কবিতা: জুন, ২০২৩

বিউটিফুল

সুন্দর হয়া বইসা থাকো,
সুন্দর হয়া থাকা ছাড়া আমাদের তো আর কোন কাজ নাই

তারপরও সুন্দর হয়া থাকতে আমাদের টায়ার্ড লাগে
আমরা তো একসাইটিং হইতে চাই, আন-প্রেডিক্টেবলও
আর এই কারণেই না আমাদেরকে সুন্দর লাগে!

সুন্দর হাসে, সুন্দর হাঁটে
সুন্দর চুপচাপ বইসাও থাকে
বলে, আজকে আমাদের মন খারাপ;

তখন তাঁরে কি আরেকটু বেশি সুন্দর লাগে?
যেইরকম গরমের দিন শেষে আকাশে উঠে চান্দ?

একটা সুন্দর ফটো’র মতো ঘুরতে থাকে,
একটা সুন্দর সুরের মতো মনে পড়তে থাকে
আর তারপরে মন-খারাপ হয় আমাদেরও
কারণ আমার জানি, এই সুন্দর হারায়া যাবে,
হারায়া যাবো আমরাও তার সাথে

হেই সুন্দর,
তুমি সুন্দর হয়া আরেকটু বইসা থাকো!

তিন পাগলের মেলা

একটা পার্ট অফ মি
আরেকটা পার্ট অফ মি’রে বলতেছে,
আমরা দুইজনে মিইলাই পুরাটা, তাই না?

এই কথা শুইনা
আরেকটা পার্ট অফ মি হাসতেছে,
আরো কত কত আয়নাতে যে তারে দেখা যাইতেছে!

অনেকগুলা আমি তখন অনেকগুলা আমি’রে বলতেছে
আমারে তুমি চিনলা না!
যেন এতোই সহজ একটা জিনিস; সহজ ও স্বাভাবিক

নিউ হাওড়া বেকারি

হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে
হাওড়া বেকারি-তে আসছি

এসি’র বাতাসে বইসা খাইতেছি ফালুদা
গোলাপি ও শাদা

যদিও সন্ধ্যা,
তারপরেও গরম, বাইরের বাতাস
যেন দেশি বাংলা-ভাশায়
কেউ খিস্তি করতেছে

ভুস ভুস কইরা গাল ফুলাইয়া
চেততেছে সূর্য, কাছাকাছি কোথাও
আর তার মা পেরেশান হয়া তারে ডাকতেছে,
“ঘুমাইবা না সুরুয মিয়া,
ও সুরুয মিয়া, ঘুমাইবা না…”

তোমার দুনিয়া আর আমার দুনিয়া এক না

তোমার দুনিয়া আর আমার দুনিয়া এক না,
তোমার দুনিয়াতে এসি ঠিকমতো কুল হয় না
আমার দুনিয়াতে কারেন্ট থাকে না, চার্জার ফ্যানের চার্জ শেষ হয়া যায় হঠাৎ

তোমার দুনিয়া আর আর আমার দুনিয়া তো এক না
তোমার দুনিয়াতে ফ্লাইওভারের উপরে জ্যাম,
গাড়ি চলে না, যাত্রাবাড়ি কি সে যাবে না?

আমার দুনিয়াতে কাঠের ব্রিজ দিয়া যাওয়া-আসা,
পাশে হাফ-ডান দুইটা পিলার, টাকা না পাইলে কন্ট্রাক্টার
আর কাজ করবে না, করতেছে না

তোমার দুনিয়াতে অনেক ফ্রাস্ট্রেশন, বোরডম, ভালো-না-লাগা,
ক্রিঞ্জ সব জিনিস দিয়া চাইরপাশ ভরা, অন্য একটা দুনিয়া যেন
আসি আসি করে আসতেছে না, যদিও বেদের মেয়ে জোসনা’র
পোস্টার ফলো কইরা আর্ট’টা করার পরে মনের ভার কিছুটা কমতেছে,
তারপরও পুরাপুরি সেইটা যাইতেছে না, কি জানি দমবন্ধ একটা ব্যাপার
নিঃশ্বাস আটকায়া আটকায়া আসে অনেক সময়,
কিন্তু তুমি মারা যাইতেছো না, পরিচিত কয়েকজন সুইসাইড করছে
আর তোমার মনে হইতেছে তুমি মনেহয় এতোটা সাহসী না

তোমার দুনিয়া আর আমার দুনিয়া একইরকম না
আমি যে দুখী – এইটাই আমি জানি তোমার কথা শুইনা
যেন বোবা প্রাণী আমি কোন, কথা কইতে পারি না
বা যতটুক কথা কই আমি, অইগুলা তো কোন কথা না!
সমস্যাটা ঠিকঠাকমতো আমি বুঝতেছি না,
আমি তোমার ভাশার জন্য, তোমার চিন্তার জন্য ওয়েট করতেছি যেন

যেন আমার দুনিয়াটা যে তোমার দুনিয়ার মতো হইতে পারতেছে না
অইটাই মেইন ক্রাইসিস!

