[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote] শিমুল সালাহ্উদ্দিন উনার গালুমগিরি সংঘ থিকা কবি কাজল শাহনেওয়াজ-এর কবিতা পড়া’র প্রোগ্রাম করছিলেন ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে। ঢাকায়, পাবলিক লাইব্রেরীতে। ওই প্রোগ্রামে উনার কবিতা নিয়া বলার লাইগা আমারে রিকোয়েস্ট করছিলেন শিমুল। পুরা প্রোগ্রামটার ভিডিও কাজল শাহনেওয়াজ আপলোড করছিলেন; ওইখান থিকা আমার আলাপের অংশটুক এইখানে রাখলাম। শেষের দিকে কিছু অংশ বাদ গেছে অবশ্য। আর এমনিতে আমি কথা বলার সময় ডান চোখ টিপি না, টানা কয়েক রাত জাইগা থাকার কারণে এই অবস্থা হইছিল।
:: নোটস্ ::
বাংলা একাডেমির ভাষায় মতিকণ্ঠের নিউজের অনুবাদ
ফেব্রুয়ারি মাস আসতেছে সামনে। চারদিকে বই ছাপানোর নিউজে আমার মনে ভাষা-প্রেম একটু আগেই চইলা আসছে।
মতিকণ্ঠ পড়ছেন তো? বেশ হিউমারাস না! হিউমিলেশনও আছে। আর হিউমিলেশন আছে বইলাই হিউমার করাটা পসিবল হয়, বেশিরভাগ সময়। এই হিউমিলেশন যতোটা না ঘটনার (মানে, নাই যে সেইটা না), তারচে বেশি ভাষা থিকাই আসে।
মানে ঘটনা, সেইটা যা-ই হোক, এর যে রিপ্রেজেন্টশন, সেইটাই হইলো ঘটনাটা। ঘটনা আসলে ভাষার ভিতর দিয়াই ঘটে। আর ভাষারে আপনি যতো কব্জির জোর দিয়া ঘুরাইতে থাকবেন ঘটনা ততোই ঘটতে থাকবো। এমনিতে পত্রিকা-টিভি-রেডিও’র ভাষাই হইলো আমাদের জীবনের ঘটনা। এর বাইরে গল্প-কবিতা ত থাকলোই।
মানে, আপনি জানেন যে, পাখিটারে কয়, বক-পাখি; এখন আপনি বক-পাখি না কইয়া কইলেন, বগা-পাখি। এতে কইরা বক-পাখি ইন্সট্যান্ট বগা-পাখি হয়া যায় না খালি, তার যে দুইটা পা সেইগুলা ঠ্যাং হয়া যাইতে পারে। পাখি হিসাবে আরোবেশি পাতলা, এমনকি পাখি-ই হইতে পারলো না, মনে করেন। মানে, এইরকম মনে করাটা সম্ভব হইতে পারে। খালি বক-পাখি থিকা বগা-পাখি লিখার কারণেই। আবার ধরেন, আকাশে বকপাখি তো ওড়তেছেই। সেই বক-পাখি ওড়ে বইলাই বগা আর কখনোই পাখি হইতে পারে না।
এখন রিডার হিসাবে এনাফ লিটারেট না হইলে আপনি এই বক-পাখি আর বগা-পাখি’রে আলাদা করতে পারবেন না। আর মজাটা এইখানেই এমপ্লিফাই হইতেছে যে, কেউ কেউ হয়তো বুঝতেছেও না! না-বোঝার যদি কেউ না-থাকে, বোঝাটার মিনিং তৈরি হইতেছে না।
আমি মনে হয় ব্যাপারটা ক্লিয়ার করতে পারতেছি না। এইজন্য ভাবলাম, মতিকণ্ঠের ভাষাটারে অনুবাদ কইরা দেই। Continue reading
দুইটাকার কবি হন, নাইলে একটাকার
কবি হইতে হইলে কথা কম কইবেন, কম লিখবেন। মানে, যা লিখতে পারতেন, সব লেখবেন না। লেখলেও দেখাইবেন না। বারবার একই জিনিস কেন লিখবেন? তাও আবার প্রত্যেকদিন? না-কওয়া দিয়াই কইয়া ফেলতে হবে অনেক কথা। এইরকম হইতে হবে, বাংলাভাষার কবি হইতে হইলে। চুপ-থাকাটা শিখবেন। ইন ডিউ টাইম। তারপর চেকটা হাতে পাইতে পারবেন একটা সময়, কবি-হওয়ার। মরা’র আগেই। সিরিয়াল বেশি লম্বা না হইলে। আর মরলে এইসব দিয়া কি করবেন? বাঁইচা থাকতে থাকতেই প্রাকটিস করা শুরু করেন। আমি না, ভাস্কর চক্রবর্তী-ই কইছেন এইটা: “ঠিক সময়ে ঠিক কথা বলার দাম একটাকা, ঠিক সময়ে চুপ করে থাকার দাম দু’টাকা।” Continue reading
এবাদুর-এর ন্যান গোল্ডিন
Appearance is the only truth that we have.
