নোটস: ডিসেম্বর, ২০২৩

০১.১২.২০২৩

ফিল-গুড এক্টিভিজম ৩

কিছুদিন আগে জিজেকের একটা ভিডিও দেখতে গিয়া জিনিসটা খেয়াল করতেছিলাম, একটা মাহফিলে (সেমিনারে) ওয়েস্টার্ন পিপলদের সামনে, যদিও উনি ওয়াজ (কথা-বলার) করার শুরুতেই বইলা নিছেন যে, হামাসের হামলা’রে উনি সার্পোট করেন না, এবং এরপরে বলতেছেন ইজরাইল যা করতেছে তা আরো জঘন্য, ব্লা ব্লা ব্লা… কিন্তু উনার কথা উনি শেষ করতে পারেন নাই, অডিয়েন্স থিকা উনারে কোশ্চেন করা শুরু করছে, এই কথা কেমনে বলেন আপনি! (আমাদের এইখানে যেইরকম ‘জামাত-বিএনপি’ বানায়া হাউকাউ লাগায়া দেয়া হয়…)

তো, এইরকম আমিও বইলা নিতে চাই যে, ইন এনি সেন্স ইজরাইলি হামলা ও খুনগুলারে সার্পোট করার কোন গ্রাউন্ডই নাই, এবং থাকতে পারে না। কিন্তু, মাই গড (হে খোদা না এতোটা, বরং অনেকটা জিজেকের বুলি), আজকে বাংলাদেশে “পালেস্টাইন-সংহতি” কি পারপাস সার্ভ করে আসলে? – এই জায়গাটারে যদি এড়ায়া যাই, সেইটা তো খালি একটা ইন্টেলেকচুয়াল বাটপারির ঘটনা না খালি, পালেস্টাইনের ট্রু ক’জের জায়গাটারেও শ্যালো বানায়া দেয়ার ঘটনাও একইসাথে। মানে, বাংলাদেশে থাইকা পালেস্টাইনের প্রতি সার্পোট আপনি দেখাইতে পারবেন না, বা দেখাইলেই সেইটা শ্যালো ব্যাপার হয়া যাবে – তা না; কিন্তু এইটা কি মিন করে আসলে? – সেই জায়গাটাতে কি চোখ বন্ধ কইরা রাখবো আমরা?

আমি বলতেছি না, আপনি নয়া বাকশালের এগেনেস্টে কথা কইতে গিয়া জেলে ঢুইকা যান, আপনার বাড়িতে আইসা ছাত্রলিগ যুবলিগের লোকজন লুটতরাজ করুক, রাস্তা-ঘাটে অদের মাইর-ধর খান; কিন্তু চোখের সামনে এইসব জিনিসরে ইগনোর কইরা “পালেস্টাইনের প্রতি সংহতি” পালন করতে করতে নিজেরে কি কিছুটা ডাম্ব লাগার কথা না? আবারো বলি, ডোন্ট গেট মি রং, যারা পালেস্টাইন নিয়া কনসার্ন উনাদেরকে ইমোশনালি ব্যাড ফিল করাইতে চাই না আমি। কিন্তু কেমনে পারেন উনারা! ব্যাপারটা খালি কন্ট্রাডিক্টরই না, উইয়ার্ডও না! যে, নিজের দেশের অন্যায়-অত্যাচারে আমি চোখ বন্ধ কইরা রাখতে পারি, কিন্তু আফ্রিকায় কোন শিশু মারা গেলে, তার লাইগা আমার পরাণ কান্দে! কারণ অই কান্দাটা মোর গ্লোবাল, লোকাল না এতোটা!

এখন ব্যাপারটা এইরকম না যে, মিডল-গ্রাউন্ড’টা দুনিয়াতে নাই হয়া যাইতেছে না, বরং এইটা নতুন ফর্মে এপিয়ারড হইতেছে বইলা আমি মনে করি। আপনি চুপ কইরা থাকবেন না, বরং অন্য কিছু নিয়া হাউ-কাউ করবেন, যেইটা নিয়া কথা কইলে রিস্ক কম। যেমন ধরেন, ব্রিটিশ আমলে আপনি নীরদ শ্রীচোধুরি’র মতো ফিউডালিজমের এগেনেস্টে মর্ডানিটির পক্ষ নিলেন; এইরকম, অটোক্রেসি ও ডেমোক্রেসি’র বদলে আপনি নারী-অধিকার নিয়া সরব হইলেন! জিনিসগুলা যে অ-দরকারি – তা না, বরং অনেকবেশি ক্রুশিয়ালও, কিন্তু আপনি যেইটা করতেছেন, লোকাল কনটেক্সট’টারে আমলে না নিয়া গ্লোবাল একটা পারসপেক্টিভ থিকা আলাপটা দিতেছে, এবং এইটা করতে গিয়া “জ্ঞানগত” একটা সুপিরিয়রিটিও ফিল করতে পারেন যে, আমিও “বিশ্ব মানবতার” কথা কইতেছি! বাদবাকি ছোট-খাট জিনিস নিয়া তুমরা, যারা গরিব-লোকজন আছো, তুমরা কথা বলো না কেন! 🙂

ব্যাপারটা এইরকমও না যে, আপনি যেহেতু পালেস্টাইনের পক্ষে ভোকাল আছেন আপনারে বাকশাল-বিরোধী কথাও কইতে হবে! এইটা আমার পয়েন্ট না। সবগুলা জিনিস নিয়া সবারই কনসার্ন থাকতে হবে – এইটা তো জরুরি না! বা সিলেক্টিভ হইতে পারার ব্যাপারও না। বরং একেক সময় একেকটা জিনিস নিয়া কনসার্নড হওয়াটা একটা ওয়ে-আউটের ঘটনা হয়া দাঁড়ায়। ফ্রেন্ডস সিরিজটা দেখলে এইটা টের পাইবেন। বেশিরভাগ সময়, অন্য একটা ইস্যু আইসা চোখের সামনের একটা ভিজিবল ইস্যু থিকা কারেক্টারগুলারে বাঁচায়া ফেলে; বা এটলিস্ট এই টেকনিক’টা অরা ট্রাই করে; পারুক, বা না-পারুক।

আমি জাস্ট মনে করতে চাই যে, পালেস্টাইনের প্রতি বাংলাদেশে আমাদের কনসার্নটা এইরকম কাভার-আপ না, ইস্যু ঘোরানোর একটা ইস্যু না। কিন্তু আমার মন তো খারাপ, খারাপ খারাপ জিনিস মনেহয় আর কি! আমি শিওর, যারা বাংলাদেশে পালেস্টাইনের পক্ষে ফাইট করতেছেন, তাদের মনে আমার মতো এই খারাপ-চিন্তাগুলা নাই বা থাকবে না।

০৪.১২.২০২৩

আমি ডিসাইড করছি বাংলা বানানের ব্যাপারে এখন থিকা এই কয়টা নিয়ম ফলো করবো*, যেইটা ট্রেডিশনাল বানানে ‘ভুল’। মানে, আমি কিছু বানাম-ভুল করতে চাই। এই কারণে ডিসাইড করছি যে, এই ৯টা নিয়ম ট্রাই কইরা দেখবো আগামি ছয় মাস বা এক বছর:

১. ন ণ এর জায়গায় ন
২. জ য এর জায়গায় জ
৩. ৎ এর জায়গায় ত

৪. ই ঈ এর জায়গায় ই
৫. উ ঊ এর জায়গায় উ

৬. ি ী এর জায়গায় ি
৭. ু ূ এর জায়গায় ু

৮. যুক্‌তাক্‌খর যত কম রাখা যায় (একটা নিচে আরেকটা না বসায়া, বা লগে না জড়ায়া আলাদা হরফ রাখার), তত বেটার। দেখতে একদম দরকারি না হইলে বাদ-ই দিবো।

৯. র-ফলা, য-ফলা যত কমানো যায় বেটার; এতে কইরা উচ্‌চারণ পারফেক্‌ট হয় না, বরং শিক্খিত-গিরি ফলানো হয় আসলে বেশি। [অ্যা না লেইখা আ বা এ… এইরকম]

[তো, আমিই ফার্‌সট না যে এই জিনিসগুলা টেরাই করবো। বানান নিয়া এইরকমের চেষ্‌টা মুহম্মদ শহীদুল্লাহ করছেন, রক মনু’রও একটা পরস্‌তাব আছে। আমি উনাদের এবং আরো কয়েকজনের কিছু সাজেশনরে কন্‌সিডার করতেছি। যদি দরকার পড়ে নিজেও কিছু জিনিস সাজে্‌সট করবো, এর সাথে। এইখানে শেষের চাইরটা মোটামুটি আমার সাজেশন।…]

২.
একটা এনার্কি ক্রিয়েট করার জন্য এইটা করবো – তা না, এর পিছনে কিছু রেশনাল তো আছেই আমার, অইগুলা নিয়াও কথা বলবো কিছু। (আল্‌লা চাহে তো ২০২৪ সালে “বানাম ভুল” নামে একটা বইও লেখতে চাই।) কি্ন‌তু ভাষা হইতেছে প্রাকটিসের ঘটনা, আগে লেইখা দেখি, নিজের জন্য ইজি হয় কিনা। মানে, বানান নিয়া এর আগে যত কাজ হইছে, তার সবগুলাই সাকসেসফুল না হওয়ার একটা মেজর কারণ হইতেছে আগে নিয়ম বানায়া তারপরে সেই হুকুম তামিল করার ঘটনা, উল্‌ট’টা না; যে লেইখা দেখি পুরান নিয়মগুলা রেলিভেন্‌ট কিনা বা নতুন নিয়মগুলা কোন প্রবলেম ক্রিয়েট করে কিনা। তারপরে দেখা যে, রেশনালও কিনা – মানে, এইটা সেকেন্‌ডারি ঘটনাই কিছুটা।

তো, বানানের ব্যাপারে আমার পয়েন্‌ট অফ ভিউ মেইনলি দুইটা –

১. বানান উচ্‌চারন অনুযায়ি হওয়াটা বেটার; বুৎপত্তি [বুতপত্‌তি] বা কোন শব্‌দ কোন জায়গা থিকা আসছে সেই সোর্স-অনুযায়ি না

২. শব্‌দের বা বানানের আলাদা কোন মিনিং নাই, কথার মধ্যে কেমনে ইউজ করতেছি সেইটার উপরেই ডিপেন্‌ড করে মেইনলি। [একই ধরণের উচ্‌চারণ হইলেও এবং একই বানানে লেখা হইলেও মিনিং আলাদাই থাকবে। সব ভাষাতেই এইরকম আছে, এবং থাকার কথা।]

আর এর উদ্‌দেশ্য ঠিক বানান’রে সো-কল্‌ড বিজ্‌ঞানসম্‌মত করা না, বরং যতদূর সম্‌ভব অ-দরকারি জিনিসগুলারে বাদ দেয়া, বা আপডেট করা।…এখন এইগুলা তো একলার কাজ না, কিন্‌তু একইসাথে একটা ইন্‌সটিটিউশনাল বুরোক্রেসির ঘটনা বইলাও আমি মনে করি না; বরং একটা গ্রুপ অফ পিপলেরই কাজ…কিছু জিনিস ডিসাইড করতে পারলে দেখা যাবে নতুন বাংলা কি-বোর্ডই বানাইতে হইতেছে একটা।

এইটা পাবলিকলি বইলা রাখা খালি এই কারণেই না যে, এইগুলা দেখলে আমার বানাম-ভুল ধরতে আইসেন না, বরং আপনিও একটু ভাইবা দেখতে পারেন তো, ঊ, ঈ, ণ, য, ৎ, ী, ূ এর দরকার কতোটা? এইগুলা না থাকলে লেখতে ও পড়তে কোন সমস্যা হয় কিনা…

৩.
বিসমিল্‌লাহ!

