নোটস: মে, ২০২৪

০১.০৫.২০২৪
ছুটির দিন, বাজারে গেছি, সকালবেলায়। একজন ইয়াং বাজারি, হইতে পারে তার দুইজনের নতুন সংসার – জামাই-বউ, ছোট একটা বাচ্চাও থাকতে পারে, এইরকম। হাফ-কেজি হাফ-কেজি কইরা তরকারি কিনতেছে।

একটা ছোট্ট, সুন্দর, কিউট মিস্টি কুমড়া (ছবি তুলতে পারলে ভালো হইতো, কি যে কিউট, সেইটা দেখানো যাইতো…) দেখায়া দোকানদার’রে জিগাইলো, এইটার দাম কত? দোকানদার মিডল-এইজড, আমার বয়েসিই হবে; কইলো, ৮০ টাকা।

রাস্তার পাশে দোকান, তরকারির ডালাগুলার সামনে আমরা দুইজন ছাড়াও আরেকজন বয়স্ক মানুশ ছিলেন, অনেক জিনিস কিইনা দাম বুঝায়া দিতেছিলেন। দাম শুইনা উনি হাইসা দিলেন। ইয়াং বাজারি জাস্ট স্পিচলেস হয়া গেলো; অইটা সামলায়া, চেইতা গিয়া কইলো – বেচার কি দরকার, এই মিস্টি কুমড়া যাদুঘরে সাজায়া রাখেন!

মানে, আমরা চাইরজনই (ইয়াং-বাজারি, বয়স্ক লোকটা, আমি আর দোকানদার) চুপ হয়া গেলাম এই কথার পরে, কারন আমরা তো একভাবে ফিল করতেছিলাম যে, দারিদ্রের যাদুঘরের সামনে আমরা দাঁড়ায়া আছি! আর ছোট্ট, সুন্দর, কিউট মিস্টি কুমড়াটা আমাদেরকে দেখে হাসতেছে।

/মিস্টি কুমড়া

#বাজারেরআলাপ

০৫.০৫.২০২৪

গাড়িতে রেডিও শুনতেছি। মিউজিশিয়ান অর্নব এনডোর্স করতেছে রেডিও চ্যানেলটারে, ঢাকার নাম্বার ওয়ান রেডিও চ্যানেল।

পয়লা ইনডিয়ান-বাংলার একটা পুরান গান বাজাইলো, তারপরে শুরু হইলো নন-স্টপ হিন্দি গান! নো ডাউট, ঢাকার এক নাম্বার রেডিও চ্যানেল এইরকমই তো হওয়ার কথা। 🙂

এইগুলা ঠিক পলিটিকাল না-বোঝাও না, কালচারাল বলদ গার্বেজে সব জায়গা অকুপাইড

হাইওয়েতে গেলে গাড়ির রেডিও’তে গান শুনি; কিনতু আমি মনে করতে পারতেছি না গত কয়েক বছরে কোন রেডিওতে বাংলাদেশি সিনেমার গান শুনছি কিনা… মানে, বাংলাদেশের রেডিও স্টেশনগুলাতে বাংলাদেশি সিনেমার গান বাজানো যাবে না – এইরকম কোন নিয়ম তো নাই, তারপরও একভাবে ‘নিষিদ্ধ’ হয়া আছে জিনিসটা… কেন? 🙂

মানে, রেডিও’তে বাংলাদেশি সিনেমার গান বাজাইলে প্রেস্টিজ থাকবে, বলেন! পুরা পাংচার হয়া যাবে না! ‘লোকজন’ হাসাহাসি করবে না যে, কি ক্ষ্যাত! বাংলাদেশি-সিনেমার গান বাজায়!

