নোটস: ডিসেম্বর, ২০২৩

০১.১২.২০২৩

ফিল-গুড এক্টিভিজম ৩

কিছুদিন আগে জিজেকের একটা ভিডিও দেখতে গিয়া জিনিসটা খেয়াল করতেছিলাম, একটা মাহফিলে (সেমিনারে) ওয়েস্টার্ন পিপলদের সামনে, যদিও উনি ওয়াজ (কথা-বলার) করার শুরুতেই বইলা নিছেন যে, হামাসের হামলা’রে উনি সার্পোট করেন না, এবং এরপরে বলতেছেন ইজরাইল যা করতেছে তা আরো জঘন্য, ব্লা ব্লা ব্লা… কিন্তু উনার কথা উনি শেষ করতে পারেন নাই, অডিয়েন্স থিকা উনারে কোশ্চেন করা শুরু করছে, এই কথা কেমনে বলেন আপনি! (আমাদের এইখানে যেইরকম ‘জামাত-বিএনপি’ বানায়া হাউকাউ লাগায়া দেয়া হয়…)

তো, এইরকম আমিও বইলা নিতে চাই যে, ইন এনি সেন্স ইজরাইলি হামলা ও খুনগুলারে সার্পোট করার কোন গ্রাউন্ডই নাই, এবং থাকতে পারে না। কিন্তু, মাই গড (হে খোদা না এতোটা, বরং অনেকটা জিজেকের বুলি), আজকে বাংলাদেশে “পালেস্টাইন-সংহতি” কি পারপাস সার্ভ করে আসলে? – এই জায়গাটারে যদি এড়ায়া যাই, সেইটা তো খালি একটা ইন্টেলেকচুয়াল বাটপারির ঘটনা না খালি, পালেস্টাইনের ট্রু ক’জের জায়গাটারেও শ্যালো বানায়া দেয়ার ঘটনাও একইসাথে। মানে, বাংলাদেশে থাইকা পালেস্টাইনের প্রতি সার্পোট আপনি দেখাইতে পারবেন না, বা দেখাইলেই সেইটা শ্যালো ব্যাপার হয়া যাবে – তা না; কিন্তু এইটা কি মিন করে আসলে? – সেই জায়গাটাতে কি চোখ বন্ধ কইরা রাখবো আমরা?

আমি বলতেছি না, আপনি নয়া বাকশালের এগেনেস্টে কথা কইতে গিয়া জেলে ঢুইকা যান, আপনার বাড়িতে আইসা ছাত্রলিগ যুবলিগের লোকজন লুটতরাজ করুক, রাস্তা-ঘাটে অদের মাইর-ধর খান; কিন্তু চোখের সামনে এইসব জিনিসরে ইগনোর কইরা “পালেস্টাইনের প্রতি সংহতি” পালন করতে করতে নিজেরে কি কিছুটা ডাম্ব লাগার কথা না? আবারো বলি, ডোন্ট গেট মি রং, যারা পালেস্টাইন নিয়া কনসার্ন উনাদেরকে ইমোশনালি ব্যাড ফিল করাইতে চাই না আমি। কিন্তু কেমনে পারেন উনারা! ব্যাপারটা খালি কন্ট্রাডিক্টরই না, উইয়ার্ডও না! যে, নিজের দেশের অন্যায়-অত্যাচারে আমি চোখ বন্ধ কইরা রাখতে পারি, কিন্তু আফ্রিকায় কোন শিশু মারা গেলে, তার লাইগা আমার পরাণ কান্দে! কারণ অই কান্দাটা মোর গ্লোবাল, লোকাল না এতোটা!

এখন ব্যাপারটা এইরকম না যে, মিডল-গ্রাউন্ড’টা দুনিয়াতে নাই হয়া যাইতেছে না, বরং এইটা নতুন ফর্মে এপিয়ারড হইতেছে বইলা আমি মনে করি। আপনি চুপ কইরা থাকবেন না, বরং অন্য কিছু নিয়া হাউ-কাউ করবেন, যেইটা নিয়া কথা কইলে রিস্ক কম। যেমন ধরেন, ব্রিটিশ আমলে আপনি নীরদ শ্রীচোধুরি’র মতো ফিউডালিজমের এগেনেস্টে মর্ডানিটির পক্ষ নিলেন; এইরকম, অটোক্রেসি ও ডেমোক্রেসি’র বদলে আপনি নারী-অধিকার নিয়া সরব হইলেন! জিনিসগুলা যে অ-দরকারি – তা না, বরং অনেকবেশি ক্রুশিয়ালও, কিন্তু আপনি যেইটা করতেছেন, লোকাল কনটেক্সট’টারে আমলে না নিয়া গ্লোবাল একটা পারসপেক্টিভ থিকা আলাপটা দিতেছে, এবং এইটা করতে গিয়া “জ্ঞানগত” একটা সুপিরিয়রিটিও ফিল করতে পারেন যে, আমিও “বিশ্ব মানবতার” কথা কইতেছি! বাদবাকি ছোট-খাট জিনিস নিয়া তুমরা, যারা গরিব-লোকজন আছো, তুমরা কথা বলো না কেন! 🙂

ব্যাপারটা এইরকমও না যে, আপনি যেহেতু পালেস্টাইনের পক্ষে ভোকাল আছেন আপনারে বাকশাল-বিরোধী কথাও কইতে হবে! এইটা আমার পয়েন্ট না। সবগুলা জিনিস নিয়া সবারই কনসার্ন থাকতে হবে – এইটা তো জরুরি না! বা সিলেক্টিভ হইতে পারার ব্যাপারও না। বরং একেক সময় একেকটা জিনিস নিয়া কনসার্নড হওয়াটা একটা ওয়ে-আউটের ঘটনা হয়া দাঁড়ায়। ফ্রেন্ডস সিরিজটা দেখলে এইটা টের পাইবেন। বেশিরভাগ সময়, অন্য একটা ইস্যু আইসা চোখের সামনের একটা ভিজিবল ইস্যু থিকা কারেক্টারগুলারে বাঁচায়া ফেলে; বা এটলিস্ট এই টেকনিক’টা অরা ট্রাই করে; পারুক, বা না-পারুক।

