০১.১২.২০২৩
ফিল-গুড এক্টিভিজম ৩
কিছুদিন আগে জিজেকের একটা ভিডিও দেখতে গিয়া জিনিসটা খেয়াল করতেছিলাম, একটা মাহফিলে (সেমিনারে) ওয়েস্টার্ন পিপলদের সামনে, যদিও উনি ওয়াজ (কথা-বলার) করার শুরুতেই বইলা নিছেন যে, হামাসের হামলা’রে উনি সার্পোট করেন না, এবং এরপরে বলতেছেন ইজরাইল যা করতেছে তা আরো জঘন্য, ব্লা ব্লা ব্লা… কিন্তু উনার কথা উনি শেষ করতে পারেন নাই, অডিয়েন্স থিকা উনারে কোশ্চেন করা শুরু করছে, এই কথা কেমনে বলেন আপনি! (আমাদের এইখানে যেইরকম ‘জামাত-বিএনপি’ বানায়া হাউকাউ লাগায়া দেয়া হয়…)
তো, এইরকম আমিও বইলা নিতে চাই যে, ইন এনি সেন্স ইজরাইলি হামলা ও খুনগুলারে সার্পোট করার কোন গ্রাউন্ডই নাই, এবং থাকতে পারে না। কিন্তু, মাই গড (হে খোদা না এতোটা, বরং অনেকটা জিজেকের বুলি), আজকে বাংলাদেশে “পালেস্টাইন-সংহতি” কি পারপাস সার্ভ করে আসলে? – এই জায়গাটারে যদি এড়ায়া যাই, সেইটা তো খালি একটা ইন্টেলেকচুয়াল বাটপারির ঘটনা না খালি, পালেস্টাইনের ট্রু ক’জের জায়গাটারেও শ্যালো বানায়া দেয়ার ঘটনাও একইসাথে। মানে, বাংলাদেশে থাইকা পালেস্টাইনের প্রতি সার্পোট আপনি দেখাইতে পারবেন না, বা দেখাইলেই সেইটা শ্যালো ব্যাপার হয়া যাবে – তা না; কিন্তু এইটা কি মিন করে আসলে? – সেই জায়গাটাতে কি চোখ বন্ধ কইরা রাখবো আমরা?
আমি বলতেছি না, আপনি নয়া বাকশালের এগেনেস্টে কথা কইতে গিয়া জেলে ঢুইকা যান, আপনার বাড়িতে আইসা ছাত্রলিগ যুবলিগের লোকজন লুটতরাজ করুক, রাস্তা-ঘাটে অদের মাইর-ধর খান; কিন্তু চোখের সামনে এইসব জিনিসরে ইগনোর কইরা “পালেস্টাইনের প্রতি সংহতি” পালন করতে করতে নিজেরে কি কিছুটা ডাম্ব লাগার কথা না? আবারো বলি, ডোন্ট গেট মি রং, যারা পালেস্টাইন নিয়া কনসার্ন উনাদেরকে ইমোশনালি ব্যাড ফিল করাইতে চাই না আমি। কিন্তু কেমনে পারেন উনারা! ব্যাপারটা খালি কন্ট্রাডিক্টরই না, উইয়ার্ডও না! যে, নিজের দেশের অন্যায়-অত্যাচারে আমি চোখ বন্ধ কইরা রাখতে পারি, কিন্তু আফ্রিকায় কোন শিশু মারা গেলে, তার লাইগা আমার পরাণ কান্দে! কারণ অই কান্দাটা মোর গ্লোবাল, লোকাল না এতোটা!
