০১.০১.২০২৪
পটকা ফুটানো কি ভালো না খারাপ?
পটকা ফুটানো কি ভালো না খারাপ? – এই নিয়া একটা আলাপ কয়দিন ধইরাই চলতেছে। কিনতু এইটা কোশচেন হিসাবে ন্যারো এবং মেইন জায়গাটারে আলাপের বাইরে রাখে বইলাই আমার কাছে মনেহয়। বরং কোশচেন’টা হইতেছে যে, বাংলাদেশে কোন ঘটনা সেলিব্রেট করতে চাইলে, কেমনে সেলিব্রেট করবো আমরা?
রাসতায় কি বাইর হইতে দিবে? মাঠে, পার্কে কি ফেমিলি, ফ্রেনডস নিয়া বইসা থাকতে পারবেন? মানে, আপনি যে সেলিব্রেট করতে চান, সেই খুশিটা আপনি দেখাইবেন কেমনে? কেমনে শো করবেন? [নিউ ইয়ার সেলিব্রেট করা যাবে কি যাবে না? – এইটা হইতেছে আরেকটা মাদারবোর্ড কোশচেন…]
আসল কথা হইতেছে, বাংলাদেশে যে কোন পাবলিক গেদারিং’রে, যে কোন সেলিব্রেশনরেই একটা খারাপ কাজ হিসাবে পোর্টেট করে এনটি-পিপল মিডিয়া এবং মিডিয়া-জম্বি পিপলরা। এইটা হইতেছে পয়লা কথা।
দুসরা কথা হইতেছে, তার মানে অবশ্যই এইটা না যে, পটকা ফুটানো দরকার বা এইটা খুব ভালো কাজ, বরং বাংলাদেশে সেলিব্রেশনের কোন উপায় নাই – এই জায়গাটারে হাইড করাটা কোন ভালো-কথা যে না, সেই কথাটাই বলা।
এইটা শুরু হইছে গত ১০-১৫ বছর ধইরা, যখন রাসতায় না নামতে পাইরা, বাসার ছাদে ছাদে সেলিব্রেশন শুরু হইছে। এখন ইদে-চানদেও পটকা ফুটানো হয়, আগেও হইতো, এখন এইটা বাড়ছে। কারন পাবলিক সেলিব্রেশনের উপায়গুলা বনধ কইরা দেয়া হইছে। রাসতায় নামলে খালি পুলিশ পিটাইবো না, ছাত্রলিগের কুততাগুলার হাত থিকা রেহাই পাওয়া যাবে না। একটা ডরের সমাজে আমরা আছি। চুপচুপ থাকাটা হইতেছে নিয়ম। এখন যদি বলাও হয়, কোন সমস্যা নাই রাসতায় নাইমা হাউকাউ করেন, বাজি ফুটাইয়েন না, তাইলেও ছাত্রলিগের ডরে কেউ টিএসসি’তে যাবে না, পাড়ার রাসতায় নামবে না; এবং এইটা বনধও হইছিল ছাত্রলিগের কু-কির্তির কারনেই (যারা জানেন, তারা মনে করতে পারবেন স্পেসিফিক ঘটনাটা)।
মানে, যে কোন সেলিব্রেশনই কিছুটা এনোনিয়ং, রেগুলার লাইফের চাইতে লাউড এবং ডিফরেনট। কিনতু এইটা ততটাই ‘নরমাল’ মনে হইতে পারে যতটা ‘নরমাল’ লাইফ আমাদের সেলিব্রেশনরে এলাউ করে। আনফরচুনেটলি, জুলুমের সমাজে যে কোন সেলিব্রেশনই পারভাশন ও উইয়ার্ড মনে হইতে থাকার কথা, বা একটা থোবড়ানো ঘটনাই হয়া উঠার কথা দিনে দিনে।
