কবিতা: নভেম্বর ড্রাফটস, ২০১৬।

আরেকটা সকাল 


ঠোঁটের মুখে আগুন লাগার আগ পর্যন্ত
স্টিকে গাঞ্জা থাকে

আমি জানতাম-ই না এইটা আগে

জানা’র ব্যাপারগুলি এত গোপন, রূঢ়, নিরীহ…


ডানা আমার,
দূর থিকা আসতে থাকা কুয়াশার কল্পনা

একটা পর্দার বাইরে

সূর্য উঠবে কখোন!

আমি ঘুমায়া যাবো – এইরকম হ্যাপিনেস,
পুকুরের পানির উপর থাকতে থাকা লাইটগুলির মতোন
টলমল; ভাবে, ভাসতেছে
নিজেও জানে – জানা ব্যাপারগুলিই আমাদের
ভুলে থাকা লাগে


যেন বাতাস গান গাইতেছে
যেন বাতাস শাদা একটা রঙ

যেন কেউ শুনতেছে, যেন কেউ দেখতেছে

এইজন্য বাতাস আসছে, বকুল ফুলের মতোন

শামসুর রাহমানের ঢাকা শহরে

ভাপা-পিঠা আর চিতই-পিঠার দোকানগুলি জেগে উঠতেছে


‘ঘুমাইছো, আলোকিত প্রাসাদ?
ঘুমন্ত ছবিগুলি কেমন?’


দীর্ঘ সকালের ভিতর জাইগা উঠবে তখন
আমাদের ছোট ছোট ছায়া

ঘুরা পথে ফিরা আসবো আমরা


তারপর, রইদের ভিতর মনে হবে
কি সব আজাইরা কথা!

কেনো…

কতবেলের মতো একটা রেয়ার উপমা’র কথাও মনে হইলো না?

৭.
নারিকোলের পাতার মতো লম্বা, করুণ… Continue reading

কোহেনের কবিতা

গিফট

আমারে তুমি বলছো যে কবিতার চাইতে
নিরবতা শান্তির অনেক কাছাকছি একটা জিনিস
কিন্তু যদি আমি গিফট হিসাবে
তোমারে দেই নিরবতা
(মানে, আমি যারে নিরবতা বইলা জানি)
তুমি তখন বলবা
‘এইটা তো নিরবতা না
এইটা তো আরেকটা কবিতা’
আর আমার হাতে ফিরায়া দিবা তুমি সেইটা।

 

আমি ভাবি, কতো লোক থাকে এই শহরে

আমি ভাবি, কতো লোক থাকে এই শহরে
ফার্ণিশড রুমগুলাতে।
অনেক রাতে, যখন আমি বিল্ডিংগুলির দিকে তাকাই
কসম আল্লার প্রত্যেকটা জানালাতে আমি দেখি একটা চেহারা
তাকায়া আছে আমার দিকে,
আর যখন আমি মুখ ফিরাই
আমি ভাবি কতো লোক না জানি তাদের ডেস্কে ফেরত গেছে
আর এইটা লিইখা রাখতেছে।

Continue reading

অক্টোবর, ২০১৬: ড্রাফটস

রোড অ্যাকসিডেন্ট

কোন একদিন আর্লি সকালবেলা
ধরো, পাঁচটা বা সাড়ে পাঁচটা
খালি রাস্তায়
কোন এক মাইক্রোবাস আইসা
আমার শরীরের উপর তুইলা দিলো তার চাইরটা চাকা…

আমি মইরা গেলে পরে, আমি ছাড়া
এই দৃশ্যের কথা, মনে রাখবে যেই ইয়াং ড্রাইভার
তার মুখটাও আমি দেখতে পাইলাম না…

 

আমি আর আমার টাইম

কোনদিন একটা দিন-ই তো;

সকালের আলো আসে
উঠানে, সরিষা খেতের হলুদে, দূরের নদীতে…

একটা দূরে গিয়া কোনএক দূরে শেষ হয়
তারপরে আশুগঞ্জের পাওয়ার স্টেশন, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া…

এরপরে আরো আরো না-জানা আর চাইলেই জানতে পারা যায় এইরকম ঘটনা…

ম্যাপে দেখা নাম, জায়গাগুলি, বিভিন্ন শেইপ, বিভিন্ন কালার

স্পেইস তো লিমিটেডই এই দুনিয়ায়
কুয়াকাটাও গিয়া শেষ হয় এর্ন্টাটিকায়।

তখন মনেহয় টাইমের কথা…

চুইয়া চুইয়া পড়তেছে কোন এক স্পেইস বাইয়া

এখন সকাল, এখন বৃষ্টি, এখন রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম…