এখন ব্যাপারটা এইরকম না যে, মিডল-গ্রাউন্ড’টা দুনিয়াতে নাই হয়া যাইতেছে না, বরং এইটা নতুন ফর্মে এপিয়ারড হইতেছে বইলা আমি মনে করি। আপনি চুপ কইরা থাকবেন না, বরং অন্য কিছু নিয়া হাউ-কাউ করবেন, যেইটা নিয়া কথা কইলে রিস্ক কম। যেমন ধরেন, ব্রিটিশ আমলে আপনি নীরদ শ্রীচোধুরি’র মতো ফিউডালিজমের এগেনেস্টে মর্ডানিটির পক্ষ নিলেন; এইরকম, অটোক্রেসি ও ডেমোক্রেসি’র বদলে আপনি নারী-অধিকার নিয়া সরব হইলেন! জিনিসগুলা যে অ-দরকারি – তা না, বরং অনেকবেশি ক্রুশিয়ালও, কিন্তু আপনি যেইটা করতেছেন, লোকাল কনটেক্সট’টারে আমলে না নিয়া গ্লোবাল একটা পারসপেক্টিভ থিকা আলাপটা দিতেছে, এবং এইটা করতে গিয়া “জ্ঞানগত” একটা সুপিরিয়রিটিও ফিল করতে পারেন যে, আমিও “বিশ্ব মানবতার” কথা কইতেছি! বাদবাকি ছোট-খাট জিনিস নিয়া তুমরা, যারা গরিব-লোকজন আছো, তুমরা কথা বলো না কেন! 🙂
ব্যাপারটা এইরকমও না যে, আপনি যেহেতু পালেস্টাইনের পক্ষে ভোকাল আছেন আপনারে বাকশাল-বিরোধী কথাও কইতে হবে! এইটা আমার পয়েন্ট না। সবগুলা জিনিস নিয়া সবারই কনসার্ন থাকতে হবে – এইটা তো জরুরি না! বা সিলেক্টিভ হইতে পারার ব্যাপারও না। বরং একেক সময় একেকটা জিনিস নিয়া কনসার্নড হওয়াটা একটা ওয়ে-আউটের ঘটনা হয়া দাঁড়ায়। ফ্রেন্ডস সিরিজটা দেখলে এইটা টের পাইবেন। বেশিরভাগ সময়, অন্য একটা ইস্যু আইসা চোখের সামনের একটা ভিজিবল ইস্যু থিকা কারেক্টারগুলারে বাঁচায়া ফেলে; বা এটলিস্ট এই টেকনিক’টা অরা ট্রাই করে; পারুক, বা না-পারুক।
আমি জাস্ট মনে করতে চাই যে, পালেস্টাইনের প্রতি বাংলাদেশে আমাদের কনসার্নটা এইরকম কাভার-আপ না, ইস্যু ঘোরানোর একটা ইস্যু না। কিন্তু আমার মন তো খারাপ, খারাপ খারাপ জিনিস মনেহয় আর কি! আমি শিওর, যারা বাংলাদেশে পালেস্টাইনের পক্ষে ফাইট করতেছেন, তাদের মনে আমার মতো এই খারাপ-চিন্তাগুলা নাই বা থাকবে না।
…
০৪.১২.২০২৩
আমি ডিসাইড করছি বাংলা বানানের ব্যাপারে এখন থিকা এই কয়টা নিয়ম ফলো করবো*, যেইটা ট্রেডিশনাল বানানে ‘ভুল’। মানে, আমি কিছু বানাম-ভুল করতে চাই। এই কারণে ডিসাইড করছি যে, এই ৯টা নিয়ম ট্রাই কইরা দেখবো আগামি ছয় মাস বা এক বছর:
১. ন ণ এর জায়গায় ন
২. জ য এর জায়গায় জ
৩. ৎ এর জায়গায় ত
৪. ই ঈ এর জায়গায় ই
৫. উ ঊ এর জায়গায় উ
৬. ি ী এর জায়গায় ি
৭. ু ূ এর জায়গায় ু
৮. যুক্তাক্খর যত কম রাখা যায় (একটা নিচে আরেকটা না বসায়া, বা লগে না জড়ায়া আলাদা হরফ রাখার), তত বেটার। দেখতে একদম দরকারি না হইলে বাদ-ই দিবো।
৯. র-ফলা, য-ফলা যত কমানো যায় বেটার; এতে কইরা উচ্চারণ পারফেক্ট হয় না, বরং শিক্খিত-গিরি ফলানো হয় আসলে বেশি। [অ্যা না লেইখা আ বা এ… এইরকম]
[তো, আমিই ফার্সট না যে এই জিনিসগুলা টেরাই করবো। বানান নিয়া এইরকমের চেষ্টা মুহম্মদ শহীদুল্লাহ করছেন, রক মনু’রও একটা পরস্তাব আছে। আমি উনাদের এবং আরো কয়েকজনের কিছু সাজেশনরে কন্সিডার করতেছি। যদি দরকার পড়ে নিজেও কিছু জিনিস সাজে্সট করবো, এর সাথে। এইখানে শেষের চাইরটা মোটামুটি আমার সাজেশন।…]
২.
