আমার আওয়ামী লীগ বিচার

১.
ডিসেম্বর ২৬ ২০১৮

আহমদ ছফাদের আওয়ামী লীগ

আওয়ামী লীগ’রে ‘মুক্তিযুদ্ধের’ সার্টিফিকেট দিছেন আহমদ ছফা’র মতোন পলিটিক্যাল কমেন্টেটর’রাই। উনার এক আবেগি বাণী আছে, ‘আওয়ামী লীগ যখন হারে তাইলে বাংলাদেশ হাইরা যায় আর আওয়ামী লীগ যখন জিতে তখন খালি আওয়ামী লীগ-ই জিতে’ – এইরকম টাইপের। খুবই বাজে কথা এইটা।

বাজে কথা এই সেন্সে যে, এইখানে ফাঁপা আবেগ ছাড়া আর কিছু নাই। ইন্ডিয়াতে কংগ্রেসের জায়গায় বিজেপি বা রিজিওনাল দলগুলি জিতলে অথবা পাকিস্তানে মুসলিম লীগের জায়গায় পিপলস পার্টি বা তেহরিকে ইনসান জিতলে ইন্ডিয়া বা পাকিস্তান হাইরা যায় না, খালি বাংলাদেশে এইরকম ভাবা’র লাইগা কেন বলা হয়? একটা পলিটিক্যাল দল কেমনে একটা রাষ্ট্রের মালিকানা পাইতে পারে?

এইটা আহমদ ছফা’দের কোন পলিটিক্যাল ‘ভুল’ বইলা আমি মানতে রাজি না। বা কোন ‘অতীত অভিজ্ঞতা’র সিনথেসিস বইলা ভাবা’টাও কোন কাজের জিনিস না। বরং এর একটা উদ্দেশ্যটা আসলে এক ধরণের ‘বাংলাদেশ’রে ডিফাইন করা, যেইটা খুবই মিডল-ক্লাসের ঘটনা। মুক্তিযুদ্ধ নিয়া কালচারাল প্রডাকশগুলাও দেখবেন, ‘শহরের’ ‘শিক্ষিত’ ‘পোলা’রা’ হইতেছে মেইন ‘মুক্তিযোদ্ধা’; আর এই কারণে ‘গ্রাম্য’ ‘অশিক্ষিত’ ‘মাইয়া’দের’ প্রতি এই ‘মুক্তিযুদ্ধ’ বা ‘বাংলাদেশ’ ধারণার এক ধরণের কালচারাল বিরোধিতা আছে। এই যে, ছফা’দের (প্লুরাল কারণ আরো আছেন উনার মতোন) ‘বাংলাদেশ’ ধারণা – সেইটার বেইজটারে কোশ্চেন করা, খোলাসা করাটা জরুরি একটা ইন্টেলেকচুয়াল কাজ যে, এইটার বেচা-বিক্রি কি কি ভাবে চালু থাকতে পারতেছে এখনো?

আওয়ামী লীগ হারলে যেমন বাংলাদেশ হারে না, ‘বাংলাদেশ’ বইলা এক ধরণের ‘শিক্ষিত’ মিডল-ক্লাস সেন্টিমেন্টে দাগা লাগে, একইভাবে জিতলেও খালি আওয়ামী লীগ-ই জিতে – তা না, বরং গ্রসলি বললে আহমদ ছফা’রা আরো বড় ভাগ চান, এই জিতা’র; সেইটা কখনোই সম্ভব হয় না, যার ফলে এক ধরণের ‘অভিমান’ বা ‘প্রবঞ্চণা’র ফিলিংসই হয়, এর বেশি কিছু না।

২.
সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৯

আওয়ামী লীগ পাবলিকের উপ্রে ভরসা রাখার দল না

একটা পলিটিক্যাল পার্টি’রে যতোটা না তার আইডিওলজি তার চাইতে তার প্রাকটিস বা কাজকামের ভিতর দিয়াই বুঝতে পারতে হবে।

