নোটস: সেপ্টেম্বর, ২০২৩

০২.০৯.২৩

শহরের মধ্যে এইসব ফ্লাইওভার, ওভার-পাস, আন্ডার-পাস, মেট্রো-রেল, এক্সপ্রেস ওয়ে বানানোর পারপাস তো মোটাদাগে দুইটা –

১. মেগা প্রজেক্ট বা “উন্নয়ন” না থাকলে লুটপাট করবো কই থিকা!

২. এইসব স্ট্রাকচার দেখলে, ছবি তুললে তো ইউরোপ-আম্রিকার মতো লাগবে তখন দেশটারে! এই ইমেজের লোভ’টাও একটা সিগনিফিকেন্ট ঘটনা।

কিন্তু এই ‘উন্নয়ন’-এ কি লাভ হইলো? ঢাকা শহরে কি ট্রাফিক জ্যাম কমছে কোথাও? বরং তো বাড়ছে আরো। কারণ ট্রাফিক জ্যাম কমানোর জন্যও এইসব স্ট্রাকচার বানানো হয় নাই, বানানো হইছে লুটপাট করার জন্য, আর দেখতে যাতে ইউরোপ-আম্রিকার মতো লাগে; আর এই পারপাস-ই সার্ভ করে এই জিনিসগুলা।

শর্ট-টার্মে তো ব্যাপক লস প্রজেক্টই, লং-টার্মেও ‘এই হবে, সেই হবে’ আলাপ দিলেও আল্টিমেটলি তেমন কিছুই হয় না। হিস্ট্রিতে খেয়াল করলে দেখবেন, যে কোন জুলুমের বা ফেসিজমের মেগা-স্ট্রাকচার ফেটিশ আছে; এই এক্সপ্রেস ওয়ে বা মেগা-প্রজেক্টগুলা অই ফেটিশেরই নমুনা আসলে একেকটা।

ব্যাটারি রিকশার রেভিউলেশন

দুই-একমাস আগে গুলশান দুই-এর সার্কেল থিকা এম্রিকান এম্বেসি/নতুন বাজার যাওয়ার দিকে দেখি রিকশা দাঁড়ায়া আছে কয়েকটা। জিগাইলাম, যাইতে পারবেন এই রাস্তায়? (মানে, ট্রাফিক পুলিশ কি যাইতে দিবে?) রিকশার ড্রাইভার ইয়াং, একটু হাইসা দিয়া কইলো, উঠেন না! সাথে জিগাইলো, একলাই যাইবেন? মানে, বুঝলাম যে, বেশিরভাগ পেসেঞ্জার শেয়ারে-ই যান। এই অল্প একটু রাস্তার রিকশা ভাড়া ৪০ টাকা। শেয়ারে গেলে ২০ টাকা কইরা দিলে আসলে পোষায়া যায়। আর সিট যেহেতু আছে দুইজনে বসার, একসাথে গেলে তো কোন সমস্যা নাই। একটা ওয়েব-সিরিজ যদি বানায়া ফেলা যায় রিকশা শেয়ারিংয়ের, “কাছে আসার গল্প” নামে, তাইলে “জেন্ডার ইকুয়ালিটি”-ও এচিভ কইরা পসিবল হইতে পারে!

মানে, “শেয়ারি ইজ কেয়ারিং” তো আছেই, কিন্তু রিকশা-ভাড়া যেই পরিমাণ বাড়ছে, রিকশা-শেয়ারিং’টা জাস্ট মিডল-ক্লাসের “ভীরু মনের” জন্য শুরু হইতে পারতেছে না আসলে। আরেকটু “উন্নয়ন” হইলেই এইটা শুরু হয়া যাইতে পারবে আশা করি।

২.
মিরপুর ১০ নাম্বার সার্কেলের পরে দেখলাম চিপা-চাপায় ব্যাটারি-রিকশা চালু হয়া গেছে! রাতের বেলা বেশ কয়টা দেখলাম রাস্তায়। “বিপ্লবীদের” মতো ঘুইরা বেড়াইতেছে। ব্যাটারি-রিকশা আসলে ভালো। অইখানে শেয়ারিং নিয়া কোন সমস্যাই নাই। দুই-চাইরজন ইজিলি বইসা যাওয়া যাইতেছে। ওয়েট করারও কিছু নাই। দুই-চাইর মিনিট দাঁড়াইলে কিছু প্যাসেঞ্জার পাওয়াই যায়।

ঢাকার বাইরে, জেলা ও উপজেলা সদরগুলাতে এই “সাম্যবাদী বিপ্লব” এখন রিয়ালিটি’তে পরিণত হইছে। সব হাইওয়েগুলাতে সার্ভিস রোড চালু করলে আমার ধারণা এই রেভিউলেশন সারাদেশে ছড়ায়া যাবে। এখনই ছড়ায়া গেছে, কিন্তু রোড একসিডেন্টের সব দোষ সার্ভিস-রোড না থাকার উপ্রে না চাপায়া ব্যাটারি রিকশার উপ্রে চাপানো হইতেছে বইলা এখনো একটা না-রাজি এন্টি-পিপল নিউজ-মিডিয়া স্প্রেড করতেছে। কিন্তু এই “বিপ্লব” বেশিদিন দমায়া রাখা যাবে বইলা মনেহয় না।

৩.
এতোসব ফ্লাই-ওভার, এক্সপ্রেস ওয়ে বানানোর একটা কারণ আসলে যাতে প্রাইভেট কারওলাদেরকে রাস্তায় রিকশার গরিবি দেখতে না হয়! কিন্তু ব্যাটারি-রিকশার বিপ্লব, আমি আশা করি, ফ্লাইওভারগুলা দখল না করতে পারলেও অই জিনিসগুলারে ইন-ভ্যালিড কইরা দিতে পারবে একদিন। এইটা সেইদিনই হইতে পারবে, যেইদিন গরিব’রে ভালোবাসতে পারবো না আমরা, বরং ভালোবাসা জিনিসটারে এতোটা ‘গরিব’ মনে হবে না আমাদের।

সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৩

ব্যাপারটা এইরকম না যে নিউইয়র্ক টাইমস বলার আগে ঘটনাগুলা ঘটে নাই, বরং বাংলাদেশি গোয়েবলস পিআলো, ডিস্টার যে দিনের পর দিন এই সত্যি-কথাগুলারে গোপন কইরা যাইতেছে, সেইটা এখনো খেয়াল করতে আমরা নিজেদেরকে রাজি করাইতে পারতেছি না!

মানে, এই ঘটনা তো বাংলাদেশে ঘটতেছে অনেক দিন ধইরাই; কিন্তু এই জিনিসগুলারে দেখা হইতেছে, বলা হইতেছে, কালার কইরা দেয়া হইতেছে – “বিএনপির অভিযোগ” হিসাবে। এখনো এই নেরেটিভ খুব ভালোভাবেই চালু আছে।

দুনিয়াতে কোন হিটলারই গোয়েবলস ছাড়া সারভাইব করতে পারে না। বাম-আওমি বাকশালিদের গোয়েবলস হইতেছে পিআলো আর ডিস্টার।

০৪.০৯.২০২৩

ভদ্রলোকেরা নিজেদের সমস্যারে সমাজের সমস্যা, নিজেদের উন্নতিরে সমাজের উন্নতি, এমনকি নিজেদের রুচিরেই সমাজের রুচি হিসাবে ভাবতে পছন্দ করেন; খালি ভাবতে পছন্দ করলেও কোন সমস্যা ছিল না, এইটারে একটা ‘সার্বজনীন’ এবং ‘অবশ্যই পালনীয়’ একটা শর্ত হিসাবে এস্টাবলিশ করেন; এবং এর থিকা যে কোন বাল (চুল) পরিমাণ বিচ্যুতি’রে ‘সামাজিক অবক্ষয়’ হিসাবে দাবি কইরা ‘সমালোচনা’ ও ‘সাহিত্য’ রচনা করতে থাকেন।

#কালচারালপাওয়ার #ড্রাফট

০৭.০৯.২৩

বাংলাদেশে মিনিমাম ডেমোক্রেসির লড়াইটারে, নিজের ভোট দিতে পারার সংগ্রামটারে যতক্ষণ পর্যন্ত মিডিয়া-ওয়ারে সীমাবদ্ধ রাখা যায়, ততক্ষণ পর্যন্তই নয়া বাকশালের বাঁইচা থাকার, শ্বাস নেয়ার সুযোগ থাকবে।

মানে, বাকশালি-মিডিয়া যে গোয়েবলসের সার্ভিসটা দিতেছে এই রেজিম’রে – এইটা যে আমরা জানি না তা তো না! এই ফ্যাক্টগুলারে রিভিল করতে পারাটা, স্ট্রং রেফারেন্স দিয়া নাঙ্গা কইরা বলতে পারাটা অবশ্যই দরকারি কাজ; কিন্তু তার চাইতে জরুরি হইতেছে এইটা যে একটা মিডিয়া-ওয়ার, সেই জায়গাটারে রিকগনাইজ করাটা।

নোয়াম চমস্কিরা যেইটা বলতে চাইতেছেন অনেকদিন ধইরাই যে, সত্যি কথাটা আমাদেরকে বারবার বলতে পারতে হবে – এইটা কোন কাজের কথা না আসলে, বরং বদ্রিয়া যেইটা বলতে চাইছেন যে, রিয়ালিটি যেইভাবে প্রডিউসড হইতছে থ্রু নিউজ আর ইমেজ, সেই জায়গাগুলারে লোকেট করতে পারতে হবে আমাদেরকে।

যারা বাকশালি-প্রপাগান্ডাগুলাতে বিলিভ করেন, এই কারণে করেন না যে, অইগুলা সত্যি! বরং ডিপ-ইনসাইড উনারা জানেন যে, এইগুলা বাড়ায়া বলা, মেবি সত্যি-মিথ্যার মাঝামাঝি কোন ঘটনা, একটা ‘সন্দেহের’ ঘটনা যে, এই জিনিসগুলা যদি সত্যি না হয়, তাইলে সত্যি কোনটা! ‘আসল সত্যি’টা তো আমরা জানি না! 🙂 মানে, উনারা ধোঁকা খাইতে, বোকা হইতে রাজি আছেন তো! এই রাজি-হওয়ার ঘটনা’টা এই কারণে ঘটে না যে, সত্যি’টা উনারা জানেন না! বরং সত্যিটা জানলে যে অনেক বড় বিপদ আছে – এইটা উনারা টের পান। এবং বুঝতে পারেন যে, এই মিডিয়ার সত্যিরে তাদের মাইনা নিতে হবে। এইখানে কোন কোশ্চেন করা যাবে না। একটা ডর’রে উনারা ‘খেয়াল না করা’ এবং ‘বুঝতে না পারা’ দিয়া রিপ্লেস কইরা নেন।

এই বিপদ থিকা এবং ডর থিকা বাইর হওয়ার রাস্তা তখনই বন্ধ হয়া যায় যখন এক্ট করার কোন উপায় থাকে না। এই কারণে এই মিডিয়ার সত্যি-মিথ্যার গেইমের ভিতরে আমরা মোস্টলি আটকায়া থাকতেছি। আমরা এক্ট করতে পারতেছি না, কারণ এক্ট করাটা খুবই ‘বিপদজনক’ ঘটনা!

