মি. কফি আর মি. ফিক্সিট – রেমন্ড কার্ভার।

 

আমি কিছু দেইখা ফেলছিলাম। আমি আমার মা’র বাড়িতে গেছিলাম কয়েকদিন থাকার লাইগা। কিন্তু যখন আমি সিঁড়ির উপ্রে উঠলাম, আমি তাকাইলাম আর শে সোফাতে বইসা একটা লোকরে কিস করতেছিল। এইটা ছিল গরমের সময়। দরজাটা খোলা ছিল। টিভি চলতেছিল। এইটা এইরকম একটা জিনিস যা আমি দেইখা ফেলছিলাম।

আমার মা’র বয়স পয়ষট্টি। শে সিঙ্গেলস ক্লাবের লোক। তারপরও, এইটা ছিল বেশ কঠিন। রেলিংয়ে একহাত দিয়া আমি দাঁড়ায়া ছিলাম আর দেখতেছিলাম লোকটা তারে কিস করতেছে। শেও তারে পাল্টা কিস করতেছিল, আর টিভিটা চলতেছিল তখন।

জিনিসগুলি এখন বেটার। কিন্তু আগের দিনে, যখন মা আমার খোঁজ-খবর নিতো না, আমার চাকরি ছিল না। আমার বাচ্চাগুলি ছিল বদমাইশ, আর আমার বউটা বদমাইশ আছিলো। শেও আমার কোন খোঁজ-খবর নিতো না। শে যেই বেটার খোঁজ-খবর রাখতো সে আছিলো একটা বেকার অ্যারো-স্পেইস ইঞ্জিনিয়ার। ওই বেটার সাথে বউয়ের দেখা হইছিল AA’র  মিটিংয়ে। সে ছিলো আরেকটা বদমাইশ। Continue reading

ফিরে এসো

 

কি যে ঝামেলা! কোনটা যে ম্যানেজ করি! ঘর ঠিক করতে গিয়া চাকরি করতে পারি না, চাকরি করতে গিয়া আবার এমবিএ করতে পারি না। পুরা উল্টা-পাল্টা একটা ব্যাপার। কোনকিছুরই রুটিন ঠিক করা যায় না। বৃহস্পতিবার রাতে গাড়ি নিয়া বাড়িতে আসছি। বাড়িতে আইসা আরো উল্টা-পাল্টা ব্যাপার। আরো ঝামেলা আইসা জড়ো হইছে। কথায় কথায় আমার মেজাজ খারাপ হইয়া যায়। ভ্রু না কুঁচকাইয়া কথাই কইতে পারি না। এইটা দেইখা বউয়ের আরো চেত উঠে। কয়, ভ্রু কুঁচকাচস কেন? নরমালি কথা বলতে পারিস না! আমারও চেত উঠে। যেইটা আমি বলতে চাই না, সেইটা আমি বলতেই চাই না। একটা জিনিস আর্টার করার বিপদ তো আছে। না-বলার ভিতর দিয়া কখনোই কোন ঘটনা ঘটে না, ঘটনা ঘটতেই শুরু করে যখন আমরা কথা বলতে শুরু করি। তখন সেইটা আর কথা থাকে না, ঘটনাও হইয়া উঠে আরেকটা ঘটনা। আমি বলতে না পাইরা চোটপাট করি। তখন আমার ছোট মেয়ে আমার হাত ধইরা রাখে। বড় মেয়েটা ভয় পাইয়া চোখ নামায়া রাখে। আমি জানি ওদের সামনে এইসবকিছু করা ঠিক না তাইলে ওরাও জানবে যে, ফ্যামিলি কতো ভয়াবহ একটা জিনিস। মানুষ হিসাবে আমাদের দায়িত্বই হইলো কিছু ইল্যুশন’রে স্ট্যাবল রাখা। এইজন্য আমি কথা না কইয়া চুপচাপ থাকার ট্রাই করি। তারপরও বউ তার চেত কমাইতে পারে না। একটু পরে পরেই গরম তাওয়াতে পানি ছিটা দিয়া দেখে আমি এখনো গরম আছি কিনা। আর কিছু কইলেই আমি ছ্যাৎ কইরা উঠি। কিন্তু কেন যে চেইতা আছি এইটা শে বুঝতে পারে না। আমিও যে ঠিকঠাকমতো বুঝতে পারি সেইটাও ত না। যেহেতু জামাইয়ের পজিশনে আছি, সেই কারণে হয়তো কোন কারণ ছাড়াই চেত কইরা থাকা যায়। মানে, এখনো পসিবল।     Continue reading