এখন একটা টিনের বাড়ির সামনে, সবুজ ঘাসের ভিতর ফুটতেছে দুইটা গোলাপি রংয়ের ঘাসের ফুল

প্যাকঁ-কাদায় ভর দিয়া আসতেছে দুপুর…
ভাবতেছে, কোনএকটা দিন একটা দিন-ই তো, আমরার Continue reading

সেপ্টেম্বর, ২০১৬ – কবিতা

ফটো: উম্মে রায়হানা
———————-

রইদের ছায়া

হঠাৎ রইদ আসে
কাঁঠাল পাতার ফাঁকে
কয়, ‘তুমি কি ভাবছিলা আমি আসবো না?’

আমি হাসি, কই, ‘তুমি তো ফাঁকিবাজ…’

রইদ হাসে, আরো

ঝলমল করে বাসের জানালাগুলি

ছাতা খুলে তরুণী মেয়েটা, যিশুখ্রীষ্টের ছবিওলা

রইদ তখন নুইয়া আসে, তাঁর ঘাড়ের কাছে
পোষা বিলাইয়ের মতো শুইয়া পড়ে
আবার

রিকশার পাদানিতে
রাস্তায়, গর্তের পানিতে
নিভে আসে রইদের আলো

আমি ভাবি, ‘আসছিলাম তো…’
এইটুক বলার লাইগাই সে
ঝুইলা ছিল কাঁঠাল পাতার ফাঁকে?

অন্যমনস্ক… Continue reading

শি, অ্যান্ড দ্য রিটার্ন অফ শি (৯)

এই সিরিজটার নাম হইতে পারতো – পুরুষের প্রেম বা অন্য আরো অনেককিছুই। এই টানাগদ্যের ফর্মটাও অনেক কমন একটা ন্যারেটিভ ফর্ম আর সাবজেক্টটাও – না-পাওয়া প্রেম [প্রেম পাওয়া যায়, এই ব্যাপারটাই কি রকম না! এইখানে গরুর (ইদানিং অ্যাট একচুয়াল লিখতে গিয়া লিখে – গাভী’র) দুধের চা পাওয়া যায়’র মতোন]।

তো, আমি হয়তো ভাবছিলাম যে, একটাকিছু ইনসার্ট করতে পারবো, কিছু একটা কি হবে না? – আমি লিখলে? হয় নাই আসলে। এই রায় আমি-ই দিতে চাই। কমপ্লিটও হয় নাই পুরা সার্কেলটা, লেখার। সিরিয়ালটাও হয়তো ঠিক করা লাগবে। কিন্তু অনেক তো হইছে আসলে। ২০১৩-তে শুরু করছিলাম, ২০১৪-তেই লেখা মোস্টলি, তারপরে ২০১৫ আর ২০১৬-তেও লিখা হইছে কয়েকটা। তো, লিখছি যেহেতু থাকলো, একটা জায়গায়। এর বেশি কোনকিছু না।

————————————————

১ ।।  ২ ।। ৩ ।। ৪ ।। ৫ ।। ৬ ।। ৭ ।। ৮ ।।

————————————————

 

