কবিতা: জানুয়ারি, ২০১৮

বিকাল

এই বিকাল ভালো
গাছের পাতার ভিতর দিনের শেষ আলো

লিভিং অ্যানিমেল আমরা
বেল বাজায়া জানান দিতেছে রিকশাওলা
হর্ন দিতে দিতে বলতেছে মোটরসাইকেল, সিএনজি অটোরিকশা,
‘সরেন, সরেন… আসতেছে সন্ধ্যা’

এই বিকাল ভালো,
ভালো হাসতে হাসতে বলতে পারা, যাই গা…

 

ফলিং এঞ্জেল

“আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু বি আ মনস্টার এগেইন” – অ্যা মনস্টার সেইড টু মি। রিপিং অফ হার ক্লোথস, শি ওয়াজ ক্রাইয়িং। ইন অ্যা বিজি ইভিনিং স্ট্রীট। পিপল ওয়ার পাসিং বাই। মনস্টার ওয়াজ ইন বিটুইন আস। ডেসপারেড টু বি অ্যা মনস্টার, মনস্টার ওয়াজ সেয়িং – “আই ডোন্ট ওয়ান্ট টু বি অ্যা মনস্টার এগেইন!”

 

জুতা

আমার এক জোড়া জুতা
তোমার এক জোড়া জুতার পাশে

বইসা আছে, কোন সম্পর্ক ছাড়া… Continue reading

গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাকের রিয়ালিটি আর বিনয় মজুমদারের ফ্যাণ্টাসি

ইন আওয়ার সেন্স অফ রিয়ালিটি, ফ্যান্টাসি ইজ মোর রিয়েল দ্যান দ্য রিয়ালিটি।

‘কনর্ভাসেশন উইথ গায়ত্রী চক্রবর্তী স্পিভাক’ (সিগ্যাল, ২০০৬) বইটার একদম শেষদিকে (পেইজ ১৭০ – ১৭৩) পারসোনাল আলাপে বিনয় মজুমদার’রে নিয়া গায়ত্রী’রে জিগাইতে পারছিলেন ইন্টারভিউয়ার। খুববেশি কথা হয় নাই। ইন্টারভিউয়ার অনেক হেসিটেট করতেছিলেন। গায়ত্রী মনে হইছে বরং বলতেই চাইতেছেন কাহিনিটা; যে, দেখেন এইখানে কোন কাহিনি নাই! বিনয় মজুমদারও কইছেন কয়েকটা ইন্টারভিউ’তে যে, এইখানে তেমন কোন কাহিনি নাই আর তারপরে হাসছেন। এই হাসিটারেই নিতে পারছি আমরা। গায়ত্রী যতোই রিয়ালিটি’টারে বলতেছেন বিনয়ের ফ্যান্টাসিটা ততই রিভিল হইতেছিলো যেন আরো।

গায়ত্রী কইছেন যে, দেখেন, উনার সাথে আমার কখনোই তেমন কোন কথা-বার্তা হয় নাই, প্রেম হওয়া তো দূরের কথা! উনি একটাকিছু ইমাজিন কইরা নিছেন, আমার নামটা বা এগজিসটেন্সটারে কল্পনা কইরা নিছেন। এইখানে আমি তো নাই! এমনকি বিনয়ও কখনো দাবি করেন নাই যে, উনাদের প্রেম আছিলো। কইছেন, বিনয়ের হাইট আছিলো ৫ ফুট ৩ ইঞ্চি আর গায়ত্রী আছিলেন ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি – এইটুকই। খালি একটা বইয়ের কিছু কবিতা, তারে ভাইবা লেখা, যে আসলে শে না, তাঁর একটা ভাবনা। গায়ত্রী এইভাবে দেখছেন, বলছেন। যেইটা খুবই ট্রু।

বিনয়ের দাবিও ওই দূর থিকা দেখা-ই। কিন্তু এই দেখাটারে উনি রিয়ালিটি ভাবছেন। কিছু যে ঘটছে – এই দাবি উনারও নাই। বিনয় গায়ত্রী’রে নিয়া কবিতা লিখছেন। দাবি এইটাই। এখন এই গায়ত্রী যে ইমাজিনারি কিছু কিনা সেইটা নিয়া কথা বলেন নাই খুবএকটা। বলছেন, ওই যে – উনি, উনারে নিয়া লিখছি আমি। তো, যারে নিয়া লেখছেন, শে তো জানে না কিছু।

আবার অনেক সময় এইরকম হয়, আপনি কাউরে নিয়াই লিখতেছেন। কিন্তু সেইটা আসলে আরেকজনের কপি, তারে; মানে, যারে লিখতে চাইতেছেন সে/শে আরেকজনের কথা-ই মনে করাইলো। ধরেন, আরেকটা বনলতা সেন বা কাবজাব একটাকিছুই হইলো। বা একজেক্ট যেই রিয়ালিটি সেইটা লেখা তো কখনোই পসিবল না। Continue reading

কবিতা: ডিসেম্বর, ২০১৭

আমাদের সময়ের হাঙরের পেটে

সময়ের অনেক দূরে,
আরেকটা সময়ের কাছে গিয়া
বইসা ছিলাম, তখন সন্ধ্যা

আরেকটা সময় আইসা এই সময়টারে কইতেছিলো,
‘চলো, যাই গা…’

গুটিশুটি পায়ে, খালি হাঁটতে শিখছে
এইরকম কয়েকটা কুত্তার বাচ্চাদের হাঁটার মতোন
আসতেছিলো কুয়াশা