দোকানের লোকটা আমার ভাই

 

আমার যে তাড়াহুড়া আছে দোকানের লোকটা এইটা বুঝতেই ছিল না। লোকটার বয়স পঞ্চাশ-টঞ্চাশ হবে। এই বয়সে আসলে মানুষ এমনিতেই স্লো হয়া যায়। তারপরও মনেহয় নতুন। এইটা একটা চেইনশপ, কনফেকশনারি’র। স্ট্যটাস আছে একটা দোকানটার। আমি আগেও আসছি এইখানে। একটা কেক, দুইটা চকলেট পেস্ট্রি আর কিছু বিস্কিট কিনলাম। রাস্তার মধ্যে গাড়ি দাঁড়া করাইয়া আসছি, কোনসময় না ট্রাফিক পুলিশ ধরে, এই চিন্তা আছে। তারপরে অফিস থিকা বাইর হইতে দেরি করছি। এইটা ছাড়া আর টাইমও নাই এইসব জিনিস কিনার। বুঝলাম যে টাকা দিলে ভাংতি দিতে আরো দেরি করবে। এইজন্য জিগাইলাম, ভাই কার্ড নেন তো? উনি কন যে, না, ক্রেডিট কার্ড নেই না। আমি কইলাম, তাইলে ডেবিট কার্ড নেন? উনি কথা না কইয়া হাত বাড়াইয়া দিলেন। দোকানে আরো একজন লোক আছে, কাস্টমার, সবুজ রংয়ের স্যুট পড়া, টাইও আছে গলায়, শাদা শার্ট। বয়স দোকানদারের মতোই। একটু পরে পরে চোখ পিট পিট কইরা আমারে আর দোকানের লোকটা’রে দেখতেছে। লোকটার চোখে মুখে দুনিয়ার কনফিউশন। কি যে করতেছে, আল্লা জানে! উনার পিছে একটা ইয়াং পোলা, কি কি জিনিস জানি গুছাইতেছে; সেও তার ভয় দেইখা মজা পাইতেছে। লোকটা একটু পরে কাঁপতে কাঁপতে মার্চেন্ট কপি’তে সাইন করার লাইগা দিলো, যেহেতু তাড়াহুড়া আছে আমি অ্যামাউন্ট না দেইখাই সাইন কইরা দিলাম। তারপরে সে হ্যাপি হয়া আমারে বিলটা দিলো। বিলটা দেইখা তো আমি পুরা আকাশ থিকা পড়লাম। মানে, ফ্রম নো হোয়ার। আমি হ্যাজেলনাট কফি কোনসময় খাইলাম! ব্রেড কই নিলাম! এইটা কি!! মিয়া কাজ করতে জানেন না, খামাখা ঝামেলা করেন। মানে, মেজাজ পুরা বিলা হয়া গেলো! যাচ্ছে তাই কইতে লাগলাম। কারণ আমার ত টাকা আছে, তার উপরে সে ভুল করছে, আমার রাইট আছে ঝাড়ি দেয়ার, এই রাইট যে আছে, এইটা ভাইবা আমার ঝাড়ি’র জোর আরো বাইড়া যায়! যেহেতু আমি ঢাকাতে থাকি, সোবার ভাব নিয়া থাকা লাগে, গায়ে ত হাত তুলতে পারি না, মারামারিও করতে পারি না। এইজন্য কথার উপর দিয়াই পার করতে হবে। Continue reading

ছেলে-কবিদের গল্প অথবা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো’র ড্রিম