আমি তোমার দিকে তাকায়া আছি,
আর বলতে চাইতেছি, শোন!
তোমার দুনিয়া আর আমার দুনিয়া তো এক না!

আমরা একই দুনিয়াতে থাকি, কিন্তু আমাদের দুনিয়াগুলা আলাদা।

বিস্টির কবিতা

ফাক বিস্টি ফাক
জোরে জোরে ফাক
পর্ন একট্রেসের ফেইক-মোনের মতো ফাক

অর্গাজম হয়া যাক মেঘ-শিশুদের
তারপর তারা অবাক হয়া যাক
হোয়াট দ্য ফাক!

দুই মিনিটের বিস্টি
আরো দুই দিনের মেমোরি হয়া থাক!

তারপরে, গরমের দিন আবার
নরমাল লাইফ

তার আগে বিস্টি
ইউ বিস্ট, ছোট ছোট কুত্তার মতো
ছোট ছোট বিলাইয়ের বাচ্চার মতো
রাস্তার উপরে নাচ!

ফেলে আসা

কি ফেলে আসছি আমি?
কোন জিনিসটা রয়া গেলো?
মনের মধ্যে একটা খুঁত খুঁত থাকে,
“কিছু ফেলে গেলেন কি?”

আমি দেখি, একটা আমি শুইয়া আছে, টায়ার্ড;
তারে ফেলে রেখে চলে যাইতেছি আমি

নাহ, আর কিছু নাই, খালি সময়ের একটা গ্রেভইয়ার্ড
ফেলে আসছি আমারে আমি
ঝাপসা একটা অবয়ব

একটা বিকালবেলা

আবার বিকাল ঘুরে ঘুরে আসে,
আবার বিকাল আইসা জানালার পাশে বসে

অবাক গাছের পাতাগুলা হাসে
নিরব দুর্বাঘাসে রইদ বইসা ঝিমাইতে থাকে

নদীর পানির দিকে তাকাইয়া থাকতে থাকতে মনেহয়
নিরবতা-ই ভালো, চুপচাপ পার হয়া যাওয়া শুধু,
আর সময়, শব্দের মতো, নিরবতাও হারায়া যায়

একটা বিকালবেলা ঘুরে ঘুরে আসে
চুপচাপ বইসা থাকে একটা বিকালবেলার ভিতর আবার

সন্ধ্যার গান

যা কিছু আমি পাইছি, তা যেন আমি পাই নাই;
আর যা কিছু আমি পাই নাই,
তা-ও যেন আমি পাইছি, একটু-আধটু

এইরকম ভ্রমে জিন্দেগি পার হইলো;
পাওয়া’রে আমি পাই নাই পুুরাপুরি, আর
না-পাওয়ারেও পাইলাম একটু

সন্ধ্যা হলো, পশ্চিমের আকাশে সূর্য ডুবে গেলো

দা ফাদার

বাপ হইতেছে মায়ের প্রেমিক;

বাৎসল-প্রেম তো কম-বেশি সবারই থাকে
কিন্তু মা ছাড়া বাপ হয় না।

আষাঢ় মাসের কবিতা

বিস্টি পড়বে,
তারপরে আমরা বিস্টির কবিতা লেখবো
বিস্টির গান শুনবো
কোন একটা উছিলায় বাইর হয়া গিয়া
একটু বিস্টিতে ভিজবো, বলবো,
বিস্টিতে ভিজছি তো!

কিন্তু তেমন বিস্টি নাই আর
আকাশ মেগলা,
আকাশে চেরাপুঞ্জি আর মেঘালয়ের মেমোরি
আকাশ একটা একলা, বিস্টি ছাড়া
বিস্টির মুখস্ত কবিতা, পুরান গানের খাতা
বিস্টিতে ভিজতেছে না

আষাঢ় মাস চলে আসছে আর চলে যাইতেছে
বিস্টি কেন তুমি আরো জোরে জোরে আসো না!
প্রেমিক-প্রেমিকাদের মন খারাপ হইতেছে,
মনে মনে জমতেছে প্রেমের প্যাক আর কাদা…