আমরা মিডিয়া-রিয়ালিটির আয়নাটারে ভাঙতে পারতেছি-না না, বরং এই মিডিয়া-রিয়ালিটির ভুয়া আয়নাটাই আমাদেরকে ‘রিয়েল’ কইরা তুলতেছে যেন! এই ইল্যুশন থিকা আমরা বাইর হইতে রাজি না, নানান কারণেই।

আমাদের বুঝতে পারাটা দরকার যে, কোনটা সত্যি, কোনটা মিথ্যা – এইটা আর ঘটনা না, বরং এই (সত্যি নাকি মিথ্যা?) রিয়ালিটিগুলা সবসময় কিছু ইমাজিনেশনের সাব-সেট হয়া এপিয়ারড হইতেছে। এর বেইজটা সবসময় একটা ইমাজিনেশনে।

আর একটা সত্যিকারের রিয়ালিটি তখনই তৈরি হইতে পারে যখন আমরা নিজেদেরকে এক্ট করাইতে রাজি করাইতে পারি। এখন নোয়াম চমস্কিদের ফ্যাক্ট রিভিল করার ঘটনা’টা অবশ্যই অ-দরকারি না, উনারা ধইরা নেন যে, এই না-জানার কারণে পিপল এক্ট করতে পারতেছে না! কিন্তু ঘটনা’টা আসলে কিছুটা উল্টাই; পিপলের এক্ট করার স্কোপগুলা নাই বইলাই এইখানের এম্পটি স্পেইসগুলা মিডিয়া-রিয়ালিটির ইমেজ ও নিউজ দিয়া ফিল-আপ করা হইতেছে। আমাদের এই জায়গাটারেও নোটিশ করা দরকার।

১০.০৯.২০২৩

পাওয়ার

পাওয়ার জিনিসটা সবসময় জাঁকজমকের ভিতর দিয়া না, বরং ছোটখাট জায়গাগুলাতে কাজ করে আসলে।

খুলনার সিটি-ইন হোটেলে একবার ৮-১০ দিন ছিলাম আমি। অদের সকালবেলার বুফে ব্রেকফার্স্ট মোটামুটি পপুলার একটা জিনিস। মানে, যারা থাকেন, এনজয় করেন ব্যাপারটা। বেশিরভাগ লোকজন তো অফিসিয়াল কাজেই আসেন, তো সকাল ৮-৯টার দিকে ভালো ভীড় থাকে, তারপরে ফাঁকা হইতে শুরু করে। তো, একদিন সকালে ৯টার দিকে শাদা পাঞ্জাবি পরা মাঝ-বয়েসি একজন লোক আসলেন বুফে লাউঞ্জে, সাথে আরো দুইজন ফলোয়ার নিয়া। আইসা একটা টেবিলে বসলেন। বুফে টেবিলের কাছে গেলেন না। সার্ভিস-বয়রে ডাকলেন। জিগাইলেন, নাস্তা কি আছে? এই সার্ভিস-বয়’টা নতুন; কইলো, স্যার অই কোণায় দেয়া আছে, আপনি নিজে গেলেই দেখতে পাবেন… তখন উনি দিলেন ধমক, যা বেটা! কথা বুঝস না! আমি কেন অইখানে যাবো! তোর বস’রে ডাক দে!

তারে আর ডাক দেয়া লাগলো না। সে নিজেই চইলা আসলো। বললো, স্যার, ও নতুন, আপনারে চিনে না। সার্ভিস-বয়’রে কইলো, তুই যা এইখান থিকা! তখন সে হাত কচলায়া, হাসি হাসি মুখ নিয়া জুস, ব্রেড, লুচি, ভাজি, ডিম, খিচুরির বর্ণনা দিতে থাকলো। স্যার বললেন, একটা ডিম পোচ নিয়া আসতে, আর বাটার লাগায়া একটা ব্রেড দিতে কইলেন লগে। তারপরে লগের লোক দুইটারে সামান্য বিরক্তি নিয়া কইলেন, নাস্তা করতে আইসাও শান্তি নাই! কয়, নিজে গিয়া নিয়া আসতে! দেখো অবস্থাটা!

তো, এইটা হইতেছে পাওয়ার।

সবাই যা করতেছে আমি তো সেইটা করবো না, করলে তো আমি জেনারেল পাবলিক হয়া গেলাম, আমার ‘ব্যক্তি-স্বাতন্ত্রতা’ কই থাকলো! 🙂 মানে, আমি যে ‘বিশেষ কেউ’ এইটা যদি না বুঝাইতে পারি তাইলে কি আর পাওয়ারফুল হইলাম আমি!

সেইম একটা ঘটনা দেখলাম খাগড়াছড়িতে। অইখানের সিস্টেম হোটেলে খাইতে বসছি রাতে। দুইজন গ্যানম্যান নিয়া সিভিল ড্রেসে পুলিশের বা মিলিটারি একজন ঢুকলেন খাইতে। গ্যানম্যান দুইজন তাদের কোমড়ে রাখা পিস্তল শো করতেছিল মোটামুটি সবাইরে, ঘুইরা ঘুইরা। অইখানে একটা হোয়াইট বোর্ডে লেখা ছিল কি কি জিনিস আছে রাতের মেনুতে। এইখানে রেস্টুরেন্টের কাউরে কিছু বলা লাগলো না। উনি ঢুইকা বসার পরে হোয়াইট বোর্ডটা উনার সামনে নিয়া যাওয়া হইলো, স্যার কি খাবেন বলেন? উনার খিদা কম। “সম্মান” পাইয়াই উনি খুশি। দুইটা আইটেম চুজ করলেন। সাথের গ্যানম্যানদেরকে বললেন, অই, তোমরাও বসো! খাও আমার সাথে। লজ্জা কইরো না।

এমনই দয়াবান উনি।

মানে, যদি পাওয়ার না থাকে তাইলে দয়া কেমনে দেখাইবেন আপনি! পাওয়ারটা তো জরুরি। “সম্মান”টাও। তারপরে একটু “বিনয়ী” হইলেন। দেখো, আমি কতকিছু করতে পারি! কিন্তু আমি তো ভালো-মানুশ তাই এইটুক “ভক্তি শ্রদ্ধা” নিয়াই আমি খুশি।

পাওয়ার পাবলিকলি শো-অফের একটা ঘটনা। যদি সেইটা না হয়, তাইলে সেইটা এনাফ পাওয়ার হইতে পারে না আসলে।

১১. ০৯.২০২৩

ফেসবুকের ‘হিউমার-বলদগুলা’ নয়া বাকশালি রিজিমরে হাসি-ঠাট্টা করার ভিতর দিয়া যেই পরিমাণ ব্যাক-আপ দিতে থাকে, সেইটা বাকশালি-মিডিয়ার চাইতে কোন অংশে কম না! বরং এরা ইস্যুগুলা হিউমার কইরা ‘নরমালাইজ’ করতে থাকে। ধরেন, ও.কা.’রে নিয়া হাসলো, হারুণরে নিয়া হাসলো, হাসতে হাসতে খালি হাসলো-ই না, মাদার’রে, তাদের আব্বারে সেইফ কইরা রাখলো আসলে।

এমনকি অই বেরিয়ারও ক্রিয়েট করতে থাকে যে, আপনারে সিরিয়াস হওয়া যাবে না! সিরিয়াস হইলে সেইটা আপনার দোষ! সোশাল-মিডিয়া তো ফান করার জায়গা! আপনি ফান করবেন এইখানে! সিরিয়াস হয়া যাইতেছেন মানে গাঁইয়া নাকি আপনে! মানে, যেন ফান করা আর সিরিয়াস হওয়ার বাইরে আর কোন অপশন নাই দুনিয়ায়!

তো, হিউমার করা যাবে না – ব্যাপারটা এইরকম না; কিন্তু হিউমার-বলদদের যেই পজিশন, সেইটা জুলুমের জায়গাগুলারে ক্রিটিক করা না, বরং নরমালাইজ করার জায়গাটাতেই যে বেশি কন্ট্রিবিউট করে, সেইটা না-দেখার ভান কইরা সবসময় এড়ায়া যাওয়াটাও সম্ভব হয় না আর কি!

যে কোন জিনিসরে আগে তার ইকনোমিক টার্মে বুঝার ট্রাই করবেন; মানে আমাদের গ্রেট গ্রান্ডফাদার কার্ল মার্কস এখনো জিন্দা আছেন। যদিও এইটাই একমাত্র ঘটনা না! কিন্তু এইটারে অবশ্যই ফার্স্ট কন্সিডারেশনে রাখতে হবে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট বান্দরের নাচ-গান দেখতে আর সিঙ্গারা-চা খাইতে বাংলাদেশে আসেন নাই, আসছেন এয়ারবাসের ডিলে সাইন করতে। এই ইকনোমিক কন্সিডারেশনটারে এড়ায়া গেলে বাকি কোন কিছুরেই মিলানো যাবে না।

কিন্তু রিজার্ভে তো টাকা নাই! তাইলে নতুন এয়ারবাস কিনার টাকা কই থিকা আসবে? 🙂 মানে, এই প্রশ্নটা পর্যন্ত যদি আসতে পারেন, তাইলেই হবে…

১২.০৯.২৩

হোসেন মাঝি

মানিক বন্দোপাধ্যায়ের পদ্মা নদীর মাঝি নভেলে হোসেন মাঝি নামে একটা কারেক্টার আছে। সে নতুন চরে মানুশ-জন নিয়া গিয়া বসতি গড়ে। ইউটোপিয়া টাইপ। অইখানে নতুন নিয়ম সব, নতুন আইন-কানুন।

তো, অই নতুন চরে একবার এক ঘটনা ঘটে। এক বেটার বউ জামাইরে রাইখা আরেক বেটার কাছে চইলা আসে, তখন জামাই হোসেন মাঝির কাছে বিচার দেয়। সালিশ বসে। সালিশের পরে অই ‘আরেক বেটা’রে বাইন্ধা রাখে বা শাস্তি দেয়, এইরকম কিছু। পরে রাতেরবেলা দেখা যায় যে, হোসেন মাঝি-ই তার দড়ি খুলে দিতেছে, অই বেটিরে তার কাছে আসতে দিতেছে, এইরকম কিছু ঘটে। মানে, ‘প্রেমের জয়’ হয়! (ইয়াং বয়সের পড়া বই, আবছাভাবে মনে আছে, তবে এইরকমের একটা ঘটনা আছে।)

এই ঘটনার রিডিং এইভাবে চালু ছিল যে, যেই নতুন সমাজ তৈরি হবে, সেইখানে সংস্কার বা ট্রেডিশনের জায়গায় মানুশের ইমোশন, ফিলিংসরে প্রায়োরিটি দেয়া হবে, এই-সেই।

কিন্তু এখন কিছুটা হইলেও আমরা টের পাইতে পারি যে, এইটা আসলে ক্ষমতার ঘটনা। কারণ, অই ‘আরেক বেটা’ ছিল ইয়াং এবং অনেক খাটতে পারতো, এইরকম। মানে, তারে দরকার ছিল বেশি হোসেন মাঝির। সে ঠিক কাজ করছে নাকি বেঠিক কাজ করছে, সেইটা ঘটনা না তেমন।

তো, কড়া আইডিওলজিস্ট ‘বিপ্লবী’ হোসেন মাঝি’র হিসাব-ই যদি এইরকম হয়; শুধুমাত্র ‘ক্ষমতায় থাকতে হবে’ – এই জিনিসটারে সেন্টার পয়েন্ট ধইরা যে চিন্তা করে, তার বিচার অন্য রকম হওয়ার তো কোন কারণই নাই!

১৩.০৯.২৩

SPY OPS (Netflix series)

প্রপাগান্ডা ঝামেলার জন্য নেটফ্লিক্সও এখন ঠিকঠাক মতো দেখা যায় না। তবে এইটা যে প্রপাগান্ডা সিরিজ, সেইটা জাইনাই দেখতেছি।

তিন নাম্বার এপিসোড’টা রাশান স্পাই যে ব্রিটিশদের হয়া কাজ করছিল, তার কাহিনি। তার সবচে ক্রুশিয়াল কন্ট্রিবিউশন ছিল, ব্রিটিশ-এম্রিকানদের এইটা জানানো যে, রেগান-থেচার যে সোভিয়েত-রে ইভিল-স্টেট বলতেছে এইটা রাশানরা খুব সিরিয়াসলি নিতেছে; এইরকম কথা না কইলে বেটার। তো, তার ইনফোর উপর বেইজ কইরা তারা এগ্রেসিভ কথা-বার্তা কমায়, আর এইটা কাজে দেয় কোল্ড-ওয়ারের টেনশন কমাইতে।

আরেকটা জিনিস হইলো, শেষে সে কইতেছিল আমি তো রাশান রাষ্ট্র বা তার পিপল-রে বিট্রে করি নাই, বিট্রে করছি কমিউনিস্ট-শাসনটারে যারা বেআইনিভাবে ক্ষমতায় ছিল, এবং এমন সব কাজ করতেছিল, যেইটারে ক্রিমিনাল এক্ট বলা যায়। (ব্রিটিশ কাউন্টার-পার্ট আবার এই ডিফরেন্সের জায়গাটারে খেয়াল করতে পারে না।)

আফসোস, আমাদের দেশের সরকারি-কর্মচারীরা এই জিনিস ফিল করেন-না না, এইটা ফিল করাটারে ‘দোষ’ বইলা ভাবতে পারেন।

যা-ই হোক, এমনিতে প্রপাগান্ডাগুলারে এভয়েড করতে পারলে, ভালোই জিনিসটা!

