একটা ‘সত্যি’ আবিষ্কার করার চাইতে যেইখানে সত্যি জিনিসটারে ফিল করা যায়, সেই গ্রাউন্ডটারে স্পষ্ট করতে পারাটা বেশি জরুরি

কারণ, ‘সত্যি’ জিনিসটা যে ফিক্সড না – তা না; বরং একেকটা গ্রাউন্ডে একেকভাবে দেখা যায়, ফিল করা যায়। যেমন ধরেন, আপনার হইতেছে মাথা-ব্যথা; কিন্তু যদি জিগানো হয়, আপনার পেট-ব্যথা নাকি পা-ব্যথা? সেইখানে ‘সত্যি’ উত্তর’টা কেমনে দিবেন আপনি – এই প্রশ্নের কনটেক্সটের বাইরে না গিয়া?

মানে, সার্টেন কনটেক্সট আপনারে ‘সত্যি’টারে দেখতেই দিবে না! সেইখানে প্রশ্ন’টা এইটা না যে, ‘সত্যি’ কোনটা? বরং কোন গ্রাউন্ড বা কনটেক্সট বা রিয়ালিটি ‘সত্যি’টারে রিভিল করতে পারে, আর কোন’টা আড়াল কইরা রাখে – সেই জায়গা’টারে লোকেট করতে পারাটা দরকার, প্রথমেই। যে কোন আলাপে যাওয়ার আগেই।

এখন, এই করোনা ভাইরাসের সিচুয়েশন যে সামাল দিতে পারতেছেন না বাংলাদেশের গর্ভমেন্ট – এইটা মোটামুটি স্পষ্ট। কোন ডিসিশান নিতে পারতেছে না, ইনফরমেশন হাইড করতেছে, তাড়াহুড়া বা আর্জেন্সি’র কিছু নাই; ডাক্তার-নার্সদের চাইতে পুলিশ-মিলিটারি’র উপ্রে ভরসা করতেছে… এইসব হইতেছে। এইগুলা দেইখা আপনি যদি বলেন, আওয়ামী লীগেরও দোষ আছে, কিন্তু মেইন সমস্যা হইলো, রাষ্ট্রযন্ত্রের; ‘রাষ্ট্র একটা নিপীড়িক-যন্ত্র!’ (ভাউরে ভাউ, বাংলা-ভাষা এইটা!) এইটা সিপিবি-মার্কা একটা কাজেরই এক্সটেনশন হবে। কারণ এইটা বলা মানে একটা ‘পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের’ দিকে যাইতে চাওয়া, যেইখানে আওয়ামী লীগ’রে ‘মাফ’ কইরা দেয়া যায়, যেইখানে ‘মাফ’ চাওয়ার কোন কথা-ই আসে নাই।

আওয়ামী লীগের ‘দোষ’ তাইলে কি? গনস্বাস্থ্যের কিট নিতেছি, নিতেছি বইলা নাটক করার পরে এই কিট কাজের না – এইটা বলা? টাকা ছাপাইতে না চাওয়া? গার্মেন্টস নিয়া কোন ডিসিশান না নিতে পারা?… এইগুলা হইতেছে সিমটম; ‘কারণ’ না। রিয়ালিটি হইতেছে আওয়ামী লীগ অনেক আগে থিকাই জনগণ’রে বা পাবলিকরে আর গোণায় ধরে না; পাওয়ারে থাকতে হইলে পাবলিক’রে পাত্তা দেয়ার যে কোন দরকার নাই, খালি মাঝে-মধ্যে ইউজ করা লাগে – এই ‘সত্যি’ আওয়ামী পয়লাবার প্রমাণ করছিল ১৯৯৬ সালে সরকারি আমলাদেরকে নিয়া ‘জনতার মঞ্চ’ বানায়া। আর ২০০৭ সালের ওয়ান-এলেভেনের পরে কমপ্লিটলি আমলা-পুলিশ-মিলিটারি’র একটা দলে পরিণত হইছে।

মানে, বাংলাদেশের রিয়ালিটি’টারে বুঝার মেইন গ্রাউন্ড’টা হইতেছে এইখানে একটা ‘পলিটিক্যাল’ দল পাওয়ারে আছে, যাদের মেইন কাজ হইতেছে পাওয়ারে টিইকা থাকা; পাবলিক মরতেছে না বাঁইচা আছে – এইটা এদের চিন্তার জায়গা না। এই রিয়ালিটির জায়গা থিকা যদি আপনি না দেখতে পারেন, তাইলে সেইটা ভুল-ই হবে, সবসময়। Continue reading

