই অপশন ছিল কিনা, সেইটা খেয়াল করা দরকার। আর মেবি সেইটা ছিল না, আর এই জায়গা থিকা আমি বলতে চাইতেছি, বাংলাদেশের মানুশের পয়লা ধর্ম হইতেছে ইসলাম।

মানে, এই জায়গাটা খেয়াল করাটা দরকার।


*এখনো আছে এইটা, বিশেন্দু নন্দ’র একটা বইয়ে পাইলাম, ২০১৯ সালে ছাপানো, অইখানে উনি “বৈশ্য-শূদ্র-মুসলমান-আদিবাসী” – এইভাবে জাতের ক্যাটাগরি মাইনা ডেস্ক্রাইব করছে। আরো কয়েকটা নিচু-জাতের হিন্দুর লগে বা পরে মুসলমান আছে! মানে, হিন্দু বইলা আলাদ কোন ধর্ম নাই, বরং মুসলাম হইতেছে একটা ‘জাত’, নিচু-জাতের হিন্দু 🙂

#########

এটলিস্ট তিনটা জিনিস খেয়াল করার কথা আমি বলবো:

১. রাধারমণ দত্ত বয়সে মাইকেল মধুসুধন দত্তের চাইতে ১০ বছরের ছোট এবং মারাও গেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিটারেচারে নোবেল প্রাইজ পাওয়ার পরের বছরে। মানে, উনি ‘মধ্যযুগের’ কোন কবি না! উনি যখন গীত রচনা করতেছেন, গাইতেছেন তখন আমাদের সাহিত্যে, কালচারে কলোনিয়াল ফরম্যাটগুলার ডমিনেন্স শুরু হইছে। ওরাল থিকা লিখিত হইছে, ‘গীতি-কবিতা’ থিকা ‘আধুনিক কবিতা’ শুরু হইছে। কিন্তু রাধারমণ দত্তের গীত লিখিত-সাহিত্যের অনেক ‘আধুনিক কবিতার’ তুলনায় অনেক বেশিভাবে সমাজে আছে। এবং বড় একটা এরিয়া জুইড়াই আছে। বাংলা-ভাষায় কথা কন এবং (রাধারমণের নাম জানার দরকার নাই, কিন্তু) উনার দুই-একটা গান শুনেন নাই, এইরকম লোক খুঁইজা পাওয়া তো টাফই হবে! [কয়েকটা গরু অবশ্য হাম্বা কইরা বইলা উঠতে পারে, আমি শুনি নাই! উনাদেরকে আমি বুঝাইতে পারবো না জিনিসটা।] তারপরও উনার গীতগুলারে বলা হইতেছে ‘আঞ্চলিক’ 🙂 হোয়াই রে ভাই!

একশ বছরে ভাষা থিকা অনেক শব্দ হারায়া যায়। কিন্তু মধুসুধন দত্তের চাইতে রাধারমণ দত্তে অপরিচিত শব্দ কমই থাকার কথা।

২. বাংলা-কবিতার শুরু তো কলোনিয়াল আমল থিকা না। এর আগে যেইসব ফরম্যাট ছিল ( পুঁথি, পালাগান*…) অইগুলারে তো কম্পিটেবল জিনিস হিসাবে নিতে হবে আমাদেরকে। তা নাইলে জিনিসটা আরো বেশি বিচ্ছিন্ন এবং ইনকমপ্লিট ঘটনা মনে হইতে থাকবে। ‘আধুনিক কবিতা’ আসার পরে অই ফরম্যাটগুলা বাতিল হয়া যায় নাই, বরং আমরা ‘সাহিত্য’ হিসাবে কন্সিডার করতে রাজি নাই আর। রাধারমণ, হাছন, জালালউদ্দিন খাঁ, উকিল মুন্সী থিকা শুরু কইরা আবদুল করিম, মাতাল রাজ্জাক দেওয়ানসহ একটা ট্রেন্ড বা ধারার লোকজন কলোনিয়াল ফরম্যাটে ঢুকেন নাই বইলা ‘আঞ্চলিক’ হয়া রইছেন। যেইটারে আমার ‘আধুনিক কবিতা’ এবং ‘আধুনিক গান’ বলি, এইটাই বরং মাইনর একটা জিনিস, সোসাইটির পারসপেক্টিভে। এই স্ট্রাগলের, কনফ্লিক্টের এবং লেনদেনের জায়গাগুলারে আমাদের খেয়াল করা দরকার।

