কা.শা.’র কবিতা নিয়া।

[pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote] শিমুল সালাহ্‌উদ্দিন উনার গালুমগিরি সংঘ থিকা কবি কাজল শাহনেওয়াজ-এর কবিতা পড়া’র প্রোগ্রাম করছিলেন ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে। ঢাকায়, পাবলিক লাইব্রেরীতে। ওই প্রোগ্রামে উনার কবিতা নিয়া বলার লাইগা আমারে রিকোয়েস্ট করছিলেন শিমুল। পুরা প্রোগ্রামটার ভিডিও কাজল শাহনেওয়াজ আপলোড করছিলেন; ওইখান থিকা আমার আলাপের অংশটুক এইখানে রাখলাম। শেষের দিকে কিছু অংশ বাদ গেছে অবশ্য। আর এমনিতে আমি কথা বলার সময় ডান চোখ টিপি না, টানা কয়েক রাত জাইগা থাকার কারণে এই অবস্থা হইছিল।

জীবনানন্দ’র ‘সমারূঢ়’ নিয়া

 

জীবনানন্দ’র এই কবিতা নিয়া কথা বলতে হইতেছে ফেইসবুকের একটা  আলাপের কারণে; কোনএকটা জায়গায় আমি কইছিলাম যে, বাংলা-কবিতার সমালোচনা নিয়া যে নেগেটিভ একটা ধারণা এগজিস্ট করে, সেইটাতে এই কবিতার কন্ট্রিবিউশন আছে। তখন অনেকে (যদ্দূর মনে পড়ে রায়হান রাইন, মুজিব মেহদী এবং আরো কয়েকজন) আমার কথার প্রতিবাদ করছিলেন, উনারা করতেই পারেন, সেই রাইট উনাদের আছে; কিন্তু আমার মনে হইছে যে, ডিটেইলসে আমার পয়েন্টটাও বইলা রাখা দরকার।

আসেন, আগে কবিতাটা পড়ি।

 

সমারূঢ়

‘বরং নিজেই তুমি লেখো নাকো একটি কবিতা –‘
বলিলাম ম্লান হেসে; ছায়াপিণ্ড দিলো না উত্তর;
বুঝিলাম সে তো কবি নয় – সে যে আরূঢ় ভণিতা:
পাণ্ডুলিপি, ভাষ্য, টীকা, কালি আর কলমের ‘পর
ব’সে আছে সিংহাসনে – কবি নয় – অজর, অক্ষর
অধ্যাপক, দাঁত নেই – চোখে তার অক্ষম পিচুঁটি;
বেতন হাজার টাকা মাসে – আর হাজার দেড়েক
পাওয়া যায় মৃত সব কবিদের মাংস কৃমি খুঁটি;
যদিও সে সব কবি ক্ষুধা প্রেম আগুনের সেঁক
চেয়েছিলো – হাঙরের ঢেউয়ে খেয়েছিলো লুটোপুটি।

Continue reading

সমালোচনা এবং সত্য

লেখাটা বিডিআর্টসে প্রচারিত হইছিল ২০১১ তে (http://arts.bdnews24.com/?p=3350)।
………
CRITICISM AND TRUTH. Roland Barthes. Translated and Edited by Katrine Pilcher Keuneman (withCharles Stivale). Forward by Philip Thody. Continuum. 
………

বইটা পড়া চেষ্টা করতেছি অনেকদিন থিকাই; কিন্তু একটু পড়ার পর, কিছুদিন পার হয়া যায়, আবার যখন পড়তে শুরু করি, তখন মনে হয়, প্রথম থিকাই পড়ি আবার। এই করতে করতে বইটার ফরোয়ার্ড আর প্রিফেস ২টা প্রায় ৩/৪বার পড়া হয়া গেছে,  মূল জায়গায় আর যাওয়া হয় না। এরপর ভাবলাম যে, এর একটা বিহিত হওয়া দরকার, আর কতো! এই বইও পড়া হয় না, আবার অন্যকিছুও পড়ি না, একটা গলার কাঁটার মতো… দেখি, লেখার নাম কইরা উগরানো যায় কিনা! [pullquote][AWD_comments width=”294″][/pullquote]

