গার্মেন্টসের গ্রাম

সাভারের ঘটনা ব্যক্তি-মানুষ হিসাবে ডিল করাটা খুবই অসহায় একটা বিষয়; এক একটা জীবন, এক একটা মৃত্যু কি রকম যে,  আমাদের সমস্ত চিন্তার বাইরে এই অস্তিত্বময়তা, এই নিয়া কোন কথা-বলা আসলেই যে সম্ভব না তা না, কিন্তু সেইটা জীবন এবং মৃত্যু নিয়া একটা আলাপ…[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

তার বাইরে এই যে টিভিতে পত্রিকায় ফেসবুকে সারাক্ষণ একটা মাতম, দমবন্ধ করা অবস্থা; কি করবো আমরা? এই ধরণের একটা বিভীষিকা; যেইখানে পুরান-অবস্থা বাতিল হয়া যাইতেছে এবং সামনে নতুন বইলা নির্দিষ্ট কিছু নাই। এইরকম একটা অবস্থায় ‘ভবন’ বাদেও চিন্তার জায়গায় আরো কিছু প্রশ্নের ফাটল দেখা দিছে। খুব মাইনর যদিও, তারপরও বইলা রাখা যাইতে পারে।

প্রথমত, এই ঘটনার বিবেচনায় যে নৈতিক সাজেশনগুলা আসতেছে, সেই জায়গাটায়। এই সাজেশনগুলার প্যার্টানগুলা বিচ্ছিন্ন, মানে উনারা যে শলা-পরামর্শ কইরা এই একই ধরণের সাজেশনগুলা দিতেছেন, তা না; বরং বিভিন্ন উপায়ে, বিভিন্ন পদ্ধতিতে, বিভিন্ন লোকেশন থিকা অনেকে একটা জায়গাতেই আসতেছেন, সেইটা হইলো – ‘তোমরা গ্রাম থিকা আসছো, গ্রামে ফিরা যাও’; কয়েকটা উদাহারণ দেই।

Continue reading

কালাচারাল পলিটিকস নিয়া

এই যে ঘটনাগুলি – শাহাবাগ, মতিঝিল; মুক্তিযুদ্ধ, ইসলাম; ব্লগ, হেফাজত… এই বিষয়গুলা যে বাইনারি অপজিট না এইটা বাংলাদেশে এখন যে কারোরই বোঝার কথা। তারপরও বলা, কারণ পলিটিক্যালি এমনভাবে হাজির আছে যে, সেইটা মনে হইলেও কাউরে দোষ দেয়া সম্ভব না। কালাচারাল ক্রাইসিসটারে পলিটিক্যালি ব্যবহার করতে গিয়াই এই ঘটনা ঘটছে। তার মানে এই না যে, এইখানে কোন কালচারাল ক্রাইসিস নাই। বরং এর পলিটিক্যাল সমাধান অনেকে এইভাবেই করতে চাইতেছেন! জোর কইরা সাংস্কৃতিক অনৈক্যগুলারে চাপা দেয়ার এই যে লিবারাল চেষ্টা, এইটাই পলিটিক্যাল ফান্ডামেন্টালিজমরে আরো জোরালোভাবে সামনে নিয়া আসতেছে।[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

 

অনেক ধরণের সংকট এবং সম্ভাবনাই একটা সংস্কৃতির ভিতরে থাকে। যেমন, এখনকার বাংলাদেশের কথা যদি ধরেন, আপনি বাঙালি হইলে মুসলমান হইতে পারবেন না, হয় নাস্তিক (পড়েন, ৬০ এর কমিউনিস্ট) হইবেন, নাইলে হিন্দু (ইন্ডিয়ার সার্পোটার); এইটারে বলা যাইতে পারে, সিম্বলিক ট্রুথ এর পূজারী। আবার, আপনি মুসলমান হইলে বাঙালি হইতে পারবেন না, আপনি হয় আফগানিস্তান থিকা আইছেন, নাইলে পাকিস্তানে যাইবার পাঁয়তারা করতেছেন। এইটারে বলা যাইতে পারে ইম্পেরিক্যাল ট্রুথ এর মওলানা। এইভাবে কালচারাল ডিফারন্সিয়েশনের জায়গাটা ছড়াইতেছে।

Continue reading

প্রেসিডেন্ট জিল্লুর রহমান ও আওয়ামী লীগ নেতা জিল্লুর রহমান

আওয়ামী লীগের নেতারা সম্ভবত জিল্লুর রহমানরে শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগের নেতাই ভাবছিলেন (বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে ভাবতে পারেন নাই প্রথমে), যেই কারণে সরকারি ছুটির ঘোষণা দিতে দেরি হইছে এবং অনান্য রাষ্ট্রীয় কাজ-কামেও। এইটা যে শুধুমাত্র আওয়ামী লীগেরই ঘটনা তা না। যেমন ধরেন কিছুদিন আগে যখন প্রফেসার জামাল নজরুল ইসলাম মারা গেলেন, তখনও দেখলাম, তারে জ্ঞানী বলা হইতেছে কারণ পাশ্চাত্যের প্রতিষ্ঠানে তার জ্ঞানের সম্মান আছে। অ্যাজ ইফ এই স্বীকৃতিটা যদি না থাকতো তাইলে উনি যা যা করছেন, তা আর জ্ঞান হিসাবে নেয়া যাইতো না। [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

