কোজাগরী

#কোজাগরী শব্দটার মিনিং আমি জানতাম না। লোকজন কয়, টিভিতে দেখায়, কোজগরী চাঁদ, #জি_বাংলা টিভি-চ্যানেলে একটা সিরিয়ালও আছে এই নামে। গতকালকে ছিল, এই কোজাগরী চাঁদের রাত। তো, অনলাইনে সার্চ দিয়া দেখলাম যে, এইটার মানে হইতেছে ‘কো জাগর্তি’; এই মিনিংয়ের পিছনে একটা #কাহিনি আছে। [বেশিরভাগ শব্দেরই, বিশেষ কইরা বিশেষণের এইরকম থাকার কথা।] কাহিনি’টা #হিন্দু ধর্মের। [#ইসলাম ধর্মের শব্দও থাকতে পারে এইরকম, #সেক্যুলার-ধর্মেরও…]

দেবী #লক্ষী বিষ্ণুলোক থিকা দুনিয়াতে আইসা মানুষের ঘরে ঘরে গিয়া জিগান, “কে জাইগা আছো?” [এইরকম বাক্য পাইলাম, কবিতার লাইন হইতে পারে এইটা – “নিশীথে বরদা লক্ষী কোজাগর্তিভাষিনী”।] তো কেউ জাইগা থাকলে, উনার ডাকে রেসপন্স করলে তার ঘরে গিয়া সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য, ধন-সম্মান দিয়া আসেন। [আমি অবশ্য মরা’র মতোন ঘুমাইছি গতকালকে।  সন্ধ্যায় খালি বাইর হইছিলাম একটু।] Continue reading

কালাচারাল পলিটিকস নিয়া

এই যে ঘটনাগুলি – শাহাবাগ, মতিঝিল; মুক্তিযুদ্ধ, ইসলাম; ব্লগ, হেফাজত… এই বিষয়গুলা যে বাইনারি অপজিট না এইটা বাংলাদেশে এখন যে কারোরই বোঝার কথা। তারপরও বলা, কারণ পলিটিক্যালি এমনভাবে হাজির আছে যে, সেইটা মনে হইলেও কাউরে দোষ দেয়া সম্ভব না। কালাচারাল ক্রাইসিসটারে পলিটিক্যালি ব্যবহার করতে গিয়াই এই ঘটনা ঘটছে। তার মানে এই না যে, এইখানে কোন কালচারাল ক্রাইসিস নাই। বরং এর পলিটিক্যাল সমাধান অনেকে এইভাবেই করতে চাইতেছেন! জোর কইরা সাংস্কৃতিক অনৈক্যগুলারে চাপা দেয়ার এই যে লিবারাল চেষ্টা, এইটাই পলিটিক্যাল ফান্ডামেন্টালিজমরে আরো জোরালোভাবে সামনে নিয়া আসতেছে।[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

 

অনেক ধরণের সংকট এবং সম্ভাবনাই একটা সংস্কৃতির ভিতরে থাকে। যেমন, এখনকার বাংলাদেশের কথা যদি ধরেন, আপনি বাঙালি হইলে মুসলমান হইতে পারবেন না, হয় নাস্তিক (পড়েন, ৬০ এর কমিউনিস্ট) হইবেন, নাইলে হিন্দু (ইন্ডিয়ার সার্পোটার); এইটারে বলা যাইতে পারে, সিম্বলিক ট্রুথ এর পূজারী। আবার, আপনি মুসলমান হইলে বাঙালি হইতে পারবেন না, আপনি হয় আফগানিস্তান থিকা আইছেন, নাইলে পাকিস্তানে যাইবার পাঁয়তারা করতেছেন। এইটারে বলা যাইতে পারে ইম্পেরিক্যাল ট্রুথ এর মওলানা। এইভাবে কালচারাল ডিফারন্সিয়েশনের জায়গাটা ছড়াইতেছে।