মনে মনে যাঁরা জীবনানন্দ এইরকম রবীন্দ্রনাথের মতোই কবিতা লিখতেছিলেন ছেলে-কবিরা। তেমন কোন টেনশনই ছিলো না। যেহেতু লিখেন বাংলা-ভাষায়, এই কারণে থাকতে থাকেন সিলেটে, চিটাগাংয়ে, সিরাজগঞ্জে অথবা ধরেন ঢাকাতেই। বয়স যা-ই হোক মনে মনে উনারা এখনো কচি, কিছুটা সবুজ। ভানুসিংহের পদাবলী পার হইছেন মাত্র। মৃণালিনী দেবী’রেই খুঁজতেছেন, পাইলেই কবি হয়া যাইতে পারবেন, এইরকম একটা ব্যাপার। কিন্তু যুগ তো বদলাইছে। সাঁই সাঁই কইরা চইলা যাইতেছে টাইম। ২০১৫ থিকা ২০৪৬-এ। মানে, ভাবতে পারাটাই তো মেইন, ভাবতে পারলেই তো হইলো! ইয়াং-কবি বইলা ইন্টারনেট ইউজ করেন, পাশের বাড়ি’র ভাবী বা কলেজে সেইম ক্লাসে পড়া মৃণালিনী দেবী’রে থুইয়া আলাদা আলাদা কইরা একজন ভিক্টোরিয়া ওকাম্পো’রে আবিষ্কার করার সম্ভাবনার মধ্যেও থাকতে থাকেন; ধরেন পরে আবার মৃণালিনী দেবীর কাছে ফেরত আসলেন, এইরকম আর কি। থাকে না কতকিছু। পরের’টা আগে ঘটতে থাকে আপনার লাইফে, আগেরটা পরে। লাইফ তো নন-লিনিয়ার আসলে।

সিরাজগঞ্জের রবীন্দ্রনাথ পদ্মার বোটের কথা ভাবেন। খুবই একলা লাগে তার। যদিও ফ্যাভিকল-এর আঠার মতো লাইগা থাকে কলেজ-প্রেমিকা। শে আসলে তারে বিয়া-ইকরতে চায়, এইটা রবীন্দ্রনাথ বুঝতে পারেন। কিন্তু যে মে বিয়া করতে চায় শে কি মৃণালিনী দেবী হইতে পারবে? তার কনফিউশনই লাগে। নাকি নাটোরের দিকে চইলা যাবেন? বনলতা সেনের মিষ্টি খাইতে? ঠিক ডিসাইড করতে পারেন না। পাড়-ভাঙা যমুনার তীরে হাঁটেন। কোনদিন নৌকায় ঘুরতে থাকেন, কোন উদ্দেশ্য ছাড়াই, কবিতা লিখেন, নাম দেন – গন্তব্যহীন। বাসায় ফিরেন সন্ধ্যায়, তখনো মন চঞ্চল,পবনদাস বাউলের গান শুইনাও মন মানে না! কলকাতার সিনেমার গান ট্রাই করেন। উল্টা-পাল্টা ঘুরতে থাকেন ইন্টারনেটে। কারে বলা যায় এমনো দিনের কথা! দুই একজনরে নক করেন ফেইসবুকের মেসেজে, কেউ পাত্তা দিতে চায় না, হয়তো সিরাজগঞ্জে থাকেন বইলা। আজকে যদি ঢাকায় থাকতেন, তাইলে এইরকম ইগনোর কি করা যাইতো তারে! যমুনার নৌকা কি তার পদ্মার বোট হয়া ঘুইরা বেড়াইতো না অন্তঃত একশোজনের নিউজফিডে! Continue reading

টেবিলে কয়েকটা কমলার কোয়া

[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]  টেবিলে কয়েকটা কমলার কোয়া পইড়া আছে। বাংলাদেশের কমলা, আর অস্ট্রেলিয়াতে যেইটারে ম্যান্ডারিন বইলা ডাকে। শাদা প্লেটের কোণায় একটা কোয়া আর বাকি কয়েকটা কোয়া টেবিল ক্লথের উপরে, ছড়াইয়া ছিটাইয়া আছে। মেহমান আসছিলো মনেহয় বাসায়। মেহমানদের তো সবটা শেষ কইরা খাওয়ার নিয়ম নাই। তাই কিছু রাইখা গেছে, ভদ্রতা কইরা। তারপর উনারা চইলা যাওয়ার পরে, বাসার লোকজন ঘুমায়া গেছে; টেবিল গুছানো হয় নাই আর। কয়েকটা ছোট ছোট ইঁদুর ঘুইরা বেড়াইতেছে ওইখানে; কমলার কোয়াগুলাতে মুখ দিতেছে। ইঁদুরগুলা এতো ছোট যে তেলাপোকা সাইজের। ডিফরেন্সটা হইলো তেলাপোকাগুলা আস্তে আস্তে ঠেলাগাড়ির মতো নড়াচড়া করে আর এইগুলা রেসিং কারের মতো শাট শাট কইরা যাইতেছে, আসতেছে। Continue reading