রাস্তায় রিকশা, প্রাইভেট কার, মাইক্রোবাস
সময়ের সাথে পাল্লা দিয়া চলে যাইতেছিলো

আরেকটা সময়ের কল্পনা ফেড হয়া আসতেছিলো

এই সময়ের নদীর তীরে এতো এতো দৃশ্য, ঘটনা
আমাদের ধইরা রাখতেছিলো

দুইহাত দিয়া ছিঁড়ার পরে গরম গরম ডাইলপুরির ভিতর থিকা
বাইর হয়া আসতেছিলো গরম হাওয়া…

আরেকটা টাইমের অনেক কাছে গিয়া আটকায়া ছিলো এই টাইম’টা

আর ফিরা আসতেছিলো, গুটায়া যাইতেছিলো
শীতের বাতাসের ভিতর
খালি হইতে থাকা রাতের রাস্তার মতোন…

দোকানগুলি নামায়া ফেলতেছিলো শাটার

সময়ের অনেক দূরে
আরেকটা সময় মুছে যাইতেছিলো

আমাদের সময়ের হাঙরের পেটে
জাইগা উঠতেছিলাম আবার আমরা

 

সকল বকুল ফুল

শিউলি আইসা বলে, ‘এখন বকুল
ঝইরা পড়ার টাইম তোমার।’

‘গ্যারাজের ছাদের উপর কুয়াশা-ই যেন আমি
আরো কিছু শীত, সকালবেলার’

বইলা বকুল পড়তে থাকলো বাতাসে
যেন ঘুমাইলো আবার।

 

আমার জুতা

খাটের তলা থিকা এক জোড়া হাত আইসা
নিয়া যাইতেছে এক জোড়া কালা জুতা

হাত’টা দেখি খালি, চোর’টারে দেখি না

জুতা জোড়া খাটের তলা থিকা বাইর হয়া
চলে যাইতেছে দরজার দিকে

আমি দেখি আর বলতেও পারি না, কোন কথা

জুতা জোড়া চলে যাইতেছে আমার

আমার ঠ্যাংয়ের মেমোরি নিয়া… Continue reading

কবিতা: নভেম্বর, ২০১৭

ভূতের মন

তোমার ভূতগুলি জাইগা উঠলো আবার
অরা খাইয়া ফেললো এগজিসটেন্স আমার

আরেকটা ভূত হইয়া আমি তোমার কাছেই থাইকা গেলাম

 

নর্থ কান্ট্রি গার্ল

মেটাফোরের মতোন
গইলা যাইতেছিলো শে,
রিলিভেন্ট হয়া উঠতেছিলো সবকিছুর সাথেই

যেমন রইদ, যেমন বৃষ্টি, যেমন বাতাস, যেমন আলো আর আন্ধার…
আর জানতো শে
এইসবকিছুই মিথ্যা

একটা মিথ্যা থিকা দৌড়ায়া দৌড়ায়া শে যাইতেছিলো
আরেকটা মিথ্যার কাছে,
ঝাপসা হয়া মুছে যাইতেছিলো একটার কাছে আরেকটা

আরেকটা আর আরেকটা আর আরেকটা

বর্ডার দিয়া পাচার হয়া আসা রাতের গরুগুলা
ঢুকে যাইতেছিলো দিনেরবেলার রিয়ালিটিতে তাঁর

‘টাইমগুলি আমি পার কইরা দিবো,
এইসব কনফেশনাল ট্রুথের ভিতর দিয়া’

এই কথা কইতে কইতে
উত্তরের দিকে যাইতেছিলো শে দখিনের কথা ভাইবা

Continue reading

কবিতা: অক্টোবর, ২০১৭

আন-নোন

কারে যেন হারায়া ফেলবো আমি,
এই ভাইবা হাঁটতে থাকি দুইটা মন নিয়া সাথে;

আমি আগাই, ওরা পিছায়
ওরা আগায়, আমি পিছাই
সাথে সাথে হাঁটি
হাঁটতে হাঁটতে ভাবি

কারে জানি হারায়া ফেলবো, কারে জানি কখোন
হারায়া ফেলবো আমি…

 

ভারতনাট্যম

আবার আসছেন প্রেম;

আইসা আমারে কইলেন, ‘আপনি নয় মণ ঘি আনেন।
আমি নাচবাম।’

 

রাইটার্স ব্লক

হেমিংওয়ের চা খাওয়া হইলো না

সলঝেৎসিনের সিএনজি’তে চড়লাম,
কবুতর নিয়া তিনটা ছবি তুলছেন উনি;

দস্তয়েভস্কি রিকশা চালাইতেছিলেন,

উঁচা বিল্ডিংয়ের জানালা দিয়া হাইকোর্ট দেখতেছিলেন ওরহান পামুক

রাস্তার অন্য পাশ দিয়া হাঁটতেছিলেন জেমস জয়েস

যাওয়ার সময় একটা ধাক্কাই দিলেন আমারে এলিজাবেথ বিশপ

একটা গলির ভিতর দিয়া হাঁটতে হাঁটতে আসতেছিলেন ববকাট চুলের শিম্বোরস্কা

‘ঢাকা শহরটা ভইরা গেছে বিদেশি দিয়া, বুঝছো?’ কইতেছিলেন সুসান সনট্যাগ,
কিছুটা প্লেফুলনেস আর বাদবাকি সিরিয়াসনেস নিয়া…

 

Continue reading