সৈয়দ হক মারা যাওয়ার পরে এইটা ভাবছিলাম – উনি যেই ফর্মে গ্রেটার অডিয়েন্সের কথা ভাবতে পারছেন সেই ফর্মে উনার আর্ট ততো বেটার হইছে। উনার সিনেমার স্ক্রিপ্ট, গানের লিরিকস সবচে বেটার, তারপরে উনার নাটক, তারপরে গল্প-উপন্যাস আর সবচে শ্যালো হইতেছে উনার কবিতা। এখন এই বেটার বা শ্যালো বলার পিছনে দুইটা ব্যাপারই আছে – হরাইজেন্টালি স্প্রেডেড হইছে খালি – তা না, যে প্রচুর পাবলিকে দেখছে বা পড়ছে; ভার্টিক্যালি ডিপ বা এক্সপোজডও হইতে পারছে, একসাথে অনেক অডিয়েন্সের ভিতরে ‘কমন’ একটাকিছুরে বাইর করার ট্রাই করতে হইছে – এইরকম হইতে পারে।
হইছে কি হয় নাই – সেইটার চাইতেও এই যে ‘কমন’ একটাকিছুরে লোকেট করতে চাওয়া, ফর্মের কারণেই, এক ধরণের এক্সপ্লোরেশন পসিবল হইছে, উনার ক্ষেত্রে। মেবি কবিতারে অল্পকিছু লোকের আর্ট বইলাই ভাবছেন উনি।…
২.
তারপরও সৈয়দ হক’রে কবি বলাটা আসলে উনারে এক ধরণের সম্মান দেখানোই। মরা-মানুষরে সম্মান দিতে চাই আমরা। জীবতদেরকেও। কিন্তু উনি কেন কবিতা লিখতে পারেন নাই, সেইটা বুঝতে পারলেও মনেহয় সুবিধা হবে, যেইভাবে উনি ‘তরুণ’ কবিদের বিশ বছর সময় বাঁচাইয়া দিছিলেন [ক্লেইমটা উনি করতেই পারেন], এইরকম কারো কারো লাইফও বাঁচতে পারে।
‘মার্জিনে মন্তব্য’ বইটাতে উনি যে টেকনিক নিয়া কথা বলতে পারছেন, এইটা মেবি উনার স্মার্টনেস নিয়া এক ধরণের কনফিডেন্সের কারণেই। টেকনিকগুলি নিয়া তো কথা বলেন না অনেকে, ধরা খাওয়ার চান্স থাকে। টেকনিকগুলিই কবিতা না, কিন্তু বলাটা নিয়া আমাদের যে অস্বস্তি সেইটাও কোন কাজের জিনিস না; চেষ্টা করা যাইতেই পারে। তো, উনি বলতেছিলেন, শব্দ, ভাষা এইসব জিনিস নিয়া… যে, ডেইলি লাইফের ভাষা থিকা আলাদা হইতে হয় কবিতার ভাষা; মানে, একই শব্দ ইউজ করেন কবি’রা কিন্তু মিনিং একইরকম থাকে না। সাজ্জাদ শরিফও এইরকম কইছিলেন [মনেহয়], আরেকটু ঘুরাইয়া; যে, শব্দরে বাঁকাইয়া দিতে হয়। এইগুলি খুবই বাজে কথা। মিনিং যে পাল্টাইয়া যায়, অর্থ যে বাঁইকা যায়, এইটা কবিতার সমস্যা, কেরামতি না। হক সাহেব ব্যাপারগুলি জানতেন কিন্তু ইন্টারপ্রেট করছেন ভুলভাবে। জানা আর বুঝতে পারা ব্যাপারটা এক না।
তো, মাঝে-মধ্যে যখন উনার বুঝার বাইরে গিয়া লিখতে পারছেন, যেমন সিনেমার গানগুলা, দেখবেন ওইগুলিই এখন থাকতেছে।