বইটা রঁলা বার্থ এর, কিনছিলাম শাহবাগের প্রথমা থিকা, তাও ৫/৬মাস আগে। নোটস আর ব্যাকগ্রাউন্ড নোটস বাদ দিলে ৩৪ পৃষ্ঠার একটা বই। মূলতঃ রঁলা বার্থ এর ১টা প্রবন্ধের অনুবাদ, লেখা হইছিল ফরাসী ভাষায় ১৯৬৬ সালে, তারপর ইংরেজিতে অনুবাদ হয় ১৯৮৭ সালে এবং সাউথ এশিয়ান এডিশন ছাপা হয় ২০০৫ সালে, আমি পড়তেছি ২০১০সালের ডিসেম্বরে।

১৯৬৫ সালে বার্থের সমালোচনা-পদ্ধতি নিয়া Raymond Picard (http://en.wikipedia.org/wiki/Raymond_Picard) একটা প্রবন্ধ লিখেন “নতুন সমালোচনা নাকি নতুন প্রতারণা”; যদিও ফরাসী সাহিত্যের ১৯৫০/৬০ এর দিকের “নতুন সমালোচনা” উনার আক্রমণের জায়গা ছিল, কিন্তু এই আন্দোলন এর মূল হোতা হিসাবে তিনি রঁলা বার্থরেই বাইছা নেন। রঁলা বার্থ ১৯৬৩ সালে “রেসিন বিষয়ে” নাম দিয়া ৩টা প্রবন্ধ লিখেন; যেইটার ভূমিকাতে তিনি বলেন যে, এইটাতে রেসিন (http://en.wikipedia.org/wiki/Jean_Racine ) এর তৈরী-করা দুনিয়ার অ্যানালাইসিস তিনি করতেছেন, রেসিন এর না; আর পিকার্ড হইলেন একজন রেসিন বিশেষজ্ঞ।

এরপর ১৯৬৪ সালে বার্থ আরেকটা প্রকাশনা করেন “সমালোচনামূলক প্রবন্ধ” নামে, যেইখানে “দুই ধরণের রিভিউ” তে তিনি দুই ধরণের সমালোচনার কথা বলেন, ইন্টারপ্রেটেটিভ (বা নতুন) এবং প্রথাগত বা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমালোচনা; পার্থক্যের মূল জায়গা হিসাবে তিনি আইডেন্টিফাই করেন যে, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমালোচনা সবসময় লেখার চারপাশের ঘটনারে সম্পৃত্ত করার চেষ্টা করে, যেইটা লেখক-চরিত্রের পজিটিভ সাইকোলজির উপর নির্ভর করে এবং অনুমানমূলক সাদৃশ্যের ভিত্তিতে ব্যাখ্যা দাঁড় করায় (যেমন ধরেন, অন্য কোন সাহিত্যিক রচনা, ঐতিহাসিক ঘটনা কিংবা লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের ঘটনা), কিন্তু কোনভাবেই লেখাটারে তার নিজস্ব ব্যাখ্যামূলক একটা কাঠামোর মধ্যে দাঁড় করানোর চেষ্টা করে না…

আর পিকার্ড এই জায়গাটারেই ধরেন, তিনি অনুমানমূলক সাদৃশ্যের জায়গাটারে বরং একটা সমালোচনামূলক পদ্ধতি হিসাবে বর্ণনা করেন; বার্থ যেইখানে বলেন যে, সমালোচনা হইলো দুইটা সাবজেক্টিভ-এর প্রতিযোগিতার মধ্যে একটা নির্বাচন করার ব্যাপার, সেইখানে পিকার্ড এর মতামত হইলো যে, সাহিত্যিক সমালোচনার ক্ষেত্রে অবজেক্টিভ জ্ঞান বইলা একটা কিছু আছে। তিনি বার্থরে অস্পষ্ট ভাষা এবং আজাইরা বুলি ব্যবহার করার জন্যও দোষ দেন। বলেন, লেখালেখি লেখকের একটা সচেতন প্রয়াসেরই জায়গা।

Continue reading