জ্ঞান

 

‘জ্ঞান অতি উচ্চ, আদরের জিনিস, তাহার জন্য চীন পর্যন্ত যাইও।’ অবশ্য এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট এখন এতোটাই ইজি হইছে যে, কোন একটা কুয়া বানাইতে পারলেই নাকি হয়, ইভেন বাথরুমের বালতিতে একটুখানি জল রাইখা দিলেও, মুরাকামির গল্প থিকা ডাইরেক্ট আইসা হাজির হন, যিনি টোকিও শহররে বাঁচাইছিলেন। প্রাকটিক্যাল রুমে নিয়া আটকাইবার লাইগা লগে সেফটিপিন রাখতে পারলে আরো ভালো হয়!

 

জুলাই ২৭, ২০১৪। (২)

 

টেম্পোতে ওঠার আগে চাচাতো ভাইয়ের ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলতেছিল শে । ঘাড়ে পাউডার মাইখাও ঘামতেছিল । লুঙ্গি পইড়া চইলা আসাতে সেও যাই যাই করতেছিল । কলেজ কি আজকে এতো দেরি কইরা ছুটি দিলো? না, না আমি ত আরেকটা কাজে আসছিলাম! এইটুক কথার পরে মেয়েটা টেম্পুতে ওইঠা যায় । ওর হাসি হাসি মুখ শে আর লুকাইয়াই রাখতে পারে না । অতো হাসিস না লো ছেড়ি, পাশে বইসা থাকা পাশের বাড়ির খালা কয়, মুখ টিইপা হাসতে হাসতে ।

 

জুলাই ২৭, ২০১৪। (১)

 

বি. আর. টি. সি.’র এসি বাস আসতে দেরি হইতেছিল; বাদশা পরিবহনেই ওইঠা পড়লাম । মোবাইলে আপনা দিল তো আওয়ারা’র ফিমেইল ভারশনটা শুনতেছিলাম । দুইজনের সিটে তিনজন বসতে হইছে ; বইসা থাকা একজন মহিলা দাঁড়াইয়া থাকা একজন মহিলার সাথে গারমেন্টসে উনাদের সমস্যা নিয়া কথা বলতেছেন । টঙ্গি এলাকায় থাকেন দুইজন । একজনের জামাই আছে লগে, আরেকজন ফোনে জামাইরে কইলেন তোমার লাইগাই ত দেরি হইলো । উনি ছেলেরে নিয়া যাইতেছন, জামাই ঈদের পরে ছুটি নিবে এইকথাও কইলেন । ইফতারির আগেই আমরা ভৈরব পৌঁছাইয়া যাইতে পারবো মনেহয় ।

 

ডাইরি: আষাঢ় ৩০, ১৪২১

 

আমি ত রে ভাই কবি হইতে পারলাম না, মিনিমাম একজন সাহিত্যিকও! জীবনে ও সাহিত্যে ধীরে ধীরে পিছাইয়া পড়তেছি আমি। বিকজ আমি ফিলিস্তিন নিয়া কোন কবিতাই লিখতে পারি নাই। এক একটা হট ইস্যু যাইতেছে চোখের সামনে দিয়া, আমি রোজা রাখতেছি, ইফতার খাইতেছি, অফিস করতেছি, অফিসে কলিগ বলতেছে মাসরুর আরেফিন কাফকা অনুবাদ করছেন, সিঁড়ি ভাইঙ্গা নিচে নামতে নামতেও আমি অনুবাদ করার ইচ্ছা জাগাইতে পারতেছি না, ইন ফ্যাক্ট কবিতারে চালান কইরা দিতে পারতেছি না ঘটনার ভিত্রে, Continue reading

সাহিত্যে ‘দলাদলি’ নিয়া

ব্যাপারটা যে খুব স্পষ্ট তা না, বরং বেশ ব্যক্তিগত, অস্পষ্ট একটা টেরিটরি, এইখানে যাঁরা জড়িত তাদেরও মুখ বন্ধ রাখাই নিয়ম। তারপরও ব্যাপারটা ত কথা বলার! কারণ, কবি বা লেখক নিজে নিজে লিখলেও তাঁর সাহিত্যের একটা আবশ্যিক কাজ হইলো সমাজের অন্যান্য মানুষজনের সাথে মিনিমাম একটা যোগাযোগরে সম্ভব করা। আর এইটা সম্ভব হয় যোগাযোগের বিভিন্নরকমের প্রতিষ্ঠিত কাঠামোগুলারে এক্সপ্লয়েট করার মাধ্যমেই।

চালু-থাকা যোগাযোগ-কাঠামোটার কোন না কোন বিপর্যয় না ঘটাইয়া শিল্প-সাহিত্য’রে কার্যকর করা সম্ভব হয় না। এই কারণে প্লেটো’র সরল একরৈখিক সমাজের ফাংশনের ভিতর কবি বা লেখকদেরকে অ্যাকোমডেড করাটা কঠিন ছিল; কিন্তু এখনকার বাস্তবতায় এই সাহিত্য-কর্ম সামাজিক জীবনের একটা আবশ্যিক অংশ। যেমন ধরেন, স্কুল-কলেজে সাহিত্য ত পাঠ্য, ইন ফ্যাক্ট সাহিত্য পড়ার ভিতর দিয়াই প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনার শুরু। দৈনিক পত্রিকাতে থাকে সাহিত্য-পাতা, অনলাইন নিউজসাইটেও; কলেজের ছাত্রসংসদ ইলেকশনে সাহিত্য-সম্পাদক পদ থাকে (এখন মনে হয় ইলেকশন হয় না আর), মানে বিভিন্নভাবে এইটা ভিজিবল একটা জিনিস।

বর্তমান সমাজে সাহিত্যের বিভিন্ন রকমের ব্যবহারযোগ্যতা আছে। এই কারণে সাহিত্যের দুশমন কখনোই সাহিত্য-বিরোধীরা না, কারণ উনারা সাহিত্য নিয়া সচেতনই থাকতে চান না, এইটা থাকলে আছে, না থাকলে নাই। কিন্তু সাহিত্যের সমস্যা সবসময় মাঝারি-মানের সাহিত্য। এই সাহিত্য হইলো সমাজের সবচে’ স্ট্রংগেস্ট এসথেটিকস, যেইটা শুধুমাত্র তার ব্যবহারযোগ্যতার ভিতর দিয়াই সমাজে কার্যকর থাকে বা থাকতে চায়। Continue reading