আমি জাস্ট মনে করতে চাই যে, পালেস্টাইনের প্রতি বাংলাদেশে আমাদের কনসার্নটা এইরকম কাভার-আপ না, ইস্যু ঘোরানোর একটা ইস্যু না। কিন্তু আমার মন তো খারাপ, খারাপ খারাপ জিনিস মনেহয় আর কি! আমি শিওর, যারা বাংলাদেশে পালেস্টাইনের পক্ষে ফাইট করতেছেন, তাদের মনে আমার মতো এই খারাপ-চিন্তাগুলা নাই বা থাকবে না।

০৪.১২.২০২৩

আমি ডিসাইড করছি বাংলা বানানের ব্যাপারে এখন থিকা এই কয়টা নিয়ম ফলো করবো*, যেইটা ট্রেডিশনাল বানানে ‘ভুল’। মানে, আমি কিছু বানাম-ভুল করতে চাই। এই কারণে ডিসাইড করছি যে, এই ৯টা নিয়ম ট্রাই কইরা দেখবো আগামি ছয় মাস বা এক বছর:

১. ন ণ এর জায়গায় ন
২. জ য এর জায়গায় জ
৩. ৎ এর জায়গায় ত

৪. ই ঈ এর জায়গায় ই
৫. উ ঊ এর জায়গায় উ

৬. ি ী এর জায়গায় ি
৭. ু ূ এর জায়গায় ু

৮. যুক্‌তাক্‌খর যত কম রাখা যায় (একটা নিচে আরেকটা না বসায়া, বা লগে না জড়ায়া আলাদা হরফ রাখার), তত বেটার। দেখতে একদম দরকারি না হইলে বাদ-ই দিবো।

৯. র-ফলা, য-ফলা যত কমানো যায় বেটার; এতে কইরা উচ্‌চারণ পারফেক্‌ট হয় না, বরং শিক্খিত-গিরি ফলানো হয় আসলে বেশি। [অ্যা না লেইখা আ বা এ… এইরকম]

[তো, আমিই ফার্‌সট না যে এই জিনিসগুলা টেরাই করবো। বানান নিয়া এইরকমের চেষ্‌টা মুহম্মদ শহীদুল্লাহ করছেন, রক মনু’রও একটা পরস্‌তাব আছে। আমি উনাদের এবং আরো কয়েকজনের কিছু সাজেশনরে কন্‌সিডার করতেছি। যদি দরকার পড়ে নিজেও কিছু জিনিস সাজে্‌সট করবো, এর সাথে। এইখানে শেষের চাইরটা মোটামুটি আমার সাজেশন।…]

২.
একটা এনার্কি ক্রিয়েট করার জন্য এইটা করবো – তা না, এর পিছনে কিছু রেশনাল তো আছেই আমার, অইগুলা নিয়াও কথা বলবো কিছু। (আল্‌লা চাহে তো ২০২৪ সালে “বানাম ভুল” নামে একটা বইও লেখতে চাই।) কি্ন‌তু ভাষা হইতেছে প্রাকটিসের ঘটনা, আগে লেইখা দেখি, নিজের জন্য ইজি হয় কিনা। মানে, বানান নিয়া এর আগে যত কাজ হইছে, তার সবগুলাই সাকসেসফুল না হওয়ার একটা মেজর কারণ হইতেছে আগে নিয়ম বানায়া তারপরে সেই হুকুম তামিল করার ঘটনা, উল্‌ট’টা না; যে লেইখা দেখি পুরান নিয়মগুলা রেলিভেন্‌ট কিনা বা নতুন নিয়মগুলা কোন প্রবলেম ক্রিয়েট করে কিনা। তারপরে দেখা যে, রেশনালও কিনা – মানে, এইটা সেকেন্‌ডারি ঘটনাই কিছুটা।

তো, বানানের ব্যাপারে আমার পয়েন্‌ট অফ ভিউ মেইনলি দুইটা –

১. বানান উচ্‌চারন অনুযায়ি হওয়াটা বেটার; বুৎপত্তি [বুতপত্‌তি] বা কোন শব্‌দ কোন জায়গা থিকা আসছে সেই সোর্স-অনুযায়ি না

২. শব্‌দের বা বানানের আলাদা কোন মিনিং নাই, কথার মধ্যে কেমনে ইউজ করতেছি সেইটার উপরেই ডিপেন্‌ড করে মেইনলি। [একই ধরণের উচ্‌চারণ হইলেও এবং একই বানানে লেখা হইলেও মিনিং আলাদাই থাকবে। সব ভাষাতেই এইরকম আছে, এবং থাকার কথা।]

আর এর উদ্‌দেশ্য ঠিক বানান’রে সো-কল্‌ড বিজ্‌ঞানসম্‌মত করা না, বরং যতদূর সম্‌ভব অ-দরকারি জিনিসগুলারে বাদ দেয়া, বা আপডেট করা।…এখন এইগুলা তো একলার কাজ না, কিন্‌তু একইসাথে একটা ইন্‌সটিটিউশনাল বুরোক্রেসির ঘটনা বইলাও আমি মনে করি না; বরং একটা গ্রুপ অফ পিপলেরই কাজ…কিছু জিনিস ডিসাইড করতে পারলে দেখা যাবে নতুন বাংলা কি-বোর্ডই বানাইতে হইতেছে একটা।

এইটা পাবলিকলি বইলা রাখা খালি এই কারণেই না যে, এইগুলা দেখলে আমার বানাম-ভুল ধরতে আইসেন না, বরং আপনিও একটু ভাইবা দেখতে পারেন তো, ঊ, ঈ, ণ, য, ৎ, ী, ূ এর দরকার কতোটা? এইগুলা না থাকলে লেখতে ও পড়তে কোন সমস্যা হয় কিনা…

৩.
বিসমিল্‌লাহ!