#বানামভুল

০৫.১২.২০২৩

ঢাকা শহরের বইয়ের দোকান
মোটিভেশনাল বইয়ের বেচা-কেনাই বেশি; আর বিজনেস করার জন্য যেই জিনিস বেশি বেচা হয় অইগুলাই হাইলাইট করেন উনারা। এমনকি ‘সরকার-বিরোধি’ 🙂 বইও বেচেন না এখন। মানে, এই যে বাছাই’টা, এইটা উনাদেরকে ঠিকঠাক-মতো বিজনেস চালাইতে হেল্প করতেছে কিনা জানি না, কিন্তু মোরালি অবশ্যই উইক কইরা তুলছে। গত ১০-১২ বছরে উনাদের বেচা-বিক্রি যেমন বাড়ছে, উনাদের ইনফ্রাস্ট্রাকচারও মেবি বড় হইছে, এই কারনে হয়তো বইয়ের পাশপাশি চাল-ডাল বেচা শুরু করছেন। তবে আই হোপ, বই-বেচাটা তেমন একটা প্রফিটেবল না বইলা জিনিসটা বন্ধ কইরা দিবেন না।
বাজারে রকমারি’র বাইরেও আরো কয়েকটা বই-বেচার সাইট আছে, কিন্তু কোনটাই রকমারি’র কম্পিটিটর হয়া উঠতে পারে নাই, মেইনলি বই সোর্সিং ও ডেলিভারি-এফেশিয়েন্সির জন্যই। তবে কিছু ফেইসবুক পেইজ তিনটা নিশ কেটাগরি-তে ভালো পারফর্ম করতেছে – অরিজিনাল-প্রিন্টের ইংলিশ বই (ইমপোর্টেট), পুরান বই (যেইগুলার কপি বাজারে নাই) এবং প্রিমিয়াম-কোয়ালিটি বই (পাইরেটেড বই)। এই জায়গাগুলা এখনো এতো বড় বাজার হয়া উঠতে পারে নাই আসলে। এরা জাস্ট ফিজিকাল মার্কেট’টারে অনলাইন স্পেইসে শিফট করতেছে, নতুন কিছু এড করতে পারতেছে না এখনো।

বাংলা-বাজার, ইসলামি বই, সরকারি বই…
তবে বাংলাদেশের বড় বইয়ের বাজার তো হইতেছে বাংলা-বাজার। অনেক বই বেচা-কেনা হয় এইখানে। সারা বাংলাদেশ থিকা বইয়ের দোকানগুলা এইখানে বই কিনতে আসে। কি বই কিনেন উনারা? মেইনলি স্কুল-কলেজ-মাদরাসার বই, গাইড-বই, নোট-বই; গল্পের বই বা ‘আউট-বই’ যে বেচা-কেনা হয় না – তা না, কিন্তু অইটা পারসেন্টেইজ কম-ই হওয়ার কথা। তারপরেও সংখ্যায় সেইটা কম না মেবি। বাংলাদেশের সব পাবলিশারদেরই শো-রুম, দোকান আছে বাংলা-বাজারে। পাইকারি বাজারের কারনেই এইখানে প্রেজেন্সটা জরুরি। এবং যেইটা অনুচ্চারিত থাকে, সেইটা হইতেছে সরকারি বই সাপ্লাইয়ের কাজ ধরার জন্য। এখন প্রাইমারি’র বই-পত্র ইন্ডিয়া থিকা ছাপানোর জন্য অইটার ভাগ-জোক মনেহয় কম-ই পাওয়া যায়। তারপরও বাংলাদেশের বইয়ের বাজারের সিন্ডিকেট’টা এইখানেই আর কি।…
আরেকটা কথা খুব চালু আছে যে, ইসলামি-বইয়ের মার্কেট এখন অনেক বড়, অনেক ‘ইসলামি বই’ ছাপা হয়, কেনা-বেচা হয়। কিন্তু আমার ধারনা, এর লগে শিক্ষা-ব্যবস্থার রিলেশনটা অনেক বেশি; মানে, এইটা ধইরা নেয়াটা বেটার যে, বাংলাদেশে স্টুডেন্টরাই বই পড়ে; বাংলা-মিডিয়ামে পাঠ্য-পুস্তক যেইরকম ফিক্সড করা এবং সরকারি-ভাবে ছাপা হয়, মাদরাসা মিডিয়ামে সেইটা অনেক বেশি রিলাক্সড (এবং এইটা ভালো), যার ফলে একটা সাবজেক্টে অনেকগুলা বই পাওয়া যায়। বাংলা-মিডিয়ামে সরকারের ফিক্সড কইরা দেয়া টেক্সট-বুক পড়লেই হয়, এবং এমনকি রেফারেন্স-বই খালি নাই-ই না, যেন থাকতে না পারে এই জিনিসটারেও পুলিশি-কায়দায় নিশ্চিত করা হয়। অথচ উচিত ছিল একটা সাবজেক্টের জন্য কয়েকটা রেফারেন্স বই থাকা, একটা রিডিং-লিস্ট থাকা, তাইলে খালি রিডারদের জন্যই না পাবলিশার, রাইটাদের জন্য একটা মার্কেট ওপেন হইতো। যা-ই হোক…

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, বাংলাদেশে বইয়ের পাঠক নাই না, পড়ার মতো বই-ও আসলে নাই খুব একটা। আর এই না-থাকার সিস্টেমটা খুবই স্ট্রং, মোটামুটি সব দিক দিয়াই। আর বইয়ের দোকানে গেলেই সেইটা আরো ভালোভাবে টের পাওয়া যায় একভাবে।

০৬.১২.২০২৩

বাইসন-শিকারি

ব্যাপারটা এইরকম না যে, (বাংলাদেশে) ফেইসবুকে পলিটিকাল কথা বলা নিষেধ, রিচ-টিচের কিছু ব্যাপার তো আছেই, বরং মেইন ঘটনা হইতেছে আপনি আলাদা হয়া যাবেন, ‘সামাজিক প্রানি’ হিসাবে থাকতে পারবেন না, দল থিকা হারায়া যাবেন, ‘একলা’ হয়া যাবেন।

অনেক ডকুমেনটারিতে পাইবেন এইরকম ভিজুয়াল; লেখাপত্রে এবং সিনেমাতেও; যে, ছোট ছোট লিলিপুটের মতো মানুশেরা কিভাবে বিশাল বিশাল মেমথ, বাইসন শিকার করতেছে। যেইখানে ১০-১২ জন মানুশ মিইলাও একটা বাইসনরে মারাটা টাফ, সেইখানে শ’য়ে শ’য়ে বাইসন শিকার করার একটা টেকনিক ছিল; সেইটা হইতেছে একটা ডিরেকশনের দিকে তাদেরকে নিয়া যাওয়া; পিছন থিকা ধাওয়া দিতে থাকা নানান ধরণের কায়দা-কৌশল কইরা, কেউ সাইডে সইরা যাইতে নিলে তারে খোঁচা দিয়া ডর-ভয় দেখায়া আবার পালের ভিতরে ঢুকায়া দেয়া – এইভাবে পুরা দলটারে একটা খাদের কিনারে নিয়া গিয়া লাফ দেওয়াইয়া মাইরা ফেলা…এইটা হইতেছে টেকনিকটা। এইভাবে একটা দুইটা না, এক পাল বাইসন শিকার করতো মানুশেরা।

ফেইসবুকেও আমি বলতে চাইতেছি এই রকমের টেকনিকটা পাইবেন। ধরেন, আপনি ***পি নাম লেখলেই আপনার পোসট হাওয়া হয়া যাবে না কিনতু আপনি পালের/দলের লগে থাকতে পারবেন না। আপনি সেমি-সেলিব্রেটি হইলে কিছুটা অডিয়েনস পাইবেন হয়তো, কিনতু তা-ও বেশি-সময় সারভাইব করতে পারবেন না; নিজের আইডি’র ফলোয়ারদেরকে ধইরা রাখার জন্য হইলেও কি্‌লক-বেইজড পোসট দেয়ার জন্য উপায় বাইর কইরা নিতে হবে আপনারে। ফেইসবুকে থাকতে হইলে এইটাই করতে হবে – এইটা জরুরি না, কিনতু আপনার রিচ ও অডিয়েনস বাড়তে থাকবে না আসলে।

তো, ঘটনা হইতেছে, মানুশ তো বাইসন না; চিনতা-ভাবনা করারও দরকার নাই; একটু খেয়াল করলেই টের পাইবেন যে, বাংলাদেশের পলিটিকাল সিচুয়েশন নিয়া কথা কইতে পারতেছেন না আর ফেইসবুকে। আর এইটা ফেইসবুক বনধ কইরা দেয় নাই, বরং বাইসন-শিকারের মতো পাল থিকা সরতে দিতে চাইতেছে না। এই আর কি…

[আরেকটা জিনিস খেয়াল কইরেন, এই পোসটে কোন ঈ ঊ, ৎ, ণ, ী, ূ লেখাই লাগে নাই আমার। যুকতাকখরও নাই! খেয়াল করছেন কি? মানে, এইগুলা (গু গুলারেও গ্‌ু করা দরকার, কি-বোর্ডে এই অপশন নাই…) হুদাই আছে বাংলা-ভাষায়, খালি বানাম-ভুল প্রানিদের ইগো সেটিসফাই করার লাইগাই।]

০৭.১২.২০২৩

#অআকখ

মিডিয়া-জম্‌বি বইলা আমি কি জিনিস বুঝাই?

মিডিয়া-জম্‌বি বইলা আমি পুরানা-ঘরানার ‘শিকখিত’ মানুশদের অই টেনডেনসি’টারেই মিন করি, যারা মনে করেন যে, টিভি’তে যা দেখানো হইতেছে, নিউজপেপারে যা বলা হইতেছে, বইয়ে যা লেখা আছে অইগুলাই সত্যি! বা এইগুলাই আমাদের জানার দরকার, এইগুলা নিয়াই চিন্‌তিত হওয়া দরকার। এমনকি যতকখ্‌ন পরযন্‌ত কোন জিনিস টিভি-পত্রিকাতে আসতেছে না, সেইটা তো বাস্‌তবে ঘটতেছে না মনেহয় – এইরকম ক্রিটিকাল হইতে পারা! বা এতোটা ইমপরটেনট তো না আসলে! যে কোনভাবে মিডিয়া’র আলো’তে আলোকিত হইতে পারাটা হইতেছে ঘটনা।…

এখন ‘অশিকখিত’ মানুশ-জন যে এইরকম করেন না – তা না; ফেইসবুকের নিউজফিডে কোনকিছু দেইখা বিলিভ কইরা ফেলার হাসি-তামাশা তো অনেক দেখবেন, এবং সত্যি সত্যি এইগুলা ঘটেও; কিনতু একবার দুইবার ধরা খাওয়ার পরে অনেকে ধরতে পারলেও, এইভাবে অশিকখিত মানুশ-জন “মিডিয়া-জম্‌বি” ডিজিজের রোগি হইতে পারেন; যে যেই জিনিস ফেইসবুকে আসছে – সেইটার কিছু না কিছু তো মনেহয় সত্যি! তবে অনেকে এইটাও বুঝতে পারার কথা যে, এইখানে ফেইক-জিনিস রিয়েলের চে বেশি চলে না, বরং এইটাই ঘটনা এইখানে! রিয়েল ও ফেইকের বেসিসে এইটা কাজ করে না, কাজ করে লাইক-লাভ-হাহা’র রিএকশনের বেসিসে।

মানে, অশিকখিত লোকজন মিডিয়া-জম্‌বি হইতে পারেন না – তা না, বরং উনারা শিকখিত-লোকজনের যেই ডিজিজ, সেইটা দিয়া এফেকটেড হইতে পারেন।