আওয়ামী লীগ পলিটিক্যল পার্টি হিসাবে ক্রুশিয়াল মোমেন্টগুলাতে খুব কম সময়েই পাবলিকের উপ্রে ভরসা রাখতে পারছে। পাকিস্তান আমলেও পাবলিকরে নিয়া মুভমেন্ট করলেও, সময় সময় পাওয়ারের লগে নেগোশিয়েশন করে নাই, বরং যা যা করছে, তারে পাওয়ারের লগে এক রকমের আতাঁত করা বলা যাইতে পারে, যা খুব কম সময়েই পাবলিকের ফেভারে থাকছে। পরে, এরশাদ আমলে ৮৬’র ইলেকশনে যাওয়া বা ৯৬’এ সরকারি আমলাদের কারণেই বিএনপি’রে নামাইতে পারছিল। ১/১১’র পরের ইলেকশনও তো ধারণা করা হয়, মিলিটারি’র কন্ডিশন মাইনা নিয়াই আসছেন উনারা, পাওয়ারে। আর লাস্ট পার্লামেন্ট ইলেকশনে পাবলিকের ভোট তো পুলিশ-মিলিটারি-সরকারি আমলারাই দিয়া দিছে; কিন্তু যেহেতু ছাত্রলীগ-যুবলীগ ভোটগুলা ফেলছে, অরা মনে করতে পারে যে, অদেরও কন্ট্রিবিউশন আছে। তা তো আছেই, কিন্তু উনারা ডিটারমিন্টেট ফ্যাক্টর না। এইটা বুঝতে পারলে উনাদেরও ভালো। Continue reading

একটা ‘সত্যি’ আবিষ্কার করার চাইতে যেইখানে সত্যি জিনিসটারে ফিল করা যায়, সেই গ্রাউন্ডটারে স্পষ্ট করতে পারাটা বেশি জরুরি

কারণ, ‘সত্যি’ জিনিসটা যে ফিক্সড না – তা না; বরং একেকটা গ্রাউন্ডে একেকভাবে দেখা যায়, ফিল করা যায়। যেমন ধরেন, আপনার হইতেছে মাথা-ব্যথা; কিন্তু যদি জিগানো হয়, আপনার পেট-ব্যথা নাকি পা-ব্যথা? সেইখানে ‘সত্যি’ উত্তর’টা কেমনে দিবেন আপনি – এই প্রশ্নের কনটেক্সটের বাইরে না গিয়া?

মানে, সার্টেন কনটেক্সট আপনারে ‘সত্যি’টারে দেখতেই দিবে না! সেইখানে প্রশ্ন’টা এইটা না যে, ‘সত্যি’ কোনটা? বরং কোন গ্রাউন্ড বা কনটেক্সট বা রিয়ালিটি ‘সত্যি’টারে রিভিল করতে পারে, আর কোন’টা আড়াল কইরা রাখে – সেই জায়গা’টারে লোকেট করতে পারাটা দরকার, প্রথমেই। যে কোন আলাপে যাওয়ার আগেই।

এখন, এই করোনা ভাইরাসের সিচুয়েশন যে সামাল দিতে পারতেছেন না বাংলাদেশের গর্ভমেন্ট – এইটা মোটামুটি স্পষ্ট। কোন ডিসিশান নিতে পারতেছে না, ইনফরমেশন হাইড করতেছে, তাড়াহুড়া বা আর্জেন্সি’র কিছু নাই; ডাক্তার-নার্সদের চাইতে পুলিশ-মিলিটারি’র উপ্রে ভরসা করতেছে… এইসব হইতেছে। এইগুলা দেইখা আপনি যদি বলেন, আওয়ামী লীগেরও দোষ আছে, কিন্তু মেইন সমস্যা হইলো, রাষ্ট্রযন্ত্রের; ‘রাষ্ট্র একটা নিপীড়িক-যন্ত্র!’ (ভাউরে ভাউ, বাংলা-ভাষা এইটা!) এইটা সিপিবি-মার্কা একটা কাজেরই এক্সটেনশন হবে। কারণ এইটা বলা মানে একটা ‘পলিটিক্যাল কারেক্টনেসের’ দিকে যাইতে চাওয়া, যেইখানে আওয়ামী লীগ’রে ‘মাফ’ কইরা দেয়া যায়, যেইখানে ‘মাফ’ চাওয়ার কোন কথা-ই আসে নাই।

