অনলাইন এন্টারটেইমেন্ট প্লাটফর্মগুলা নিয়া

টিভি-স্টেশন বেইজ এন্টারটেইনমেন্টের দিন তো বাংলাদেশে মোটামুটি অফিসিয়ালি শেষ হইতে যাইতেছে। চরকি’র শুরু হওয়ার পরে এইটার কথা মনে হইলো। (ঘটনা’টা তো শুরু হইছে আরো আগেই আসলে।) উনাদের কনটেন্টের কারণে না, অডিয়েন্স হিসাবে বাংলাদেশি পিপলরে টার্গেট করার ভিতর দিয়া। যদিও উনারা ম্যাস-লেভেলে যাইতে রাজি না এখনো। যেমন বাংলা-ক্ল্যাসিক হিসাবে বেহুলা’রে রাখছেন, রূপবান’রে রাখেন নাই। আমার একটা ধারণা হইতেছে, বাংলা-সিনেমা হিসাবে এটলিস্ট রূপবান, ছুটির ঘন্টা এবং বেদের মেয়ে জোসনা’রে যারা নিতে পারবেন, উনারা ‘বাংলাদেশি অডিয়েন্সরে’ কিছুটা হইলেও নিতে রাজি হইতে পারবেন।… তো, এইসব জিনিস চেইঞ্জ হবে ধীরে ধীরে, ওয়েব কনটেন্ট এবং প্লাটফর্ম যারা বানাইতেছেন উনারা বুঝতে পারবেন যে, মিডল-ক্লাস উনাদেরকে ভাত দিবে না; কিন্তু তারপরও উনারা এই মিক্লাদের দরবারেই হাজির হইবেন। কেন?

এই আলাপ’টা আসলেই অনেক বড় এবং যে কোন একটা পারসপেক্টিভ নাই। আমি তিনটা জিনিস এটলিস্ট হাইলাইট করতে চাই।

এক হইলো, উনাদের ইকনোমিক উদ্দেশ্য যে নাই – তা না, কিন্তু এইটা মোটিভেশন ফ্যাক্টর না এতোটা (আবদুল্লাহ মাহমুদ সাদের কথা শুনলেও বুঝতে পারবেন সেইটা)। ধরেন, লাখ লাখ মানুশ আপনার কোন পোস্টে প্রশংসা করলো, আর ধরেন, টারানটিনো (বা এই লাইনের যারা মাস্টার মানুশ আছেন, উনাদের কেউ একজন) আইসা একটা লাইক দিলো, বা কইলো, ভালোই তো হইছে; বিশাল ব্যাপার হবে না তখন সেইটা! কিন্তু এইটা খালি একজন বুঝদার মানুশের রিকগনিশন হিসাবে দেখতে চাই না আমি, সেইটা তো আছেই; কিন্তু এর বাইরেও একটা ক্লাস-ওয়ারফেয়ারের ঘটনাও। আর্ট সবসময় একটা রুচি’র ঘটনা। এমন না যে গ্রেট আর্ট খালি একটা ইকনোমিক ও কালচারাল ক্লাসের জিনিস, অ্যাক্রস দ্য ক্লাস পিপলরে কানেক্ট করতে পারে; কিন্তু ফার্স্টে একটা ক্লাসের রুচিরে স্যাটিফাই না করতে পারলে এইটা হয় না। তো, এই ক্লাস কোনটা?

এইখানে সেকেন্ড পয়েন্ট’টা আসে, আমি আগেও কয়েকবার বলার চেষ্টা করছি (থিওরেটিক্যালি স্পষ্ট করতে পারি নাই মেবি) যে, একটা গ্লোবাল কালচারাল ক্লাস এমার্জ করতেছে, সারা দুনিয়াতে। একটা সময়ে, কৃষক ও জমিদারের ক্লাস-ওয়ার থিকা আমরা পাইছি ন্যাশনাল বুর্জোয়া ক্লাসটারে; দেখবেন, ‘জাতীয়’ হওয়াটা জরুরি ছিল তখন (এখনো আছে সেইটা, কিছুদূর পর্যন্ত), এখন এইটা আর মাস্ট কোন ক্রাইটেরিয়া না; বরং ইথোপিয়ার না-খাইতে-পারা বাচ্চাদের জন্য যদি আপনার মন না কান্দে, আপনি তো মানুশই না! যে কোন আর্ট এখন এই গ্লোবাল কালচারাল ক্লাসের লগে রিলিটেড একটা ঘটনা। মানে, জাতীয়তাবাদী বুর্জোয়া শ্রেণী একটা পুরান ক্লাস এখন।