বাস্তবতা

বাস্তবে তোমার লগে টক্কর লাগে আমার
আর ইমাজিনেশনে আমরা খালি চক্কর খাই

দেখা নাই, কথা নাই, নাই কোন পরিচয় আর

কুরবানির ঈদের কবিতা

ঈদ মানে হিন্দি-সিনেমার গান
ঈদ মানে রাস্তা-ঘাটে বাচ্চা-কাচ্চাদের চেঁচামেচি, লাউডলি কথা-বলা
ঈদ মানে একটা ক্রাউড, কোন একটা জায়গায়
ঈদ মানে শহরের বাসা-বাড়িগুলার বোবা হয়া থাকা

ঈদ মানে গাছের পাতাগুলা নড়তেছে বাতাসে
রিকশাঅলা বাজাইতেছে বেল খামাখা
ঈদ মানে খুশিতে-ঠেলায়-ঘুরতে বাইর হয়া যাওয়া

ঈদ মানে গরু-ছাগলের ছবি দেয়া যাবে না
জিগানো যাবে না – দাম কতো ভাই? দাম কতো?
গরুর মাংশ খাইতে খাইতে দাঁতের চিপায় লাগলে
সেইটা খুঁচায়া খুঁচায়া বাইর করতে করতে ডিসকাস করা লাগবে,
এই দেশের মানুশ কতো গরিব, তুমি জানো!
অরা মাংশ খাইতে পায় না নিয়মিত!
আর আমরা যারা মাংস খাইতে পাই, আমাদের কি খারাপ লাগে না!
এই কারণে ঈদ মানে হইতেছে শো-অফ করা যাবে না!
ঈদ মানে হইতেছে গরিব-দুখিদের জন্য আমাদের টেক্সট-বুক কান্দা!

কিন্তু তারপরেও ঈদ মানে আনন্দ,
ঈদ মানে ঈদের নামাজ পড়তে যাওয়া,
সেমাই রান্ধা, একটু ফ্রি ফ্রি ফিল করা
ইবরাহিম-নবী কি উদ্দেশ্যে তার ছেলেরে কুরবানি দিতে নিছিলেন
ঈদ মানে সেইটা নিয়াও একটু তর্ক-টর্ক করার কথা ভাবা

তারপরে প্রাকটিকাল সমস্যাগুলার কথাও ভুইলা না যাওয়া,
ঈদের দিন বুঝছো কসাই-ই পাওয়া যায় না!
এতো ডিমান্ড অদের, দশদিন আগে বুকিং দিয়া রাখতে হয়,
ঈদ মানে কতো যে ঝামেলা!

ঈদ মানে গফুর-মহেশ
ঈদ মানে গরুর চোখের মায়া
গরু-ফটোগ্রাফার’রা গরুর কোন ইমোশনটারে হাইলাইট করবে,
সেইটা বুঝতে না পাইরা, ছবি তোলাই বাদ দিয়া দেয়া

ঈদ মানে গ্যারাজে গ্যারাজে রাতের বেলা ছাগলের কান্দা
খড় আর চাটাই, মশলা আর পেঁয়াজ

ঈদ মানে এলাকার নেতাদের শুভেচ্ছা পোস্টার
চামড়ার বেপারিদের মচ্ছব, লবণের আড়ত

ঈদ মানে একদিন ঘুমায়া থাকা
ঈদ মানে অনেক কিছু মনে করা
আর অনেক কিছু মনে করতে না-চাওয়া
ঈদ মানে অনেক অভিযোগ

ঈদ মানে মনের পশু যেন মনে-ই থাকে
বনের পশুর মতো রক্ত-চোষা না হোক
অনেক রক্তের ভিতর আমাদের ক্রোধ যেন শেষ হয়

ঈদ মানে আল্লার দুনিয়ায় সবাই খুশি থাক
ঈদ মানে আমাদের প্লেটে ভাত থাকুক, আর আকাশে থাকুক চাঁদ

বিস্টির ছড়া

বিস্টি পড়ে শীতলক্ষার পাড়ে
মসজিদে, মন্দিরে, ফেক্টরিতে
বিস্টি পড়ে বালুর ট্রলারে

বিস্টি পড়ে ইজি বাইকের ছাদের পলিথিনে
বিস্টি পড়ে আতলাপুরে বাজারে
মানুশ-জন ঝিমাইতেছে, মোবাইল টিপতেছে
শুইয়া, বইসা হাই তুলতেছে
সকালে ঘুম থিকা উইঠা আবার ঘুমায়া যাবে কিনা ভাবতেছে

টিপটিপ বিস্টিতে টিপটিপ বিস্টিতে

Leave a Reply