মানে, আমি বলতেছি না যে, গান’রে কবিতা ভাবেন, বা কবিতারে গান হইতে হবে। ফরম্যাট হিসাবে দুইটা আলাদাই এখন, কিন্তু একটা সময়ে তা ছিল না। ছন্দ না, বরং সুর হইতেছে বাংলা-কবিতার কোর ঘটনা।

৩. উনাদেরকে না নেয়ার কারণ খালি ওরাল ফরম্যাট না, এইটা তো আছেই। উনাদের ভাষা যে ‘শুদ্ধ’ না – এইটাও একটা মেজর একটা ঘটনা। যদি রাধারমণ’রে ‘বাংলা-সাহিত্য’ হিসাবে নেন আপনি, ‘বাংলা-সাহিত্য’ নামে কলোনিয়াল-লিটারেচার বেটাগিরি আসলে থাকতে পারে না তখন। এইটা মেজর রিস্কের ঘটনা। ‘আধুনিক বাংলা-কবিতা’ এই জায়গাটারে এড়ায়া গেছে বইলাই, সম্বন্ধ রাখতে চায় নাই বা পারে নাই বইলা বাংলা-কবিতা মোস্টলি “জন-বিচ্ছিন্ন” একটা ঘটনা। মানে, পাবলিকের ভাষাটারে হেইট বা হিউমার না-কইরা ‘বাংলা-কবিতা’ লেখতে পারবেন না আপনি!

মানে, ফরম্যাটগুলা চেইঞ্জ হইতো, বা নানানভাবে হইতেছেই এখনো। কিন্তু ভাষা-হেইট্রেট’টা কোর একটা ঘটনা, ফরম্যাটের বাইরেও।


*একটা কথা মুখে বলছি অনেকবার, অইভাবে কখনো লেখা হয় নাই… জীবনানন্দের কবিতার সুর যে আমাদের ভালোলাগে, এর একটা কারণ হইতেছে উনি পয়ারের ছন্দে লেখছেন সবসময়, যেইটা পুঁথির সুরের লগে খুবই রিলেটেড ঘটনা। এই কারণে, উনার কবিতার সুর অনেক সময় একটানা চলতেই থাকার মতো বোরিংও মনে হইতে থাকে। কিন্তু মিলের জায়গাটারে খেয়াল করাটা দরকার।

 

মার্চ ৫, ২০২২

– হিন্দি-সিনেমা: বাঈজী-নাচ টু ক্যাবারে ড্যান্স টু আইটেম সং –

কয়দিন আগে হিন্দি-সিনেমা নিয়া কথা বলতে গিয়া বলতেছিলাম (লিংক কমেন্টে দিতেছি), হিন্দি-সিনেমার মেইন জায়গা হইতেছে নাচা-গানা। মানে, এন্টারটেইনমেন্ট তো কতো ধরণেরই আছে; ইভেন সিনেমা বা ভিজ্যুয়ালের ভিতরেও নানান ধরণের ক্যাটাগরি আছে। তো, হিন্দি-সিনেমা’তে এন্টারটেইনমেন্টের ঘটনাটা আসছে বাঈজী-বাড়ি’র একটা ট্রাডিশন থিকা। শুরুর দিকের অনেক সিনেমার নায়িকা তো আছেই, মিউজিশিয়ানও ছিলেন বাঈজী ঘরানার মহিলারা। যারা আসলে শরীর বেচতেন না, বরং এন্টারটেইনমেন্টই বেচতেন। [ইন্টারেস্টিং একটা সার্ভে ছিল ইন্ডিয়ান প্রস্টিটিউটের উপর, উনারা বলতেছিলেন, কাস্টমার’রা উনাদের কাছে ‘গার্লফ্রেন্ড-এক্সপেরিয়েন্স’টা চায়, অথচ উনারা তো শরীর-বেচার জন্য টাকা পান, এর বাইরে কেন যাবেন!]… মানে, এইখানে ডিটেইল একটা আলাপ পেইন্ডিং আছে।

এই কারণে দেখবেন, সিনেমাহলে যখন সিনেমা দেখানো হইতো, সন্ধ্যাবেলার ম্যাটিনি শো’গুলাই ছিল সবচে প্রাইম-টাইম।…

