নভেম্বর ১৬, ২০২২
ঘটনা এইটা না যে, খালি রিজার্ভ নিয়া এই অবৈধ-সরকার মিছা-কথা বলছে, বরং অন্য অনেক কিছু নিয়াই মিছা-কথা বলছে, আর বইলা যাইতেছে।
এখন কিছু ‘যুক্তিবাদী’ আছে, যারা কয়, আপনি কি মিছা-কথা কন না? কোন গর্ভমেন্ট কি মিছা-কথা কয় না? এই বলদ’দের চোখে ঠুলি-পড়া। এরা বাকশাল ছাড়া কোন ‘বিকল্প’ দেখে না। এদেরকে ‘যুক্তি’ দিয়া বুঝানোর কিছু নাই। কারণ যুক্তিরও একটা কনটেক্সট লাগে, এরা কনটেক্সটারেই ম্যানিপুলেট করে।
দুনিয়ার কোন দেশে ২০১৮ সালের মতো রাতের-ভোটের ইলেকশন হয় নাই। এইটা দুনিয়ার ডেমোক্রেসির হিস্ট্রিতে সবচে জঘন্য ঘটনাগুলার একটা। ২০১৮ সালের ইলেকশন নিয়া যেই মিছা-কথাটারে এস্টাবলিশড করা হইছে, না-বলার ভিতরে রাখা হইছে, সেইটা হইতেছে এখনকার সব মিছা-কথাগুলার গোড়া।
যতদিন না পর্যন্ত বাকশালি-মিডিয়া এইটা নিয়া খোলাখুলি কথা বলতে পারবে, ততদিন পর্যন্ত বাকি সব মিছা-কথাগুলারে ব্যাক-আপই দিয়া যাইতে হবে তাদেরকে। আর কম-বেশি এই কাজটাই করতেছে বাকশালি-মিডিয়াগুলা।
আর বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়াও যারা কথা কইতেছেন, তাদেরকে ২০১৮ সালের ইলেকশন নামের ভাওতাবাজি নিয়া স্পষ্ট কইরা, বারবার কথা বইলা যাইতে হবে। কারণ এইটা হইতেছে, কোর ঘটনাটা, যেইখান থিকা এখনকার মিছা-কথার কনটেক্সট’টারে তৈরি করা হইছে। ২০১৮ সালের ইলেকশনরে জায়গাটারে এক্সপোজ না কইরা এই মিছা-কথার জায়গাগুলারে কখনোই বাতিল করা পসিবল হবে না। এই বুঝ’টা জরুরি।
নভেম্বর ১৭, ২০২২
চোরের সাক্ষী বাটপার। আর নয়া বাকশালের সাক্ষী হইতেছে পরথম আলো, ডেইলি স্টার।
এই কথাটা নতুন কইরা মনে হইলো ডেইলি স্টারের আজকের নিউজ দেইখা, ডলারের হিসাব নিয়া। এখন এইসব হিসাব তো মোটামুটি ভ্যালুলেস। কারণ আপনার কাছে ২৭ বিলিয়ন ডলার আছে, কিন্তু তেল কেনার টাকা নাই, এলসি’র পেমেন্ট দিতে পারেন না, আমদানি করতে দেন না, এমনকি এডুকেশন ফি-ও দিতে দিতেছেন না স্টুডেন্টদের! মানে, আমার পকেট-ভর্তি ডলার, কিন্তু ভাত-খাওয়ার উপায় নাই! এইটা কেমনে সম্ভব!
২০১৮ সালের ইলেকশনের পরেও আই-ওয়াশের বা ভাওতাবাজির ন্যারেটিভ তৈরির কাজটাও উনারাই করছিলেন। ডেইলি স্টারের আজকের রিপোর্ট’টা দেইখা অই জিনিসটা মনে হইলো। যে, আমরা তো অথেনটিক সোর্স থিকা ডেটা দিতেছি! হিসাবও মিলায়া দিতেছি! মানে, কাজির গরু যে খাতায় লেখা আছে, অই কাজটা উনারা অনেক দিন আগে থিকাই নিষ্ঠার সাথে করে যাইতেছেন।
নভেম্বর ১৮, ২০২২
খালি ইকোনোমিক ডেটা-ই না, অলমোস্ট যে কোন ডেটা-ই একটা ফিক্সড নাম্বার দিয়া তেমন কিছুই বুঝতে পারবেন না, বা এইটা তেমন কিছুই মিন করে না।
নিউজপেপার আর টিভি’তে যেইসব ডেটা নিয়া হাউমাউ করা হয়, এরা মোটামুটি তিনটা বায়াসডের উপ্রে বেইজ কইরাই সরকারি-প্রপাগান্ডাগুলা চালাইতে থাকে।
এক হইলো, রিলিভেন্ট ক্রুশিয়াল প্যারামিটারগুলারে কন্সিডার করে না। যেমন ধরেন, দুইজনের কাছে ৩ লাখ টাকা আছে, কিন্তু একজনের কোন লোন নাই, আরেকজনের ১০ লাখ টাকা লোন আছে। তাইলে দুইটা সিচুয়েশন তো একই না। বা ধরেন, একজনের চাকরি নাই বা বিজনেস বন্ধ হয়া গেছে আর একজন টাকা দিয়া জমি কিনছে বা ব্যবসার মাল-সামান কিনছে। এখন দুইজনের হাতেই সমান ৩ লাখ টাকা আছে – এইটা খালি মিনিংলেস কথা-ই না, ভু্য়াও না, মিছা-কথাই আসলে।
সেকেন্ড হইতেছে, যেই ডেটা-ই বলা হোক, সেইটারে ক্রস-চেক করা হয় না। যেমন, ৬ মাস আগেই বাকশালি-মিডিয়া ফাটায়া ফেলছিল, হায়েস্ট এক্সপোর্ট হইছে! এই-সেই। কিন্তু ভ্যালু বাড়লেও ভলিউম কি বাড়ছে? এক্সপোর্ট-পেমেন্ট কি আসছে অই পরিমাণ? মানে, পরে গিয়া তো দেখা গেছে অনেক ঘাপলা আছে এইখানে।
থার্ড এবং ক্রুশিয়াল ঘটনা হইতেছে, যে কথা বলতেছে, অথরিটি বইলাই তার কথা’রে মাইনা নেয়া। এখন মাওলানার কথারেই যদি ধর্ম বইলা মাইনা নেই বা প্রফেসরের কথারে নলেজ, তাইলে তো আমরা খালি তাদের স্লেইভ হয়া-ই থাকবো! তোতা-পাখির তো দরকার নাই আমাদের! কিন্তু আমরা বেশিরভাগ কেইসেই কোন ইনফরমেশন জানার চাইতে তোতা-পাখির বুলিই পাইতেছি।
