১. গল্পলেখক ২
“প্রফেসার, আমি কি মারা গেছি?
হ, অরা তো কইছে, তুমি মারা গেছো।
তাইলে আপনি আমার লগে কথা কইতেছেন ক্যান? আপনি তো আমার কথা শুনতেছেন, তাই না?
না, আমি আপনার কথা শুনতেছি কারণ আমি হুমায়ূন আহমেদের গল্পের একটা কারেক্টার। এরা উল্টা পাল্টা কথা শুনে। আমি হুমায়ূন আহমেদের গল্প পড়তে পড়তে আপনার লগে কথা কইতেছি।
ও, আচ্ছা, আমি তাইলে মারাই গেছি? বাঁইচা উঠার কোন চান্স নাই?
আমি বুঝতেছি না এখনো। উনার অপ্রকাশিত লেখাপত্র আমি খুঁজতেছি, যদি কোন একটা কিছু খুঁইজা পাই, তাইলে অইখানে একটু সার্চ কইরা দেখতে পারি, কোন সূত্রটুত্র পাওয়া যায় কিনা…
আচ্ছা, আপনি তাইলে দেখেন, আমি একটু ঘুমায়া নেই…“
এইটুক দেখার পরেই গল্পলেখকের ঘুম ভাইঙ্গা যায়। মুশকিলই হইলো। এইটা নিয়া কি গল্প লেখা যায়? স্বপ্নগুলা তো গল্পের মতই। আবার হুবহু লিখলে তেমন কিছু হয় না আসলে। মনেহয় একটা ইশারা-টিশারা যেন আছে, আসলে তো নাই। স্বপ্নগুলা এইরকম ননলিনিয়ার ব্যাপারই। কিন্তু একটা থ্রিল থাকে, রিয়ালিটির স্ট্রেইটকাট ব্যাপারগুলা অনেকটা অ্যাবসেন্ট যেহেতু।
যা-ই হোক, কাফকার তেলাপোকা ফিলিংস হওয়ার আগেই সে বিছনা থিকা উইঠা খাড়ায়। কিন্তু আজকে কই যাবে শে? কি তাঁর কাজ?
কাজ তো অনেকই আছে। কাজ বানায়াও নিতে হবে।
পর্দা সরায়া দেখলো, টগবগ ঘোড়ার মতন রইদ উঠছে আজকে। মনটাই ভালো হয়া গেল।
সিগ্রেট ধরায়া দুইটা টান দিয়া টয়লেটে গেল গল্পকার। হাগু ঠিকঠাক আছে। আরেকটা ভালো খবর।
রুমে ফিরা দেখল, মোবাইলে ৫টা মেসেজ। ১টা মিসকল। বাপে ফোন দিছিল। এখন তার লগে কথা বলা যাবে না। অফিসে মনেহয় ঢুকছে মাত্র। বসের ঝাড়ি খাইতেছে মনেহয়। দুপুরের দিকে ফোন করা লাগবে তারে। মা মরার পর থিকা আরো খিটখিটা হইছে সে। সারাক্ষণ ভ্রুঁ কুঁচকায়া রাখে, যেন দুনিয়া ধ্বংস হয়া যাইতেছে, আর দুনিয়ারে বাঁচানোর সব রেসপন্সিবিলিটি এই লোকের, জেমস বন্ড সে। বুইড়া হইলে মানুশের কতো যে ক্রাইসিস তৈরি হয়। একটা ওয়ানাবি বয়ফ্রেন্ড, বিকালে কফি খাইতে চায়। তারে আরো কিছুদিন ঝুলাইতে হবে। নেকস্ট উইক, মেবি, দেখা যাক… তদ্দিন টিকে কিনা। আর না টিকলে নাই। আরে, মার্গারেটের মেসেজ দেইখা খুশি হয়া গেল। এই বুড়া মহিলার লগে দেখা করা লাগবে। কোনদিন মইরা যায় কে জানে! আরেকজন ভোর সকালবেলায় আজাইরা কথা কইতেছে। তার নাম মনেও আনা যাবে না। ব্লক কইরা দিতে হবে, শালা রে! ব্রাদার অমিতাভ ঘোষ এইদিকে তাগাদা দিতেছেন, গল্পটা তারে দিতে হবে। কি ভালোই না হইতো, স্বপ্নে স্বপ্নে গল্প লেখাটা যদি শেষ হয়া যাইতো! Continue reading