কিন্তু যেইটা বলতেছিলাম, জিনিসটা তো স্ট্যাটিক থাকে নাই। ডাকু-কাহিনি, নায়কের ম্যাচোগিরি হয়া উঠছিল সেন্ট্রাল ঘটনা। রাজকাপুরের সময় থিকাই হিন্দি-সিনেমার ক্যামেরা সবসময় নায়িকার/নারীর শরীরের উপরে ঘুইরা বেড়ায়, আর এইটা একটা কমন ফিচার এখনো। নাচা-গানগুলাও এটলিস্ট তিনটা স্টেইজ পার হইছে বইলা মনেহয়। শুরুতে যেইটা ছিল বাঈজী নাচ [১৯৫৪ সালের “আর পার” সিনেমার ‘বাবুজি ধীরে চল না…’ গানটা কথা মনে হইলো, এর আগেরও অনেক গান থাকার কথা], পরে ফোক সং হিসাবেও ছিল। নায়িকাই নাচতো, আর অনেক সময় তার লগে কয়েকজন ‘একস্ট্রা’-ও।

এই ‘বাঈজী নাচ’ জিনিসটা ‘৭০ এর সেকেন্ড হাফ পর্যন্তও কন্টিনিউড হইছে। যদিও “ক্যাবারে ড্যান্স” জিনিসটা ১৯৭০-এর আগে থিকাই চালু হওয়ার কথা, দুইটাই পাশাপাশি চলছে কিছুদিন। কিন্তু একটা সময়ে আইসা বাঈজী-নাচ আর দেখা যায় নাই; বরং ‘৯০ থিকা নতুন একটা ঘরানা তৈরি হয় সেইটার, ‘আইটেম সং’ নামে। এখন অই নামেই চলতেছে জিনিসটা।

বাঈজী-নাচে নাচের লগে গানটাও ইম্পর্টেন্ট। মানে, যিনি নাচতেছেন, উনিই গাইতেছেন। একই মানুশ। নাচ’টাও হইতে হবে ক্ল্যাসিকাল ঘরানার। ক্যাবারে ড্যান্সে গিয়া নাচ’টা মেইন হয়া উঠছে, গানটা আছে ব্যাকগ্রাউন্ডে। নাচ’টা ইরোটিক হইতে হবে, তা নাইলে হবে না। তবে এই দুই জায়গাতেই পারফর্মার একলাই নাচতেছেন, ভিউয়ার আছে কিছু উনার সামনে। কিছু “সখী”ও থাকতে পারে। বাঈজী-নাচ এবং মেলার-নাচ বা ফোক-সং আবার কাছাকাছি জিনিস। কিন্তু আইটেম সং-এ আইসা এই ভিউয়ার গ্রুপটাও পার্টিসিপেট করতেছে। মানে, জিনিসটা ইরোটিক তো আছেই, ফানও তো একটা!

যদিও কোন মেইল-পারফর্মার নাই বাঈজী-ঘরানায় এবং ক্যাবারে ড্যান্সে (ফোক-সং টাইপের জায়গাগুলাতে নায়ক থাকতো লগে অনেক সময়, বাজনা-টাজনা বাজাইতো, যেন সে নাচাইতেছে তাঁরে…), আইটেম সং-এ একটা সাইড-পার্টনার লাগতেছে অনেক সময় (বিড়ি জ্বালাইলে গানে বিবেক ওবরয়’র কথা মনে কইরা বলতেছি)। এইখানে অডিয়েন্সের পার্টিসিপেশনের ভিতর দিয়া যতোটা না ‘ইরোটিক’ তার চাইতে ‘ফান’ হয়া উঠতেছে। যেই কারণে বিয়া-বাড়ির গানের লগেও এক ধরণের ফিউশন হইছে, নানানভাবে। মীরা নায়ারের সিনেমাতে এইরকম একটা গান থাকে অনেক সময়, সবাই মিইলা নাচা-গান কইরা ‘ফান’ করতেছে।