এখন নিউজপেপার এবং টিভি’র লোকজন এই বেসিকগুলা না-জাইনাই এই কাজ করেন – এইটা বিলিভ করার মতো বলদ যে নাই বাংলাদেশে, তা না; কিন্তু খেয়াল করার মতো লোকও আছেন বইলা আমি মনে করি। বা ধীরে ধীরে এই ‘কেরামতিগুলা’ তো আমরা খেয়াল করতে পারতেছি।
যে কোন ইনফরমেশনই বায়াসড না, বরং পলিটিক্যালি ‘উদ্দেশ্য-প্রণোদিত’ ঘটনাই। কিন্তু তাই বইলা অথরিটির নাম্বারগুলারে কোশ্চেন না করা, ক্রস-চেক না করা, এবং রিলিভেন্ট জায়গাগুলারে কন্সিডার না কইরা মাইনা-নেয়ার একটা প্রাপাগান্ডা-মূলক এনভায়রনমেন্ট তৈরি করাটারে কনজিউম করার ব্যাপারে কিছু ফিল্টার করা দরকার তো আমাদের।
***
– সত্যি কথা না-বলার ঘটনাটা নিয়া –
এইরকমের একটা ঘটনা আছে যে, “আমি তো সত্যি কথাটা জানি বা বুঝি, কিন্তু বলতে ভয় পাই”। তো, এইরকমের পজিশনটারে আমার কাছে প্রব্লেমেটিক মনেহয়। মেইনলি তিনটা কারণে।
এক হইতেছে, না-বলা সত্যি বইলা কিছু নাই আসলে। যা কিছুরে আমরা সত্যি বইলা মনে করি আমাদের কথা-বার্তায়, কাজে-কামে সেইটারে বলা, না-বলা এবং এমনকি চুপ কইরা থাকার ভিতর দিয়াও আমরা এক্সপ্রেস করি আসলে। মানে, সবসময় চেঁচায়া বলার কোন ঘটনা না-ও এইটা।
“আমি সত্যিটা জানি ও বুঝি, কিন্তু বলতেছি না” – এর মানে হইতেছে আসলে আমি সত্যিটারে লুকাইতেছি, বা এর চাইতে অন্য কোনকিছুরে এর চাইতে বেশি (পাওয়ারফুল বা দরকারি অর্থে) ‘সত্যি’ মনে করি।… আমি বলতে চাইতেছি, সত্যি জিনিসটা এমনকিছু না যে, চাইলেই আমি স্থগিত রাখতে পারি বা বাতিল কইরা দিতে পারি, বরং আমার চিন্তা ও এক্টিভিটি যদি অই আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের জায়গা থিকা ফ্লো না করে, তাইলে সত্যের আন্দাজ আমার হয় নাই আসলে।
(এইখানে আরো কয়েকটা জায়গা আছে। যে, সত্যি-জিনিসটা স্ট্যাটিক কোন ঘটনা না, যেমন ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট, আবার কালারফুলও। ফ্যাক্ট বা ঘটনাই সত্যি না। এমনকি এবসুলেট ট্রুথ অন্য আরেকটা জিনিস। আমি এইখানে সোশ্যাল-ট্রুথের জায়গাগুলা নিয়া বলতেছি।)
সেকেন্ড হইতেছে, আমার হয়া অন্য কেউ সত্যিটা বইলা দিবে, বা আমার অধিকার আদায় কইরা দিবে – এইকমের একটা ভদ্রলোকামি (বা বাইনচোতগিরি) আছে। যে, আন্দোলন তো বিএনপি করবে! কথা তো নেতারা বলবে! এমনকি কেউ বেশি বেশি কথা কইলে, তারে “বুদ্দিজীবী হইছে!” বইলা টিটকারি মারা লাগবে! মানে, আমি নিজে তো কইবো-ই না, অন্য কেউ কইতে গেলেও তারে ডি-মরালাইজ করা লাগবে। যে, বেশি বাড়াবাড়ি করতেছে! 🙂 তো, এইটা ডরের ঘটনা না খালি, ডরাইতে হবে – এই জায়গাটারে ইম্পোজ করার জায়গা থিকাই বরং “সত্যি কথা বলতে পারতেছি না”র পজিশনটা অপারেট করে।
থার্ড হইতেছে, ব্যাপারটা বিপ্লব করার ঘটনা না, বা বেয়াদবি করা, বা সোশ্যাল-কন্ডিশনগুলারে আমলে না নেয়া না। বরং ঘটনাগুলার লগে ক্রিটিক্যালি এনগেইজ হইতে রাজি না হওয়া। আমি বলতে চাইতেছি, এই যে ‘না-বলতে-পারা’ এইটা খালি ডরের ঘটনা না, বা এড়ায়া যাওয়ার ঘটনাও না খালি, এক ধরণের রিয়ালিটিরেও তৈরি করে এর বাই-প্রডাক্ট হিসাবে, যেইটা আসলে সত্যি না। মানে, “আমি সত্যি কথা বলতেছি না”, ঘটনাটা এইটুকই না, এইটা একটা মিছা-কথার বা মিথ্যা-রিয়ালিটির বেইজ হিসাবেও এফেক্টিভ থাকে।
নভেম্বর ১৯, ২০২২
এইরকমের ‘সমালোচনা’ 😛 তো ডাইরেক্টলি বা ইন-ডাইরেক্টলি আমারেও শুনতে হইছে যে, ভাই, আপনারে পুলিশে ধরে না কেনো! 🙂
মানে, এই এক্সপেক্টশনের পিছনে মেজর একটা কারণ তো অবশ্যই এইটা যে, ইন্টেলেকচুয়াল এবং এক্টিভিস্টের মধ্যে কোন ডিফরেন্স করতে আমরা রাজি না। (যেইরকম ছন্দ ও কবিতারে আমরা একই জিনিস মনে করি, এইরকম ভাবতে পারি যে, ইন্টেলেকচুয়াল ও এক্টিভিস্ট একই ঘটনা!)
