বিপ্লব করাটা না, বরং বিপ্লব করার মতো কিছু যে নাই, এইটা খুবই ফ্রাস্ট্রেটিং একটা ঘটনা

বিফোর ট্রিলজির ফার্স্ট পার্ট বিফোর সানরাইজে রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে নায়িকা তাঁর বাপ-মা’র কথা কয় নায়ক’রে। প্যারিসের ‘৬৮’র মুভমেন্টে তারা একলগে ছিলো। এখন বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে কাজ করে। একজন আর্কিটেক্ট, আরেকজন অন্যকিছু। উনারা বিপ্লব করতে পারেন নাই, কিন্তু বিপ্লবের আদর্শ ভুলতে পারেন নাই। নিজেদের পারসোনাল লাইফ স্যাক্রিফাইস কইরা মেইনস্ট্রিমে ঢুইকা গেছেন, কিন্তু মেয়ে’রে বড় করতেছেন বিপ্লবের ভ্যালুগুলা দিয়া; ওপেননেস, পারসোনাল ফ্রিডম, চয়েসের জায়গা, এইসব। তো, শে কয়, তার লাগে যে, তার আর এখন কিছু করার নাই, তার সামনে বিপ্লব করার কোন ড্রিম নাই, তার বাপ-মায়ের যেমন ছিলো, তাদের ইয়াং বয়সে। এইটা খুবই ফ্রাস্ট্রেটিং একটা ঘটনা!

আসলেই, বিপ্লব করাটা না, বরং বিপ্লব করার মতো কিছু যে নাই, এইটা খুবই ফ্রাস্ট্রেটিং একটা ঘটনা। পরে অবশ্য নায়িকা বিপ্লব করার মতো ইস্যু খুঁইজা পায়, ইনভবলবও হয়। (কিন্তু আমার সন্দেহ হয়, বিপ্লব করাটা ভালো একটা প্রফেশনও হইতে পারে তখন।) তো, আমি যেইটা বলতে চাইতেছি, যে কোন বিপ্লব করার চাইতে আমি একটা বিপ্লব করতে যাইতেছি – এইটা একসাটিং একটা প্রোপজিশন হওয়ার কথা। বিপ্লব হয়া গেলে বরং বিপদে পড়তে হইতে পারে। 🙂 [তার মানে আবার এই না যে, বিপ্লব খুব বাজে জিনিস, করা যাবে না বা করার ইচ্ছা রাখা যাবে না; বরং আমি বলতে চাইতেছি একসাইটমেন্টের জায়গাটারে আন্ডারমাইন করাটা ঠিক হবে না।…] Continue reading

রোজা-রমজান

বাংলাদেশে পলিটিক্যাল আইডেন্টিটি হিসাবে মুসলমানি জোশ রাষ্ট্রীয়ভাবেই জোরদার হইতেছে।

কিন্তু এইরকম ফেভারেবল পলিটিক্যাল এনভায়রনমেন্ট থাকার পরেও কালচারাল স্পেইসে (যেমন ধরেন আর্টে, গল্প উপন্যাসে) হিন্দুধর্মের রিচুয়ালগুলার যেইরকম সেলিব্রেশন আছে, সেই জায়গায় ইসলামি রিচুয়ালগুলার ব্যাপারে বরং একরকমের অস্বস্তি আর রেজিসট্যান্স আছে। যেমন, রোজা রমজানের কথাই ধরেন।

মনে হইতেছিল, ১৯৭১-এ মুক্তিযুদ্ধের সময়ও মুক্তিযোদ্ধারা বা দেশের মানুষজন সেহরি খাইতেছেন বা ইফতার করছেন তো। কোন একটা মাইনর টেক্সটে পাইছিলাম, সেহরি খাওয়ার কথা, মুক্তিযোদ্ধাদের চিঠি বা এইরকম কোন বইয়ে, সোর্সটা মনে নাই এখন। 😞 কিন্তু দেখেন, যতো ‘সাহিত্য’ আছে, সেইখানে সিঙ্গেল একটা লাইনও নাই, মুক্তিযোদ্ধারা ইফতার করতেছে বা সেহরিতে খাইতেছে; এতো যে সিনেমা মুক্তিযুদ্ধ নিয়া, কোন সিনেমাতেও দেখছি বইলা মনে হইতেছে না, মানে, আমি মনে করতে পারতেছি না ওইরকম কোনকিছু। যেন, রোজা, ঈদ – এইসব ছিলো না বা নাই। ক্যালেন্ডারে দেখা যাইতেছে ১৯৭১ সালের অক্টোবর নভেম্বরে রমজান মাস ছিল।  অথচ বাংলাদেশে কোটি কোটি মানুষ বছরের পর বছর এই কাজ করতেছে তো! (এইটা নিয়া একটু পরে আবার বলতেছি।)

