পাবলিক ট্রুথ

অ্যাজ গুড অ্যাজ ইট গেটস সিনেমাতে এই জিনিসটা প্রথম খেয়াল করছিলাম। লাস্টের দিকে, জ্যাক নিকলসন যখন হেলেন হান্টের বাসায় গেছে, শেষ রাতের দিকে; ঘরে ঢুইকা তার অস্বস্তি লাগতেছে, কইলো যে, চলো বাইরে যাই। হেলেন কয়, এই রাতে ৪টার সময়? তখন নিকলসন কয়, আচ্ছা, এই রোডের কোণায় একটা বেকারি আছে, যারা খুব ভোরে দোকান খুলে, তো ব্যাপারটা এইরকম হইতে পারে যে, দুইজন মানুষ যারা গরম গরম রোল খাইতে পছন্দ করে, তারা হাঁটতে বাইর হইছে। তো, এই উসিলাটা পছন্দ হয়, হেলেনের। দুইজনে হাঁটতে বাইর হয়। তো, শেষে প্রেমের সিনের পরে ওরা বেকারিটাতেও যায়।

পারপাস একটা বাইর করা জরুরি। যদিও এইটাই পারপাস না। কিন্তু এই ‘ভান’ করতে পারাটা। মেবি লাইফে সবচে ক্রুশিয়াল একটা ব্যাপার। আমি কবিতা লিখতেছি, বা আমি খুব মারাত্মক একটা রিসার্চ করতেছি, বা ইর্ম্পটেন্ট রোলে চাকরি করতেছি, হোয়াটএভার… এইটা ছাড়া এক কদম আগানোও মুশকিল। কি করতেছি তার চাইতে জরুরি আসলে কি বইলা নিজেদেরকে বুঝাইতেছি। এই কাজগুলি যে করি না তা তো না, করি-ই, অনেকবেশি সিরিয়াসলিই করি; জ্যাক নিকলসন আর হেলেন হান্টও রোল খাইতে গেছিলেন তো। কিন্তু মেবি যেইটা করি, সোশ্যাল হ্যাজার্ডগুলিরে এভেয়ড করা বা পাওয়ার প্রাকটিসটারে স্মুথ করা, সার্টেন রিকগনিশনরে ভ্যালু করা বা ইগো’রে স্যাটিসফাই করা… এইসবকিছুরে কইতে চাই না। পাবলিক ট্রুথ’রে কনস্ট্রাক্ট করতে চাই বা যেই ট্রুথগুলি পসিবল, পারসোনাল বিহেভিয়ারগুলি সেইটার সাথে মিলাইয়া রাখতে চাই। Continue reading

বিনয় মজুমদারের লেখা আলেকজেন্ডার পুশকিনের কবিতা

বিনয় মজুমদার কইতেছিলেন বিষ্ণু দে’র কথা; উনারা যখন ইয়াং ছিলেন (১৯৫০-এর দশকে) তখন খাতায় লিইখা রাখতেন, বিষ্ণু দে টি.এস.এলিয়টের কোন কোন লাইন নিজের বইলা উনার কবিতায় ঢুকাইছেন। তো, ইন্টারভিউ যারা নিছিলেন তারা বলতেছিলেন; না, না… উনি তো অনুবাদ করছেন, সেইটা কইছেনও। তখন বিনয়রে কথায় পাইছে, কইলেন, কিসের অনুবাদ… “জন্মে, প্রণয়ে, মরণে জীবন শেষ/নয়নে ঘনায় ক্লান্তির মেঘাবেশ’ এইটা হইলো আসলে এই লাইনগুলি: “Birth, copulation and death/that’s all, that’s all, that’s all’.” এইগুলিরে বিষ্ণু দে অনুবাদ কন নাই।

Continue reading

কবি-বন্ধু

বিনয় মজুমদারের এই কথাগুলি পইড়া পয়লা কি হইতে পারে? মনে হবে, অভিমান! পুরান ফ্রেন্ডদের উপ্রে বিলা হইয়া এইসব কইতেছেন। উনার তো এমনিতেই মাথা ঠিক নাই। একচুয়ালি এইসব উনি মিন করেন নাই, আসলে অভিমানই করতেছেন।

একটু পরে যদি আপনি মাইনাও নেন, বিনয় মজুমদারই তো কইছেন, তারপরও মনে হবে – এইভাবে হয়তো বলেন নাই উনি, পড়তে যতোটা হার্শ লাগতেছে। একটা বয়সের পরে পুরান ফ্রেন্ডদের উপর এইরকম ক্ষোভ, অভিমান থাকেই। একটা ডিসট্যান্স তো তৈরি হয়…

 

পেইজ ১

পেইজ ১

 

পেইজ ২

পেইজ ২

Continue reading

হোয়াট ইজ ইরোটিক?