এখন একজন ইন্টেলেকচুয়ালের কাজ তো অবশ্যই কোন না কোন এক্টিভিজমের দিকে টার্ন করে, বা একজন এক্টিভিস্টেরও মিনিমাম একটা লেভেলের ইন্টেলেকচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিং দরকার। কিন্তু এইসব ওভার-ল্যাপিং থাকার পরে ইন্টেলেকচুয়াল এবং এক্টিভিস্ট আলাদা আলাদা ঘটনা হইতে পারে আসলে – এই বুঝ’টা দরকারি একটা জিনিস।
ইন্টেলেকচুয়ালের এরিয়া হইতেছে অনেকটা নতুন-চিন্তারে পসিবল কইরা তোলা, ক্রিয়েট করা; আর এক্টিভিস্টের এরিয়া হইতেছে সমাজে নতুন-কনশাসনেসরে তৈরি করা, কমিউনিকেট করা। মানে, গ্রসলি এইরকম আরো কিছু জিনিস মার্ক করা যাইতে পারে।…
এখন কেউ একইসাথে ক্রিয়েট ও কমিউনিকেট দুইটাই ভালোভাবে করতে পারেন। কেউ যতোটা লেইখা বলতে পারেন, আবিষ্কার করতে পারেন, ততটা কমিউনিকেট করতে বা বুঝাইতে পারেন না। কেউ আবার বুঝাইতে পারেন, কিন্তু নিজে কিছু ক্রিয়েট করতে পারেন না। কেউ আবার দুইটা ট্রাই করেন, কিন্তু কোনটাই পারেন না। 🙂 মানে, এর মধ্যে যে কোন একটা ক্যাটাগরিতেই আমি ফিট-ইন করতে পারি, যদি ইন্টেলেকচুয়াল ও এক্টিভিস্ট – এই দুইটারে প্যারামিটার ধইরা দেখেন।
তবে আমার কাজকাম নিয়া আমার নিজের ধারণা হইতেছে, যে কোন ধরণের (পলিটিক্যাল ও কালচারাল) এক্টিভিজমের লগে আমার তেমন কোন যোগাযোগ নাই। ইন্টেলেকচুয়াল কোশিশও যা চালু আছে সেইটা মেইনলি লিটারেচার ও কালচারের জায়গা থিকা, এর রিলিভেন্স হিসাবে পলিটিক্যাল আলাপও আসছে, কিন্তু অইটা আমার বলাবলির বা কাজকামের খুব একটা কোর জায়গা এখনো হয়া উঠতে পারে নাই।
ফেসবুকে পলিটিক্স নিয়া যেইসব আলাপ আছে আমার, সেইগুলারে কোন পলিটিক্যাল-এক্টিভিজমের পার্ট হিসাবে রিড করলে অনেকে হতাশ হইবেন বইলাই আমি মনে করি। আমি মনে করি, সমাজের মানুশ হিসাবে রাজনীতি নিয়া যে কোন শ্রেণী-পেশার মানুশেরই একটা মিনিমাম লেভেলে ভোকাল হওয়া উচিত। অই মিনিমাম লেভেলটাই কেউ করে না বইলা আমার কথাগুলারে একসেপশনাল মনে হইতে থাকে মেবি। কিন্তু এইটা আসলে একটা মিনিমাম সোশ্যাল কাজ আমাদের।
আরেকটা জিনিস হইতেছে, কোন মানুশ যত পেইন নেন, সাফার করেন তিনি যেমন গ্রেট-আর্টিস্ট না, একইরকমভাবে কারো নামে মামলা হইলে, কারো উপর হামলা হইলেই উনি বড় এক্টিভিস্ট হয়া উঠেন না। তবে উল্টাটা বেশিরভাগ সময়ই সত্যি। যিনি গ্রেট-আর্টিস্ট, উনি সাফার করেন। যিনি এফেক্টিভ এক্টিভিস্ট, উনি মামলা খাইবেন। কোন সন্দেহ ছাড়াই, পিনাকী ভট্টাচার্য এই মুহূর্তে বাংলাদেশে সবচে এফেক্টিভ এক্টিভিস্ট। উনার নামে এতোদিন কোন অফিসিয়াল মামলা যে ছিল না, এইটা মোটামুটি নিউজ! উনারে যারা ফলো করেন, তাদের কাছে।
বাংলাদেশের অনেক মানুশ এই অবৈধ-শাসনের ভিক্টিম। যারা ইন্টেলেকচুয়াল না, এক্টিভিস্টও না। কারো সাফাংরিসই কারো চাইতে কম না। একটা জুলুমের শাসনে আমরা সবাই মজলুম। এইটা যত দেরিতে বুঝতে রাজি হবো আমরা সবাই, ততদিন এই জুলুমের শাসন থাইকাই যাবে আসলে, কোন না কোন ফর্মে।
***
– তিন ধরণের বাকশালি –
বিন্দু পরিমাণ লাজ-শরম থাকলে কারো পক্ষে পাবলিকলি নয়া বাকশালের পক্ষ নিয়া কোন আলাপ দেয়া সম্ভব না, দেশের এই অবস্থায়। তারপরও তিনটা ক্যাটাগরিতে এক্টিভ আছে, বাকশালি-বলদগুলা।
এক হইতেছে, অন্ধ-বাকশালি। রেইপ কইরা কোন মেয়েরে মাইরা ফেললেও কিছু লোক তো আছে যে বলবে, মেয়েটারই দোষ! কেন শে বাড়ির বাইরে গেল? এক হাতে কি তালি বাজে নাকি? এই-সেই। মানে, দেশ দেউলিয়া হয়া গেলেও এরা বাকশালের পক্ষে সাফাই গাইবে। এই কারণে না যে, এরা এই জুলুমের বেনিফিশিয়ারি (কম-বেশি বেনিফিট তো পায়ই, ইকনোমিক না হইলেও সোশ্যাল), বরং এরা হইতেছে এক ধরণের ‘নৈতিকতা-প্রাণী’, আদতে স্যাডিস্ট। এরা মনে করে, যেহেতু একবার বাকশালরে সার্পোট দিছে, মরার পরেও সেইটাই করা লাগবে। এখন যত অন্যায়-অত্যাচারই করুক। চোখ বন্ধ কইরা রাখবে। এরা আছে। বড়জোর চুপ কইরা থাকবে। কিন্তু পলিটিক্যাল পজিশন চেইঞ্জ করার মতো ‘হিপোক্রেক্ট’ হইতে পারবে না। (আসলে পলিটিক্যালি ফেক্সিবল হইতে রাজি না। অন্ধ-বিশ্বাসের জায়গাতে নিজেদের ফ্রি-উইল দিয়া বিচার করবে না।)
