কবিতা: সেপ্টেম্বর, ২০১৭

পতেঙ্গা

তুমি কথা বলতে পারো, কিন্তু সেই কথা সাগরে হারায়া যায়
কোথাও কোন একটা ফুলে, গাছের পাতায়, সূর্যাস্তে তোমার চোখ আটকায়
স্মৃতিগুলি তুমি মনে রাখতে রাখতে একদিন স্বপ্নের মতোই ভুলে যাবা
যা কিছু আছে বইলা থাকে – থাকে না আর;
যা কিছু’র না থাকতে থাকায় অভ্যস্থতা আসে তোমার
তাদের কথা তুমি বলতে পারো,
বিয়ারের গ্লাসে বুবুদ্ব উঠে, উপচায়া পড়ে;
কিন্তু তারা হারায়া-ই যায় শেষে, সাগরে…


#পকেটমার
 #আড্ডা #ব্যথা #মুরাকামি #কাব্য #ভুল #লাশ #ঠান্ডা

একবার এক পকেটমারের সাথে আলাপ হইছিলো, এক আড্ডায়। সে কইতেছিলো, ধরা পড়ার পরে মাইর খাওয়ার সময় প্রথম কয়েকটা কিল-ঘুষি-লাত্থিতে মারাত্মক ব্যথা লাগে। পরে শরীরটা আটা-ময়দার মতো হইয়া যায়। মাইর পড়ে ঠিকই শরীরে। কিন্তু সেনসেশন আর কাম করে না। অনেক দূরের ব্যাপার মনেহয়। তো, একই রকমের কথা হারুকি মুরাকামিও কইছেন একটু কাব্যিক কইরা। আমি খালি একবার ভুল কইরা ভাবছিলাম, লাশটারে যে ওরা বরফ দিয়া রাখে, লাশটার কি ঠান্ডা লাগে না?


কুরবানি

‘তোমারে দেখলে আমার ভয় করে!’ বইলা শে আমার ঘাড়ে একটা কোপ দিলো। আমি দুইভাগ হইলাম। শে কয়, মরলা না তবু তুমি! কাইটা টুকরা টুকরা করবো আমি তোমারে! ষোল থিকা বত্রিশ, চৌষট্টি, ছিয়ানব্বই টুকরা হইলাম। তারপর শে তাল তাল মাংসের দিকে তাকাইলো। কইলো, ‘তোমারে দেখলে আমার ভয় করে!’ মাংসগুলি আমার তখনো হাইসা উঠতে চাইলো একটু।

Continue reading

কবিতা: অগাস্ট, ২০১৭

কুয়ার ব্যাঙ

একটা কুয়ার ভিতর
বইসা ভাবি, আরেকটা
কুয়ার ভিতর
পানি
কতো কম!

মানে, আরো আরো কুয়া
আছে তো দুনিয়ায়

আরো আরো পুকুর আর নদী
আরো আরো ব্যাঙ

একটা ব্যাঙ হইয়া আমি
আরো আরো ব্যাঙের কথাই
ভাবলাম; ভাবলাম – সাপ আর
বেজির দুনিয়ায়
আমরা যে ব্যাঙ আর
আমাদের কুয়ার ভিতর
পানি যে কম

আমরা তো জানতাম-ই

আমরা জানতাম, আমাদের জানা-বোঝা
নিয়া যদি আমরা চুপ কইরা
থাকতাম, যদি ভাবতাম –
আমি ব্যাঙ বইলাই
তুমি তো হইতে পারো
ইন্দুর কোন, অথবা
ঈগল পাখির ঠ্যাং…

 

স্পেইস অ্যান্ড টাইম

বৃষ্টির পরে রাস্তায়, গুলশানের শ্যুটিং ক্লাবের গলিতে, গাবতলী বাসস্ট্যান্ডের চিপায় থাকা ডাইলের মৌ মৌ গন্ধের বাতাস…
১৯৯৫-এর মনেহয়

 