হঠাৎ

তোমার বাঁইচা থাকার লাইগা আমারেই কেন মরা লাগবে? শি জিগায় আমারে। মরো নাই তো তুমি! আমরা জাস্ট কথা বলা বন্ধ কইরা দিছি। একটা জিনিসরে কেন এক্সাজারেট করা লাগে তোমার? তোমার বাঁইচা থাকা তুমি চোদাও না গিয়া বাল। হোয়াই ইট হ্যাজ টু বি মি? এইরকম হাউকাউ করতে গিয়াও চুপ কইরা থাকি আমি। যে কোন কনভারসেশনই পসিবল না আর। একজন মানুষরে ন্যাংটা দেইখা ফেলার পরে যতোই তুমি তারে ঢাইকা রাখতে চাও, তার ইমেজ থাইকাই যায়। চোখ বন্ধ কইরা রাখলেও। অন্ধ হয়া গেলেও। একটা ট্রাজিক বা রোমাণ্টিক এন্ডিংয়ের লাইগাই তো ছিল এতকিছু। শি মেবি অপেক্ষা কইরা আছে, মেমোরিটা মুইছা গেলেই হয়। তখন ফোঁস ফোঁস কইরা ফিরা আসতে পারে। আমি ভয় পাই। আমি অন্য আরেকটা শি’র কথা ভাবি যে কখনো টেম্পট হইতে রাজি হয় নাই। অথবা দুই-তিনজন তারা ক্যাফেতে বইসা সিগ্রেট খাইতেছে। এই প্লেইসটা সেইফ। তারপরে সেলফি তুলে। আরেকজন শি আইসা বলে, বিয়া করছি ঠিকই, বাচ্চা তো নিবো না; আমার পেটে বাচ্চা দিয়া সে আরেকটা প্রেমই করতে চায়। ধোঁয়ায় বসে থাকে সবাই। আমি ভাবি যে উইঠা চইলা যাবো। আমি ভাবি, আমি তো মারা গেছি। মানে, আমি যদি মারা না যাই শি আর কেমনে বাঁইচা থাকতে পারে? এইটা এমন একটা দুনিয়া যেইখানে একজনই থাকে। আর আমাদের আইডেন্টিটি পিক করে সবচে নমিনাল এলিমেন্টটারে, যেইখানে ইউনিকনেস ক্লেইম করা যায়। উই আর ডান উইথ আওয়ারসেলফস। সো, একজনই আছে, শি। সামনের দিকে তাকায়া পিছনে হাঁটতে থাকি আমি। তেমন সমস্যা হয় না আসলে। বস্তার ভিতর দুই পা ঢুকাইয়া ব্যাঙের মতো লাফাইতেছে শি। আমি দেখতেছি। কুয়াশায় কিছুটা ঝাপসা লাগে। এখনো সন্ধ্যা আবার? একটা দিনের ভিতর কয়বার সন্ধ্যা হয়? ট্রাফিক জ্যাম কি আজকে ভাল্লাগতেছে? বুকার প্রাইজ পাওয়া বইয়ের পাইরেট কপিটা যদি তোমার গাড়ির জানালায় ধরি তুমি কি কিনতে পারো? পড়বা বইলা না, ধরো তুমি উদাস, ভাল্লাগতেছে না, কারো সাথে কথা বলাই যায়, এইরকম। আর সাথে সাথে ধূলা-বালি যত ঘিইরা ধরলো। ধরো, ৫০ টাকার নেগোশিয়েশন শেষ হইতে না হইতেই সিগন্যাল ছাইড়া দিলো। নীল গাড়ির ড্রাইভার সে। প্রাইড আছে। চইলা গেলো। পরের দিন মেবি দেখা হবে। পরের দিন। পরের দিন। পরের দিন। ধরো, মরার পরেও তো আছে পরের দিন। কয়েকটা পরের দিন পার হইলেই মনে হবে, মারা গেছি। কবরের ঘাসে বাতাস। পাকুড় বটের কাছে গোদারা ঘাটের কিনারে সন্ধ্যাবেলায়, আমি ভাবতেছিলাম, সবকিছুই কিরকম শেষ হয়                         হঠাৎ।

 

বইসা ছিলাম

অনেকক্ষণ বইসা থাকার পরে, অনেক অনেক ক্ষণ বইসা থাকার পরে লেখা হইলো, বইসা ছিলাম। “হইছে না এইবার?” শে জিগাইলো আমারে। আমি হাসলাম। কইলাম, ‘বইসা তো ছিলা-ই।’ শে কইলো, “না, না… বইসা থাকারে বসতে যে দিলাম; ঠিকাছে না এইটা?” তার চোখ হাসতেছিল, ঠোঁট নড়ে নাই। আমি বুঝতে পারলাম আর ওর হাসিটা হাসতে থাকলাম নিজেই আবার। কইলাম, ‘বইসা যে আছে, সে কি দাঁড়াইবো না আর… এতো শিওর তুমি কেমনে হইলা?’ “তখন না হয় লিখবো, দাঁড়ায়া গেলাম। 🙂 ” শি’র ঠোঁটও হাসলো এইবার। চোখগুলি ঝলমল। সূর্য ডুবে যাইতেছিল। দূর থিকা ভেসে আসতেছিল বৃষ্টির বাতাস। একটু একটু কাঁপতেছিল টিলার উপরের ঘাসগুলি। হাসিগুলি শেষ হয়া আসলো একটা সময়। ভাবতেছিলাম আমিও, লিইখা রাখবো কিনা, ‘বইসা ছিলাম।’ দূরে, জাহাজের ডেকে দাঁড়ানো শি’র চুলের মতোন উড়তেছিল পাশে বসে থাকা শি’র চুল। তখন।

Continue reading