———————————————————
এবাদুর-এর ক্লেইমটা হইলো যে, আরে উনারে ত আমি দেখসি; কথা কইসি; উনি যেই যেই জায়গায় গিয়া এবং যেইগুলা নিয়া আর্ট করসেন, ওইগুলাতেও আমি গেসি; সো, ওই আর্ট কনজিউম (ফিল-টিল আর কী) করার লাইগা আমি বেটার পজিশনে আসি আর এই কারণে বেটার এক্সপ্লেইন করতে পারি, যেহেতু উনার অভিজ্ঞতার (এক্সপেরিয়েন্স না কিন্তু) রোড-ম্যাপটা আমার জানা আসে। দেখেন, টেক্সটটাই জরুরি জিনিস না, জরুরি হইলো ইনফরমেশন, সেইটার বেসিসে ব্যাকগ্রাউন্ডের ইমাজিনেশন, ইন্টারপ্রিটেশন। ঠিক আসে!
ন্যান গোল্ডিন নিয়া এবাদুর যা করছেন, সেইটারে ওয়ান অফ সিচুয়েশন না ভাইবা তার থট-প্যাটার্ন হিসাবেই ভাবলাম। ভাবা ত যায়, মনেহয়।
যেই জীবনে আমি বাঁইচা আছি সেইটা নিয়াই আমি লেখতে পারি না খালি, যেই জীবনে আমি বাঁইচা আছি এর বাইরে আমি আর লেখতে পারবো না। ব্যাপারটা এইরকমভাবে দেখা যায় না, এইরকমই। সিমিলার টাইপের ট্রাপ। রিয়ালিটিটারে তখন বাঁইচা-থাকাতে ডাউনগ্রেড করা গেলো। আর এইখানে সামগ্রিকতা (টোটালিটি) একটা ফাঁপড় ছাড়া (ব্যতীত’রে মাফ কইরা দেন) আর কিছুই না। টোটালিটিরে প্রজেক্ট করাটা আর্টের কাজ হইতে পারে না বা একটা ‘আদার’ ক্রিয়েট করা। ন্যান-এর দেখানোর মতো যদি কিছু থাইকা থাকে সেইটা হইলো যে, দেখো, দেয়ার ইজ নো টোটালিটি অ্যাজ সাচ!
কবি নজরুলের ভাষা, ক্লাস-স্ট্রাগল এবং প্রেম
কাজী নজরুল ইসলামের এইসব নিয়া ত অনেক লেখা হইছে। অনেকলেখা পড়ি নাই; তারচে বেশি আসলে পড়তে পারি নাই। কারণ আলাপের একইরকমের প্যার্টানটাতেই আটকাইয়া গেছি; যারা লিখছেন, উনারা হয়তো বলছেন নতুনকিছু, কিন্তু পুরানা-ভঙ্গির ভিতর নতুনের-আশা আমার মইরা গেছে অথবা সাহিত্য যে খালি পুরানেরই রিপিটেশন এই আইডিয়াতেই আমল আনতে পারি নাই আর!
তো, কাজী নজরুল ইসলাম নিয়া নতুন কইরা আলাপ করার ইচ্ছা হইলো কাজী মোতাহার হোসেনের স্মৃতিকথা বইটা পইড়া। উনার বইটাতে নজরুল’রে নিয়া কয়েকটা লেখা আছে, ওইগুলার বেসিসেই কবি নজরুল ইসলাম’রে বোঝার একটা কোশিশ (নজরুল-এফেক্ট) করা।
কাজী মোতাহার হোসেন লিখতেছিলেন –
সে যুগে (১৯১২) চোস্ত ভাষা বলতে বঙ্কিমী ভাষাই বুঝাত;… দেখা যায় ততদিনে (১৯১৯) ভাষাটা অনেকটা রাবীন্দ্রিক হয়ে এসেছিল আর ভাবও প্রায়ই রবীন্দ্রনাথের থেকে ধার করা… একটা সময় (১৯২৬) লক্ষ করলাম, আমার ভাষার বঙ্কিমী ও রাবীন্দ্রীক ভাব কেটে গিয়ে একটা আলাদা বৈশিষ্ট্য এসে পড়েছে। দীর্ঘ সমাস, আর দুরূহ শব্দ বিদায় নিয়েছে; ভাষা হয়ে উঠেছে সহজ, প্রাঞ্জল আর বাহুল্যবর্জিত বা অনাড়ম্বর – যাতে পরিমাণ মত মূর্চ্ছনা থাকলেও গিটকারীর প্রাধান্য নেই। (কাজী মোতাহার হোসেন, আমার সাহিত্যিক জীবনের অভিজ্ঞতা, স্মৃতিকথা, প. ৭৩ – ৭৫)।
যদিও উনি ক্লেইম করছেন যে, বঙ্কিম ও রবীন্দ্রনাথের চাইতে উনার ভাষা চেইঞ্জ হয়া আসছে, ততো একটা হয় নাই আসলে; বাহুল্য, অনাড়ম্বর আর প্রাঞ্জলতা – এইসবকিছু রয়া গেছিল বা আছে; এই যে চেইঞ্জ, এর গরিমা উনি দিছেন ওই সময়কার মুসলমান লেখকদের কনশাস এফোর্ট’রে, শিখা-গোষ্ঠীরে; হয়তো এইটা উনারে দাবি করতে হেল্প করছে, কিন্তু সাহিত্যে বুঝতে পারা এবং লিখতে পারা দুইটা আলাদা আলাদা ঘটনা; উনার ভাষা-বদল বইলা যদি কিছু ঘইটা থাকে সেইটা জায়েজ করার কথার মতো সাহিত্যিক উদাহারণ হিসাবে তার আগ পর্যন্ত কাজী নজরুল ইসলামই আছিলেন। Continue reading