#বানামভুল
Continue reading

নোটস: নভেম্বর, ২০২৩

০২.১১.২০২৩

নিরপেক্ষ লিগ: কি ও কারা?

পলিটিকালি বাংলাদেশে আজকে ক্লিয়ারলি দুইটা পক্ষ আছে। এই নিয়া কোন ক্রিটিকাল এনালাইসিস করা যাবে-না না, বরং যখনই এই ধরণের ক্রুশিয়াল মোমেন্টগুলা তৈরি হয় হিস্ট্রিতে, তখনই একটা পক্ষ নিতে পারতে হয় আমাদেরকে, সো-কল্ড নিরপেক্ষ হওয়ার চাইতে। কারণ ‘নিরেপক্ষতা’ বইলা কিছু নাই না, এইরকম ক্রুশিয়াল মোমেন্টগুলাতে ‘নিরেপক্ষতা’ স্রেফ একটা ইন্টেলেকচুয়াল ভন্ডামি।

চিন্তা করেন ১৯৪৭-এর কথা, ব্রিটিশ-শাসনের জাস্টিফিকেশনগুলা হাইলাইট করার মতো কিছু লোক কি ছিল না? (নীরদচন্দ্র চৌধুরীর কথা মনে হইলো…) বা ইভেন এখনো কি নাই? ১৯৭১-এর কথা মনে করেন খালি রাজাকার-ই না, আল মাহমুদের অটোবায়োগ্রাফি-তে আছে ঢাকার কবিরা কিভাবে বাংলাদেশ ধারণার বিরোধিতা করছিলেন। এতো দূরেও যাইতে হবে না, ১৯৯১-এর ঘটনা তো আমাদের চোখের সামনেই ঘটছে! এরশাদের দালাল তো কম ছিল না, যারা শেষ পর্যন্ত ট্রাই কইরা গেছে। তো, একইভাবে আওমি জুলুমের, নয়া বাকশালের অবৈধ-শাসনরে ইনায়া-বিনায়া, নিরপেক্ষ-লিগ হয়া সার্পোট করার লোকও থাকবে কিছু। এইটা হইতেছে এক নাম্বার পয়েন্ট।

সেকেন্ড হইতেছে, এরা এদের ইন্টেলেকচুয়াল বাটপারি চালু রাখবে টার্মের ভিতর দিয়া, ঘটনারে বর্ণনা করার টুল ও এপ্রোচ করার ভিতর দিয়া। যেমন ধরেন, বাংলাদেশের মানুশ আজকে BNP ও BAL – এই দুইভাগে বিভক্ত না, বরং বাংলাদেশের মানুশ আজকে ডেমোক্রেসির পক্ষে, আর কিছু লোক লুটপাটের পক্ষে সাফাই গাইতে ব্যস্ত! দুইটারে সমান সমান বইলা দেখানোটাই হইতেছে আই-ওয়াশের ঘটনা’টা।

এইটা খালি BNP’র আন্দোলন না, এইটা বাংলাদেশের মানুশের ডেমোক্রেসির জন্য ফাইট করার ঘটনা। অথচ এই সত্যি-ঘটনাটারে যে কোনভাবে লুকায়া রাইখা দুইটা সমান সমান দল হিসাবে পোর্টেট করার সব চেষ্টা কইরা যাইতেছে বাকশালি-মিডিয়া। এরা পার্ট অফ নয়া বাকশাল, এরা দুইটা দলের মাঝখানে কোন ‘নিরপেক্ষ’ দল না, এরা জুলুমের পক্ষের শক্তি, জালিমের অঙ্গ-সংগঠন, এবং আরো গোঁড়া ও ভয়ংকর! জালিমরে দেখায়া দিবে কারে কারে টার্গেট করতে হবে। এরা হইতেছে লিস্ট সাপ্লাই করার লোক।…

থার্ড এবং ক্রুশিয়াল ঘটনা হইতেছে, এরা ‘ভদ্রলোক’; মানে, এমন একটা এটিটুড নিয়া থাকেন যে, যেহেতু সুন্দর কইরা ও শুদ্দ-ভাষায় উনারা কথা বলতেছেন, উনারা তো সত্যি-কথা বলতেছেন! অথচ ঘটনা হইতেছে, এই এসথেটিকাল সুপিরিয়রিটি’টারে উনারাই তৈরি করতেছেন ক্ষমতা-কাঠামের সাথে খায়-খাতির রাখার ভিতর দিয়া। মানে, এই ‘সুন্দর’ ও ‘শুদ্দতা’ – এইটা আখেরে একটা পাওয়ার-রিলেশনেরই আউটকাম! যেইটা মোরাল করাপশনের ভিতর দিয়া নিজেরে ‘হাই-ক্লাস’ দাবি করার পরে সেইটা দিয়াই মোরাল-জাস্টিফিকেশনের জায়গাগুলারে তৈরি করতে চায়। যার ফলে, ক্ষমতার জায়গাগুলারে সার্ভ করার বাইরে এইটা নিজেদের এগজিসটেন্সটারে ধইরাই রাখতে পারার কথা না!