মানি হেইস্ট

Money Heist নিয়া কিছু কথা বলছিলাম আগে; তো, এর বাইরেও আরো ৩টা জিনিস মনে হইছিল, তখন আর বলা হয় নাই। এখনো যে খুব বলতে ইচ্ছা হইতেছে, তা না, যেহেতু মনে হইছিল, ভাবলাম বইলা রাখি।

(জানুয়ারি মাসে লেখা পয়েন্ট দুইটা আগে দিতেছি, আর কয়দিন আগে যেইটা ভাবছিলাম, সেইটা পরে রাখতেছি)

১. মানি হেইস্টের থার্ড পার্টে রেকোল (পুলিশের ইন্সপেক্টর, চিফ নেগোশিয়েটর) যখন জাইনা যায় যে, প্রফেসরের কোন সোশ্যাল সিকিউরিটি নাম্বার নাই, যখন ম্যানুয়াল থিকা ডিজিটাইজড করতেছিল ন্যাশনাল ডাটাবেইজ, তখন সে আর তার আইডি রিনিউ করে নাই, তখন শে এই ডায়ালগ’টা দেয় যে, তুমি তো বাঁইচা নাই, এগজিস্টই করো না, তাইলে তোমারে মাইরা ফেললে তো কিছু যায় আসে না, কারণ তুমি তো নাই!

খেয়াল করেন ব্যাপার’টা, ন্যাশনাল আইডি কার্ড করা হয় মানুশ গোণার লাইগা, আপনারে একটা আইডেন্টিটি দিয়া আরো আরো ‘নাগরিক সুবিধা’ ‘সিকিউরিটি’ দেয়ার লাইগা… মানে, এইরকমই তো বলা হয়, তাই না? কিন্তু দেখেন, এইটা তার উল্টাটা; আপনার আইডেন্টিটি’টারে, এগজিসটেন্সটারে এইটা দখল কইরা ফেলে। একটা ন্যাশনাল আইডি কার্ড দিয়া আপনারে ‘একটা পরিচয়’ দেয়া হয় না, বরং আপনার এগজিসটেন্সটারেই নিয়া নেয়া হয়, আপনি আছেন কি নাই – সেইটার ফয়সালা হয়!

এইটা আমরাও জানি। প্রফেসরও জানতেন, এই কারণে নিজের আইডেন্টিটি গোপন রাখার লাইগা এই কাজ করে সে।

মানে, ন্যাশনাল আইডি কার্ড দিয়া আমাদের আইডেন্টিটি যাচাই করা হয় না খালি; এইটা ছাড়া আমরা মানুশ হিসাবে নিজেদেরকে দাবি-ই করতে পারবো না!

ব্যাপারটা আমরা যে জানি না – তা না; কিন্তু এই এক্সটেন্ড তক আমরা মেবি ভাবতে রাজি না, এতোটা।

২. এই সিরিজে আরেকটা জিনিস আছে। মোরাল জায়গাটা। প্রফেসর যেমনে রেকোল’রে কনভিন্স করে ‘লিকুইডিটি ইনজেকশনের’ আইডিয়াটা দিয়া।… মানে, যে কোন ডাকাত’রেই মনে মনে রবিনহুড হইতে হয় আসলে। (বা পুলিশ হইলে মাসিহা। মানে, মোরাল একটা জায়গা রিকোয়ার্ড। পুলিশের জায়গাটা যে আজাইরা, এইটা আমরা জানি, কিন্তু ডাকাতদের জায়গাটাও কাছাকাছি রকমের জিনিসই আসলে।) আর এই জায়গাটা ফানি মনে হইতে পারে; কিন্তু দরকারি আসলে। যখন ধরেন, কাস্টমসে চাকরি কইরা ঘুষের টাকায় কেউ মসজিদ বানায়, এইরকম টাইপের জিনিস।