জিনিসটা জাস্ট খেয়াল কইরা দেখেন, বাংলাদেশের রেডিও স্টেশনগুলাতে বাংলাদেশি-সিনেমার গান-ই ‘নিষিদ্ধ’, ট্যাবু হয়া আছে একভাবে… ‘সবাই’ (মানে, কালচারাল-বলদগুলা) ‘সম্মিলিভাবে’ (কোন গোপন চুক্তি না, বরং এক ধরনের মিচুয়াল আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়ের ভিতর দিয়া) এই কাজ করতেছে… ইন্টারেস্টিং না জিনিসটা?
Continue reading

নোটস: এপ্রিল, ২০২৪

০২.০৪.২০২৪

বুয়েটের ঘটনা হইতেছে ফলস কনশাসনেসের একটা ঘটনা; মানে, অনেক দিক থিকাই…

ফলস-কনশাসনেস বইলা আমি বুঝাইতে চাইতেছি যেইসব জায়গা থিকা ঘটনাটারে দেখার এবং বুঝার ট্রাই করা হইতেছে, পক্ষে এবং বিপক্ষে – দুইটা পজিশনই এমন-সব জায়গাতে গিয়া রিচ করতেছে, যেইটা ফার ফ্রম রিয়ালিটি-ই না, বরং এমন একটা কনশাসনেসের জায়গা থিকা অপারেট করে যেইট রিয়ালিটির জায়গাটারে এড়ায়া চলে…

যারা ইসটুডেনট-পলিটিকসের ‘পক্ষে’ কথা বলতেছেন, তাদের জায়গাগুলা তো আমরা বুঝতেই পারি, ‘ছাত্রলিগের গৌরব-গাঁথা’ যারা বাজাইতেছেন, বাকশালি-মিডিয়া ও বাম-বাটপারে’রা, এরা যেই ‘যুক্তি’ বা কনশাসনেস নিয়া কথা কন, অইটা যে ফলস প্রিমাইজ – সেইটা বুঝতে ‘বিজ্ঞানী’ বা বুদ্ধিজীবী হওয়ার দরকার পড়ে না; মানে, উনারা ‘অযৌক্তিক’ কথা বলতেছেন – তা কিনতু না, উনাদের একটা ‘যুক্তি’ আছে, উনারা পাগল না, উনাদের একটা কনশাসনেস আছে, সেইটা ফলস বা ভুয়া…

আর যারা বুয়েটে ইসটুডেনট-পলিটিকসের বিপক্ষে আছেন, তাদের ‘যুক্তিগুলা’র ভেরিয়েশন আছে; উনারা কিনতু ছাত্রলিগ’রে ব্যান করতে চাইতেছেন – এইটা বলতে পারতেছেন না, বলতেছেন কেউ পলিটিকস করতে পারবে না! তো, কেন পারবে না? বা উনারা কেন চান না? কারন বুয়েট হইতেছে একটা সফিটসেকেটেড জায়গা; একটা নেশনাল-ভারসিটি না, এইটা চবি, জবি, ঢাবি, রাবি না; এইটা ইসপেশাল, এই কারনে পারবে না।

তো, এইটা ইসপেশালিটি বা এলিট-ইসটেটাস ধইরা রাখার ঘটনা না! যে, একটা দুর্গ আমরা এখনো বাঁচায়া রাখছি! এইটা একটা ফলস-কনশাসনেসেরই ঘটনা। একটা জুলুমের শাসনে ‘নিরপেক্ষ’ হয়া থাকার কোন ইসপেইস এইখানে নাই; মানে, আপনি ‘মুক্তিযুদ্ধের বিরোধি শক্তি’ না এবং একইসাথে নয়া-বাকশালিও না – এইটা খালি পলিটিকাল এবং ইনটেলেকচুয়াল পজিশন হিসাবেই না, সোশাল এবং পারসোনাল পজিশন হিসাবেই পসিবল না; এইভাবে কনটিনিউ করতে চাওয়ার ইচ্ছা বা আকাংখা তো থাকতেই পারে, কিনতু পসিবল তো না!

আর না যে, সেইটারে এলিট-পজিশন বা অধিকার – যেই জায়গা থিকাই দাবি করতে চান সেইটা হাস্যকর না হইলেও বেশ করুণ একটা ঘটনা-ই তো; তার চাইতে বড় কথা কনশাসনেসের জায়গা থিকা এই ক্লেইম’টা অনেক আগে থিকা বাতিল (এবং ফলস) একটা জায়গা…

