নোটস: এপ্রিল, ২০২৩ [পার্ট ২]

এপ্রিল ১৬, ২০২৩

এসি-বিপ্লবীরা

গত বছর যখন ইলেকট্রিসিটির ক্রাইসিস’টা ফার্স্ট শুরু হইলো তখন পাখি সব কিছু রব শুরু করছিল যে, “বিদ্যুত ব্যবহারে সাশ্রয়ী হতে হবে” (যারা এইরকম বাংলা কয়, তাদের পাছায় না জানি কতো কারেন্ট!)। এমনো সাজেশনও আসছিল যে, অনেক সুইচবোর্ডে লালবাত্তি জ্বলে, অইগুলাও তো “নিষিদ্ধ” করা দরকার এখন!

মানে, কারেন্টের নামে যে হাজার হাজার কোটি লুটপাট হয়া গেছে, এখনো হইতেছে সেইটা নিয়া আলাপ নাই-না, অই আলাপগুলা নাই কইরা দেয়ার লাইগা এই লেভেলের বোকচোদামিগুলা করা হইছিল আসলে।

তো, এখন আসছেন এসি-বিপ্লবীরা। বাংলাদেশের কতো পারসেন্ট হাউজহোল্ড এসি এফোর্ড করতে পারে? ২%? ৫%?

বরং ঢাকার বাইরে কারেন্টই থাকে না! লোডশেডিংয়ের কি অবস্থা? গড়ে কয় ঘন্টা কারেন্ট থাকে, ঢাকার বাইরে জেলা-উপজেলা-গ্রামগুলাতে? সিলিং ফ্যান কি চালানো যায় ২৪ ঘন্টা? আইপিএস আছে কয়টা বাড়িতে? কতোক্ষণ ব্যাক-আপ দিতে পারে? রিচার্জেবল টেবিল ফ্যানের মার্কেটের কি অবস্থা?

[যারা বাসায় ও অফিসে এসি চালাইতে পারেন, তারা জেনারেটরে গ্যালন গ্যালন ডিজেলও ঢালতে পারেন। এইরকমের গরিব-মার্কা আলাপ করার দরকারও পড়ে না আসলে।]

এই আলাপগুলাই নাই! কারণ তাইলে রিয়ালিটি বাইর হয়া আসবে, রাজনীতি নিয়া কথা কইতে হবে। আর আমরা তো পলিটিক্স নিয়া কথা কইতে পারি না! তাই না? 🙂

যারা রুটি খাইতে পায় না, তাদের কেক খাওয়া উচিত কি উচিত না – এই নিয়া “বির্তক অনুষ্ঠান” আয়োজন করতে পারি বরং আমরা!

বিদ্যানন্দের বিরুদ্ধে এই যে rage, ভার্চুয়াল গণপিটুনি চলতেছে সেইটা এই কারণে না যে এরা দুই নাম্বারি করতেছে! (সেইটা তো কিছুটা করছে বা করতেছে।) বরং এরা বাংলাদেশে সরকারি-জুলুমের সহযোগি-প্রতিষ্ঠানে পরিণত হইছে, তাদের সোশাল এক্টিভিটির ভিতর দিয়া। অবৈধ-সরকারের চিহ্নিত দালালদেরকে তারা তাদের ব্যান্ড-এম্বেসেডার বানাইছে। আর সেইটা না-বুইঝা করছে – এইটা ভাবার কোন উপায়ও নাই আসলে।

সমাজে দান-খয়রাত একটা বড় বিজনেস। বড় বড় ইন্সিটিটিউশনাল ফান্ডিংগুলা ধরতে হইলে সরকারের লগে ভালো খাতির আছে বা ম্যানেজ করতে পারবে, সেইটাও মেবি দেখানো লাগে। কিন্তু সরকারি-দালাল হয়া উঠলে সেইটা পসিবল না, বরং ব্যাক-ফায়ার করার কথা।