আমি বলতে চাইতেছি, আজকের বাংলাদেশে যারা নিরপেক্ষ-লিগ, উনারা ক্ষমতার লগে কানেকশনের ভিতর দিয়াই উনাদের এসথেটিকসটারে তৈরি করে, ক্ষমতারে তার সুবিধামতো টার্ম ও নেরেটিভগুলার ভিতর দিয়া সার্ভ করে, এবং এই গ্রুপটা সবসময়ই এন্টি-পিপল একটা পলিটিকাল পজিশন নিয়া থাকে, হিস্ট্রিকালি।

এই জায়গাটারে খালি একটু ভুল-বোঝা, ডিফরেন্ট পারসপেক্টিভ বা কালচারাল সুপিরিয়রিটির জায়গা থিকা দেখতে গেলে বড়সড় রকমের ভুলই করবো আমরা।

Continue reading

নোটস: অক্টোবর, ২০২৩

০৫.১০.২৩

এইটা খুব ভুল কথা যে, কিছু খারাপ লোকের কারণে একটা দেশ বা সমাজ ধ্বংস হয়া যায়; বরং যখন বেশিরভাগ মানুশ চুপ কইরা থাকে তখনই অই দেশ বা সমাজের মরনের শুরু হয়…

– অবিচুয়ারি: আসাদ চৌধুরী –

আমি কবিতা-লেখার আগে থিকাই কবি হিসাবে আসাদ চৌধুরী’রে চিনতাম। উনার কবিতার কারণে না ঠিক, আমাদের এলাকায় একটা প্রোগ্রামে আসছিলেন। স্কুলে পড়ি আমি তখন। অই প্রোগ্রামে এম.সি. (মাস্টার অফ সিরমনি) মানে তখনকার দিনে কইতো – ‘উপস্থাপক’, ছিলাম আমি।

তো, স্টেইজে অতিথিদের সিরিয়াস-মুখ নিয়া বইসা থাকতে হইতো তিন-চাইর ঘন্টা। (মোবাইল টিপাটিপি করারও কোন উপায় ছিল না! মানে, মোবাইল ফোন তো তখন ছিল না।) অন্য বক্তাদের কথা শুনতে হইতো, এবং তেমন কোন এক্সপ্রেশন শো করা যাইতো না। এতোক্ষণ বইসা থাকতে থাকতে উনি মেবি টায়ার্ড হয়া গেছিলেন, এই কারণে একটু পরে উইঠা, পর্দার আড়ালে গিয়া সিগ্রেট ধরাইলেন, কাধের ঝোলা-ব্যাগ থিকা পান বাইর কইরা খাইলেন। (তখনকার দিনে কবি হইতে হইলে ঝোলা-ব্যাগ রাখতে হইতো।) আমি ব্যাক-স্টেইজের চেয়ারে বইসা উনার কাজ-কাম দেখতেছিলাম।

কবি জিনিসটা কি রকম – সেইটা বুঝার ট্রাই করতেছিলাম মনেহয়। স্টেইজে ফিরার সময় যখন আমারে ক্রস করে যাইতেছিলেন, তখন সালাম দিলাম, উনি হাসলেন একটু।

উনি বক্তৃতা দেয়ার সময় খুব রসায়া রসায়া কথা বলতেছিলেন। অডিয়েন্স খুব খুশি হইছিল।

পরে খেয়াল কইরা দেখলাম মোটামুটি ৩০ বছর পরে আমার মেয়ের স্কুলেও উনি একটা প্রোগ্রামে আসছিলেন। মানে, উনি স্কুল-কলেজের নানান প্রোগ্রামে যাইতেন। টিভিতেও ‘অনুষ্ঠান’ করতেন। উনার কথার ভঙ্গি ছিল সুরেলা। টাইনা টাইনা কথা বলতেন। মনে হইতো, পুঁথি পড়তেছেন। উনার কথা শুনতে ভাল-লাগতো। ভাল্লাগতো উনার টোনের কারণেই মনেহয়।

উনার কবিতা তো পড়ছি পরে, কিন্তু কবিতার কথা তেমন মনে নাই। “তবক দেয়া পান” নাম’টাই খালি বলা হয় উনার কবিতার ব্যাপারে। (উনার পয়লা কবিতার বইয়ের নাম এইটা।) কিছু ‘ভালো কবিতা’-ও উনি লেখছেন মেবি, অই সময়ের। কিন্তু কবি-হওয়াটা যে একটা পারফরমেন্সেরও ঘটনা – এই জিনিসটারে উনি কিছুটা ফিরায়া নিয়া আসতে পারছিলেন। মানে, একটা সময়ে কবিতা তো পারফর্ম করা লাগতো, গানের মতো না হইলেও আসরে, মজমায়, আড্ডাতে পড়া লাগতো। একটা ইন্ট্রো, কিছু ঘটনা, কনটেক্সট, রিলিভেন্সসহ। আসাদ চৌধুরী অই জায়গাটাতে ইউনিক ছিলেন।

সাহিত্য-সমাজ এবং কবি-সমাজের লোক তো ছিলেনই, কিন্তু অই গ্রুপগুলা কুটনামিগুলা করার ভিতরেই নিজেদেরকে পুরাপুরি লিমিট করে নাই তখনো; বরং অইখানে পারফরমেন্সের কিছু ঘটনাও ছিল (এখনো কিছু স্পেইস তো আছেই, সবসময় থাকেই কিছু…), অইখানে আসাদ চৌধুরী আমার ধারণা অনেকেরই কিছুটা ‘ঈর্ষার পাত্র’ হইতে পারতেন, কিন্তু মেবি ‘টিটকারি’-ই পাইছিলেন। নিজের কবিতা পড়ার জন্য যারে অন্য গলা ধার করতে হয় নাই! মানে, আবৃত্তিকার খুঁজতে হয় নাই। কিন্তু কবি যদি নিজেই কবিতা পড়েন, আবৃত্তিকাররা কি করবে তাইলে! যে কবিতা পড়ে সে তো ‘আবৃত্তিকার’, কবি তো ততোটা না! এই রিস্ক বা জাজমেন্ট (মানে, টিটকারি তার পাওনা) ছিল।