তারপরও ইনিশিয়ালি যে বুয়েটে এইটা টিইকা ছিল সেইটার একটা ট্রাডিশন তো ছিল-ই, তবে রিসেনট টাইমে পসিবল হইছিল আবরার ফাহাদের খুনের কারনে; এবং বুয়েটের ইসটুডেনটদের যুক্তিও এইটাই যে, ইসটুডেনট-পলিটিকসের নামে খুন করা হইছে, ফিউচারেও হবে; কিনতু ছাত্রলিগ বলতেছে, না, আমরা খালি ডর দেখাবো, খুন করবো না; ‘কনট্রোল’ করবো… মানে, এইটা হইতেছে কনফ্লিক্টের জায়গাটা…

এই জায়গাটাতেই রিচ করা যাইতেছে না, একটা ফলস-কনশাসনেসের জায়গাতেই বেপার’টা ঘুরপাক খাইতেছে, আর এই কারনেই এইটা একটা মিডিয়া-ঘটনা হিসাবে বাকশালি-মিডিয়াতে জায়গা করে নিতে পারতেছে বইলা আমি মনে করি; কারন বাকশালি-মিডিয়ার একটা কোর জায়গা হইতেছে যে কোন ধরনের ফলস-কনশাসনেস তৈরি করা, এবং তারে টিকায়া রাখা… Continue reading

নোটস: মার্চ, ২০২৪

০১.০৩.২০২৪

নানান জিনিস নিয়াই তো রিভিউ দেখি – বই, সিনেমা… এই রকমের আর্ট-মেটেরিয়াল নিয়া; তো, আমার ধারনা, আমার মতো অনেকেই একসপেরিয়েনস কইরা থাকার কথা যে, এইগুলা বেশিরভাগ-ই মোটামুটি ভুয়া; মানে, পেইড-রিভিউ তো আছেই, কিনতু মিনিমাম রকমের ট্রুথফুলনেসও নাই, বা থাকে না… তো, ধরা খাইতে খাইতে মোটামুটি কয়েকটা ধরন বা প্যাটার্ন আমি মার্ক করছি, এবং এইগুলা মোসটলি এড়ায়া চলি; তো, আমার মনে হইছে, অনেকে ট্রাই করতে পারেন, এই জিনিসগুলা –

১. যারা সুপারলেটিভ টার্ম ইউজ করেন, যেমন ধরেন, ‘আমার জীবনের পড়া সেরা বই!’ পুরা টাশকি খায়া গেছি’, ‘এই বছরের সেরা সিনেমা’, ‘জীবনে এইরকম দেখি নাই, পড়ি নাই’… – তো, সোজা-বাংলায় এই (বেশিরভাগ কেইসেই মেকি) ‘উচ্ছ্বাস’গুলার মানে হইতেছে জিনিসটারে উনারা ডিল করতে পারেন নাই; এইগুলা এভয়েড করা-ই বেটার

২. প্রশংসা করা, নিন্দা করা বা সামারি করাটা কখনো রিভিউ বা ক্রিটিকের কাজ হইতে পারে না

৩. রায় দেয়া যাবে না – তা না; রায় দিতে পারাটা বেশিরভাগ সময়েই বিচার করা/ক্রিটিক করা/রিভিউ করার চাইতে আলাদা ঘটনা

৪. রাইটারের পরিচিত লোকের (দোস্ত হোক আর দুশমন) রিভিউ কম বিশ্বাস করাটাই বেটার

৫. যিনি একটা জিনিসের প্রশংসা করতেছেন, এবং কোন ভিউ-পয়েনট থিকা করতেছেন সেইটা বলতে পারতেছেন না, সেইটা মোটামুটি গালি-গালাজ বা নিন্দা করার মতো খারাপ ঘটনা-ই…

৬. একটা ভালো-রিভিউ কখনো-ই ইমপার্শিয়াল বা ‘নিরপেক্ষ’ না, বরং এমন একটা যেই জায়গাটা থিকা দেখার ট্রাই করা যেইটা দিয়া আর্টরে নতুন কোন মিনিংয়ের দিকে নিয়া যাওয়াটা পসিবল হয়

৭. বস্তুর ডেফিনেশন যেমন বস্তু না, আর্টের ক্রিটিকই আর্ট না

৮. গ্রেট-আর্ট রেয়ার, গ্রেট-ক্রিটিক ইমপসিবল

৯. তবে খারাপ-রিভিউ সবসময় নো-রিভিউ’র চাইতে বেটার

যেই ইস্যু নিয়া বাকশালি-মিডিয়া বেশি গরম থাকে বা থাকবে, মোটামুটি ধরে নিতে পারেন অইটা ডামি-ইস্যু আসলে, অনেকটাই…