সেকেন্ড হইতেছে পাতি-বাকশালি। এরা অন্ধ-বাকশালিদের চাইতে খ্রাপ, রিয়েল বজ্জাত। এরা ইনায়া-বিনায়া, কুতায়া-মুতায়া বাকশালি গু-ই ছড়াবে। যে, বিএনপি তো ভালো না! বিএনপি এই করছে, সেই করছে! অদের পিয়ারা বাকশালের আকাম-কুকাম মুখেও আনবে না! পাছা দিয়া আইক্কাওলা বাঁশ ঢুকলেও মনে হবে – পেরেম! আদর করে বইলাই তো বাঁশ দিতেছে! এইরকম। মানে, এরা হইতেছে আইডিওলজিক্যাল গোলাম। এই গোলামির রশি এরে গলায় ঝুলায়া রাখবেই।
তবে এরা শক্তের ভক্ত, নরমের যম। যখন দেখবে অবস্থা খারাপ, তখন কাঁই-কুঁই করবে, আমি কি বাকশালের সার্পোটার নাকি, আমি তো বিএনপি-বিরোধী! মানে, এই কুত্তাগুলার লেজ জীবনে সোজা হবে না কোনদিন! ত্যানা-পেঁচানোই এদের কাজ। জীবনের লক্ষ্য। এইম ইন লাইফ।
থার্ড হইতেছে, একটা ইনোসেন্ট গ্রুপ আছে, এরা মলিন ও উদাস, “বাকশাল ছাড়া আর আছে কি!”-টাইপ। পাতলা-বাকশালি। চেনায়ও (মানে, মুতেও) না, ল্যাদায়ও না। এই টাইপের বলদ। যখনই ক্রুশিয়াল জায়গাগুলা সামনে আসবে, এরা উদাস হয়া যাবে! ‘নিরেপক্ষ’-ভাব নিবে। এইটা হইতেছে সবচে লার্জেস্ট পপুলেশন। মিডিয়া-জম্বি। নিউজপেপারে যা পড়ে, টিভিতে যা দেখে কম-বেশি বিশ্বাস করে। রবীন্দ্র-সঙ্গীত গায়, হিরো আলমরে নিয়া মশকরা করে। এইরকমের। ট্রেন্ড যেইদিকে যায়, তার লগে লগে থাকে।
এরা বিএনপি’রে বিশ্বাস করে-না না, এরা সেইফ থাকতে চায় সবসময়। বিএনপি’র এখনকার পলিটিক্যাল মুভমেন্ট এই পাতলা-বাকশালিদেরকে কিছুটা ঝামেলায় ফেলে দিছে। এরাই মেইনলি চুপ মাইরা গেছে। কিন্তু কালচারালি ট্রেন্ডি ঘটনা হয়া উঠতে পারতেছে না বইলা বিএনপি’রে সার্পোট করতে পারতেছে না।
কিন্তু এইটা কালাচারাল কোন ঘটনা না আসলে। (মানে, অইটা তো আছেই।) বরং পলিটিক্যাল ডিসিশানেরই ঘটনা। বাংলাদেশের এখনকার লুটপাট, হায়-হায় অবস্থা বদলাইতে হইলে বাংলাদেশের মানুশের বাকশাল-বিরোধী না হয়া কোন উপায় নাই। আর বাকশাল-বিরোধী হইতে গেলে আপনি বিএনপি’রে কেমনে অস্বীকার করবেন! একদল শিয়াল-কুত্তা যখন আপনারে ছিঁড়া-খুঁইড়া খাইতেছে, তার কাছ থিকা রেহাই পাওয়াই হইতেছে ঘটনা। কে বাঁচাইতেছে? তার ইনটেনশন কি সে ভালো না খারাপ? এইগুলা ভাবতে পারার লাক্সারি কি আছে আপনার? বা থাকতে পারে?
হ্যাঁ, তখনই পারে, যখন আপনি মনে করতে পারেন যে, পচ্চুর-উন্নয়ন হইতেছে! 🙂 তিনবেলা মাংস খাইতেছেন! 🙂 এইরকম ‘বেহেশতের’ ভিতরে আপনি থাকতে পারতেছেন।
কিন্তু বাকশালি-বেহেশতের চাইতে দুনিয়ার যে কোন দোজখই বেটার – এইরকম রিয়ালিটি যখন আর ঠেকায়া রাখা যাইতেছে না, পাতলা-বাকশালি হিসাবে নিজের অবস্থান অনেকেই ধইরা রাখতে পারতেছেন না আর। পাতলা-বাকশালিরা একদিন বিদ্রোহী ও বিপ্লবী হয়া উঠবে – এই আশা আমার নাই। কিন্তু এরা যদি পাতি-বাকশালি বা অন্ধ-বাকশালি হয়া উঠাটারে সলিউশন বইলা মনে করতে থাকে, নিজের পাছায় বাঁশ নিজেরাই ঢুকাবে! আই হোপ যে, এতটুক বলদ হওয়া থিকা এরা নিজেদেরকে আটকাইতে পারবে, এটলিস্ট!
নভেম্বর ২০, ২০২২
– সমাজের মানুশের অধিকার কাইড়া নেয়ারে সার্পোট করলে সেই অধিকার আপনার নিজেরও থাকে না –
দুইজন লোক কথা বলতেছিলেন। একজন আওয়ামী লীগের জেলা কমিটির প্রেসিডেন্ট। আরেকজন অই জেলারই বাস-মালিক সমিতির সভাপতি।
বাস-মালিকের চেহারা খুবই অস্থির। বলতেছিলেন, ভাই, ৬ বাসের মধ্যে ৩টাই বসায়া রাখছি। অই ৩টাও গত ৬ মাসে ৩ মাস চালাইছি নাকি সন্দেহ। বাস চালাইলেই তো লস! বাস-ভাড়া বাড়ালেই মানুশ বাসে উঠবো নাকি! মানুশের হাতে টাকা থাকা লাগবো তো! আর কাজকাম না থাকলে বাসে উইঠা কই যাইবো মানুশ, কি করতে যাইবো!
জেলা-প্রেসিডেন্ট আরো বড় ব্যবসায়ী। কইতেছিলেন, ম্যানেজারের উপর ছাইড়া দিয়া রাখছি। জিগাইও না কিছু। জিগাইলেই মাথা-গরম হয়া যায়। কয়দিন আগে জিগাইলাম, কয় ট্রাক চালাইলে ২০ হাজার টাকা লস, না-চালাইলে ১০ হাজার টাকা লস। চিটাগাং থিকা মাল আনা কইমা গেছে, ফ্যাক্টরিতে প্রডাকশন হইতেছে অর্ধেক, মাল সাপ্লাই হইতেছে অর্ধেক। বাংলাদেশের অর্ধেক ট্রাক বইসা আছে।
তো, উনাদের কথা শুনতে শুনতে ভাবতেছিলাম, এই আওয়ামীলীগ করা লোকজনও পেটে পাত্থর বাইন্ধা কয়দিন থাকবে আর! বাকশালরে সার্পোট করলে, বঙ্গবন্ধুরে আব্বা ডাকলে আর দিনের মধ্যে দশবার থ্যাংকিউ পিএম কইলে আটার দাম কি বাজারে ৫ টাকা কম রাখবে? বইসা বইসা আর কয়দিন খাইতে পারবে তারা?