তো, ‘আধুনিক বাংলা-কবিতা’ অই জায়গাটা হারায়া ফেললেও, সমাজে অই ভ্যাকুয়ামটা এখনো আছে; আমরা এক্সপেক্ট করি যে, একজন কবি সুন্দর কইরা কথা বলতে পারবেন, ভালো ফ্লার্ট করতে পারবেন, খালি কবিতাই লেখবেন না, কবিতা নিয়া কথাও বলতে পারবেন; মানে, রিডারের লগে, অডিয়েন্সের লগে বাত-চিত করবেন। আসাদ চৌধুরী এই কাজটা করতে পারতেন। যদিও স্যাডলি এক ধরণের ‘আধুনিক কবিতা’-ই উনি লেখছেন বা লেখতে চাইছেন। (‘হয় নাই’ যদিও।) “ওপারে ভালো থাকবেন”রেই উনি আপনাইছেন। যারা উনার কথা শুনছেন এবং উনার কবিতা পড়ছেন – এই জিনিসটা টের পাওয়ার কথা যে, এর মধ্যে ব্রিজিংটা উনি তেমন তৈরি করতে পারেন নাই।

কিন্তু একজন কবি কি পারছেন তার চাইতে অনেক সময় কি পারেন নাই – সেইটাও অনেক ইম্পর্টেন্ট ঘটনা হয়া উঠে। মানে, আসাদ চৌধুরী তো একটা কবি-সমাজের ঘটনাই ছিলেন। সমাজে ‘কবি’ পরিচয় নিয়া বাঁইচা ছিলেন। আজকে মারা গেলেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন!

নুরুল কবির কইতেছিলেন, বিএনপি একটা নেশনাল এম্বেরাসমেন্ট! তো, কথা কিছুটা সত্যি।

ফুটবলে অনেক প্লেয়ার দেখবেন ২০%-৩০% চান্সের জায়গা থিকা কিক কইরাও গোল কইরা ফেলে। লেনিন যখন রাশিয়ায় কমিউনিস্ট বিপ্লব করেন তখন মেবি ১০% চান্স ছিল সাকসেসফুল হওয়ার। জিন্নাহ যখন পাকিস্তান আদায় করেন তখনো উনার চান্স ৫০%’র মতো ছিল মেবি। এরশাদের পতনের সময়ও ৭০%’র মতো ঘটনা ছিল। এখন নয়া বাকশালের এগেনেইস্টে ফাইটে বিএনপি’র পপুলারিটি তার চাইতেও বেশি, ৮০% লোকের সার্পোট আছে এটলিস্ট। আমরা সবাই মোটামুটি জানি যে, দেশে আরেকটা দুর্ভিক্ষ উপহার না দিয়া বিদায় হবে না এইবারের বাকশালও।

কিন্তু তারপরেও বিএনপি এই অবৈধ সরকার’রে ফেলতে পারতেছে না। কেন? Continue reading

নোটস: সেপ্টেম্বর, ২০২৩

০২.০৯.২৩

শহরের মধ্যে এইসব ফ্লাইওভার, ওভার-পাস, আন্ডার-পাস, মেট্রো-রেল, এক্সপ্রেস ওয়ে বানানোর পারপাস তো মোটাদাগে দুইটা –

১. মেগা প্রজেক্ট বা “উন্নয়ন” না থাকলে লুটপাট করবো কই থিকা!

২. এইসব স্ট্রাকচার দেখলে, ছবি তুললে তো ইউরোপ-আম্রিকার মতো লাগবে তখন দেশটারে! এই ইমেজের লোভ’টাও একটা সিগনিফিকেন্ট ঘটনা।

কিন্তু এই ‘উন্নয়ন’-এ কি লাভ হইলো? ঢাকা শহরে কি ট্রাফিক জ্যাম কমছে কোথাও? বরং তো বাড়ছে আরো। কারণ ট্রাফিক জ্যাম কমানোর জন্যও এইসব স্ট্রাকচার বানানো হয় নাই, বানানো হইছে লুটপাট করার জন্য, আর দেখতে যাতে ইউরোপ-আম্রিকার মতো লাগে; আর এই পারপাস-ই সার্ভ করে এই জিনিসগুলা।

শর্ট-টার্মে তো ব্যাপক লস প্রজেক্টই, লং-টার্মেও ‘এই হবে, সেই হবে’ আলাপ দিলেও আল্টিমেটলি তেমন কিছুই হয় না। হিস্ট্রিতে খেয়াল করলে দেখবেন, যে কোন জুলুমের বা ফেসিজমের মেগা-স্ট্রাকচার ফেটিশ আছে; এই এক্সপ্রেস ওয়ে বা মেগা-প্রজেক্টগুলা অই ফেটিশেরই নমুনা আসলে একেকটা।

ব্যাটারি রিকশার রেভিউলেশন

দুই-একমাস আগে গুলশান দুই-এর সার্কেল থিকা এম্রিকান এম্বেসি/নতুন বাজার যাওয়ার দিকে দেখি রিকশা দাঁড়ায়া আছে কয়েকটা। জিগাইলাম, যাইতে পারবেন এই রাস্তায়? (মানে, ট্রাফিক পুলিশ কি যাইতে দিবে?) রিকশার ড্রাইভার ইয়াং, একটু হাইসা দিয়া কইলো, উঠেন না! সাথে জিগাইলো, একলাই যাইবেন? মানে, বুঝলাম যে, বেশিরভাগ পেসেঞ্জার শেয়ারে-ই যান। এই অল্প একটু রাস্তার রিকশা ভাড়া ৪০ টাকা। শেয়ারে গেলে ২০ টাকা কইরা দিলে আসলে পোষায়া যায়। আর সিট যেহেতু আছে দুইজনে বসার, একসাথে গেলে তো কোন সমস্যা নাই। একটা ওয়েব-সিরিজ যদি বানায়া ফেলা যায় রিকশা শেয়ারিংয়ের, “কাছে আসার গল্প” নামে, তাইলে “জেন্ডার ইকুয়ালিটি”-ও এচিভ কইরা পসিবল হইতে পারে!

