সেপ্টেম্বর ১৬, ২০২২
ঢাকা শহরে অনেকগুলা সুপার-স্টোরের চালু হওয়া এবং ক্লোজ হওয়া দেখছি আমি। এর মধ্যে সবচে রিমার্কেবল লাগছিল – “সাদ-মুসা সিটি” নামে একটা। হিউজ পার্কিং স্পেইস ছিল। নিচতলায় মাছ-মাংস, শাক-সব্জি থিকা শুরু কইরা বেডশিট, জামা-কাপড়, মোটামুটি সবকিছু, একটা শপিং-মলে যা যা কিছু থাকতে পারে। দোতলায় গেমিং-জোন। তিনতলায় রেস্টুরেন্ট, বাচ্চাদের খেলার জায়গা। পুরা একটা আমেরিকান-ড্রিম। কিন্তু অই দোকানও কয়েক বছরের মধ্যে ক্লোজ হয়া গেছিল, বা কেউ যাইতো না আর তেমন।
যখন পতনের দিন শুরু হইলো, মালিক-পক্ষ মেবি শুরুতেই ম্যানেজারদের, স্টাফদের চাকরি খাইয়া দিছিলো; নতুন একটা সেট আসলো, যাদের কোয়ালিটি আসলে আগের লোকজনের চাইতে বাজে, মানে অরা জিনিসপত্র কিছু জানতো না, কিছু কইলে দেখায়া দিতে পারতো না, আর ফ্লোর ম্যানেজার যে ছিল স্টাফদেরকে কাস্টমারদের সামনেই বকাবকি করতো। মানে, ড্রিমটা একটা নাইটমেয়ারে পরিণত হইছিল। দোকানটা এখন আছে কিনা জানি না, কিন্তু অনেক বছর আগে শেষবার যখন গেছিলাম পুরা ভূতুড়ে একটা অবস্থা ছিল জায়গাটা। (এখন নিশ্চয় অন্য কোন কিছু হইছে।)
তো, জায়গাটা এই কারণে ফ্লপ করে নাই যে, লোকজন ঠিকমতো কাজ করতো না, বা সাপ্লাই-চেইন কাজ করে নাই; জিনিসপত্রের দাম তো একটু বেশি ছিলই কিন্তু অইটুক প্রিমিয়াম দিতে রাজি ছিলেন অনেক কাস্টমার। মেইন ঝামেলাটা হইছিল ফ্লাইওভারটা (বসুন্ধরা গেইট থিকা ৩০০ ফিট যাওয়ার পথে) হওয়ার সময়ে। নিচ দিয়া যাওয়ার রোড’টা ভালোই ছিল, গাড়ি নিয়া যাওয়া যাইতো, কিন্তু ফ্লাইওভারের কাজ চলার সময়ে নিচের রোডটাই বন্ধ হয়া গেছিল, প্রাইভেট কার নিয়া যাওয়া যাইতো না। যার ফলে কাস্টমারদের যাওয়ার রাস্তাই বন্ধ হয়া গেছিল। এখন মানুশ যদি দোকানে না-ই যাইতে পারে, কিনবে কেমনে!
যেমন ধরেন, বাংলাদেশের মানুশ-জন যে বাংলাদেশের টিভি-চ্যানেলগুলা দেখে না, এই কারণে যদি নিউজ-প্রেজেন্টারদের দোষ দেন, যে অদের চেহারা সুন্দর না, বা জার্নালিস্টরা ভালো নিউজ লেখতে পারে না – তাইলে অই সাদ-মুসা সিটি’র মতোই ঘটনা হবে।
মেইন সমস্যা হইতেছে, মিছা-কথা, আজাইরা-কথা মানুশ আর কতোদিন দেখবে!
মানে, এইটা তো রাইটারদের সমস্যা না! যে, গর্ভমেন্টের পক্ষে ইন্টার-ন্যাশনাল পত্র-পত্রিকায় লেখার মতো ভালো-রাইটার নাই! বরং চোর-ডাকাতদের পক্ষে সাফাই গাইয়া কেউ তার রাইটিং ক্যারিয়ারের তো বারোটা বাজাবে না! (ডেইলি-স্টার হয়তো কিছু দেশি-মাল সাপ্লাই দিতে পারে।)
একটা বাংলা-একাডেমি প্রাইজ বা একুশে পদকের তো দরকার নাই ইংরেজি-জানা বিদেশি রাইটারদের! এমনকি বুড়া-বুদ্ধিজীবীদের যতটা দরকার, ইয়াং লোকদের তো সেইটাও নাই!
আর টাকা দিয়া লেখা হয় না। লেখার একটা দাম বা মনিটারি ভ্যালু আছেই বাজারে; মানে, লেইখা কম-বেশি কিছু টাকা কামাই করতেই পারেন আপনে, কিন্তু টাকা-কামাই করার জন্য লেখা হয় না আসলে। যে কোন রাইটারই এই জিনিসটা বুঝতে পারার কথা।
আমি বলতে চাইতেছি, বাকশালের পক্ষে টাকা দিয়াও কথা-বলার লোক যে পাওয়া যায় না, এইটা রাইটার না থাকার সমস্যা না।
আইডিওলজিক্যালি, বাকশাল যে বাংলাদেশি ফ্যাসিবাদ – এই ন্যারেটিভটা স্পষ্ট হওয়ার ঘটনা। যার মিনিমাম একটা বিবেক-বোধ আছে, তারা এই জুলুমের পক্ষে সাফাই গাওয়ার মতো মুর্খ হইতে পারে না। সমস্যাটা এই জায়গাটায়।
Continue reading