উনারাও মিডিয়াম’রে বিলিভ করতে পারেন, কনটেনটের চাইতে বেশি।

কি সুনদর কইরা কথা বলতেছে লোকটা, নিশ্‌চয় সত্যি কথা বলতেছে! এইরকম।

তো, অশিকখিত লোকজনের লগে তো সিরিয়াস ইসু নিয়া কথা-কওয়া আমরা, শিকখিত-লোকজন তো এড়ায়াই চলি কিছুটা; যে, কইলে তো কিছু বুঝবো না! কিনতু এইরকম মিডিয়া-জম্‌বি শিকখিত লোকজনরে আমি আসলে ডরাই। কারন উনারা জানেন যে, আমি তো কিছু জানি না! কারন কেউ তো আমার নাম নেয় না, আমার লেখা তো নিউজপেপারে ছাপা হয় না, টিভিতে তো আমার চেহারা দেখা যায় না, আমি সত্যি কথা কেমনে কইতে পারি! অই অথরিটি কি আমার বা আপনার আছে নাকি! এই কারণে আমি বরং প্রেফার করি যে এই পজিশনটা যে, আই ডোনট এগজিস্‌ট।

মানে, আপনি যদি নিউজপেপারে না থাকেন, টিভি’তে যদি আপনারে না দেখা যায়, ফেইসবুকে, ইউটিউবেও যদি আপনি সেমি-সেলিব্রেটি না হন, আপনি কি একজন মানুশ? – নিজেরেই জিগায়া দেখেন! এইটা হইতেছে মিডিয়া-জম্‌বি দুনিয়া।

এইরকম একসটি্‌ম না হইলেও, কিছু রেফারেনস পয়েনট তো লাগেই আমাদের; কিনতু ঘটনাটা খালি রেফারেনসের না, রেফারেনস হিসাবে কোন মিডিয়ামরে আলটিমেট ধইরা নেয়ার বিপদটা টের না পাওয়ারই আসলে।

আমি খালি এই দোয়াটাই করতে পারি, হে আমার আন-নোন রিডার, আপনি মিডিয়া-জম্‌বি হইতে রাজি হইয়েন না।

০৯.১২.২০২৩

বাকশালি-নেরেটরদের সবচে বড় সাকসেস হইতেছে পলিটিকসরে কনসপিরেসি-তে রিডিউস করতে পারা। এইটা খালি গত ১০-১৫ বছরের ঘটনা না, বাংলাদেশের শুরু থিকাই এই কাজ কইরা আসতেছেন তারা। আর বিএনপি’র প্রোপাগানডা-একটিভিসটরাও এই ফানদে পাড়া দিছেন, আর এইটাও ২০১২-১৪ সাল থিকাই হয়া আসতেছে। (নিডেলস টু সে, বাংলাদেশে পলিটিকস করেন একদল রিয়াটার আমলা, মিলিটারি আর বিজনেস-পারসনরাই, উনাদের চিনতা-ভাবনা এনটি-পিপলই হওয়ার কথা মোসটলি।)

এখন এইরকম একটা ভাইবা চলতেছে যে, আওমি-লিগ যদি ইলেকশনটা কইরা ফেলতে পারে – তাইলেই তো সাকসেস! আর বিএনপি’র দিক থিকা কেইলমটা হইতেছে যে, ডামি-ইলেকশনের নাম দিয়া বিএনপি’রে তো ভাঙতে পারে নাই! সো, এইটা তার বড় সাকসেস!

খেয়াল কইরা দেখবেন, আওমি-লিগের মেইন প্রপাগানডা হইতেছে, ভয় নাই, ইনডিয়া আমাদের লগে আছে (চিন এবং রাশিয়াও)! বিএনপি’রও সবচে বড় আশা হইতেছে, ওয়েট করেন, আম্রিকা সেংশন দিতেছে! মানে, এটলিস্‌ট এইভাবে জিনিসটারে ফোকাস করার একটা জায়গা আছে। দলে দলে নেতারা যেইভাবে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হইলেন, সেইখানে এইরকমের একটা একসপেকটেশন তো আছে যে, সব নেতাদের জেলে নিয়া গেলে বিদেশিরা আওমি-লিগরে চাপ দিবে, এতে কইরা বাকশালি-সরকার বে-সামাল হয়া পড়বে। এইটা খালি পলিটিকাল একসপেকটেশনই না, (ঘটুক বা না-ঘটুক) কনসপিরেসি’তে বিলিভ করার ঘটনাও।

যদিও ২০১৪ সালে একই ঘটনা ঘটছিল; যখন বিদেশি এমবেসেডার’রা ও ইউএন’র লোকজন ‘সমঝোতা’ কইরা দিছিল যে, এই ইলেকশন বাতিল হবে; কিনতু আদতে তা হয় নাই! আমি মনে করি কনসপিরেসিতে বিলিভ করার কারনেই এইটা ঘটছিল, এবং ঘটতেছে।

২.
দুসরা আরেকটা ঘটনা হইতেছে, গণ-অভুত্‌ধানের যেই একসপেকটেশনটা। এইটা আর দুনিয়াতে ঘটবে না – এইটা বলাটা বেশি মনে হইলেও এর চান্‌স খালি কম না, ঘটা’টা ঠিক উচিতও না। এইটা বাংলাদেশে টের পাইবেন নবাব সিরাজদ্দৌলা’র ঘটনা’টা দিয়া।

অনেকে এখনো অবাক হন যে, ইংরেজরা যে সিরাজদ্দৌলার নবাবি নিয়া নিলো, বাংলার মানুশ কোন বাঁধা দিলো না! আমার কাছে বরং এই একসপেকটেশনটাই আজিব লাগে যে, মানুশের কি ঠেকা পড়ছিল এইটা করার! আগে পুরান নবাব’রে খাজনা দেয়া লাগতো, এখন নতুন নবাব’রে খাজনা দেয়া লাগবে – এই তো ডিফরেন্‌সটা! এইটা নিয়া পিপল কেন ওরিড হবে! বরং এত বড় নবাবের পতনে হাসি-তামাশাই করছে কিছুটা, যেইটা খান আতাউর রহমানের সিরাজদ্দৌলা (১৯৬৭) সিনেমাতে পাইবেন। ঘটনা হইতেছে, দুই রাজার মধ্যে ফাইট হইতেছে, যে জিতবে তার লগেই আমরা থাকবো নে। যেইটা পরে নেশনালিজমের সময়ে আইসা ব্রেক হইছে; যে অরা ইংরেজি এবং আমরা বাঙালি! এর আগে পর্যন্‌ত বেইজলাইনটা তো হইছে – নবাবি কে করবে? অইখানে পিপলের কোন সেটইক তো নাই!

এবং এখন আমরা আবার কাছাকাছি রকমের সিচুয়েশনে আইসা হাজির হইছি যেইখানে আমরা ধইরা নিতে পারি যে, যে কোন গভরমেনটের কাজ হইতেছে লুটপাট করা, পাবলিকের উপরে পাওয়ার শো করা, নিজেদের ইনটারেসট দেখা, দেশের মানুশের না। (বাংলাদেশে এখনকার রিজিমের বেপারে সবচে বড় কমপেইলনটা হইতেছে যে, এরা বিদেশে টাকা পাচার করতেছে; যার ফলে নেশনালিসিটক একটা ইমোশনের জায়গা এখনো রেলিভেনট থাকতেছে।) গভরমেনটের ইসটাকচারের কারণেই এইটা পসিবল না! রাসট্রের লিবারাল ফাংশনগুলা (সরকারি অফিস, আইন-আদালত, পলিটিকাল দল, নিউজপেপার…) আর কাজ করতেছে না। করবো – এই একসপেকটশনও কইমা আসতেছে।

তবে এইটার কারনে আরেকটা রেভিউলেশনের সামনাসামনি আইসা আমরা দাঁড়াইতেছি না! যেহেতু সামনে কিছু নাই, পিছনের দিকে হাঁটার ঘটনাই ঘটতেছে বেশিরভাগ কেইসে। রাজা’র মতো কিছু অথরেটেটিভ শাসনই পাইতেছি আমরা। আমি বলতে চাইতেছি, ফিউচার’রে কনসট্রাকট করতে না-পারার একটা ইনটেলেকচুয়াল ফেইলওর এইখানে আছে। অথরেটেটিভ গভরমেনটের জায়গায় লিবারাল গভরমেনট আসলে সেইটা পিপলস-রেজিমে পরিণত হবে – এই আশা নাই না, কম; যার ফলে পিপল আপ-রাইজিংয়ের ঘটনা দুনিয়াতেই কমতে থাকবে বইলা আমি মনে করি; যতদিন না কোন নতুন হোপ আমরা এই জায়গাতে নিয়া আসতে পারবো। তবে এইখানে ফেইলড রেভিউলেশনগুলার একটা লিগাসি থাইকা যাবে বইলাই আমি মনে করি।

৩.
তো, বাংলাদেশে পলিটিকাল পাওয়ারের জায়গাটাতে কোন চেইঞ্‌জ হবে না – এইটা আমার কনকো্‌লশন না। বরং দুনিয়াতে যে কোন জুলুমের শাসনই সাসটেইন করতে পারে না এর ইম-বেলেনসের কারনে, একটা সময়ে গিয়া কিছু না হইলেও কলাপস করেই। কিনতু এরপরে যেই শাসন’টা এমার্জ করে, সেইটা যেন রিলেটিভলি কম প্রবলেমেটিক হয় – সেই জায়গাটাতে খেয়াল করাটা দরকার। কলোনিয়ালিজমের পরে যেই নেশনালিজম আমরা পাইছি, রাজার শাসনের পরে লিবারাল ডেমোক্রেসি (এবং কমিউনিজমের নামে টোটালেটেরিয়ান রিজিম) – তার লুপ-হোলগুলা আমরা এখন দেখতে পাইতেছি। যার ফলে, নতুন একটা পলিটিকাল আইডিওলজি বা মডেল আমাদের দরকার নাই, বরং ভরসা করার মতো ফাংশনাল একটা সিসটেম দরকার, যেইটা একটু কম জুলুমবাজ হবে। এইটা পসিবল না – তা না, কিভাবে পসিবল সেইটা চিনতা করতে পারার, বিলিভ করার এবং একপেরিমেনট করার ঘটনাও।

১১.১২.২০২৩

বাংলাদেশে গৃহযুদ্‌ধের আলাপটা তোলার মানে হইতেছে অই ডর’টা দেখানো যে, দরকার হইলে ইন্ডিয়ান-আর্মিও নিয়া আসা হবে! মানে, গৃহযুদ্‌ধ কে করবে? বড়জোর দুর্ভিক্ষের ঘটনারে ধামাচাপা দিতে এই নাটক করা হইতে পারে। পুলিশ-মিলিটারি-আমলা-মিডিয়া – এই চাইরটা গ্রুপের মধ্যে বনডিং এখনো ভালো; ভাগ-জোক কইরা সবাইই খাইতেছে। এই অবস্‌হারে ভাঙতে চাওয়ার কোন কারন নাই। তাইলে এই আলাপ কেন উঠতেছে?