একটা এনার্কি ক্রিয়েট করার জন্য এইটা করবো – তা না, এর পিছনে কিছু রেশনাল তো আছেই আমার, অইগুলা নিয়াও কথা বলবো কিছু। (আল্লা চাহে তো ২০২৪ সালে “বানাম ভুল” নামে একটা বইও লেখতে চাই।) কি্নতু ভাষা হইতেছে প্রাকটিসের ঘটনা, আগে লেইখা দেখি, নিজের জন্য ইজি হয় কিনা। মানে, বানান নিয়া এর আগে যত কাজ হইছে, তার সবগুলাই সাকসেসফুল না হওয়ার একটা মেজর কারণ হইতেছে আগে নিয়ম বানায়া তারপরে সেই হুকুম তামিল করার ঘটনা, উল্ট’টা না; যে লেইখা দেখি পুরান নিয়মগুলা রেলিভেন্ট কিনা বা নতুন নিয়মগুলা কোন প্রবলেম ক্রিয়েট করে কিনা। তারপরে দেখা যে, রেশনালও কিনা – মানে, এইটা সেকেন্ডারি ঘটনাই কিছুটা।
তো, বানানের ব্যাপারে আমার পয়েন্ট অফ ভিউ মেইনলি দুইটা –
১. বানান উচ্চারন অনুযায়ি হওয়াটা বেটার; বুৎপত্তি [বুতপত্তি] বা কোন শব্দ কোন জায়গা থিকা আসছে সেই সোর্স-অনুযায়ি না
২. শব্দের বা বানানের আলাদা কোন মিনিং নাই, কথার মধ্যে কেমনে ইউজ করতেছি সেইটার উপরেই ডিপেন্ড করে মেইনলি। [একই ধরণের উচ্চারণ হইলেও এবং একই বানানে লেখা হইলেও মিনিং আলাদাই থাকবে। সব ভাষাতেই এইরকম আছে, এবং থাকার কথা।]
আর এর উদ্দেশ্য ঠিক বানান’রে সো-কল্ড বিজ্ঞানসম্মত করা না, বরং যতদূর সম্ভব অ-দরকারি জিনিসগুলারে বাদ দেয়া, বা আপডেট করা।…এখন এইগুলা তো একলার কাজ না, কিন্তু একইসাথে একটা ইন্সটিটিউশনাল বুরোক্রেসির ঘটনা বইলাও আমি মনে করি না; বরং একটা গ্রুপ অফ পিপলেরই কাজ…কিছু জিনিস ডিসাইড করতে পারলে দেখা যাবে নতুন বাংলা কি-বোর্ডই বানাইতে হইতেছে একটা।
এইটা পাবলিকলি বইলা রাখা খালি এই কারণেই না যে, এইগুলা দেখলে আমার বানাম-ভুল ধরতে আইসেন না, বরং আপনিও একটু ভাইবা দেখতে পারেন তো, ঊ, ঈ, ণ, য, ৎ, ী, ূ এর দরকার কতোটা? এইগুলা না থাকলে লেখতে ও পড়তে কোন সমস্যা হয় কিনা…
৩.
বিসমিল্লাহ!
#বানামভুল
Continue reading