ইয়েস্টারডে

কালকে তোমার কথা ভুইলা যাবো আমি
কালকে থিকা তোমার কথা আর ভাববো না

কালকে আমি জানবো আবার,
তুমি জাস্ট একটা ভাবনা-ই ছিলা আমার…

কালকে’টা আসতে আসতে
চইলা আসছিলো আজকে পর্যন্ত

তারপরে, থাইমা গেলো

 

রাতের রেলস্টেশন

তুমি নাই,
তোমার না-থাকার পাশে থাকতেছে রেললাইন
মসজিদে নামাজ শেষে মাথার নিচে ব্যাগ রাইখা শুইয়া থাকা কয়েকটা মানুষ;
প্লাটফর্মে বস্তা, কফি খাইতে থাকা টি-শার্ট, ইউনিভার্সিটি থিকা পাশ, প্রাইভেট চাকরি, লোনলি ব্যাকপ্যাক, বোরকা-পরা চোখ পিট পিট কইরা তাকায়া থাকা কিশোরী বউ, ইয়াং মৌলবী’র পাঞ্জাবি
হেডফোন কানে দিতে পাইরা হাসিখুশি মস্করা করতে থাকা দুইজন মাগি,
আরেকজন মিউট হেডফোন’রে কইলো,
‘তরে ত আমি লাগামুই না…’
আর সেই হেডফোন যেন শুনেই নাই কিছু,
ভ্যানগগের কাটা কান হাতে নিয়া দৌড়ানির সিন ভাবতেছে মনেহয়, বলতেছে:

তুমি নাই

Continue reading

কবিতা: জুলাই, ২০১৭

মিথ্যাবাদী রাখাল

মিথ্যার নদী সাঁতরাইয়া পার হইলাম
মিথ্যার পাহাড়ে উইঠা বইসা থাকলাম
মিথ্যার সাগর-পারে বইসা মিথ্যার সূর্যরে কইলাম, নিইভা যান…

মিথ্যার বৃষ্টিতে মিথ্যার রাস্তাতে হাঁটলাম

মিথ্যার সকালবেলায় নিজেরে একটা মিথ্যা বানায়া জাগায়া তুললাম…

মিথ্যার বাঘ আইসা বলবেন আমারে, ‘মিথ্যাবাদী রাখাল!
আরো অনেক অনেক মিথ্যা আপনি বলেন আমারে
যেন তারা সত্যি হয়
এইরকম সুন্দর সুন্দর মিথ্যার মতোন!’

 

যে কোন কিছুই

অ্যাভারেজ একটা দিনের শেষে অ্যাভারেজ একটা সন্ধ্যা

অ্যাভারেজ একটা বার, ঢাকা শহরের
অ্যাভারেজ কোন ড্রিঙ্কস
মানে যা যা হয় আর কি, যা যা হইতে পারে আর কি…

‘সবকিছুই অনুমান কইরা ফেলা যায়, বুঝছিস?’,
বিচার কইরা যাইতেছে পাশের টেবিলের কয়েকটা কিশোর মদখোর
আর বলতেছে অদের অ্যাভারেজ প্রেমিকাদের কথা…

অ্যাভারেজ টিভি’তে বাজতেছে অ্যাভারেজ হিন্দি গান

অ্যাভারেজ একটা শাদা কাপড়ে
লাল সুতা দিয়া করা অ্যাভারেজ একটা কাজ
অ্যাভারেজ একটা মেমোরি’র
অ্যাভারেজ একটা লাইন
অ্যাভারেজ একটা হলুদ দেয়ালে টানানো:
‘বন্ধু, ভুইলো না আমায়!’