মানে, হইতেই পারে উনারা বেশি-বেশি বলতেছিলেন একটু, কিন্তু রিয়ালিটি তো এর চাইতে খুব দূরের কিছু না…
***
ফুটবল
ফুটবল-খেলার এই ঘটনাটার কথাই মনে হইলো যে, একটা সেকেন্ডে এইখানে যে কোন কিছু হয়া যাইতে পারে! একটা ভুল-পাস, একটা রাইট-প্রেডিকশন, একটা শট, একটা ট্যাকল, একটা রিদমের আন্ডারস্ট্যান্ডিং, একটা ড্রিবলিং, একটা টেকনিক আর কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই গোল!
তবে যতক্ষণ খেলার টাইম থাকে, চান্স থাকে আবার। এইরকমের আরেকটা মোমেন্ট ক্রিয়েট করার। অনেককিছুই হইতে পারে। অনেককিছুই হইতে পারতো। অনেককিছুই হইতে পারে না।
মোটামুটি, লাইফের মতোই একটা ঘটনা। ফুটবলটা যেন নিয়তির মতো আমাদেরকে নিয়া খেলতেছে! অবশ্য আমরা যা করি, আমরা যা ভাবি, সেইটা কোন না কোনভাবে আমাদের লাইফের ধারণারই তো একটা রিফ্লেকশন হয়া উঠে।
নভেম্বর ২১, ২০২২
“আমি ফুটবল খেলা দেখি না” – এই কথার মিনিং হইতেছে, আপনারা যে ফুটবল নিয়া এতো হাউকাউ করেন, এতে আমার ডিস্টাপ হয়। 🙂 মানে, কেউ তো বলেন না যে, আমি লং-টেনিস দেখি না, আমি ব্যাডমিন্টন দেখি না। অইগুলা এতোটা দেখার জিনিস না, বা দেখলেও বলার মতো কোন জিনিস না। এখন এতো বেশি লোক এইটা নিয়া কথা বলে যে, এইটারে ‘খ্যাত’ না কইতে পারলে তো ‘জাতে’ উঠতে পারবো না আমি! একসেপশনাল হইতে পারবো না! 😛
এই ব্যাপারটা আছে। মানে, আমি বলতে চাইতেছি, ফুটবল নিয়া মাতামাতি করাটা যেমন ইমোশনাল একটা ঘটনা, একইরকমভাবে ‘আমি দেখি না’ বলাটাও অই ইমোশনাল ঘটনারই পার্ট। কোন ইন্টেলেকচুয়াল পজিশন না।
হাউএভারে, কোন ইমোশনাল ডিজএগ্রিমেন্ট আমাদেরকে নতুন কোন ইন্টেলেকচুয়াল গ্রাউন্ডের দিকেও নিয়া যাইতে পারে, কোন সময়। একইভাবে অনেক ইন্টেলেকচুয়াল ডিজএগ্রিমেন্টও অনেক সময় ইমোশনাল রি-অ্যাকশনের জায়গাতে নিয়া যায় আমাদেরকে। কিন্তু এইরকমের ক্রস-কানেকশনের ঘটনাগুলা ইমোশন হিসাবে এবং ইন্টেলেকচুয়ালিটির জায়গাতেও বেশ পাতলা ঘটনাই আর কি! 🙁
নভেম্বর ২২, ২০২২
খেলা শুরুর দিকেই, রাস্তায়, ব্যর্থ-প্রেমিকের মতো এক লোক, তার পুরান-প্রেমিকার খবর নেয়ার মতো কইরা জিগাইতেছিল আরেকজনরে, ভাই, আমার সেনেগালের কি অবস্থা!
তার লাইগা আমার খারাপ-ই লাগতেছে এখন!
মানে, সে হয়তো সেনেগালের প্রেমিকও না অইরকম, কিন্তু তার হাহাকারটা জেনুইন ছিল। যে জানে যে, প্রেমিকা তারে কোনদিনও ভালোবাসবে না। সেনেগালও জিততে পারবে – এই আশা তার মনে নাই, কিন্তু একটা আশা নিয়া সে জিগাইতেছে। যে, কোন মিরাকল ঘটছে কিনা!
অথচ আজকে সেনেগাল জিতলে সেইটা মিরাকল হইতো না। বরং যেইখানে ড্র করতে পারতো সেইখানে দুই গোল খাওয়া তো মন-খারাপের ঘটনাই। মানে, যেই প্রেমিক জানে যে, সে কোনদিনও তার প্রেমিকার ভালোবাসা পাবে না, সেইটা সে যতোটা মাইনা নিতে পারে, কিন্তু যদি জানে যে, সে পাইতে পারতো, কিন্তু পায় নাই, সেইটা মাইনা নিতে পারাটা তো আরো বেশি কষ্টের ঘটনাই।
খেলা দেখার পরে, ‘আমার সেনেগাল’ বলা লোকটার হাহাকার হয়তো বাড়বে না, কিন্তু নিজের নিয়তির উপরে তার বিশ্বাস আরো পোক্ত হয়া উঠার কথা।…
নভেম্বর ২৩, ২০২২
– গুজব –
বাংলাদেশের এখনকার এক নাম্বার গুজব কোনটা?
মানে, নিউজ-মিডিয়ায় তো অবশ্যই, ফেসবুকেও গুজবের আলাপ খুব একটা পাইবেন না। ফেসবুকেও তো আমাদেরকে ‘সত্য’ কথাই বলা লাগে! 🙂
আবার, গুজব মানেই তো হইতেছে গোপন। খোলাখুলি বলাও যাবে না। তো, এইরকম গুজব কোনটা এখন বাংলাদেশে?
আমি এটলিস্ট ৩টা জায়গায় শুনছি এই গুজবটার কথা – যে, ২০২৩ সালে দুর্ভিক্ষের প্ল্যান করা হইতেছে যাতে কইরা জরুরি-অবস্থা ঘোষণা করার ভিতর দিয়া ইলেকশন বাতিল করা যাইতে পারে! (যারা ‘সত্যের সৈনিক’ এবং গুজবে-কান-দেন-না, উনারা হয়তো এইটা শুনেন নাই। নিশ্চয় আরো অনেক গুজব আছে যা আমি জানি না। অনেক ধরণের সেগমেন্টেশন তো আছেই।)
মানে, অবভিয়াসলি এইটা একটা গুজব। কিন্তু এই গুজবের কথা মানুশ ভাবতেছে বা বলতেছে কেন? দুইয়ে দুইয়ে দশ কেন মিলাইতেছে?