Continue reading

শাহবাগ ৩

শাহবাগ এর ২১ তারিখের ঘোষণার পর এই আন্দোলন আরো বেশি মিডিয়ার এবং আওয়ামী লীগের দখলে চইলা গেছে। এই সম্ভাবনার ভিতর শাহবাগ সবসময়ই ছিলো। কিন্তু শাহবাগ শুরু হইছিলো মিডিয়ার রিয়ালিটির বাইরে (যদিও মিডিয়া এইটারে কব্জা করতে খুববেশি সময় নেয় নাই) এবং সরকারের বিরোধিতায় (যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারে রাজনৈতিক ছাড় দেয়া হইতেছে); আর এখন পরিণত হইতেছে একটা মিডিয়া রিয়ালিটিতে এবং সরকারি আন্দোলনে। এইটারে এই আন্দোলনের রাজনৈতিক ব্যর্থতা হিসাবেই দেখা সম্ভব। আওয়ামী ডিলেমার বাইরে শাহবাগ এর অন্য তেমন কোন রাজনৈতিক অপশন এখনো নাই। থাকাটা সম্ভব যদি শাহবাগ নিজেই একটা পলিটিক্যাল আইডেন্টিটি হয়া উঠতে পারে। [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

অবশ্য শাহবাগের রাজনৈতিক মিত্র এবং শত্রু সবাই এইটাই চাইছে যে, শাহবাগ যেন বর্তমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার বাইরে কোন অবস্থান তৈরি করতে না পারে। কারণ, শাহবাগের অবস্থান এমন কিছু রাজনৈতিক প্রশ্নরে সামনে নিয়া আসে যারে রাজনৈতিক দলগুলা সরাসরি ডিল করতে প্রস্তুত না, এইটা উনাদের রাজনৈতিক সংকট তৈরি করে। এর মধ্যে ত অবশ্যই অন্যতম, মুক্তিযুদ্ধ এবং ইসলাম। এইটা শুধুমাত্র শাহবাগ-ই না, বাংলাদেশের ইন্টেলেকচুয়ালিটিরও মূল জায়গা।

Continue reading

শাহবাগ

শাহবাগ কই গেছে?

শাহবাগ শাহবাগেই আছে। কিন্তু শাহবাগ এখন একটা রিডিফাইন্ড আইডেন্টিটি। এর যে ইন্টেলেকচুয়াল কন্ট্রিবিউশন সেইটা বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থারই একটা ‘উল্লম্ফন’ – ‘বিপ্লব’ অর্থে না নিতে পারলেও, ‘ব্যতিক্রম’ অর্থে ত অবশ্যই। এইটা ‘ব্যতিক্রম’ কারণ বর্তমান রাজনৈতিক যে সম্ভাবনাগুলা ছিল এর প্রায় বাইরে গিয়া এই ঘটনা ঘটতেছে। কেউই ভাবতে পারেন নাই যে, যারা প্রথম আলো পড়ে এবং প্রথম আলোর সমালোচনা করে, যারা হিন্দি সিরিয়াল দেখে এবং এইটা নিয়া বিব্রত থাকে, যাদের বাচ্চারা হিন্দিতে ডোরেমন দেখে এবং এইটার বিরোধিতা করে – মানে, ক্যাটাগরিক্যালি ঢাকা শহরের এবং বাংলাদেশের যারা ‘ডমিমেন্ট মাইনরিটি’ তারা বাসের আলাপ, চাকরির ভয়, ব্যবসার রিস্ক, ব্যক্তিগত বিষাদ পার হয়া ‘অ্যাক্টিভিজম’ এ নাম লিখাইতে পারে। এই সম্ভাবনা কেউ ইমাজিন করছেন বইলা আমি দেখি নাই।  [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

তো সেইটা যখন ঘইটাই গেছে, আমাদের ইন্টেলেকচুয়াল বিহ্ববলতা কাটতে পারে নাই। আর এখন যখন একটু একটু কাটতে শুরু করছে আমরা জোর কইরা এইটারে একটা ‘সম্ভাবনা’র ভিতর ঠেইলা ঢুকাইতে চাইতেছি। আর আবশ্যিকভাবেই ‘বিপ্লব’ কোন সম্ভাবনার ভিতর থিকা পয়দা হইবো না। ‘বিপ্লব’ সবসময়ই একটা ‘অসম্ভব’ ঘটনা।

Continue reading

সাহিত্য ও রাজনীতি: আবদুল মান্নান সৈয়দ সম্পাদিত ‘ফররুখ আহমদের শ্রেষ্ঠ কবিতা’র প্রেক্ষিতে

‘ফররুখ আহমদের শ্রেষ্ঠ কবিতা’ আমি প্রথম পড়ি ১৯৯৩ সালের দিকে। ফররুখ আহমদ মারা যান ১৯৭৪ সালের ১৯শে অক্টোবর। আর বইটা প্রকাশিত হইছিল ১৯৭৫ সালের জুন মাসে, ফররুখ স্মৃতি তহবিল এর পক্ষ থেকে। আবদুল মান্নান সৈয়দ সম্পাদনা করছিলেন। বইটা পড়ার মাধ্যমেই আমি কবি ফররুখ আহমদরে আবিষ্কার করি।