থার্ড পয়েন্ট হইতেছে, এই যে নতুন ক্লাস, এইটা তৈরি হইতেছে খালি পুঁজির গ্লোবালাইজেশনের ভিতর দিয়া না, বরং এই আর্টের পাওয়ারের ভিতর দিয়াও। এই পাওয়ারটারে ক্রিয়েট করতেছে নতুন টেকনোলজি, নতুন ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেম। আপনি কি মনে করেন, ‘সার্টেন রুচি’র ম্যাটেরিয়াল না হয়া কোন আর্ট নেটফ্লিক্সে ডিস্ট্রিবিউটেড হইতে পারবে? বালের ‘প্রমিত ভাষায়’ না লেখলে মরা নিউজপেপারগুলা যেমন আপনার লেখা ছাপাবে না, এইরকম সার্টেন রুচি’র জায়গারে প্রমোট না করলে নেটফ্লিক্স এবং অন্য ওয়েব প্লাটফর্মগুলাও আপনার সিনেমা-আর্টরে প্রমোট করবে না। (হাউএভার, এইগুলার কারণেই এরা টিইকা থাকে না, বরং এই বৈশিষ্ট্যগুলা হইতেছে এই ফর্মেশনগুলার কোর জিনিস।) গ্লোবাল কালচারাল ক্লাসের ঘটনা’টা থাকাই লাগবে, আপনার কাছে মনে হবে এইগুলা ‘স্বতঃসিদ্ধ’ বা ‘স্পন্টিনিউয়াস’ একটা ঘটনা! Continue reading

দিদারুল আলম ভূঁইয়া

দিদারুল আলম ভূঁইয়া’র ঘটনা’টাতে (উনি রাষ্ট্রচিন্তা নামে একটা নতুন পলিটিক্যাল প্লাটফর্মের অর্গানাইজার; সেকেন্ড ওয়াইফ উনার নামে নারী-নির্যাতনের মামলা করলে পুলিশ সেকেন্ডবারের মতন উনারে গ্রেফতার করে) মনে হইলো আবার, যখন আপনি পলিটিক্স করতে যাইবেন, পাবলিকের দরবারে যাইবেন, আপনারে পলিটিক্যাল, ফিলোসফিক্যাল বোঝা-পড়ার বাইরে মোরাল জায়গাগুলা নিয়াও প্রিপারেশন নিতে হবে আসলে। কারণ আপনার পারসোনাল লাইফ আর পারসোনাল না তখন; ইলেকশনে কমপিট করার লাইগা যেমন হলফনামা দিতে হয়, পলিটিক্সেও এই হলফনামা বা স্বীকারোক্তি দিয়া রাখলে বেটার। ভিপি নূর অন্য অনেককিছুর বাইরে উনার পারসোনাল লাইফের ইন্ট্রিগ্রিটির জন্যই এখনো টিইকা আছেন। উনারে প্যাঁচাইতে গিয়া কিন্তু উল্টা ধরাই খাইতে হইছে সরকারের।

ফরহাদ মজহার যখন গুম হইছিলেন, তখন এই জিনিসটা নিয়া একবার আলাপ হইতেছিল আ-আল মামুনের সাথে, রাজশাহীতে গিয়া, ২০১৮ সালের দিকে হবে সেইটা। যদ্দূর মনে পড়ে উনারে এইরকম কথাই বলছিলাম যে, সমাজে একজন পাবলিক ফিগারের পারসোনাল লাইফরে বাতিল কইরা দিতে পারি না আমরা, তার পাবলিক কাজকামের লগে মিলায়াই দেখতে হবে; এখন কেমনে দেখবো – এই জায়গাটা হয়তো ক্লিয়ার না কখনোই।

নেলসন ম্যান্ডেলা জেলে যাওয়ার আগেই, যখন পার্টিতে উঠতি লিডার তখনই উইনি ম্যান্ডেলার প্রেমে পড়ছিলেন, সেকেন্ড বিয়া করছিলেন। জেলে থিকা বাইর হওয়ার পরে উইনি’র লগে তার ডির্ভোস হইছিল, মেবি উনি তখন প্রেসিডেন্ট। মানে, এইটা নেলসন ম্যান্ডেলার বেটাগিরি না আসলে, বরং উনি যেই দুইজন মহিলার লগে রিলেশনে ছিলেন, উনারা দুইজনেই মেবি কন্সিডারেট ছিলেন, পাবলিক লিডার হিসাবেও উনারে বিশ্বাস করতেন। রিলেশনের শুরু এবং শেষটা উনারা ভালোভাবে করতে পারছিলেন।