গুজব’টা সত্যি কি মিছা – সেইটা কখনোই ঘটনা না, এই জায়গা থিকা দেখতে গেলে পুরা জিনিসটারে মিসই কইরা যাবো আমরা। ঘটনাটা হইতেছে কোন কোন কন্ডিশনে কোন কোন ধরণের গুজব এপিয়ারড হইতেছে।
আমরা সবাই জানি যে, গুজব মানে তো সত্যি-কথা না। আবার মিথ্যা-কথাও না, বরং একটা প্রেডিকশন, যা হইতে পারে এবং না-ও হইতে পারে। স্পেশালি যখন ইনফরমেশন হাইড করা হয়, তখন গুজবের পরিমাণ বাড়তে থাকে এবং স্ট্রং হইতে থাকে।
গুজব মানে হইতেছে সত্যি-কথার এবসেন্সের ভ্যাকুয়ামটা। যার ফলে, আমরা কনফার্ম হয়াই বলতে পারি, কোন জিনিস নিয়া কোন গুজব এপিয়ারড হওয়ার মানে হইতেছে ইনফরমেশনের কোন ফ্রি-ফ্লোনেস নাই সেইখানে। বা যা আমরা ইনফরমেশন হিসাবে পাইতেছি, সেইটা এনাফ না বা তার উপর বিশ্বাস নাই আমাদের।
আর এইটাই হইতেছে সবচে টেরিবল জিনিসটা।
নভেম্বর ২৫, ২০২২
– বাকশালি-মিডিয়ার একমাত্র কাজ হইতেছে বাকশালরে বাঁচানো –
ঘটনাটা কখনোই এইটা না যে, ব্যাংকের উপর মানুশের বিশ্বাস নাই। যেইরকম বাকশালি-মিডিয়া আমাদেরকে প্রভোক করতেছে, বুঝাইতেছে। বরং অবৈধ-সরকারের উপর মানুশের এক ফোঁটা বিশ্বাস নাই। একজন ডাকাত যখন আশ্বাস দেয় যে, কোন ভয় নাই! তখন মানুষের আরো ডরানোর কথা। আর হইতেছে সেইটাই।
একইভাবে, কোর্টের বিচারের উপর, রায়ের উপর মানুশের বিশ্বাস নাই না, কোর্টের যে নিজের কোন বিচার নাই – সেইটা হইতেছে সমস্যা। থানা-পুলিশ, সরকারি-অফিস, মোটামুটি সব জায়গার কাহিনি কম-বেশি এইটাই। বাকশালের লোকজন পর্যন্ত এখন আর অবৈধ-সরকাররে বিলিভ করতে পারতেছে না। কারে যে কখন ঝুলায়া দেয়! এইরকম অবস্থা।
তো, বাকশালি-মিডিয়ার কাজ হইতেছে বাকশালরে বাঁচানো। বাকশাল বাদে বাকি সবকিছুই খ্রাপ! 🙂 বানাম-ভুল। পাবলিকের দোষ, ব্যাংকের দোষ, কোর্টের দোষ, সবার দোষ। উনাদের বাপ বাকশাল, আর উনারা যে খালু – এইটুকুই খালি ভালু!
***
– ইনসাইডার নলেজ –
ইনসাইডার নলেজ বইলা একটা জিনিস আছে। মানে, আপনি চাঁদপুরের লোক হইলে এমন কিছু জিনিস জানবেন, যেইটা চাঁদপুরের মানুশ না হইলে বা অইখানে না থাকলে গুগুল কইরা, হিস্ট্রি দেইখা, স্টাডি কইরা তত একটা জানতে পারবেন না আপনি।
এইটা ঠিক এক্সপার্ট হওয়া না, বরং অই জায়গার, প্রফেশনের, ইন্ড্রাষ্ট্রির লোক হইলে আপনি কম-বেশি কিছু জিনিস জানবেন, যেইটা বাইরে থিকা লোকজনের পক্ষে আন্দাজ করাই মুশকিল।
রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন উনার একটা লেখায় বলতেছিলেন, পুরুষ-মানুশ দেখায় যে সারাদিন বাইরে অনেক কাজ করতেছে অফিসে! এখন অফিসে কি আর সারাদিনের কাজ আছে? আড্ডাবাজিই তো করে, ফাঁকে ফাঁকে কাজকাম করে। তো, উনি যেহেতু ম্যাজিস্ট্রেটের কাজ করেন নাই, উনার জামাইয়ের কাছ থিকা শুইনা আন্দাজ করছেন। যেইটা মিথ্যা না এতোটা, ছরমিক ছাড়া, কেরানি ছাড়া বাবুগিরির চাকরিগুলা তো কম-বেশি এইরকমই। মানে, ডাইমেনশন অনেক রকমের থাকলেও।…
তো, এইটা মনে হইতেছিল ইসলামি ব্যাংক নিয়া আলাপগুলা দেইখা। যারা ব্যাংকিং-ইন্ড্রাষ্ট্রির লোক, তারা তো মোটামুটি জানেন যে, ইসলামি ব্যাংকের মালিকানা আসলে সেকেন্ড-টাইম চেইঞ্জ হইতে যাইতেছে। যার ফলে ব্যাপারটা এইরকম না যে, এখনকার মালিকরা সবকিছু খায়া ফেলছে, বরং এইসব প্রাকটিস ইন্ড্রাষ্ট্রিতে খুববেশি নতুন কিছু না; তার চাইতে নতুন-মালিকানার ঘটনাটা যেন পাবলিকলি একটা পজিটিভ-ভাইবের ভিতর দিয়া একসেপ্টেড হয়, সেইটারই ঘটনা হওয়ার কথা অনেকটা। মানে, নিউজগুলা ভুল না, বরং এর উদ্দেশ্য তো ঠিক ‘সত্য-উন্মোচন’ করা না আর কি!