সেলিব্রেশন আমরা করতে পারবো-না না, সেলিব্রেশন করাটা যেন পাপ – এই খুঁতখুঁতানি আমাদের মনের মধ্যে সবসময় থাইকা যাওয়ার কথা। বাংলাদেশের এখনকার কনটেকসটে ব্যাপারটা কখনোই একটা ভালো-উপায়ে সেলিব্রেট করার ঘটনা না, বরং সেলিব্রেশন করাটা নিয়া ডরানোর ঘটনাই মেইন। যেইটা নিয়া আমার ধারনা, আমরা কথা বলতে নিজেদেরকে রাজি করাইতে পারতেছি না।
থার্ড এবং ক্রুশিয়াল জায়গা হইতেছে, এইরকমের সেলিব্রেশন খালি একটা ‘রেজিসটেনস’ না, একইসাথে একটা ‘রিপ্রেজেনটেশন’ও যে, মানুশ-জন তো ভালো আছে! কিছু এসথেটিক ছবি দরকার আমাদের। এবং সবচে ভালো হয় যদি আওয়াজ ছাড়া পটকা বানানো যায়। 🙂 পুলিশ-মিলিটারি যদি সরকারিভাবে এইগুলা সাপলাই দিতে পারে, বাজারে। যেইরকম ধরেন, গাজাতে মানুশ খুন করতে পারবে ইজরাইল, কিনতু কোন নিউজ হবে না, বা ছবি কেউ তুলতে পারবে না! ক্রসফায়ার যেই কারনে ‘সাকসেসফুল’ ছিল, যে এর কোন ছবি ছিল না; এখন ‘পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়ার’ও কোন ছবি পাইবেন না। এই ছবি না-থাকাটা ক্রুশিয়াল। একইভাবে, নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনের ছবিটা হইতেছে কোর-ঘটনা। খালি আওয়াজটা আমরা চাই না।
প্রিজনড-সেলিব্রেশন নিয়া কোন প্রবলেম নাই আমাদের। আমরা জাসট কোন হাউকাউ চাই না। পাখি মরে, বুড়া-মানুশ ও বাচ্চাদের সমস্যা হয়-না না, এইগুলা সাইডলাইনেরই আলাপ।
…
ধরেন, একজন মানুশ হাঁইটা যাইতেছে, তার গায়ে আপনি গু মাখায়া দিলেন। এতে কইরা লোকটার যত না অপমান হইলো, আপনি বরং বুঝতে পারলেন যে, জিনিসটা হইতেছে একটা গু।
তো, ছয়মাসের জেল দেয়ার মানে হইতেছে গায়ে গু মাখায়া দেয়া। বাংলাদেশের আইন-আদালত হইতেছে একটা টাট্টিখানা। এই টাট্টিখানার গু’য়ের গনধে সারা দুনিয়া মউ মউ করতেছে এখন।
০৪.০১.২০২৪
বাংলা-ভাষা কি নতুন চিনতার জন্য অসুবিধার?
এই আলাপে আমার পয়েনট দুইটা। এক হইতেছে, কোন ভাষায় কোন চিনতা নাই না, বরং কোন জায়গা থিকা আমরা দেখতেছি, সেইটা হইতেছে জরুরি ঘটনা, কোন ঘটনাগুলারে ‘চিনতা’ বইলা মার্ক করতেছি আমরা। এইটা হইতেছে অনেকটা মাওলানা রুমির এনেকডোটসের মতন যে, দুইটা গরু সারাদিন বাগদাদ শহরে ঘুরলো, কিছু খড়-বিচুলি ছাড়া আর কিছু দেখতে পাইলো না!