মানুশ হিসাবে আপনার প্রেম-ভালোবাসা-ঘৃণা এইসব ইমোশন সবসময় এতোটা কন্ট্রোলের মধ্যে থাকে না, কিন্তু আপনি ক্লিয়ার থাকতে পারেন নিজের কাছে, এবং পাবলিক ফিগার হইলে, পাবলিকের কাছেও; এতে আপনার উপর পাবলিকের বিশ্বাস কমে না। কয়দিন আগে, কিরণ রাও আর আমির খান করলো না! একটু বেশি নাটক হইলেও জিনিসটা ভালো।

এখন আমি যেহেতু পাবলিক ফিগার না, আমার পক্ষে এইগুলা বলা সহজ। (কেউ আমরা ফেরেশতা না, শয়তানও না; গুড হিউম্যান বিইয়ং’রাও আছেন, সবার কাছে একসেপ্টবল না হইলেও। আমি অই ক্যাটাগরি লোক – এই ক্লেইম আমার নাই।) আর কবিদের উপ্রে তো লোকজনের চেত এই কারণেও যে, এইসব ইমোশনাল ইস্যুগুলা উল্টা আরো এপ্রিয়েশট করা হয়, মাফ কইরা দেয়া হয় যে, কবি তো, একটু করবেই! (আসলে এইরকম না ব্যাপারটা। কাউরে কবি মনে হইলে, তার অনেককিছু মাফ কইরা দেয়া যায় আর কি…)
পলিটিশিয়ান, পাবলিক ইন্টেলেকচুয়ালদের ব্যাপারেও যে মাফ করা যায় না – তা না; কিন্তু উনারা যখন গোপন করেন, তখন পাবলিক বিশ্বাসের জায়গাতে ধাক্কা খায়, ইনিশিয়ালি মনে করতেই পারে, গোপন করলো কেন! তারে তো আমরা আমাদের কাছের লোক ভাবছিলাম! তো, পিপলরে যদি আপনি কাছের লোক বানাইতে চান, তাদের লগে ভেদ বা ইনফরমেশন গ্যাপ যতো কমানো যায়, ততই তো ভালো, তাই না?

এইটা জরুরি না যে, আপনার ইমোশনাল ‘ভুলগুলার’ (ক্রাইম না বা হয়তো পাপও না) কথা আপনি বইলা বেড়াইবেন, কিন্তু লিগ্যাল বা ডকুমেন্টেড যেই জিনিসগুলা, সেইগুলা না-বলাটা ‘বিশ্বাসভঙ্গের’ একটা ঘটনা হয়া উঠে।

কাউরে রিলেশনের ব্যাপারে এডভাইস দিতে চাইতেছি না আমি। বা এইভাবে মোরালি যে ভিক্টিমাইজ করা হইতেছে, একট ট্যাবু বানানো হইতেছে ‘ভালো মানুশের’ – এর এগেনেস্টেই আমি। আমি বলতে চাইতেছি পলিটিক্স করতে গেলে আপনারে ‘ভালো মানুশ’ হইতে হবে – এইটা জরুরি না হইলেও, আপনার পারসোনাল লাইফের ব্যাপারে স্পষ্ট হইতে পারাটা দরকার, তা নাইলে পাবলিক আপনারে কাছের মানুশ মনে করতে পারবে না আসলে। এর বাইরে অন্যসব ঘটনাগুলা তো আছেই।…

 

কুরবানি ঈদের গান

বাংলাদেশে কুরবানি’র গান কোনটা? (সেইটা পরে বলতেছি, কিন্তু) তার চাইতে জরুরি প্রশ্ন হইতেছে, বাংলাদেশে কোন কুরবানির গান নাই কেন?