সিকিমরে লেনদুপ দর্জি একটা ডামি-ইলেকশনের পরেই তুইলা দিছিল ইনডিয়ার হাতে। বাংলাদেশে একই জিনিস হবে – এইটা আমি ভাবি না, কিনতু এই ডামি-ইলেকশনের পরে বাংলাদেশে অবৈধ-সরকারের জায়গায় একটা ডামি-সরকার বসবে, ইনডিয়ার। যারে ব্যাক-আপ দেয়ার জন্য ইনডিয়ান আর্মি আনানো যে দরকার – এই জাসটিফিকেশনের আলাপ এখনই কি শুরু হয়া গেছে কিনা, সেইটা বলাটা টু আর্লি এখনো। কিনতু সুশিলদের গৃহযুদ্‌ধ মার্কা আলাপ এই সনদেহরে উসকায়া দিতেছে আসলে।

ব্যাপারটা আর এইরকম না যে, গৃহযুদ্‌ধ লাগায়া দিয়া হইলেও আওমি-লিগ ক্ষমতায় থাকবে, বরং ক্ষমতা ধইরা রাখার জন্য দেশে একটা গৃহযুদ্‌ধ লাগায়া দেয়ার কথাও তারা বলা শুরু করছে।

১৩.১২.২০২৩

– “আমি শিকখিত” – এই ইগো ছাড়তে রাজি হইলে বাংলা বানান আরো কম ঝামেলার হইতে পারে। আর এইটাতে যুকতাকখর হইতেছে মেইন ইভিল। –

যারা বাংলা-ভাষা লেখতে ও পড়তে পারেন – তাদের নিয়া আমার চিনতা আসলে কম-ই; আপনারা যেইভাবে শিখছেন সেইভাবেই লেখেন, পড়েন। যারা নতুন কইরা বাংলা-ভাষা শিখবেন – তাদের নিয়া আমার ভাবনা আসলে। ভাষারে, বানানরে এতো জটিল করার কিছু নাই। যুকতাকখর হইতেছে একটা বড় ইভিল।

আমার মনে আছে একবার বাংলায় মাসটারস করা একজন রাইটাররে জিগানো হইতেছিল – ব্রহ্ম’র হ্ম’টা কেমনে লেখবেন কমপিউটারের কি-বোর্ডে বলেন তো, কোন কোন অকখর দিয়া? উনি এইটা-সেইটা বলতেছিলেন তখন… আমি মজা পাওয়ার চাইতে ওরিডই হইছিলাম বেশি; যে, একজন মানুশ জানে না, কিনতু আমি জানি – এইটা এতো গরবের ব্যাপার কেমনে হইতে পারে! বা এইটা কি পারপাস সারভ করে আসলে! ব্রাহ্‌মন লেখলে কি সমস্যা? এখন অবশ্য এই শব্‌দ লাগেও না এতোটা, এলিট দিয়াই চালানো যায়।

তো, এইটা হইতেছে ঘটনাটা! পলিটিকালি এবং কালচারালি মেইন ঘটনা হইতেছে, এই যুকতাকখর শব্‌দগুলা যে অ-দরকারি এবং নন-বাংলাদেশি – এইটা রিভিল হয়া পড়ে আসলে!

যুকতাকখরের দরকার নাই – তা না, যেইসব শব্‌দ যুকতাকখর দিয়া লেখি আমরা, এইগুলা খালি লেখালেখিতে আছে, বলাবলির মধ্যে এতোটা নাই! যুকতাকখর ভাইঙগা লেখলে এই না-থাকাটা এবং অ-দরকারি হয়া পড়াটা তখন আরো কিলিয়ার হইতে পারবে বইলা আমি মনে করি। এই যে শিকখিত ও অশিকখিতের দেয়ালটা আছে, সেইটা ভাঙতে রাজি হওয়াটা কঠিন।

বাংলা লেখা যে একটু কঠিন – এইটা পরমান না করতে পারলে পড়াশোনা কইরা কি লাভ! শিকখিত লোকদের এই ইগো একটা বড় ঘটনা। এমনকি যে, বাংলা-ভাষারে দেখতে তখন এতোটা ওজনদার লাগবে না, মনে হইতে পারে – গরিব! তো, যেহেতু আমরা এনাফ গরিব, ভাষা নিয়া গরব’টা তো ছাড়া যাবে না – ব্যাপারটা এইরকমও কিছুটা।

#বানামভুল ২

বানদরবন গেছিলাম এই বছরে, ৮-১০ দিন ছিলাম। যাওয়ার পরেরদিনই শুনলাম ৩ জনরে খুন করছে মিলিটারি। ওয়ার্কিং ডে-তে পুরা শহর ফাঁকা। কোন টুরিসট নাই। পুরা হোটেলে মোটামুটি একলা ছিলাম। মাঝখানে দুইদিন বিদেশি-এনজিও’র এক গেসট ছিল। শুক্রবার দিন একটা ফ্যামিলি আসছিল। আমিও ঘুরতে বাইর হইছিলাম একদিন, কিনতু হাইকিংয়ের ইসপটগুলাতে যাওয়া নিষেধ, টুরিসট আইসা যাবে কই! শুক্রবার বিকালে মেঘলা-তে কিছু লোকজন দেখলাম; লোহাগড়া থিকা, আশে-পাশের এলাকা থিকা ঘুরতে আসছে।…

সাজেকও গেছি এই বছর। সাজেক যে একটা মিলিটারি এসটাবলিশমেনট – এইটা যারা ঘুরতে যান, তারাও খুব একটা মনে রাখতে পারেন না।… খাগড়াছড়িতে রেসটুরেনটে খাইতে বইসা দেখলাম পাহাড়িরা চুপচাপ, সামনে বাঙালিরা থাকলে খুব একটা কথা কইতে চায় না; বা খুবই মুখস্্ত কথা বলে, নিউজপেপারের নিউজের মতন।

এই ভয়গুলা আমার কাছে অপরিচিত না, কিনতু এই ভয়গুলাতে অভ্যসত হইতে থাকা মানুশগুলার মুখের দিকে তাকানো যায় না। আয়নায় নিজের চেহারার দিকে তাকাইতেও মনেহয় অরা ভয় পায়! অদের দিকে তাকায়া আমিও ভয় পাই।

একটা ভয়ের প্লেগ পাহাড় থিকা নাইমা আসে সমতলে; আমাদের শহরে, মফস্বলে, গেরামে; রাসতায়, অফিসে, ঘরে ঘরে; আমাদের জিবনে, স্বপ্নেও; আমরা চিললায়া উঠতে গিয়া ডরায়া আবার চুপ কইরা যাই… ভাবি, এইসবকিছু ছাইড়া-ছুঁইড়া দূরে কোথাও চইলা যাবো আমরা, পাহাড়ে…

পাহাড়ে?

আহা রে! কি যে ইনোসেনট ড্রিম আমাদের!

সেই ড্রিম নিয়া বানদরবন, রাঙামাটি আর খাগড়াছড়িতে ঘুরতে যাবো আবার। অনেককিছু দেখবো না। অনেককিছু তো দেখাও যায় না, তাই না! দেখবো খালি পাহাড়। পাহাড়ের নিরবতা। মিশে যাইতেছে বোবা কিছু ছবিতে। পাহাড়ে।

/পাহাড়ে

১৪.১২.২০২৩

কাহিনি বা নেরেটিভ যে ফেক্ট বা ঘটনার চাইতে বেশি শকতিশালি, এইটা নানান সময়েই টের পাই আমরা; আজকে জিনিসটা আবার মনে হইলো হুমায়ূন আহমেদের “জোছনা ও জননীর গল্প” নভেলের একটা ভাইরাল শেয়ারিং দেইখা।

অইখানে ধীরেন্দ্রনাথ চৌধুরী অনেক কোশচেন করতেছেন, কিনতু রিয়ালিটি’টারে ধরতে পারতেছেন না! খুবই করুন! যেন উনি কিছু জানেন না, বুঝেন না! নিজের মনে নিজের চিনতা নিয়া থাকেন! চারপাশে কি ঘটতেছে, সেইটাই টের পাইতেছেন না! এতো কোশচেন উনি করতেছেন, কিনতু আসল কোশচেনটাই উনি করতে পারতেছেন না! অথচ দেখেন, একজন ইনটেলেকচুয়ালের কাজ-ই হইতেছে, ঠিক কোশচেনটা করতে পারা! অনেক সময় একটা ঠিকঠাক কোশচেন করতে পারাটা হাজারটা উত্তরের চাইতে জরুরি একটা ঘটনা!

ব্যাপারটারে দেখানো হইছে, বা রিডিংয়ের সাজেশনটা হইতেছে যে, উনি বুঝতেছেন না! উনার কাজকামের যে সোশাল ইমপেকট আছে সেইটা উনি জানেন না, বা উনারে যে খুন করা হইতে পারে, এইটা তার চিনতারও বাইরে। এবং খুবই অসহায় উনি! এই হইতেছে মুকতিযুদধের সময়ের “বুদ্ধিজীবী”র পোর্টেট, আমাদের কাছে এখন।

আন-ফরচুনেটলি আজকে এতদিন পরেও ইনটেলকচুয়ালিটি জিনিসটারে এইভাবেই দেখার সাজেশন আছে আমাদের সামনে; যে, উনারা তো বুঝেন না! আর্ট খান, আর্ট পাদেন, আর্ট হাগেন, আর্টের গু শরিলে মাইখা শিতের দিনে রইদ পোহাইতে থাকেন!

এইরকম নন-পলিটিকাল বিইং হয়া থাকাটা যদি “বুদ্ধিজীবী”র ঘটনা হয়, আমাদের সবারই কি একটু শরম পাওয়ার কথা না তখন! এইরকম আলা-ভোলা “বুদ্ধিজীবী”-ই কি চাই আমরা এখনো? মেবি, এইটাই চাই।

যারা ঠিক সময়ে ঠিক কোশচেন’টা না কইরা চুপচাপ থাকতে পারবে। এই যে “বুদ্ধিজীবী”র নেরেটিভ – এইটা থিকা বাইর হওয়াটাই দরকারি ঘটনা আসলে এখন। এবং দেখবেন, অনেকের ফ্রাসট্রেশনটাও এই জায়গাটাতেই যে, “বুদ্ধিজীবী” নাই সমাজে! অথচ ঘটনা হইতেছে যারা সময়-মতো চুপ কইরা থাকতে পারেন, অসহায় হিসাবে মইরা যাইতে পারেন, তাদেরকেই “বুদ্ধিজীবী” বইলা মানতে রাজি আছি আমরা।

আমাদের দেশে “বুদ্ধিজীবী” নাই – ব্যাপারটা এইরকম না, বরং “বুদ্ধিজীবী” বইলা যেই পোর্টেট, যেই নেরেটিভ চালু আছে, সেইটা ভয়াবহ রকমের সিউডো, প্যাসিভ, নন-পলিটিকাল একটা ঘটনা, যার ভিতর থিকা বাইর হইতে পারাটা জরুরি, আমাদের।

১৫.১২.২০২৩

কোটেশন এন্‌ড কনফিডেনস

মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’র লেখাগুলা পড়তে গিয়া খেয়াল করতেছিলাম ব্যাপারটা, ছোটবেলায় ইশকুলে ইতিহাস, পৌরনীতি (ওয়াও এই শবদ আমার মনে আছে!), বাংলা-এসে লেখার সময় যে আমাদের একটু পরে পরে কোটেশন দেয়া লাগতো, অইটা মেবি উনার রাইটিং ইসটাইল থিকা আসছে। মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌র ইসপেশালি ওয়াজ/ভাষন দেয়ার সময় এই টেকনিকটা ইউজ করতেন। খালি কুরআন হাদিস থিকাই রেফারেনস দিতেন না, অই সময়ের ইউরোপিয়ান রাইটারদের কোটেশনও দিতেন এইটা পরমান করার জন্য যে, দেখেন, খালি আমি একলাই এই কথা কইতেছি না, এর আগেও এর নজির আছে, এবং গেয়ানি-গুনি লোকজনও এইভাবে ভাবছেন, এবং বলছেন। কিনতু লেখতে গিয়া আসলে আমরা পেরেশান হয়া যাইতাম, কারন অই লোকগুলারে তো আমি চিনি না বা অই বইগুলার কথা তো আমি জানি না! জাস্ট কিছু নেইম-ড্রপিংয়ের ঘটনাই ছিল অইগুলা। একজনের কথা আরেকজনের মুখে বসায়া দিতাম! 🙂

মানে, মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্‌ নেইম-ড্রপিং করতেন – এইটা আমি বলতেছি না, কিনতু উনি যে নামগুলা নিতেন, সেই টেকনিকটা পরে নেইম-ড্রপিং হিসাবে ইউজ হইতো, যে আমি এই এই নাম জানি! গেয়ান – এইরকম রেফারেনস জানার যে ঘটনা হয়া উঠছিল (এবং এখনো আছে তো কিছুটা), সেইখানে উনার কনট্রিবিউশনটা খেয়াল করা যাইতে পারে। ঘটনা তো এইভাবেই ছড়ায় আসলে। কেউ একজন একটা কিছু করেন, পরে যখন সেইটার একটা কালচারাল ভেলু তৈরি হয়, তখন অন্যরাও সেইটা কপি করতে থাকেন। কপি-পেসট দুনিয়াতে অনেক আগে থিকাই ছিল আর কি! লেরি টেসলার (নেইম ড্রপিং 🙂 ) এইটা আবিষকার করার আগে থিকাই!