১৪.০৯.২৩

সাজেক-মসজিদ

সাজেক তো হইতেছে একটা মিলিটারি-টাউনশিপ। মিলিটারি-বিজিবি’র কিছু ক্যাম্প ও চৌকি আছে, এবং এইটাই হইতেছে সেইখানকার বেইজ। তারপরে আর্মিদের জন্য একটা রিসোর্ট বানানো হইছিল। এখন শুধু আর্মি-পিপল দিয়া তো একটা টাউন তৈরি হইতে পারে না; যার ফলে আর্মিদের লগে যাদের কোন রকমের যোগাযোগ বা কানেকশন আছে তারা রিসোর্ট-টিসোর্ট বানানোর পরে লোকজনের যাওয়া-আসা শুরু হয়। এইটা তো একদম মিজোরাম বর্ডারের কাছে। তো, রিসোর্ট ও রেস্টুরেন্ট ছাড়া তেমন কিছু নাই সাজেকে। যারা থাকতেন অইখানে, ত্রিপুরা-লোকজন তারাও নিজের ঘর-বাড়িরে রিসোর্ট বানায়া ফেলছেন, বা আরেকটু দূরে সইরা যাইতে বাধ্য হইছেন। রিসোর্ট এখন রুইলুই পাড়া ছাড়ায়া কংলাক পাহাড় পর্যন্ত পৌঁছায়া গেছে। আমার ধারণা, আরো এডভেঞ্চারাস প্লেইসেও রিসোর্ট করা পসিবল এখন, কাস্টমার পাওয়া যাবে, আর্মি-মিডিয়ার এই ‘ভাই-ভাই’ অবস্থা যতদিন আছে।

২.
তো, এইগুলা তো আছেই। কিন্তু সাজেকের একটা ইন্টারেস্টিং স্ট্রাকচার হইতেছে যে, এখনকার একদম সেন্টার পয়েন্টে, একটা চূড়ার উপরে একটা মসজিদ আছে। কিন্তু আমি পারসোনালি কাউরে ঘুইরা আসার পরে সাজেকের ‘সুন্দর দৃশ্য’ হিসাবে এই মসজিদের ছবি’টা আপলোড করতে দেখি নাই! কিন্তু এইটা এমন একটা সেন্টার-পজিশনে আছে যে, সাজেকে গেছেন এবং মসজিদ’টা খেয়াল করেন নাই – এইটা মোটামুটি ইম্পসিবল। তারপরও ঘুরতে গিয়া মসজিদের ছবি তোলা যাবে না বইলা যে একটা ‘অ-মিলের’ ব্যাপার আছে, সেইটা এর মেইন কারণ না মেবি; বা মসজিদ ও ইমেজ কনফ্লিক্টিং ঘটনা – এইরকমও না; বরং মসজিদ এইখানে অনেকটা সাইন অব ইনভেনশন বা দখল।

মানে, অবশ্যই বিজিবি, মিলিটারির লোকজন এইখানে নামাজ পড়বে বইলা মসজিদ’টা বানানো হইছে, বা যারা ঘুরতে আসবে তারা এইখানে নামাজ পড়তে পারবেন। কিন্তু এই ল্যান্ডে যারা থাকতেন – ত্রিপুরা লোকজন, তারা তো আর মুসলমান না। যার ফলে এইটা একটা ইনসারশন, পরে ঘটা একটা ঘটনা। ‘বাঙালি মুসলমান’ আইডিয়ার! :p তো, এইটা নিয়া একটা ‘অস্বস্তি’ মেবি ট্রাভেলারদের থাকার কথা। আর এমনিতে মেজরিটি ট্রাভেলার তো ‘সেকুলার’ বা তা না হইলেও এইসব জিনিস নিয়া ‘রাজনীতি করা’ পছন্দ করেন না।

[ফুটনোট হিসাবে বইলা রাখি, বাংলাদেশে ধর্ম কিন্তু আসলে লার্জলি দুইটা – ইসলাম-ধর্ম এবং সেকুলার ও হিন্দু-ধর্ম। মানে, ‘সেকুলার’ ও ‘হিন্দু’ একই ঘটনা না হইলেও একই পেরিফেরি’র মধ্যে কাছাকাছি ঘটনাই।…]

৩.
তো, খালি মসজিদ-ই আছে না, একটা পারমানেন্ট স্ট্রাকচারের গির্জার কাজও চলতেছে এখন রুইলুই পাড়ায়। মানে, অইটা চূড়াতে না, বরং এখনকার সবচে ক্রাউডি প্লেইসটাতে।

এই দুইটা জিনিস – মসজিদ ও গির্জা বানানো দেইখা আরো শিওর হওয়া গেলো আসলে যে, ইউনিভার্সাল ধর্মগুলা ‘আদি ও অকৃত্রিম’ কোন ঘটনা না; এইগুলা অনেক বেশি টপ-ডাউন ঘটনাই। মানে, আগেও একটা আলাপে আমি বলছি যে, ইন জেনারেল কমন-পিপলের এইরকমের ডিফাইনড কোন ধর্ম ছিল না; ছিল রাজা-বাদশাদের, উনাদের এই ভ্যালিডেশনটা লাগতো, ধর্মের; রাজার যেইটা ধর্ম সেইটারেই ধইরা নেয়া হইতো প্রজাদের ধর্ম। একটা সময়ে বৌদ্ধ রাজা ছিলেন বাংলাদেশের এই কারণে পিপল সবাই বৌদ্ধ ছিলেন – এইটা খুবই ভুল ধারণা। হিন্দু ছিলেন – এইটাও ভুল ধারণা, বরং ধর্ম যে কমন-পিপলেরও জিনিস – এই জায়গাটা তৈরি হইছে মুসলমান-শাসনের সময়ে আইসা। যে, রাজা মুসলমান হইলেও প্রজারা সেইটা হইতে হবে না; নিজেদের ‘ধর্ম’ (এইখানে রিচুয়াল) কন্টিনিউ করতে পারেন।

আগেও তা-ই ছিল, কিন্তু একটা আরেকটার চাইতে এতো বেশি দূরের ঘটনা ছিল না। বরং সবসময় যেই সেন্ট্রাল মিথোলজি, তার একেকটা লোকাল ভার্সন পাইবেন। অই ট্রাডিশন থিকা ইসলামেরও একটা লোকালাইজড ভার্সন এই দেশে ধীরে ধীরে তৈরি হইছে। যেইটা এরাবিয়ান বা পার্সিয়ান মুসলিম হওয়ার ঘটনার চাইতে সবসময় আলাদা। আর এইটা খালি লোকাল কালচারের লগে সেন্ট্রালাইজড রিচুয়ালের কনফ্লিক্ট না, বরং জিনিসগুলা মোটামুটি এইভাবেই পারফর্ম করে।

তো, সাজেকে মসজিদ ও গির্জা হইতেছে সিম্বলটা যে, এইখানে মুসলমান ও খ্রিস্টান আছে! ধর্মের একটা ভ্যালিডেশন! ত্রিপুরা তো নাই তেমন একটা! 🙂 বা থাকলেও আল্লার রাস্তায় চইলা আসছে অরা! বা গডের আন্ডারে এখন!

আর ত্রিপুরাদের আলাদা কোন ধর্ম তো নাই! যদি থাকেই, অদের সিম্বল কই! অদেরকে তো মুসলমান হইতে হবে, বা খ্রিস্টান; বা তা নাইলে অরা মনেহয় এখনো ‘হিন্দু’-ই আছে! মানে, যে কোন একটা ইউনিভার্সাল ‘ধর্ম’র আন্ডারে নাই মানে অরা তো প্রিমিটিভ-ই এখনো, তাই না? তাদেরকে তো আমাদের ‘মানুশ’ বানাইতে হবে!

#রাঙামাটি_সেকেন্ডচ্যাপ্টার

পলিটিকাল পার্টিগুলার, মানে বিএনপি ও আওমিলিগেরই একটা চেষ্টা আছে ইয়াং ও শিক্ষিত লোকজনরে দলে টানার, বা উনাদের একটা ভিজিবল সার্পোট নেয়ার। আর এই জায়গাটাতে অনেকেরই এক্সপেক্টশন আছে যে, যেইরকম এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনের একটা সেন্টার পয়েন্ট ছিল ঢাকা ভার্সিটি, হাসিনা-বিরোধী আন্দোলনেরও একটা পয়েন্ট এইটা হবে। এমনকি এইটারে বাকশালি লোকজন ছাত্রলিগের ‘সাফল্য’ হিসাবে দেখতে পাইতেছেন। কিন্তু আমার কাছে এইটা পলিটিকালি ভুল জিনিসই মনেহয়।

কারণ, ভার্সিটি স্টুডেন্টরা যখন এরশাদ-বিরোধী আন্দোলন করতেছিল তখন তারা জানতো যে, তারা এন্টি-মিলিটারি একটা মুভমেন্ট করতেছে, একটা ‘সিভিল-সোসাইটির’ জন্য। এমনকি ১/১১’র গর্ভমেন্টের এগেনেস্টেও মুভমেন্ট’টা সেইটাই ছিল। খালি একটা ‘স্বৈরশাসক’ এর পতন না, একটা সিভিলি এডমিনিস্ট্রেশনের কাছে ক্ষমতা ফেরত নিয়া আসাও। কেয়ারটেকার গর্ভমেন্টের ফর্মেশনে এই জিনিসটা পাইবেন। আর সিভিল-সোসাইটি মানে তো ঢাকা ভার্সিটির বা ভার্সিটির স্টুডেনরাই; ক্ষমতা-তে তো তাদের হাতেই আসবে। তো, তারা এর জন্য ফাইট করবে না তো কে করবে! মুভমেন্ট সাকসেসফুল হইলে তো তাদের লাভ আছে। কিন্তু এখনকার সিচুয়েশনটা একইরকম না, দুইটা কারণে।

এক হইতেছে, সিভিল-এডমিনিস্ট্রেশন তো অলরেডি ভার্সিটির স্টুডেন্টদের হাতে-ই, ছাত্রলিগ করতে পারলে উপ্রে উঠা যায় তাড়াতাড়ি, কিন্তু জাস্ট একটু জাতির আব্বা’রে ডাকাডাকি করতে পারলেও হয়; বিএনপি-জামাতের ট্যাগ থাকলেও পাওয়ারফুল কারো পা ঠিকমতো ধরতে পারলেই হয়। মানে, এই গর্ভমেন্ট চেইঞ্জ হইলে পরে ভার্সিটির স্টুডেন্টের পাওয়া বা না-পাওয়ার জায়গাতে তেমন বড় ধরণের কোন শিফট হবে না তো! বা হইলেও উনিশ-বিশ হবে। তো, আমার কথা হইতেছে, ভার্সিটির স্টুডেন্টদের তেমন কোন মোটিভেশন এইখানে নাই, বরং কিছু রিস্ক আছে।

রিস্কটা হইতেছে, যদি সত্যিকার অর্থেই একটা ডেমোক্রেটিক প্রসেস শুরু হয় দেশে তাইলে খালি মেরিটোক্রেসিই এস্টাবলিশড হবে না, বরং ‘শিক্ষিত’ হিসাবে যেই এলিটিস্ট পজিশন’টা ক্লেইম করা যায়, অইটার দেমাগও তো কিছুটা কমার চান্স থাকে! মানে, ভার্সিটি পাশ কইরা আপনি-আমি তো খালি ‘জ্ঞানার্জন’ করি না, বরং একটা সার্টেন স্টেটাস এচিভ করি সমাজে। এবং একটা ডেমোক্রেটাইজেশন অই জিনিসটারে বাতিল না করতে পারলেও কিছুটা আন্ডারমাইন কইরা ফেলতে পারে।

এমনকি, এখনকার সময়ের সরকারি-আমলা ও পলিটিশিয়ানদের যেই বিবাদ বা পাওয়ার-ক্ল্যাশ, সেইটা এইরকম কাছাকাছি একটা ঘটনা! পুলিশ বড় না প্রশাসন বড়! ডিসি-এসপি বড় না এমপি-মিনিস্টার বড়!… কিন্তু আনফরচুনরটলি কোন গ্রুপই পিপল’স রিপ্রেজেন্টেটিভ কোন এজেন্সি না। কোন গ্রুপ জিতলেই পিপলের কিছু যায় আসে না!