আওয়ামী লীগের ‘দোষ’ তাইলে কি? গনস্বাস্থ্যের কিট নিতেছি, নিতেছি বইলা নাটক করার পরে এই কিট কাজের না – এইটা বলা? টাকা ছাপাইতে না চাওয়া? গার্মেন্টস নিয়া কোন ডিসিশান না নিতে পারা?… এইগুলা হইতেছে সিমটম; ‘কারণ’ না। রিয়ালিটি হইতেছে আওয়ামী লীগ অনেক আগে থিকাই জনগণ’রে বা পাবলিকরে আর গোণায় ধরে না; পাওয়ারে থাকতে হইলে পাবলিক’রে পাত্তা দেয়ার যে কোন দরকার নাই, খালি মাঝে-মধ্যে ইউজ করা লাগে – এই ‘সত্যি’ আওয়ামী পয়লাবার প্রমাণ করছিল ১৯৯৬ সালে সরকারি আমলাদেরকে নিয়া ‘জনতার মঞ্চ’ বানায়া। আর ২০০৭ সালের ওয়ান-এলেভেনের পরে কমপ্লিটলি আমলা-পুলিশ-মিলিটারি’র একটা দলে পরিণত হইছে।

মানে, বাংলাদেশের রিয়ালিটি’টারে বুঝার মেইন গ্রাউন্ড’টা হইতেছে এইখানে একটা ‘পলিটিক্যাল’ দল পাওয়ারে আছে, যাদের মেইন কাজ হইতেছে পাওয়ারে টিইকা থাকা; পাবলিক মরতেছে না বাঁইচা আছে – এইটা এদের চিন্তার জায়গা না। এই রিয়ালিটির জায়গা থিকা যদি আপনি না দেখতে পারেন, তাইলে সেইটা ভুল-ই হবে, সবসময়। Continue reading

কি কারণে ইন্ডিয়া এখন বাংলাদেশের ‘জাতীয় শত্রু’

মিছা কথা কথা যে খালি মানুষ পারসোনাল লাইফে কয়, এইরকম না কিন্তু; বরং সমাজ, রাষ্ট্রে, হিস্ট্রি’তে অনেকবেশি থাকে, থাকতে পারে। যেমন, টার্কিশ’রা যে ১৫ লক্ষ আর্মেনিয়দের মাইরা ফেলছিল ১৯১৫ সালের দিকে, এই কথা তুরস্কে পাবলিকলি বলাটা ‘মিছা কথা’ বলার মতোন। এইটা ফার্স্ট জানছিলাম, ওরহান পামুকের নামে যখন মামলা হইছিল ২০০৫ সালে, তখন। এইটা এক রকমের ‘রাষ্ট্রীয় মিছা’, আর হিস্ট্রিক্যাল ট্রুথ।

তো, গতকালকে ক্রিকেট ওয়ার্ল্ডকাপের সেমিফাইনালে যখন ইন্ডিয়া হারলো নিউজল্যান্ডের কাছে, তখন ঢাকার রাস্তা-ঘাটে মানুষের আনন্দ দেইখা সন্দেহ করার কোন কারণ নাই যে, এই সময়ে ইন্ডিয়াই হইতেছে বাংলাদেশের ‘জাতীয় শত্রু’। ১০/১২ বছর আগে এইরকম ডেফিনিট কইরা বলাটা মেবি টাফ-ই ছিল। এই কারণে মনে হইছে, রিস্ক নিয়া হইলেও একটা ‘সত্যি’ কথা বলার ট্রাই করা যাইতে পারে।

বাংলাদেশিদের ইন্ডিয়ারে পছন্দ না করার অনেক কারণ আছে: বর্ডার-কিলিং, বাজার-দখল, তিস্তার পানি… কিন্তু একটা হিস্ট্রিক্যাল মিসরিডিংয়ের কথা আমি বলতে চাইতেছি এইখানে।

জিনিসটা নিয়া একবার আলাপ হইছিল, যখন বলিউডে ‘গুন্ডে’ সিনেমা রিলিজ হইছিল, ২০১৪ সালে। তখন সিনেমা শুরু’র দিকে দেখানো হইতেছিল, ১৯৭১ সালে ইন্ডিয়া-পাকিস্তান যুদ্ধের কথা। মানে, বাংলাদেশের কোন কথা-ই নাই! যুদ্ধ’টা জানি খালি ইন্ডিয়া আর পাকিস্তানের মধ্যেই হইছিল! (শশী থারুর একবার এক ভাষণে ব্রিটেনের কাছে ইন্ডিয়ার সম্পত্তি ফেরত দেয়ার দাবি করছিলেন, অইখানে উনার কথাতে মনে হইতে পারে, পাকিস্তান আর বাংলাদেশ যেন ইন্ডিয়াই! উনি পাকিস্তান আর বাংলাদেশের কথাও কইবেন – এক্সপেক্টশন এইটা না, কিন্তু গায়েব কইরা দেয়ার চালাকিটা খেয়াল করা দরকার।) Continue reading

