যশোরে কিছুদিন থাকতে হইছিল আমার, চাকরির কারণে। চাকরিটা আমি করতে চাইতেছিলাম না, আর নতুন কোন চাকরিও পাই নাই, কিন্তু খুঁজতেছিলাম। এইজন্য কোন বাসা ভাড়া নেই নাই, সপ্তাহ শেষে ঢাকায় চইলা আসতাম, যশোরে থাকলে রাতে হোটেলে-ই থাকতাম; দুই/তিনমাস ছিলাম এইরকম। আর দিনের বেলা বাজারের মধ্যে ডিস্ট্রিবিউটরের অফিসে যাইতাম। মুশকিলের ঘটনা হইলো, অফিসের উল্টাদিকেই যশোরের সবচে বড় মাগীপাড়া। হোটেল থিকা দুইভাবে অফিসে আসা যাইতো। মাগীপাড়ার গলিটাই বড় ছিল, রিকশা দিয়া অফিস পর্যন্ত আসা যাইতো। আরেকটা উপায় ছিলো, রিকশা দিয়া বাজারের ভিতরে আইসা একটা চিপাগলির কাছে নাইমা, তারপর হাঁইটা অফিসে আসা। ওই রাস্তাটা না চিনার কারণে প্রথম কিছুদিন গলি দিয়া রিকশা নিয়াই আসতাম। পরে অফিসের লোকজন অন্য রাস্তাটা চিনাইছিলো। প্রথম দুই-একদিন মাগীরা আমারে পটেনশিয়াল কাস্টমার ভাবছিলো মনেহয়, চোখের দিকে তাকাইলে টের পাওয়া যাইতো। পরে যখন অফিস থিকা বাইর হইতে দেখছে নিয়মিত, কোন ইশারা-টিশারা করে নাই আর। ডিস্ট্রিবিউটর ওই এলাকায় নামী-দামি ফ্যামিলির লোক আছিলেন। এইজন্য অফিসার হিসাবে ‘ইশারা না-পাওয়া’র এইটুক সম্মান পাওয়া যাইতো।
অফিস ছিল বিল্ডিংটার দোতালায়। দোতলার বারান্দায় সিগ্রেট খাইতে গেলে দেয়ালের ভিতরে মাগীপাড়ার বাড়িগুলির উঠান, বারান্দা দেখা যাইতো। সকালের দিকে বাজারে যখন ব্যস্ততা তখন মাগীপাড়া একদম সুনসান। দুয়েকটা বাচ্চা-পোলাপাইন জাগনা থাকতো। সন্ধ্যার দিকে যখন অফিস থিকা বাইর হইতাম তখন অনেক হাসি-আওয়াজ আর ভীড় থাকতো, মাইয়াদের। কয়েকজন দেয়ালের এই পাশে আইসা রাস্তার লগের গেইটে, ড্রেনের ধারে দাঁড়াইতো। ইন ফ্যাক্ট, দুপুরের পর থিকাই উনাদের সাড়া-শব্দ পাওয়া যাইতো। বারান্দায় বইসা কেউ সিগ্রেট খাইতেছে। বালতি’তে কইরা গোসলের পানি নিয়া যাইতেছে, একজন আরেকজনের চুল বাইন্ধা দিতেছে, পাউডার লাগাইয়া দিতেছে গালে, এইরকম। তো, উনাদের কাপড়-চোপড় বেশ ঢিলাঢালাই থাকতো। পেটিকোট আর ব্লাউজ বা খালি কামিজ বা সালোয়ার আর ব্রা, এইরকম। দেখাও মুশকিল এবং না-দেখাও। প্রথম কিছুদিন বেশ ইরোটিক ফিলিংস হইতো, পরে বুঝতে পারছি এইটা উনাদের নরমাল লাইফ, ঝামেলা আমার না-দেখারই। অফিসের বা বাজারের অন্য লোকজনের কাছেও ব্যাপারটা নরমালই ছিল মনেহয়। মানে, উনাদের তেমন কোন অস্বস্তি দেখি নাই। বাজারের অন্যান্য ব্যবসার মতোই একটা ব্যবসাই। এইরকম মানতে পারতেন মনেহয় উনারাও। Continue reading