কিছু ‘গরু’ অবশ্যই ইউটিউব সার্চ দিয়া ১৫/২০টা গান বাইর কইরা এবং লিংক দিয়া বলবেন, কই আছে তো!
মানে, এখন কেমনে বুঝাই, ‘গান নাই’ বলতে আমি কি বুঝাইছি? 🙁

(আনুমানিক) ৯০ বছর আগে কাজী নজরুল ইসলাম রমজানের ঈদ নিয়া একটা লেখছিলেন বইলা এবং আব্বাসউদ্দিন সেই গান রেকর্ড করছিলেন বইলা, সেই গানটা রমজানের ঈদের আগের দিন আমরা বাজাইতে পারি (নাচতে না পারলেও)। এইরকম কোন ‘সিগনেচার সং’ বাদ দেন, ধরেন আপনার ফ্রেন্ড সার্কেলে ৫/৭ জন একলগে বইসা গাইতে পারেন, এইরকম কোন কুরবানির ঈদের গান নাই।
কালচারাল নিডের কথা বাদ-ই দেন, এর একটা বাজারও তো আছে! কিন্তু আমাদের আর্ট-কালচার করা লোকজন এইটা নিয়া ‘সাহিত্য’ আসলে করতে পারেন নাই।

এক হইলো, এই ‘ট্রাডিশন’টা নাই। যেমন ধরেন, প্রেমের কবিতা লাখ লাখ পাইবেন; যে কেউ ভাবলে, বসলে, দুই-চাইরটা লেইখা ফেলতে পারবেন, কারণ এই ভাইব’টা বাংলা-ভাষার ভিতরে, বাংলা-সাহিত্যের ভিতরে আছে, যার ফলে লেখাটা সহজ (আবার একইভাবে, কঠিনও); দেশপ্রেমের কবিতাও লেখা যায়। কিন্তু নতুন কোন সাবজেক্ট নিয়া লেখাটা কঠিন, কারণ তখন সেইটা ‘হয় না’ আসলে। একটা সাবজেক্টরে সাবজেক্ট কইরা তোলাটা কালচারের বাইরেও একটা আর্টিস্টিক ক্ষমতারও ঘটনা। আর সেইটা কম-বেশি একটা কালচারাল আন্ডারস্ট্যান্ডিংয়েরও মামলা…

আরেকটা জিনিস একটু ইরিলিভেন্ট হইলেও বইলা রাখতে চাই, ব্রাহ্মণবাদী টেক্সট-রিডিংয়ে এই জিনিসটা পাইবেন, টেক্সট’টারেই মুখ্য কইরা তোলা হয়, যেন যা কিছু বলা হইলো না, তা আর বাস্তবে নাই! কনটেক্সট’টারে কন্সিডার করা হয় না। কিন্তু ভাষাতে অই না-থাকা জিনিসগুলাও থাকে। যেমন একটা সময়ে আইসা ফিল করার কথা, আরে, কুরবানির গান নাই ক্যান!

কলকাতার হিন্দুদের দুর্গাপূজা যেমন ইংরেজ আমলের একটা ঘটনা, কুরবানি জিনিসটা ১৯৫০-৬০’দিকেও সামাজিক ঘটনা হয়া উঠার কথা না, ৮০’দশকে একটা কমন জিনিস হয়া উঠতে পারছে মনেহয়। (কেউ কোন লেখার কথা জানা থাকলে রেফার কইরেন।)

২.
টাইমের হিসাবে, ইউটিউবে (অবশ্যই অথেনটিক সোর্স না) বাংলাদেশের ফার্স্ট কুরবানি’র গান পাইছি ২০১২ সালের। এর আগেরও থাকতে পারে। মোবাইল কোম্পানি রবি মনেহয় দুয়েক্টা জিনিস ট্রাই করছিল ২০১৩/১৪’র দিকে, কিন্তু জমাইতে পারে নাই।

প্রমিথিউস ব্যান্ডের বিপ্লবের একটা গান আছে, ২০১৬ সালের, যেইটা আমার ধারণা একটা কাল্ট সং হয়া উঠতে পারে।

এর বাইরে যেই গানগুলা আছে, বেশিরভাগই ফান, হিউমার 🙂 গরুর বাজার নিয়া, বেপারি-কাস্টমার নিয়া। গত দুই-তিন বছর ধইরা প্রতি বছরই একটা/দুইটা গান রিলিজ হয়। ‘ডিমান্ড’ তো আছে আসলে। কিন্তু ফেমাস বা সেলিব্রেটি সিঙ্গার-লিরিসিস্ট না উনারা কেউ।
প্যারোডি গানও আছে কিছু; মানে, কুরবানি যে দিতেছি আমরা, লজ্জার ব্যাপার তো কিছুটা! কলার ছুলকায় পা পিছলায়া পড়ার পরে নিজে নিজে হাইসা দিতে পারার মতো।…