যার ফলে ভার্সিটির স্টুডেন্টরা হাসিনা-বিরোধী আন্দোলন করতেছে না – এইটা যতটা না কোন না-পারা বা ‘সাফল্যের’ ঘটনা, তার চাইতে অনেক বেশি গ্রাউন্ড-রিয়ালিটির ঘটনা, যেইখানে তেমন কোন মোটিভেশন নাই, এবং কিছু রিস্কও ইনভলব আছে।

২.
তো, তাইলে কে করবে আন্দোলন? কারা বেশি সাফার করতেছে, কাদের উপরে বেশি জুলুম হইতেছে? এই গর্ভমেন্ট ফল করলে কাদের লাভ আছে? এখন অল্প কিছু লোক বাদে মোটামুটি সবাই-ই তো সাফার করতেছে। কিন্তু কারা একটা ফোর্স হিসাবে এফেক্টিভ পলিটিকাল রোল প্লে করতে পারে?

একটা উত্তর তো অবশ্যই যারা ‘বিদেশ’ চইলা যাবে না, যাওয়ার উপায় নাই বা বিদেশ থিকা ফিরা আসবে। যার ফলে আমি মনে করি গণ অধিকার পরিষদের ‘প্রবাসী’ বা ‘মাইগ্রেন্ট লেবারদেরকে’ টার্গেট করাটা ভালো একটা পলিটিকাল এপ্রোচ ছিল; কারণ উনারা দেশে ফিরা আসবেন, এই দেশে থাকতে হবে তাদেরকে। একটা মিনিমাম ‘সুশাসন’ তাদের দরকার। কিন্তু উনারা তো ফিজিকালি কোন মুভমেন্ট তৈরি করতে পারবেন না। যেই কারণে দেখবেন অনলাইন-এক্টিভিজমের বড় একটা বাজার তৈরি হইছে এখন। এইখানে এই পিপলের একটা না-পাওয়ার জায়গাটা অনেক বেশি স্ট্রং।

আরেকটা জায়গা হইতেছে গ্রাম ও মফস্বলের লোকজন; মানে, গেরাম বলতে যেই ছবি আমরা দেখি বা মনে মনে বানাই, ইমাজিন করি, অই গেরাম আর বাংলাদেশে এগজিস্ট করে না; ৮০’দশক থিকাই সেইটা নাই হইতে হইতে এখন ‘বিলীন’ হয়া গেছে বইলা আমি মনে করি; যা আছে, তা হইতেছে মফস্বল। অইখানের মানুশের ফ্যামিলি-তে যদি কেউ বিদেশে না থাকে বা বিদেশ থিকা টাকা না পাঠায়, তাইলে ইকনোমিকালি অনেক বেশি সাফার করার কথা। অইখানে ইনকাম ইন-ইকুয়ালিটি’টা অনেক বেশি। এবং খেয়াল কইরা দেখবেন যখন বিএনপি ইউনিয়ন, থানা/উপজেলা, জেলা ও বিভাগ বেইজড কর্মসূচি দিতেছিল, সেইটা মোমেন্টাম পাইতেছিল; ঢাকা শহরে আসার পরে বরং অনেকটা পোতায়া গেছে। এই কারণে না যে, ঢাকার মানুশের সাফারিংস কম, বা শহরের মানুশের টাইম কম, বরং মোটিভেশনটা এতোটা স্ট্রং না! এমনকি আমি মনে করি ‘ঢাকা দখল’ করার যেই আর্জ সেইটাও প্রবলেমেটিক কিছুটা।

‘ঢাকা দখল’ করা যাবে না, বা ‘গ্রাম দিয়া শহর ঘেরাও’ করার কথা আমি বলতেছি না; আমি বলতে চাইতেছি অই ফোর্সটারে এনেবল করা, যারা এই রিজিমে সবচে বেশি মজলুম। আমার বিচারে তারা হইতেছেন ‘অল্প শিক্ষিত’ ‘বেকার’ লোকজন! উনারা ভার্সিটি পিপলের মতো কোন একটা স্পেসিফিক জিওগ্রাফিকাল লোকেশনে থাকতেছেন না, অনেক বেশি ছড়ায়া-ছিটায়া আছেন। যার ফলে পলিটিকালি একলগে করাটা কঠিন। কিন্তু সেইটা কোন না কোন পলিটিকাল ফর্মেশনের ভিতর দিয়া হইতে পারলেই বেটার।

৩.
তবে পলিটিকাল আন্দোলনের ভিতর দিয়া এই অবৈধ বাকশালি-শাসনের পতন না হইলেও একটা ইকনোমিক কল্পাসের ভিতর দিয়া এর শেষ হবে বইলা আমি মনে করি। মানে, যখন লুটপাটের আর কিছু থাকবে না, তখন পলিটিকাল ক্ষমতা ধইরা রাইখা কি লাভ!

কিন্তু এখনো ‘উন্নয়নের’ (মানে, লুটপাটের) আরো অনেক স্কোপ আছে – এইটা হইতেছে উনাদের সেলফ-মোটিভেশনের জায়গাটা। যা দিয়া ডাকাত-দলের লোকজনরে এক্টিভ রাখা যাইতেছে। যদিও নতুন নতুন পঞ্জি-স্কিম এখনো আবিষ্কার করা হইতেছে, এর একটা শেষ আছে বইলাই আমি মনে করি। মানে, ইকনোমিক ডিজাস্টারের কারণে বাংলাদেশের মানুশ-জন খেইপা গিয়া বাকশালি-শাসনের পতন ঘটাবে – তা না, (সেইটা পলিটিকাল ঘটনাই হইতে হবে) বরং একটা এন্ড-পয়েন্টে গিয়া ডাকাতদল কুইট করবে আসলে। যেইটা এখন ধীরে ধীরে শুরু হইছে বইলাই আমি মনে করি, যেইটা নেকস্ট টাইম এই অবৈধ-শাসন কন্টিনিউড হইতে থাকলে আরো বাড়বে।

সেইটা আসলে ‘পতন’ হবে না কোন। বরং সিস্টেমটা ধীরে ধীরে কল্পাস করতে করতে এমন একটা কালচারাল ‘ব্ল্যাকহোলে’ গিয়া আটকাবে, যেইখান থিকা বাইর হইতে আমাদের হয়তো ১০০ বছর লাইগা যাবে। যে কোন পলিটিকাল শাসনেরই একটা কালচারাল এফেক্ট আছে; একইভাবে অই কালচারাল ফর্মেশনটাও একটা পলিটিকাল রিজিমের এক ধরণের ‘বৈধতা’ ক্রিয়েট করতে থাকবে, এবং একটা সময় পরে গিয়া সেইটারে ‘নরমাল’ বইলা মনে হইতে থাকবে তখন।

১৫.০৯.২৩

রাইটার হিসাবে কেন আমি একটু ‘অপরিচিত’? 🙂

যেহেতু গত ২৫-৩০ বছর ধইরা লেখালেখি করি, মাঝে-মধ্যে এইরকমের ঘটনা ঘটে, কেউ কেউ আমারে ‘আবিষ্কার’ করেন। তো, এই আবিষ্কৃত হইতে পারাটা কখনোই খুব একটা ভালো-এক্সপেরিয়েন্স না; মানে, আমার লেখা তো আরো ওয়াইডার অডিয়েন্সের কাছে রিচ করা উচিত – এইরকম পজিশনটারে ডিল করাটা একটু ঝামেলার জিনিসই মনেহয়। কিন্তু এই যে একটু ‘অপরিচিত’ বইলা রিকগনাইজড হওয়া, এইটারে ঠিক আমার সমস্যা বা সুবিধা কোনটাই মনেহয় না, বরং লেখালেখির বাইরের ঘটনা বইলাই মনেহয়।

এমনিতে, অনেকেই অনেক সময় আমারে পপুলার বানানোর ট্রাই করছেন; মানে, ইন অ্যা গুড সেন্স, উনারা মনে করছেন আমার চিন্তা ও সাহিত্য ভালো, এবং এর প্রচার হওয়ার দরকার। কিন্তু সেইটা হয় নাই। এইটা নিয়া আমার চেত-বেত কমই, বরং উনাদের জন্য কিছু খারাপ-লাগা আছে আমার।

তো, কেন আমার লেখালেখি খুব একটা বেশি ছড়াইতে পারে নাই (লেখা ভালো নাকি খারাপ – সেইটা না), সেইটা নিয়া কিছু ধারণা আমার আছে। ধারণাগুলা এইরকম:

১. বাংলাদেশের ট্রাডিশনাল মিডিয়াতে (সাহিত্য-পত্রিকা, সাহিত্য-পাতা, ঈদসংখ্যা, নিউজ পোর্টালের সাহিত্য-পেইজ..) আমি লেখি না। কিন্তু এখনো কোন পত্রিকায় কার লেখা ছাপা হইতেছে – সেইটা দিয়াই লেখার ‘সাহিত্য-মূল্য’ যাচাই হয় আসলে। যদিও গু-মুতের বাইরে তেমন কিছুই পাওয়া যায় না এখন অইসব জায়গায়। তারপরও মানুশ লেখকের নাম-টাম তো এইসব জায়গা থিকাই জানে, বা জানতে চায়।

২. ঢাকার সাহিত্য-সমাজের লগে আমার মিনিমাম লেভেলের কোন উঠা-বসা নাই। উনারা যে আমারে চিনেন না বা আমি যে উনাদেরকে চিনি না – তা না, কিন্তু আমি একভাবে এভয়েডই করি অই ক্রাউড’টারে, গেদারিংটারে; অফলাইনে তো অবশ্যই, অনলাইনেও। যেই কারণে উনারা আমার সুনাম বা বদনাম করবেন, এই এক্সপেক্টশনও আমার নাই। কিন্তু রাইটারের নাম তো এইরকম ছোট ছোট সার্কেল থিকাই ছড়ায় আসলে।

৩. উঠা-বসা এখন নাই, কিন্তু একটা সময়ে তো টুকটাক কিছু ছিল, আমার ধারণা, তখন কিছু পাওয়ারফুল দুশমন আমি বানাইতে পারছিলাম। নাম ধইরাই বলি, সলিমুল্লাহ খানের এক বুক রিভিউ করতে গিয়া কইছিলাম, উনার জাতীয়তাবাদ তো ভয়ংকর জিনিস! ২০০৭-৮ সালের কথা। পরে ২০২১/২২-এ যখন এক প্রোগ্রামে আমি বক্তৃতা দিতে গেছি, উনি ছিলেন লাস্ট বক্তা, আমার কথা নিয়া পারসোনালি গালি-গালাজ করলেন! মানে, আমি ভুলেই গেছিলাম উনার কথা। তারপর সাজ্জাদ শরিফের নাম নিয়া বলছিলাম যে, মদের আড্ডা বসায়া কবি বানানোর প্রজেক্ট তো কাজে দিবে না ভাই! তখন খুব ভদ্রভাবে উনার অফিসে ডাইকা নিয়া আমারে হিউমিলিয়েট করছিলেন, তখনকার দিনে উনার আন্ডারে চাকরি করতেন এইরকম একজন রাইটার-ও ছিলেন, কিন্তু উনি এই ঘটনার সাক্ষী দিবেন বইলা মনেহয় না। এইরকম আরো অনেক ঘটনা আছে। মানে, আমি খুব প্ল্যান কইরা এইগুলা করছি – তা না, কিন্তু খেয়াল করলে দেখতে পাই যারা সাহিত্যিক-পান্ডা ঢাকা শহরের ছোট-বড় গ্রুপের, সবার লগেই আমার কোন না কোন খিচখিচানি আছে। আমার কোন দোষ নাই না – এইগুলা হয়া গেছে আসলে কোন না কোন কারণে। তো, উনাদের উম্মত যারা, তারা আমার ব্যাপারে জানবেন বা জানলেও কোন পজিটিভ এটিটুড থাকবে – এইটা আশা করাটা তো ঠিক না।

৪. তার চাইতেও যেইটা জরুরি জিনিস, আমি যেই ইন্টেলেকচুয়াল ও লিটারারি পজিশনগুলারে এক্সপ্লোর করতে চাই, এর লগে কম্পিটেবল লোকজন কমই আছেন।

