Ken Laidlaw-এর আঁকা ছবি।
———————
সে যে আমারে দেখে নাই, এইটা সে আমারে মনে করায়।
আমি কই, থাক, থাক; সেইটার ত দরকার নাই। আমি মনেহয় দেখছিলাম, আপনি যে দেখেন নাই।
না, না, আমি ত আপনারে দেখি-ই নাই। মানে, দেখার মত ভিজিবল আপনি হইতে পারেন নাই।
ঠিক আছে, সমস্যা নাই। যেহেতু আপনি দেখার এরিয়া বাড়াইতেছেন, ছোটখাট, ভিজিবল-হইতে-না-পারা জিনিসগুলারে ইগনোর করতে পারাটা ভালো। খামাকা টাইম নষ্ট হয় না।
না, না, আপনি জিইতা গেলে ত হবে না। এত বয়স হইছে তারপরও আপনি যে ভিজিবল হইতে পারতেছেন না, এইটা নিয়া বেদনা থাকবো না আপনার। ধরেন, মদ একটু বেশি খাইলেন; একটা কবিতা বেশি লিখলেন…
তা ত করাই যায়। করবো নে। আপনারে কি ট্যাগ দিবো? যাতে ব্যাপারটা বোঝা যায়?
দিতে পারেন। তারপরও আমি কিন্তু আপনারে দেখি নাই।
হুম, না-দেখায় অ-দেখারে ত আমরা ভুইলাই যাই।
ব্যাপারটা তা না, এইটা আপনার শান্তিবাহিনী’র ভাবনা! আপনারে দেখি নাই আমি, আপনি আর অ-দেখাতে নাই, না-দেখায় ট্রান্সফার হয়া গেছেন অলরেডী! এইটা আমার দেখা-ই, আপনি দেখতে পাইতেছেন না!
তাইলে ত ব্যাপারটা দেখার চেষ্টা করতে হবে। মানে, আমার অ-দেখাটা আর ভ্যালিড নাই, আপনার না-দেখাটাই ভ্যালিড?
জ্বি ভাইজান, এইটা বুঝাইতে আপনারে এতোক্ষণ লাগলো!
তাইলে ত সাবজেক্টিভিটি নিয়া কবিতা লিখতে হবে।
হেহেহে… লেখেন না, লেখেন! কতকিছুই ত লেখলেন, এইটাও লিইখা রাখেন!
লিখছিলাম ত মনেহয়: …কেউ কাউরে দেখি না; না-দেখায়, অ-দেখায় ভুলেই যাই…
এইসব মনে করায় মনে হইতে পারে যে, কতকিছু জানি দেখা হয়া গেছে, আসলে ত দেখেন নাই।
হুম, না-দেখারেঅ-দেখা ভাইবা নিছি। এখন এই কনফেশনরেও মাইনা নেয়া যাইতেছে না। মাইনা নিলেও এইটা একটা না-মানাই আসলে। মানে, লেখক ব্যাপারটা থিকা বাইর হওয়া যাইতেছে না!
এইটা অবশ্য টাফ। কোনরকম একটা সমঝোতায় আসা যায় কিনা দেখেন।
না, না, এইটাও সম্ভব না। চলেন আমরা শুরুতেই ফেরত যাই।
মানে, আমি যে আপনারে দেখি নাই সেইটা মনে করাবো।
হ্যাঁ, তখন আমি অন্য আরেকটা কিছু বললাম। ধরেন কইলাম, অ-দেখারে কি দেখা যায় না-দেখায়!
আমি কি চুপ কইরা থাকবো তখন?
না, না, আপনিও বলেন কিছু…
আপনার টেক্সটের ভিতর আমি নিজেরে ভিজিবল রাখতে চাই না। আপনি একটা বড় রকমের ফাউল!
আমি আসলে আমার বাইরে আপনারে ভিজিবল করতে পারি না। এইটা বোঝার চেষ্টা করেন।
তাইলে এই কনভারসেশন আপনি স্টার্ট করলেন কেন?