আবদুল মান্নান সৈয়দ

আবদুল মান্নান সৈয়দ

 

‘ফররুখ আহমদের শ্রেষ্ঠ কবিতা’ বইটা যখন প্রকাশিত হয়, আমি ওই সময়টায় বাংলাদেশের রাজনৈতিক অবস্থার কথা ভাবি। স্বাধীনতার পর সেক্যুলার ধারণা তখন রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত এবং প্রশ্নাতীত একটা ব্যাপার; এমনকি মনে হয়, তখনকার রাজনৈতিক এবং দার্শনিক যে চিন্তা, সেইটা মর্ডানিটির সাথে কোন মোকাবিলায় যাওয়ার সামর্থ্য রাখে নাই, বাংলাদেশে। সেই পরিস্থিতিতে, ‘ইসলামী চেতনার পুর্ণজাগরণের’ তকমা লাগানো কবি’র শ্রেষ্ঠ কবিতা সম্পাদনা করা এবং প্রকাশ করাটা অনেকবেশি সাহিত্যিক একটা ঘটনা, কিছুটা রাজনৈতিক রিস্কসহ  –  এইভাবেই আমি দেখি।

আসলে সাহিত্যের সাথে রাজনীতির সর্ম্পকটা কি রকম? যে কোন সাহিত্যই সরাসরি অথবা তার দূরবর্তী ধারণায় কোন না কোন রাজনীতিরে সমর্থন দেয়, আবার একইভাবে অনেক সাহিত্যরে রাজনৈতিক প্রয়োজনে ব্যবহার করা সম্ভব আর সেইটা হয়ও। যেমন ’৬০ এর দশকে রবীন্দ্রনাথরে আশ্রয় করছিল বাংলাদেশের মধ্যবিত্ত সমাজ, কিংবা সামরিক সরকারের বিরুদ্ধে শামসুর রাহমানের কবিতা অথবা আল মাহমুদ এর জামাত-পন্থী হয়া উঠা, এছাড়াও কমিটেড কমিউনিস্ট লেখকরা তো ছিলেন বা আছেনও হয়তো। তার মানে, রাজনৈতিক মতাদর্শগুলি বা পরিস্থিতির সাথে সাহিত্যের একটা সর্ম্পক আছে। সাহিত্য যেমন রাজনীতিরে সার্পোট অথবা অপোজ করে, রাজনীতিও সাহিত্যরে ব্যবহার করে। কিন্তু এই ব্যবহার সর্ম্পকে লেখক নিজে কতোটা সচেতন –  এই প্রশ্নটা সম্ভবত আরো গুরুত্বপূর্ণ হয়া উঠতেছে।[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

ফররুখ আহমদ এর রাজনৈতিক সচেতনতা কি রকম ছিল? এইখানে বরং ফররুখ আহমদ এর কবিতার জায়গাটারে আবদুল মান্নান সৈয়দ কিভাবে দেখছেন সেইটা নিয়াই বলি। ১৯৮১ সালে তিনি চল্লিশের দশক এর বাংলা-কবিতার ধারায় ফররুখ আহমদরে ব্যাখ্যা করছেন এইভাবে: “প্রায় পাশাপাশিই চলেছিল ফররুখের স্বতন্ত্র সংস্কৃতিচেতন কবিতার ধারা। কিছুকাল আগেও আমি এ ধরণের কবিতা বলতে ‘ইসলামসচেতন’ শব্দ ব্যবহার করেছি। এখন ব্যবহার করছি ‘স্বতন্ত্র সংস্কৃতিচেতন’ কথাটি। আমার বিবেচনায়, এই শব্দগুচ্ছ প্রয়োগ করলে সত্যের নিকটতর হওয়া যায়। কেননা ফররুখ ব্যবহৃত ইসলামি ঐতিহ্য সর্বক্ষণই বাঙালি-মুসলামানের স্বাত্যন্ত্রিক ধর্ম-সাংস্কৃতিক পটে স্থাপিত।” (পৃষ্টা: ৫৯, ফররুখ আহমদ: জীবন ও সাহিত্য, আবদুল মান্নান সৈয়দ, সূচীপত্র, ২০০৯)

Continue reading