মানে, “শেয়ারি ইজ কেয়ারিং” তো আছেই, কিন্তু রিকশা-ভাড়া যেই পরিমাণ বাড়ছে, রিকশা-শেয়ারিং’টা জাস্ট মিডল-ক্লাসের “ভীরু মনের” জন্য শুরু হইতে পারতেছে না আসলে। আরেকটু “উন্নয়ন” হইলেই এইটা শুরু হয়া যাইতে পারবে আশা করি।

২.
মিরপুর ১০ নাম্বার সার্কেলের পরে দেখলাম চিপা-চাপায় ব্যাটারি-রিকশা চালু হয়া গেছে! রাতের বেলা বেশ কয়টা দেখলাম রাস্তায়। “বিপ্লবীদের” মতো ঘুইরা বেড়াইতেছে। ব্যাটারি-রিকশা আসলে ভালো। অইখানে শেয়ারিং নিয়া কোন সমস্যাই নাই। দুই-চাইরজন ইজিলি বইসা যাওয়া যাইতেছে। ওয়েট করারও কিছু নাই। দুই-চাইর মিনিট দাঁড়াইলে কিছু প্যাসেঞ্জার পাওয়াই যায়।

ঢাকার বাইরে, জেলা ও উপজেলা সদরগুলাতে এই “সাম্যবাদী বিপ্লব” এখন রিয়ালিটি’তে পরিণত হইছে। সব হাইওয়েগুলাতে সার্ভিস রোড চালু করলে আমার ধারণা এই রেভিউলেশন সারাদেশে ছড়ায়া যাবে। এখনই ছড়ায়া গেছে, কিন্তু রোড একসিডেন্টের সব দোষ সার্ভিস-রোড না থাকার উপ্রে না চাপায়া ব্যাটারি রিকশার উপ্রে চাপানো হইতেছে বইলা এখনো একটা না-রাজি এন্টি-পিপল নিউজ-মিডিয়া স্প্রেড করতেছে। কিন্তু এই “বিপ্লব” বেশিদিন দমায়া রাখা যাবে বইলা মনেহয় না।

৩.
এতোসব ফ্লাই-ওভার, এক্সপ্রেস ওয়ে বানানোর একটা কারণ আসলে যাতে প্রাইভেট কারওলাদেরকে রাস্তায় রিকশার গরিবি দেখতে না হয়! কিন্তু ব্যাটারি-রিকশার বিপ্লব, আমি আশা করি, ফ্লাইওভারগুলা দখল না করতে পারলেও অই জিনিসগুলারে ইন-ভ্যালিড কইরা দিতে পারবে একদিন। এইটা সেইদিনই হইতে পারবে, যেইদিন গরিব’রে ভালোবাসতে পারবো না আমরা, বরং ভালোবাসা জিনিসটারে এতোটা ‘গরিব’ মনে হবে না আমাদের।

সেপ্টেম্বর ০৩, ২০২৩

ব্যাপারটা এইরকম না যে নিউইয়র্ক টাইমস বলার আগে ঘটনাগুলা ঘটে নাই, বরং বাংলাদেশি গোয়েবলস পিআলো, ডিস্টার যে দিনের পর দিন এই সত্যি-কথাগুলারে গোপন কইরা যাইতেছে, সেইটা এখনো খেয়াল করতে আমরা নিজেদেরকে রাজি করাইতে পারতেছি না!

মানে, এই ঘটনা তো বাংলাদেশে ঘটতেছে অনেক দিন ধইরাই; কিন্তু এই জিনিসগুলারে দেখা হইতেছে, বলা হইতেছে, কালার কইরা দেয়া হইতেছে – “বিএনপির অভিযোগ” হিসাবে। এখনো এই নেরেটিভ খুব ভালোভাবেই চালু আছে।

দুনিয়াতে কোন হিটলারই গোয়েবলস ছাড়া সারভাইব করতে পারে না। বাম-আওমি বাকশালিদের গোয়েবলস হইতেছে পিআলো আর ডিস্টার।

০৪.০৯.২০২৩

ভদ্রলোকেরা নিজেদের সমস্যারে সমাজের সমস্যা, নিজেদের উন্নতিরে সমাজের উন্নতি, এমনকি নিজেদের রুচিরেই সমাজের রুচি হিসাবে ভাবতে পছন্দ করেন; খালি ভাবতে পছন্দ করলেও কোন সমস্যা ছিল না, এইটারে একটা ‘সার্বজনীন’ এবং ‘অবশ্যই পালনীয়’ একটা শর্ত হিসাবে এস্টাবলিশ করেন; এবং এর থিকা যে কোন বাল (চুল) পরিমাণ বিচ্যুতি’রে ‘সামাজিক অবক্ষয়’ হিসাবে দাবি কইরা ‘সমালোচনা’ ও ‘সাহিত্য’ রচনা করতে থাকেন।

