কবিতা: নভেম্বর, ২০২২

নওগাঁ শহর

যাওয়ার পথে,
দয়ালের মোড় পার হওয়ার
একটু পরেই রুবীর মোড়
তার আরো পরে মুক্তির মোড়

ফিরার পথে,
মুক্তির মোড় থিকা আরো কিছুদূর গেলে
রুবীর মোড়, আর তার একটু পরেই
দয়ালের মোড়

নওগাঁ শহর অবশ্য তার পরেও আছে, আর আগেও


উকিল পাড়ায়

উকিল পাড়া ঘুমায়।
রাত এগারোটায়।
কয়েকটা শিয়াল ঘুরতেছে রাস্তায়। দুনিয়াটা অদের এখন।


হেমন্তে আমি তোমার গান গাই ৩

বললো শে,
“আমারে তুমি ধইরা রাখো,
শীতের বাতাসে
গাছের শেষ পাতাটার মতো”

আলোগুলা নিবে যাইতেছিল
কুয়াশার ভিতর, বলতেছিল
“আই উইল লেট ইউ গো!”


ছাগলের বাচ্চা

সন্ধ্যাবেলায়
একটা ছাগল
পথ হারায়া
খেতের আলে দাঁড়ায়া
তার মা’রে খুঁজতেছে
ডাকতেছে, মেএএএ, মেএএএ, মেএএএ…

পাশের বাড়ি’র মেয়েটা
হাসতেছে তারে দেইখা
বলতেছে, ছাগলের বাচ্চা একটা!


ইন্তেজারি

বড় পীরের মুরিদ হবো বইলা
আমি গেলাম না আর ছোট পীরের কাছে।

ছোট ছোট পীরেরা হাসে, আমারে নিয়া
তোমার তো মিয়া, মনের অহংকার-ই সরে না!

বড়-পীর আউলিয়া আমার স্বপনে দেখা দেন না!

ছোট ছোট পীরের জায়গা, ছোট ছোট পীরের জমি
সব পরগণার জায়গা-জমি হইতেছে যে বাটোয়ারা।

আমার মনে কালা-তিলের একটু জায়গা,
রাখছি আমি, বড় পীরের মুরিদ হবো বইলা।


সুন্দরী

চোখে তার জোকারের স্যাডনেস
মুখ এক্সপ্রেশনলেস
খালি বলতেছে না শে, “হেই ম্যান,
হোয়াই সো সিরিয়াস?”

ড্যাগার নাই কোন, তাঁর হাতে
সালোয়ার-কামিজেও পকেট থাকে না যেহেতু

তাঁর ইনসেনিটি শে লুকাইতেছে
চুপ থাকার ভিতরে,
কি কি যেন শে ভাবতেছে, মনে মনে

মন, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের দামি দামি জিনিসপাতি
আজাইরাই পইড়া আছে রেকগুলাতে

তারপরও শে এইগুলাই কিনে

সুন্দরী মেয়েটা,
জোকারের স্যাডনেস নিয়া চোখে


আই ডু নট লাভ ইউ

আমি তো তোমারে খালি এই কারণেই ভালোবাসি না,
কারণ আমি তোমারে ভালোবাসি।

আমি তো এই কারণেও তোমারে ভালোবাসি
কারণ আমি তো তোমারে ভালোবাসি না!


কবি নজরুল

আমার মনেহয়
আমি টের পাই
নজরুল
কি কারণে
চুপ হয়া গেছিলেন

অনেক সময়
আমাদের মনের দাগা
শরীরের উপর দিয়া যায়

আর
এইগুলা নিয়া
কথা
না বলতে পারাটাই
বেটার মনেহয়

কিন্তু ঘটনা
এইটুকই না

এইখানে
অনেকগুলা গর্ত
অনেকগুলা শিকল
অনেক ডিপ অন্ধকার
আছে

তারপরও
অনেক দিন
বাঁইচা থাকতে হয়

কবিতা লেখার শাস্তি
তো আছেই,
দুনিয়াতে কে যে কোন
দোজখে আটকায়
সেইটা
না-বুঝার মতো
কোন ঘটনা
না

সাফাংরিস
আমরা মনে করি
ক্রিয়েটিভ লোকজনের
পাওনা


সন্ধ্যাবেলা

হঠাৎ একটা গলিতে ঢুইকা দেখি সন্ধ্যাবেলায়
চেনা চেনা লাগতেছে,
এর কোন একটা বিল্ডিং আমার বাসা ছিল,
আমি স্ট্রাগলিং এক্টর, থিয়েটারের
কোন ওয়েব-সিরিজে চান্স পাইতেছি না
এই বাসাটাতে সাব-লেট থাকি

বাসার কুত্তাটা আমারে দেইখা চিনতেছে না
ঘেউ ঘেউ করতেছে,
আমি হঠাৎ কইরা সন্ধ্যাবেলা চলে আসছি

যেইরকম একটা প্রেম হঠাৎ অসময়ে চইলা আসে
তারপরে কাঁচুমাচু দাঁড়ায়া থাকে
কি বলবে, বুঝতে পারে না

এইরকম, আমি চলে আসছি
আরেকটা আমার সামনে

শে আমারে বলতেছে, তুমি কে!
তোমারে তো আমি চিনি না!

তারপরে রাস্তার ঝালমুড়িওলা’র কাছ থিকা
মুড়ি-চানাচুর নিয়া খাইতেছে,
আর আমারে দেখতেছেও না

ভাবতেছে, বাসটা কেন এতো লেইট?
কেন এখনো আসতেছে না?


উইন্টার-রোজ

হোয়ারএভার ইউ গো,
আই ব্লুম টুওয়ার্ড ইউ
বলতেছিল পথের ধুলা, বাতাসে ঘুরতেছিল


অন্য একটা রিয়ালিটি থিকা আসছি আমি

অন্য একটা রিয়ালিটি থিকা আসছি আমি,
অন্য একটা মানুশ

তুমি ভাবতেছো, এইটা কি রকম বান্দর?
বইসা আছে নদীর পাড়ে, কয়লা-ঘাটে, দুপুরবেলায়
কদম্বের ডালে

আমাদের ছায়া লম্বা হইতে থাকে
স-মিলের শুকাইতে দেয়া কাঠগুলা ম্যাচিউরড হয়া উঠে
চায়ের দোকানগুলা ঝিমায়

নদীর পানি যাইতে থাকে জোয়ার থিকা ভাটায়
আর ভাটা থিকা জোয়ারে,
আমারে জিগায় –
অন্য একটা রিয়ালিটি থিকা আসছো তুমি?
অন্য একটা মানুশ?


সন্ধ্যাবেলায়

রাস্তায় অন্ধকারে, ল্যাম্পপোস্টের লাইটে
একটা গাছের পাতা, বাতাসে কাঁপে
কি জানি বলে, কি জানি বলে না
আমি তাকায়া তাকায়া শোনার ট্রাই করি

অরা বলতেছে আমারে,
পুরান কোন গানের মতো –
শোনো, এই জীবন তো মিথ্যা না!
অরা বলে আর চুপ কইরা থাকে

একটা আলো ফিরা যাইতেছে তার অন্ধকারের কাছে

 

Leave a Reply