অ্যাভারেজ কোন নাটকের অ্যাভারেজ কোন সিন

অ্যাভারেজ রাস্তায় অ্যাভারেজ বৃষ্টির পানি
অ্যাভারেজ কিছু প্রেমের কবিতার মতোন
শুকায়া যাবে যারা সকালের রইদে
অ্যাভারেজ আরেকটা দিনের ভিতর

অ্যাভারেজ কিছু টাইম, কথা-বার্তা, হল্লা-চিল্লা…

কে যে কার কথা শুনতেছে
কে যে কেউ কেউ হইয়া বইসা আছে

আমাদের অ্যাভারেজ মন, অ্যাভারেজ সেই কথা যেন জানতেই পারতেছে না

অ্যাভারেজ কোন প্রেমিকের অ্যাভারেজ কোন প্রেমিকার রেফারেন্স ছাড়া…

Continue reading

কবিতা: জুন, ২০১৭

লাস্ট ক্যাকটাস

অহেতুক একটা
ইল্যুশনের মতোন
পইড়া আছি আমি
রিয়ালিটির দরজার পাশে
তোমার

বলবা তুমি,
মরা ক্যাকটাস
ফেলে যাবো এরে,
নিয়া গিয়া কি লাভ!
কই রাখবো এরে?
কেন নিবো? হোয়াই?

অহেতুক একটা
ক্যাকটাসের মতোন
হারায়া গেছি আমি
দেখার দুনিয়া থিকা
তোমার

 

ব্রেকাপ

নদীর পাড়ে, ভিজা মাটিতে
তোমার নাম লিইখা রাখি
তারপর তাকায়া থাকি
তোমারে দেখি

জোয়ারের পানিতে ভাইসা গেলা যখন
তখন হয়া রইলা পানি পানি

তুমি কইলা, জল
আনিতে আমি আর যাবো না
যমুনা’তে

Continue reading

মুর্হূত আর স্মৃতিগুলি – ২০১৬

—————————

।। আমরা না আমরা ।। হ্যামলেট ।। ঞমপজদ ।। শেয়ালের লেজের মতোন এক নিরবতার কাছে ।। মেমোরি ।। বিভিন্ন বাণী ।। পাখি গান গাইতেছিলেন ।। আমার কথা ।। মোতিঝিল ।। ওয়ান লাইনার ।। অভাব ।। ইট বিছানো রাস্তা ।। পি.জি. হসপিটাল ।। হোলস ।। অনেক ট্রাই করার পরে ।। হাজারো খায়েশি অ্যায়সি… ।।  রেইন, রেইন ।। সুগার কেইন ।। ফ্যামিলি ।। ইলাসট্রেশন ।। পুরানা দিনের গান ।। ইল্যুশন ।। শরত হইলো আরেকটা বসন্ত, একটু লাউড আর কি… ।। ভাষা আন্দোলন ।। সকাল নয়টার রইদ, শরতের ।। শরতের বাতাসে যেই মিথ্যা কথাগুলি আসে ।। কাউন্টারফিটের ভাবনা ।। ইগো ।। একটা ভয়েড আসে ।। ইউ আর মাই সানশাইন ।। চোরের কাহিনি ।। জানা ।। গান, শহর, শীত, সন্ধ্যা ।।  নিয়ার ফিউচার ।। টেক্সচুয়াল ।। মন-পাখি।। নভেম্বরের সন্ধ্যা ।। মর্হূত আর স্মৃতিগুলি ।।

—————————

 

 আমরা না আমরা

‘পরকালে তুমি আমাদের হইও’
পরকালে তুমি থাকবা ত?
মানে, পরকাল তো আছে একটা, তাই না?
তুমি আর তোমার পরকাল থাইকো কিন্তু…
তখন আমরা না আমরা আমরাই থাকবো
আর কাউরে দেখবো না
আর যেহেতু দেখবো না
অরা নাই, আমরাই থাইকা যাবো তখন
আমরা আর আমরা
মানে, আমি-ই তো
আমি আর তুমি যেই আমরা, তারা;
সেইরকম হবে ব্যাপারটা, বুঝছো…
ফিউচাররে ঠেলা দিয়া পরকালে
নিয়া যাবো আমরা…
পরকালেও দেইখো থাকবো কিন্তু আমরা,
ঠিকাছে না? হুমম…

 

Continue reading