আমার ধারণা, বিদ্যানন্দের কাজকাম এমনিতেই অগোছালো ছিল। অর্গনাইজেশনাল গোল, স্টেটমেন্ট বা অপারেশনাল প্রসেসের পাবলিক কোন ডকুমেন্ট দেখি নাই। এন্টি-পিপল একটা রেজিমের পক্ষে থাইকা আপনি পিপলের ফর-এ কাজ করতেছেন – এইটা বিশ্বাস করানোটা এখন কঠিন-ই হওয়ার কথা আরো, ডোনারদেরকে এবং দেশের মানুশদেরকেও।

এপ্রিল ২২, ২০২৩

বাড়িতে আইসা অনেকদিন পরে সন্ধ্যাবেলায় টিভি’র সামনে বসছি।

টিভি’তে ঈদের দিনের কোন “অনুষ্ঠান”-ই নাই! আনন্দমেলা নাই, ইত্যাদি নাই, বলার মতো একটা প্যাকেজ নাটকও নাই! মানে, টিভির সামনে বইসা কি দেখবে মানুশ ঈদের দিনে!

নিউজের নামে খালি আজাইরা আলাপ। মিছা কথাগুলাও থার্ডক্লাস লেভেলের। তা-ও আবার স্ক্রিনের হাফ এরিয়া জুইড়া পপ-আপ এড একটু পরে পরে ডাইনে, বামে! নিচে স্ক্রল চলতেছে দুইটা! মানে, তাকায়া থাকাটাও তো টায়ারিং একটা জিনিস!

টিভি-মিডিয়া যতটুকই আছিল, তারে খালি মেনিপুলেট করা হয় নাই, পুরা জিনিসটারেই ঠেলতে ঠেলতে এমন একটা জায়গায় নিয়া যাওয়া হইছে যে, এইখানে দেখার মতো, শোনার মতো আর কিছু নাই!

পরে মনে হইলো, কিছু থাকলেই কি হইতো, দেখতেও তো পাইতাম না। সন্ধ্যার পরে থিকা তো ৪/৫ বার কারেন্ট গেলো-আসলো!
তো, শুরুতে আফসোস ছিল যে, জুতা নাই। পরে দেখলাম যে, ঠ্যাং-ই তো নাই!

কি মহান একটা ফিলিংস যে হইল! থ্যাঙ্কিউ পিএম!

এপ্রিল ২৩, ২০২৩

– টপ টেন বই –

খুব বেশি বই যে আমি পড়ছি – তা না, স্কুল-কলেজ-ভার্সিটিতেই বই পড়া হইছে। যতোটা না জানার লাইগা পড়া তার চাইতে অনেক বেশি এন্টারটেইনমেন্ট মেটেরিয়াল ছিল বই জিনিসটা আমার কাছে।

বরং বলা যায়, এরপরে দরকারি ভাইবা বা সার্টেন উদ্দেশ্য নিয়া বই পড়া শুরু হইছে। কিন্তু ততদিনে বইয়ের “একক আধিপত্যের” জায়গাটা কম্পিটিশনের ভিতরে পড়তে শুরু করছে। ফিল্ম, ভিজুয়াল, ডকুমেন্টারি, অনলাইন ভিডিও, এসে, ইন্টারভিউ নানান কিছুর ভিতর দিয়া জানার জায়গাগুলা তৈরি হইতেছে এখন। তাই বইলা বই জিনিসটা বাতিল হয়া যায় নাই, ফর্ম হিসাবে ডিফরেন্ট হয়া উঠতে পারার আরো পসিবিলিটি তৈরি করতে পারবে বইলাই আমার ধারণা।

তো, আমরা মেবি অই লাস্ট জেনারেশনের লোক, যারা বই পড়ার ভিতর দিয়া আমাদের এডভেঞ্চার শুরু করছিলাম।

ভাবতেছিলাম যদি নিজের পছন্দের ১০টা বইয়ের কথা বলতে হয় তাইলে কোনগুলা চুজ করবো? মানে, আমার ধারণা, এই বইগুলা কোন না কোন সময়ে আমার চিন্তা-ভাবনারে শেইপ করছিল। (এখন এইরকম মনে হইতেছে আর কি, পরে হয়তো কিছু চেইঞ্জও হইতে পারে।)