যে একটা ‘অন্যায়’ আমি করতেছি, কিন্তু সেইটা দিয়া একটা ‘ভালো’ কাজ তো আমি করছি! বা এইখানে প্রফেসর যেইটা বলে, লিকুইডিটি ইনজেকশন করে পলিটিশিয়ান, বুরোক্র্যাট, বিজনেসম্যান’রা, তো সেইটা আমরা করতেছি; ওই পাওয়ার’টা খালি আমরা নিতেছি! মানে, একটা মোরাল গ্রাউন্ড লাগে আসলে।
Continue reading

‘সত্যি’ বলার অথরিটি

ছোটবেলায়, মানে এইটিইসের দিকে, এই গুজব’টা শুনছিলাম। যে, ইসরাইলি’রা কেমনে প্যালেস্টানিদেরকে তাদের বাসা-বাড়ি থিকা দেখায়া দিছিলো। তখন তো ইয়াসির আরাফাত, ইন্দিফাদা’র… ভিতর দিয়া প্যালেস্টাইনিরা একভাবে ঘুইরা দাঁড়াইতেছিল, তো, উনাদের ভার্সন অফ ট্রুথও পাওয়া যাইতো কিছু।pullquote] [/pullquote]

গুজব’টা এইরকম ছিল: কোন একদিন প্যালেস্টাইনি রেডিও থিকা ঘোষণা আসলো যে, কোন সামরিক মহড়া বা কিছু হবে, প্যালেস্টাইনিরা যাতে তাদের বাড়ি-ঘর থিকা দূরে একটা জায়গায় সইরা যায়, একদিনের জন্য; তো, এই রেডিও ঘোষণা’রে সত্যি মনে কইরা প্যালেস্টাইনিরা যখন সইরা গেছে, তখন নাকি আম্রিকান সেনাবাহিনি হুইদিদেরকে অই বাড়ি-ঘরগুলাতে ঢুকায়া দিছে। তো, মুসলমানদের লগে সবসময় চিট করা হইতেছে, ইহুদি’রাও এইরকম চিট কইরা প্যালেস্টাইনিদের জায়গা-জমি দখল করছে!

এইটা মেবি তখনকার কন্সপিরেসি থিওরি’রই একটা ভার্সন। কিন্তু আমি পরে কয়েকবার গুগুল-টুগলে সার্চ দিয়া দেখছি, ‘ফ্যাক্ট চেকিং’ 🙂 এর মতন, এইটা সত্যি না মিথ্যা – এইরকম কোন আলাপও দুনিয়ার কোথাও নাই। এমনকি ইহুদি বসতি কেমনে শুরু হইলো ইসরাইলে এই নিয়া এনথ্রোপলিজিক্যাল কোন আলাপও পাই নাই। (কারো কোন রেফারেন্স জানা থাকলে দিয়েন প্লিজ। একটু দেখার ইচ্ছা হইতেছে।)

তো, সমস্যা’টা এইটা না যে, মিথ্যাগুলা, ভুলগুলা নাই হয়া যাইতেছে; বরং সত্যি জিনিসটা যেইভাবে অ্যাপিয়ারড হইতেছে, সত্যের যেই অথরিটি তৈরি হইতেছে, সেইটারে আমি ভয় পাইতেছি। গুগুলে তো এই নিয়া কিছু নাই – ও, তাইলে তো এইটা সত্যি না! বা উইকিপিডিয়া তো কিছু বলে নাই এইটা নিয়া – তাইলে তো এইটা মনেহয় সত্যি না! এইরকম সাবট্রাকশনগুলারে ডরাইতেছি আমি।

Continue reading

সাকসেসফুল হওয়াটা কখনো সাহিত্যের লক্ষ্য হইতে পারে না

ব্যাপারটা এইরকম না যে, সাহিত্য কইরা সাকসেসফুল হওয়া যায় না; কিন্তু সাকসেসফুল হওয়াটা কখনো সাহিত্যের লক্ষ্য হইতে পারে না আর কি!

সাকসেস ইন এভরি সেন্স!