তবে ইন্টারেস্টিং একটা ব্যাপার হইতেছে, যারাই এই ট্রাই-ট্রুইগুলা করতেছেন, তাদের সবাই-ই ইয়াং। এইটা এনকারেজিং একটা জিনিস। আমি হোপফুল যে একটা বাংলাদেশি কুরবানির গান আমরা পাইতে পারবো হয়তো, রিসেন্ট ফিউচারেই। কারণ কালচারাল স্টিগমাটাও কমতেছে মনেহয় কিছুটা।…

৩.
তো, এর আগ পর্যন্ত, বাংলাদেশে কুরবানির ঈদের গান হইতেছে আসলে হিন্দি কুরবানি (১৯৮০) সিনেমার “কুরবানি, কুরবানি…” গানটা। (বিপ্লবের গানের শুরুতেও গানটার একটু আছে।)

আমার ধারণা, অনেকেই চিনবেন গান’টা। কমেন্টে লিংক দিতেছি, দেখেন তো, মনে করতে পারেন কিনা!

https://www.youtube.com/watch?v=-qx03akOBCk

হুমায়ূন আহমেদের হিরো’রা

হুমায়ূন আহমেদের হিরোদের খেয়াল করছেন? হিমু, মিসির আলী, শুভ্র… – এরা কেউ বিয়া করে না, (দুই-চাইরজন ভক্ত-টাইপ প্রেমিকা থাকলেও) প্রেমও অইরকম করতে চায় না, (এটলিস্ট ভিজিবল) সেক্সুয়াল ড্রাইভ নাই, ভালো ভালো জিনিস চিন্তা করে, ভালো ভালো কাজ করতে চায়; রবীন্দ্রনাথের নায়িকাদের মতোই কিন্তু অনেকটা! এক কথায় বলা যায়, ইনোসেন্ট অরা।

এইরকম হিরো হওয়াটা খারাপ হইছে, বা হওয়া যাবে না – এইটা আমার পয়েন্ট না, বরং উনার হিরো’রা যে এতোটা ‘বেটা’ না, ‘ম্যানলি’ (মানে, দাড়ি-টাড়িও কমই রাখে মনেহয় 😛 ) না, এই জিনিসটা ফিমেইল রিডারদের কাছে উনার পপুলার হওয়ার একটা কারণও হইতে পারে। (যে, পুরুষ মানেই বাঘ-সিংহ মার্কা পশু না, উদাসও কিছুটা।)

মানে, রবীন্দ্রনাথের ফিমেইল-কারেক্টারগুলার একটা মাস্ট লক্ষণ যেমন ‘মেয়েলি’ হইতে হবে*; আর এইটা যেইভাবে উনারে প্যার্টিয়াকির ‘মহান পুরুষ’ বানাইতে পারছে, হুমায়ূন আহমেদে আইসা এই জেন্ডার-রোল’টা রির্ভাস হয় নাই, বরং এই জিনিসটা একভাবে ‘কোর’ হিসাবেই থাকছে, যার ফলে উনিও ‘রোমান্টিক পুরুষ’ হইতে পারছেন, একটু ‘কম-পুরুষ’ হওয়ার ভিতর দিয়া।

এইটা কইরা (উনার হিরোদেরকে কিছুটা বেকুব বানায়া) পুরুষদের কাছে হুমায়ূন আহমেদ রাইটার হিসাবে ‘বেইট্টা’ হয়া যান নাই, বা সমাজে একজন নারী’র ‘নারী’ হয়া থাকাটা যেইরকম টাফ অইরকম টাফ কইরাও তোলেন নাই; এইরকম ‘মোলায়েম’ হিসাবে দেখানোর ভিতর দিয়া কিছুটা ‘মানবিক’ কইরা তোলারই একটা কাজ করতে পারছেন মনেহয়, যেইটা ‘যে কোন মূল্যে পুরুষ থাকার’-ই একটা ঘটনা। মানে, জেন্ডার-রোলে স্ট্রিক্ট করাটা। (নারী ব্যাপারটাতেও এইটা পাইবেন, বেটাগিরি করতে পারাটা যেন ‘নারী’ হইতে পারা থিকা বাইর হইতে পারা! 🙁 কি স্যাড!) Continue reading