০২.০৩.২০২৪

যেইরকম sitcomগুলাতে ব্যাকগ্রাউনডে হাসির আওয়াজ দিয়া বইলা দেয়া হয় কোথায় কোথায় হাসা লাগবে, এইরকম গর্ভমেনট-কনট্রোলড নিউজ-মিডিয়া এবং ফেইসবুক-ট্রেনডও সেট কইরা দেয় আসলে কোথায় কোথায় হিউমার করা লাগবে আমাদেরকে, কোথায় কোথায় চুপ থাকা লাগবে, আর কোন সময় ‘প্রতিবাদি’ হয়া উঠা যাবে…

সার্কাসের মাসটারের চাবুকের ভাব বুইঝা নাচতে পারাটাই হইতেছে গুড-পারফরমেনস, একটা বানদরের

আর ভালো-অডিয়েনস হিসাবে আমাদের কাজ হইতেছে এইটারে ক্রুয়েলিটি হিসাবে না দেইখা করুণ বা ফানি হিসাবে দেখতে পারা

/বি আ গুড-অডিয়েনস Continue reading

নোটস: ফেব্রুয়ারি, ২০২৪

০৪.০২.২০২৪

রোগ যত লুকায়া রাখা হয়, ডেমেজ তত বেশি হয়; এখনকার ইকনোমিক ক্রাইসিস ফলস-ডেটা দিয়া যত কাভার-আপ করার ট্রাই করা হবে, অবসথা তত খারাপ হবে আসলে

০৫.০২.২০২৪

আপনি পক্ষে আছেন না বিপক্ষে আছেন, সেইটা তেমন কোন ঘটনা না; বরং কোন ঘটনা নিয়া কিভাবে কনসার্নড হইতেছেন, ডিল করতেছেন, সেইটা ঠিক কইরা দেয় আপনার পজিশন’টা

ভাষা এমনিতেই বাঁকা, তারে আর বাঁকানোর দরকার নাই কবিতাতে, বরং নানান লেয়ার তৈরি করার নামে সিউডো-গভিরতা অনেক হইছে, cliche’র লেভেলও পার হয়া গেছে আসলে; ‘অনেক কথা বইলা কিছুই না-বলা’ জিনিসটা অনেকটা বাকশালি-নিউজগুলার মতো ‘মিনিংলেস’-ই না খালি, পলিটিকালি ill-motivated একটা ঘটনা; এমন একটা কালচারাল কারখানা, যা মানুশের কথা-বলার জায়গাগুলারে নিরবতার ভিতর ঠেইলা দেয়ার দিকে আগায়া দিত আগে, কিনতু এখন চুপ করায়া রাখতে চায় – এইরকম ইভিল জায়গাতে গিয়া রিচ করছে।

অনেক সময়, বাইরে থিকা মনে হইতে পারে, দুনিয়া মালটি-লেয়ারড, কিনতু ইন ইটস কোর এইখানে শাদা আর কালা’র জায়গাটা আছে, যেইখান থিকা কালারগুলা তৈরি হইতেছে; অইখানের পজিশনটা না নিতে পারাটা পলিটিকাল ইন-এবিলিটি না, পোয়েটিক ইন-জাসটিসের ঘটনা; অইটাতে না পৌঁছায়া কবিতা লেখা যায় না; মানে, এইখানে একজন কবি’র কথা-ই বলতে চাইতেছি আমি, ভাষা ও আইডিয়া নিয়া টেকনিকালি-স্কিলড কিছু লোকের কথা না…

এইখানে আমি টি.এস.এলিয়ট ভারসেস পাবলো নেরুদা’র ঘটনারে রেফার করতেছি না, যেইখানে ট্রেডিশন থিকা সরতে পারাটারে পিপল থিকা ডিটাচড হইতে পারা হিসাবে দেখা হইছিল, বা পিপলের সাথে এনগেইজমেনটের জায়গাটারে মবের কাছে সাবমিট করা হিসাবে দেখা হইছিল; অই ‘তর্ক’ পার হয়া আসছি আমরা; বা লোরকা যেই ‘দুয়েন্দে’র কথা কইতেছিলেন, সেইটা আর ম্যাজিক না কোন, একটা এসকেইপের জায়গা-ই; মানে, অই বেইজ থিকা কবিতারে দেখতে যায়-না না, অই দেখাটা অনেককিছুরে মিস কইরা যায়, যা আর রিলিভেনট রাখতে পারে না নিজেরে; কবিতারে জাসট একটা টুল বানায়া রাখে…