১০. দ্য পেইঙ্গুন হিস্ট্রি অফ আর্লি ইন্ডিয়া – রমিলা থাপার।
৯. দ্য সেন্স অফ অ্যান এন্ডিং – জুলিয়ান বার্নস।
৮. আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর – আবুল মনসুর আহমদ।

৭. দ্য লিটল প্রিন্স – ল্য প্যতি প্র্যাস।
৬. এসেনশিয়াল ওয়ার্কস – মিশেল ফুকো।
৫. ডিসকোর্স অন মেথড – রেনে দেকার্ত।

৪. ডাবলিনার্স – জেমস জয়েস।
৩. তিতাস একটি নদীর নাম – অদ্বৈত মল্লবর্মণ।
২. জীবনানন্দ দাশের কাব্য-সম্ভার।
১. আন্না কারেনিনা – লিও তলস্তয়।

এপ্রিল ২৪, ২০২৩

জাস্ট ইনফরমেশন হিসাবে এই জিনিসটা মেবি গ্রসলি মিসিং যে, বাংলাদেশি ওয়েব-সিরিজ “মহানগর” রিলিজ হইছে কলকাতা-বেইজড ইন্ডিয়ান ওটিটি প্লাটফর্ম “হৈচৈ”-এ (hoichoi)।

তার মানে হইতেছে, এই কনটেন্টের মালিক একটা ইন্ডিয়ান কোম্পানি। চাইলেই এই জিনিস দেখা থিকা বাংলাদেশি অডিয়েন্সরে আটকানো পসিবল না, বাংলাদেশের গর্ভমেন্টের পক্ষে, এইটা এন্টি-গর্ভমেন্ট কোন মেটেরিয়াল হইলেও। হৈচৈ’র প্লাটফর্মে যে কেউই এইটা দেখতে পারবে।

যেহেতু ইন্ডিয়ান প্লাটফর্ম, বাংলাদেশের গর্ভমেন্ট ব্যান করার সাহস করতে পারার কথা না। করলেও, বড়জোর ভিপিএন দিয়া ঢোকা লাগতে পারে ভিউয়ারদের। তকলিফ বলতে এইটুকই হবে।

মানে, বাংলাদেশের ব্যাপারে যদি সত্যি-কথা বলতে চান, তাইলে যেমন আপনারে বিদেশে থাকতে হবে 😛 একইভাবে যদি ‘সাহসী’ নাটক-সিনেমা-সিরিজ বানাইতে চান, সেইটা ইন্ডিয়ার পশ্চিমবঙ্গ থিকা রিলিজ দেয়াটাই বেটার।

ফারুকীরেও কেউ সাজেস্ট করতে পারেন “মুক্তির সংগ্রাম” অইখান থিকাই শুরু করতে। দিনশেষে বাড়তি একটা এসথেটিকাল এনডোর্সমেন্টও পাওয়া যাবে। আর এইসবের অডিয়েন্স তো ঘুইরা-ফিরা অই “শিক্ষিত” লোকজনই! 🙂 উনাদেরকে ওটিটি প্লাটফর্মেই বেশি পাওয়া যাবে, সিনেমাহলের চাইতে।

এপ্রিল ২৫, ২০২৩

– বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট পজিশন –

বাংলাদেশের এখনকার সিনারিও-তে প্রেসিডেন্টের জন্য সবচে টাফ টাস্ক হইতেছে মানুশ হয়াও পুতুলের মত এক্ট করা। যেন চোখ নাই, নাক নাই, কান নাই; যতটুক “চাবি মাইরা দিছে ছাইড়া” অইটুক পর্যন্ত অভিনয় করা। এর বাইরে এক চুলও না নড়া। মানে, মানুশ হিসাবে যে যত ভালো-পুতুল সে তত ভালো প্রেসিডেন্ট হইতে পারার কথা বাংলাদেশে।