৫. এবং তাদের সাথেও আমার তেমন পারসোনাল খাতির নাই। মানে, দলবাজি জিনিসটা আমি করি-না না, আমার আসলে হয়-ই না। ইয়াং যেইসব রাইটারদের লেখা আমি লাইক করি তাদের কাছ থিকা একটু দূরে দূরে থাকাটাই আমি পছন্দ করি। আর যারা আমার লেখা পছন্দ করেন, তাদের থিকাও দূরে থাকতে চাই। প্রশংসা ও নিন্দা – দুইটাই মোটামুটি অপছন্দের আমার। এখন রিয়েল কানেক্টিভিটি ও ক্রিটিক তো রেয়ার জিনিসই অনেক। আর পারসোনাল যোগাযোগের বাইরে নাম-টাম মেনশন করাও তো কঠিনই।

৬. প্রফেশনও একটা কারণ; ভার্সিটির টিচার, সাংবাদিক, রিসার্চার, ডেভোলাপমেন্ট ওয়ার্কার, বিপ্লবী হইলে সামাজিক-ভাবে ‘রাইটার’ হওয়াটা সহজ হয়। অই সহজ হওয়াটা আমার ভাগ্যে ঘটে নাই।

৭. তাই বইলা আমি এমন কোন অবস্থাতে নাই যেইখানে আমার সোশ্যাল-পজিশনটারে ‘করুণা’ করা যায়! যে, বেচারা কবি! মানে কবি-সাহিত্যিকদের তো সামাজিক দুভার্গ্য লাগে, এবং মানুশ-জন তাদেরকে ‘স্নেহ’ করতে পছন্দ করেন। সেই সুযোগও আমি এখন পর্যন্ত খুব বেশি দিতে পারি নাই! এইটাও একটা না-পারাই আসলে আমার।

কিন্তু যেহেতু আমি লেখি (ফেসবুক আমার আইডি রেস্ট্র্রিক্ট করছে বইলা যে লেখি না – তা না, মানুশের নিউজফিডে কম যায় আর কি, আর এইখানেও পাওযারফুল কারো নেক-নজর থাকতে পারে বইলা সন্দেহ আমি করি), নিজের মতো কইরা পাবলিশ করি, বই-টইও ছাপাই, কারো কারো নজরে পইড়া যায় কিছু লেখা।

আর আমার নাম না জাইনাও যারা লেখাগুলা পড়েন, তারা তো আসলে ফেরেশতা! (আমার কাছে)

রিডার, আপনারে সালাম!

১৭.০৯.২৩

এই জোকসটা অনেকেই শোনার কথা। যে, এক লোক জাহান্নামে গেলো, গিয়া দেখে, একেক দেশের লোক একেক জাহান্নামের গর্তে পইড়া আছে; আর সব জাহান্নামের গর্তের উপরে কয়েকজন লোক ডান্ডা নিয়া দাঁড়ায়া আছে, কেউ গর্ত থিকা বাইর হইতে নিলেই তারে বাড়ি মাইরা ভিতরে ফেলে দেয়। কিন্তু একটা দেশের জাহান্নামের গর্তের উপরে কোন গার্ড নাই, কিন্তু অই জাহান্নাম থিকা কেউ বাইরও হয়া আসতেছে না। কি ঘটনা? তখন একজন ফেরেশতা বললেন যে, এই দেশের জাহান্নামে কোন গার্ড লাগে না, কারণ কেউ যদি উপরে আসতে নেয় তাইলে আরেকজন ঠ্যাং ধইরা তারে নামায়া ফেলে, আলাদা কোন গার্ড রাখার দরকারই নাই এইখানে। তো, এই দেশের নাম হইতেছে – বাংলাদেশ!

২.
তো, এই পুরান জোকসটা মনে পড়লো গত কয়েকদিনের সেলিব্রেটি ইস্যু নিয়া। মানে, যেই মানুশটা সেলিব্রেটি হয়, দেখবেন সাথে সাথে তার কিছু ফলোয়ার, এবং তার চাইতে বেশি হেটার্স দাঁড়ায়া যায়, এবং আমার নিউজফিডের কিছু আইডিরে খুব ইমোশনালি এই সার্কাসে এনগেইজ হইতে থাকি। যদিও নিয়মিত আন-ফলো এবং আনফ্রেন্ড করি, তারপরও এই জিনিসগুলা থাকে, অনেক সেন্সেটিভ মানুশরে দেখি এই ক্রাউডে।

এই ঘটনা মোটামুটি ওয়ার্ল্ড-ওয়াইডই ঘটে বইলা আমরা ধারণা। কাউরে ভালো-লাগলে তারে আমরা ফেরেশতা বানায়া ফেলি; তারপরে দেখা যায় যে, না, শেও তো হাগা-মুতা করে, তার পাদেও বদ-বু আছে! তখন তারে আর এতো ভালো-লাগে না। এইভাবে, যে কোন ঘটনায়, যে কোন ব্যক্তি-ইমেজের বাইনারি তৈরি হয়া যায়। পক্ষে নাইলে বিপক্ষে – যে কোন একটাতে থাকতে হবে! তো, এইটা খালি বাংলাদেশের ঘটনা না, কিছু ইউনিভার্সালিটি এইখানে আছে। কিন্তু এর অতিরিক্ত আরো কিছু জিনিস এইখানে ঘটে বইলা আমার মনে হয়।

একটা মাস লেভেলের লোকজন সামহাউ একটা ইনফিরিয়রিটি ক্যারি করেন, এবং এমনকি এইটারে গ্লোরিফাইও করেন। কেউ চাকরিতে প্রমোশন পাইতেছে না, বা ধরেন রাইটার হিসাবে ক্রিটিকাল রিকগনিশন পাইতেছে না, এইরকম সোশাল বা ইন্টেলেকচুয়াল সেন্সে ‘সাকসেসফুল’ না হওয়ার একটা অর্থ এইরকম দাঁড়ায় যে, “আমি সৎ, এই কারণে আমি ব্যর্থ”, একটু দুই নাম্বারি করলে আমিও পারতাম! মানে, আমার-আপনার না-পারাটা ঠিক না-পারা না, একটা ‘অদক্ষতা’ না, হইতেছে একটা ‘সৎ থাকা!’র ঘটনা, এবং মুশকিলের ব্যাপার হইতেছে, এইটা বেশিরভাগ সময় সত্যিও। কিন্তু এই ঘটনাটা যেইটা করে, কেউ একজন সাকসেসফুল হইছে মানেই আমরা ধইরা নেই যে, শে কোন না কোন দুই নাম্বারি অবশ্যই করছে! আর এই যে মনে হওয়াটা, এইটা ইউনিভার্সাল কোন ঘটনা না।

আমরা ধইরা নেই, বাংলাদেশে সৎ-ভাবে (যে কোন অর্থেই হোক) সাকসেসফুল হওয়া পসিবল না!

এইটা অনেকটা ইম্পেরিকাল ট্রুথ হইলেও সমাজ সম্পর্কে যেই ওভারঅল নেগেটিভ ধারণা সেইটা ব্যক্তির উপরেও আছর করে আসলে। এবং একটা ইভিল-সার্কেল তৈরি করে। যেহেতু দুই-নাম্বারি না করলে এই সমাজে সাকসেসফুল হওয়া যায় না, মানুশ-জন মনে করে দুই নাম্বারি করতে পারা মানেই হইতেছে সাকসেসফুল হওয়া! এবং কেউ যখন এইটাতে বিশ্বাস করে না, শে হয়া যায় ‘আলাদা’ ধরণের একটা মানুশ! এইরকম কেউ যদি সাকসেসফুল হন, তাইলেও আমরা সন্দেহ করতে পারি, কোন না কোন দুই নাম্বারি নিশ্চয় শে করছে! তো, খুঁজলে কিছু একটা তো পাওয়াও যায় তখন। মনে মনে আরো খুশি হইতে পারি আমরা হতাশ হইয়া, এই দেশে কেউ ভালো না!

৩.
আমার কথা হইতেছে, এইটা ভালো-হওয়া বা খারাপ-হওয়ার ঘটনা না আর কি এতোটা! 🙁 বরং আমাদের ভিজিবিলিটির স্পেইসটারে কিভাবে কন্সট্রাক্ট করতেছি আমরা সেইটার কন্ট্রিবিউশনও কম না। মানে, দুনিয়াতে ভালো-খারাপ বইলা কিছু নাই, বা সবই একটা পারসপেক্টিভের ঘটনা – তা না; এইখানে একটা কালেক্টিভ ফর্মও আছে, যেইটারে আমলে নিতে আমাদের রাজি হওয়া উচিত।

আদম তমিজী হকের ঘটনা নিয়া বেশিরভাগ লোকজনই মজা পাইতেছেন, তবে কিছু লোক হয়তো তার দুর্দশা দেইখা ভাবতেছেন, বেচারা! কিন্তু তার এই অবস্থা থিকা সবারই একটা জিনিস শিক্ষা নেয়ার দরকার আছে বইলা মনে করি। সেইটা হইতেছে, যতটা পারেন বাকশালিদের থিকা দূরে থাকেন, ইন ইউর পারসোনাল লাইফ!

ক্ষমতা পাওয়ার লোভে এদের সাথে মিইশেন না! মান-ইজ্জত না খালি জান নিয়াও বিপদে পড়বেন! বিপদে পড়লে আশে-পাশের লোকজনদেরকেই আগে কুরবানি দিবে অরা! ২০১৮ সালের ইলেকশনে যারা রাতের-বেলা ভোটের ব্যবস্থা কইরা দিছিলেন, তারা কে, কোথায় আছে – সেই খবর নিতে গেলেও আমার ধারণা অনেক খবর বাইর হয়া যাওয়ার চান্স আছে। এইবার আরেক সেট লোকজন নিয়া আসা হবে। এবং তাদেরকেও কুরবানি দেয়া হবে ভোটের পরে।

শয়তানের কাছে আপনার আত্মা বেইচা দিয়েন না। তারপরে আদম তমিজী হকের মতন আপনি কানলেও লোকজন হাসবে তখন!

১৯.০৯.২৩

পলিটিকাল অরিয়েন্টশনের বেসিসে বাংলাদেশের মানুশ-জনরে এখন ৫টা কেটাগরিতে ফেলা যাইতে পারে, আমার বিচারে। তো, সবচে বাজে থিকা সবচে প্রেইজ করার মতো ভাবলে কেটাগরিগুলা এইরকম হবে –

১. প্রো-বাকশালি: নট অনলি আওমি-লিগার (আওমি-লিগার বরং কমই), উনারা ‘বিপ্লবী’ – ‘বামপন্থী’ এবং ‘ইসলামিস্ট’-ও, মানে উপরে উপরো ‘কড়া’ কিন্তু ভিতরে ভিতরে ‘সুবিধাবাদী’; যারা মনে করেন ‘পাওয়ারফুল’ একটা গর্ভমেন্ট থাকা দরকার এবং ‘ডেমোক্রেসি’ কোন কাজের জিনিস না! এইটা উনাদের ইন্টেলেকচুয়াল সন্দেহ না খালি পাওয়ার-স্যাভি হওয়ার এবং থাকার নমুনাই আসলে। এবং এই ধরণের লোকজনই হইতেছে যে কোন ফেসিস্ট রিজিমের এনেবেলার। এরা সংখ্যায় কম, কিন্তু ভোকাল; এবং কড়া ইমোশন ও উঁচা টোনের কারণে মনেহয় সত্যি-কথাই তো বলতেছে! এরা বাকশালের কালচারাল ফোর্স। বেকুব না, বরং বাটপার। মাথা গুনলে ২-৪ হাজার লোকও হবে না এইখানে।

২. এই দেশে এইরকমই হবে: এরা হইতেছে প্রো-বাকশালিদের বাই-প্রডাক্ট – ‘শিক্ষিত’ ‘মধ্যবিত্ত’ ‘বিদেশে যাওয়ার’ বা ‘সরকারি চাকরি’ পাওয়ার আশা আছে এইরকম। উনারা বিষন্ন, মানে ডিপ্রেসড; কিন্তু ‘স্বপ্ন নিয়ে’ থাকেন; পিআলো আর ডিস্টার পড়েন, এবং নিয়মিত পাবলিকরে গাইল্লান, ‘বাঙালি মানেই বদমাইশ’ ‘রাষ্ট্র খারাপ’ – এইরকম জেনারালাইজেশন কইরা ফেলতে পারেন সহজে! কিন্তু এতে কইরা মনের দুঃখ তেমন কমাইতে পারেন না। কারণ ইনকাম যত না বাড়ে তার চাইতে ইনফ্লেশন বেশি বাইড়া যায়! তবে আশার কথা, এরা চোখ বন্ধ কইরা রাখলেও গায়ে তাপ ঠিকই টের পায়; যার ফলে সরাসরি প্রো-বাকশালিদের দলে জয়েন করতে পারে না। এই সংখ্যা অনেক কমতেছে; কিন্তু যেহেতু ‘নিরব জনতা’ সংখ্যাটা টের পাওয়া যায় না।