অই জায়গাগুলারে মার্ক না কইরা, দেইখাও না-দেখার ভান কইরা থাকতে পারাটা, একনোলেজ না-করাটা এভারেজ ভালো-কবিতা লেখা কনটিনিউ করতে থাকাটা ভাড়া-খাটা ইনটেলেকচুয়ালদেরই জাসট একটা একসটেনডেড উইং, এর বেশি কিছু না।

এই বইলা ‘সিরিয়াস-কবিতা’ বাদ দিয়া ‘পপুলার-কবিতা’ লেখতে থাকবো আমরা – এইটা জাসট একটা টিটকারি মাইরা কনফ্লিকটের জায়গাটারে এড়ায়া যাওয়ার ঘটনাই একটা; ডিসিশান দেয়া যেমন কবিতার কাজ না, একইভাবে একটা ইন-ডিসাইসিভ মুড’রে এনেবল করাটাই কবিতার ঘটনা না; ইন প্লেইন সাইট মনে হইতে পারে, এইগুলা জরুরি কোন জিনিস তো না-ই, বরং ফাঁপা কিছু আলাপ, কিনতু যেই জায়গাগুলারে আমরা খেয়াল করতে রাজি না, সেই জায়গাগুলা নাই না, বরং আমাদের না-খেয়াল করতে পারার বা চাওয়ার ঘটনাই…

কবিতা, এমনকি যে কোন কিছুই, যা আমরা জানি, সেইটা একটা না-জানার ঘটনা না, অনেক সময় জানার জায়গাগুলারে একরকম ঢাইকা রাখার ঘটনাও হয়া উঠতে পারে; মানে, জানা এবং না-জানা, দেখা এবং না-দেখার মধ্যে একটা পর্দা তো আছেই, কিনতু শব্দের কাজ কোনকিছুরে গোপন করা না, বা একটা বলার ভিতরে তারে ন্যারো কইরা তোলা না, রিভিল করার ঘটনা; এইটা পুরানা কথা, কিনতু তাই বইলা মিথ্যা না আর কি…

আমি বলতে চাইতেছি, কবিতা – যা আমরা আন-ডিফাইনড, ম্যাজিকাল কোন ঘটনা বইলা মনে করতে চাই, এর এগেনেসটে টেকনিকাল বা মেথডলজিকাল কোন জিনিস তো না-ই, বরং এই যে বাইনারি’ ভিতর তার আলাপটারে আটকাইতে চাওয়া, এমনকি মালটিপ্লিসিটি’র ভিতরে তারে ছড়ায়া দিতে চাওয়া, সেইটা কবিতার কোর এনগেইজমেনটের জায়গাটারে বেশিরভাগ সময়ে এড়ায়া যাওয়ার ঘটনাই হয়া উঠে কিনা, সেইটা খেয়াল করাটা যে কোন সময়ের চাইতে এখন জরুরি একটা ঘটনা…

যদিও এই কথাগুলা ইসপেসিফক না হইয়া একটা ওভারঅল ইসটেইটমেনট হইতে গিয়া, আরো ঝাপসা হইছে, আরেকটা ক্লিশে হওয়ার দিকেই রওনা হইছে, তারপরও বলতে-পারাটা, বলার ইচ্ছাটা নিরবতার চাইতে বেটার না হইলেও, অনেক হাউকাউয়ের ভিতরে হারায়া গেলেও, এই ট্রাই করাটা আমরা বাদ দিয়া দিতে পারি না; একটা জানা দিয়া যেমন কমপ্লিট হয়া থাকতে পারি না, একটা না-জানা দিয়া এমপটি হয়া থাকাও পসিবল না…আমরা জানি যে, আমরা জানি না; আর সেই না-জানাটারে আর্টিকুলেট করার ট্রাইটা কইরা যাইতে হবে