কিন্তু তারপরও এর কয়েকটা ফাংশন আছে, বা তৈরি হইতেছে ধীরে ধীরে। আব্দুল হামিদ সাবের পরে যে-ই ভালো-প্রেসিডেন্ট হইতে চান তারে ভালো-ভাঁড় হইতে পারতে হবে। উনার আগ পর্যন্ত এইটা জরুরি ছিল না। প্রেসিডেন্ট পোস্টে এইটা হইতেছে আব্দুল হামিদ সাবের সবচে বড় কন্ট্রিবিউশন।

সেকেন্ড হইতেছে নিজের দলের পলিটিকাল লোকজনের ফাঁসির আদেশ ও আদালতের দন্ড মওকুফ করা। এইটা আগে অনেকে করলেও এরে সিগনেচার কইরা তুলতে পারছিলেন জিল্লুর রহমান। একবার উনি ২০ জনের ফাঁসির আদেশ মাফ কইরা দিছিলেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে উনি মেবি সবচে “ক্ষমাশীল” প্রেসিডেন্ট।

কারণ বিচার-বিভাগ’রে মেবি তখনো পুরাপুরি ‘রাজাকার-মুক্ত’ 🙂 করা যায় নাই; যার ফলে জিল্লুর রহমানরে এই ‘দায়িত্ব’ পালন করতে হইছে বেশি। এখন বিচার-বিভাগ রেব-পুলিশ-মিলিটারির মতো “মুক্তিযুদ্ধের-চেতনার” শক্তি হইতে পারলেও অনেক সময় অনেকরে তো জেলে ঢুকাইতে হয়, আবার বাইরও করা লাগে। যেই কারণে আব্দুল হামিদও জিল্লুর রহমানের “পদাংক অনুসরণ” করছেন। এখনকার প্রেসিডেন্টরেও ইলেকশনের আগে এইরকম “ক্ষমাশীল” হইতে হবে বইলা মনেহয়।

আর এই দুইটা কাজ করতে হইলে খালি নিজের কোন বিচার-বুদ্ধি না-থাকাটাই জরুরি না, একটু ভীতু হওয়াটাও মাস্ট। যেইটারে আদর কইরা লয়াল বলা হয়। এইটা এতোট ভিজিবল না, কিন্তু কোর ঘটনা।

আমার ধারণা, করপাশনের কিছু “নতুন দিগন্ত” এখনো “উন্মোচিত” হয় নাই, এই পজিশনে। এখনকার প্রেসিডেন্ট অইরকম জায়গাগুলা কোনভাবে এক্সপ্লোর করতে পারবেন – এই আশা আমার আছে।

২.
তবে অনেকেই বলছেন আগে, এবং আমিও মনে করি, প্রেসিডেন্ট একটা ইলেক্টেড পজিশন হওয়াটা জরুরি।

সংসদের বাইরে প্রেসিডেন্টেরও কিছু অথরিটি থাকবে। কিন্তু নন-ইলেক্টেড পজিশনের কাছে কোন অথরিটি রাখাটা ঠিক হবে না।

আমি এইটাও আশা করতে চাই যে, মো: সাহাবুদ্দিন চুপ্পু বাংলাদেশের শেষ নন-ইলেক্টেড প্রেসিডেন্ট হবেন।

সুদানের অবস্থাটা খেয়াল করতেছিলাম। ৩০-৪০ বছরের টোটালিটেরিয়ান রেজিমের কারণে অইখানে কোন পিপলস এজেন্সি আর নাই। স্টেইটেরও এজেন্সি বলতে আছে মিলিটারি আর মিলিশিয়া-বাহিনি। এই দুই কুত্তার কামড়াকামড়ি চলতেছে এখন।

একবার ‘রেভিউলেশন’ কইরাও কোন লাভ হয় নাই। ফিউচারেও কিছু হবে – এই চান্সও মনেহয় কমই। মানে, সোসাইটিতে যেইভাবে পাওয়ার-গেইমটারে সাজানো হইছে সেইখানে এইরকমের বেনিফিশিয়ারি গ্রুপগুলাই খালি আছে। অন্য কোন পক্ষই আর নাই।