ভাত খাওয়ার কথা

এতোদিনে মনেহয় ট্রেন্ড’টা একটু ঠান্ডা হইছে, তারপরেও ডরে ডরে বলি, পান্তা-ভাত আমার পছন্দের জিনিস ছিল না কখনোই। 🙁 (ঢাকা শহরে ‘ফ্যাশন’ হয়া উঠার পরেও।) গরম ভাতই আমার পছন্দের জিনিস। ভাত ঠান্ডা হইলেই খাইতে ভাল্লাগে না। ভাত হবে গরম-গরম, ভাপ উঠা, ধোঁয়া বাইর হইতেছে, এইরকম। আলু-ভর্তা খাইতে ভাল্লাগে ডাল বা লগে একটা কিছুর ঝোল দিয়া। পেঁয়াজ-মরিচের ভর্তাও আমার পছন্দের জিনিস। ভাজা-মাছও। তবে মাছের ঝোল বেশি পছন্দ। মানে, খাওয়ার তো শেষ নাই দুনিয়ায়। কম-বেশি সব খাবারই ভালো।

আগের দিনের রাতের ভাতরে ‘পান্তা’ না বানায়া বরং হলুদ-পেঁয়াজ-কাচামরিচ দিয়া একটু তেলে ভাইজা বানানো “ডিম-ভাত” নাশতা হিসাবে বেশি পছন্দ আমার। ভাতেরও তো কয়েকটা পদ হয় আসলে। পান্তা-ভাতের চাইতে জাউ-ভাত বেশি খাইছি। আম দিয়া, দুধ দিয়া। একটা রেস্টুরেন্টে (Thai Emerald-এ মনেহয়) আমের সাথে জাউ-ভাত দিয়া মজার একটা ডেজার্ট খাইছিলাম। খুদের চাল (চাল ঝাড়ার পরে যেইটা থাকে, সেইটার কথা বলতেছি আসলে) দিয়া মাটির চুলাতে পোড়া-পিঠা বানায়া মাঠা দিয়া, দই দিয়া খাইছি। চিটাগাংয়ে ভাতের হোটেলে গেলে, বসার লগে লগেই জিগাইতো, সিদ্ধ না আতপ? সিলেটের আখনি যে খিচুরি না এই ডিফরেন্সও তো জানছি খাইতে খাইতেই। খিচুরিও লেটকা’টাই (ঘরোয়া রেস্টুরেন্ট ছাড়া আর কেউ বানায়া না মনেহয়) বেটার শুকনাটার চাইতে। পোলাও, বিরিয়ানি, তেহারি যে আলাদা আলাদা জিনিস, এইটা বুঝানোটাও তো টাফই আসলে।

তো, ভাত যে একটা জাতীয়তাবাদী ঘটনা – এইটা সবচে বেশি মিসিং মনেহয় বাংলাদেশের “আর্ট-ফিল্মগুলাতে”। 🙂 (আমার ভুল হইলে কেউ বইলেন, কোন সিগনিফিকেন্ট সিনের কথা।) [কারণ, যা কিছু ফরেন, তা-ই ‘আর্ট’ আমাদের কাছে! ভাত খাওয়া যেহেতু লোকাল জিনিস, এতোটা আর্ট হইতে পারে না। এখন হইতে পারবে হয়তো কিছুটা, অস্ট্রেলিয়া থিকা সার্টিফিকেট পাওয়ার পরে।] আমজাদ হোসেনের একটা সিনেমা আছে “ভাত দে”, রিমার্কেবল; জাফর ইকবাল আর ববিতার একটা সিনেমা আছে, জাফর ইকবাল হোটেলে ভাত চুরি করতে গিয়া “গণপিটুনি” খায়; “আম্মাজান” সিনেমাতেও মনেহয় ভাত খাওয়ার একটা ঘটনা আছে; মানে, এফডিসির সিনেমাগুলাতে দেখবেন, লোকজন ভাত খাইতেছে। কয়দিন আগে দুইটা বাংলা-সিনেমা দেখছি – ‘ডুব’ আর ‘লাইভ ফ্রম ঢাকা’; ডুবে মনেহয় টিফিন ক্যারিয়ারে ভাত পাঠায় বউ আর প্রেমিকা, লাইভ ফ্রম ঢাকা’তে পরোটা ভাজে নাশতার, ভাত খাওয়ার কোন ঘটনা নাই (মানে, মনে নাই আর কি আমার)। এইখানে আমার পছন্দের উদাহারণ হইতেছে ওং কার ওয়াই, ইন দ্য মুড ফর লাভে অরা খালি নুডুলস আনতে যায় নুডুলসের দোকানে; হ্যাপি টুগেদারেও রান্না-বান্না, খাওয়া-দাওয়া আছে অনেক।… Continue reading