“…ষড়যন্ত্র হচ্ছে: প্রধানমন্ত্রী”

http://www.bd-pratidin.com/2014/01/01/35413

[নিউজ লিংক’টা এখন আর কাজ করে না, খবরটা ছাপা হইছিল মেবি ৩/৪ জানুয়ারি, ২০১৪-তে; নোট’টা জানুয়ারি ৬, ২০১৪-তে লেখা।]

এইটা গুরুত্বপূর্ণ একটা স্টেটম্যান্ট ছিল। কিন্তু রাজনীতিতে গুরুত্ব ত খুব ফ্রিকোয়েন্টলি চেইঞ্জ হয়।

সবচে সিগনিফিকেন্ট ঘটনা হইলো ‘প্রধানমন্ত্রী’ বলাটা, শেখ হাসিনা না; একটা পজিশন, কোন ইন্ডিভিজ্যুয়াল মানুষ না। ইলেকশনে একজন মানুষের তো একটাই ভোট – এইরকম সহজ-সরল-সাধারণ ব্যাপার। ইস্যু’টা যখন শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী থাকবেন কি থাকবেন না, তখন এইখানে এস্যুরেন্সটা দেয়া আছে যে, এইটা প্রধানমন্ত্রী’র স্টেটমেন্ট। প্রধানমন্ত্রী যখন ষড়যন্ত্রের কথা কইতেছেন তখন সেইটা রাষ্ট্র ও আইনের এগেনেস্টের কোন ব্যাপার।

এই যে ষড়যন্ত্র বলা, এইটা শুধুমাত্র এই ধারণা থিকা বলা না যে, ষড়যন্ত্র হইতেছে; বরং একটা এক্সপেক্টশন আকারেও হাজির আছে যে, ষড়যন্ত্রই পসিবল এখন এবং এইটা তখনই সম্ভব যখন প্রকাশ্য ও গণতান্ত্রিক বইলা যে পদ্ধতিগুলা আছে সেইটা আর সম্ভব না।

এই পরিস্থিতিটা কেমনে সম্ভব হইতেছে, এই ষড়যন্ত্রমূলকতা, সেইটা নিয়া তারপরও কথা বলা সম্ভব। কারণ কী ষড়যন্ত্র হইতেছে, তার চাইতে ভাবা দরকার কেন ষড়যন্ত্র হইতেছে। অথবা তারও আগে এই ‘ষড়যন্ত্র-ভাবনা’টা কেমনে আসতে পারলো? যেহেতু ষড়যন্ত্র, কয়টা অনুমান ত করাই যাইতে পারে:
Continue reading

গুগল বাংলাদেশরে অভিনন্দন বাংলাদেশের কনজিউমারদের গুরুত্ব দেয়ার জন্য

গুগল বাংলাদেশরে অভিনন্দন বাংলাদেশের কনজিউমারদের গুরুত্ব দেয়ার জন্য।

২৬শে মার্চ উপলক্ষ্যে গুগল বাংলাদেশের ডুডল

২৬শে মার্চ উপলক্ষ্যে গুগল বাংলাদেশের ডুডল

 

কনজিউমার হিসাবে কেউ আমারে গুরুত্ব দিতে চাইলে সেইটা নিতে আমি অ-রাজি না। ধরেন, যেই ডিপার্টমেন্টাল ষ্টোর থিকা আমি সপ্তাহের বাজার করি সে আমারে ২% ছাড় দেয়, পাশে আরেকটা দোকান খুলছে বইলা। এখন এই ২% ছাড়ের ‘সম্মান’ না নেয়ার বিপ্লব করতে আমি রাজি না, কারণ ৩% দিলেই হয়তো বিপ্লবে ইস্তফা দিবো; চক্করটা এই জায়গাটাতেই – কনজিউমারিজমের ভিতরে। যখন আমি কনজিউমার, কোম্পানির দেয়া গুরুত্বরে আমি আমলে নিতে আগ্রহী।[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

আ্যাপল বা ফেইসবুক যে এখনো বাংলাদেশি শাখা খুলেন নাই, উনারাও এই ঘটনা থিকা উনাদের ব্যবসায়িক পজিশন রিথিংন্ক করতে পারেন।

 

চৈত্র ১২, ১৪১৯ (মার্চ ২৬, ২০১৩)