মানে, ক্ল্যাসিক-ইরোটিক থিকা ভালগার এবং ভালগার থিকা ফান হয়া গেছে – এইরকম স্ট্রেইট লাইন আসলে টানা যাবে না। কিন্তু টাইম টু টাইম কিছু ফিচার অ্যাড হইছে। এইভাবে দেখলে বেটার। ইরোটিসজমই এর কোর ঘটনা। আর এইখানে মেইল-গেইজের জায়গা থিকাই ঘটনাগুলা ঘটতেছে। কিন্তু এইটুক বললেও পুরাটা বলা হবে না আসলে। বাঈজী-নাচানো একটা সময় ছিল জমিদারি’র জিনিস, বারে-ক্যাবারে যাওয়াটা টাকা-পয়সাঅলা লোক হইতে পারার স্টেটমেন্ট, এইরকম আইটেম সং বা পার্টি-ড্যান্সও হাই-ক্লাস সোসাইটির ঘটনাই। মানে, পাওয়ারফুল লোক হইতে পারার সিগনেচার। আর পাওয়ার জিনিসটা তো প্যার্টিয়ার্ক্যাল ঘটনাই সবসময়।

 

মার্চ ৭, ২০২২

“The solitude that threatened me after One Hundred Years of Solitude wasn’t the solitude of the writer; it was the solitude of fame, which resembles the solitude of power much more.”
– Gabriel García Márquez

একজন ডিক্টেটর বা জালিমের যেই লোনলিনেস সেইটার একজন রাইটারের লোনলিনেসের লগে একটা মিল আছে, পপুলারিটি বা সেলিব্রেটির লোনলিনেসের লগেও। কিন্তু জিনিসগুলা একইরকম না।

একজন রাইটার যখন বাস্তবতাটারে বলতে যায়, সেইটা শব্দের ভিতর দিয়া ক্লিয়ারলি আসতে পারে না, অনেক সময় সে বাস্তবতার লগে কানেকশনটারেই হারায়া ফেলে, শব্দের দুর্গের মধ্যে বন্দি হয়া পড়ে।…

এই কারণে আমার মনেহয় একজন রাইটারের জন্য সামাজিক কাজকামের মধ্যে থাকতে পারাটা জরুরি জিনিস অনেক সময়, কোন না কোনভাবে কানেক্ট থাকা; এইটা তার একটা ঠ্যাং’রে বাস্তবতার মধ্যে রাখতে হেল্প করে। রাইটার মানে অই লোক না যে উড়তে পারে শব্দের ভিতর দিয়া, এইটা তো পারে-ই, কিন্তু একইসাথে গ্রাউন্ডেড থাকতে পারাটাও দরকারি একটা ঘটনা।

#########

এইরকম একটা ঘটনা আছে যে, “আমি তো উনারে পছন্দ করি না!” মানে, আপনি যে আমারে পছন্দ করেন বা করেন না, এইটা যেন একটা ‘যুক্তি দেয়ার’ ঘটনাই!

ইতালি’র নয়া ফ্যাসিস্ট, বলা ভালো মাফিয়া এক প্রেসিডেন্ট ছিল (নামটা মনে পড়তেছে না এখন), তো, তার এগেনেস্টে এক ম্যাজিস্ট্রেট মামলা দায়ের কইরা এনকোয়ারি করতেছিল, তখন প্রেসিডেন্টের পালা-কুত্তার মতন মিডিয়া অই ম্যাজিস্ট্রেটরে হেনস্তা করার লাইগা নানান নিউজ করতেছিল; এর মধ্যে একটা ছিল, উনার মোজা কালার তো কালা (বা হলুদ এইরকম কিছু)! মানে, মোজার রং লাল না লীল – এইটা ঘটনা না, ঘটনা হইতেছে লোকটারে ডিমিনিং করা। সেইটা যে কোনভাবে করতে পারলেই হইছে।

এইরকম, ‘উনারে তো পছন্দ করি না আমি’ যেন অই লোকটারই সমস্যা, আপনার বা আমার না!

এইটার কাছাকাছি আরেকটা জিনিস হইতেছে, ‘আপনারে তো ভালো লোক বইলা ভাবতাম আমি!’ এইরকম পেরেম বা ভক্তিরে খুবই ডরাই আমি। আমার সাথে সাথে বলতে ইচ্ছা করে, না ভাই, আমি পাদ দেই, আমার গু’য়েও গন্ধ আছে।

মানে, কেউ আমারে অপছন্দ করলে সেইটা নিয়া কিছুটা মন-খারাপ করতে পারি, বা কেউ আমারে পছন্দ করলে সেইটা তো খুশির খবরই, সবসময়। কিন্তু কেউ এইটারে ইন্টেলেকচুয়াল পজিশন হিসাবে যখন ক্লেইম করতে চান, তাদের পেরেম-ঘৃণা নিয়া আসলে কি করার আছে আমার! নিজের জন্যই সরি লাগে আসলে।