কোটেশন দেয়াটা অবশ্যই খারাপ কিছু না, কিনতু এইটা আরো বিশাল আকারে ছড়ায়া পড়ছে এখন, জাসটিফিকেশনের একটা টুল হিসাবে; এইটা আর জাসট রেফারেনস টুল হিসাবে নাই, বরং রেফারেনসের রিলিভেনস একটা জরুরি ঘটনা হয়া উঠছে; তবে যেইভাবে সময় মতো, জায়গা মতো একটা কোটেশন দিতে পারাটা একটা ইসমার্টনেসের জিনিস হয়া উঠছে – সেইটা না আর কি! একটা রেফারেনস হইতেছে ভরসা করার জায়গা। এখন কার উপর ভরসা করতে হবে, কোন জিনিসে ভরসা করতে হবে, কখন করতে হবে – এইটা জরুরি জিনিস, জাসট কোট করার ঘটনা না আর কি!

২.
আরেকটা পপুলার ইসটাইল হইতেছে – কনফিডেনস শো করা; যেইটাই বলতেছেন খুব কনফিডেনটলি, ডেম-কেয়ারভাবে কইবেন, হালকা গালি-গালাজও করতে পারেন। এইটা আমার ধারনা, আসছে হুমায়ুন আজাদের কাছ থিকা। উনি হইতেছেন একজন ইনটেলেকচুয়াল ক্রিমিনাল (একটু হুমায়ুন আজাদ 🙂 )। নিজের নেরেটিভরে জাসটিফাই করার লাইগা নিজের জানা জিনিসগুলারে ইচছা কইরা ভুলভাবে সাজাইছেন, এবং বলছেন। এইটা খালি নিজের ইগোরে সেটিসফাই করার ঘটনা না, ইনটেলেকচুয়াল জালিয়াতি আসলে। (উনার “লাল-নীল দীপাবলি” বইটা নিয়া বলছি আমি, বানানের জায়গাগুলা নিয়াও বলবো, ইচছা আছে।) কিনতু পড়তে গেলে অইভাবে নজরে আসে না ফারসটে; কারন হইতেছে এই কনফিডেনস।

মানে, যেইটাই বলেন আপনি খুব কনফিডেনটলি বলতে হবে! এই যে চাতুরি’টা, এইটা হুমায়ুন আজাদের প্রাকটিসের ভিতর দিয়া একভাবে ছড়াইছে বইলা আমার মনেহয়। এবং এইটা তো অনেকদূর পর্যনত সাকসেসফুলও আসলে, ইসপেশালি অনলাইন দুনিয়াতে, যখন আপনারে কুইক রি-একশন দিতে হবে, সাথে সাথে রেসপনস করতে হবে; ৫ মিনিট পরে কইলেও সেইটার দাম নাই আসলে। মানে, ততকখনে অইটা এসটাবলিশ হয়া গেছে। যত গলা উঁচা হবে, যত ক্রুয়েল ইমোশন থাকবে, কনফিডেনস যত বেশি হবে – তত ছড়াইতে পারবে আসলে আপনার কথাটা, এমনকি বেশি ‘সত্যি’ বইলাও মনে হবে!

এইরকমের ব্যাপার তো সবসময়ই ছিল, বা আছেই; কিনতু আমার মনেহয় হুমায়ূন আজাদের কনফিডেনটলি এবং তাচছিল্য কইরা বলাটার একটা কনট্রিবিউশন এইখানে আছে। এখন হুমায়ূন আজাদ না জাইনা বলতেন, বা ফলস-কনফিডেনস দেখাইতেন – এইরকম না ব্যাপারটা; উনি কনফিডেনসটারে একটা মাসট জিনিস কইরা তুলছিলেন; একটা ইসমার্টনেসও, আধুনিকতার 🙂 এখন আধুনিকতার জায়গাটা কিছুটা পুরান হইলেও কনফিডেনসের জায়গাটা রয়া-ই গেছে, পোসট-মর্ডানিজমের ইন-ডিসিশান হালকা-রোমানটিকতা নিয়া আসলেও, অই রিকোয়ারমেনটা থাইকাই গেছে।

৩.
আমি বলতে চাইতেছি, ইসটাইল ও ফেশনরে যতটা বাইরের জিনিস বইলা ভাবি আমরা, ততটা না আসলে; মুখোশটাই মুখ – বেশিরভাগ সময়। মানে, আপনারে যদি কোটেশন ছাড়া, লো-কনফিডেনস নিয়া কোন কথা বলা লাগে, সেইটা যে কথা হবে না – তা না, কিনতু সেইটারে একটা দরকারি কথা হিসাবে পারসিভ করতে আমাদের রিডিং একসপেরিয়েনসের কারনে ধরতে বা টের পাইতে একটু সময় লাগবে।

তো, এই দুইটাই ঘটনা না; আরো অনেক চালু টেকনিকই আছে বাংলা-লেখাতে। এখন আরেকটা টেকনিক আমি খেয়াল করি, সেইটা হইতেছে একটু পারসোনাল টাচ দিয়া কথা বলা লাগবে! যে, আপনি হয়তো ঘাসের কোয়ালিটি নিয়া কথা কইবেন, শুরু করা লাগবে এইভাবে – “আমি একদিন দেখলাম একটা ছাগল ঘাস খাইতেছে। কি যে ভালো লাগতেছিল দেখতে। তারপরে আমি ঘাসের দিকে তাকাইলাম।…” এই পারসোনাল-টাচ হইতেছে অনেকটা লজেনস বা আইসক্রিম দিয়া ছেলে-ধরার মতো ঘটনা! 🙂

১৭.১২.২০২৩

এই জিনিসটা আমি ফারসটে খেয়াল করছি মিশেল ফুকো’র লেখা পড়তে গিয়া; যে উনি যেইসব রেফারেনস দিতেছেন, যাদের কথা কইতেছেন, সেইগুলার কোনকিছুই দেখি আমি মোটামুটি জানি না; মানে, উনি তো কথা কইতেছিলেন ১৪-১৫ শতকের ইউরোপের, অই সময়ের যেইসব ডকুমেনট আছে, অইগুলা নিয়াই উনি কথা বলতেছেন; এখন এইটাই তো আসলে উনার করার কথা। এনলাইটমেনটের পরের সময়ের আলাপ তো উনি করতেছেন না, তো, অইগুলার কথাই উনি বলবেন।

একইভাবে, আপনি যদি বাংলাদেশের পলিটিকস, কালচার নিয়া কথা কইতে চান, এই নিয়া ডকুমেনটগুলাই তো নাড়াচাড়া করবেন, তাই না? কিনতু এইটা খুবই অবাক করার মতো ব্যাপার যে, এই টেনডেনসিটা খুবই কম! বাংলাদেশ নিয়া যদি কথা বলা লাগে তাইলে তো ১৯৪৭’র পরে পুব পাকিসতানে যা কিছু ঘটতেছিল, সেইটা নিয়াই কনসার্নড হইতে হবে! এর আগে কলকাতাতে যা কিছু হইছে সেইগুলা অবশ্যই বাংলাদেশের ঘটনা, কিনতু এর পরে যা হইছে এবং হইতেছে তা তো দেশ হিসাবে ইনডিয়ারই অংশ। অইখানে বাংলাদেশের যেই রিলিভেনস সেইটা সবসময় ‘অতীত’ হিসাবে। মানে, ১৯৪৭’র আগের বাংলাদেশ।

যেই কারনে অইখানের (কলকাতার) রেফারেনসে পুব পাকিসতানের সাহিত্য পাইবেন না, চিনতা পাইবেন না, পলিটিকস তো আরো না। যেমন ধরেন, আপনি যদি খোঁজ-খবর করতে যান ১৯৫২ সালে জীবনানন্দ দাশ ঢাকার ভাষা-আনদোলন নিয়া কি বলছিলেন – সেইখানে তেমনকিছু খালি পাইবেন-না না, সেই এনকোয়ারি মোটামুটি অ-দরকারি একটা জিনিসই। আন-ফরচুনেটলি, এই জিনিসটা ইনটেলকচুয়ালি খুববেশি কিলিয়ার না অনেকের কাছেই। এতে কইরা যা হয়, আমাদের কাছে ইনডিয়ার পশ্চিম-বাংলার হিসটরি যতটা জানা হয়, বাংলাদেশ ততটাই অ-পরিচিত হয়া থাকে। মানে, এইটা ভালো-আর্ট বা খারাপ-আর্টের মামলা না এতোটা; বরং পলিটিকাল হিসটরির যেই রিলিভেনসের ঘটনা – সেই জায়গাটারেই লোকেট করা হয় না।

অইখানে দুইটা প্রেজুডিস এখনো খুবই ‘সত্যি’ হিসাবে পারসিভড হয় – ‘পাকিসতান আমলের যে কোনকিছুই খারাপ’ এবং ‘দেশ-ভাগ খুব খারাপ জিনিস’; বাংলাদেশে আমরা যে হিনদু-জমিদারি ও দিললির গোলামি মাইনা নিতে রাজি হই নাই – এইটা খুবই খারাপ কাজ যেন! এখন এই দুইটা পজিশনরে না-বদলায়া বাংলাদেশে কোন ক্রিটিকাল চিনতা করতে পারাটা খুবই মুশকিলের কাজ বইলা আমি মনে করি।

আমি বলতে চাইতেছি, আপনি যা চিনতা করতে চান, সেইখানে কোন রেফারেনসরে আপনি রিলিভেনট হিসাবে কনসিডার করতেছেন – সেইটা জরুরি একটা জিনিস। এবং বাংলাদেশে কলকাতা-বেইজড মেটেরিয়ালগুলা সবসময় ১৯৪৭’র আগের জায়গাটাতেই আমাদেরকে আটকায়া রাখে, নিজেদেরকে ‘অতীতের ভূত’-ই মনে হইতে থাকার তখন আমাদের।

১৯.১২.২০২৩

ডিকশনারি

“এসব অভিধান সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণ করে বাঙলা ভাষাকে… ক্রমশ আঞ্চলিক ও প্রাত্যহিক শব্দ পরিহার ক’রে সংস্কৃত থেকে ঋণ করতে থাকেন বিপুল থেকে বিপুলতর শব্দ, যার একটি বড়ো অংশ হয়তো কখনো কেউ ব্যবহার করেনি।”

/হুমায়ুন আজাদ, ১৯৮৪, ২০০৯

বাংলা-ভাষা মানে যে ডিকশনারিতে আছে, কিনতু লোকের মুখে নাই – এইটা তো সত্যি কথাই। এখন এই কথা শুইনা মনে হইতে পারে, আরে, হুমায়ুন আজাদের মত লোক সত্যি কথা বলতেছেন! কিনতু পরের লাইনগুলা পড়লে বুঝতে পারবেন যে, না, এই কথাগুলা হু.আ.-ই কইছিলেন। পরে উনি ‘লাইনে’ চলে আসছেন; বলতেছেন যে, এই সংস্কৃত থিকা অভিধানে আসা শবদগুলা বাংলা-ভাষায় ‘গৃহীত’ হয়া গেছে 🙂 তো, কারা এই ‘গ্রহন’টা করছে? অবশ্যই সেইসব শিকখিত লোকজন, যারা ডিকশনারি পইড়া বাংলা-ভাষা শিখছে, খালি শিখে নাই, বরং শিখাইতে চাইতেছে আমাদেরকে যে, যেইসব শবদ ডিকশানারি-তে নাই, অইগুলা তো বাংলা-ভাষা না আসলে!