অনেক না-বলার জায়গাগুলার ভিতর দিয়া কোন একটা কিছু বলার জায়গাটাতে যাওয়ার দিকে যাইতে হবে আসলে; কবিতা একটা টুল না, শব্দের; মিনিংয়ের বাঁইকা যাওয়াটারে সোজা কইরা দেয়া না, ডেফিনিট কইরা তোলা না, বরং আমাদের কথাগুলা যেন তার মিনিংগুলারে হারায়া না ফেলে, সেই কোশিশ করতে থাকার ঘটনা, এই জায়গা থিকা দেখলে।

/কবিতা কোমপানি পাবলিক লিমিটেড

(২৪.০১.২০২৪ – ০৪.০২.২০২৪) Continue reading

নোটস: জানুয়ারি, ২০২৪

০১.০১.২০২৪

পটকা ফুটানো কি ভালো না খারাপ?

পটকা ফুটানো কি ভালো না খারাপ? – এই নিয়া একটা আলাপ কয়দিন ধইরাই চলতেছে। কিনতু এইটা কোশচেন হিসাবে ন্যারো এবং মেইন জায়গাটারে আলাপের বাইরে রাখে বইলাই আমার কাছে মনেহয়। বরং কোশচেন’টা হইতেছে যে, বাংলাদেশে কোন ঘটনা সেলিব্রেট করতে চাইলে, কেমনে সেলিব্রেট করবো আমরা?

রাসতায় কি বাইর হইতে দিবে? মাঠে, পার্কে কি ফেমিলি, ফ্রেনডস নিয়া বইসা থাকতে পারবেন? মানে, আপনি যে সেলিব্রেট করতে চান, সেই খুশিটা আপনি দেখাইবেন কেমনে? কেমনে শো করবেন? [নিউ ইয়ার সেলিব্রেট করা যাবে কি যাবে না? – এইটা হইতেছে আরেকটা মাদারবোর্ড কোশচেন…]

আসল কথা হইতেছে, বাংলাদেশে যে কোন পাবলিক গেদারিং’রে, যে কোন সেলিব্রেশনরেই একটা খারাপ কাজ হিসাবে পোর্টেট করে এনটি-পিপল মিডিয়া এবং মিডিয়া-জম্বি পিপলরা। এইটা হইতেছে পয়লা কথা।

দুসরা কথা হইতেছে, তার মানে অবশ্যই এইটা না যে, পটকা ফুটানো দরকার বা এইটা খুব ভালো কাজ, বরং বাংলাদেশে সেলিব্রেশনের কোন উপায় নাই – এই জায়গাটারে হাইড করাটা কোন ভালো-কথা যে না, সেই কথাটাই বলা।

এইটা শুরু হইছে গত ১০-১৫ বছর ধইরা, যখন রাসতায় না নামতে পাইরা, বাসার ছাদে ছাদে সেলিব্রেশন শুরু হইছে। এখন ইদে-চানদেও পটকা ফুটানো হয়, আগেও হইতো, এখন এইটা বাড়ছে। কারন পাবলিক সেলিব্রেশনের উপায়গুলা বনধ কইরা দেয়া হইছে। রাসতায় নামলে খালি পুলিশ পিটাইবো না, ছাত্রলিগের কুততাগুলার হাত থিকা রেহাই পাওয়া যাবে না। একটা ডরের সমাজে আমরা আছি। চুপচুপ থাকাটা হইতেছে নিয়ম। এখন যদি বলাও হয়, কোন সমস্যা নাই রাসতায় নাইমা হাউকাউ করেন, বাজি ফুটাইয়েন না, তাইলেও ছাত্রলিগের ডরে কেউ টিএসসি’তে যাবে না, পাড়ার রাসতায় নামবে না; এবং এইটা বনধও হইছিল ছাত্রলিগের কু-কির্তির কারনেই (যারা জানেন, তারা মনে করতে পারবেন স্পেসিফিক ঘটনাটা)।

মানে, যে কোন সেলিব্রেশনই কিছুটা এনোনিয়ং, রেগুলার লাইফের চাইতে লাউড এবং ডিফরেনট। কিনতু এইটা ততটাই ‘নরমাল’ মনে হইতে পারে যতটা ‘নরমাল’ লাইফ আমাদের সেলিব্রেশনরে এলাউ করে। আনফরচুনেটলি, জুলুমের সমাজে যে কোন সেলিব্রেশনই পারভাশন ও উইয়ার্ড মনে হইতে থাকার কথা, বা একটা থোবড়ানো ঘটনাই হয়া উঠার কথা দিনে দিনে।