যেমন ধরেন, এক ধরনের আলাপ আছে, পাকিসতান পিরিয়ডে (১৯৪৭ – ১৯৭১) বাংলাদেশে তেমন কোন ইনটেলেকচুয়াল কাজ-কাম হয় নাই, অথচ অই সময়টারে কেমনে দেখতে হবে – অই দেখার নজরটাই আমরা তৈরি করতে পারি নাই এখনো। তার মানে, এইটা না যে, অনেক বড় বড় কাজ হয়া গেছে, যেইগুলা আমরা দেখতে পাইতেছি না, বরং কেমনে দেখবো – অই জায়গাটা তৈরি না হইলে, জিনিসগুলারে লোকেটই করতে পারার কথা না আমাদের।
দুসরা ঘটনা হইতেছে, সেনস অফ অরিজিনালিটির চিনতা’টা থিকা সরতে পারাটা ভালো; একেকটা ভাষায় চিনতার একটা হিসট্রি আছে, যেইটা একইরকম না; এই ডিফরেনসগুলারে মাইনা নিতে পারাটা বেটার, এক কইরা ফেলার চাইতে। অনেক ভাষায় অনেক কিছু নাই, অনেক ভাষায় অনেক কিছু থাকবেও না।
যেমন ধরেন, আলস্কায় এসকিমোদের ভাষায় বরফের ১০টা নাম আছে, এখন বাংলাদেশে তো এইটা থাকবে না! বা বাংলাদেশে যা ছিল ধানের/ভাতের ১০টা ভেরিয়েশন আছে (সেদ্ধ, আতপ, জাউ, পান্তা, খুদ, পোলাও…)।
মানে, সব ভাষারই আলাদা গঠন আছে, এবং ঘটনা হইতেছে ভাষাটা এনাফ ফেক্সিবল কিনা, নতুন চিনতা বা আইডিয়া আপনি সেইখানে নিয়া আসতে পারেন কিনা। এইখনে বাংলা-ভাষাতে ঘটনা হইতেছে, ভাষারে রিজিড কইরা রাখাটারে যে ‘শুদ্ধতা’ বইলা চালানো হয় – এইটা অথরিটির সমস্যা, ভাষার না।
বাংলাদেশে যেই ভাষায় আমরা কথা কই, সেই ভাষাতে লেখতেই আমরা ডরাই। আর অই ভাষাতে চিনতা করতে পারবো – এই সাহসটাই করতে পারি না। তো, এইটা যতটা না ভাষার সমস্যা, তার চাইতে নিজের ভাষারে ক্লেইম না করতে পারার ঘটনাটাই বেশি ঘটে আসলে।
বিদেশি ভাষায় যেইরকম বেশিদূর পর্যনত চিনতা করতে পারবেন না আপনি, কলোনিয়াল বাংলা-ভাষাতেও ফ্রিলি চিনতা করতে পারার কথা না আমাদের। ভাষা এইখানে অবসটেকল হিসাবে কাজ করে, মিডিয়াম হিসাবে না। সমস্যাটা এই জায়গাটাতে।
তারপরও নিজের ভাষাতে চিনতা করতে পারলেই নতুন নতুন চিনতা তৈরি হবে অটোমেটিকালি – তা না, বরং দুনিয়ার অন্য চিনতাগুলার লগে এনকাউনটার যত বেশি হবে, সেইটা ঘটতে পারার চানস তত বাড়বে আসলে। ভাষা খালি চিনতার জায়গাটারে আগায়া দেয় না, বরং নতুন নতুন চিনতা ভাষার জায়গাটারে এক্সপানড করে। যখন আপনার কনসার্ন হবে ‘শুদ্ধ-ভাষায়’ লেখা, সেইটা কখনোই ‘নতুন-চিনতা’র জায়গাগুলাতে রিচ করতে পারার কথা না; কারন যেই ইসটেনডারড অলরেডি তৈরি হয়া আছে, যেই নিয়ম অলরেডি আছে তারে এজ ইট ইজ রাইখা নতুন ইসটেনডারড, নতুন নিয়ম তো তৈরি হইতে পারে না!
মানে, আমি বলতে চাইতেছি, বাংলা-ভাষার সমস্যাটা মেইনলি ‘শিকখিত-গিরির’ সমস্যা, যেইটা একটা সমস্যা অবশ্যই, কিনতু সেইটারে বাংলা-ভাষার সমস্যা হিসাবে মার্ক করাটা চিনতা করতে পারার সাহস না-থাকারই ঘটনা অনেকটা।
Continue reading →