এইখানে আমার ফেভারিট পয়েন্টটা আবার বলি, আর্ট আর লাইফ দুইটা আলাদা আলাদা ঘটনা। আর লাইফের ঘটনা যতোটা না আর্টে রিফ্লেক্টেড হয় আর্টের ফ্যান্টাসি বা রিয়ালিটিটারে আমরা লাইফে পোর্টেট করার ট্রাইটা বেশি করি। তো, রোজা-রমজানের রেওয়াজটারে কালচারাল স্পেইসে কেন সেলিব্রেটেড না, সেই অস্বস্তিটারে এই জায়গাটা থিকা দেখলে কিছুটা ক্লিয়ার হইতে পারার কথা। যা কিছু আর্ট-কালচারে নাই, নতুন কইরা ইনসার্ট করাটা টাফ একটা জিনিস। এক তো মনে হবে, জোর কইরা করতেছেন, ‘হাজার বছর’ ধইরা লাইফে করতে থাকলেও। দুসরা জিনিস হইলো, লাইফের জিনিসগুলা যে আর্টে ট্রান্সফর্মড হয় না – তা না; সেইখানে আর্টরে ট্রান্সফর্মড করতে বা হইতে পারতে হয়; যেই শর্তগুলার ভিতর দিয়া একটা কালচারাল কনটেক্সটে ‘আর্ট’ জিনিসটা পসিবল হয়, সেই কন্ডিশনগুলারে নার্চার করা দরকার তখন। Continue reading

রিজন-বেইজড রিয়ালিটির অগভীর একটা কাদা-পানির গর্তের ভিতরে হাঁসফাঁস করতে থাকা কয়েকটা পুটিমাছের মতোন…

শিবব্রত বর্মণের ‘বানিয়ালুলু’ বইটা যারা পড়ছেন তারা কি একটা জিনিস খেয়াল করছেন যে, ১১ টা গল্পে একটাও ফিমেইল কারেক্টার নাই?

দুইটা গল্পে ‘স্ত্রী’র কথা বলা হইছে (সেইম-সেক্স ম্যারিজের কথা না বলাতে জেন্ডার হিসাবে ফিমেইল ধইরা নিতেছি); ‘ভেতরে আসতে পারি’ গল্পে একজন আছেন, যিনি মারা গেছেন, ধারণা করা হয়, তারে খুন করা হইছে; আর লাস্ট গল্পে স্ত্রী’র প্রেমিকরে খুন করে একটা কারেক্টার। খুব বেশি হইলে দুই-চাইরটা লাইন। মানে, আমি বলতে চাইতেছি না, গল্পগুলাতে এই যে প্যারালাল-ওয়ার্ল্ড, এইটা একটা পুরুষ-ওয়ার্ল্ড! 🙂কিন্তু এইটা একরকমের পুরুষ-ওয়ার্ল্ডের কথাই আসলে।

এমনিতে গল্পগুলা ক্রিসপি। ফার্স্ট দুইটা গল্প পইড়া মনে হইতেছিল, অন্য কোন গল্পের এক্সটেনশন। ‘বানিয়ালুলু’টারে মনে হইতেছিল পিটার বিকসেলের ‘আমেরিকা বলে কোন দেশ নেই’-এর সেকেন্ড পার্ট। আর সেকেন্ড গল্পটা হুমায়ূন আহমেদের ‘নিষাদ’-এর এক্সটেনশন! অবভিয়াসলি আমার ‘সাহিত্য-পড়া’র ঝামেলা এইটা। কিন্তু একইরকমের না হইলেও কোন না কোন রেফারেন্স দিয়াই তো আমরা কানেক্ট করি।

আরেকটা মুশকিল হইতেছে, কয়েকটা গল্প পড়ার পরেই টের পাওয়া যায় বাকি গল্পগুলা কই গিয়া শেষ হবে বা শেষে কি হবে; এক্স-ফাইলস সিরিজের এপিসোডগুলার মতো শেষটা খুবই প্রেডিক্টেবল হইতে থাকে। আর জার্নিটা বা প্রসেসটারও একসাইটেটমেন্ট কমতে থাকে; একটা কারণ মেবি বর্ণনাগুলা ভাসা-ভাসা, যেহেতু ‘আমরা জানি না’, যেহেতু আরেকটা দুনিয়ার কথা, এই দুনিয়ার শব্দগুলা জাস্ট ফ্লাওয়ারি কিছু জিনিস হয়া থাকে, ফানি না হইতে পারলেও।

এমনো মনে হইছে আমার, আরেকটা দুনিয়া মানে হইতেছে আরেকটা কনটেক্সট আসলে। যেমনে আমরা ‘সেক্যুলার’ দুনিয়া দেখি, এর বাইরেও দেখার আরো আরো কনটেক্সট আছে তো; মানে, এর বাইরে যারা আছেন, সবাই তো আর ‘জঙ্গি-সন্ত্রাসী’ না! Continue reading