এইটা খালি এই ব্যাপারেই না। অন্য যে কোন ব্যাপারেই এইরকম হইতে পারে। যেমন ধরেন, মোবাইল-কোম্পানিগুলা একটা সময় যে হিউজ খরচ করতো বিজ্ঞাপণে, টিভি-নিউজপেপারে, এইগুলা খালি মার্কেটিং-ওয়ারই ছিল না, পচ্চুর খরচ দেখায়া টাকা-পাচার করার রাস্তাও ছিল একটা। এখনো যে কোন ইন্ড্রাষ্ট্রিতে সবচে বেশি টাকা-পাচার হয় সফটওয়ার কেনার নাম কইরা! যেই কারণে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ সবার কাছে এতো পপুলার! 😛
মানে, আমারে ভুল বুইঝেন না বা এইরকম ভাইবেন না যে, দুনিয়ার সবকিছুই দুই নাম্বারি! বরং বেশিরভাগ কেইসেই সারফেইস লেভেলের ঘটনাটাই আসল-ঘটনা না। যে কোন ট্রুথরেই কনটেক্সটের লগে মিলায়া দেখতে হবে আমাদেরকে। যেইটা আমাদের প্রাকটিসের মধ্যে নাই খুব একটা। আর সেইটা সবক্ষেত্রে পসিবলও না।
যেমন আমার ধারণা, আমি যখন ফিল্ম-ইন্ড্রাষ্ট্রি, এডুকেশন-সিস্টেম বা গার্মেন্টস নিয়া কথা কই তখন অনেক জিনিস ভুলভাবে অনুমান করার কথা। এর কারণ এইটা না যে এইসব জায়গায় আমার এক্সপার্ট-নলেজ নাই, বরং ইনসাইডার-নলেজটা মিসিং। এফডিসিতে যেই লোকটা কোন কিছু চিন্তা-ভাবনা না কইরাই ঘুরা-ফিরা করে সে বাংলাদেশি-সিনেমা সম্পর্কে যা জানে, সেইটা আমার পক্ষে জানা পসিবল না।
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, কারো ইনসাইডার-নলেজ আছে বইলাই তার কথা সত্যি না। কিন্তু এক্সপার্ট-নলেজের মতোই ইনসাইডার-নলেজ বইলা একটা জিনিস আছে। আর সেইটাও দরকারি। এমনকি এই এক্সটেন্ড পর্যন্ত যে, একটা ইনসাইডার-নলেজ ছাড়া জিনিসগুলারে ঠিকঠাকমতো বুঝতে পারা এবং রিভিল করা মোটামুটি ইম্পসিবল ঘটনাই।
তো, এই জায়গাটারে এতোটা খেয়াল করা হয় না বইলাই মনেহয় আমার, আমাদের পাবলিক-আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের জায়গাগুলাতে।
নভেম্বর ২৬, ২০২২
দুইটা ঘটনা আছে এইখানে।
এক হইতেছে, বিএনপি’র মহাসমাবেশের খবর নিয়া কোন কথা না কইলেই সেইটা নাই হয়া যাবে না। ঘটনা নিউজ-মিডিয়ার ভিতর দিয়া ঘটে না। কোন পাবলিক ঘটনারে নিউজ-মিডিয়া যখন এভয়েড করতে থাকে, সেইটা ঘটনা হিসাবে বাতিল হয়া যায় না, বরং মিডিয়াম হিসাবে নিউজ-মিডিয়াগুলাই মোর ইরিলিভেন্টই হইতে থাকে। আর বাংলাদেশে সেইটাই হইতেছে, অনেক দিন ধইরাই। যার ফলে যখন এই অবৈধ-বাকশালি সরকার থাকবে না (বা তার আগেই) বাকশালি-মিডিয়ার “পতন” হওয়ার কথা।
সেকেন্ড হইতেছে, এইরকমের একটা ব্লেমিং আছে যে, আপনারা ফুটবল ওয়ার্ল্ড-কাপ নিয়া এতো মাতামাতি করতেছেন, দেশের যে অবস্থা খারাপ – এইটা নিয়া কি কোন চিন্তা নাই আপনাদের?
এইখানে কাজী নজরুল ইসলামের একটা ঘটনার কথা বলি, যেইদিন উনার ছেলে মারা গেল সেইদিন সন্ধ্যাবেলায় বাড়ির উঠানে দেখতেছিলেন কি সুন্দর ফুল ফুটছে! মানে, তার মানে এইটা না যে, ছেলে মারা যাওয়ার দুক্খ উনি ভুলে গেছেন। ব্যাপারগুলা সবসময় একইসাথে ঘটতে থাকে।
বাংলাদেশে অনেকদিন ধইরাই পলিটিক্যালি বাজে অবস্থায় আমরা আছি। ইকোনোমিক্যালিও একটা দুর্ভিক্ষ-অবস্থা জারি আছে। তাই বইলা ফুটবল-খেলা দেখা যাবে না – এই ধরণের লেইম কথা-বার্তারে আমলে নেয়াটাও এক ধরনের পুওর ইন্টেলেকচুয়ালিটিই আসলে।
এখন এইসব গরিবি-চিন্তাও তো দেখা লাগে আমাদের। গরিবি-চিন্তা এই কারণে না যে, গরিব-মানুশ এমনে চিন্তা করে, বরং গরিব-মানুশ হিসাবে আমাদের এইভাবে চিন্তা করা উচিত – এইটা ‘গরিব’ একটা ঘটনা।
তো, দুইটা ঘটনাই আছে আর কি এইখানে, একইসাথে।
নভেম্বর ২৮, ২০২২
এই জিনিসটাও খেয়াল করার দরকার আছে যে, ফুটবল ওয়ার্ল্ড-কাপ হইতেছে বাংলাদেশে মোটামুটি একমাত্র টপিক, যেইটাতে অ্যাক্রস অল দ্য ক্লাস (সব শ্রেনি-পেশার মানুশের) সবারই ইন্টারেস্ট আছে, যেইটা নিয়া সবাই কথা কইতে পারে, এনজয় করতে পারে।
এছাড়া পলিটিক্স আছে, কিন্তু সেইটা নিয়া কথা বলা তো নিষিদ্ধ 🙁 ক্রিকেটেরও বারোটা বাজছে, গত কয়েক বছরে। তার বাইরে যেইসব জিনিস আছে, ধরেন বাংলাদেশি-সিনেমা, ‘শিক্ষিত-রুচিশীলদের’ জন্য বানানো হয় না, ‘আধুনিক গান’-ও গরিবরা শুনলে সেইটা আর্ট হইতে পারে না তো এতোটা। মানে, কমন-ইন্টারেস্টের জায়গাগুলা অনেকটাই ক্লাস-ডিফাইনড ঘটনাও। সব ক্লাসের ইন্টারেস্টের জায়গা নাই না, কিন্তু কমই। ফুটবল ওয়ার্ল্ড-কাপ বাংলাদেশে এইরকম একটা জিনিস।