#কালচারালপাওয়ার #ড্রাফট
Continue reading

নোটস: অগাস্ট, ২০২৩

অগাস্ট ০১, ২০২৩

উপমা দিয়া কথা বলার সবচে ঝামেলার জিনিস হইতেছে যে, উপমাটাই যে বস্তু বা ঘটনা না, সেইটাতে গিয়া কথাটা আটকায়া যায় বেশিরভাগ সময়; মানে, কনসার্নটা হয়া উঠে উপমা’টা ঠিকাছে কি ঠিক-নাই – অই জায়গাটা; কি কথা বলছেন, সেইটা আর থাকে না। যেমন ধরেন কইলেন, “পৃথিবী কমলালেবুর মতো”; কিন্তু পৃথিবী তো কমলালেবুর মতো না পুরাপুরি! দুইপাশ যে চেপ্টা, সেইটা তো একুরেট না! বা পৃথিবীর সারফেইস তো কমলালেবুর মতো স্মুথ না! এই-সেই… মানে, আপনি যে রাউন্ড-শেইপের একটা কিছু মিন করতে চাইতেছিলেন, সেইটা যেন এজ ইট ইজ বা হুবহু সেইটাই হওয়া লাগবে! 🙁

এইরকমের একটা রিস্ক সবসময়ই থাকে। তো, অই রিস্কটা মাথায় রাইখাই একটা কথা বলতে চাইতেছি। কথাটা জামায়াতে ইসলামি নিয়া। নয়া বাকশাল (আওমি-লিগ এবং সিপিবি-মার্কা বামদলগুলা) এবং তার পালা-কুত্তারা জামায়াতে ইসলামি-রে নিয়া কেন এতো কনসার্নড থাকে, কোনকিছু হইলেই কেন জামাত-জুজু নিয়া ঝাপায়া পড়ে? এইটারে বুঝতে পারবেন একটা উপমার ভিতর দিয়া।

হিটলার তো ইহুদিদেরকে দেখতে পারতো না, হাজার হাজার ইহুদি হত্যা করছিল; কিন্তু শুধুমাত্র ইহুদিদেরকে খুন করার লাইগা কি সে সেকেন্ড ওয়ার্ল্ড-ওয়ার বাঁধাইছিল? এইটা অবশ্যই একটা ওয়ান অফ দ্য এজেন্ডা ছিল তার, কিন্তু এর লাইগা তার ইউরোপ আক্রমণ করার দরকার ছিল না। এমনকি ইহুদিরা নির্যাতিত হইছিল বইলাই কোন বুঝদার মানুশ এখনকার ইসরাইল-রে তো সার্পোট করতে পারে না!

তো, নয়া বাকশালিরা জামায়েত ইসলামি-রে ইহুদিদের মতো ইউজ করতেছে এখনকার বাংলাদেশে। তাদের নেতা-কর্মিদেরদের খুন করছে, গুম করছে, এখনো সোশালি আউটকাস্ট করার ট্রাই কইরা যাইতেছে। নাৎসি জার্মানিতে যেইরকম কাউরে ইহুদি বইলা প্রমাণ করা গেলেই জেলে ভইরা ফেলা যাইতো, আজকে বাংলাদেশে কাউরে জামাত-শিবির নাম দিতে পারলেই জেল-হাজতে ঢুকায়া দেয়া যায়।
(এই ভিক্টিমাইজেশনের সবচে বড় দায় পিআলো এবং ডিস্টারের…) বুয়েটের আবির-কেও খুন করা হইছিল একই কায়দায়।

সেকেন্ড ঘটনা হইতেছে, জামায়াতে ইসলামি’র টুটি চাইপা ধইরা রাখছে নয়া বাকশাল; গত দুই টার্মের জাতীয় পার্টির মতো। জামাত-রে যেমনে নাচায় অমনেই নাচবে; যার ফলে জামাত-রে দিয়া “প্রধান বিরোধীদল” বানানোর পায়তারা অরা করবে। জাতীয় পার্টি, জাসদ, সিপিবি-রে দিয়া আর হবে না, উনাদের যৌবন শেষ, উনাদের খেমটা নাচ পাবলিক আর খাবে না! এই কারণে জামাত-রে মঞ্চে নিয়া আসার সব্বোর্চ ট্রাই বাকশালিরা কইরা যাবে।

থার্ড এবং ইম্পর্টেন্ট ঘটনা হইতেছে, এই অবৈধ-সরকার সবসময় দুইটা বড়ি বেচার ট্রাই করবে – একটা হইতেছে ইসলাম, আরেকটা হইতেছে নারীবাদ। মানে, এইগুলা কোন ইস্যু-না না, বরং এইগুলা ইস্যু হিসাবে অনেক একসাইটিং, এনগেইজিং এবং সবচে জরুরি ব্যাপার হইতেছে এইগুলা নিয়া আলাপ করলে জুলুমের জায়গাটা নিয়া কোন কোশ্চেন না করলেও হয়। যার ফলে, ইসলাম ভার্সেস সেকুলার এবং জামায়েতে ইসলামি সবসময় বাকশালি নিউজ-মিডিয়ার এবং সোশাল-বটদের প্রায়োরিটি লিস্টে থাকতে থাকবে।

জামাত-শিবির যদি টপিক হিসাবে সেন্টার-পয়েন্টে থাকে, তাইলে ইলেকশন ও ডেমোক্রেসির আলাপটারে একটু সাইড-লাইনে ঠেইলা দেয়াটা সহজ হয়, আলাপটারে কিছুটা হইলেও ডিবেটেবল কইরা তোলা যায় তখন। মোটাদাগে, এখনকার পলিটিকাল কনটেক্সটে জামাত-শিবির নিয়া আলাপ করার এইটাই সবচে বড় সিগনিফিকেন্স। এর বাইরে, বাদবাকি আরো অনেক আলাপ তো আছেই।

 