৩. আমরা কি করতে পারি?: এরা হইতেছে আসল ‘জনগণ’, যারা নিজেদেরকে পাবলিক বইলা মাইনা নিতে রাজি আছে। কিন্তু যেহেতু ‘জনগণ’ নিজেদেরকে ‘অসহায়’ ভাবার জায়গা থিকা বাইর হইতে রাজি না। এরা ভাবে কথা কইলেই তো ডিবি পুলিশ আইসা ধইরা নিয়া যাবে, অফিসের বস ঝাড়ি দিব, এলাকার ছাত্রলিগ বাড়িতে আইসা হামলা করবো! এই ডরে উনারা কথা বলেন-না না, এর ডর হইতেছে উনাদের লাইফের কোর ইমোশন। কথা কইলেই বিরাট কিছু এচিভ কইরা ফেলবেন না, কিন্তু কথা বলতেছেন না বইলাই যেন উনারা বাঁইচা থাকতে পারতেছেন! – এই ভুল-ধারণার তাবিজ ফেলে দিতে পারতেছেন না। বাংলাদেশের মোর দ্যান ৮০% এই গ্রুপের লোকজন।

৪. পাবলিকলি কথা-বলা লোকজন: এর বাইরে ‘সাহসী’ লোকজন আমরা পাইতেছি। বাকশাল-বিরোধিতা কালচারালি ফ্যাশনেবল না হয়া উঠতে পারলেও আগে যেমন ‘ক্ষ্যাত’ একটা পজিশন ছিল, অইটা আর নাই তেমন। এর কারণ আসলে কালচারাল বা পলিটিকাল না এতোটা, বরং ইকনোমিকাল। অনেকেই বুঝতে পারতেছেন, এখনো যদি আমরা কথা না বলি, আরো কয়েকটা জেনারেশন কথা না বইলা জিন্দেগি পার করতে হবে তখন। উনারা হইতেছেন এখনকার পলিটিকাল সিনারিও’তে একটা ক্রূশিয়াল ফোর্স। বাকশালি-মিডিয়াতে এদের কোন খোঁজ তো পাইবেন-ই না, ফেসবুকেও গত ২-৩ মাসে এই ক্রাউড’টারে মিউট কইরা দেয়া হইছে। উনারা যত ক্রিয়েটিভ ওয়েতে নিজেদের ভিজিবল করতে পারবেন, তত অন্য মানুশেরা কথা-বলার ইন্সপারেশন পাইতে পারবে। নয়া বাকশালের সব এন্তেজামও এদেরকে চুপ করানোর রাস্তা খুঁইজা বাইর করা-ই।

৫. বাকশালি-রিজিমের বিরুদ্ধে এক্টিভলি কাজ করতেছেন: কিন্তু আসল কাজটা করতেছেন যারা রাস্তায় নামতেছেন, মেইনলি বিএনপি’র লোকজন; এবং সাথে অল্প কিছু লোকজনও জড়ো হইছেন। এদেরকে গুম-খুন-মামলা-হামলা দিয়া শুয়াইয়া দেয়া হইতেছে অনেক দিন ধইরাই। কারণ উনারাই হইতেছেন সবচে এক্টিভ পলিটিকাল ফোর্স। উনারা সংখ্যায় যত বাড়বেন, এই অবৈধ-শাসনের শেষটা তত আগাইতে থাকবে তখন।

এখন সব কয়টা গ্রুপেই মেসির সার্পোটারও যেমন আছেন রোনালদোরও আছেন; ‘নারীবাদী’ যেমন আছেন ‘নারী-বিদ্বেষী’ও; খারাপ-মানুশ যেমন আছেন ভালো-মানুশও আছেন। মানে, আমাদের পারসোনাল, কালচারাল, আইডিওলজিকাল, মোরাল এবং ইকনোমিকাল পজিশনের লগে পলিটকাল পজিশন সবসময় আইডেন্টিকাল না। কিন্তু এইসব কেটাগরি সবসময় পলিটিকাল পজিশনের জায়গাটারে ঝাপসা কইরা দেয়ার কাজটা করতে পারে।

বাংলাদেশের ‘শিক্ষিত’ মানুশদের যেই ‘আরবি হেইট্রেট’ সেইখানে আমার ধারণা ফার্সি লিটারেচারেরও একটা কন্ট্রিবউশন আছে। মানে, আরবি আর ফার্সি তো দুইটা দুই জিনিস; এদের ইন্টারনাল একটা ক্ল্যাশ ছিল। যেইটা আবদুল করিমের (সাহিত্য বিশারদের) একটা কথা’তে পাইবেন। (কথাটা আমার কমেন্টের নিচে দিতেছি।)

তো, একটা সময়ে, ইভেন ব্রিটিশ-আমলের শুরুতেও বাংলা-ভাষায় ফার্সি টেক্সট অনেক তরজমা হইছে; হিন্দু-লেখকরাই করছেন সেইটা। রামমোহন রায় তো লেখছন ফার্সিতেই বেশি। এখনকার সময়ে ইংলিশে লেখা ব্যাপারটা যেইরকম একটু উঁচা-জাতের ঘটনা, একটা সময় ফার্সিতে লেখা এইরকম ছিল। এবং আমার ধারণা, গিরিশ চন্দ্র সেন কুরআন তরজমা করেন, সেইটাও ‘সাহিত্যিক’ একটা ঘটনা ছিল। ফার্সির সাথে আরবি লেখাও তরজমা করতেছেন, এইরকম। যার ফলে, আরবি-ফার্সি একই ঘরানার জিনিস হয়া আছে অনেকটা বাংলা-ভাষায়, যেন একটাই ট্রেন্ড। এই ভাষা দুইটার পলিটিকাল ক্ল্যাশের ঘটনা আমরা নজরে আনতে পারি না।

কিন্তু না আনতে পারলে, ফার্সি-সাহিত্যে যে ‘যৎ-কিঞ্চিত’ ‘উচ্চমন্যতা’ আছে, সেইটা এক ধরণের ভ্যালিডেশন, আমাদের ‘চেতনা’-তে ট্রান্সফার হওয়ার কথা। এখন এগজেক্ট উদাহারণ দিয়া জিনিসগুলা প্রমাণ করা তো কঠিনই। কিন্তু আবদুল করিমের রেফারেন্সের বেসিসে এই কথাটা মনে হইলো। আবদুল করিম বলতেছিলেন ১৯৫২-৫৩ সালের দিকে পাকিস্তানে বাংলা ও উর্দু’র পলিটিকাল কনফ্লিক্ট নিয়া। যে, আরবি ও ফার্সির একটা কনফ্লিক্ট কিন্তু ছিল; আরবি ভাষার বাড়াবাড়ি’র কারণে ফার্সি বাতিল হয়া যাই নাই, বরং ফার্সি সাহিত্যে আরব-জাতি নিয়া ফান-টানই করা হইছে তখন।

“আল্লাহর অশেষ কৃপায় ইরানে ইসলামের পত্তন হয়। সেই আরবেরা যখন সাম্রাজ্যবাদীর মত ইরানের ভাষা লইয়া টানাটানি শুরু করিল, তার প্রতিক্রিয়া-স্বরূপ দুই তিন শত বৎসরে শুধু আরবদের সাম্রাজ্য চুরমার হইয়া গেল না, সংস্কৃতিও ম্লান হইয়া গেল। পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি ফেরদৌসী ইসলামের কোন গাথা রচনা করিলেন না – তিনি রচনা করিলেন, ইরানী নৃপতিগণের গাথা যারা কেহই মুসলমান ছিলেন না। পক্ষান্তরে আরবদের এই দুগ্ধপায়ী খোর্মাভুক বলিয়া তিনি উল্টা উপহাস করিলেন। ইতিহাসের সেই শিক্ষা সম্মুখে রহিয়াছে। সংস্কৃতি ধ্বংনের অনেক পথ আছে। জনসাধারণ বিরোধী ও সমাজ বিরোধী গোয়ার-নীতি তার অন্যতম উপায় বটে। কিন্তু তার পরিণাম ফল পারস্যে আরবদের ভাগ্যের মতই হইতে বাধ্য।”

/আবদুল করিম (সাহিত্য বিশারদ), ১৯৫৩

২২.০৯.২৩

#গোয়েবলস #ডিস্টার #বাকশালিমিডিয়া

এই নিউজটাতে সমস্যা মোটাদাগে তিনটা:

১. ইনকামের কথা জানানো হইছে কিন্তু খরচের কথা জানানো হয় নাই। ১ বছরে না, বরং ৪৫২ দিনে ১ হাজার কোটি টাকার টোল আদায় হইছে; কিন্তু এর পুরাটাই তো ইনকাম না, খরচ তো হইছে কিছু; সেইটা কতো? ২-১ কোটি টাকা হইলেও তো টাকা, কিন্তু কতো সেইটা? বলা উচিত ছিল না!

২. বলা হইছে এক্সপেক্টশনের চাইতে বেশি টাকা আসছে। কিন্তু এক্সপেক্টশন কতো ছিল? 🙂 কোন প্রজেকশন ডেটা-তে তো আছে সেইটা, কোট করা হয় নাই। কোন একটা ভুয়া ডেটা হইলেও কোট করা উচিত ছিল না?

৩. তো, লোন শোধ হইলো কয় টাকার? ৩০ হাজার কোটি টাকা ছিল ইনিশিয়াল খরচ, এখন রেললাইন হইতেছে, এরপরে মেইনটেইনেন্স আছে, এই পর্যন্ত খরচ হইলো কতো টাকা? ইন্টারেস্ট চার্জ হইছে কতো টাকা? এই রেটে টাকা আসলেও ৩৮ বছর লাগবে খালি খরচের ৩০ হাজার কোটি টাকা উঠতে। তবে টোল আদায় তো বাড়বে আরেকটু; তারপরও আমার ধারণা, খরচ-টরচ ও সুদ মিলায়া ৫০ বছর পর্যন্ত টানতে হবে এই জিনিস।

মানে, চিন্তা করেন, হেডলাইন হওয়া দরকার: “পদ্মা-ব্রিজের খরচ উঠতে লাগতে পারে ৩৮ বছর”; মানে, যেইটা চিন্তার কথা, সেইটারে দেখাইতেছে একটা এচিভমেন্ট হিসাবে! মানে, গোয়েবলসের কাজ তো আসলে এইটাই!

২২.০৩.২৩

উপমা দিয়া কথা বলার সবচে ঝামেলার জিনিস হইতেছে যে, উপমাটাই যে বস্তু বা ঘটনা না, সেইটাতে গিয়া কথাটা আটকায়া যায় বেশিরভাগ সময়; মানে, কনসার্নটা হয়া উঠে উপমা’টা ঠিকাছে কি ঠিক-নাই – অই জায়গাটা; কি কথা বলছেন, সেইটা আর থাকে না। যেমন ধরেন কইলেন, “পৃথিবী কমলালেবুর মতো”; কিন্তু পৃথিবী তো কমলালেবুর মতো না পুরাপুরি! দুইপাশ যে চেপ্টা, সেইটা তো একুরেট না! বা পৃথিবীর সারফেইস তো কমলালেবুর মতো স্মুথ না! এই-সেই… মানে, আপনি যে রাউন্ড-শেইপের একটা কিছু মিন করতে চাইতেছিলেন, সেইটা যেন এজ ইট ইজ বা হুবহু সেইটাই হওয়া লাগবে! 🙁

এইরকমের একটা রিস্ক সবসময়ই থাকে। তো, অই রিস্কটা মাথায় রাইখাই একটা কথা বলতে চাইতেছি। কথাটা জামায়াতে ইসলামি নিয়া। নয়া বাকশাল (আওমি-লিগ এবং সিপিবি-মার্কা বামদলগুলা) এবং তার পালা-কুত্তারা জামায়াতে ইসলামি-রে নিয়া কেন এতো কনসার্নড থাকে, কোনকিছু হইলেই কেন জামাত-জুজু নিয়া ঝাপায়া পড়ে? এইটারে বুঝতে পারবেন একটা উপমার ভিতর দিয়া।

হিটলার তো ইহুদিদেরকে দেখতে পারতো না, হাজার হাজার ইহুদি হত্যা করছিল; কিন্তু শুধুমাত্র ইহুদিদেরকে খুন করার লাইগা কি সে সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড-ওয়ার বাঁধাইছিল? এইটা অবশ্যই একটা ওয়ান অফ দ্য এজেন্ডা ছিল তার, কিন্তু এর লাইগা তার ইউরোপ আক্রমণ করার দরকার ছিল না। এমনকি ইহুদিরা নির্যাতিত হইছিল বইলাই কোন বুঝদার মানুশ এখনকার ইসরাইল-রে তো সার্পোট করতে পারে না!