মার্চ ৮, ২০২২

কোক-স্টুডিও বাংলা

এই কথা আমি আগেও বলছি, ‘সত্যি’ জিনিসটা খুব গোপন বা লুকানো কোনকিছু না, বরং বেশিরভাগ সময়ই ভিজিবল, আমরা জাস্ট দেখতে রাজি না।

এইটা আবার মনে হইলো, কোকস্টুডিও’র লগো’টা খেয়াল কইরা। Ibrakor Jhilli বলতেছিলেন কয়দিন আগে একটা পোস্টে, কোকস্টুডিও পাকিস্তান বা কোকস্টুডিও ইন্ডিয়ার লগো’তে কি দেখছেন ”পাকিস্তান’ বা ‘ইন্ডিয়া’ লেখা? খেয়াল কইরা দেখেন তো ইউটিউবের কোন ভিডিও’র লগো’তে আছে কিনা?

কিন্তু বাংলাদেশে যেইটা করছে, সেইখানে লেইখা রাখছে ‘বাংলা’ 🙂 অবশ্যই ‘আদর’ কইরা লেখছে, ‘সম্মান’ দিয়াই লেখছে, ব্লা ব্লা ব্লা তো আছেই… এইটা যে ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চা, অরিজিনাল কোকস্টুডিও না, এইটাও যে বলে নাই – তা মনেহয় না 🥱

 

মার্চ ৯, ২০২২

২০১৮ সালে বলছিলাম, আওয়ামী লীগের উচিত হবে মিলিটারি-পুলিশ ও সরকারি আমলাদের কাছে ‘ক্ষমতা হস্তান্তর’ না কইরা বিএনপি’র লগেই রাজনীতি করা। কিন্তু অইটা করেন নাই উনারা, বরং মিলিটারি, পুলিশ, আমলা, মিডিয়াগুন্ডাদের লগে নিয়া হুমকিই দিছিলেন, ইলেকশনের আগে। আর এখন চাইলেও আওয়ামী লীগ বাকশালি-চক্রের [মিলিটার-পুলিশ, সরকারি আমলা, মিডিয়া এবং এলিট-বাম] কাছে ‘ক্ষমতা’ ছাড়তে পারবে না। অই এগজিট পয়েন্ট ভ্যালিড অপশন না, টাফই হওয়ার কথা।

২০২২ সালে আমি বলবো, বিএনপি’র উচিত হবে না আওয়ামী লীগের কাছ থিকা ‘ক্ষমতা ভিক্ষা’ নেয়া। অই চক্রের কাছে সারেন্ডার করা, জুলুমবাজদের পলিটিক্যাল এজেন্ট হয়া উঠা। যদি এইটা হয়, সেইটা বাকশালের চাইতে খুব আলাদা কিছু হইতে পারবে না। ‘ক্ষমতায়’ আইসা তারা আওয়ামী লীগের মতো একটা শ্যাডো পলিটিক্যাল দলেই পরিণত হবে। এখন যেমন পুলিশ, সরকারি আমলা, মিডিয়ার লোকজনই পাওয়ারফুল; আওয়ামী লীগ হইতেছে এদের পলিটিক্যাল এজেন্ট মাত্র। ছাত্রলীগের নেতার চাইতে থানার ওসির পাওয়ার বেশি।…আর এইগুলা সবই আমরা কম-বেশি জানি।

এইখানে আওয়ামী লীগের লোকজনরে বিএনপি’র লোকজন দিয়া রিপ্লেইস কইরা কোন লাভ নাই – ব্যাপারটা এইরকম না। বাকশালের চাইতে যে কোনকিছুই বেটার এখন, বাংলাদেশে। কিন্তু সেইটা একটা পিপলস পাওয়ারের জায়গা থিকা না হয়া যদি ক্ষমতার একটা ‘এগজিট পয়েন্ট’ হিসাবে হাজির হয়, সেইটা নিজেই পলিটিক্যাল পাওয়ারের কোন জায়গা হিসাবে এফেক্টিভ থাকতে পারবে না, বরং এক ধরণের ‘পলিটিক্যাল সার্ভিস’ দেয়ার টুল হয়াই থাকতে হবে। মানে, এই ডর আমার আছে আর কি!