আমি ভাবছিলাম এইটার একটা ওয়ে-আউট বাইর করা যাবে।
ত, বাইর করেন!
দেখেন, এখন আর এইটা পসিবল না। আমরা টেক্সটের ভিতর, মিনিংয়ের ভিতর ট্রাপড হয়া গেছি।
আপনিই ত আমারে ট্রাপে ফেলছেন।
না, আপনি ত আমারে কইছিলেন এইকথা।
কইছিলাম ঠিক আছে, কিন্তু ওইটা ত রিয়ালিটিতে; কোন একটা শীত-আসার-আগে সন্ধ্যায়। আমি ত সেইটা কইতেই পারি। টেক্সটের ভিতরে ত আনি নাই! আপনে মিয়া কালপ্রিট, আমারে নিয়া লিইখা লেখক হইতে চান।
এইটা সত্যি না! এখন সত্যি জিনিসটার ভিত্রে আমি যামু না, আপনি যতই ইনসিস্ট করেন। আপনারে আমি বন্দী করি নাই টেক্সটে। আপনি আপনার ইনোসেন্স নিয়া আমারে আক্রমণ করছেন যে, পারলে বেটা লেখ, এইটা নিয়া! অ্যা্ন্ড আই জাস্ট ডিড দ্যাট! রিয়ালিটিতে আপনি যা করতে পারেন, টেক্সটে আমি তারে কেন ইগনোর করবো! আপনার না-দেখা নিয়া আপনে গিয়া লেখেন গা! লিখছেনও মনেহয়; এইসব নিয়া ত আমি ওরিড না, কারণ আপনার লেখা হয় না।
এই কারণে আপনি নিজে লেখতেছেন? আর ভাবতেছেন, কার কার কি কি ছিঁইড়া ফেলছেন। ভাই যদি আপনি ছিঁড়তেই পারতেন আপনারে আমি না-দেখার ভিত্রে ফেলতে পারলাম কেমনে আর সেইটা কইতেও পারলাম আপনার মুখের উপ্রে; সেইটা নিয়া ভাববেন না আপনে?
আমি জানি আপনি আমারে লুজার ফিলিংসটা দিতে চান। কিন্তু আমি ত এই ধারণাটার ভিত্রে নাই যে, লুজার বইলা কিছু আছে, যা আছে সেইটা একটা পারসপেক্টিভ আর সেইটা আপনার। আপনার ভাবনার ফ্রিজে আমি নিজেরে কেন ঢুকাইয়া রাখবো! এইটা ত সম্ভব না কোনভাবেই। আমার জায়গায় আপনি হইলেও ব্যাপারটা একই; চেইঞ্জ হয় না কোন।
আরে ভাই, তাই বইলা এইটা নিয়া লেখবেন আপনি!
আপনি কি বলেন, স্টপ করবো তাইলে।
ফয়সালা ত হইলো না কোন!
ফয়সালা করলে ত সেইটা আমারই হইবো, আমি ত লেখক। আপনি ত ভাই নাই এইখানে।
কোনভাবেই কি নাই? মানে, আমারে পুরাপুরি খাইয়া ফেলতে পারতেছেন আপনে?
না, কিছু চিহ্ন ত থাকতেছেই; কিন্তু সেইটা কোনভাবেই আপনারে ভ্যালিড রাখতে পারে না। আপনি যে দেখেন নাই, এইটা আর থাকে না; মনেহয় আমি ত ছিলামই, আপনি চাইলে দেখতে পারতেন বা দেখছিলেনও হয়তো, কিন্তু আপনি যে দেখতে চান নাই এবং সেইটা যে সম্ভব আপনি সেইটাই প্রমাণ করতে চাইছিলেন।
প্রমাণ করতে পারি নাই?