এইভাবে ডিকশনারি হয়া উঠছে অথরিটির জায়গা।

২.
হুমায়ুন আজাদের সবচে ‘ভালো কাজ’ হিসাবে যেইটা বলা হয় সেইটা হইতেছে বাংলা-ভাষা নিয়া যত লেখা-পত্র আছে সেইগুলার একটা কমপাইলেশন করছিলেন উনি “বাঙলা ভাষা” নামে বইয়ে। পয়লা বাংলা একাডেমি ছাপাইছিল বই দুইটা, পরে আগামি প্রকাশনি ছাপাইছে। তো, অইটা মোটামুটি একটা কমেডি হয়া পড়ছে আসলে অনেক জায়গায়, ‘আধুনিক’ হইতে গিয়া। বইয়ের “দ্বিতীয় খন্ড”র অভিধান সেকশনের ভূমিকাতে কোটেশনের কথাগুলা বলছেন উনি।

উনার বাছাই খারাপ – তা না, বা উনার অবজারভেশনগুলা ভুল – তাও না, বরং বেশিরভাগ সময়ই উনি টেনডেনসিগুলারে আইডেনটিফাই করতে পারছেন; কিনতু ঘটনা হইতেছে যেইভাবে উনি জাসটিফাই করতে চাইছেন, যেইভাবে নেরেটিভ’টারে সাজাইছেন, খুবই প্রি-ডিটারমাইনড জায়গা থিকা কাজগুলা করছেন।

এইখানে যেমন, ডিকশনারির পারপাস কেমনে বদলায়া গেছে, সেইটারে উনি মার্ক করছেন ঠিকই; কিনতু আবার জাসটিফাই করতেছেন যে, পরে এই ‘সংস্কৃত’ শবদগুলাই বাংলা-ভাষা হয়া গেছে! তো, এইভাবে যে খালি ইউরোপিয়ান কলোনিয়ালিজমই না, বরং কাসট-সিসটেমরে নতুন কইরা চাপানো হইছে বাংলা-ভাষার উপরে সেইটারে খালি ইগনোরই করেন নাই, “জাসটিফাইড” বইলা কনটিনিউ কইরা গেছেন।

আর সবচে বাজে-কাজগুলার একটা হইছে, কিছু হিসটরিকাল লাই উনি প্রডিউস করছেন। যেমন, বানান নিয়া কথা বলতে গিয়া মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্’র পরসতাবগুলারে বলতেছিলেন পাকিসতান হওয়ার পরের ঘটনা, অথচ ১৯৩০’র দিকেই বাংলা-ভাষার বানান নিয়া সাজেশন উনি রাখছিলেন। এখন পাকিসতান হওয়ার পরে বাংলা-ভাষা, বানান ও হরফ নিয়া আলাপ যে হয় নাই – তা না, কিনতু উনার সব আলাপ’রে অই কনটেকসটে নিয়া যাওয়াটারে হিসটরিকাল লাই হিসাবেই দেখতে পারতে হবে আমাদেরকে। আর সেইটা খুব মাইনর বা ইনোসেনট ঘটনা না আর কি!

#বানামভুল ৩

২১.১২.২০২৩

অফিসে ঢোকার সময় কয়েকদিন ধইরাই খেয়াল করতেছিলাম, রাসতায় যেই জায়গাটাতে নামবো, সেইখানেই ময়লা ফালানো। দুইদিন দেইখা ভাবছি হয়তো এখনো সকাল বইলা সিটি করপোরেশনের লোকজন সাফ করতে পারে নাই। কিনতু বিকালে যাওয়ার সময়ও দেখি ময়লার টাল একইরকম আছে। দুইদিন পরে ডেরাইবার’রে কইলাম, কি ঘটনা, এইখানে সবসময় ময়লা ফেলে রাখে কেন?

সবারই তো গাড়িতে উঠতে-নামতে সমস্যা হওয়ার কথা; কারন এতো গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গা তো নাই অফিসের বেইজমেনটে; বেশিরভাগ প্রাইভেট কার-ই আশেপাশের গলিতে রাখে, ডেরাইভারকে কল দিলে এই জায়গাটাতে আইসা দাঁড়ায়; কিনতু ২-৪ মিনিট তো এদিক-সেদিক হয়, তখন রাসতা’তে গাড়ির জ্যাম লাইগা যায়। পুলিশ এই রাসতায় এক সেনেকনডও গাড়ি দাঁড়াইতে দেয় না। বিকাল ৫টা বাজলেই দুই-চাইরজন ট্রাফিক আইসা দাঁড়ায়া থাকে, আর মামলা দিতে থাকে। কিনতু তারপরও এইটা বনধ করা যায় নাই, কারন মানুশ-জনের তো গাড়ি থিকা নামতে হবে, গাড়িতে উঠতে হবে, রাসতা ছাড়া এইটা করার তো উপায় নাই!

তো, এই জিনিস কনট্রেল করতে না পাইরা পুলিশ নিজেই রাসতায় ময়লা ফেইলা অর্ধেক রাসতা বনধ কইরা দিছে! গত ৮-১০ দিন ধইরা এই জিনিস চলতেছে। 🙂

২.
আরো ইনটারেসটিং ঘটনা হইতেছে, তেমন কেউই এইটা খেয়াল করতেছে না, বা মাইনড করতেছে না। (এমনকি এই ময়লার পাশে ফুটপাতে যে খাবারের দোকানগুলা আছে, অরা জাসট একটু সাইডে সইরা গেছে! ময়লা দেখতে দেখতেই লোকজন চা-সিগারেট খাইতেছে।) যে, পুলিশ চাইলে এইটা তো করতেই পারে!

আর করতেছে তো ফর আ গুড কজ!

যেমন, মিছিল-মিটিং হইলে বাস-টাস সব বনধ কইরা দিতেছিল, কয়দিন আগে, বিএনপি ধরার নাম কইরা। [যেন বিএনপি করা একটা ডিজিজ।]… হরতাল-অবরোধেও কারা জানি আগুন লাগাইতেছে। এখন কাদের আছে এই ক্ষমতা, বাংলাদেশে? জিগাইতে গেলেও একটু ডর লাগে না? চিনতা করাটাও মনেহয় ঠিক না…

৩.
তো, এইটা সিমিলার জিনিসই, বাংলাদেশে এখন যা ঘটতেছে। আপনারে পার্কিং করার জায়গা দিবে না, মামলা দিবে, এরপরে ময়লা ফেলবে, বদনামি করবে; আর এইসবই করবে আইনের নামে! এবং করবে ‘আইন-শৃঙখলা রক্ষাকারী’ বাহিনির লোকজনই!

আর এইটাই এনাফ না! এইটারে ভাবতে হবে ‘নিজের দোষ’ হিসাবে। [‘দেশ আমার, দোষ আমার’-বলদ হইতে হবে।] উঠতে বসতে মাফ চাইতে হবে।

এই গুলা যদি না মানতে পারেন, দেখতে ও বলতে থাকেন, আপনি তো খুবই খারাপ মানুশ রে ভাই!

২৩.১২.২০২৩

বাংলাদেশে ‘ইয়াং ইনফলুয়েঞ্জার’রা হইতেছেন বেসিকালি বাকশালি মিডিয়া-প্রমোটেড লোকজন; যারা ইসমার্ট না, বরং পলিটিকালি নামব (numb, বে-বুঝ), এবং এইটা কোয়ালিটি হিসাবে মাসট।

মানে, চিনতা করেন, যাদের কাজে-কামে তিল পরিমান ডাউট আছে যে, BAL-বাকশালিরা মনেহয় ভালো না, বা এইরকমের কোন টেনডেনসি শো করছেন কোনভাবে, তাদেরকে কি বাকশালি-মিডিয়া প্রমোট করবে, বা করার কোন চানস আছে?

ইয়াং জেনারেশনের লোকজন পলিটিকালি বেকুব না, বরং পলিটিকালি-বেকুব না হইলে কাউরে ‘ইয়াং ইনফুলেয়াঞ্জার’ হিসাবে প্রমোট করবে না বাকশালি-মিডিয়ার লোকজন।

২৬.১২.২০২৩

লেনদুপ দর্জি কেমনে সিকিম’রে ইনডিয়া’র কাছে বেইচা দিছিল – জানেন তো? একটা ডামি-ইলেকশনের পরে সংসদ বসায়া সেই সংসদে ডিসিশান নিয়া সিকিম’রে ইনডিয়ার হাতে তুইলা দিছিল।

বাংলাদেশের ব্যাপারে একইরকম হবে বা হইতেছে – তা না, কিছু মিল-অমিল তো আছেই। মিলের ঘটনাটা হইতেছে একটা ডামি-ইলেকশন হইছিল; আর অ-মিল হইতেছে সিকিমে সরাসরি ইনডিয়ান আর্মি মোতায়েন করা হইছিল, বাংলাদেশে এই কাজটা সরকারি-আমলারাই কইরা আসতেছে গত দুই সিজন ধইরা। বা আগে যেমন পলিটিকালি বেচা লাগত, এখন ইকনোমিকালি বেচলেই হয়।

তবে এই বেচা-কেনাটা একটা পর্দার ভিতর দিয়া, একটা লোক-দেখানোর ভিতর দিয়া করতে পারাটা বেটার; সেই কাজটা করে – ডামি-ইলেকশন। মানে, পলিটিকাল প্রসেস’টা জাসট ইকনোমিক প্রজেকট’টারে জাসটিফাই করার একটা টুল হয়া উঠে তখন।

২৭.১২.২০২৩

বাংলাদেশে মিডিয়া-প্রেসকাইভড ইসটার (Star) বা সেলিব্রেটি হইতেছেন এমন মানুশ-জন, যাদের আপনি ঠিক চিনেন না, কিনতু চেনা’টা দরকার! 🙂

এই জিনিস মনে হইলো, ডি-স্টারের গতকালকের একটা লিসট দেইখা যে, ২০২৩ সালে কোন কোন ইসটার বিয়া করছেন; সেইখানে ৯টা কাপল ছবি আছে, এর মধ্যে খালি সালমান মুক্তাদিরের নাম শুনছি, কিছু লোকজনের কাছে সে পপুলার – এইটা জানি।…

তারপরে ৪/৫ দিন আগে ছাপা হইছিল কারা কারা মারা গেছে – অই লিস্ট; উনাদেরও দুই-একজনরেই চিনতে পারছি আমি, এবং ইনটারেসটিং ঘটনা হইতেছে, উনারা কি কারনে ইসটার – সেইটাও লেইখা দেয়া হইছে লগে; নাইলে আপনি তো তাদেরকে চিনবেন না আসলে!

একই ঘটনা বিয়ার নিউজটাতেও আছে, যে বিয়া করছে, সে কেন স্টার – এই পরিচয়ও বেশিরভাগ সময় দেয়া হইছে। মানে, একটা পরিচয় তো তার আছে, সেইটা রিডার যে না-ও জানতে পারেন, অইরকম একটা চিনতা মেবি ফিচার-এডিটরেরও ছিল মেবি।

ব্যাপারটা খালি এইরকম না যে, যেহেতু আমার বয়স হইছে, এবং বাংলাদেশি নাটক-সিনেমা-গান খুব একটা কনজিউম করা হয় না, হইতেই পারে যে, অন্য অনেকে তাদেরকে চিনেন, আমি চিনি না; কিনতু তাদেরকে ভালো-ভালো কাজ নিয়া কোন আলাপও তো দেখি নাই কোথাও!