এইটা প্রায় সবসময়ই ঘটে। আপনার দূর থিকা আইসা যখন কেউ বলে, উনি এই সেই, তখন কাছাকাছি যারা আছেন, তারাও বুঝতে বা বলতে শুরু করেন, তাই ত, তাই ত… এইরকম একটা ব্যাপার। এইটা সম্ভবত, নিজের বা নিজেদের প্রতি আস্থাহীনতার কারণেই ঘটে। আমার ভালো বা খারাপটা যে আমি বলার অধিকার রাখি – এই বিশ্বাস ঠিক না থাকলে এইটা ঘটতে থাকে। যেই কারণে সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদেরকে গুরুত্ব দেয়ার অভ্যাস আমাদের এইখানে খুব একটা নাই; যদ্দিন পর্যন্ত না তারা বাইরের কোন জায়গার স্বীকৃতি শো করতে পারতেছেন।

Continue reading

শাহবাগ ৩

শাহবাগ এর ২১ তারিখের ঘোষণার পর এই আন্দোলন আরো বেশি মিডিয়ার এবং আওয়ামী লীগের দখলে চইলা গেছে। এই সম্ভাবনার ভিতর শাহবাগ সবসময়ই ছিলো। কিন্তু শাহবাগ শুরু হইছিলো মিডিয়ার রিয়ালিটির বাইরে (যদিও মিডিয়া এইটারে কব্জা করতে খুববেশি সময় নেয় নাই) এবং সরকারের বিরোধিতায় (যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে রাজনৈতিক ছাড় দেয়া হইতেছে); আর এখন পরিণত হইতেছে একটা মিডিয়া রিয়ালিটিতে এবং সরকারি আন্দোলনে। এইটারে এই আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যর্থতা হিসাবেই দেখা সম্ভব। আওয়ামী ডিলেমার বাইরে শাহবাগ এর অন্য তেমন কোন রাজনৈতিক অপশন এখনো নাই। থাকাটা সম্ভব যদি শাহবাগ নিজেই একটা পলিটিক্যাল আইডেন্টিটি হয়া উঠতে পারে। [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

অবশ্য শাহবাগের রাজনৈতিক মিত্র এবং শত্রু সবাই এইটাই চাইছে যে, শাহবাগ যেন বর্তমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার বাইরে কোন অবস্থান তৈরি করতে না পারে। কারণ, শাহবাগের অবস্থান এমন কিছু রাজনৈতিক প্রশ্নরে সামনে নিয়া আসে যারে রাজনৈতিক দলগুলা সরাসরি ডিল করতে প্রস্তুত না, এইটা উনাদের রাজনৈতিক সংকট তৈরি করে। এর মধ্যে ত অবশ্যই অন্যতম, মুক্তিযুদ্ধ এবং ইসলাম। এইটা শুধুমাত্র শাহবাগ-ই না, বাংলাদেশের ইন্টেলেকচুয়ালিটিরও মূল জায়গা।

Continue reading

শাহবাগ ২

 

শাহবাগ আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়া গেছে।

এইটা ছিল সর্বপ্রথম একটা স্পার্কিং। একটা রিয়েল স্পেসরে ভার্চুয়াল কইরা তোলা। সেইটা সম্ভব করা গেছে। এখন সবাই এই ভার্চুয়ালের অংশ হয়া উঠতে চাইতেছে। আমরাই শাহবাগ। আমরা গড়ে তুলতেছি আমাদের নিজস্ব শাহবাগ। আমাদের আংশকা আর আশাবাদ দিয়া। এক একটা শাহবাগ জন্ম নিতেছে এখন আমাদের মনে। আমাদের ঘরে, আমাদের শহরে, আমাদের কম্পিউটারে, আমাদের শব্দের ভিতরে। আধা সংশয়ে, আধা ইন্টেলেকচুয়ালিজমে সে সইরা সইরা যাইতে চাইতেছে! ছিপ দিয়া ধরার চেষ্টা অবশ্য করতেছে, অনেকে।  [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

এই প্রথম বাংলাদেশের ডমিনেন্ট প্রিণ্ট মিডিয়া এবং টিভি-সাংবাদিকতারে ডিঙাইয়া ইন্টারনেট সামনে চইলা আসছে। যদিও ব্লগ আর ফেইসবুকের কথাই বলা হইতেছে। কিন্তু ফর্ম হিসাবে এইটা ব্লগ অ্যাক্টিভিটি আর ফেসবুকিং এর ভিতরে নাই। এইটা একটা কমপ্লিট ভার্চুয়ালিটি যা মিডিয়ার রিয়ালিটিরে হারাইয়া দিছে। ২৪ ঘণ্টা শাহবাগ মোড় কাভার কইরাও কোন ট্রেস পাওয়া যাইতেছে না, কোথায় এইটা সংগঠিত করতেছে নিজেদেরকে? যারা যারা আছে, তারা কারা? উগ্র জাতীয়তাবাদী, উদার বামপন্থী, উদভ্রান্ত দর্শক যারা মিডিয়ার রিয়ালিটি দেখতে দেখতে এর ভিতর ঢুকে গেছে?

Continue reading