সাহিত্য কইরা টাকা-পয়সা কামানো’টা যে সাকসেস না – তা তো না; তবে কমদামি সাকসেস। :p সোসাইটি’তে লোকজন আপনারে রাইটার হিসাবে চিনলো, লেখা না পড়লেও নামে চিনে, সেলিব্রেটি না হইতে পারলেও কাল্ট এক রকমের; পপুলার মিডিয়া আর আন্ডারগ্রাউন্ড সাহিত্য-গ্রুপগুলা আপনারে চিনে; ‘সাহিত্য সমঝদার’রা’, প্রবীণ ও নবীন 🙂 রাইটার’রা আপনার লেখা নিয়া কথা কয় – এইটাও তো সাকসেস! বা প্রাইজ-টাইজ পাওয়া, বাংলা একাডেমি কিছুটা গ্রাম্য হইতে পারে 🙂 , কিন্তু ধরেন, বুকার-টুকার বাদেও, নেপাল-নিকারাগুয়ার প্রাইজ পাইলেও তো সাকসেস মনে হইতে পারে। আরো কিছু রকম হয়তো আছে, সাহিত্যে সাকসেসফুল হওয়ার।

মানে, সাহিত্য কইরা সোশ্যালি সাকসেসফুল হওয়ার কোন ঘটনা যে নাই – তা তো না! সাকসেসের প্যারামিটারগুলা একটু ডিফরেন্ট। তো, এইরকম সাকসেসফুল হওয়ার লাইগা সাহিত্য করা যায় নাকি! আমার মত হইলো, যায় না। আপনি লিখতে পারেন, আর সেইটা করেন বইলা পাবলিক বা সাহিত্য-সমাজের লোকজন যদি আপনারে চিনে, আপনার লেখা যদি ওয়েল-একসেপ্টেড হয়, কমিউনিকেট করে, প্রাইজ-টাইজ পান, ব্যাপার’টা ভালো তো! কিন্তু এইসব পাওয়ার লাইগা কি কেউ লেখে নাকি? মানে তখন লেখার পুরা পারপাসটাই ডাইলুট হয়া যাওয়ার কথা না? লিটারেচার আর এন্টারটেইনমেন্ট তো একই জিনিস না!…

Continue reading

‘খাঁটি’ বাংলাদেশি কবি আল মাহমুদরে নিয়া একটা কথা

আল মাহমুদের কবিতা তো ভালো। 🙂 (মানে, আমি উনার কবিতার একটা ক্রিটিক করতে চাইতেছি আসলে, এইজন্য আগে-ভাগে মাফ চাওয়ার মত বইলা নেয়া যে, উনার কবিতা ‘ভালো’।) কিন্তু উনার কবিতার এস্থেটিক্যাল যেই জায়গা, সেইটাতে আমার না-রাজি’র জায়গা’টা আগেও বলছিলাম মনেহয়; এখন আরেকবার বইলা রাখতে চাইতেছি।

আমার ধারণা, আল মাহমুদ’রে যে কলকাতা-পন্থী এস্থেটিক্সরাও নিতে পারেন, এর একটা মেজর কারণ হইতেছে, বাংলাদেশ’রে ‘গ্রাম-বাংলা’ হিসাবে দেখানোর যে তরিকা, সেইখানে উনার কবিতা খুবই ভালোভাবে ফিট-ইন করতে পারে। মানে, বাংলাদেশে যে গ্রাম-বাংলা নাই – তা তো না 🙂 কিন্তু ‘বাংলাদেশ মানেই যে গ্রাম-বাংলা’ – এই নজির হিসাবে উনার কবিতারে অনেকবেশি নেয়া যায়। মানে, ‘আল মাহমুদের কবিতা হইতেছে বাংলাদেশের কবিতা’ – এইরকম স্টেটম্যান্ট পাইবেন। তো, কোন বাংলাদেশ? বা কেমনে বাংলাদেশ? – এই জিনিসগুলা নিয়া ভাবতে গেলে, ব্যাপারটা দেখতে পারাটা আরো ইজি হইতে পারে মনেহয়।

তো, এর এগেনেস্টে শহীদ কাদরী’র ‘শহুরে’ বা শামসুর রাহমানের ‘মফস্বলী’ বা ‘মিডল-ক্লাসে’র ‘বাংলাদেশ’ বেটার – এই কথা আমি বলতে চাইতেছি না। 🙁 বরং এই যে ‘গ্রাম-বাংলা’রে ‘হাজার বছরের বাংলাদেশের ঐতিহ্য’র গর্তের ভিতরে ফালানোর চেষ্টা, বা এইভাবে রিড করাটারে খুবই বাজে জিনিস বইলা মনে করি। আর এই জিনিস বা এই ‘বাংলাদেশ’ কলকাতার কলোনিয়াল কালচারের বানানো একটা জিনিস। Continue reading