দুই-একবার লোকজনের পিঠ-চাপড়ানি দেইখা সেইগুলা দেখতে গিয়া প্রশংসা করা লোকজনরেই আন-ফলো করা লাগছে। মানে, ব্যাপারগুলা পিঠ-চাপড়ানিই ছিল; কোন কাজের জিনিস না।

আমি বলতে চাইতেছি, বাংলাদেশি মিডিয়া এখন চাইলেও সেলিব্রেটি বা ইসটার পয়দা করতে পারতেছে না, অই মুরোদ বা পাওয়ার তাদের আর নাই তেমন একটা।

২৮.১২.২০২৩

ব্যাপারটা এইরকম না যে, নতুন-ভাষা দিয়া নতুন-চিনতা তৈরি হয়, বরং বেশিরভাগ সময়ে নতুন-চিনতাই ভাষারে নতুন ভাবে শেইপ-আপ করে

টকসিসিটি (toxicity) তো এনজয় করার কোন জিনিস না, এর সাথে এনগেইজ হওয়াটাও ঠিক না; বরং এড়ায়া যাইতে পারাটাই হইতেছে ঘটনা

২৯.১২.২০২৩

বাকশালি মিডিয়ার কিছু “কি-ওয়ার্ড” আছে, এর মধ্যে একটা হইতেছে – “বিএনপি- জামাত”; ডেইলি নিউজপেপারে (আমি সেপিসিফিকালি ডি-স্টারের কথা কইতেছি, কিনতু অন্য সব টিভি-পত্রিকাতেই পাইবেন) কোন না কোন নিউজ হেডলাইনে পাইবেনই এই জিনিসটা। তো, দুই-তিনদিন চোখে পড়ার পরে আজকে মনে হইলো, নিউজটা পড়ি তো, কি লেখা আছে ভিতরে? (আজকে লাসট পেইজে ছাপা হইছে এই কি-ওয়ার্ড দিয়া একটা হেডলাইন।)

লিটারারি, জামাতের কোন কথাই নাই নিউজের ভিতরে! বিএনপির দুইজন নেতারে বাকশালি-আদালতে জেল দেয়া হইছে – এইটা হইতেছে খবরটা; লগে বলা হইছে যে, আরো ‘বিএনপি-জামাত’ লোকের সাজা দেয়া হইছে। মানে, এইখানে ‘জামাত’ ওয়ার্ডটারে ‘বিএনপি’র লগে রাখতে হবে – এইটা হইতেছে ঘটনাটা। একটা টার্ম হিসাবে কয়েন করা, এবং জিনিসটারে ভিজিবল রাখা এট এনি কসট – এইটা হইতেছে পারপাসটা।

মানে, ব্যাপারটা বিএনপি’র জামাতের লগে জোটে আছে নাকি নাই – সেইটা কোন ঘটনাই না আসলে, ঘটনা হইতেছে টার্ম হিসাবে ইউজ করাটা। যেইরকম, ১৯৯৬-এ কোনসময় কি আওমিলিগ-জামাত শোনার কথা মনে করতে পারেন? উনারা তো একজোট ছিলেন। বা আওমি-সিপিবি – টার্ম হিসাবে এইটা কি পাইছেন কখনো? অথচ রিয়ালিটিতে এর চাইতে দীর্ঘ রাজনৈতিক ঐক্য তো খুব কমই ছিল বাংলাদেশে। আমি বলতে চাইতেছি, মিডিয়ার এই কি-ওয়ার্ডগুলা পলিটিকাল নেরেটিভটারে শেইপ-আপ করে, এবং বাকশালি-মিডিয়া বেশ বাজেভাবেই এই কাজটা করতেছে, অনেকদিন ধইরাই…

বাকশালি মিডিয়ার কিছু “কি-ওয়ার্ড” আছে, এর মধ্যে একটা হইতেছে – “বিএনপি- জামাত”; ডেইলি নিউজপেপারে (আমি সেপিসিফিকালি ডি-স্টারের কথা কইতেছি, কিনতু অন্য সব টিভি-পত্রিকাতেই পাইবেন) কোন না কোন নিউজ হেডলাইনে পাইবেনই এই জিনিসটা। তো, দুই-তিনদিন চোখে পড়ার পরে আজকে মনে হইলো, নিউজটা পড়ি তো, কি লেখা আছে ভিতরে? (আজকে লাসট পেইজে ছাপা হইছে এই কি-ওয়ার্ড দিয়া একটা হেডলাইন।)

লিটারারি, জামাতের কোন কথাই নাই নিউজের ভিতরে! বিএনপির দুইজন নেতারে বাকশালি-আদালতে জেল দেয়া হইছে – এইটা হইতেছে খবরটা; লগে বলা হইছে যে, আরো ‘বিএনপি-জামাত’ লোকের সাজা দেয়া হইছে। মানে, এইখানে ‘জামাত’ ওয়ার্ডটারে ‘বিএনপি’র লগে রাখতে হবে – এইটা হইতেছে ঘটনাটা। একটা টার্ম হিসাবে কয়েন করা, এবং জিনিসটারে ভিজিবল রাখা এট এনি কসট – এইটা হইতেছে পারপাসটা।

মানে, ব্যাপারটা বিএনপি’র জামাতের লগে জোটে আছে নাকি নাই – সেইটা কোন ঘটনাই না আসলে, ঘটনা হইতেছে টার্ম হিসাবে ইউজ করাটা। যেইরকম, ১৯৯৬-এ কোনসময় কি আওমিলিগ-জামাত শোনার কথা মনে করতে পারেন? উনারা তো একজোট ছিলেন। বা আওমি-সিপিবি – টার্ম হিসাবে এইটা কি পাইছেন কখনো? অথচ রিয়ালিটিতে এর চাইতে দীর্ঘ রাজনৈতিক ঐক্য তো খুব কমই ছিল বাংলাদেশে। আমি বলতে চাইতেছি, মিডিয়ার এই কি-ওয়ার্ডগুলা পলিটিকাল নেরেটিভটারে শেইপ-আপ করে, এবং বাকশালি-মিডিয়া বেশ বাজেভাবেই এই কাজটা করতেছে, অনেকদিন ধইরাই…

‘দেশ-ভাগ’ সাহিত্যের পলিটিকাল ইকনোমি

গতকালকে একজনের সাথে কথা হইতেছিল। উনি জিগাইতেছিলেন, বাংলাদেশের (বা তারো আগে পাকিস্তান পিরিয়ডে) আর্ট-কালচারে ১৯৪৭’র ‘দেশ-ভাগ’ নিয়া তেমন কোন কিছু নাই কেন? তো, আমার মতে, কোশচেনটা আসলে একটু উলটায়া করলে বেটার যে, কলকাতার বা প.বংগের সাহিত্যে ‘দেশ-ভাগ’ এত বড় জায়গা নিয়া কেন আছে?

আমার উত্তর ছিল যে, এইটা দুই-তিনটা কারন আছে। এক হইতেছে, যারা কলকাতায় থাইকা গেছেন, তাদের অনেকেরই তো ইকনোমিক লস হইছে বা হওয়ার কথা। যে, দেশে জমি-জমা রাইখা গেছেন, বা ঠিকঠাক দামে বেইচা যাইতে পারেন নাই। এখন যেমন, ঢাকা রাজধানি হওয়াতে বিজনেস করার জন্য বা চাকরি করার জন্য ঢাকাতে আসতে হয়, তখন তো কলকাতা থাকতে হইতো, যার ফলে পাকিস্তান হওয়ার পরেও যারা অইখানে থাইকা গেছেন, তাদের এই ইকনোমিক লস’টা তো মাইনা নিতেই হইছে। এর একটা ‘দুকখ’ তো অবশ্যই আছে, যেইটা সাহিত্যে আসছে।

দুসরা ঘটনা হইতেছে, যারা নতুন কইরা বাংলাদেশ থিকা যারা প.বংগে গেছেন; তারা-ই ‘দেশ-ভাগ’র সাহিত্য’টা বেশি করছেন আসলে। তাদেরকে করতে হইছে দুইটা কারনে – এক হইতেছে, উনাদেরও ইকনোমিক লস হইছে, কিনতু উনারা যে এতোটা নিচু-জাতের লোক ছিলেন না, বা ইনফিরিয়র না – এইটা নিয়া আউট-স্পোকেন হওয়া লাগছে, বলা লাগছে; “আমরা পুব-বাংলা/পুব-পাকিস্তান/বাংলাদেশ থিকা বইলা আসছি বইলা নিচু-জাত না”, ‘দরিদ্র-ব্রাহমন’ টাইপের আইডেনটিটি তৈরি করা লাগছে। (সত্যি বা মিথ্যার ঘটনা না, এইটা দরকার হিসাবে এমার্জ করছে।) সেকেনড হইছে, কলকাতা’তে বা প.বংগের লোকজনের কাছে কনফিডেনস গেইন করতে করার লাইগাও বাংলাদেশের বদনাম কিছু করা লাগছে তো; যেমন ধরেন, নতুন-বউ জামাইয়ের বাড়িতে আসার পরে শাশুড়ি’র প্রশংসা করা লাগে না যে, “আরে, এই জিনিস তো আগে কোনদিন খাই না, আমার মা তো এই জিনিস কখনো এইভাবে রানধেন নাই!” মানে, মুসলমানদের প্রশংসা কইরা কলকাতা’তে কি ‘গুড সিটিজেন’ হইতে পারবেন আপনি? তখন খালি মনে মনে বিলিভ করাই না, মুখেও কি ফেনা তুইলা ফেলতে হবে না যে, ‘দেশ-ভাগ’ খুব খারাপ জিনিস হইছে! এমনিতেই তো হিজরত কইরা যাওয়ার কারনে, সেকেনড ক্লাস সিটিজেন হইতে হইতেছে; সেই ‘বেদনা’তে যে পতিত হইতে হইলো, এর কারনও তো ‘দেশ-ভাগ’ আসলে! তো, এইটারে দোষ দিতে হবে না!

থার্ড বা ক্রুশিয়াল যেইটারে কারন বইলা মনে করি আমি, এবং যেইটা নিয়া খুব বেশি কথাও বলা হয় না, সেইটা হইতেছে এই যে ‘দেশ-ভাগ’ – এইটা তো করছেন কলকাতার হিনদুরাই; এইটা ধামা-চাপা দেয়ার জন্য ‘মাছের মায়ের পুত্রশোক’ করাটা খালি দরকার-ই না, বরং জরুরি একটা ঘটনা! যে, “আমাদের এতো বড় ক্ষতি, আমরা নিজেরা কি করতে পারি!” অথচ ‘ক্ষতি’টা তো হইছেই, উনারা ইনডিয়া নামের একটা বড় দেশের অংশ হন নাই, বরং ‘প্রাদেশিক’ একটা জায়গাতে চইলা গেছেন, কোন সেনটার-পয়েনট হিসাবে আর এগজিসট করেন না – এইটা টের পাইতে শুরু করছেন।

সাহিত্য অনেক সময় সত্যি-কথা বলার ঘটনাই না, বরং হিসটরিকাল কাভার-আপের কাজও করে অনেক সময়। মানে, ফিলিংসটারে বড় কইরা তুইলা তার পিছনের পলিটিকাল জায়গাটারে কিছুটা ঝাপসা কইরা তোলার কাজেও ইউজ করা যায়, যাইতে পারে তো। মানে, ‘দেশ-ভাগ’ যে একটা পলিটিকাল রিয়ালিটি না, বরং সাহিত্যের উপাদান – এই কনসট্রাকশনটা পলিটিকাল রিয়ালিটি’টারে কিছুটা হইলেও সেকেনডারি ঘটনা বানায়া রাখতে পারে, বা পারতেছে তো, এখনো!