অগাস্ট ০২, ২০২৩

বিএনপি’র আন্দোলনের কারণে যদি এই অবৈধ আওমি-বাকশালি রিজিমের পতন হয়, অরা আসলে বাঁইচাই যাবে একভাবে। কারণ এই রিজিমের পতন যতটা না পলিটিকাল কারণে তার চাইতে ইকনোমিকাল কারণে হবে আসলে। পলিটিকাল পাওয়ারে যারাই থাকুক কোন মিরাকল না ঘটলে আগামী বছর দেশ-রে দেউলিয়া ঘোষণা করা লাগবে। যেই পরিমাণ লোন নেয়া হইছে দেশের মানুশের উপরে ভ্যাট-ট্যাক্সের বোঝা চাপাইয়াও তার কিস্তি শোধ করা পসিবল হবে না।

এখন গোয়েবলস মিডিয়ার কারণে মনে হইতে পারে যে, মানুশরে যা বুঝাবে তা-ই বুঝবে! কিন্তু ভুয়া ডেটা দিয়া তো পেট ভরবে না মানুশের। এবং মানুশ মইরা গেলে কোনদিন এর এগেনেস্টে দাঁড়াবে না – এই এজাম্পশনও কাজ করবে না; এই বয়েলিং ওয়াটার যখন আরো গরম হয়া উঠবে না চিল্লায়া কোন উপায় থাকবে না মানুশের। আর টাকা-পয়সাঅলা সরকারি-আমলা, বাকশালি-নেতারাই পলাবে সবচে আগে।

তো, বিএনপি’র আন্দোলনের কারণে পলাইতেছে বা ক্ষমতা ছাইড়া দিতেছে – এইটা আসলে তাদের জন্য শেষ সেইফ এগজিট। মানে, এখনকার কনটেক্সটে এইরকম চিন্তাটাই নরমাল অনেকটা। কিন্তু মানুশের কাছে মাফ চাওয়ার মতো কলিজা তাদের নাই। যার ফলে খুব বাজে-পরিণতিই তাদের হবে। সব জালিমের যেইরকম হয়। সেইটা যত স্যাড-ই হোক! এইটা যে তাদের লাস্ট চান্স ক্ষমতার দম্ভে এইটা তারা বুঝতে পারবে – এই চান্স খুবই কম। মানে, হইলে সেইটা আরো আগেই হইতো। যা-ই হোক…

 

অগাস্ট ০৩, ২০২৩

আগে তো খালি ভিক্ষুকরা ভিক্ষা করতো, এখন রিকশাঅলারাও নিয়মিত ভিক্ষা চায়! গতকালকে ৩টা রিকশায় উঠলাম, ভাড়া দেয়ার পরে ২জনই ‘সাহায্য’ চাইলো! মানে, কিছুদিন আগেও রিকুয়েস্ট করতো, জমা বাড়ছে, ভাড়া বাড়ায়া দেন! এখন ১০টাকা ভাড়া বাড়ানো পরেও চলতেছে না আসলে। যার ফলে, ‘সাহায্য’ চান এখন – চিকিৎসার জন্য, ধার-দেনা শোধ করার জন্য।

তো, এইগুলা কিছুটা সত্যিও আসলে। এইরকম এক্সাম্পল আমি পাইছি ছোট-খাট বিজনেস যারা করতেন, তারা লস-টস দিয়া ঢাকায় চইলা আসছেন, রিকশা চালান, সিএনজি চালান। তবে মেডিকেল-রিজনটা ইন্টারেস্টিং। এখন যারা ভিক্ষা করেন, তাদের ‘সাহায্য’ চাওয়ার কারণ দুইটা – এক, কিছু খাবার কিনে দেন; আর দুই হইতেছে চিকিৎসার খরচ দেন কিছু। আগের দিনে ‘মেয়ের বিয়া’র জন্য টাকা চাইতো, কিন্তু এই কারণ শুনলে মিডল-ক্লাস লোকজন চেইতা যায়; ভিক্ষা বা সাহায্য দিতে চায় না আর। লেখাপড়ার কথা কইলেও একটু সন্দেহের চোখে দেখে। কিন্তু মেডিকেল গ্রাউন্ডটা সেইফ, আমরা সবাই কাছের কোন মানুশরে কোন না কোন অসুখে-বিসুখে মইরা যাইতে দেখছি; যার ফলে ইস্যুটার লগে কানেক্ট করতে পারি বেশি। এমনকি খাওয়া-দাওয়ার চাইতেও; কারণ যারা ভিক্ষা বা সাহায্য দিবেন তাদের কোনদিন খাওয়ার কষ্ট ফেইস করার কথা না, আর যে এইটা এক্সপেরিয়েন্স না করছে, সেইটা ফিল করতে পারবে না এতোটা। এই কারণে, খাওয়ার রিজন’টা ওয়াইডলি ইউজ হইলেও সাকসেস-রেট কমই হওয়ার কথা।

তবে সমাজে যার ফরচুনেট, যাদের কাছে টাকা-পয়সা আছে, তাদের টাকা-পয়সাতে গরিবের হক আছে। যেই কারণে, যাদের উপায় আছে তাদের অন্যদেরকে হেল্প করা উচিত। এইটা মোটামুটি সব সমাজেরই নিয়ম, এবং যেই সমাজে টাকা-পয়সা বা ক্ষমতাধর লোকজন তাদের চাইতে লোয়ার-ক্লাসের লোকজনরে বেশি হেল্প করে, কম ঘৃণার চোখে দেখে, সেইসব সমাজে সামাজিক-শান্তিও বেশি থাকার কথা। কিন্তু মিডল-ক্লাসের একচুয়াল ইনকাম তো কমতেছেই, যার ফলে ভিক্ষা বা সাহায্য করার পরিমাণও সমাজে কইমা আসতে থাকার কথা। আগে ১০ জনের কাছে ভিক্ষা চাইলে যদি ৪ জনে ভিক্ষা দিতো, এখন সেইটা ২ জনে নাইমা আসার কথা। Continue reading