পারছেন।
তারপরও আপনে হিরো আর আমি ভিলেন।
খালি সেইটাই না, আমি যদি ভিলেনও হই, আমি আসলে অ্যান্টি-হিরো। এই পারসেপশন লুকাইয়া ফেলা সম্ভব না।
আমার মনেহয় আপনি চেষ্টা করতে পারতেন। আপনে মন থিকা যেইটা মানতে পারেন নাই সেইটারে আপনি টেক্সটে ট্রান্সফার করতে পারেন না; কিন্তু না-মানার কোন যুক্তি না দিয়া আপনি নিজের ভিজিবল না হইতে পারা’রে গ্লোরিফাই করতে চাইছেন। এইটা একটা লিটারারি ক্রাইম, আপনি টেক্সটের ঘাড়ে চাপাইতেছেন।
অ্যাজ অ্যা রাইটার, না-দেখার আমি অ্যাজিউমও করতে পারি না। আমি খালি ভাবতে পারি যে, হয়তো আপনি আমারে দেখলেন না, কিন্তু আপনি যে আমারে দেখতে গিয়াও দেখলেন না সেইটারে না-দেখলে আমি ত আর লিখতেই পারার কথা না।
এইসব কথা-বার্তা আসলে খামাখাই কইতেছেন আপনি। এইসব ধুন-ফুন স্যামুয়েল বেকেটরাই কইরা থইয়া গেছে না! তাইলে আবার কেন?
এইটা ত ঘটতেছে এখন। এখন যেইটা ঘটতেছে সেইটার কথা আমি বলবো না!
ঠিক আছে, যান; বলেন গিয়া, আপনারে দেখি নাই আমি।
আপনার না-দেখা দেখছি ত আমি! তাই লিখতেছি। না-লিখলে কেমনে দেখতাম আমাদেরকে আমি আর এই দেখা দিয়াই ডিফাইন কইরা ফেলতেছি যা যা কিছু দেখতে পাই নাই আমি।
আপনি দেখেন-ই নাই তাইলে!
আপনার না-দেখাটারেই দেখছি খালি।
তার মানে আমি ত আপনারে দেখাইতে পারছি।
কিন্তু আপনি যা দেখাইতে চাইছেন তার বাইরে আপনারেও আমি দেইখা ফেলছি।
ঠিক আছে, আপনারেও কিছুটা দেখা যাইতেছে ত এইখানে!
ও.কে.। তাইলে ত মনেহয় ঠিকই আছে।
মানে, এট্টুকই চলে? এইটুক এক্সপেক্টশন হইলে ঠিকই আছে। অবশ্য আমরা আরেকটা সময়েও চাইলে আবার চেষ্টা করতে পারি।
কোনটা? যে, আপনি আমারে দেখেন নাই?
হ্যাঁ, আমি ত আপনারে দেখি নাই আসলে!
ঠিক আছে, এইটা ব্যাপার না। এইরকমটা হয়, মানে হইতেই পারে।
হেহেহে… ঠিক আছে। পরেরবার দেখার চেষ্টা করবো নে। না, দেখলে মাইন্ড কইরেন না আবার!
আমি ত না-দেখা’রে অ-দেখাই ভাইবা নিতে পারি, সুতরাং সমস্যা হওয়ার কথা না। শীতকাল হইলে কুয়াশার কথাও ভাবা যাইতে পারে।
আপনি অন্ধকারের কথাও ভাবতে পারেন। সবসময় লাইট থাকে না ত আর, শহরের রাস্তায়।
হেহেহে… কবিতা দিয়াই শেষ করি তাইলে –
অনেক কবিতা লিখতে লিখতে
লিখতে থাকার ভিতরে
কবিতার দালানরে আমি ধসাইয়া দিবো,
মিশাইয়া দিবো ধূলাতে, অন্ধকারে…
বাদুড়ের মতো অন্ধ হয়া তখন
সবাই খুঁজতে থাকবে; বলবে
পুরানা-দিনের সিনেমার নায়িকার মতো
কবিতারে ত আমরা খুঁইজাই পাই না!
অনেক কবিতা লিখতে লিখতে
আমি নিজেরে বোঝাইতে পারবো ত,
অনেক-কবিতাই তাইলে লেখা হইলো শেষে
অন্ধকারে?
Leave a Reply