দোস্ত, দুশমন

এইরকম একটা কথা আছে যে, মানুষের বন্ধু-বান্ধব দেখলে আন্দাজ করা যায়, মানুষটা কেমন। কিছু মিল না থাকলে তো আর দোস্তি হয় না। কিন্তু এর চাইতে আরো সিগনিফিকেন্ট মনেহয়, শত্রুতার ব্যাপারটা বা যার আপনি বিরোধিতা করতেছেন, সেই জায়গাটা। মানে, আপনি কারে শত্রু ভাবতেছেন বা কোন জিনিসগুলারে – সেইটা দিয়াও একটা মানুষরে বুঝা যাইতে পারে। দোস্তির মতোন শত্রুতাও, আমার কাছে মনেহয়, একটা লেভেলেরই ঘটনা, একটা সার্কেলেরই ব্যাপার। মানে, আমার যদি কনসার্ন না-ই থাকে, সেই জিনিসটারে তো আমার শত্রু মনে হওয়ার কোন কারণই নাই। দোস্তি আর দুশমনি একটা সার্কেলেরই ঘটনা, এইভাবে যে, আমরা কনসার্নড, বোথ পার্টি নিয়া।

আরেকটা জিনিস হইলো, এই কনসার্নড জিনিসগুলাই আমাদেরকে ডিফাইনড করতে থাকে বা থট-অ্যাক্টিভিটিরে ইনফ্লুয়েন্স করতে থাকে। এই কারণে কার সাথে দোস্তি করতেছি – এইটার যেমন একটা ভ্যালু আছে, কার সাথে দুশমনি করতেছি, সেইটারও ইমপ্যাক্ট আছে আমাদের লাইফে। Continue reading

সোসাইটিতে যে কোন ক্রাইম পাওয়ার-স্ট্রাকচারের লগে এসোশিয়েটেড একটা ঘটনা

সোসাইটিতে যে কোন ক্রাইম (খুন করা, সম্পত্তি দখল করা, রেইপ করা…) পাওয়ার-স্ট্রাকচারের লগে এসোশিয়েটেড একটা ঘটনা। এর বাইরে থিকা দেখতে গেলে কোনভাবেই পলিটিক্যালি এফেক্টিভ হওয়া পসিবল না।

যেমন, কিছুদিন আগে, পার্লামেন্ট ইলেকশনের আগে মাসুদা ভাট্টি’রে গাইল দিছিলেন মঈনুল হোসেন (বাজে কাজ করছিলেন উনি), তখন মাসুদা ভাট্টিরে যারে সার্পোট করছিলেন পাওয়ার-স্ট্রাকচারটারে ইগনোর করছিলেন (পরে মনেহয় অনেকে বুঝতেও পারছেন); একটা গুড কজ বা জাস্টিফাইড ইস্যুতেও পাওয়ারের ফেভারে কাজ করছেন আসলে। আর অর্গানাইজড মিডিয়াগুলি (বা সোশ্যাল মিডিয়ার পোলারাইজেশনগুলিও) এইরকম কেওস বানাইতে হেল্প করে, মেইনলি এইটাই উনাদের বিজনেস।

২.
তো, এখন যেমন, যেই ‘ভিলেন’ কারেক্টার’টা কন্সট্রাক্ট হইতেছে (ইভেন নগদ কোম্পানির অ্যাডেও), সে হইতেছে একজন ‘বয়স্ক’ ‘পুরুষ’। জেনারেলি, সোসাইটিতে সবাই না হইলেও এইরকম বয়স্ক পুরুষেরাই টাকা-পয়সা, জমি-জিরাতের মালিক। এই প্রটোটাইপটা আবার ‘ভদ্র’ ‘এক্সপেরিয়েন্সড’ হিসাবে কনজিউমড হয়। অথচ, এর এগেনেস্ট লার্জ একটা পপুলেশন থাকার কথা এই ‘বয়স্ক পুরুষদের’ যারা আসলে সোসাইটিতে, ফ্যামিলিতে করনাড হয়া আছেন। মানে, এই রিয়ালিটি নাই-ই একরকম এই প্রটোটাইপটাতে বা এর অপজিট রকমের বাইনারিগুলিই থাকতেছে – ভালো বুড়া-মানুষ ও খারাপ বুড়া-মানুষ, অথচ এই প্রটোটাইপটাই যে ইস্যু, সেইখানে আমরা যাইতে হেসিটেট করতেছি; মানে, পাওয়ারের সুবিধা-অসুবিধাগুলা নেয়াটা যতোটা সোজা, ফেইস করার ঘটনাটা এতোটা সহজ-সরল বাস্তবতা না; মোর কমপ্লিকেটেড একটা ফেনোমেনা।
Continue reading