তো, নয়া বাকশালিরা জামায়েত ইসলামি-রে ইহুদিদের মতো ইউজ করতেছে এখনকার বাংলাদেশে। তাদের নেতা-কর্মিদেরদের খুন করছে, গুম করছে, এখনো সোশালি আউটকাস্ট করার ট্রাই কইরা যাইতেছে। নাৎসি জার্মানিতে যেইরকম কাউরে ইহুদি বইলা প্রমাণ করা গেলেই জেলে ভইরা ফেলা যাইতো, আজকে বাংলাদেশে কাউরে জামাত-শিবির নাম দিতে পারলেই জেল-হাজতে ঢুকায়া দেয়া যায়।
(এই ভিক্টিমাইজেশনের সবচে বড় দায় পিআলো এবং ডিস্টারের…) বুয়েটের আবির-কেও খুন করা হইছিল একই কায়দায়।

সেকেন্ড ঘটনা হইতেছে, জামায়াতে ইসলামি’র টুটি চাইপা ধইরা রাখছে নয়া বাকশাল; গত দুই টার্মের জাতীয় পার্টির মতো। জামাত-রে যেমনে নাচায় অমনেই নাচবে; যার ফলে জামাত-রে দিয়া “প্রধান বিরোধীদল” বানানোর পায়তারা অরা করবে। জাতীয় পার্টি, জাসদ, সিপিবি-রে দিয়া আর হবে না, উনাদের যৌবন শেষ, উনাদের খেমটা নাচ পাবলিক আর খাবে না! এই কারণে জামাত-রে মঞ্চে নিয়া আসার সব্বোর্চ ট্রাই বাকশালিরা কইরা যাবে।

থার্ড এবং ইম্পর্টেন্ট ঘটনা হইতেছে, এই অবৈধ-সরকার সবসময় দুইটা বড়ি বেচার ট্রাই করবে – একটা হইতেছে ইসলাম, আরেকটা হইতেছে নারীবাদ। মানে, এইগুলা কোন ইস্যু-না না, বরং এইগুলা ইস্যু হিসাবে অনেক একসাইটিং, এনগেইজিং এবং সবচে জরুরি ব্যাপার হইতেছে এইগুলা নিয়া আলাপ করলে জুলুমের জায়গাটা নিয়া কোন কোশ্চেন না করলেও হয়। যার ফলে, ইসলাম ভার্সেস সেকুলার এবং জামায়েতে ইসলামি সবসময় বাকশালি নিউজ-মিডিয়ার এবং সোশাল-বটদের প্রায়োরিটি লিস্টে থাকতে থাকবে।

জামাত-শিবির যদি টপিক হিসাবে সেন্টার-পয়েন্টে থাকে, তাইলে ইলেকশন ও ডেমোক্রেসির আলাপটারে একটু সাইড-লাইনে ঠেইলা দেয়াটা সহজ হয়, আলাপটারে কিছুটা হইলেও ডিবেটেবল কইরা তোলা যায় তখন। মোটাদাগে, এখনকার পলিটিকাল কনটেক্সটে জামাত-শিবির নিয়া আলাপ করার এইটাই সবচে বড় সিগনিফিকেন্স। এর বাইরে, বাদবাকি আরো অনেক আলাপ তো আছেই।

২৩.০৯.২৩

বাংলাদেশের পলিটিকাল অবস্থা একটা সেন্ট্রাল কোশ্চেনের দিকে আগাইতেছে – আওমি-বাকশালি সরকারের পতন কি হবে, বিএনপির আন্দোলন কি সফল হবে? নাকি এই অবৈধ-সরকার আবারো একটা লোক-দেখানি ইলেকশন কইরা পার পাইয়া যাবে?

মানে, দুইটার একটা তো হবেই…

তবে এইখানে থার্ড আরেকটা অপশনের কথা মনেহয় আমার, সেইটা হইতেছে আওমি-লিগ নিজে নিজে পইচা মরবে।

একটা ইকনোমিক কল্পাসের খুব কাছাকাছি তো আছি আমরা। এমনকি ইলেকশনের আগেও ইকনোমিক কল্পাসের কারণে ‘জরুরি অবস্থা’ও জারি করা হইতে পারে। ইলেকশন হইলেও এরপরে ইকনোমিক কারণে দিশা-হারা হইয়া নিজেদের পলিটিকাল কল্পাস ডাইকা নিয়া আসবে অবৈধ সরকার।

‘সাম্প্রদায়িক হামলা’ ও ‘জঙ্গি-নাটকের’ চেষ্টা তো চালায়া যাইতেছে অনেকদিন ধইরা, কিন্তু অইভাবে ক্লিক করতেছে না আর।

আরেকটা ১/১১’র জন্যও লোক খুঁইজা পাইতেছে না।

খালেদা জিয়া মারা গেলে বিএনপি’র নেতাদের লগে আঁতাত করার চান্সও কমতেছে দিন কে দিন।

মানে, আওমি-লিগের বাঁচার কোন আশা নাই, কিন্তু মরার কোন রাস্তাও খুঁইজা পাইতেছে না আসলে…

সমস্যাটা ঠিক এইটা না যে, বিএনপি’র আন্দোলন সফল হইতেছে-না না; (সেইটা তো আছেই) বরং আমাদের আমলা-মিলিটারি-পুলিশ-মিডিয়া-শিক্ষিতসমাজ ‘হঠাৎ’ কইরা কেমনে বিএনপি’রে মাইনা নিবে – সেই জায়গাটাতে মেন্টালি প্রিপেয়ারড হইতে পারতেছে না। যেই পরিমাণ অন্যায় তারা করছে, সেই ডর-ভয় থিকা তারা বাইর হইতে পারতেছে না আসলে। আমার ধারণা, সমস্যাটা সৌললি এই জায়গাটায়।

২৪.০৯.২৩

বিএনপি’র প্রতিদ্বন্দ্বী আওমি-লিগ না এখন। আওমি-লিগ সার্পোট করে – এইরকমের কুলাঙ্গার এখন কমই আছে। যা আছে, সেইটা হইতেছে বিএনপি-বিরোধিতা। আর এই বিএনপি’র বিরোধিতাটা করতেছে সরকারি আমলা, মিলিটারি, পুলিশ, মিডিয়া আর শিক্ষিত-দালালরা। নয়া বাকশালের অবৈধ সরকার কায়েম কইরা রাখছে এই নন-পলিটিকাল ফোর্সগুলাই।

এদেরকে দলে ভিড়াইতে গেলে আরো বিপদেই পড়বে বিএনপি। একটা ‘সাধারণ ক্ষমার’ ঘোষণা দিয়া তাদেরকে নিউট্রালাইজ করাটাই বেটার অপশন মেবি।

সিলি একটা উদাহারণ দিয়াই বলি। যারা নাইটিইসের কিড এবং শাহরুখ খানের ফ্যান, তারা ডিডিএলজে’র সিন’টা মনে করতে পারবেন। শাহরুখ খান কাজলের যাওয়ার দিকে তাকায় থাকে আর ভাবে যে, যদি কাজল ফিরা তাকায়, তাইলে ধইরা নিতে হবে যে, শে প্রেমে পড়ছে! মানে, অইটা সিম্বলিক একটা ঘটনা। একটা ইশারা। তো, এইরকম কনক্লুসিভ জিনিস না হইলেও অনেককিছু দিয়া অনেক কিছু টের পাওয়া যায়। ধইরা নেয়া যায় যে, সে এইটা দিয়া অইটা মিন করতেছে, এইরকমের কিছু।

এইটা যে খালি পারসোনাল লেভেলে হয়, তা না; সোশাল, কালচারাল ও পলিটিকাল জায়গাগুলাতেও এইরকম সিম্বলিক ঘটনাগুলা ঘটে। বাংলাদেশে এখনকার পলিটিকাল কনটেক্সটে, ডেমোক্রেসি আছে কি নাই এইরকম জায়গাতে একটা সিম্বলিক ঘটনা হইতেছে খালেদা জিয়ার মুক্তি।

মানে, খালেদা জিয়া মুক্তি খালি উনার পারসোনাল মুক্তি না, বাংলাদেশের ডেমোক্রেসির সাথে রিলেটেড একটা ঘটনা। খালেদা জিয়া হইতেছেন বাংলাদেশে ডেমোক্রেসির সিম্বল। যেইদিন উনারে মুক্ত করতে পারবে এই দেশের মানুশ, সেইদিন ডেমোক্রেসিরও শুরু হবে। উনার মৃত্যু মানে বাংলাদেশে ডেমোক্রেসির মারা যাওয়া। এখন জান যায় যায় অবস্থায় আছে, যে কোন সময়েই মারা যাইতে পারে আসলে।

বাংলা-ভাষা নিয়া এই কথা খুব স্ট্রংগলিই চালু আছে যে, বিফোর ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ বাংলায় ‘গদ্য ভাষা’ বইলা তেমন কিছু ছিল না। এমনকি এই এক্সটেন্ড পর্যন্তও কল্পনা করা যাইতে পারে যে, কেউ যেন বাংলা-ভাষায় কথা কইতো না, খালি কবিতার ছন্দে গান-ই গাইতো খালি! :p

অথচ ঘটনা ছিল হইতেছে যে, সাহিত্যের ফর্ম বলতে ছিল শুধু কবিতা; গদ্য সাহিত্যের ফর্ম হিসাবে একসেপ্টেড ছিল না। এমনকি ৫০/৬০ বছর আগেও তো ছন্দ না মাইনা কবিতা লেখলে সেইটারে কবিতা বলা যাইতো না; এখনো গদ্য-ছন্দ বইলা আলাদা কেটাগরি করা লাগে। মানে, সাহিত্যের ফর্মগুলারেই ভাষা বইলা মিস-রিড কইরা আসতেছি আমরা। গদ্য জিনিসটা অনেক পরে সাহিতের ফর্ম হিসাবে একসেপ্টেড হইছে বইলা আমরা মনে করতে থাকি যে, গদ্য-ভাষা বইলা কোন জিনিস ছিল না।

আবদুল করিম (সাহিত্য-বিশারদ) এই জায়গাতে ইন্টারভেইন করছেন। উনি খালি ‘পুঁথি সংগ্রহ’-ই করেন নাই, এইরকম একটা দলিলও খুঁইজা পাইছিলেন বাংলা ১৩১৩ সনে (ইংরেজি ১৯০৬), যেইটা আনুমানিক ১৭৭৮ সালের। এখন অইটা তো বাংলা-ভাষা, এবং গদ্য; সাহিত্য করা হয় নাই বইলা অইটা ছিল না – তা তো না!