বাংলাদেশের অবস্থাও কাছাকাছি রকমেরই। কয়দিন পরে পরে দেখবেন এলাকার ডিসি-এসপি’র লগে এমপি-মন্ত্রিদের মারামারি লাগে। কোন নেতার লগে, কোম্পানির লগে কোন পত্রিক্র লাগে। এক গ্রুপের লগে লাগে আরেক গ্রুপের। তখন কিছু “প্রতিবাদী” জিনিসপত্র পাই আমরা। কিন্তু অনেকেই বুঝতে পারার কথা যে, যারা ক্ষমতার বাইরে আছে, বা পিপল-এজেন্সি বইলা কোনকিছুর কোন রোল নাই এইখানে।

ফেসবুকেও আমাদের কাজ হিউমার করা, মিম বানানো, বা বড়জোর হাহা রিএক্ট দেয়া। মিডিয়ার হাউকাউয়ের এগেনেস্টে আরেকটা হাউকাউ কইরা এটলিস্ট অডিয়েন্স হিসাবে নিজেদেরকে ক্যারি করতে রাজি থাকা।

গত ৮-১০ বছরে দেশে কোন নতুন একটা ভালো গান হয় নাই, নাটক-সিনেমা নাই, কোন স্পোর্টস নাই, ইভেন কোন চিন্তাও নাই, খালি বকর-বকর বকর-বকর চারপাশে। এইগুলাও একটা সিমটম, লার্জ স্কেলে; মানুশের, সমাজের মারা-যাওয়ার ঘটনার।

এপ্রিল ২৬, ২০২৩

ব্যাপারটা এইরকম না যে, জিও-পলিটিক্স বইলা কিছু নাই; বরং এই যে ইন্ডিয়ারে ম্যানেজ কইরা ফেলতেছে, আম্রিকারে ম্যানেজ কইরা ফেলছে, চীনের সার্পোট আছে – এইগুলা মোস্টলি বাকশালি-প্রপাগান্ডারই অংশ বইলা আমি মনে করি। মানে, একটা দেশের ইন্টারনাল পলিটিক্সে আরো কয়েকটা দেশের ইন্টারেস্ট নাই বা থাকে না – তা না, কিন্তু এইটা তখনই বেশি এফেক্টিভ থাকে যখন একটা দেশের রাস্ট্রিয় বা পিপলস এজেন্সিগুলা কাজ করে না।

পলিটিশিয়ানরা দেশ চালায় না, উনারা হইতেছেন পিপল রিপ্রেজেন্টেটিভ; যেইটা বাংলাদেশে নাই, গত দুই টার্ম ধইরা। বাকি ইন্সটিটিউশনগুলা – সরকারি আমলা, জুডিশিয়ারি, পুলিশ-মিলিটারি, মিডিয়া-একাডেমি — এরাও পিপলস রিপ্রেজেন্টেটিভ হওয়ার কথা। কিন্তু এইগুলাও পুরাপুরি এন্টি-পিপল ঘটনা বাংলাদেশে। যার ফলে, জিও-পলিটিক্সরে অনেক ইম্পর্টেন্ট কইরা পোর্টেট করা হয়।

আসলে ঘটনা হইতেছে, পিপল রিপ্রেজেন্টশনের জায়গাগুলা না থাকা। এই জায়গাগুলা না-থাকার কারণে বাইরের সার্পোট থাকা বা না-থাকাটারে অনেক বড় ঘটনা মনে হইতে পারে। যারা জিও-পলিটিকাল ঘটনাগুলারে প্রায়োরিটি দিতে চান, উনারা এইটা দেখতে পান না – এইটা আমার মনেহয় না; বরং একটা দেশের রাজনীতিতে পিপলস ফোর্সগুলারে আন্ডারমাইন কইরা রাখতে চান বইলাও আমার ধারণা।

এপ্রিল ২৭, ২০২৩

বাংলাদেশ-পাকিস্তান-ইন্ডিয়ার সমাজের বেইজ ধর্ম-পরিচয় না, বরং জাত-পরিচয় বা কাস্ট-সিস্টেম। এই জাত বা কাস্ট মার্কসের ইকনোমিক-ক্লাস বা গ্রামসির কালচারাল-ক্লাসের কাছাকাছি ঘটনা হইলেও একই জিনিস না।