 

মার্চ ১০, ২০২২

২০১৮ সালে বলছিলাম, আওয়ামী লীগের উচিত হবে মিলিটারি-পুলিশ ও সরকারি আমলাদের কাছে ‘ক্ষমতা হস্তান্তর’ না কইরা বিএনপি’র লগেই রাজনীতি করা। কিন্তু অইটা করেন নাই উনারা, বরং মিলিটারি, পুলিশ, আমলা, মিডিয়াগুন্ডাদের লগে নিয়া হুমকিই দিছিলেন, ইলেকশনের আগে। আর এখন চাইলেও আওয়ামী লীগ বাকশালি-চক্রের [মিলিটার-পুলিশ, সরকারি আমলা, মিডিয়া এবং এলিট-বাম] কাছে ‘ক্ষমতা’ ছাড়তে পারবে না। অই এগজিট পয়েন্ট ভ্যালিড অপশন না, টাফই হওয়ার কথা।

২০২২ সালে আমি বলবো, বিএনপি’র উচিত হবে না আওয়ামী লীগের কাছ থিকা ‘ক্ষমতা ভিক্ষা’ নেয়া। অই চক্রের কাছে সারেন্ডার করা, জুলুমবাজদের পলিটিক্যাল এজেন্ট হয়া উঠা। যদি এইটা হয়, সেইটা বাকশালের চাইতে খুব আলাদা কিছু হইতে পারবে না। ‘ক্ষমতায়’ আইসা তারা আওয়ামী লীগের মতো একটা শ্যাডো পলিটিক্যাল দলেই পরিণত হবে। এখন যেমন পুলিশ, সরকারি আমলা, মিডিয়ার লোকজনই পাওয়ারফুল; আওয়ামী লীগ হইতেছে এদের পলিটিক্যাল এজেন্ট মাত্র। ছাত্রলীগের নেতার চাইতে থানার ওসির পাওয়ার বেশি।…আর এইগুলা সবই আমরা কম-বেশি জানি।

এইখানে আওয়ামী লীগের লোকজনরে বিএনপি’র লোকজন দিয়া রিপ্লেইস কইরা কোন লাভ নাই – ব্যাপারটা এইরকম না। বাকশালের চাইতে যে কোনকিছুই বেটার এখন, বাংলাদেশে। কিন্তু সেইটা একটা পিপলস পাওয়ারের জায়গা থিকা না হয়া যদি ক্ষমতার একটা ‘এগজিট পয়েন্ট’ হিসাবে হাজির হয়, সেইটা নিজেই পলিটিক্যাল পাওয়ারের কোন জায়গা হিসাবে এফেক্টিভ থাকতে পারবে না, বরং এক ধরণের ‘পলিটিক্যাল সার্ভিস’ দেয়ার টুল হয়াই থাকতে হবে। মানে, এই ডর আমার আছে আর কি!

#########

দুনিয়াতে নানান কিসিমের বলদ আছে। আমিও বলদ (কোন না কোনদিন দিক দিয়া), আপনিও 🙂 মানে, অলমোস্ট সবারই কোন না কোন বলদামি আছে, বা থাকে। এইটা এতো খারাপ কিছু না। বেশি বেশি না করলেই হইছে।

তো, আমার কাছে সবচে বিরক্তিকর লাগে হইতেছে “বেয়াদব-বলদগুলারে”। যেইগুলা মনে করে একটু ‘বেয়াদবি’ না করলে ‘পোতিভা’ শো করা যাবে না! আর এইরকম অনেক সার্পোটিং আলাপ পাইবেন যে, “পোতিভাবানদের বেয়াদিব ভালো!” কিন্তু কেন?

এইটা নিয়া কোন আলাপ পাইবেন না। কেউ ভালো-কবিতা লেখে বা বেশি-বুঝে বইলাই বেয়াদবি করে না, বরং আপনার লগে বাজে-বিহেভ করলে আপনি উল্টা চড়-থাপ্পড় দিতে পারবেন না বইলা করতে পারে আসলে।

মানে, যে কেউ যে কোন কারণেই এইটা করতে পারে। বেয়াদবি করার জন্য জিনিয়াস হওয়ার কোন দরকার নাই। অইটা আরেকটা ঘটনা বা স্টাইল। খারাপ-কবিতা লেইখা, কম-জাইনাও বেয়াদবি করতে পারে লোকজন। পসিবল।

উদাহারণ তো আসলে কম নাই। কিন্তু বেয়াদবি করতে অইরকম ভাল্লাগে না আর কি আর! 🙂

 

Leave a Reply