সেলিব্রেশন আমরা করতে পারবো-না না, সেলিব্রেশন করাটা যেন পাপ – এই খুঁতখুঁতানি আমাদের মনের মধ্যে সবসময় থাইকা যাওয়ার কথা। বাংলাদেশের এখনকার কনটেকসটে ব্যাপারটা কখনোই একটা ভালো-উপায়ে সেলিব্রেট করার ঘটনা না, বরং সেলিব্রেশন করাটা নিয়া ডরানোর ঘটনাই মেইন। যেইটা নিয়া আমার ধারনা, আমরা কথা বলতে নিজেদেরকে রাজি করাইতে পারতেছি না।

থার্ড এবং ক্রুশিয়াল জায়গা হইতেছে, এইরকমের সেলিব্রেশন খালি একটা ‘রেজিসটেনস’ না, একইসাথে একটা ‘রিপ্রেজেনটেশন’ও যে, মানুশ-জন তো ভালো আছে! কিছু এসথেটিক ছবি দরকার আমাদের। এবং সবচে ভালো হয় যদি আওয়াজ ছাড়া পটকা বানানো যায়। 🙂 পুলিশ-মিলিটারি যদি সরকারিভাবে এইগুলা সাপলাই দিতে পারে, বাজারে। যেইরকম ধরেন, গাজাতে মানুশ খুন করতে পারবে ইজরাইল, কিনতু কোন নিউজ হবে না, বা ছবি কেউ তুলতে পারবে না! ক্রসফায়ার যেই কারনে ‘সাকসেসফুল’ ছিল, যে এর কোন ছবি ছিল না; এখন ‘পুলিশ হেফাজতে মারা যাওয়ার’ও কোন ছবি পাইবেন না। এই ছবি না-থাকাটা ক্রুশিয়াল। একইভাবে, নিউ ইয়ার সেলিব্রেশনের ছবিটা হইতেছে কোর-ঘটনা। খালি আওয়াজটা আমরা চাই না।

প্রিজনড-সেলিব্রেশন নিয়া কোন প্রবলেম নাই আমাদের। আমরা জাসট কোন হাউকাউ চাই না। পাখি মরে, বুড়া-মানুশ ও বাচ্চাদের সমস্যা হয়-না না, এইগুলা সাইডলাইনেরই আলাপ।

ধরেন, একজন মানুশ হাঁইটা যাইতেছে, তার গায়ে আপনি গু মাখায়া দিলেন। এতে কইরা লোকটার যত না অপমান হইলো, আপনি বরং বুঝতে পারলেন যে, জিনিসটা হইতেছে একটা গু।

তো, ছয়মাসের জেল দেয়ার মানে হইতেছে গায়ে গু মাখায়া দেয়া। বাংলাদেশের আইন-আদালত হইতেছে একটা টাট্টিখানা। এই টাট্টিখানার গু’য়ের গনধে সারা দুনিয়া মউ মউ করতেছে এখন।

০৪.০১.২০২৪

বাংলা-ভাষা কি নতুন চিনতার জন্য অসুবিধার?

এই আলাপে আমার পয়েনট দুইটা। এক হইতেছে, কোন ভাষায় কোন চিনতা নাই না, বরং কোন জায়গা থিকা আমরা দেখতেছি, সেইটা হইতেছে জরুরি ঘটনা, কোন ঘটনাগুলারে ‘চিনতা’ বইলা মার্ক করতেছি আমরা। এইটা হইতেছে অনেকটা মাওলানা রুমির এনেকডোটসের মতন যে, দুইটা গরু সারাদিন বাগদাদ শহরে ঘুরলো, কিছু খড়-বিচুলি ছাড়া আর কিছু দেখতে পাইলো না!