যশোরে কিছুদিন থাকতে হইছিল আমার, চাকরির কারণে। চাকরিটা আমি করতে চাইতেছিলাম না, আর নতুন কোন চাকরিও পাই নাই, কিন্তু খুঁজতেছিলাম। এইজন্য কোন বাসা ভাড়া নেই নাই, সপ্তাহ শেষে ঢাকায় চইলা আসতাম, যশোরে থাকলে রাতে হোটেলে-ই থাকতাম; দুই/তিনমাস ছিলাম এইরকম। আর দিনের বেলা বাজারের মধ্যে ডিস্ট্রিবিউটরের অফিসে যাইতাম। মুশকিলের ঘটনা হইলো, অফিসের উল্টাদিকেই যশোরের সবচে বড় মাগীপাড়া। হোটেল থিকা দুইভাবে অফিসে আসা যাইতো। মাগীপাড়ার গলিটাই বড় ছিল, রিকশা দিয়া অফিস পর্যন্ত আসা যাইতো। আরেকটা উপায় ছিলো, রিকশা দিয়া বাজারের ভিতরে আইসা একটা চিপাগলির কাছে নাইমা, তারপর হাঁইটা অফিসে আসা। ওই রাস্তাটা না চিনার কারণে প্রথম কিছুদিন গলি দিয়া রিকশা নিয়াই আসতাম। পরে অফিসের লোকজন অন্য রাস্তাটা চিনাইছিলো। প্রথম দুই-একদিন মাগীরা আমারে পটেনশিয়াল কাস্টমার ভাবছিলো মনেহয়, চোখের দিকে তাকাইলে টের পাওয়া যাইতো। পরে যখন অফিস থিকা বাইর হইতে দেখছে নিয়মিত, কোন ইশারা-টিশারা করে নাই আর। ডিস্ট্রিবিউটর ওই এলাকায় নামী-দামি ফ্যামিলির লোক আছিলেন। এইজন্য অফিসার হিসাবে ‘ইশারা না-পাওয়া’র এইটুক সম্মান পাওয়া যাইতো।

অফিস ছিল বিল্ডিংটার দোতালায়। দোতলার বারান্দায় সিগ্রেট খাইতে গেলে দেয়ালের ভিতরে মাগীপাড়ার বাড়িগুলির উঠান, বারান্দা দেখা যাইতো। সকালের দিকে বাজারে যখন ব্যস্ততা তখন মাগীপাড়া একদম সুনসান। দুয়েকটা বাচ্চা-পোলাপাইন জাগনা থাকতো। সন্ধ্যার দিকে যখন অফিস থিকা বাইর হইতাম তখন অনেক হাসি-আওয়াজ আর ভীড় থাকতো, মাইয়াদের। কয়েকজন দেয়ালের এই পাশে আইসা রাস্তার লগের গেইটে, ড্রেনের ধারে দাঁড়াইতো। ইন ফ্যাক্ট, দুপুরের পর থিকাই উনাদের সাড়া-শব্দ পাওয়া যাইতো। বারান্দায় বইসা কেউ সিগ্রেট খাইতেছে। বালতি’তে কইরা গোসলের পানি নিয়া যাইতেছে, একজন আরেকজনের চুল বাইন্ধা দিতেছে, পাউডার লাগাইয়া দিতেছে গালে, এইরকম। তো, উনাদের কাপড়-চোপড় বেশ ঢিলাঢালাই থাকতো। পেটিকোট আর ব্লাউজ বা খালি কামিজ বা সালোয়ার আর ব্রা, এইরকম। দেখাও মুশকিল এবং না-দেখাও। প্রথম কিছুদিন বেশ ইরোটিক ফিলিংস হইতো, পরে বুঝতে পারছি এইটা উনাদের নরমাল লাইফ, ঝামেলা আমার না-দেখারই। অফিসের বা বাজারের অন্য লোকজনের কাছেও ব্যাপারটা নরমালই ছিল মনেহয়। মানে, উনাদের তেমন কোন অস্বস্তি দেখি নাই। বাজারের অন্যান্য ব্যবসার মতোই একটা ব্যবসাই। এইরকম মানতে পারতেন মনেহয় উনারাও। Continue reading

জুলাই ০৭, ২০১৬।

লোকেশন বেশিরভাগ সময়ই একটা ফ্যাক্টর। ঢাকায় থাকলে টিভি-নিউজ দেখাই হয় না। বাড়িতে ইফতারের পরে কিছুক্ষণ টিভি দেখাটাই একটা কাজ। ঢাকায় থাকলে দেশি বিদেশি নিউজপোর্টালের খবর বা ফেসবুক ফ্রেন্ডদের কমেন্টারিগুলি নিয়া ভাবতাম; বা যদি নিউইয়র্কে থাকতাম তাইলে পার্টিতে শোনা লোকের কথারে হয়তো বেশি পাত্তা দিতাম।

তো, কয়েকদিন আগে টিভি’তে দেখলাম, পুলিশদের একটা মিটিংয়ে পুলিশদের লিডার’রা বলতেছিলেন যে, সোশ্যাল-মিডিয়া’য় যারা টেররিস্ট/জঙ্গী নিয়া কথা-বার্তা বলেন, উনারাই ওদেরকে এনকারেজ করতেছেন; উনাদেরকে এখন থিকা কড়া নজরদারিতে রাখা হবে, শাস্তি দেয়া হবে, এটসেটরা। একটু ডরাইলামই। কারণ মাস অডিয়েন্সের ভিতর থিকা পটেনশিয়াল ক্রিমিনালরে আলাদা করতে না পারাটারে উনারা উনাদের ‘না-পারা’ বইলা ভাবেনই নাই! উনারা ভাবতেছেন পাবলিকের ডিজ-অবিডিয়েন্স বইলা! এইভাবে উনারা নিজেরাই যে ক্রাইম করতেছেন – এইরকম ভুল উনারা কখনো ভাবতে পারবেন বইলাও মনেহয় না। Continue reading