বাংলাদেশের মানুশরে যে পাকিস্তান বা ইন্ডিয়ার চাইতে ইনফিরিয়র মনেহয় সেইটা ধর্ম-পরিচয়ের কারণে না, বরং ছোট-জাত বইলা। ইন্ডিয়ার হিন্দুরাই খালি উঁচা-জাতের হিন্দু না, পাকিস্তানের মুসলমানরাও সাচ্চা-মুসলমান তো (বাংলাদেশের হিন্দু এবং মুসলমানদের তুলনায়)! ইভেন সেকুলার-ধারণার (বা ধর্মের) মধ্যেও এই জাতের ঘটনাগুলা খুঁইজা পাইবেন। [ভার্সিটির টিচার’রা অবশ্যই কলেজ, হাইস্কুল এবং প্রাইমারি স্কুলের টিচারদের চাইতে উঁচা জাতের জিনিস।]

কিন্তু আন-ফরচুনেটলি এই জায়গাটা এখনো মোস্টলি মিসিং আছে, আমাদের আলাপগুলাতে।

এপ্রিল ২৮, ২০২৩

– চিন্তার রেফারেন্স আর সিলসিলা –

যে কোন আলাপেই রেফারেন্সটা ইম্পর্টেন্ট; যে, কোন সুতা ধইরা আপনি আলাপটা শুরু করতেছেন। বা কোন কোন কথারে সত্যি বইলা ধইরা নিতেছেন।

অনেক সময় রেফারেন্সগুলা খুব ভিজিবল থাকে, যে অমুকে এমনটা বলছেন। তো, এইগুলা খালি নেইম-ড্র্রপিং না যে, এই নামগুলা আমি জানি! মানে, রেফারেন্সটাই এলেম বা জ্ঞান না। বরং এই রেফারেন্সগুলারে ধইরা আপনি কি কথা বলতেছেন – সেইটা হইতেছে ঘটনাটা।
এখন রেফারেন্সটা যদি ভুল হয়, আপনার কথাও ভুল হওয়ার পসিবিলিটি বেশি। মানে, ভুল-রেফারেন্সের উপর বেইজ কইরা ঠিক-কথা বলাটা মুশকিল। যেমন, বাংলাদেশের বিটিভিগুলা দিয়া যদি দেশের অবস্থা বুঝতে চান, সেইটা যেমন সবসময় ফার ফ্রম দ্য ট্রুথই হবে।

সেকেন্ড ঘটনা হইতেছে, অনেকে রেফারেন্সগুলারে এভয়েড করেন; মানে, সবসময় নাম নেয়াটা তো জরুরিও না। কিন্তু না বললেও চিন্তার কিছু রিলিভেন্স থাকে আসলে, আগের কিছু চিন্তার লগে, কনটেম্পারারি কিছু চিন্তার লগে।

যে কোন চিন্তাই একক কোন ঘটনা না। এইটা যেমন কানেকশন তৈরি করে, কোন না কোন কানেকশনের জায়গা থিকাই এপিয়ারড হয়। মানে, চিন্তার কিছু বেইজ, কিছু রেফারেন্স পয়েন্ট থাকে। সেইটা ভিজিবল হোক বা আন-আটারডই হোক। আর এইটা নিয়া যতটা কনশাস হওয়া যায়, ততটাই ভালো মনেহয় আমার কাছে। (সেইটা বলেন আর না-ই বলেন।)

তো, খালি রেফারেন্সই না, কিছু সিলসিলা বা ঘরানাও থাকে আসলে, যেইটার উপর বেইজ কইরা বা ক্রিটিক কইরা চিন্তার ঘটনাগুলা আগাইতে থাকে।