তো, ব্যাপারটা “শ্রেণীহীন-সমাজ গড়ার” পয়লা ধাপ না 🙂 কিন্তু যেহেতু অন্য সব ক্লাসের ইন্টারেস্টও আছে, জাত-পাতের জায়গা থিকা সেইটা কিছুটা ‘গর্হিত’ কাজ হওয়ার কথা। (মার্কসের শ্রেণি-ধারণার চাইতেও জাত-পাত স্ট্রং ঘটনা।) এইটা খালি হিন্দু-বামুনবাদ না মুসলমানি-আশরাফিরও ঘটনা। যেই কারণে ‘জায়েজ’ কিনা – এই ‘তর্কটা’-ও আসে। এই ‘তর্কটা’-ও অই ক্লাস-ইন্টারেস্টের লগে রিলেটেড ঘটনা হওয়া কথা।
এখন, এইটাই ‘আসল’ ঘটনা না। আমি বলতে চাইতেছি, এর একটা ইমপ্যাক্ট এইখানে আছে।
আবার, তাই বইলা কমন-ইন্টারেস্টের জায়গাটারে ম্যানিপুলেট করা পসিবল না – এইটা ট্রু না, বরং অনেক বেশিই পসিবল। কিন্তু তার মানে কখনোই এইরকম না যে, ম্যানিপুলেশনগুলাই আছে এইখানে, বা এর এগেনেস্টে একটা রিয়াল-রিয়ালিটি পসিবল! অন্য যা কিছুই হোক, এটলিস্ট এইরকম সিউডো-সিরিয়াস জায়গাটা থিকা আমাদের সরতে পারাটা দরকার মনেহয়।
নভেম্বর ২৯, ২০২২
যদিও জিনিসগুলা ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজেরই ঘটনা, তারপরও শেক্সপিয়ারের লেখা পইড়া বা ইংল্যান্ডের সাহিত্য দিয়া কি আপনি আম্রিকান-সমাজের লগে কানেক্ট করতে পারবেন? (মানে, যে কোন লিটারেচার পইড়াই পারবেন, অই পাতলা-তর্কের আলাপ আমি এইখানে করতেছি না।)
কিন্তু কলোনিয়াল-কলকাতার সাহিত্য দিয়া এখনো বাংলাদেশের সমাজরে রিড করার চেষ্টা খালি জারি-ই নাই, অইগুলা ছাড়া অন্য কোন কিছু যেন আমরা রেফারেন্স হিসাবে নিতেই পারবো না!
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, ইংলিশে লেখা বইলাই কোনকিছু যেমন ইংল্যান্ডের ঘটনা না, একইভাবে বাংলায় লেখা বইলাই কোনকিছু বাংলাদেশের লগে রিলেটেড আলাপ না। কিন্তু এইরকম ভুল-পারসপেশন অনেক স্ট্রংগলিই আছে, আমাদের বাংলাদেশের ‘শিক্ষিত-সমাজে’। যেইটা এই ‘শিক্ষিত-সমাজ’রে বাংলাদেশ বিষয়ে এলিয়েনেটেডই কইরা তুলতেছে না, ‘শিক্ষিত-সমাজের’ মূর্খতার একটা বড় কারণও মেবি এইটাই।
নভেম্বর ৩০, ২০২২
বাংলাদেশে যদি মিনিমাম একটা ডেমোক্রেসি চালু করতে হয় তাইলে আওমি লিগরে বাদ দিয়া ভাবতে পারতে হবে। বুঝতে পারতে হবে যে, বাকশাল আর ডেমোক্রেসি একসাথে থাকতে পারে না, চলতে পারে না।
কিন্তু বাংলাদেশে এখনো যারা “তৃতীয় শক্তি” হিসাবে নিজেদেরকে ভাবতে চান (অবশ্যই ওল্ড সিপিবি-গংয়ের কথা বাদ দিয়া নতুন ফর্মেশনগুলা, যেমন অধিকার পরিষদ, রাষ্ট্রচিন্তা, এমনকি এবি পার্টি… এদের কথা বলতেছি) তাদের চিন্তাটা এখনো এইরকমের যে, আওমি লিগ হইতেছে এক নাম্বার দল, আর উনারা বিএনপিরে বাদ দিয়া সেকেন্ড-পার্টি হইবেন, “তৃতীয় শক্তি” থিকা। 🙂
কিন্তু এইভাবে উনারা আসলে একটা ডামি-বিরোধদলই হইতে পারবেন বড়জোর।
বাকশালে কোন বিরোধীদলের দরকার ছিল না, সবাই ছিল সরকারি-দল, কিন্তু নয়া বাকশালে একটা ডামি-বিরোধীদল দরকার। আগে ছিল জাতীয়-পার্টি, জাসদ। এখন এদেরকে দিয়া আর হবে না।
তো, যারাই নন-ডেমোক্রেটিক বাকশাল বা আওমি লিগরে ফার্স্ট-পার্টি মনে করেন, তারা আসলে ডেমোক্রেসির জায়গাটারেই বুঝতে (পারেন-না না, বরং বুঝতে) রাজি না।
বাংলাদেশে মিনিমাম ভোটের-রাজনীতির ডেমোক্রেসি ফিরায়া নিয়া আসতে হইলে বিএনপি’রে এক নাম্বার পার্টি হিসাবে রিকগনাইজ কইরা আগাইতে হবে যারা “তৃতীয় শক্তি” হইতে চান, তাদেরকে।
তাইলেই তারা যেই ডেমোক্রেটিক কাজ-কারবার করতে চান, সেইটা করতে পারবেন, সেই পথে আগাইতে পারবেন।
***
ওয়ার্ল্ড-কাপ ফুটবলের গ্যালারির দিকে ক্যামেরা গেলেই, দর্শকদের দেইখা The Hunger Games’র কথা মনে পড়তেছে। মানে, দর্শকদের চোখে-মুখে উত্তেজনা দেইখা না, বরং তারা যে কোন দেশেরই হোক সবাই যে এলিট-ক্লাসের লোকজন, সেইটা চেহারা দেইখা আন্দাজ করা যায়। তিউনিশিয়া, ঘানা, সেনেগাল, ক্রোশিয়া, পোল্যান্ড… মানে, কোন দেশের দর্শক উনারা – এইটা তেমন একটা ঘটনা, সবাই এলিট-ক্লাসের লোকজনই হওয়ার কথা। ধরেন, কেউ যে জমি-জমা বেইচা 😛 খেলা দেখতে যায় নাই – তা না, কিন্তু সেইটা একটা ক্লাস-স্ট্যাটাস ক্লেইম করারও ঘটনা।
যারা খেলতেছেন, তারা তো আছেনই, কিন্তু যারা খেলা দেখতেছেন, দেখতে গেছেন, সেইটাও তো আরেকটা ঘটনা। পার্ট অফ দ্য গেইম।
Leave a Reply