যেমন ধরেন, এক ধরনের আলাপ আছে, পাকিসতান পিরিয়ডে (১৯৪৭ – ১৯৭১) বাংলাদেশে তেমন কোন ইনটেলেকচুয়াল কাজ-কাম হয় নাই, অথচ অই সময়টারে কেমনে দেখতে হবে – অই দেখার নজরটাই আমরা তৈরি করতে পারি নাই এখনো। তার মানে, এইটা না যে, অনেক বড় বড় কাজ হয়া গেছে, যেইগুলা আমরা দেখতে পাইতেছি না, বরং কেমনে দেখবো – অই জায়গাটা তৈরি না হইলে, জিনিসগুলারে লোকেটই করতে পারার কথা না আমাদের।

দুসরা ঘটনা হইতেছে, সেনস অফ অরিজিনালিটির চিনতা’টা থিকা সরতে পারাটা ভালো; একেকটা ভাষায় চিনতার একটা হিসট্রি আছে, যেইটা একইরকম না; এই ডিফরেনসগুলারে মাইনা নিতে পারাটা বেটার, এক কইরা ফেলার চাইতে। অনেক ভাষায় অনেক কিছু নাই, অনেক ভাষায় অনেক কিছু থাকবেও না।

যেমন ধরেন, আলস্কায় এসকিমোদের ভাষায় বরফের ১০টা নাম আছে, এখন বাংলাদেশে তো এইটা থাকবে না! বা বাংলাদেশে যা ছিল ধানের/ভাতের ১০টা ভেরিয়েশন আছে (সেদ্ধ, আতপ, জাউ, পান্তা, খুদ, পোলাও…)।

মানে, সব ভাষারই আলাদা গঠন আছে, এবং ঘটনা হইতেছে ভাষাটা এনাফ ফেক্সিবল কিনা, নতুন চিনতা বা আইডিয়া আপনি সেইখানে নিয়া আসতে পারেন কিনা। এইখনে বাংলা-ভাষাতে ঘটনা হইতেছে, ভাষারে রিজিড কইরা রাখাটারে যে ‘শুদ্ধতা’ বইলা চালানো হয় – এইটা অথরিটির সমস্যা, ভাষার না।

বাংলাদেশে যেই ভাষায় আমরা কথা কই, সেই ভাষাতে লেখতেই আমরা ডরাই। আর অই ভাষাতে চিনতা করতে পারবো – এই সাহসটাই করতে পারি না। তো, এইটা যতটা না ভাষার সমস্যা, তার চাইতে নিজের ভাষারে ক্লেইম না করতে পারার ঘটনাটাই বেশি ঘটে আসলে।

বিদেশি ভাষায় যেইরকম বেশিদূর পর্যনত চিনতা করতে পারবেন না আপনি, কলোনিয়াল বাংলা-ভাষাতেও ফ্রিলি চিনতা করতে পারার কথা না আমাদের। ভাষা এইখানে অবসটেকল হিসাবে কাজ করে, মিডিয়াম হিসাবে না। সমস্যাটা এই জায়গাটাতে।

তারপরও নিজের ভাষাতে চিনতা করতে পারলেই নতুন নতুন চিনতা তৈরি হবে অটোমেটিকালি – তা না, বরং দুনিয়ার অন্য চিনতাগুলার লগে এনকাউনটার যত বেশি হবে, সেইটা ঘটতে পারার চানস তত বাড়বে আসলে। ভাষা খালি চিনতার জায়গাটারে আগায়া দেয় না, বরং নতুন নতুন চিনতা ভাষার জায়গাটারে এক্সপানড করে। যখন আপনার কনসার্ন হবে ‘শুদ্ধ-ভাষায়’ লেখা, সেইটা কখনোই ‘নতুন-চিনতা’র জায়গাগুলাতে রিচ করতে পারার কথা না; কারন যেই ইসটেনডারড অলরেডি তৈরি হয়া আছে, যেই নিয়ম অলরেডি আছে তারে এজ ইট ইজ রাইখা নতুন ইসটেনডারড, নতুন নিয়ম তো তৈরি হইতে পারে না!

মানে, আমি বলতে চাইতেছি, বাংলা-ভাষার সমস্যাটা মেইনলি ‘শিকখিত-গিরির’ সমস্যা, যেইটা একটা সমস্যা অবশ্যই, কিনতু সেইটারে বাংলা-ভাষার সমস্যা হিসাবে মার্ক করাটা চিনতা করতে পারার সাহস না-থাকারই ঘটনা অনেকটা।

Continue reading