বাংলাদেশে এখনকার ডমিনেন্ট ইন্টেলেকচুয়াল এক্টিভিটিগুলার সিলসিলাটারে এইভাবে লোকেট করা যায় (শেষ থিকা শুরু হবে):
… < ইয়াং ইন্টেলেকচুয়াল < ফরহাদ মজহার/সলিমুল্লাহ খান < আহমদ ছফা < আবদুর রাজ্জাক... আরো কিছু নাম তো নেয়া যাইতেই পারতো, কিন্তু এই লাইনটা দিয়াও কিছুটা ভিজিবল করা যাইতে পারতেছে মনেহয়, আমি যেইটা ইন্ডিকেট করতে চাইতেছি। এই সিলসিলা'টার একটা মেজর জায়গা হইতেছে, একটা আইডিয়াল বা আদর্শ পজিশন-রে আপহোল্ড করতে চাওয়া। এই আইডিয়ালিস্ট অবস্থাটার বেইজ এখন এনলাইটমেন্টই হোক, মাক্সসিজমই হোক, "পাচ্য দর্শন"-ই হোক বা অন্য কোন তরিকা। মানে, একটা আইডিয়াল অবস্থা আছে, তার পারসপেক্টিভ থিকা দেখা। এইটা উনাদের সব ডিফরেন্সেন পরেও মিলের একটা জায়গা বইলা মনেহয়। এমনকি কমন-ভুলের একটা জায়গা। যে, এখনকার রিয়ালিটিরে একটা "আইডিয়াল রিয়ালিটি"র কাছে নিয়া যাইতে হবে! এইটা চিন্তার ব্যাপারে ভুল একটা বেইজ বইলাই আমি মনে করি। মানে, এমন না যে, একটা কেওস তৈরি করা লাগবে! বা দুইটা একস্ট্রিম সিচুয়েশনের মধ্যে দোল খাইতে খাইতে "আগানো" লাগবে "প্রগতির পথে"। এই "প্রগতি" কোন লিনিয়ার বা আইডিয়াল জিনিস না। এই ইল্যুশনটা থিকা বাইর হইতে পারাটা বাংলাদেশের এখনকার চিন্তার কনটেক্সটে জরুরি একটা কাজ বইলা আমি মনে করি। এমন না যে, যা আছে তা মাইনা নিতে বা সমাজের কোন উদ্দেশ্য থাকতে পারে না; কিন্তু পিস এন্ড পসপারিটি মানে লিনিয়ার ও আইডিয়াল কোন অবস্থা যে না, বরং সবসময় ডিসাইড করতে পারার, রিভিউ করতে পারার ঘটনা - এইটা মানতে পারলে ভালো। ইন অ্যা নাটশেল, আমি যেইটা বলতে চাইতেছি, বাংলাদেশের চিন্তার ছোটখাট একটা হিস্ট্রি লেখতে পারলেও ভালো হইতো। কিন্তু অইটা একসাথে একটা কাজ হিসাবে যেহেতু করা হইতেছে না, ছোটখাট কমেন্ট করার ভিতর দিয়াই সেইটার দিকে আগানো হইতেছে মেবি, একভাবে। ... শিশু-সাহিত্যিক হুমায়ূন আজাদ আমার কিছু 'সাহিত্যিক-ফ্রেন্ড' আছিল, যারা জানেন যে আমি কবিতাই লেখি, আর নন-ফিকশন। রাইটার হিসাবে এইটাই আমার মেইন জায়গা। কিন্তু ক্রিয়েটিভ রাইটিংয়ে তো অনেকেই অনেক কিছু করেন। যেমন ধরেন, হারুকি মুরাকামি এতো পপুলার নভেলিস্ট হওয়ার পরে অনুবাদ করেন, বা এমবের্তো একোও অনুবাদ করতেন। তো, আমিও মাঝে-মধ্যে কিছু ট্রান্সলেট করছি। তখন আমার 'সাহিত্যিক-বন্ধুরা' বলতে শুরু করলেন, আমার অনুবাদ তো হয় না! আমি খুবই অবাক হইলাম। এই কারণে না যে, আমার অনুবাদ হয় কি হয়-না, বরং এরা ২০-২৫ বছরে আমার কবিতা হয় কি হয় না - এই নিয়া কোন কথা কইতে পারে নাই, কিন্তু এখন বলতে আসছে যে, আমার অনুবাদ হয় নাই! মানে, হইছে কি হয় নাই - এইটা তো অদের কনসার্নের জায়গা না-ও আসলে। বরং অরা আমার কবি বা রাইটার-পরিচয়টারে গোপন কইরা অনুবাদকই বানায়া দিতে চায় আসলে! এইরকম হুমায়ূন আজাদরে দেখি অনেকে শিশু-সাহিত্যিক বানায়া দিতেছেন। এইটা উনার পরিচয় না - এইটা আমার কথা না, কিন্তু আমার "অনুবাদক" পরিচয় থিকা আমি এইটুক বুঝতে পারি যে, যারা উনারে এইভাবে একসেপ্টেবল কইরা তুইলা চান, তারা উনারা দুশমনদের চাইতে বড় দুশমন, এক ধরণের "সাহিত্যিক ফ্রেন্ড"-এর রোলই প্লে করতে চান আসলে। এপ্রিল ২৯, ২০২৩