অন্যদিক দিয়া, কলকাতা থিকা কিছু মানুশ তো আসছেন ঢাকা’তে, বাংলাদেশে; তারা কেন ‘দেশ-ভাগ’ নিয়া ‘সাহিত্য রচনা’ করলেন না? উনাদের কি কোন ইকনোমিক লস হয় নাই? বরং উনাদের মধ্যে কিনতু ‘পাকিসতান-প্রীতি’ দেখতে পাইবেন! কারন পাকিসতানে আসার পরে কিছু ইকনোমিক বেনিফিটও উনাদের হইছে; যেহেতু ঢাকা একটা সেনটার পয়েনট হিসাবে নতুন কইরা তৈরি হইতেছিল, এইখানে ইকনোমিক অপারচুনেটি তৈরি হইছে। সেকেনড হইতেছে, এক ধরনের পলিটিকাল এবং সবচে জরুরি হইতেছে কালচারাল ফ্রিডম পাইতে শুরু করছেন। সেইটা তাদেরকে খুশি-ই করার কথা। এইজন্য, যারা পুব-পাকিসতানে ছিলেন, তাদের চাইতে পাকিসতানের পক্ষে তাদের আরো বেশি কথা বলা লাগছে, নিজেদের ‘ঘটি’ পরিচয় থিকা বাইর হয়া আসার লাইগা। মানে, ‘দেশ-ভাগ’ ইকনোমিকালি কোন ট্রমার ঘটনা তো ছিল না, যারা পুব পাকিসতানে/ বাংলাদেশে ছিলেন, বা চইলা আসছেন। যদি থাকেও, কিছু পজিটিভ মেমোরি-ই থাকার কথা যে, কলকাতা-তে কি রকম কালচারাল ইনফিরিয়রিটি তাদেরকে ফেইস করতে হইতো, সেইসব নিয়া।

কিনতু অইরকম প্রেইজিংগুলাও খুব একটা পাইবেন না। কারন পাকিসতান তো দেশ হিসাবে টিকতে পারে নাই। তো, কেন পারলো না? বা পাকিসতান তৈরি হওয়ার কয়েক বছরের মধ্যেই কেন আবার কলকাতা-কেনদ্রিক ‘বাঙালি জাতীয়তাবাদ’ পুব-পাকিসতানে/ বাংলাদেশে তৈরি হইতে থাকলো?

এইটা ছিল উনার দুসরা সওয়াল। এর জবাব এর পরের পার্টে দেয়ার কোশিশ করতেছি।

২.
পাকিসতান হওয়ার পরে ‘বাঙালি জাতিয়তাবাদ’ কিভাবে ফিরা আসলো?

১৯৪৮ সালে মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় রেসকোর্স ময়দানে যেই ভাষনটা দিছিলেন, অইটা পড়লেই বুঝতে পারবেন যে, উনি পাকিসতানরে একটা সেনট্রালি-গর্ভনড স্টেইট বানাইতে চাইছেন; যেইটা আসলে, আমার মতে, পাকিসতানের ‘ট্রু-স্পিরিট’ কখনোই ছিল না; বরং একটা কনফেডারেশনাল-গর্ভমেনটের ভিতর দিয়া সেইটা সারভাইব করতে পারতো। উনি ডরাইতেছিলেন, এবং পুব-পাকিসতানের ইয়াংদেরকে কনভিনস করার ট্রাই করতেছিলেন যে, যদি ভাষা দুইটা হয়, তাইলে সেনট্রাল-গর্ভমেনট সিসটেম দুর্বল হয়া যাবে। ফরচুনেটলি উনি মারা গেছিলেন; আর আনফরচুনেটলি উনার এই পজিশনটারে কেউ রিভিউ করতে রাজি হন নাই। যার ফলে, যখনই ভাষার কোশচেনটা আসছে – উর্দু নাকি বাংলা? এইটা কালচারালি ট্রানসলেটেট হইছে – ইকবাল নাকি রবীন্দ্রনাথ? করাচি নাকি কলকাতা? এইরকম জায়গাগুলাতে। মানে, ঢাকা যে সেনটার – এই জায়গাটা একটা অপশন হিসাবে এমার্জই করে নাই!

যতই দিন গেছে, পাকিসতান তত বেশি সেনট্রালাইজ-স্টেইট হওয়ার ট্রাই কইরা গেছে, এবং কালচারাল ইনটিগ্রেশনের বেইজলাইন হিসাবে উর্দু’র পাটি বিছাইতে চাইছে; যেইটা কাজ তো করে-ই নাই, বরং ব্যাকফায়ার করছে। এবং যখন অপশন হিসাবে বাংলা এমার্জ করছে, তখন বাংলা মানেই তো কলকাতা-বেইজড ‘বাঙালি জাতিয়তাবাদ’ – এই পুরানা তীরে নোওকা ভিড়াইছে। এইখানে শিকখিত মিডল-ক্লাসের অবশ্যই বড় একটা কনট্রিবিউশন আছে, কারন বাংলা যদি সেনট্রাল গর্ভমেনটের ভাষা না হয়, পড়াশোনা কইরা তো চাকরি পাবে না কেউ! পাইলেও সেই ইংরেজ-আমলের অবসতাই হবে, উর্দু না জানলে তো বড়-পদে যাওয়া যাবে না। যার ফলে এইটা তো লাইফ এনড ডেথ সিচুয়েশন।

উর্দু-বিরোধিতা থিকা পাকিসতান ভাঙছে – এইটা অবশ্যই মিছা-কথা না, কিনতু হাফ-ট্রুথ সেইটা; পুরা ঘটনা হইতেছে বরং যখনই বাংলা-ভাষার কথা বলা হইছে সেইটা বাংলাদেশ’রে রেফার না কইরা কালচারালি কলোনিয়াল-কলকাতারে রেফার করছে, যেইটা এখনো পলিটিকাল নেরেটিভ হিসাবে একটিভ আছে। এই ফেইলওরের জায়গাটারে মার্ক করা হয় না বইলাই আমি মনে করি।

আমি বলতে চাইতেছি পুব-পাকিসতানে ‘বাঙালি জাতিয়তাবাদ’ ফিরা আসছিল কালচারালি কলোনিয়ালজমের একটা ভুত হিসাবে, পলিটিকালি একটা কনফেডারেশনাল স্টেইট হইতে না পারার ফেইলওর থিকা; আর এফেকটিভ আছে পাকিসতান-পন্থী এবং ইনডিয়ান-পন্থী হওয়ার ভিতর দিয়া; এবং এখনো এইখানে ‘বাংলাদেশ-পন্থী’ হওয়া বইলা কালচারালি কোন পজিশন এখনো নাই। অই ভ্যাকুয়ামটার ভিতর দিয়াই ঘটনা ঘটছে আসলে।

অন্যদিক দিয়া দেখেন, প.বংগের লোকজনও কিনতু ‘বাঙালি জাতিয়তাবাদ’রে বাতিল কইরা ‘ইনডিয়ান জাতিয়তাবাদ’র পতাকাতলে সামিল হইছে; কিনতু এখন হিন্দি-ডরে কাঁপতেছে, কাঁপতেছে কি, মারা-ই তো যাইতেছে আসলে; মানে, ‘বাঙালি’ হওয়াটা একটা রিজিওনাল ঘটনা; আগে ইনডিয়ান হইতে হবে। ‘বাঙালি’ হয়া উনারা ‘ইনডিয়ান’ হইতে পারবেন না, বরং ‘ইনডিয়ান’ হওয়ার পরে তাদেরকে ‘বাঙালি’ হইতে হইতেছে! ‘বাঙালি’ হিসাবে সেকেনড ক্লাস সিটিজেনই হইছেন উনারা এক রকম। যার ফলে উনাদের ‘বাংলা-সাহিত্য’ রিজিওনাল একটা ঘটনা।

বলা যাইতে পারে, অইটা হইতেছে – “পরাধীন-বাঙলা”; এখন একটা ‘পরাধীন-বাঙলা’ তো ‘স্বাধীন-বাঙলা’র কেবলা হইতে পারে না; পারতেছেও না। যার ফলে, পাকিসতানের সময়ে রিভাইব করলেও এখনকার বাংলাদেশে ‘বাঙালি জাতিয়তাবাদ’ বাংলাদেশের গলার কাঁটা হয়া আছে। না পারতেছে গিলতে, না পারতেছে উগরাইতে।

মানে, হিসট্রি’তে আপনি কখনোই উলটা যাইতে পারেন না আসলে, উনিশ-শতকের ‘বাঙালি জাতিয়তাবাদ’ কখনো ফিরা আসবে না, ইভেন ইনডিয়ার অধিনে থাকা ‘পরাধীন বাংলা’ নিজেদেরকে আলাদা কইরা ফেললেও কনফেডারেশনালর স্টেইট হওয়াটাই বেটার অপশন।… আর বাংলাদেশ রাষট্র তৈরি করার ভিতর দিয়া ‘বাঙালি জাতিয়তাবাদ’রে রিভাইব করা হয় নাই, বরং পুব-বাংলারেই ‘বাংলা’ হিসাবে রি-ক্লেইম করা হইছে; ১৯৪৭-এ একবার, এবং ১৯৭১-এ আবার।

৩০.১২.২০২৩

কেনটনমেনট এলাকার ভিতর দিয়া হাঁটতেছি, হঠাৎ দেখি এক লোক সালাম দিয়া বসলো, মানে ঠিক ‘সুন্নতি সালাম’ না, বরং অফিসার’রে রেংকের কারনে যেইরকম সালাম দেয়, অইরকম। তখন খেয়াল করলাম ঘটনাটা।

গতকালকে নাপিত চুল কাটতে গিয়া বেশি ছোট কইরা ফেলছে, মোটামুটি আর্মি-কাট হইছে, তারপরে একবেলা না খাওয়ার কারনে ভুঁড়িও কিছুটা কম দেখাইতেছে; এর আউটকাম মেবি এই সালাম।

এরপরে সিএসডি’তে ঢুকলাম একটা জিনিস কেনার জন্য, দেখি কাউনটার একটা ক্লোজ; মিনিটখানেক যাইতে না যাইতেই একজন সিনিয়র-গোছের একজন অই কাউনটারে দাঁড়ায়া বললেন, এইখানে দেন! জিনিসগুলা হাতে নিয়া কইলো, সিএসডি কার্ডটা দেন, মানে, ডিসকাউনট-কার্ডটা। আমি কইলাম, এই কার্ড তো নাই। তারপরও সে ‘দায়িত্ববোধ’ থিকা ‘বিরত’ হইলো না, ভাবলো যে, কার্ড হয়তো ভুলে রেখে আসছি। কিনতু “মোবাইল নামবার দিলেও হবে” – এই বইলা ‘বিব্রত’ করলো না।

সিএসডি থিকা বাইর হওয়ার পরে দেখলাম খোলা জায়গায় সিঙ্গারা, সমুচা, পপকর্ন বেচতেছে। দোকানদার টিনএজার। সে আর একই ভুল করবে বইলা মনে হইলো না।

পার্কে রিটায়ারড বুড়া বেটা-মানুশেরা আর একটু বুড়ায়া যাওয়া সুন্দরি-মহিলারা তাদের বাচ্চাদের নিয়া হাঁটতেছে। সবাই হাসি-খুশি ভাব ধইরা আছে। মাপা মাপা হাঁটার মতন মাপা মাপা হাসি তাদের মুখে। ইলেকশনের প্রচারনার মতন। নরমাল।

/শেখ সাদি

Leave a Reply