আরো দুইটা উদাহারণ দেখেন –

(১৬৭২)

“শ্রীজসোমাধব ঠাকুর কুমড়াল গ্রামে দেবালয়ত আছিলা। রামসর্মা ও গয়রহ সেবকেরা আপনার ২ ওয়াদা মাফিক সেবা করিতেছিল। রাত্রদিন চৌকী দিতেছিল। শ্রী রামজীবন মৌলিক সেবার সরবরাহ পুরুসানুক্রমে করিতেছেন। ইহার মধ্যে পরগণা পরগণাতে দেওতা ও মুরূত তোড়িবার আহাদে…… থাকিয়া আর আর পরগণাতে দেওতা ও মুরূত তোড়িতে আসিল । ……. তাহার পর ২৭ মহরম মাহে ২৮ জৈষ্ঠ ঠাকুর দেখিবার প্রাতেঃকালে সকল লোক গেল…..।

—শ্ৰীমনোমোহন ঘোষের ‘বাংলা গদ্যের চার যুগ’ ( ১১ পৃঃ)

(১৭৮৬)

“শ্রীযুক্ত ওলন্দেজ কোম্পানীতে আড়ঙ্গ বিরভূমের গঞ্জে খরিদের দাঁদ আমি লইয়া ঢাকা আড়ঙ্গ চালানী করিয়াছি আপরেল যাহাতে এবং মোকাম মজকুরের গোমস্তা কাপড় খরিদ করিতেছিল এবং কাপড় কথক ২ আমদানী হইয়াছে এবং হইতেছিল দাস্ত কথক ২ তৈয়ার হইয়াছে এবং মবলক কাপড় ধোবার হাতে দাশতর কারণ রহিয়াছে তাহাতে সংগ্ৰীতি মেঃ গেল সাহেবের তরফ পেয়াদা আসিয়া খামখা জবরদস্তী ও মারপিট করিয়া ঘাট হইতে ধোবা লোককে ধরিয়া লইয়া গেল আমার তরফ হইতে গোমস্তা পেয়াদা যাইয়া সাহেব মজকুরকে হাজির করিলো তাহা সাহেব গৌর না করিয়া আমার লোককে হাকাইয়া দিলেক এবং কহিলেক তোমরা আইয়াছ সাজাই দিব আমার কমবেষ ৪০০০ চারি হাজার থান কাপড় ধোবার ঘাটে দাস্ত বেগর পচিতে লাগিল বহা সেওয়ায় কোরা কাপড় কাচীতে তইয়ার অতএব আরজ ইহার তদারক মেহেরবাণী করিয়া করিতে হুকুম হয়—“

(ওলন্দাজ কোম্পানীর ডিরেক্টরের কাছে লেখা হরিমোহন বর্মার আরজি)

২.
ঘটনা হইতেছে, এই উদাহারণগুলা নাই না, বা অনেক কষ্ট কইরা খুঁইজা বাইর করতে হবে – পুরাপুরি এইরকমও না ঘটনাটা। সাহিত্যের বাইরে নানান কাজে-কামে লেখা তো লাগতো মানুশের; অই জিনিসগুলাও ভাষা। রেফারেন্স হিসাবে শুধুমাত্র সাহিত্য-রে আমলে নিলে এইসব জিনিস আমরা দেখতে পাবো না।

আর আমরা দেখতে পাইতেছি না বইলাই জিনিসগুলা নাই না।

৩.
আবদুল করিমের লগে মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌’র ইন্টেলেকচুয়াল জার্নিটা যদি কম্পেয়ার করেন তাইলে দেখতে পাইবেন, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌’র কন্ট্রিবিউশন ছিল রেফারেন্সগুলারে ক্রিটিকালি এগজামিন করার জায়গাটাতে; হিস্ট্রিকালি যেই রেফারেন্সগুলা আছে, সেইগুলারে উনি খুব বেশি কোশ্চেন করেন নাই। এই জায়গাটাতে আবদুল করিম এগজিসটিং রেফারেন্সগুলারে মান্য বা অমান্য করেন নাই, বরং নতুন রেফারেন্সের খোঁজ করছেন, এবং দেখাইছেন যে, যেই জায়গাগুলাতে আমাদের খোঁজ-খবর করা দরকার সেই জায়গাগুলারে আমরা এভয়েড করে যাইতেছি।

আনফরচুনেটলি, আজকে একশ বছর পরেও এই জায়গাগুলা খুব একটা চেইঞ্জ হয় নাই। যার ফলে আবদুল করিমের ফোকাসের জায়গাগুলারে আরেকবার খেয়াল করা দরকার আমাদের।

২৬.০৯.২৩

নয়া বাকশালিদের চিনবেন ৪টা জিনিস দিয়া – বঙ্গবন্ধু-পূজা, সব-দোষ-পাবলিকের, উন্নয়ন-বলদ আর গণতন্ত্র তো ভালো না! 🙂

২৭.০৯.২৩

ঘটনা এইটা না যে, শাহরুখ খানের মুভি বাংলাদেশে ১ মিলিয়ন ডলার বিজনেস করছে, বরং বাংলাদেশের মানুশ সিনেমা দেখার জন্য মাসে ২০০-৪০০ কোটি টাকা খরচ করতে রাজি আছে। আর করতেছেও।

কিন্তু বাংলাদেশে ‘ভালো-সিনেমা’ বানানো হইতেছে-না না, এইটারে সমস্যা হিসাবে আইডেন্টিফাই করাটা ফেইক একটা ঘটনা। বাংলাদেশের অডিয়েন্সের জন্য সিনেমা বানানো হইতেছে না, যার ফলে তার ক্লোজেস্ট কালচার-রে কনজিউম করতে হইতেছে। আর সেকেন্ড ঘটনা হইতেছে, বাংলাদেশের সিনেমা-বিজনেস কন্ট্রোল করে ডিস্ট্রিবিউটর’রা; এরা হিস্ট্রিকালি ইমপোর্ট কইরা চলতে চায়। কারণ দেশি-সিনেমা বেচলে লাভ কম না, গুন্ডামি কইরা প্রডিউসার’রে টাকা না দিয়া প্রফিট করা যায়, কিন্তু ফুল কন্ট্রোল থাকে না। মাতব্বরি কম করা যায়। আর লাস্টলি, কালচারাল কন্সট্রাকশনের ঘটনা তো আছেই।

মানে, এইখানে এন্টারটেইনমেন্ট ইন্ড্রাষ্ট্রির বড় একটা মার্কেট আছে সবসময়। এইটা ইকনোমিক ও কালচারাল মাফিয়াদের দখলে আছে। এইটা ‘ভালো-সিনেমা’ না বানানোর সমস্যা না এতোটা।

২৯.০৯.২৩

গত একশ বছরেরও কম সময়ে বাংলাদেশে তিনটা দুর্ভিক্ষের ঘটনা ঘটছে – ১৯৪৩, ১৯৭৪ এবং এই ২০২২-২৩ এর ‘নিরব দুর্ভিক্ষ’, যেইটা আরো বাজে দিকেই যাইতেছে আসলে; যদিও এখনকার গ্লোবালাইজেশনের সময়ে ম্যাসিভ একটা লং টাইম ম্যাসিভ একটা দুর্ভিক্ষ হওয়া কঠিন। কারণ অমর্ত্য সেন দেখাইছেন যে, দুর্ভিক্ষ আসলে প্রডাকশনের সমস্যা না, সবসময় ডিস্ট্রিবিউশনের সমস্যা। কিন্তু আমি মনে একাডেমিশিয়ান হিসাবে আরেকটা কোর ফেনোমেনা’রে উনি পাশ কাটায়া গেছেন, সেইটা হইতেছে পলিটিকাল মনোপলির ঘটনা’টা।

১৯৪৩ সালে ব্রিটিশ সৈন্যদের জন্য খাদ্য মজুত করার জন্য বাংলায় দুর্ভিক্ষ হইছিল, বাজারে ধান-চাল ছিল না, সব ছিল সরকারি গুদামে। আর এই পলিটিকাল ডিসিশান-মেকিংয়ের ক্ষমতা দেশের মানুশের ছিল না, ডিসিশান ছিল ব্রিটিশ গর্ভমেন্টের। এই জায়গাটাও জরুরি। ১৯৭৪ সালেও প্রডাকশনের কোন ঘাটতি ছিল না। কিন্তু বাজার থিকা সব রেশনের চাল মজুতকারীতে গুদামে চলে গেছিল। [১৯৭৬ সালে “এক মুঠো ভাত” সিনেমা-তে এইরকম সিন আছে, মজুতদারদের চাল ধরা হইতেছে।] এইটাও পসিবল হইছিল কারণ পলিটিকাল ডিসিশান-মেকিংয়ের জায়গাটা যাদের হাতে ছিল, তারা পিপলের ধার ধারতো না। যেহেতু দেশ স্বাধীন হইছে, মজুতদারি করার ‘অধিকার’ তো তাদের ছিল! 🙂

এখনো যেই ‘নিরব দুর্ভিক্ষ’র ভিতর আমরা আছি, (এবং যেইটা আরো ভয়াবহ হয়া উঠার ভয়ের মধ্যে আমরা আছি) সেইটারও পলিটিকাল সিনারিও’টা একইরকমের। যেহেতু আমরা ‘উন্নয়ন’ করতেছি, ছোট-খাট কিছু সমস্যা হইতেই পারে! মানে, এই ডিসিশানগুলা যারা নিতেছেন তারা পিপলের ওয়াল-ফেয়ারের জায়গাটা নিয়া মোটেই কনসার্নড না। ক্ষমতা থাকলেই হইছে!

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, দুর্ভিক্ষ ডিস্ট্রিবিউশনের সমস্যা অবশ্যই, একটা পলিটিকাল এনভায়রনমেন্টও জায়গাটারে মাস্ট কইরা তোলে। বন্যা, খরা ও অন্যান্য ন্যাচারাল কারণে এখন আর দুর্ভিক্ষ না হওয়ার একটা কারণ হইতেছে, গ্লোবালি আমরা অনেক বেশি কানেক্টেড; যার ফলে এক ধরণের সার্পোট সিস্টেমের ভিতর দিয়া এফেক্ট’টা মিনিমাইজ করা যায়। কিন্তু এর বাইরে যুদ্ধ ও ডিস্ট্রিবিউশনের যেই সমস্যা সেইটা পলিটিকাল ঘটনাই আসলে।

এই জায়গাটা খেয়াল করতে পারাটা দরকার।

৩০.০৯.২৩

Joya Chatterji’র Shadows at Noon পড়তে গিয়া খেয়াল করলাম, উনার ইংরেজি তো সহজ! মানে, পড়তে খুব বেশি সমস্যা হয় না। উনি (কম্পারেটিভলি) পরিচিত সাবজেক্ট নিয়া বলছেন, পরিচিত রেফারেন্স ইউজ করছেন – এইটা তো আছেই; একই সাথে উনার প্রাইমারি ল্যাঙ্গুয়েজ যেহেতু বাংলা, এর একটা ঘটনাও থাকতে পারে মেবি।

মানে, সাউথ ইন্ডিয়ান’রা যখন ইংরেজি বলেন তখন কিন্তু টের পাওয়া যায় যে, এইটা সাউথ-ইন্ডিয়ান ইংলিশ। তো, এইটা খালি বলার ব্যাপারে না, লেখার জায়গাটাতেও এর একটা রিফ্লেকশন থাকার কথা।

কারণ, লিখিত-ভাষার একটা কোর ফিচার হইতেছে সিনট্যাক্স, বা ভাষার গঠন’টা। যিনি বাংলা-ভাষায় কথা বলেন, তিনি ইংরেজিতে লেখতে গেলে আলাদা একটা প্যাটার্ন ফলো করবেন – এইটা জরুরি না, কিন্তু কিছু ফিচার মেবি থাইকা যাওয়ার কথা। জয়া চ্যাটার্জি’র ব্যাপারে যেমন বাংলায় কথা বলার একটা টোন আমি পাইতেছি, সেইটারে ভাষার সিনট্যাক্সের কিছু ফিচার দিয়া আইডেন্টিফাই করা পসিবল।

আবার অনেকে দেখবেন, বাংলা লেখতে পারেন না তেমন! তার কারণ এইটা না যে, উনারা বাংলা-ভাষা জানেন না, বরং লিখিত-বাংলায় যেমনে সিনট্যাক্স সাজাইতে হয়, সেইটা নিয়া ইজি ফিল করেন না। আর এইটা বাংলা না লেখতে পারার সমস্যা না। বরং আমি দেখি যে, মোস্টলি লিখিত-বাংলার সমস্যা; যেইখানে সিনট্যাক্সের প্যাটার্নটা এনাফ ফেক্সিবল না।

আগে আসে চিন্তা বা ভাবনার জায়গাটা, তারপরে আসে ভাশার ব্যাপারটা। মানে, ভাষাটা চিন্তার একটা মিডিয়াম, যেই প্যাটার্নের ভিতর দিয়া তারে বলতে পারি আমরা। আর এইক্ষেত্রে ভাষা খালি কিছু শব্দ ও স্ট্রাকচারের ঘটনা না; এমন কিছু প্যাটার্নও মেবি যা এক্রস দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ সাঁতরাইয়া বেড়াইতে পারে।

Leave a Reply