জুলাই ১১, ২০২৩
– বাংলাদেশের বেস্ট “ওয়েস্টার্ন মুভি” কোনটা? –
প্লিজ, সারপ্রাইজড হইয়েন না!
বাংলাদেশের সো-কল্ড ফিল্ম-ক্রিটিকরা এই জনরা’টারে রিকগনাইজ করতে পারেন নাই বইলা (বা ইন ফ্যাক্ট বাংলাদেশি সিনেমা উনারা দেখেন নাই বইলা) এই ক্যাটাগরিটা এগজিস্ট করে না – এইটা সত্যি না।
অনেকগুলা “ওয়েস্টার্ন” সিনেমাই বানানো হওয়ার কথা বাংলাদেশে, স্পেশালি সোহেল রানা’র ঘোষণাও থাকার কথা, যে উনি ওয়েস্টার্ন সিনেমা বানাইতেছেন! দস্যু বনহুর (১৯৭৬) এবং আসামী হাজির (১৯৭৮) দুইটা সিনেমার কথা মনে হইলো। শুরুতে ইবনে মিজানের, পরে দেওয়ান নজরুল, অশোক ঘোষ এবং এফ.কবিরেরও [উনারা বাংলাদেশি সিনেমার ডিরেক্টর, নাম না জানলে এইটা উনাদের দোষ না, আপনার না-জানার ঘটনাই…] থাকার কথা কিছু জিনিস। এইগুলা হলিউডি ওয়েস্টার্ন, বা ইতালিয়ান-ইউরোপিয়ান স্প্যাগেটি-ওয়েস্টার্নের চাইতে ডিফরেন্ট তো অবশ্যই।…
এখন হরেদরে এই সিনেমাগুলারে “ফোক-ফ্যান্টাসি” ট্যাগ মারা হইছে। “রূপবান” “কাজল রেখা” “সাত ভাই চম্পা” যেই ক্যাটাগরির “ফোক”, দস্যু বনহুর” বা “মতিমহল” একই ঘটনা না; মানে, কোন “লোক-কাহিনি” থিকা এডাপ্ট করা হয় নাই। বরং সরাসরি হলিউডি “ওয়েস্টার্ন” সিনেমা না হইলেও ক্যাটাগরি হিসাবে কাছাকাছি জিনিসই হওয়ার কথা অনেকগুলি সিনেমা। জাস্ট এই জায়গাটারে খেয়াল করা হয় নাই।
খেয়াল না করার একটা মেজর কারণ হইতেছে ইন্ডিয়ার পশ্চিম-বাংলায় এই ধরণের জিনিস কোনদিন বানানো হয় নাই। উনাদের এক ধরণের ঘোড়া-ভীতিও থাকার কথা যে, ঘোড়া দেখলেই মনেহয় মুসলমান! 🙂 এর বিপরীতে যখন বাংলাদেশি সিনেমায় ঘোড়া যখন একটা ক্যামেরায় আসে, সেইটারে “অ-বাঙালি” বইলা বাতিল করার একটা টেনডেন্সি থাকার কথা।…
মানে, কলকাতার সিনেমায় কোন ঘোড়া পাইবেন না, ইংরেজ আমলের আগে এদের হিস্ট্রি যাইতে পারে না, কারণ কোন হিস্ট্রি নাই আসলে; মানে, হিস্ট্রি তো আছেই, হিস্ট্রিতে কলিকাতা বইলা কোন জিনিস নাই, ছিল না। এই কারণে যখন সিম্বল হিসাবে ঘোড়া আসে ফিল্মে, সেইটা প্রি-কলিকাতা একটা ঘটনা হয়া উঠে, যেইটা আসলে নন-কলিকাতা একটা জিনিস আসলে।
তো, এইরকম ‘হাজার হাজার’ ভুল-রিডিং আছে বাংলাদেশি সিনেমা নিয়া। কলিকাতার কষ্টি-পাথর দিয়া যাচাই করতে যাওয়ার কারণে। এখন আপেলের গুণাগুণ দিয়া আম’রে মাপতে গেলে তো মনেই হবে যে, আম তো এতোটা ভালো আপেল না!
একটা উদাহারণের কথা বলি, “সমাধি” নামে (১৯৭৬) একটা সিনেমা আছে। [নামে তো চিনবেন না সিনেমাটা, সিনেমার গান দিয়া চিনবেন, “বন্ধু তোর বরাত নিয়া আমি যাবো” গানটা অনেকের শোনার কথা, মনে থাকার কথা, সুবীর নন্দী আর খুরশিদ আলমের।] অইখানে অলিভিয়ার ড্রেস-আপ “ওয়েস্টার্ন”, ঘোড়ায় চড়ে। রাজ্জাক আর ববিতা হইতেছে গ্রামের মানুশ। অলিভিয়া, উজ্জ্বল জমিদার/রাজা [দুইটা কিন্তু কাছাকাছি ক্যাটাগরিই। আগের দিনের রাজা ধরেন, এখনকার পৌরসভার চেয়ারম্যান বা এমপি’র মতোই অনেকটা… ] । তো, রাজ্জাক এক সময় আউট-ল হয়া উঠে। ববিতারে যেহেতু চাবুক দিয়া মারে অলিভিয়া, রাজ্জাক আর অলিভিয়ার কাইজ্জা লাগে।…
মানে, এইটা পুরাপুরি ওয়েস্টার্ন সিনেমা না। কিন্তু এইটার কিছু সিগনেচার আছে, ওয়েস্টার্নের। এমনকি কোন ওয়েস্টার্ন সিনেমা বেইজ কইরাও সিনেমা বানানো হয়া থাকতে পারে, বাংলাদেশে। যারা অনেক বেশি বাংলাদেশি সিনেমা দেখছেন ১৯৭৬ – ১৯৮৯ সময়টাতে, আমার ধারণা, উনারা আরো কনফিডেন্টলি বলতে পারবেন। আমি পসিবিলিটির কথা কইলেও, মোটামুটি শিওর যে, বাংলাদেশে ওয়েস্টার্ন সিনেমা এটলিস্ট ৫-৭টা হইলেও বানানোর চেষ্টা হইছে। নামগুলা জাস্ট খুঁইজা বাইর করতে হবে আর কি!