বিএনপি তো মোটামুটি গত ৯ বছর ধইরা কম-বেশি ইলেকশন ‘বর্জন’ কইরা যাইতেছে। এই জায়গাটাতে উনাদের নিজেদের পজিশনটারে আরেকটু আগাইতে পারাটা এখন মেবি জরুরি।

আমি মনে করি, ইলেকশন করবো না – এইটা পলিটিকাল পজিশন হিসাবে এনাফ না; বরং ক্যাম্পেইন চালানো দরকার, পিপলের কাছে রিকোয়েস্ট করা দরকার যে, আপনারা ভোট যেহেতু দিতে পারেন না, দিলেও কাউন্ট হয় না, আপনারা ভোট দিতে যাইয়েন না! দরকার পড়লে লিস্ট করেন সবগুলা ইলেকশন এরিয়াতে যে, কারা কারা এই অবৈধ-সরকারের অধীনে কোন ইলেকশনে ভোট দিতে রাজি না। এটলিস্ট ৩০% মানুশও যদি অনাস্থা জানায় (মানে, এর চে অনেক বেশি লোকই মনে মনে সার্পোট দিবে, কিন্তু যদি পাবলিকলি বলতে রাজি হইতে পারে একটা প্লাটফর্মে, সেইটা একটা বেইজ তৈরির কাজও করবে) – এইটা একটা পলিটিকাল এচিভমেন্ট হইতে পারে।

মানে, রাজনীতির মাঠে থাকাটা দরকারি ঘটনা। ইলেকশন হইতে দিবো-না না, পিপলরে লগে নিয়া এই লোক-দেখানি ইলেকশনের বিরোধিতা করাটা দরকার। চুপ থাকাটা, কোন এক্টিভিটিতে না-থাকা, একশনে না যাইতে পারাটা নেতা-কর্মিদেরকেও পলিটিকালি এক ধরণের ডেড ফিলিংস দেয়ার কথা।

কারণ বিএনপি তো ইলেকশন কইরাই ক্ষমতায় আসতে চায়। কিন্তু ইলেকশন যে হইতেছে না, একটা আই-ওয়াশ হইতেছে – এইটা পলিটিকালি মোকাবেলা করা দরকার। ডকুমেন্টেড করতে পারাটা জরুরি। পলিটিকালি আরো ভিজিবল কইরা তোলাটা একটা কাজ। জাস্ট পার্টিসিিপেট না-করাটা পলিটিকাল এক্ট হিসাবে কিছুটা কম-জোরি ঘটনাই। এর লগে রিলিভেন্ট কিছু এক্টিভিটি থাকাটা জরুরি।

এমনকি এই দাবিও তোলা দরকার যে, কোন ইলেকশনে যদি এটলিস্ট ৩০% বা ৫০% মানুশ ভোট না দেয় তাইলে সেইটারে বাতিল করা লাগবে। ইলেকশন কমিশনের উপরে অনাস্থা হিসাবে দেখা লাগবে। মানে, এইরকম কিছু পয়েন্ট নিয়া পলিটিকালি পিপলের লগে কানেক্টেড থাকাটা অন্য যে কোন সময়ের চাইতে এখন মেবি জরুরি।

Leave a Reply